#চলো_ভিজি_বৃষ্টিতে
#Tanjima_Islam
৮
.
.
.
বেডে হেলান দিয়ে ল্যাপটপে মুভি দেখছে রিয়া। মুভি মুভির মতো চলছে, স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকলেও রিয়ার মন অন্য কোথাও!
আজ আরহামের বলা কথাটা বারবার কানে বাজছে তার।
আরহাম তো শ্বশুরবাড়ি যাবে বলছিলো, তাহলে আমার বাসার সামনে এসে কেন বলল,” যেখানে আসার সেখানেই এসেছি!!?
তাহলে কি আরহাম আমার বাসার কথা বলছিলো!?
ভাবতেই লজ্জায় আরক্তিম হয়ে গেল রিয়া, হটাৎ সেদিন পার্টিতে আরহামের সাথে নাচের দৃশ্য মনে পড়ে গেল!
আরহাম একেতেই অসম্ভব হ্যান্ডসাম একটা ছেলে!! কিন্ত সেদিন তাকে যেন রূপকথার সেই সাদা ঘোড়ায় চড়ে আসা রাজপুত্রের মতো লাগছিলো!!!
আরহামের বাহুডোরে আবদ্ধ হয়ে অজানা সুখে ভাসছিলো রিয়া!
আরহামের সেই গভীর চাহনি!! নাচের তালে তালে প্রতিটা স্পর্শ!!!
উফফ, ভাবতেই রিয়ার নিজেকে কেমন পাগল পাগল লাগছে।
কিন্ত পরক্ষণেই আরহামের কিস করা মনে পড়তেই সম্বিত ফিরল রিয়ার।
সে আরহামকে নিয়ে মনেমনে স্বপ্ন বুনলেও, আরহামের হয়তো রিয়াকে মনেই পড়ে না!
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ল্যাপটপ অফ করে দিল। বেড থেকে নেমে ধীর পায়ে ব্যালকনিতে গিয়ে দাড়ালো রিয়া।
ঘুটঘুটে অন্ধকার চারিদিকে, আকাশে গোল থালার মতো চাঁদ উঠেছে।
ব্যালকনিতে লাগানো ফুলের সুবাস ভাসছে বাতাসে।
আজকাল কি যেন হয়েছে রিয়ার, আরহামকে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে থাকে সে।
আরহামকে একটা নজর দেখলেও মনে অদ্ভুত শান্তি অনুভব হয়।
কিন্ত আরহামের পাশে অন্য কাউকে কেন জানি সহ্য হয়না।
ইকরা যখন আরহামের গায়ে হাত বুলিয়ে হেসে হেসে কথা বলে!
তখন ইচ্ছে করে শাকচুন্নিটার চুল ছিড়ে ওর গলায় পেচিয়ে ধরতে!!
কথাটা মনে আসতেই হেসে ফেলল রিয়া, কিসব ভাবছে সে! ইকরা তো আরহামের গার্লফ্রেন্ড, আরহামের গায়ে সে হাত বুলাক বা হেসে কথা বলুক তাতে রিয়ার কি!?
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশে ঝুলে থাকা রূপোলী চাঁদটা দেখছে আরহাম।
মনেমনে বলল, “এতো বিশাল মহাকাশে তুমি একা চাঁদ!
এই বিশাল পৃথিবীতে আমিও ঠিক তোমার মতই একা!!
আগেও তো একাই ছিলাম, তখন তো এই একাকিত্ব আমাকে কষ্ট দেয়নি!
তাহলে আজ কেন এমন হচ্ছে!?
এই সবকিছুর জন্য রিয়া দায়ী, রিয়ার আগে তো অনেক সুন্দরী মেয়েই আমার লাইফে এসেছে! কিন্ত কাউকে আমি এক্সেপ্ট করিনি!!
কিন্ত রিয়াকে দেখে কি হল আমার!? বৃষ্টি ভেজা সেই মেয়েটা!!
হুট করেই আমার জীবনে এসে সব ওলট-পালট করে দিল!!!
আমার এই ওলট-পালট জীবন তুমিই ঠিক করবে রিয়া!
