#চলো_ভিজি_বৃষ্টিতে
#Tanjima_Islam
২৩
.
.
.
.
.
আফসা যেই বাসার অ্যাড্রেস দিল, তা শুনে পিলে চমকে উঠল শোভনের।
কুকুরটা যেই বাড়ির গেটে দাঁড়িয়ে আছে ওটাই সেই বাসা!
আফসা ফোন রাখতে রাখতে বলল, ” আচ্ছা আপনি আসুন তাড়াতাড়ি, কিচেনে অনেক কাজ বাকি! আমি রাখছি!!
বলেই কল কেটে দিল আফসা, শোভন ধীর পায়ে পেছনে তাকিয়ে দেখল, কুকুরটা গরগর করে শব্দ করছে!
কথায় বলে, ” যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই রাত পোহায়! শোভনের এখন সেই অবস্থা!
তার বোধহয় আজ আফসার হাতের রান্না খাওয়া হবে না! এখন এখান থেকে জান বাচিয়ে ফেরাই দায়!!
শোভন মনেমনে অশ্রাব্য গালাগালি করল কুকুরটাকে, এদিকে কুকুরটাও তার মনের কথা বুঝতে পেরেছে কি কে জানে!
এগিয়ে এসে দ্বিগুণ জোরে ঘেউঘেউ করতে লাগল কুকুরটা!!
শোভন ভয়ে কয়েক পা পিছিয়ে গেল, এ কুকুরের যা তেজ দেখছি শেষে শেকল ভেঙে তাড়া না করে!!!
শোভন আশেপাশে তাকিয়ে দেখল তেমন কেউ নেই! পাশেই একটা ফার্মেসি আছে কিন্ত শাটার লাগানো, এখন রাত কতই বা! মাত্র তো সাড়ে নয়টা বাজে!! এখনই দোকানপাট অফ করে দিলো!!!
কিছুটা দূরে একটা টং দোকান, সেখানে কয়েকজন মিলে আড্ডা দিচ্ছে।
তাদের কাছে গিয়ে কি হেল্প চাইবে!? কিন্ত কি বলবে! যে, কুকুরটাকে ভয় পাচ্ছি, ভাই আমাকে বাচান!!
ধুর! আফসা জানলে ভাববে আমি একটা ভীতুর ডিম!! ছিঃ কি একটা লজ্জার ব্যাপার!!!
সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে কুকুরটার দিকে করুন চোখে তাকালো শোভন।
বিড়বিড়িয়ে বলল,” আমি তোর কি ক্ষতি করেছি বল! লাইফে কোনোদিন তোদের ধারে কাছেও যাইনি!! একটু সরে দাড়া না!!!
কুকুরটা কি বুঝল কে জানে, ঘেউঘেউ করা থামিয়ে কিছুটা সরে দাড়ালো!
শোভন একটু স্বস্তির নিশ্বাস ছেড়ে বলল, ” শোভন! তুই না শুধু শুধুই ভয় পাস!! দ্যাখ কুকুরটাই তোর ভয়ে সরে দাঁড়িয়েছে!!!
শোভন একটু ভাব নিয়ে গেটের দিকে এগিয়ে গেল, গেটের মুখোমুখি যেতেই কুকুরটা আবারও তেড়ে এলো তার দিকে!
শোভন তো পড়িমরি করে গেটের ভেতর ঢুকেই দিল এক ছুট!
কুকুরটাও ছুট লাগালো তার পিছুপিছু!! শোভন ছুটতে ছুটতে বাড়ির ছোট ফুল বাগানে ঢুকে পড়ল!!!
এদিকে শেকল বাধা থাকায় কুকুরটা বাগানের সামনে দাঁড়িয়েই ঘেউঘেউ করছে!
গাছের আড়ালে গুটিশুটি মেরে বসে আছে শোভন!!
মনেমনে নিজেকে গালি দিচ্ছে আর বলছে,” কেন যে এই রাত বিরেতে লোকের বাড়িতে গিলতে এসেছি! খুব শিক্ষা হয়েছে আমার, এখান থেকে একবার পালাতে পারলে আর জীবনে এ মুখো হবোনা!!
.
.
.
.
.
