চন্দ্রকুঠি পর্ব-৬

0
2204

#চন্দ্রকুঠি
পর্ব (৬)
#নুশরাত জাহান মিষ্টি

রিয়াদ ও মুন দাঁড়িয়ে আছে দু’তলা বিশিষ্ট চন্দ্রকুঠি বাড়ির সামনে। বাড়িটি দেয়াল সম্পূর্ণ সাদা রঙে রাঙানো। সাদা পবিত্রতার প্রতিক। আচ্ছা সেই সাদা রঙের বাড়িতে কি সত্যি অস্বাভাবিক কিছু থাকতে পারে! বাড়িটি খুব সুন্দর। বাড়ির সামনে নানা ধরনের ফুলের গাছ। নানা ধরনের ফুলের মাঝে বাড়িটিকে খুবই সুন্দর লাগছে। বাড়িটির সাজ-সজ্জা দেখে মনে হচ্ছে, সবসময়ের জন্য বোধহয় বাড়িটিকে এভাবে সাজিয়ে রাখা হয়। বাড়িটির সৌন্দর্য মুনকে কাড়তে পারছে না কারন মুনের চিন্তা-চেতনা জুড়ে শুধু সেই লোকটির কাঁপা কাঁপা গলায় উচ্চারিত হওয়া চন্দ্র শব্দিটি। লোকটি কিছু মূহুর্ত অস্বাভাবিক আচরণ করলেও পরক্ষনে নিজেকে স্বাভাবিক করে মুনের কাছ থেকে চলে গেলো। মুন বারবার পিছু ডাকলো কিন্তু লোকটি সেই ডাককে উপেক্ষা করে চলে গেলো। রিয়াদ আর মুন দুজনেই বাড়ির ভিতরে পা রাখতেই দারোয়ান সামনে এসে বাঁধা দিয়ে বললো, ” মঞ্চনাট্য তো রাতে হবে আপনারা বিকেল-বেলা ভিতরে ডুকছেন কেন?”
দুজনেই আস্তে করে বলে উঠলো, ” মঞ্চনাট্য?”
” কেন আপনারা জানেন না?”
” না আসলে আমরা তো গ্রাম দেখতে এসেছিলাম, গ্রামের সৌন্দর্য উপভোগ করার পথে একজন বললো ‘চন্দ্রকুঠি’ বাড়িটি খুব সুন্দর। তাই দেখতে এলাম। আচ্ছা এখানে কি হয়?”
এক নিঃশ্বাসে চটপট করে মিথ্যে বলতে শুনে রিয়াদ মুনের দিকে ভ্রু কুচকে তাকালো। চোখের ইশারা বেশ হয়েছে জানান দিলো। মুনও চোখের ইশারা ভাব নিলো। দারোয়ানের কথায় দু’জনের চোখে কথা বলাটা বন্ধ হলো।
” এখানে রাতের বেলা মঞ্চনাট্য হয়। ওপাশে দেখুন। দেখছেন না মানুষের ভির। সবাই মঞ্চনাট্য দেখার জন্য টিকিট সংগ্রহ করছেন। আপনারাও করুন তাহলেই এই বাড়িতে ডুকতে পারবেন।”
” আচ্ছা।”
কথাটি বলে দুজনে টিকিট সংগ্রহ করতে চলে গেলো। সেখান গিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হলো। লাইনটি বেশ বড় নাহলেও ছোটও নয়। মুন মনেমনে বললো, ” আসলাম রহস্য খুঁজতে কিন্তু পেলাম মঞ্চনাট্য। ব্যাপারটি ঠিক হজম হচ্ছে না।”

