চলো ভিজি বৃষ্টিতে পর্ব-১৯

0
890

বিঃদ্রঃ চলতি ” #চলো_ভিজি_বৃষ্টিতে ” গল্পটা শেষ হলেই #Howlingseason2 দিবো😇

#চলো_ভিজি_বৃষ্টিতে
#Tanjima_Islam
১৯
.
.
.
.
.
হাই স্পিডে ড্রাইভ করছে আরহাম, চোখ জোড়া রক্তের মতো লাল হয়ে গেছে তার!
দিগ্বিদিক জ্ঞান হারিয়ে কোথায় যাচ্ছে সে নিজেই জানেনা।
আজ যা কিছু হয়েছে তার জন্য দায়ী শুধুমাত্র আরহাম! সে যদি রিয়াকে সেদিন প্রোপোজ করতো! তাহলে আজ রিয়াকে ফাইয়াযের সাথে দেখতে হত না!

রিয়ার তাকে না চিনতে পারাটা বড্ড বেশি কষ্ট দিচ্ছে আরহামকে!
হটাৎ মনে হল, রিয়া সবাইকে চিনতে পেরেছে! তাহলে আমাকে কেন চিনতে পারলো না!!
রিয়া কি সত্যিই আমাকে চিনতে পারেনি! নাকি না চেনার ভান করেছে!!

সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে গাড়ি ঘুরিয়ে আবারও হসপিটালের দিকে রওনা দিল আরহাম।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
আফসা আর সুমু রিয়ার বাসা থেকে খাবার নিয়ে হসপিটালে এসেছে।
আজ রাতে রিয়ার সাথে থাকবে তারা।

কেবিনের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে দেখল রিয়া জানালার পাশে দাঁড়িয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে।

কারো পায়ের শব্দ পেয়ে ফিরে তাকালো রিয়া, আফসা আর সুমুকে দেখে বলল,” যাক এসেছিস তাহলে!

সুমু স্মিত হেসে বলল, ” হুম, নে এবার খেয়ে নে।

আফসা বক্স বের করতে করতে বলল, ” দ্যাখ সুমু! আন্টি কতকিছু রান্না করে পাঠিয়েছে!! আলুভর্তা, ধনেপাতা ভর্তা, ছোট মাছ ভাজি, খাশির মাংস ভুনা!

সুমু দেখে ন্যাকা কান্না করে বলল, ” দূর! আগে জানলে রাতে খেয়ে আসতাম না!

রিয়া হেসে বলল, ” খেয়ে এসেছিস তো কি হয়েছে!? এখন আবার খাবি আয়!!

রিয়া বলতে দেরি আফসা আর সুমু একরকম হামলে পড়ল সাথেসাথে!

সুমু খেতে খেতে রিয়াকে বলল,” জানিস দোস্ত, আরহামের অবস্থা আজ দেখার মতো ছিলো! তোর এক্সিডেন্ট হয়েছে শুনে এমনভাবে ছুটে এলো যেন ওর জান বেরিয়ে আসছে প্রায়!

আফসা মাথা নাড়িয়ে বলল, ” তা যা বলেছিস! সেই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলো বাইরে!! দুপুরে তো খেতেও যায়নি, বারবার “তুই কেমন আছিস” জানতে চাচ্ছিলো!!!

রিয়া সব শুনে শুধু অবাক হচ্ছে, আরহাম তার জন্য ছুটে এসেছিলো!
কিন্ত কেন!!? আরহাম যে আসলে কি চায় বুঝতে পারছেনা রিয়া!!!

সুমুর ডাকে ভাবনায় ছেদ পড়ল রিয়ার, ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করল, ” আরহাম কে!?

কথাটা শোনা মাত্রই আফসার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল!! সুমুর তো খাওয়া গলায় আটকে গেছে!!!

তাড়াতাড়ি পানি খেয়ে বলল,” মানে!? তুই আরহামকে চিনিস না!?

আফসা বাধা দিয়ে সুমুকে ফিসফিস করে বলল, ” ও তাহলে আরহামকে ভুলে গেছে!

সুমু হাসবে নাকি কাদবে বুঝতে পারছেনা, রিয়া আরহামকে ভুলে গেছে!

রিয়া অবাক হওয়ার ভান করে জিজ্ঞেস করল, ” কি হয়েছে!? কে এই আরহাম!!?