এখন তোমার সাথে যা হবে, তার জন্য তুমিই দায়ী থাকবে।
বলতে বলতে বাকা হাসি ফুটল আরহামের ঠোঁটে।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
কাচা হলুদ রঙের টপস আর গাড় সবুজ রঙের স্কার্ট পরেছে রিয়া।
চুল গুলো হাফ বান করে বেরিয়ে পড়ল অফিসের উদ্দেশ্যে।
আরহাম অফিসে ঢুকে দেখল রিয়া বেশ মনোযোগ দিয়ে কাজ করছে।
আরহাম গলা খাকারি দিয়ে বলল, ” রিয়া! কফি নিয়ে এসো আমার রুমে।
রিয়া মাথা নাড়িয়ে সায় দিয়ে কফি বানাতে চলে গেল, আরহামকে দেখে চিত্রা একটা ফাইল এগিয়ে দিয়ে বলল, ” স্যার, কালকে ফেব্রিকস এর যে ফটোশুট ছিলো তার সব ডিটেইলস আর ফটো এসে গেছে।
আরহাম ফাইল গুলোকে নিয়ে রুমে চলে গেল। ফাইল চেক করে ফটো গুলো দেখছে সে, হটাৎ কয়েকটা ফটোতে চোখ আঁটকে গেল তার। মুগ্ধ হয়ে দেখছে সে!
সুইমিংপুলে পা ডুবিয়ে বসে আছে রিয়া! যেন কোনো এক মৎস্যকন্যা!!
রিয়ার ডাকে ভাবনায় ছেদ পড়ল আরহামের, ফটো গুলো ফাইলে ঢুকিয়ে বলল, ” কাম ইন
রিয়া ভেতরে ঢুকে টেবিলে কফি রেখে চলে যাচ্ছিলো।
আরহাম ডেকে বলল, ” রিয়া! চলো আজ বাইরে লাঞ্চ করি!!
রিয়া মুচকি হেসে বলল, ” ঠিকাছে স্যার।
.
.
.
নিজের ডেস্কে এসে বসল রিয়া, আরহামের সাথে লাঞ্চ করতে যাবে ভেবে খুশিতে বাক-বাকুম করছে তার মন!
হটাৎ ফোনের রিংটোন পেয়ে ফোন হাতে নিয়ে দেখল ফাইয়ায কল করেছে!! আজ কেন জানি ফাইয়াযের কল দেখেও রিয়ার বিরক্ত লাগছেনা। আরহামের সাথে লাঞ্চে যাবে ভেবে সবকিছুই কেন জানি খুব ভাল লাগছে তার!!
রিয়া খুশি মনে কল রিসিভ করে বলল, ” হ্যালো, ফাইয়ায! কেমন আছো!?
.
.
.
ফাইয়াযের সাথে কথা বলে ফোন রেখে দিল রিয়া, সে নাকি আজকে সন্ধ্যার ফ্লাইটে দেশে ফিরবে!
ফাইয়ায দেশে ফিরবে শুনে রিয়ার কেমন যেন খারাপ লাগছে।
কিন্ত তার তো সবথেকে বেশি হ্যাপি হওয়ার কথা!
রিয়া কপালে হাত দিয়ে একদৃষ্টিতে ফোনস্ক্রিনে তাকিয়ে আছে।
ফাইয়ায দেশে ফিরলে তাদের বিয়ে হয়ে যাবে, কিন্ত রিয়ার পক্ষে এ বিয়ে করা কি সম্ভব হবে!!?
আরহাম তার লাইফে না এলেও সে ফাইয়াযকে বিয়ে করতো না।
কারণ যাকে সে ভালই বাসেনা, তাকে বিয়ে করার কোনো মানেই হয়না।
কিন্ত ফাইয়ায যদি জিজ্ঞেস করে, কেন তাকে বিয়ে করবোনা! কি বলবো তখন!!?
.
.
.
.
.
লাঞ্চের টাইম হয়ে গেছে, আরহাম রিয়ার ডেস্কে এসে দেখল রিয়াকে বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছে!!
আরহাম গলা খাকারি দিয়ে বলল, ” রিয়া! আর ইউ ওকে!!?
আরহামের গলা পেয়ে চমকে উঠল রিয়া, আমতাআমতা করে বলল, ” হ্যাঁ! হ্যাঁ স্যার ঠিকাছি!!
রিয়ার কথা শুনে আরহামের কেমন যেন খটকা লাগলো।
তাও বলল,” তো, চলো। লাঞ্চ করতে বের হই!
রিয়া কিছুক্ষণ আরহামের দিকে তাকিয়ে বলল, ” ওহ! হ্যাঁ লাঞ্চ!! চলুন চলুন।
বলেই রিয়া পার্স নিয়ে হাটা শুরু করল।
.
.
.
.
.
অফিসের কাছাকাছি একটা রেস্টুরেন্টে লাঞ্চ করতে এসেছে আরহাম আর রিয়া।
আরহাম মেন্যুকার্ড দেখতে দেখতে জিজ্ঞেস করল, ” রিয়া! তুমি কি খাবা অর্ডার দাও!!