মুন আর রিয়াদ টিকিট কিনে পিছনে ঘুরতেই অবাক। লাইনটি আগের তুলনায় দ্বিগুন হয়ে গেলো। দু’জনেই ভাবলো, ” এখানের মঞ্চনাট্য এত জনপ্রিয়।”
টিকিট নিয়ে দারোয়ানের কাছে গেলে জানতে পারলো সন্ধ্যার পর থেকে সবাইকে টিকিট দেখে ভিতরে ডুকানো হবে।
সন্ধ্যের পর ডুকতে পারবে শুনে মুন আর রিয়াদ গ্রামটি ঘুরে দেখতে বের হলো। সন্ধ্যে হওয়া অব্দি এই করেই সময় কাটাতে চাইছিলো আর কি! গ্রামের পথে শহরের অনেক মানুষকে আসতে দেখে কিছুটা অবাক হলো দু’জন। একে-অপরকে বলে উঠলো, ” মঞ্চনাট্য বেশ জনপ্রিয় বলতেই হবে।”
দু’জনেই কথাটি বলে একে-অপরের মুখোমুখি তাকালো। মুখের দিকে তাকিয়ে হেঁসে দিলো। তখন পাশ থেকে একজন বললো, ” হ মেলা সুনাম আমাদের মঞ্চনাট্যের। তাই তো গ্রামটি এত সুন্দরভাবে সাজানো যাতে সবাই মঞ্চনাট্যের পাশাপাশি গ্রামের সৌন্দর্যও উপভোগ করে। শহরের নামি-দামি মানুষরাও আসে মঞ্চনাট্য দেখতে।”
দু’জনে লোকটির কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলো। তারপর আচ্ছা বলে চলে গেলো।
_______
রিয়াদ আর মুন এখন ‘চন্দ্রকুঠি’ বাড়ির ভিতরে। গত দেড় ঘন্টা যাবত বসে আছে। সেরকম অস্বাভাবিক কিছু চোখে পড়ছে না। কিছুক্ষন পর মঞ্চনাট্য শুরু হবে। সবাই মঞ্চনাট্যের অপেক্ষা আছে।
সকলের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মঞ্চনাট্য শুরু হলো। রিয়াদ আর মুন মঞ্চনাট্যের পাশাপাশি সবদিক নজরে রাখছে। এভাবে হলরুমে বসে মঞ্চনাট্য দেখলে তাদের চলবে না তাদের অস্বাভাবিক কিছু খুঁজতে হলে ‘চন্দ্রকুঠি’ ভালোভাবে দেখতে হবে। লোকজনের ভিড় ভালোই জমেছে, দু’জনেই ঠিক করলো সুযোগ বুঝে কেটে পড়বে।
কথা অনুযায়ী রিয়াদ কেটে পড়লো। ধীরে ধীরে সে উপরের দিকে পা বাড়ালো সবার চক্ষুর আড়ালে। একটুপর মুনও একইভাবে উপরে চলে গেলো। উপর তলাটা ভালোভাবে লক্ষ করলো মুন। বাড়ির বাহিরে থেকে ভিতর বোঝা সম্ভব নয়, সেটা আজ বুঝলো মুন। বাহির থেকে যতটা বড় মনে হচ্ছিলো, এখন মনে হচ্ছে সেটা যথেষ্ট ছোট দেখাচ্ছিলো। চোখ দিয়ে অনুমান করে যা মনে হলো তাতে মনে কম করে হলেও দশটা রুম তো হবেই। এতে যে উপর তলা শেষ এমনটা ভাববেন না, কেননা এটা উত্তরদিকের রুম। দক্ষিন দিকে আরো দশটার মতো হবে। এ বাড়িটি যে বানিয়েছে সে নিশ্চয়ই অনেক ধনী ছিলো। রিয়াদ কোনদিকে গেছে তা মুন জানে না। সে উত্তর দিকের পথে হাঁটা দিলো। একে একে প্রতি রুমই উঁকি দিচ্ছিলো। দুটো রুম পেরেবোর পরই মনে হলো পরবর্তী রুমে কেউ বা কারা আছে। কারন কথায়র আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিলো। জানালা দিয়ে উঁকি দিতেও দেখতে পেলো তিন জন মহিলা কথা বলছে। হয়তো এরা ‘চন্দ্রকুঠির’ সদস্য। মুন এদের মাঝে মাধুরি আছে কিনা লক্ষ্য করলো। কিন্তু মাধুরিকে দেখতে পেলো না। এক পা দু পা করে সামনে এগোচ্ছিলো মুন সামনের রুমের জানালায় উঁকি দিয়ে কাউকে দেখতে পেলো না। তবে কারো গোঙানোর আওয়াজ পাচ্ছিলো। কেউ হয়তো আছে কিন্তু রুমটি অন্ধকার তাই কিছু দেখা যাচ্ছে না ।