সুমু আমতাআমতা করে বলল, ” আরহাম! হ্যাঁ আরহাম, আরহাম হল তোর অফিসের বস!
বলে ক্যাবলার মতো হাসতে লাগল সুমু!!

রিয়া মাথা নাড়িয়ে বলল, ” ও আচ্ছা, তা উনি কেন ওভাবে ছুটে এসেছিলো!?

আফসা একটু ভেবে বলল, ” আসলে তোর বস না খুবই দিলদরিয়া টাইপের! তার এমপ্লয়িদের কিছু হলেই সে ঝাপিয়ে পড়ে সাহায্য করতে!!

রিয়ার পেট ফেটে হাসি আসছে এদের কথাবার্তা শুনে! তাও ভালো কেউ আর তাকে এসব নিয়ে কথা বলতে আসবেনা!!
রিয়া কোনোরকমে হাসি আটকে শুধু ও আচ্ছা বলে খেতে লাগল।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
ফাইয়াযকে ডিনার করতে ডেকে পাঠিয়েছে মিসেস ফাতেমা।
ফাইয়ায একটা চেয়ার টেনে নিয়ে বসতে বসতে বলল, ” কাল তো রিয়াকে রিলিজ দেবে, আমি যাবো ওকে নিতে। তুমি কিন্ত আগেই ইরা আন্টিদের বাসায় চলে যেও।

মিসেস ইরা খেতে খেতে বলল, ” ঠিকাছে!

একটু থেমে ডাকল,” আচ্ছা ফাইয়ায!!

ফাইয়ায মুখ তুলে বলল, ” হুম, বলো আম্মু!

মিসেস ফাতেমা ইতস্ততভাবে বলল, ” আমার কেন জানি মনে হচ্ছে ঐ আরহাম ছেলেটা রিয়াকে পছন্দ করে!

খেতে খেতে থমকে গেল ফাইয়ায, মিসেস ফাতেমা আবার বলল, ” সেদিন ওদের বাসায়ও দেখলাম একসাথে রুম থেকে বের হল! আবার আজ হসপিটালেও!! কোন অফিসের বস তার এমপ্লয়ির জন্য এমন করে বল তো!!!

ফাইয়ায কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা, মিসেস ফাতেমা ছেলের উত্তর না পেয়ে বলল,” দ্যাখ আমি এটা বলছি না যে, রিয়াও ছেলেটাকে পছন্দ করে। বাট শিওর না, হতেও তো পারে!

ফাইয়ায না চাইতেও হেসে বলল, ” তুমি খামোখা এসব নিয়ে ভাবছো আম্মু, ওর বস জানে যে আমাদের এনগেজমেন্ট হয়ে গেছে।

মিসেস ফাতেমা তবুও নিশ্চিন্ত হতে পারল না, থমথমে গলায় বলল, ” এনগেজমেন্ট হয়েছে, বিয়ে তো হয়নি!

ফাইয়ায ধৈর্য্য হারিয়ে বলল, ” ওকে ফাইন, আংকেল আন্টির সাথে কথা বলো। এই মাসেই আমরা বিয়ে করবো।

মিসেস ফাতেমা এবার কিছুটা স্বস্তি পেয়ে বলল,” বেশ, তাহলে কালই কথা বলবো। কিন্ত রিয়া!?

ফাইয়ায স্মিত হেসে বলল, ” ওকে ম্যানেজ করার দায়িত্ব আমার।

মনেমনে বলল, ” আর দেরি করা উচিৎ হবে না, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রিয়াকে নিয়ে কানাডায় চলে যাবো। তারপরই, এই আরহাম নামক প্যারা থেকে মুক্ত হতে পারবো!
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
হসপিটালের সামনে গাড়ি রেখে ভেতরে ঢুকল আরহাম। উদ্দেশ্য ডক্টর শোভনের সাথে দেখা করা!

ডক্টর শোভনের খোজ নিয়ে জানতে পারল তার আজ ডিউটি শেষ, দেখা করতে হলে কাল আসতে হবে!

আরহাম হসপিটাল থেকে বেরিয়ে যেতে গেলে মনে পড়ল রিয়ার কথা।
আচ্ছা ও কি এখন ঘুমিয়ে পড়েছে!? রাত কটাই বা বাজে এখন!?

