চেরি ব্লসমের সাথে এক সন্ধ্যা পর্ব: ৩৯

0
939

#চেরি_ব্লসমের_সাথে_এক_সন্ধ্যা
#লেখা: ইফরাত মিলি
#পর্ব: ৩৯
____________

মিতুলের মন, মেজাজ দুটোই খারাপ। ও নিজ থেকে জোহানকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলেছে, আর জোহান ওর মুখের উপর না বলে দিলো? এই জোহান কোনো দিনই আসলে শুধরাবে না। কোনো চান্স নেই শুধরানোর।
চেরি ব্লসম ট্রির নিচে দাঁড়িয়ে আনমনে কথাগুলো ভাবলো মিতুল। চেরি গাছগুলো একেবারে স্থির। একটা দুটো পাপড়িও ঝরছে না। মিতুলের মনে হলো ওর মন খারাপ বলে, গাছগুলোও মন খারাপ করে রেখেছে। মিতুল নিচে পড়ে থাকা পাপড়ি থেকে একটা পাপড়ি তুলে নিলো। পাপড়িটা একেবারে শুকিয়ে কুঁচকে গেছে। মিতুল এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল পাপড়িটার দিকে।
পিঠে হঠাৎ কিছুর তীক্ষ্ণ আঘাতে ওর দৃষ্টি সরে গেল পাপড়িটার থেকে। মিতুল আশেপাশে তাকাতে লাগলো। কী এসে লাগলো ওর পিঠে? মিতুল নিচে খোঁজা খুঁজি করতে একটা ছোট আকৃতির মসৃণ পাথর দেখতে পেল। মিতুল তুলে নিলো পাথরটা। ওর বুঝতে বাকি নেই এই পাথরটা কীভাবে ওর পিঠে এসে পড়েছে। এটা নতুন কিছু নয়। মিতুল বারান্দার দিকে তাকালো। জোহান বদমাইশটা দাঁড়িয়ে আছে। মিতুলের ইচ্ছা করলো পাথরটা ছুঁড়ে মেরে জোহানের মাথা ফাটিয়ে দেয়। কিন্তু ওর হাতে যে জোর আছে তাতে এই পাথর বারান্দা পর্যন্ত উড়ে যেতে পারবে না। মিতুল জোহানকে অগ্রাহ্য করার চেষ্টা করলো। আগের মতো নিজ ধ্যানে মনোযোগ দিলো।
কিছুক্ষণ পরই খুব কাছেই কারো হেঁটে আসার পদধ্বনি হলো। মিতুল তাকিয়ে দেখলো না কে এগিয়ে আসছে ওর কাছে। শুনতে পেল জোহানের গলা,
“দুই মিনিট সময় দেবো। এর মধ্যে গ্যারেজে উপস্থিত দেখতে চাই।”

মিতুল পাশ ফিরে তাকালো। জোহান ঘরের দিকে পা বাড়িয়েছে ইতোমধ্যে।
মিতুলের মন খুশিতে নেচে উঠলো। তাহলে ঘুরতে নিয়ে যাবে জোহান?
মিতুল দৌঁড়ে রুমে চলে এলো। ক্লোজেট থেকে একটার পর একটা ড্রেস বের করে দেখতে লাগলো। কোনটা পরবে বুঝছে না। অনেক যাচাই বাছাই করে একটা ভায়োলেট কালারের গাউন সিলেক্ট করলো। জোহানের দেওয়া দুই মিনিট সময় অনেক আগেই অতিবাহিত হয়ে গেছে। মিতুল সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করলো না। আরও সময় নিয়ে সাজলো। রুম থেকে বের হলো ত্রিশ মিনিটের মাথায়। সন্ধ্যা কেটে রাত নেমে গেছে। মিতুল খুশি খুশি মন নিয়ে দরজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এর মাঝেই রেশমী আন্টির কণ্ঠ ওর রক্ত হিম করে দিলো!
“মিতুল, কোথায় যাচ্ছ?”

