ছায়া হয়ে থাকব পাশে
part ঃ 18
writer ঃ humayra khan
চারু আহানের কথা শুনে রুম থেকে চলে যেতে নিলে-
আহানঃ চারু…….
চারু আহানের ডাক শুনে পিছনে ঘুরে তাকায়।।।
চারু ঃ আবার কি???
আহানঃ না কিছুনা এমনি…….
চারু ঃ কিছুনা না হলে ডাকলেন কেন পিছন থেকে??
আহানঃ আচ্ছা বাবা আমি অনেক বড় অপরাদ করেছি আপনাকে পিছন থেকে ডেকে৷ প্লিস আমাকে ক্ষমা করুন।
চারু আহানের কথার কোন উত্তর দিতে যাবে এর আগেই চারুর হাচ্ছি আসতে শুরু করে।।
আহানঃ দেখেছো লেগে গেছে তো সর্দি।।।
তাড়াতাড়ি করে রুমে গিয়ে লক্ষি মেয়ের মতো জামাটা চেঞ্জ করে শুয়ে পরো গিয়ে…
চারু ঃ হুম যাচ্ছি।।।
তারপর চারু হাচ্ছি দিতে দিতে রুম থেকে বের হয়ে পরে।।
চারু রুমে গিয়ে তাড়াতাড়ি করে নিজের জামাটা চেঞ্জ করে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পরে।।।।
হঠাৎ চারুর মোবাইলের রিংটং বেজে উঠে
চারু বিছানা থেকে ফোনটা রিসিভ করে —
চারু ঃ হ্যালো (ঘুমু কন্ঠে)
আহানঃ হ্যালো চারু….
আহান পুরো কথা বলতে যাবে এর আগেই চারু আহানকে থামিয়ে দিয়ে-
চারু ঃ ভাইয়া আমার খুব পিপাসা পেয়েছে আমি আপনাকে পাঁচ মিনিট পরে ফোন দেই।।
কথাটি বলে ফোনটা কেটে দেয় চারু।।
তারপর চারু এক গ্লাস পানি খেয়ে বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পরে।।। আহানকে কল দিতে পুরো পুরি ভুলেই যায় চারু।।।।।।
ওইদিক এ আহান চারুর ফোনের অপেক্ষা করতেই থাকে বোকার মতো করে।।।
আহানঃ উফ পাঁচ মিনিট এর বদলে তো আধা ঘণ্টা হয়ে গেল এখনো কল দিচ্ছেনা কেন??
আমি কল দিব।। না না ও পরে বিরক্তবোধ করবে আমি কল দিলে।।এর থেকে আমিই ওর ফোন দেওয়ার অপেক্ষা করতে থাকি।।।
একদিক এ চারু শান্তির ঘুম ঘুমাচ্ছে। অন্যদিক এ আহান চারুর ফোনের অপেক্ষায় বসে আছে।।
অপেক্ষা করতে করতে আহানও ঘুমিয়ে পরে।।
সকালে বাড়ির দরজায় কেউ নক করলে চারু গিয়ে তাড়াতাড়ি করে দরজাটা খুলে দেয়।।।
সামনে তাকিয়ে দেখে একজন লোক একটা ব্যাগ কাঁদে করে দাঁড়িয়ে আছেন ক্যাবলা মার্কা হাসি দিয়ে।।।
লোকটিঃ ম্যাম আহান স্যার ফোন দিয়েছিল কল ঠিক করার জন্য
চারু ঃওও আচ্ছা ।। ভিতরে আসুন।।
সাবিনা ঃ কে রে চারু??
লোকটিঃ ম্যাম আহান স্যার ডেকে পাঠিয়েছে আমায়।।তার ওয়াসরুমের নাকি কল ভেঙে গেছে।।সেইটা ঠিক করার জন্যই আমাকে আসতে বলেছেন উনি।।।
সাবিনাঃ ওও।।আচ্ছা উপরে যান।উপরেই আহানের রুম।
লোকটি চারুর দিক এ তাকিয়ে-
ম্যাম আমাকে একটু নিয়ে যাবেন স্যার এর রুমে?
চারু ঃ জ্বি চলুন।
সাবিনাঃ এই আপনি কি পাগল ওকে ম্যাম ডাকছেন কেন? ওই কি এই বাড়ির মালকিন নাকি যে ম্যাম বলে ডাকছেন।ওর সাথে আর বাসার চাকরের সাথে কোন পার্থক্য নেই বুঝলেন।
সাবিনার কথা শুনে চারুর চোখে জল এসে পরে কেউ দেখে নেওয়ার আগেই জল গুলো মুছে নেয় ও।
লোকটি চারুর দিক এ তাকিয়ে থাকলে-
সাবিনাঃ ওই চারু শুনতে পাচ্ছিসনা কিছু।
যা এই লোকটাকে আহানের রুমে নিয়ে যা।।সারা দিন বসে বসে খাস একটু তো হাত পা চালা।
চারু ঃ আংকেল আসেন আমার সাথে??