আফসা একবার ঘড়িতে তাকাচ্ছে আবার গেটের দিকে তাকাচ্ছে।
রিয়া ডাইনিং এ খাবার সাজাতে ব্যস্ত, আফসাকে জিজ্ঞেস করল, ” কিরে! তোর ডাক্তারবাবু কোথায়!?
আফসা কিছুটা চিন্তিত গলায় বলল, ” সেটাই তো বুঝতে পারছিনা! কিছুক্ষণ আগে কল দিয়ে বলল সে নাকি বাসা চিনতে পারছেনা। অ্যাড্রেস দিলাম, এখনও কি খুজে পায়নি নাকি কে জানে!?
রিয়া সব রেডি করে বলল, ” এক কাজ কর ওনাকে আবার কল দে আর তুই গেটের বাইরে গিয়ে দাড়া। তাহলে ওনার চিনতে সুবিধা হবে!
আফসা ভয় পেয়ে বলল,” এতো রাতে গেটের বাইরে যাবো! তাও আমি একা!!?
রিয়া ভ্রু কুচকে তাকালো, আফসা রিয়ার হাত ধরে বলল, ” তুইও চল না দোস্ত!
রিয়া ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলে বলল, ” আচ্ছা চল।
.
.
.
.
.
ফোনের রিংটোন পেয়ে চমকে উঠল শোভন, পকেট থেকে ফোন হাতে নিয়ে দেখল আফসা কল দিয়েছে! দেহে যেন প্রাণ ফিরে এসেছে শোভনের, তাড়াতাড়ি কল রিসিভ করতেই আফসা জিজ্ঞেস করল, ” কোথায় আপনি!? এখনও এলেন না যে!!
শোভন জোর করে হেসে বলল, ” এই তো আপনার বাসায়!
আফসা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, ” মানে!? আমার বাসায়!! আমিতো গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে আছি!!!
শোভন একটু ধাতস্থ হয়ে বলল, ” আপনাদের বাসার বাগানে! বাগানে আমি!!
আফসা চমকে উঠল, রিয়া তাকে খোচা দিয়ে ইশারায় জিজ্ঞেস করল, ” কি হয়েছে!? কোথায় শোভন!!?
আফসা ফোন কানে নিয়ে গেটের ভেতর ঢুকতে ঢুকতে বলল,” বলছে সে নাকি বাগানে!
রিয়া অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, ” হোয়াট!? বাগানে কেন!!?
আফসা বাগানের দিকে যেতে যেতে বলল, ” আরে আমি কিভাবে জানবো!!!
বাগানের সামনে গিয়ে দেখল বাড়ির কুকুরটা বাগানের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ পরপর ঘেউঘেউ করছে!
আফসা কল কেটে ডাকল,” মি. শোভন! মি. শোভন!! কোথায় আপনি!?
শোভন আস্তে আস্তে বাগান থেকে বেরিয়ে এলো, রিয়া তো ভেবেই পাচ্ছেনা শোভন কেন বাগানে ঢুকে ঘাপটি মেরে বসে ছিলো!
.
.
.
.
.
ঢকঢক করে এক গ্লাস পানি খেয়ে গ্লাসটা টেবিলে রাখল শোভন।
রিয়া আর আফসা জিজ্ঞাসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে।
শোভন কিছুটা ধাতস্থ হয়ে বলল, ” আপনাদের বাসার কুকুরটার বোধহয় আজ মন মেজাজ ভালো ছিলোনা!
রিয়ার বুঝতে বাকি নেই শোভন এতক্ষণ কুকুরের তাড়া খেয়ে বাগানে লুকিয়ে ছিলো!
সে হাসবে নাকি কাদবে বুঝতে পারছেনা, আহারে বেচারা!
খাবার খেতে এসে শেষমেশ কুকুরের তাড়া খেতে হল!!
আফসা জোর করে হেসে বলল, ” না মানে, বাসায় অপরিচিত কেউ এলেই “বুলু” চেচামেচি করতে থাকে। আমার একটুও মনে ছিলো না, নাহলে আমি আগেই আপনাকে
শোভন বাধা দিয়ে বলল, ” আরে না সমস্যা নেই, এমনিতেও অনেক দিন হল এক্সারসাইজ করিনা। আজ সেটাও হয়ে গেল!!
মনেমনে বলল, ” শালা বুলু না হুলু! কুকুরের নাম আবার বুলুও হয়!!