মিতুল আর এক পা সামনে এগোনোর শক্তি পেল না। পিছন ফিরে তাকাবে সে সাহসও রইল না। তবুও ফিরলো।
রেশমী আন্টি সিঁড়ির মাথায় দাঁড়িয়ে আছে।
ভয়ে মিতুলের হৃদপিণ্ড কাঁপছে। রেশমী আন্টি রুম থেকে বের হয়েছে? এমন সময় কেন বের হলেন যখন ও জোহানের সাথে বাইরে যাবে? কী বলবে এখন রেশমী আন্টিকে? জোহানের সাথে ঘুরতে যাচ্ছে, কী করে বলবে সেটা?
রেশমী আন্টি সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে আবারও জিজ্ঞেস করলেন,
“কোথায় যাচ্ছ?”

মিতুল এবার আর উত্তর না দিয়ে পারলো না। কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,
“আ-আসলে আন্টি…জোহানের সাথে বাইরে ঘুরতে যাচ্ছি। আমিই ওকে বলেছিলাম ঘুরতে যাওয়ার কথা। ও বলেনি।”
মিতুল আজ বানিয়ে মিথ্যা বলতে পারলো না। সত্যি কথাটাই মুখ ফুঁটে বেরিয়ে গেল। মিতুল ভয়ে ভয়ে আছে। রেশমী আন্টি নিশ্চয়ই এখন বলবেন, জোহানের সাথে ঘুরতে যাওয়ার দরকার নেই।

রেশমী আন্টি কিছুক্ষণ নীরব থাকলেন।
মিতুল বুঝতে পারছে না, রেশমী আন্টি কী থেকে কী বলে ফেলে আবার।
রেশমী মিতুলকে অবাক করে দিয়ে বললেন,
“ঠিক আছে যাও।”

মিতুল সত্যিই অনেক অবাক হয়েছে। রেশমী আন্টি পারমিশন দিলেন? খুশিতে গদগদ হয়ে গেল ও। পুলকিত কণ্ঠে বলে উঠলো,
“থ্যাঙ্ক ইউ আন্টি।”
বলেই প্রায় দৌঁড়ে বের হলো ঘর থেকে।
গ্যারেজে এসে জোহানের গাড়ি না দেখে ভাঁজ পড়লো কপালে। জোহানের গাড়ি কোথায়? জোহান ওকে না নিয়ে চলে গেল না কি? দেরি করেছে বলে না নিয়েই চলে গেল?
মিতুল কল দিলো জোহানের কাছে। কল রিসিভ হতেই মিতুল বললো,
“তুমি এত খারাপ কেন বলো তো জোহান? আমাকে না নিয়েই চলে গেলে কী করে? না হয় একটু দেরিই করেছি, তাতে কী এমন হয়েছে? কীভাবে এটা করতে পারলে তুমি?”

জোহান ফোনের ওপাশে বিরক্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললো,
“প্রায় ত্রিশ মিনিট ধরে রাস্তায় গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি তোমার জন্য।”

“রাস্তায়? তুমি তো বললে গ্যারেজে আসতে।”

জোহান আর কোনো প্রতিউত্তর না দিয়ে কল কেটে দিলো।
মিতুল বাড়ি থেকে বের হতেই জোহানের গাড়ি দেখতে পেল। গাড়ির ভিতরে জোহান বসে আছে।
মিতুল কোনো কথা না বলে গাড়িতে এসে বসলো।

“কোথায় যাচ্ছি আমরা?” মিতুল হঠাৎ প্রশ্ন করলো।

“একটা ক্যাফেতে।”

“কেন? ক্যাফেতে কেন?”

“আমার ফ্রেন্ডসরা আছে সেখানে।”

“ও।”
মিতুলের মাথায় হঠাৎ একটা ভাবনা উদয় হলো।
“আচ্ছা, সেদিন ক্লাবে তো তুমি একা ছিলে না। তোমার বন্ধুরাও ছিল। তাহলে ওই চারজন তোমাদের এত জনের সাথে পেরে উঠলো কীভাবে?”

“আমরা সব বন্ধুরা ছিলাম না।”

“তাহলে?”

“আমি, রিকার্ডো এবং শ্যেন ছিলাম। তিনজন ছিলাম আমরা।”

“রিকার্ডো, শ্যেনও কি আহত হয়েছে তোমার মতো?”