রিয়া স্মিত হেসে বলল, ” আপনি যা খাবেন, আমার জন্যও তাই অর্ডার করুন স্যার।
আরহাম বিরক্ত হয়ে বলল, ” আগে তুমি আমাকে এই স্যার স্যার ডাকা বন্ধ করো! জাস্ট আরহাম ডাকো!!
ওয়েটার ডেকে খাবার অর্ডার দিল আরহাম, খেয়াল করল এখানে এসেও রিয়া বেশ অন্যমনস্ক! মনে হচ্ছে কোনো কিছু নিয়ে টেনশন করছে সে!!
আরহাম আস্তে করে ডাকল,” রিয়া!
রিয়ার সেদিকে খেয়াল নেই, রেস্টুরেন্টের থাই গ্লাস ভেদ করে দূরে কোথাও তাকিয়ে আছে সে।
আরহাম এবার বেশ স্পষ্ট করে ডাকল,” রিয়া!!
কিন্ত রিয়ার কোনো হেলদোল নেই, আরহাম রিয়ার দিকে হালকা ঝুকে হাত নাড়াচ্ছে রিয়ার মুখের সামনে।
রিয়া সম্বিত ফিরে তাকালো আরহামের দিকে, আরহাম হেসে বলল, ” কার চিন্তায় বিভোর!? বয়ফ্রেন্ড!?
রিয়া তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল, ” বয়ফ্রেন্ড থাকলে তো বেচে যেতাম!!!
আরহাম ভ্রু নাচিয়ে বলল, ” তো তুমি কি বয়ফ্রেন্ড খুজছো!?
রিয়া অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, ” আমি কখন বললাম! আমি বয়ফ্রেন্ড খুজছি!?
আরহাম চেয়ারে সোজা হয়ে বসে বলল, ” এই মাত্রই তো বললে!
রিয়া নিজেকে সংযত করে জিজ্ঞেস করল, ” সত্যিই কি এরকম বলেছি!?
আরহাম একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, ” রিয়া আই থিংক তুমি কোনো কিছু নিয়ে টেনশন করছো। যদি চাও আমার সাথে শেয়ার করতে পারো।
রিয়া তাকিয়ে আছে আরহামের দিকে, আরহাম কিছু একটা ভেবে বলল, ” ওকে, এখন আমি তোমার বস না। অ্যাজ এ ফ্রেন্ড, আমার সাথে সবকিছু শেয়ার করতে পারো।
.
.
.
এরমধ্যেই ওয়েটার খাবার সার্ভ করে গেছে।
আরহামের কথায় বেশ ইজি ফিল করছে রিয়া, মনে হচ্ছে এই সিচুয়েশনে একমাত্র আরহামই তাকে হেল্প করতে পারবে।
আরহাম রিয়াকে খেতে বলে খাওয়া শুরু করল, রিয়া কাটা চামচটা প্লেটে ঘোরাতে ঘোরাতে বাম হাতটা টেবিলের ওপর রেখে বলল,” আমি একজনের সাথে এনগেজড।
রিয়ার মুখে এনগেজড কথাটা শোনা মাত্রই আরহামের মুখ থেকে রক্ত সরে গেল!
রিয়ার বাম হাতের আঙুলে ডায়মন্ডের বড় রিং দেখে আরহামের ভেতরটা যেন দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে!!
আরহাম আহত চোখে রিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল, ” মানে!!!
রিয়া নিজেকে সংযত করে বলল, ” ফাইয়ায এবরোডে স্টাডি করতে যাওয়ার আগে, আমার সাথে এনগেজমেন্ট করে গেছে। আমাদের দুজনের ফ্যামিলি থেকে ডিসিশন নেওয়া হয়েছিলো যে, এখন এনগেজমেন্ট করা থাক, ফাইয়ায স্টাডি কম্পিলিট করে দেশে ফিরলে তখন বিয়ে হবে!
.
.
.
কথা গুলো আরহামকে বলতে গিয়ে রিয়ার কেমন যেন গলা ধরে আসছে!!