ঘড়িতে তাকিয়ে দেখল রাত দশটা বাইশ বাজে! এখন নিশ্চয়ই ঘুমিয়ে পড়েছে, ঘুমালেই ভালো।
আড়াল থেকে রিয়াকে একনজর দেখে আসতে পারবে তাহলে।

দ্রুত পায়ে রিয়ার কেবিনের সামনে গিয়ে দাড়ালো আরহাম।
ঢুকবে কি ঢুকবেনা ভেবে পাচ্ছেনা সে, যদি রিয়া জেগে থাকে তখন!?

এই ভেবে চলে যেতে লাগল আরহাম। হটাৎ মনে হল, রিয়ার সাথে আজ কে থাকছে!?
নিশ্চয়ই আংকেল আন্টি আছে! আর যদি ফাইয়ায থাকে!!

দ্রুত পায়ে আবার ফিরে এলো আরহাম, আস্তে আস্তে দরজার নব ঘোরাতে গিয়ে খেয়াল করল দরজা লক!

আরহাম মাথার চুল গুলো দু’হাতে চেপে ধরে মনেমনে বলল, ” উফফ, আমার মাথাটা গেছে নাকি!! কেবিনের দরজা কেন খোলা থাকবে!?আর দরজা লক থাকলে রিয়াকেও বা দেখবো কিভাবে!?

মনে পড়ল, রিয়ার কেবিনের জানালা বরাবর একটা নিম গাছ আছে তো! সেটাতে উঠলেই তো দেখতে পাবে রিয়াকে!!

যেই ভাবা সেই কাজ, এক ছুটে সেই নিম গাছের নিচে গিয়ে দাড়ালো আরহাম।
এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখল, আশেপাশে তেমন কেউ নেই।

তবে মাঝেমধ্যে দুয়েকজন আসা যাওয়া করছে! নাহ কারো সামনে পড়লে ঝামেলা করতে পারে।
তাই সুযোগের অপেক্ষা করতে লাগল আরহাম।

নিম গাছের নিচে পায়চারি করছে আর ফোনে নিউজফিড স্ক্রল করছে।
কিছুক্ষণ পর খেয়াল করল, আশেপাশে কেউ নেই! এটাই সময়!! আর দেরি না করে গাছে উঠতে লাগল আরহাম!!!
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
ডিনার করে আফসাকে কল দিল শোভন, কয়েকবার রিং বাজতেই রিসিভ করল আফসা।

শোভন জিজ্ঞেস করল, ” কি করছেন!?

আফসা ফোন কানে নিয়ে বেড থেকে নেমে এলো, জানালা খুলতে খুলতে বলল,” এই তো খেয়ে উঠলাম মাত্র, আপনি কি করছেন!?

শোভন বেডে শুয়ে বলল,” রুমে আসলাম। মিস রিয়া কেমন আছে এখন!?

আফসা একবার রিয়ার দিকে তাকালো, খেয়েদেয়ে ঘুমে বিভোর হয়ে আছে রিয়া আর সুমু। আফসা স্মিত হেসে বলল, ” আছে ভালোই। বাই দ্যা ওয়ে, থ্যাংকস!

শোভন ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করল, ” কিসের জন্য!?

আফসা নখ দিয়ে জানালার গ্রিল খুটাতে খুটাতে বলল,” খুব ভয় পেয়ে গেছিলাম, একমুহূর্তের জন্য মনে হচ্ছিলো এই বুঝি রিয়াকে হারিয়ে ফেললাম। আপনি যদি সময়মত ওর ট্রিটমেন্ট না করতেন, আল্লাহ জানে কি হত!!

শোভন হেসে বলল, ” আরে এটাতে থ্যাংকস দেওয়ার কি আছে!? আমাদের পেশাই তো মানুষের সেবা করা। সেটাই যদি ঠিকমতো না করতে পারি তো ডাক্তার হলাম কি জন্য!?

প্রতিত্তোরে আফসা শুধু মুচকি হাসল, শোভন আবার বলল, ” তবে যদি স্পেশিয়ালি থ্যাংকস দিতে চান, তাহলে তো শুধু মুখে বললে হবে না মিস আফসা !

আফসা ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করল, ” তাহলে কি করতে হবে!?