“সেটা গিয়েই দেখো।”

ক্যাফেতে এসে রিকার্ডোর মুখ দেখে মিতুলের মুখ করুণ হয়ে গেল। জোহান যে আঘাত পেয়েছে, তার থেকে বেশি আঘাত পেয়েছে রিকার্ডো।
শ্যেনের অবস্থা রিকার্ডো এবং জোহানের থেকে ভালো। রিকার্ডোকে দেখে মিতুলের সত্যি সত্যিই খুব খারাপ লাগছে। ছেলেগুলো এভাবে মারতে পারলো? দয়া-মায়া নেই ওদের মাঝে?

রিকার্ডো মিতুলকে করুণ মুখ করে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললো,
“ইট’স ওকে মিটুল। ওদের থেকে আমরা বেশি মেরেছি ওদের।”

“তাই?”

রিকার্ডো গর্বের সাথে মাথা নাড়লো।

জোহান নিজের গিটার নিয়ে উঠে দাঁড়ালো। ক্যাফেতে গান গাইবে ও। মিতুলের পিছন থেকে যাওয়া দিলেই মিতুল জোহানকে থামালো।
“জোহান…”

“কী?”

“একটা কথা বলি?”

“কী কথা? বলো।”

মিতুল ইতস্তত করে বললো,
“আজকে একটা স্যাড গান গাও।”

জোহানের ভ্রু কুঁচকে গেল।
“স্যাড সং?”

মিতুল মাথা নাড়লো।
“হুম, একটা স্যাড সং শুনতে ইচ্ছা করছে। গাও না।”

জোহান হঠাৎ একটু নুয়ে মিতুলের কানে কানে বললো,
“আমি আহত বলে তুমি কষ্ট পাচ্ছ তুলতুল? তোমার হৃদয়ে ব্যথা হচ্ছে?”

জোহানের কথা শুনে মিতুলের বুকে সত্যি সত্যিই একটা চিনচিনে ব্যথার উপদ্রব শুরু হলো।
মিতুল দ্রুত মাথা ঘুরিয়ে সোজা হয়ে বসলো। অস্থিরতা শুরু হলো ওর মাঝে। কী বলে জোহান?

___________

কয়েকটা দিন খুব ব্যস্ত ভাবে পার করলো জোহান। সারাদিনই গান নিয়ে থেকেছে। ঘুমাতে গিয়েছে গিটার নিয়ে, জেগেছেও গিটার নিয়ে।
মিতুল দেখতো জোহান বাড়ির ভিতরে হাঁটতে হাঁটতেও গান আওড়াতো মুখে। বাড়িতে ছিল না বেশি। বেশিরভাগ সময়ই বাইরে থেকে রিহার্সেল করেছে, আর টাইম হাউজে থেকেছে। নির্জন জায়গায় না কি গান বিষয়ক ব্যাপারটা বেশি ভালো জমে।
মিতুলও ভেবে দেখেছে কথাটা সত্যি। মিতুল এখন জোহানের রুমের দিকে হেঁটে চলেছে। আজকে এক বিশাল কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে এডমন্টন সিটিতে। সেখানে পার্টিসিপেট করবে জোহান। মিতুলও যাবে জোহানের সাথে। সকাল থেকেই বেশ উৎফুল্ল ও। কত শিল্পীরা আসবে কনসার্টে। কত কত গান হবে, ড্যান্স হবে। ভাবতেই ক্ষণে ক্ষণে উত্তেজনার ঘনঘটা শুরু হচ্ছে ওর মাঝে।
মিতুল জোহানের রুমের দরজা একটুখানি ফাঁক করে উঁকি দিলো।
জোহান আয়নার সামনে বসে নিজের রূপসজ্জায় ব্যস্ত। মিতুল ডিস্টার্ব করলো না ওকে। দরজা বন্ধ করে আবার চলে এলো।
মিতুলের হঠাৎ জানতে ইচ্ছা করলো কনসার্টে রেশমী আন্টি যাবে কি না। কনসার্ট যেহেতু এডমন্টনেই, যাওয়া তো উচিত তার। একবার ব্যাপারটা যাচাই করে দেখবে না কি? যেমন ভাবনা তেমন কাজ।
মিতুল রেশমী আন্টির রুমে এলো।
রুমে রেশমী আন্টি একা। বেডে হেলান দিয়ে বইয়ে মুখ ডুবিয়ে রেখেছে। মিতুল রুমে প্রবেশ করেছে সেটা বুঝতে পারলেন তিনি। বই থেকে মুখ উঠালেন। মিতুলকে দেখে একটু হাসলেন।
মিতুলের কুন্ঠাবোধ হচ্ছে। তবুও মুখে জোরপূর্বক একটু হাসি আনলো। এগিয়ে এসে বসলো রেশমী আন্টির পাশে।
রেশমী বললেন,
“কী খবর?”

