ছায়া হয়ে থাকবো পাশে part- 23

0
1144

ছায়া হয়ে থাকব পাশে..
Part ঃ 23
writer ঃ humayra khan

আহানঃ হুম কোন সুন্দরী মেয়ে চোখে পরলে তাহলে তোমার পিছু ছেড়ে ওই মেয়ের পিছু নিব……
চারু বেশ রেগে উঠে আহানের কথা শুনে।।।
রেগে গিয়ে আহানের কলার ধরে-
চারু ঃআবার বলেন কি বললেন???
আহান সাথে সাথে চারু গালে একটা কিস দিয়ে বললো।
আহানঃ তোমাকে অনেক আদর করতে ইচ্ছে করছে তাই বললাম।আবার বলব কথাটা???
তুমি যদি শুনতে চাও তাহলে আমি একবার কেন একশো বার বলতে রাজি এই কথাটা।।।
আহান আকস্মিক এই ভাবে চারুর গালে কিস করায় চারু বেশ লজ্জায় পরে যায়। আহানের বলা কথা যেন চারুর লজ্জায় আরও ঘি ঠেলে দেয়।।।
লজ্জায় পরে চারু সাথে সাথে আহানের কলার ছেড়ে দিয়ে অন্য দিক এ মুখ করে তাকায়।।।
আহানঃ কি বলব আবার?? ( শয়তানি হাসি হেসে)।।
চারু ঃ নাতো।।। বলার দরকার নেই।।(মাথা নিচু করে)
ইসস কি সব পঁচা পঁচা কথা বলছে। শয়তান একটা।
আহান খেয়াল করল চারু বেশ লজ্জায় পরে গেছে ওর কথা শুনে। তাই চারুকে স্বাভাবিক করার জন্য আহান চারু কোলে নিজের মাথা টা রেখে —
আহানঃ এই যে কি হলো আমার চড়ই পাখির? সারা দিন তো বক বক করো এখন চুপ হয়ে আছো।।কেন?
চারুঃ অই ঠিক হয়ে বসুন।। এইভাবে বসলে তো পাহাড় থেকে পরে যাবেন।।।
আহানঃ আহহ পরে গেলে কতো ভালো হবে তাইনা।।
মৃত্যুর আগে তোমার কোলে মাথা রাখার সুযোগ হলো।
চারু ঃ দেখুন এইসব ফাজলামো কিন্তু ভালো লাগেনা আমার।। প্লিজ উঠে বসুন।।।।
আমার অনেক ভয় করছে।।।।
এমনি আজ খারাপ সপ্ন দেখেছি।।
আহানঃ কি দেখেছ আমি মারা গেছি(হেসে)
চারু আহানের বলা কথা শুনে বেশ রেগে মেগে উঠে।
চারু আহানকে কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনি আহানের ফোনটা বেজে উঠে।।।
আহান সাথে সাথে চারুর কোল থেকে নিজের মাথাটা উঠিয়ে নিজের ফোনটা রিসিভ করে।।
আহানঃ হ্যালো মা….
ফোনে মিসেস সাবিনা এই কথা শুনে চারু ভয়ে কাপা কাপি শুরু করে দেয়।।।
সাবিনাঃ আহান তুই কই।।।
আহানঃ এই তো মা তুমার বউ মার সাথে পাহাড়ের চড়ায় বসে জমিয়ে প্রেম করছি(হেসে)
সাবিনাঃ দেখ আহান ফাজলামো ভালো লাগেনা সব সময়।।।
আহানের বলা কথা শুনে চারুর কাপুনি যেন আরও বাড়তে থাকে কিন্তু আহানের সেই দিক এ হুস নেই।।
আহানঃ মা আমি একটু হাওয়া খেতে এসেছি বাইরে।
ঘরে থেকে তো ভাত খেতে পাইনা তাই ভাবলাম বাহিরে একটু হাওয়া খেয়ে আসি(হেসে)
সাবিনাঃ তুই কবে ভালো হবি আহান।।বাচ্চাদের মতো শয়তানি করতে থাকিস।(রেগে)
আহানঃ উফ মা তুমি টেনশন নিয়ো না আমি কিছুক্ষনের মধ্যেই চলে আসছি।।
সাবিনা ঃ তাড়াতাড়ি চলে আয়।।কি দরকার ছিল এই অসুস্থ শরীর নিয়ে বাইরে যাওয়ার।।
আহানঃ আচ্ছা মা আমি এই দুইমিনিট এর মধ্যেই চলে আসছি।।।
কথাটি বলে তাড়াতাড়ি করে ফোনটা কেটে দেয় আহান।
ফোনটা কেটে দিয়ে আহানের চোখ চারুর উপর পরলে
আহান খেয়াল করল চারু ভয়ে কাপছে।।।
আহানঃ কি হলো আমার চড়ই পাখিটা এইভাবে কাপছে কেন??
চারু ঃ তড়াতাড়ি বাড়ি চলুন কাকিমা জানতে পারলে আমি আপনি এক সাথে তাহলে দুইজনকেই লবন তেল ছাড়া বরতা বানিয়ে দিবে।।।
আহান চারুর কথা শুনে খিল খিল করে হাসতে থাকে।।
চারু ঃউফ আপনি হাসা বন্ধ করুন আর তাড়াতাড়ি করে বাসায় চলুন……
আহানঃ হুম বাবা চলো।।
তারপর আহান আর চারু তাড়াতাড়ি গাড়ি করে বাসায় চলে আসে।।।।