রিয়া কোনোরকমে হাসি আটকে রেখে বলল, ” আচ্ছা ভাইয়া বাদ দিন, যান ফ্রেশ হয়ে আসুন। খাবার ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে!
শোভনও আর কিছু না বলে ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে গেল।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
ল্যাপটপের স্ক্রিনে তাকিয়ে আছে ফাইয়ায, কানাডায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে জবের জন্য এপ্লাই করছে সে।
সামনের মাসেই তাদের বিয়ের প্রোগ্রাম। পরের মাসে মা আর রিয়াকে নিয়ে কানাডায় চলে যাবে ফাইয়ায।
হটাৎ আননোন একটা মেয়ের আইডি থেকে টেক্সট এসেছে,” হ্যালো!
ফাইয়ায চ্যাট হেডটা সরিয়ে আবার কাজে মন দিল। কিছুক্ষণ পর আবার টেক্সট এলো, ” কেমন আছো ফাফাইয়ায!?
এবারের টেক্সট দেখে ফাইয়ায বেশ ভড়কে গেল, ফাফাইয়ায আবার কে! সে রিপ্লাই করল,” এক্সকিউজ মি, ঠিক চিনলাম না!
রিপ্লাই এলো,” আমার প্রোফাইলে যাও, আই হোপ চিনতে পারবে!!
ফাইয়ায প্রায় সাথেসাথেই মেয়েটার প্রোফাইলে গেল, কভারে স্টকহোমের “রয়াল কলেজ অব মিউজিক” এর কোনো এক প্রোগ্রামে তোলা ছবি দেওয়া।
প্রোফাইল পিকচারে ট্যাপ করতেই সাদা বরফের মাঝে মেয়েটার হাস্যজ্বল ছবি ভেসে উঠল!
ছবিটা দেখে ফাইয়াযের মুখ দিয়ে অস্ফুটস্বরে বেরিয়ে এলো, ” আরশি!
প্রায় সাথেসাথেই টেক্সট এলো, ” এবার চিনতে পেরেছো!? ফাফাইয়ায!!
ফাইয়ায নিজের নামের এমন বারোটা বাজতে দেখে বলল, ” হ্যাঁ হ্যাঁ চিনেছি ম্যাম! এবার আমার নামটাকে রেহাই দিন!!
প্রতিত্তোরে আরশি একটা ভয়েস রেকর্ড সেন্ড করল, খিলখিল করে হেসে বলল, “রেহাই দিতে পারি, তবে একটা শর্তে!
ফাইয়ায টেক্সট করল,” কি শর্ত শুনি!
আরশি একটু ভেবে লিখল,” আগে রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট করো, দেন বলছি।
ফাইয়ায সাথেসাথে এক্সেপ্ট করল, এদিকে আরশি শুধু মুচকি মুচকি হাসছে!
আরশির কাজ কারবার দেখে কেয়ার তো চোখ কপালে!
আরশি বেডে উল্টো হয়ে শুয়ে শুয়ে ফোন ঘাটছে, পা দুটা এদিক ওদিক দোলাচ্ছে!!
কেয়া আরশির রুমে এসেছিলো রুম গোছাতে, এসে আরশিকে দেখে থ হয়ে গেছে সে!!!
আড় চোখে আরশিকে দেখে মনেমনে বলছে, ” নিশ্চয়ই ম্যাম কোনো ছেলের সাথে কথা বলছে! কিন্ত সে কে!! ঐ আয়ান শয়তানটা না তো!!! নাহ, আমাকে যেভাবেই হোক জানতেই হবে!!!!
পা টিপে টিপে আরশির পেছনে গিয়ে উঁকিঝুঁকি মারতে লাগল কেয়া।
আরশির সেদিকে হুস নেই, সে ফাইয়াযকে টেক্সট দিল,” ফাফাইয়ায! তুমি না খুব ভালো, কি সুন্দর আমার কথা শোনো!! আর কেউ না আমার কথা শোনেই না!!!
ফাইয়ায টেক্সট করল, ” থ্যাংকস, বাট আমার নামটা!!
আরশি হালকা রেগে টেক্সট করল,” ধুর! এতো নাম নাম করছো কেন!! নাম দিয়ে কি নৌকা বানাবে নাকি!!?