শোভন বাকা হেসে বলল, ” আমাকে ট্রিট দিতে পারেন।
আফসা সাথেসাথেই রাজি হয়ে বলল, ” ওকে, চলেন কাল কোথাও একসাথে ডিনার করি!

শোভন একটু ভেবে বলল, ” বাইরে ডিনার করাটা একটু কমন হয়ে যায়। তারচেয়ে বরং আপনার বাসায় ডিনার করি!

আফসার বুঝতে বাকি নেই শোভন তার হাতের রান্না খেতে চাচ্ছে। কিন্ত সে তো রান্নার “র” ও জানেনা!

কিন্ত মুখে বলল,” ওকে! তাই হবে। বাসার লোকেশন টেক্সট করে দিবনি।

ফোন রেখে বাইরে তাকিয়ে দেখল, সামনের নিম গাছটা কেমন যেন কেপে কেপে উঠছে!
আরেকটু এগিয়ে ভাল করে দেখতেই চমকে উঠল আফসা!

চেচাতে চেচাতে বলল,” ও আল্লাহ গো! ভুউউত!!

আফসার চিৎকার শুনে ভড়কে গেল আরহাম, তারমানে রিয়ার সাথে আফসা আছে!
যাক এবার একটু স্বস্তি পেলো সে, তাড়াতাড়ি গাছ থেকে নেমে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ল হসপিটাল থেকে।

এদিকে আফসার চেচামেচি শুনে ধড়ফড়িয়ে উঠে বসেছে রিয়া আর সুমু।

আফসা এখনও চেচিয়ে যাচ্ছে, সুমু চোখমুখ খিচিয়ে বলল, ” কিরে ছেমরি! এই মাঝরাতে পেত্নীর মতো চেচাচ্ছিস কেন!!?

আফসা তাও চেচাচ্ছে,” ঐ নিম গাছে ভুউউত!

রিয়া চোখ ডলতে ডলতে বেড থেকে নেমে জানালায় উঁকি দিয়ে দেখল চারিপাশটা।

জানালা লক করে বলল, ” কই!? কিছুই তো নেই! নিশ্চয়ই তোর চোখের ভুল!

সুমু মুখ ভেংচি কেটে আফসাকে বলল, ” তোর দেখি মাথার সাথেসাথে চোখটাও গেছে রে ! ডক্টর শোভনকে দেখিয়ে এবার চশমা পরে নিস।

বলে চোখ টিপ দিল সুমু, আফসা মুখ ভেংচি কেটে বলল, ” তুই আগে কান দেখা, পাশে কেউ মরে পড়ে থাকলেও তো টের পাবিনা! কুম্ভকর্ণ!!

আফসা আর সুমুর কথা শুনে রিয়ার বুঝতে বাকি নেই এই শোভনই আফসার সেই শোভন!
বলতে হবে আফসার চয়েজ আছে, ছেলেটা আমাদের জিজু হিসেবে খারাপ হবে না!!
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
ঘড়িতে রাত এগারোটা বাজে! অথচ এখনও আরহাম বাসায় ফেরেনি!!
আরশি একবার ঘড়িতে তাকাচ্ছে আবার গেটের দিকে তাকাচ্ছে!!!

আজ তো রিয়ার সাথে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিলো ভাইয়ার।
কি হল কে জানে! সাতপাঁচ ভাবছে আর পায়চারি করছে আরশি।

গেট খোলার শব্দে দরজা খুলে বাইরে লনে গিয়ে দাড়ালো আরশি, গেট খুলে আরহামের গাড়ি ঢুকেছে! আরশি একরকম ছুটে গেলো, আরহাম গাড়ি থেকে নামতেই চমকে উঠল আরশি।

এ কি হাল হয়েছে তার ভাইয়ের!? মনে হচ্ছে যেন যুদ্ধ বিধ্বস্ত কোনো সৈনিক দাঁড়িয়ে আছে তার সামনে!!

আরহাম মলিন হেসে জিজ্ঞেস করল, ” এখনও ঘুমোস নি!?

আরশি উত্তর না দিয়ে বলল,” এ কি হাল হয়েছে রে তোর!? কোথায় ছিলি এতক্ষণ!!?

আরহাম বাসায় না ঢুকে বাগানের দোলনায় গিয়ে বসল।
আরশিও গিয়ে বসল তার পাশে, আরহাম একে একে সব খুলে বলল বোনকে!