মুন একে একে শেষপ্রান্তে চলে এলো। সেখানে এসে রিয়াদকে দেখতে পেলো। মুন রিয়াদের সামনে গিয়ে বললো, ” আপনিও এদিকে এসেছেন? তা কিছু পেয়েছেন?”
” না। সবকিছুই তো স্বাভাবিক মনে হচ্ছে।”
” কিভাবে স্বাভাবিক লাগলো? বেশির ভাগ রুমই আর সেসব রুম থেকে গোঙানির আওয়াজ আসছে, এটা স্বাভাবিক কিভাবে?”
” সেটা আমিও লক্ষ্য করেছি কিন্তু আমার তো তেমন অস্বাভাবিক মনে হলো না। হতে পারে ঐ রুমগুলোতে বাকিরা ঘুমাচ্ছে। এখানে তো অনেক লোক, সবাই তো একদিনে মঞ্চনাট্য করে না। শুনলেন না একেকদিন একেক দলের কাজ। কাল যারা করেছে তারা আজ ঘুমাচ্ছে।”

মুন মনেমনে ভাবলো, ” সত্যি কি সব স্বাভাবিক? তাহলে আপুর ফোনে আসা মেসেজটির মানে কি? কেন এই বাড়িতে ডাকলো আপুকে?”
রিয়াদের কথায় ভাবনা থেকে বের হলো মুন।
” চলুন দক্ষিন দিকটা দেখে আসি।”
” হুম চলুন।”

মুন আর রিয়াদ ফেরার জন্য উল্টো ঘুরতেই দেখতে পেলো একজন মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। মহিলাটি বললো, ” তোমরা উপরে এলে কেন? তোমাদের উপরে আসতে দিলো কে?”
” না মানে আসলে….”
মহিলাটি আবার বললো, ” কোন সিড়ি দিয়ে এসেছো?”
মুন আর রিয়াদ একটু ভাবলো। পরক্ষনেই মনে পড়লো ওরা যেদিক থেকে এসেছে তার উল্টো দিকের সিঁড়ি দিয়ে অনেকেই উপরে আসছিলো। তাই কোন কিছু না ভেবে সেটা বললো। মহিলাটি সেসব শুনে বললো, ” তাহলে এদিকে কি করছো তোমরা? তোমাদের তো দক্ষিন দিকে থাকার কথা?”
” আসলে আমরা… ”
এবারো মহিলাটি বললো, ” ভালো ঘর খুঁজছিলে?”
” হ্যাঁ।”
কোনকিছু না ভেবে হ্যাঁ তে হ্যাঁ মিলালো। মহিলাটি এবার বললো, ” এখানের বেশিরভাগ রুম বুক, আপনারা দক্ষিন দিকে যান, ওখান থেকেই বেছে নিতে হবে।”
মুন আর রিয়াদ কোনমতে আচ্ছা বলে সেদিকে পা দিলো। মহিলাটির কথা কিছুই বুঝলো না দু’জনে। তবে এটুকু বুঝেছে এখানে সত্যি গন্ডগোল আছে। খালি চোখে এখানে মঞ্চনাট্য হলেও বাস্তবে অন্যকিছু হয়। মুন আর রিয়াদ ধীরে ধীরে দক্ষিন দিকে যাচ্ছিলো। একটা রুম পের হয়েই থমকে দাড়ালো। এখান থেকে যতটুকু বোঝা যাচ্ছে, ওপাশের সিঁড়ি দিয়ে যারা উঠছে তাদের সবার হাত থেকে দুজন লোক সবুজ রঙের কিছু একটা নিচ্ছে। সেটা ভালোভাবে দেখে তাদেরকে ডুকতে দিচ্ছে এদিকটায়। রিয়াদ আস্তে করে বললো, ” ওদিকটা যাওয়া ঠিক হবে না। ঐ মহিলাটি একা ছিলো বলে হয়তো বেশি ঘাটায় নি আমাদের নিয়ে। তবে এখানে যাওয়ার আগে আমাদের জানতে হবে সবুজ রঙের ওটা কি দেখাচ্ছে তারা?”
মুনও আস্তে করে বললো, ” হ্যাঁ। চলুন আগের স্থানে চলে যাই।”
মুন আর রিয়াদ ধীরে ধীরে আগের স্থানে ফিরে এলো। কিছুক্ষনের মধ্যে এক মহিলার কর্কশ কন্ঠ শুনতে পেলো। মহিলাটি বলছে, ” এই সিঁড়িটা বন্ধ করা হয়নি কেন? তোমরা জানো না আজ ওপাশ থেকে কাজ করা হচ্ছে?”
মহিলাটির বলার সাথে সাথে দু’জন ঐ সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে গেলো। একজন লোক গিয়ে জিজ্ঞেস করলো এখানে পাহারা দেওয়ার কারন কি? তখন মহিলাটি বললো, ” বুঝেন ই তো উপরে মেয়েরা আছে। আপনাদের মাঝে কেউ যদি ভুল করে উপরে চলে যান তাই এই পাহারা আর কি?”
লোকটি স্বাভাবিক ভেবেই চলে এলো। কিন্তু আমাদের নজর ওপর সিঁড়িতে, সেখান থেকে লোকজনের ওঠা-নামা লেগেই আছে। তবে সবার ভিতরে একটা জিনিসের খুব মিল, একজন যাওয়ার ঠিক পাঁচ মিনিট পর অন্যজন যাচ্ছে। কেউ একধ্যানে লক্ষ্য না করলে বোঝা যাবে না দর্শকের সারি থেকেই একে একে অনেকে উপরে উঠছে।
মুন আর রিয়াদ দর্শকদের দিকে তাকালো, দেখলো সবাই মঞ্চনাট্য উপভোগ করছে। অন্যকোন দিকে তাকানোর কোন চিন্তা-ভাবনা নেই তাদের। এজন্য এই ব্যপারটা কারো নজরে পড়ছে না। দু একজনের নজরে পড়লেও তারা একজন একজনার বেশি কাউকে উঠতে দেখেনি তাই বেশি মাথা ঘামাচ্ছে না।