ফাইয়ায টেক্সট করতে করতে আরশির প্রোফাইল ঘুরছে।
মেয়েটা বেশ ভ্রমণপিয়াসী, সুইডেনের খুব কম জায়গা আছে যেগুলোতে হয়তো আরশি এখনও যায়নি!
পুরো টাইমলাইন জুড়ে শুধু আরশির ট্রাভেলের পিকচার! সাথে তার মোহনীয় সেই হাসি!!
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
ব্রেকফাস্ট করতে বসেছে সুমুর ফ্যামিলি, গতকাল বাড়িতে এসেছে সে।
মিসেস সালেহা আড় চোখে সুমুর আব্বুকে কি যেন বলছে। সে বেচারা ঠিকভাবে বুঝতেও পারছেনা।
সুমু খেয়াল করল তার আব্বু আম্মু বেশ কিছুক্ষণ ধরে নিজেদের মধ্যে কি যেন ফিসফাস করছে!
সুমু গলা খাঁকারি দিয়ে বলল, ” কি বলবে বলে ফেলো! নয়তো তোমাদের পেট খারাপ করবে!!
মিসেস সালেহা হেসে বলল, ” না মানে, বলছিলাম যে পলাশ আছে না! ঐ যে নিলি আপার ভাবীর বোনের ননদের দেবরের ছেলে!!
সুমু স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মায়ের দিকে। এ কেমন সম্পর্কের প্যাঁচ! আর এই পলাশটাই বা কোন গুষ্ঠির খ্যাতা বালিশ!!?
পাশ থেকে তার বাবা গণি বলল,” পলাশ ছেলেটা খুব ভাল বুঝলি, একটা কোম্পানিতে বেশ ভালো বেতনে চাকরি করে!
মিসেস সালেহা সেইসাথে তাল মিলিয়ে বলল,” আরে শুধু কি ভালো চাকরি! ছেলে যেমন দেখতে সুন্দর তেমনই তার আলাপ ব্যবহার!!
সুমু একবার বাবার দিকে তাকাচ্ছে আবার মায়ের দিকে।
সুমুর বাবা গণি হেসে বলল, ” তা আর বলতে! আর ছেলে তো আমাদের চেনা জানা!! তোকেও খুব পছন্দ করে, এখন তুই একবার
বাবাকে থামিয়ে সুমু ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস,” নিলিটা কে!?
মিসেস সালেহা কিছু বলতে গেলে সুমু বাধা দিয়ে বলল, ” আর কে এই পলাশ!!? তোমাদের মাথায় আসলে কি ঘুরছে বলো তো!!!
মিসেস সালেহা জোর করে হেসে বলল, ” আরে আরে শান্ত হ! মেয়ে বড় হলে বাবা-মায়ের মাথায় বিয়ে দেওয়া ছাড়া কি আর ঘুরবে হ্যাঁ!!?
বিয়ের কথা শুনে সুমু যেন আকাশ থেকে পড়ল, চেচিয়ে উঠলো, ” মানে!!? কার বিয়ে!!!??
সুমুর বাবা এবার বলেই ফেলল,” কার আবার!? তোর বিয়ে!! এতো অবাক হওয়ার কি আছে!!? তুই নিজেই তো কদিন আগেও বিয়ের জন্য লাফাচ্ছিলি!!!
সুমু কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা, সে তো বিয়ে করতেই চায়।
অবশ্য কে না বিয়ে করতে চায়, কিন্ত সে তো সায়নকে ভালবাসে!
আর সায়নকেই বিয়ে করতে চায়!! মাঝখানে এই পলাশটা কোত্থেকে এলো কে জানে!!!
সুমু কিছু বলছেনা দেখে, তার বাবা ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করল, ” তুই কি কাউকে পছন্দ করিস!?
সুমু কিছু বলার আগেই মিসেস সালেহা বলল, ” ধুর! কি যা তা বলছো!! ওর আবার কাকে পছন্দ থাকবে!!!? থাকলে আমাকে জানাতো না!!!!
সুমু চুপ করে গেল, এখন সায়নের ব্যাপারটা বলা উচিৎ হবে না। পরে সব খুলে বলবে সে।
সুমুর বাবা মাথা নাড়িয়ে বলল,” বেশ, তাহলে আর প্রব্লেম কি!? দুজন দুজনকে দেখুক, তারপর বাকি কথা এগোবে!