এক গ্লাস পানি নিয়ে ঢকঢক করে খেল সে, আরহাম শার্টের ওপরের বোতাম কয়টা খুলে নিজেকে রিল্যাক্স করার চেষ্টা করছে।
রিয়া পানি খেয়ে বলল, ” আমি আর ফাইয়ায ছোট থেকে খুব ভালো ফ্রেন্ড ছিলাম। যদিও ও আমার থেকে প্রায় চার বছরের সিনিয়র। বাট আমি কখনও ওকে ভাইয়া ডাকিনি, দুজন দুজনকে নাম ধরেই ডাকতাম। আমরা নেইবার ছিলাম, মানে একই এরিয়ায় বাসা আমাদের। মূলত আমাদের ফ্রেন্ডশিপের মাধ্যমেই একসময় আমাদের দুই ফ্যামিলির পরিচয় হয়। সেখান থেকেই আমাদের মধ্যে আসা যাওয়া। একপর্যায়ে তারা ঠিক করল, আজকাল ভালো ছেলে বা ভালো মেয়ে পাওয়া খুবই দুষ্কর। তো যেহেতু রিয়া আর ফাইয়ায দুজনেই দুজনকে ভালো চেনে জানে, এদেরকে বিয়ে দিয়ে এক করে দেয়া হোক।
আরহাম তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল, ” তারপর!?
রিয়া মলিন হেসে বলল, ” আপনি মেবি বোর হচ্ছেন।
বলেই খেতে লাগল রিয়া, আরহাম মাথা নাড়িয়ে না করে বলল, ” না না, বোর হচ্ছিনা। ইটস রিয়েলি ইন্টারেস্টিং! প্লিজ ক্যারি অন!!
.
.
.
রিয়া খেতে খেতে বলল, ” আমি কখনোই ফ্রেন্ডশিপ এর বাইরে ফাইয়াযকে নিয়ে অন্য কিছু ফিল করিনি। বাট আমাদের বিয়ের কথা ওঠায় ফাইয়াযের বিহেভিয়ার দেখে বুঝতে বাকি ছিলো না যে
রিয়া বাকিটা বলার আগেই আরহাম বলল, ” তোমার বুঝতে বাকি ছিলো না যে, ফাইয়ায তোমাকে লাভ করে! তাই তো!!
রিয়া মাথা নাড়িয়ে সায় দিয়ে বলল, ” বাট আমি চাইনা এই বিয়ে হোক, আর না চাইতাম কখনও।
আরহাম বেশ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, ” চাইতে না মানে!! তাহলে তখনই না করে দাও নি কেন!?
রিয়া কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,” কজ ফাইয়াযকে বিয়ে না করার জন্য তখন আমার কাছে কোনো স্ট্রং রিজন ছিলোনা। কি বলতাম!? কেন ফাইয়াযকে বিয়ে করবো না!? আমি তো নিজেই জানিনা আমি ফাইয়াযকে কেন বিয়ে করতে চাইনা!!!
আরহাম মাথা নাড়িয়ে বলল, ” খুবই ইজি! বলতে তুমি অন্য কাউকে লাভ করো। প্রব্লেম সলভ!!
রিয়া ধৈর্য্য হারিয়ে বলল, ” ওখানেই তো প্রবলেম! আমার তো কোনো বয়ফ্রেন্ডই নেই!!
আরহাম কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল,” এজন্যই তখন বয়ফ্রেন্ডের কথা বলছিলে!?
রিয়া চোখ নামিয়ে মাথা নাড়িয়ে সায় দিল, আরহাম এতক্ষণে রিল্যাক্স হয়ে চেয়ারে বসল।
এতক্ষণ রিয়ার সামনে ইজি থাকার চেষ্টা করলেও, ভেতরে ভেতরে চরম অস্থিরতায় ভুগছিলো সে! কিন্ত কেন এমন হচ্ছিলো ঠিক বুঝতে পারছেনা সে।
রিয়াকে শাস্তি দিতে না পারার জন্য নাকি রিয়াকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে!
এসব নিয়ে এখন ভাবতে চায় না সে, কিছু একটা ভেবে বলল, ” তো তোমার বয়ফ্রেন্ড লাগবে!? তাই তো!?
রিয়া হেসে বলল, ” এমন ভাবে বলছেন যেন, বয়ফ্রেন্ড চাইলেই পেয়ে যাবো!! কালকেই ফাইয়ায দেশে ল্যান্ড করবে। একদিনের মধ্যে কাকে বয়ফ্রেন্ড বানাবো আমি!?
.
.
.
আরহামের সাথে সব শেয়ার করে এখন নিজেকে বেশ হালকা লাগছে রিয়ার, পানি খেয়ে গপগপ করে খেতে লাগল সে। খুব খিদে পেয়েছে তার।
আরহাম রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে, রিয়াকে দেখে মনে হচ্ছে যেন কি এক সুস্বাদু খাবার খাচ্ছে সে!