মুন আর রিয়াদ আবার চেয়ার ছেড়ে উঠলো। এবার নিচতলার রুমগুলো লক্ষ্য করছে৷ নিচ তলায় অস্বাভাবিক কিছুই নেই, শুধু প্রতি পাঁচ মিনিট অন্তর একের পর একজন উপরে উঠে যাওয়া ছাড়া। মুন রিয়াদের কাছে আস্তে করে বললো, ” বাড়ির ভিতর প্রবেশ করার আগে বাড়ির পিছনের দিকে একটি রুম দেখলাম চলুন সেদিকে যাই।”
” আপনি সেদিকে যান, আমি একটু ওপাশে যাই। জানার চেষ্টা করি ওনাদের হাতে সবুজ রঙের জিনিসটি কি?”
মুন আচ্ছা বলে ধীরে ধীরে বাহিরে চলে আসে। রিয়াদ যেখান থেকে লোকগুলো উঠে যাচ্ছে সেখানের একটি ফাঁকা চেয়ারে বসে পড়লো। বলে রাখা ভালো যেখান থেকে লোকগুলো উঠে যাচ্ছে সেখানের এড়িয়াটা একটু আলাদা। দর্শক সারির মধ্যে এখানে আলাদা করে দশ বারোজনের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে। রিয়াদ পাশে বসতেই সেই কর্কশ মহিলাটি একজন লোকের কাছে আসলো। লোকটি তাকে দেখেই বললো, ” এখানে আলাদা পর্দার ব্যবস্থা করেননি কেন? দর্শক সারি থেকে একজন লক্ষ্য করলেই তো দেখতে পাবে এখান থেকে লোক উঠে চলে যাচ্ছে?”
মহিলাটি নরম গলায় বললো, ” আসলে স্যার আজকে সবকিছুই কেমন গন্ডগোল হচ্ছে? বিকেলের দিকে পর্দা বের করতে গিয়ে দেখি রুমের ভিতর সব জ্বলে যাচ্ছে। যেগুলো ছিলো তা সব মঞ্চ সাজাতে চলে গেছে। আজকে এটা ক্যান্সেল করার কথা ছিলো কিন্তু আপনাদের বারণ করার মতো সময় ছিলো না আজ তাই….”
” থাক আর বলতে হবে না। তোমাদের সব কাজেই কোন না কোন সমস্যা লেগেই আছে।”
” স্যার এরকম ভাবে কেন বলছেন? এর আগে কখনো সমস্যা পেয়েছেন বলুন? আর চিন্তা করবেন না। দর্শকেরা সবাই মঞ্চনাট্য দেখতে ব্যস্ত, কেউ কিছু বুঝতে পারবে না। আজকের দিনটাই তো, কাল থেকে আবার সব আগের মতো হয়ে যাবে।”
” আচ্ছা আমি যাবো কখন?”
” আস্তে আস্তে চলে যান স্যার।”
” আচ্ছা।”
মহিলাটি চলে গেলো। যতটুকু বুঝলো রিয়াদ এরা এভাবে খোলামেলা কাউকে উপরে ওঠা-নামার কোন চান্স দেয় না। সম্পূর্ণ ব্যবস্থা করেই সবার চোখের আড়ালে করে। কিন্তু আজকে ব্যপারটা অন্য! কিন্তু এখানে হচ্ছেটা কি! এখানে কি হচ্ছে এটা বুঝতে হলে কারো থেকে সেই সবুজ রঙের জিনিসটি যোগাড় করতে হবে। রিয়াদ ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখলো, এখানে সে ছাড়া আরো তিনজন লোক বসে আছে। তারমাঝে যে লোকটি কথা বলছিলো সে উঠে যাচ্ছে। বাকি দুজন। রিয়াদ কিছু দূরে চিকনা করে লোকটিকে এদিকে আসতে দেখে মনেমনে একবার ভেবে নিলো ঠিক কিভাবে কি করবে?