মিসেস সালেহা সায় দিয়ে বলল, ” আমি তো সেটাই বলছি।
মেয়েকে বলল,” আজ বিকেলে একটু সাজুগুজু করে থাকিস, পলাশের ফ্যামিলি তোকে দেখতে আসবে!
সুমু না চাইতেও রাজি হল, তার ইচ্ছে করছে ঐ পলাশের সাথে পলাশীর যুদ্ধ বাধিয়ে দিতে!
ব্যাটা নেড়ি! আর মেয়ে খুজে পাস নি!!? শেষমেশ আমার গলায় ঝোলার ধান্দা!!!
ওয়েট তোর বিয়ে করার স্বাদ আমি মেটাচ্ছি!!!!
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
আফসা ঘুম ভেঙে উঠে দেখল পাশে রিয়া নেই! ঘড়িতে সকাল নয়টা পয়তাল্লিশ বাজে, কিন্ত রিয়া কোথায়!!? অফিসে গেছে হয়তো!!!
বেড থেকে নেমে ড্রেসিং টেবিলের সামনে যেতেই রিয়ার ফোন আর হ্যান্ডব্যাগটা দেখতে পেলো। তার মানে রিয়া যায়নি! তাহলে কোথায় ও!!?
ব্যালকনিতে গিয়েও পেলোনা, ওয়াশরুমে নেই! হটাৎ মনে হল ছাদে যায়নি তো!!?
আফসা দ্রুত পায়ে ছাদে গিয়েই রিয়ার দেখা পেলো। ছাদের রেলিঙে হেলান দিয়ে মলিন মুখে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে রিয়া!
সুমুকে আসতে দেখে রিয়া স্মিত হেসে জিজ্ঞেস করল, ” কিরে কখন উঠলি!?
সুমু ঘুমের হাই তুলতে তুলতে বলল,” এই তো কিছুক্ষণ আগে, তুই কখন উঠেছিস!?
রিয়া বলল,” ফজরের নামাজ পড়তে উঠেছিলাম, তারপর আর ঘুম আসছিলোনা। তাই ভাবলাম একটু ছাদ থেকে ঘুরে আসি।
আফসা খেয়াল করল রিয়াকে কেমন যেন মনমরা লাগছে! কি হয়েছে রিয়ার!!?
রিয়ার পাশে বসতে বসতে আফসা জিজ্ঞেস করল, ” কি হয়েছে রে তোর!? এমন মনমরা হয়ে বসে আছিস যে!!?
রিয়া পাশ থেকে একটা ইটের ছোট্ট টুকরো নিয়ে ঘষতে ঘষতে বলল, ” আমার ইমিডিয়েটলি দশ লক্ষ টাকা লাগবে! কিন্ত বুঝতে পারছিনা কিভাবে ম্যানেজ করবো!!
আফসা চমকে উঠে জিজ্ঞেস বলল,” দশ লক্ষ টাকা! হটাৎ এতো টাকা কিসের জন্য লাগবে!!?
রিয়া একটু থেমে আবার বলল,” গতকাল অফিসে রিজাইন দিতে গেছিলাম। কিন্ত সেখানে নাকি এক বছরের আগে নিউ এমপ্লয়িরা রিজাইন দিতে গেলে নগদ দশ লক্ষ টাকা পে করতে হয়!
আফসা একটু ভেবে বলল, ” এতো প্যারা নিচ্ছিস কেন! আংকেলকে বললেই তো টাকাটা তোকে দিয়ে দেবে।
রিয়া বলল, ” আব্বুকে বললে তো দেবে ঠিকাছে। বাট যখন জিজ্ঞেস করবে কিসের জন্য এতো টাকা লাগবে! তখন কি বলবো!!? রিজাইন দেবো বললেই নানান প্রশ্ন করতে থাকবে! কেন রিজাইন দেবো!! কি হয়েছে না হয়েছে!!!
আফসা কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে জিজ্ঞেস করল,” আমিও তো বুঝতে পারছিনা, তুই হটাৎ রিজাইন দিচ্ছিস কেন!!?
.
.
.
.
.
(চলবে)