লোকটিঃ হুম চল
তারপর চারু লোকটিকে আহানের রুমের ভিতরে নিয়ে গিয়ে-
চারু ঃ ভাইয়া কল ঠিক করার জন্য লোক এসেছে।। আংকেল ওয়াসরুম টা ঔ দিক।।
কথাটি বলে চারু রুম থেকে বের হতে নিলে-
লোকটি চারুকে পিছন থেকে ডাক দেয়।
লোকটিঃ এই বুয়া……..আমার জন্য এক গ্লাস পানি নিয়ে আয়।।।
লোকটির কথা শুনে আহানের রাগ যেন সাত আসমানে পৌছায়।
রাগের মাথায় আহান লোকটির কলার চেপে ধরে
আহানঃ হাউ ডের উ। চারুকে বুয়া বলে ডাকার সাহস হল কিভাবে আপনার??? ঔ জানেন কে??
চারু আহানকে ধরে-
প্লিজ ভাইয়া ইনাকে ছাড়ুন।।
লোকটিঃ হ্যা স্যার আমার কলার ছাড়ুন।আমার কি দোষ আপনার মাই তো বলেছে সে এই বাড়ির বুয়া তাই তো আমি ওকে….
লোকটি পুরো পুরি কথাটা বলার আগেই আহান চিৎকার দিয়ে –
ইনাফ।।।
আহানঃ আরেকবার ওই শব্দ টা উচ্চারণ করার মতো ভুল মোটেও করবেন না। আপনি আমার বাবার বয়সি।
তাই বয়সের রিস্পেকট করছি।তা না হলে আজ আপনার কি অবস্থা হত সেইটা আমি নিজেও জানিনা।
নাও লিভ ফ্ররোম মাই রুম
লোকটি আহানের রাগ দেখে প্রচন্ড ভয় পেয়ে যায়।।।
হুর হুর করে বেরিয়ে পরে বাসা থেকে
চারু ঃ আপনার এতো রাগ করা টা ঠিক হয়নি।।
আহানঃ জানি কিন্ত কি করব বল নিজের ভালোবসার মানুষ টাকে কেউ এই ভাবে ডাকলে কারই বা মাথা ঠিক থাকে।।।আনমনে।
মিসেস সাবিনা আহানের রুমে ভিতরে ঠুকে-
কি রে আহান লোকটি চলে গেলে কেন??
আহানঃ মা তুমি লোকটিকে কি বলেছো??
সাবিনাঃ কি বলেছি???
আহানঃ মা একটা কথা সব সময় মনে রাখবা চারু আমাদের বাসার কোন সার্ভেনট না।ও আমাদের ঘরের একজন সদস্য।।তাই ভুলেও কাউকে বলার চেষ্টা করোনা যে ও আমাদের… থাক বাদ দাও।
আহানের বলা কথা শুনে চারুর চোখ এ জল এসে পরে কিন্তু সেটা কষ্টের না খুশির।। আহান আর মিসেস সাবিনা তা দেখার আগেই নিজের চোখের জল মুছে নেয় চারু।।
তারপর আহান ওর মাকে বিছানায় বসিয়ে তার সামনে হাটু গেড়ে বসে
আহানঃ মা আশা করি তুমি আমার কথা বুঝতে পেরেছো… আর বাসায় যারা কাজ করে তাদেরকেও এখন থেকে বুয়া চাকর এই সব বলে ডাকবেনা।।।
মিসেস সাবিনা আহানের কথা শুনে –
সাবিনাঃ আজ তোর জন্য আমার ছেলে আমাকেই শুনাচ্ছে তাইনা।এর শোধ আমি ঠিকই নিব।।মনে মনে
সাবিনা ঃ আচ্ছা আর ডাকব না (শুকনো একটা হাসি দিয়ে)
কথাটি বলে চলে যায় মিসেস সাবিনা আহানের রুম থেকে।।।
চারুও চলে যায় আহানের রুম থেকে বের হয়ে।।।
চারু আর মিসেস সাবিনা…. রুম থেকে চলে গেলে–
আহান ওর ফোনটা নিয়ে কাউকে কল দেয়।।
ফোনটা রিসিভ হলে-
লোকটিঃস্যার প্লিজ ক্ষমা করবেন..
আহানঃ না আংকেল ক্ষমা তো আমার চাওয়া উচিত আপনার কাছে।।।আসলে আমার প্রচন্ড রাগ এসেছিল যখন আপনি…
লোকটিঃ বুঝতে পেরেছি।। ভালোবাসার মানুষকে কেউ এই ভাবে ডাকলে যে কেউ এমন রিয়েকট করবে।
আহানঃ আপনি কিভাবে বুঝলেন ওকে আমি??
লোকটিঃ তুমাকে দেখলে যে কেউ বলে দিতে পারে তুমি ওকে কতোটা ভালোবাসো।।
আহানঃ শুধু ওই বুঝেনা।।যাই হোক আমার আচরনের জন্য আমাকে নিজের ছেলের মত ভেবে মাফ করে দিবেন আংকেল…
লোকটিঃ মাফ চাইতে হবেনা বাবা।।।আর একটা কথা। মেয়েটা অনেক ভাগ্যবর্তি বর্তমানে তোমার মতো ছেলে পাওয়া অনেক মুশকিল।।।
আহানঃ তাই নাকি?? দোয়া করবেন যাতে আমি আমার ভালোবাসার মানুষটাকে খুব জলদি নিজের করে নিতে পারি।।।
লোকটিঃ হ্যা বাবা অবশ্যই।।
তারপর আহান ওর ফোনটা কেটে দিলে দেখে চারু ওর রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।।
রুমের ভিতরে ঠুকে-
চারু ঃ……
চলবে…….।।