অন্যদিকে মুন সকলের চোখের আড়ালে বাড়ির পিছনের সেই রুমটিতে গেলো। কেন জানি না ওর মনে হচ্ছে এখানে কিছু পেলেও পেতে পারে। রুমটি তালা বদ্ধ। আশেপাশে ভালোভাবে দেখে বুঝে নিলে এদিকটা এখন কেউ আসবে না। তাই একটা রিস্ক নিলো মুন, পাশে থাকা একটা ইট দিয়ে রুমটি তালা ভাঙলো। প্রথমে খুব আস্তে আস্তে বাড়ি দিলেও, কিছুক্ষন পর জোরে জোরে বাড়ি দিলো। সেইসাথে তালাটিও ভেঙে গেলো। দরজা খুলে ভয়ে ভয়ে ডুকলো মুন। রুমটি সম্পূর্ণ অন্ধকার। ফোনের ফ্লাস অন করে ঘরটি দেখে মুন থ হয়ে গেলো। এটা তো পুরনো জিনিসপত্রে ভরা একটি রুম। ভাঙা ফুলদানি থেকে শুরু করে টেবিল চেয়ার সবকিছু। এটাকে ভাঙাচোরা রাখার ঘর বললে বোধহয় মানানসই হবে। মুন ভেবেছিলো এখানে কিছু পেলেও পেতে পারে। কেন জানি না মন বলছিলো। কিন্তু ঘরটি দেখে ধারনা বদলে গেলো মুনের এখানে যে কিছু পাবে না বুঝে গেছে। ফিরে যাওয়ার জন্য ঘুরতেই পায়ের সাথে কিছু একটা বেজে পড়ে গেলো নিচে মুন। সাথে সাথে ভাঙাচোরা জিনিসপত্র মুনের গায়ের উপর পড়লো কিছু। বহু কষ্টে মুন নিজেকে ভাঙাচোরা থেকে মুক্ত করে উঠে দাঁড়ালো। ফোনটি নিচে পড়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে। মুন ফোনটি খুঁজে হাতে নিলো। ফোন অন করে করতেই ফোনের আলোতে মেঝেতে পড়ে থাকা একটা ছবিতে চোখ আটকে গেলো। ছবিটিতে ধুলো জমে ছিলো তাই আবছা দেখাচ্ছিলো। মুন ছবিটা হাতে তুলে নিলো এবং ধুলোগুলো ছাড়াতে লাগলো। ধুলো ছাড়াতেই মুনের চোখের সামনে যা ফুটে উঠলো তা দেখে মুন নিজেই চমকে গেলো। মুখ থেকে অস্পষ্ট সুরে বের হলো, ” অসম্ভব।”

চলবে,
[ আজ কি লিখছি নিজেই জানি না। কোথা থেকে লেখা কোথায় গিয়েছে। ভুলক্রুটি ক্ষমা করবেন]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here