ফ্রাইড রাইসই তো খাচ্ছে!! নাকি ওর প্লেটের খাবার বেশি টেস্টি!!!?
সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে রিয়ার প্লেট থেকে এক চামচ নিয়ে মুখে দিল আরহাম।
রিয়া অবাক হয়ে তাকালো আরহামের দিকে, নিজের প্লেটের দিকে তাকিয়ে আরহামকে জিজ্ঞেস করল, ” আপনি আরও ফ্রাইড রাইস খাবেন!?
আরহাম উত্তর না দিয়ে বলল, ” তুমি চাও তো আমি তোমার বয়ফ্রেন্ড হতে পারি!
কথাটা শোনা মাত্রই রিয়ার মুখ থেকে রাইস ছিটকে পড়ে গেল!!
চোখ জোড়া বড় বড় করে আরহামের দিকে তাকিয়ে বলল,” মমানে!!!?
আরহাম ওয়েটারকে ডেকে জায়গাটা ক্লিন করতে বলে রিয়াকে বলল, ” মানে রিয়েল না, জাস্ট ফাইয়াযের সামনে তোমার বয়ফ্রেন্ড হয়ে থাকবো আর কি।
রিয়া ঢকঢক করে পানি খেয়ে থ হয়ে বসে রইলো, কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা সে।
ইতস্ততভাবে বলল, ” ইইকরা ম্যাম ব্যাপারটা জানতে পারলে!?
আরহাম টিস্যু দিয়ে রিয়ার মুখ মুছতে মুছতে বলল, ” আই ডোন্ট কেয়ার!
.
.
.
রিয়া মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে আরহামের দিকে, আরহাম যদি সত্যিই তার বয়ফ্রেন্ড হতো!!
আরহাম নেশাভরা চোখে তাকিয়ে আছে রিয়ার দিকে, আমি তোমাকে অন্য কারও হতে দেবোনা রিয়া!!!
ওয়েটারের ডাকে দুজন দুজনের থেকে সরে বসল।
রেস্টুরেন্টের বিল মিটিয়ে বেরিয়ে এলো দুজনে।
আরহাম ড্রাইভ করছে, রিয়া পাশে বসে আছে। আরহাম আড় চোখে দেখছে রিয়াকে, রিয়া ব্যাপারটা বুঝতে পেরে বলল, ” সামনে তাকান, আর হ্যাঁ। আজ থেকে আমরা তাহলে ফেইক বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড!
আরহাম বাকা হেসে বলল, ” ফেইকটা উল্লেখ করা কি খুব ইম্পর্ট্যান্ট!!?
রিয়া আর কিছু বলতে পারলোনা, লজ্জায় আরক্তিম হয়ে গেছে তার গাল! আরহামের বলা কথা গুলো তার কানে মধুর মতো লাগছে!!
আচ্ছা! কথাও কি কারও মধুর মতো হয়!! ভাবতেই নিজ মনে হেসে উঠল রিয়া!!
রিয়াকে হটা হাসতে দেখে আরহাম ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করল, ” কি ব্যাপার! হাসছো যে!!?
রিয়া আমতাআমতা করে বলল, ” না মানে, ফাইয়াযকে যখন আপনার আর আমার রিলেশনের কথা বলবো। তখন ওর রিয়াকশন ঠিক কেমন হবে, তাই ভেবে হাসছি!!
আরহাম থমথমে গলায় বলল, ” বাহ! বেশ ভালো লাগে তাইনা!! মানুষের মন ভাংতে!!!?
রিয়া আরহামের দিকে তাকিয়ে বলল, ” মানে!!?
আরহাম একটা ছোট্ট নিঃশ্বাস ছেড়ে বলল, ” কিছুনা।
.
.
.
.
.
.
.
.
রিয়া কিছুটা আচ করতে পেরেছে বোধহয়, অফিসের সামনে এসে গাড়ি থামতেই নেমে দাড়ালো রিয়া।
আরহাম বেরিয়ে এলে, রিয়া বলল,” মি. আরহাম! কেউ কারও মন কিভাবে ভাঙে আমি জানিনা। তবে এটা জেনে রাখুন, আমি কারও মন ভাংছিনা। কারণ যে বিয়েতে দুজনের ভালোবাসা থাকেনা, সে বিয়ে নামমাত্র দায়িত্বের বিয়ে! যা ভালোবাসা ছাড়া অপূর্ণ!! আর সেই অপূর্ণতায় না আমি থাকতে চাই, না কাউকে রাখতে চাই!!!
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
(চলবে)