মিতুল আবারও একটু হাসার চেষ্টা করে বললো,
“না তেমন কিছু নয়। ব্যাপার হলো…আজকে রাতে তো বিশাল কনসার্ট হচ্ছে এডমন্টন সিটিতে। জোহানও তো পারফর্ম করবে সেখানে। তুমি যাবে না?”

রেশমীর মুখে হঠাৎ একটা গাম্ভীর্যের ছাপ পড়লো। তিনি বললেন,
“না মিতুল, আমি যাব না। আসলে আমার কিছু কাজ আছে শপে।”

“শপ?”

মিতুল রেশমী আন্টির থেকে শুনলো রেশমী আন্টিদের নিজস্ব একটা গ্রোসারি শপ আছে। মিতুল ক্যামিলার সাথে একদিন গিয়েওছিল সেই শপে। অথচ তখন ও জানতোই না ওটা রেশমী আন্টিদের শপ ছিল। মিতুলের হঠাৎ রেশমী আন্টিদের আরও বেশি ধনী মনে হলো। একটা বড়ো গ্রোসারি শপের মালিক, কম কথা নয়! এত এত টাকা দিয়ে কী করবে তারা? মিতুল এ নিয়ে আর মাথা ঘামালো না। ওর ভাবনা এখন রেশমী আন্টিদের টাকা নিয়ে নয়। রেশমী আন্টি কনসার্টে যাবে না বলে একটু মনোক্ষুণ্ণ হয়েছে ওর। রেশমী আন্টি কনসার্টে গেলে জোহান নিশ্চয়ই খুব খুশি হতো। মিতুল বললো,
“তাহলে তুমি যেতে পারবে না কনসার্টে?”

“না মিতুল।”

“ঠিক আছে। তাহলে এখন যাচ্ছি আমি।”

মিতুল চলে এলো। দেখতে পেলো জোহান ওর রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
মিতুল দৌঁড়ে এলো জোহানের কাছে। বললো,
“তুমি রেডি?”

জোহান ওর প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বললো,
“মমের কাছে গিয়েছিলে তুমি?”

“হ্যাঁ।”

“কেন?”

“জানতে গিয়েছিলাম উনি কনসার্টে যাবেন কি না তোমার পারফরম্যান্স দেখার জন্য।”

জোহান হাঁটতে শুরু করলো। মিতুলও ওর সাথে সাথে হাঁটছে। জোহান বললো,
“মম কখনোই কোথাও যায় না আমার কনসার্ট দেখতে। আমার গান তার পছন্দ নয়। আমার গান করার ব্যাপারটা ভালো লাগে না তার।”

“কেন? তুমি তো খুব ভালো গান করো। তাহলে আন্টি পছন্দ করেন না কেন?”

“জানি না। ছোট বেলা থেকেই গানের প্রতি ঝোঁক ছিল আমার। তখন আমার সাত বছর বয়স। মম, ড্যাডের ম্যারিজ অ্যানিভ‍্যারসারিতে গান গেয়েছিলাম আমি। মম-ড্যাডকে নিয়ে নিজে লিখেছিলাম গানটা। অ্যানিভ‍্যারসারির গিফট হিসেবে। গান শোনার পর মম আমার গানকে ‘অহেতুক’ বলে সম্মোধন করেছিল। বলেছিল, আমি কীসব গাইলাম। এসব অহেতুক ব্যাপার রেখে শুধু পড়াশোনায় ফোকাস করতে।”