সব শুনে হতবাক হয়ে গেছে আরশি, কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা সে।
তবে অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে, রিয়া শুধু আরহামকে ভুলে গেছে! এও কি সম্ভব!!?

আরহাম উঠে বাসার ভেতরে যেতে যেতে বলল, ” খুব খিদে পেয়েছে আপু!

আরশি উঠে আসতে আসতে বলল,” তুই গোসল করে ডাইনিং এ আয়। আমি ডিনার রেডি করছি!
.
.
.
.
.
গোসল সেরে নিচে নেমে এলো আরহাম, আরশি ডাইনিং এ খাবার সাজাতে ব্যস্ত।

আরহাম একটা চেয়ার টেনে বসতে বসতে জিজ্ঞেস করল, ” কেয়া কোথায়!?

আরশি ভাইকে প্লেট এগিয়ে দিয়ে বলল, ” ও ঘুমিয়ে পড়েছে।

আরহাম ও আচ্ছা বলে খেতে লাগল, আরশি খেতে খেতে বলল, ” রিয়া যে তোকে ভুলে গেছে ব্যাপারটা কিন্ত একদিক থেকে তোর জন্য ভালই হয়েছে!

আরহাম ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করল, ” মানে!? এতে আবার কিসের ভালো!!?

প্রতিত্তোরে আরশি মুচকি হেসে বলল, ” রিয়া তোকে ভুলে গেছে মানে তুই ওর সাথে যা করেছিস সবই ও ভুলে গেছে! সো টেনশন কিসের!!? ও তোকে চেনেই না, এবার তুই ওর সামনে একরাশ ভালবাসা নিয়ে হাজির হবি!! ব্যাস!!!

আরহাম কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল,” ওর সামনে গেলেই আমার তো সবকিছু মনে পড়ে যায়! তখন ওর সামনে নিজেকে স্বাভাবিক রাখবো কিভাবে!!?

আরশি খেতে খেতে বলল, ” শোন, আজ থেকে তুই ওর সাথে একদম নর্মাল বিহেভ করবি। ধীরে ধীরে নিজের ফিলিংস ওর সামনে এক্সপ্রেস করবি। মেমোরি লস হয়ে গেলেও মানুষের ফিলিংস তো একই থাকে নাকি, আই হোপ রিয়াও ধীরে ধীরে তোর প্রতি ওর ফিলিংস বুঝতে পারবে!

আরহাম মাথা নাড়িয়ে সায় দিয়ে বলল, ” হুম, বুঝেছি!

আরশি হেসে বলল, ” গুড! সো, এখন নো টেনশন, জাস্ট চিল!!
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
জানালা দিয়ে আসা সকালের নরম রোদ পড়েছে রিয়ার মুখে।
রিয়া পিটপিট করে চোখ মেলে দেখল আফসা তার পাশে শুয়ে ঘুমোচ্ছে, ওয়াশরুম থেকে পানির শব্দ আসছে! সুমু বোধহয়!!

আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসল রিয়া, চোখ ডলতে ডলতে বেড থেকে নেমে জানালার পাশে গিয়ে দাড়ালো। সামনের নিম গাছের পাতা গুলো হালকা বাতাসে দুলছে! নাম না জানা এক ঝাক পাখি উড়ে বেড়াচ্ছে নীল আকাশে!!

ঘড়িতে সকাল সাতটা বাজে, গত রাতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে খেয়াল নেই রিয়ার।
ডক্টর ঘুমের মেডিসিন দিয়েছিলো বলেই একটু ঘুমাতে পেরেছে রিয়া। নাহলে হয়তো সারারাত চাতক পাখির মতো বসে থাকতে হত।

আরহামকে ভোলার জন্য মেমোরি লসের মতো এতো সিরিয়াস ড্রামা করেছে রিয়া।
যদিও এতে শোভনের ক্রেডিট বেশি, সে না বললে হয়তো এসব কিছুই করতে পারতো না রিয়া।

কিন্ত এই মেমোরি লস হওয়ার ড্রামা ঠিক কতটা সাকসেসফুল হবে কে জানে!
তবে এটা নিশ্চিত আরহামের সাথে আর দেখা হবে না তার, এখান থেকে ফিরে গিয়ে আগে রিজাইন দেবে সে।
.
.
.
.
.
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here