মিতুলের মুখ কালো হয়ে গেল একেবারে। সেই সাথে মনও মিশে গেল কালো ঘোলাটে রঙে। মিতুল বললো,
“রেশমী আন্টির তোমাকে উৎসাহ দেওয়া উচিত ছিল। তুমি সেদিন খারাপ গাইলেও রেশমী আন্টি একটু মিথ্যা করে হলেও প্রশংসা করতে পারতো! তা না করে উনি…”
মিতুল আর কিছু বলতেই পারলো না।

“শুধু এটুকুই নয় মিতুল। আমার চৌদ্দ তম জন্মদিনে আমি ড্যাডের কাছে গিটার চেয়েছিলাম জন্মদিনের গিফট স্বরূপ। ড্যাড কিছুদিন পরই গিটার কিনে দিয়েছিল। এ নিয়ে মম রাগারাগি করে ড্যাডের সাথে। এবং এক মাস পরে আমি বাইরে থাকাকালীন সময়ে আমার রুম থেকে গিটারটি নিয়ে ভেঙ্গে ফেলে।”

জোহানের কথা শুনে মিতুল চলতে চলতেই দাঁড়িয়ে পরে।
“কী ভেঙ্গে ফেলেছিল?”

জোহানও দাঁড়িয়েছে মিতুলের সাথে। বললো,
“হ্যাঁ, ভেঙ্গে ফেলে। বাড়ি এসে আমি আমার ঘরে গিটার দেখতে পাইনি। পরে ক্যামিলার কাছ থেকে জেনেছিলাম, মম আমার গিটার ভাঙচুর করে গার্ডেনে ফেলে রেখেছে। আসলে সে বছর এক্সামে একটা সাবজেক্টে একটু খারাপ করেছিলাম আমি। এক্সামের এক মাস আগে ড্যাড আমাকে গিটারটি দিয়েছিল। মম তখনই বলেছিল গান বাজনা নিয়ে থাকলে আমার পড়া লেখার দুর্গতি হবে। এক মাস পর যখন এক সাবজেক্টে রেজাল্ট খারাপ করলাম, তখন মম সেটাকেই গিটার ভাঙ্গার কারণ হিসেবে দাঁড় করালো। আর বললো, গান বাজনা নিয়ে পড়ে থাকলে এরকমই হবে প্রতি বার। ভালো রেজাল্ট করতে পারব না আমি।”

জোহানের জন্য খুব কষ্ট লাগলো মিতুলের। মনে হলো কষ্টে হৃদয় চৌচির হয়ে যাচ্ছে ওর। রেশমী আন্টির প্রতি বিশাল আকারে একটা ঘৃণার পাহাড় তৈরি হলো ওর মনে। বললো,
“একটা মানুষ লেখাপড়ার পাশাপাশি শখের বশে কিছু একটা করতেই পারে। কত মানুষই তো লেখা পড়ার পাশাপাশি কত কী করে। কত মানুষ তো টিউশনির পেছনেও সময় ব্যয় করে। তাতে কী হয়। রেশমী আন্টির এমন করাটা মোটেই উচিত হয়নি।”

“তোমারও কিন্তু এমন করা উচিত হচ্ছে না তুলতুল।”

“কেন? কী করেছি আমি?”

“এখানে যদি এভাবে দাঁড়িয়ে থাকো, তাহলে আমার কনসার্টের কী হবে? এখানেই তো সময় পার করে দেবে তুমি।”

“ওহ হ্যাঁ, চলো।”

গ্যারেজে চলে এসেছে ওরা। ক্যামিলা আগে থেকেই উপস্থিত গ্যারেজে। মিতুল এবং ক্যামিলা যাবে জোহানের সাথে। ক্যামিলা পিছনের আসনে উঠে বসলো। মিতুলও পিছনের আসনে ক্যামিলার পাশে
বসার জন্য ওঠা দিলেই, জোহান ওর হাত টেনে ধরলো।
“কী ব্যাপার? তুমি কোথায় যাচ্ছ? তুমি তো আমার সাথে বসবে। আমার পাশেই থাকতে হবে তোমার সবসময়। আগে বা পিছনে থাকার সুযোগ দেবো না তোমাকে।”

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here