গাড়ি থেকে নেমে মেইন গেট এর সামনে আসলে-
চারু হুর হুর করে বাসার কলিং বেল বাজাতে নিলে-
আহানঃ ওয়েট চারু মা হয়ত জানেনা তুমি বাইরে গেছ।
তাই আমি আগে ঢুকছি।।।।তুমি একটু অপেক্ষা করো।
চারু ঃ আচ্ছা।।।
তারপর চারু গেটের এক সাইডে লুকিয়ে থাকলে আহান কলিং বেল বাজায়।।।
মিসেস সাবিনা এসে দরজা খুলে দিয়ে আহানকে সামনে দেখলে–
সাবিনাঃ কিরে এখন আসা হলো বাসায় কখন থেকে তোর অপেক্ষায় বসে আছি…….
আহানঃ মা সে অনেক কথা চলো আমার রুমে গিয়ে সব কিছু খুলে বলি।।।
সাবিনাঃ দাড়া আগে দরজা টা তো লাগিয়ে নেই….
আহানঃ বাইরে তো চারু মা দরজা লাগিয়ে দিলে ও ভেতরে আসবে কিভাবে…..(আনমনে)….
আরে মা বাসায় এতো মানুষ থাকতে তুমি কেন করবা।।
তুমি আমার সাথে রুমে চলো অন্য কেউ দরজা৷ লাগিয়ে দিবে…
কথাটি বলে তাড়াতাড়ি করে আহান মিসেস সাবিনাকে নিয়ে নিজের রুমে চলে যায়।।।।
সেই সুযোগে চারু তাড়াতাড়ি করে বাসার ভিতর ঢুকে বাসার দরজা টা লাগিয়ে জলদি করে নিজের রুমে চলে যায় ……..
নিজের রুমে ঢুকে দরজা টা লাগিয়ে দেয় চারু……
তারপর নিজের উড়না টা লুঙির মতো পরে মোবাইলে লুঙি ডান্স গান ছেড়ে খাটের উপরে উঠে উরাধুরা নাচতে শুরু করে……….
(সাধারনত চারু যে দিন অনেক বেশি খুশি থাকে সেই দিনই এমন লুঙি ডান্স গান ছেড়ে আপন মনে নাচতে থাকে……..)
রাতের বেলায়……..
চারু আর দিশা মিলে খাবার টেবিলে খাবার সাজাতে নিলে মিসেস সাবিনা চারুকে দেখে-
সাবিনাঃ কিরে চারু আজ সারা দিন কই ছিলি??
চারু ঃ কই আর থাকব নিজের রুমেই ছিলাম।।
সাবিনাঃ তো নবাবজাদি আপনি রুমে মধ্যে বসে বসে এতোক্ষন কি করছিলেন শুনি।।ঘরে যে এতো কাজ পরে থাকে সেইটা কি আপনার চোখে পরেনা।।।
চারু ঃ এই তো লুঙ্গি ডান্স দিচ্ছিলাম(হেসে)…
চারু আজ এতো খুশি যে কার সামনে কি বলছে সেই দিক এ ওর হুসই নেই….
সাবিনা চারু কথা শুনে রাগি লুক নিয়ে ওর দিক এ তাকিয়ে কিছু বলতে যাবে….
ঠিক সেই মুহূর্তে আহান এসে হাজির।।।
আহানঃ মা আমার অনেক বেশি খুদা লেগেছে প্লিজ তাড়াতাড়ি করে আমাকে খাইয়ে দাও নিজ হাতে….
আবিরঃ আমাকেও খাইয়ে দিতে হবে তাহলে….
সাবিনাঃ আচ্ছা বাবা আজ আমার দুই ছেলেকেই নিজ হাত দিয়ে খাইয়ে দিব আমি।।।
হঠাৎ মিরাজ সাহেব এসে চেচিয়ে বলে উঠে –
মিরাজ ঃ প্লিজ আমার রিনা খান আমাকেও আজ নিজ হাতে খাইয়ে দাও।।।।।
সাবিনা ঃ দেখলি আহান আবির তোর বাবা কি বলছে এইসব আমাকে নিয়ে আমি নাকি রিনা খান(রেগে)
আহানঃ উফ মা বাবা তো শয়তানি করছে…
একটা কাজ করো আজ তুমি নিজ হাত দিয়ে আমাদের সবাইকে খাইয়ে দাও.. মার হাতের খাবারের স্বাদই আলাদা…..
দিশাঃ হ্যা মা প্লিজ।।।
চারু শুধু নিরব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।।।কারন ও জানে মিসেস সাবিনা কখনো তার নিজ হাত দিয়ে ওকে খাইয়ে দিবেনা………
হঠাৎ মিসেস সাবিনা বলে উঠলেন।।।।
আচ্ছা বাবা আমি সবাইকে খাইয়ে দিব নিজ হাতে….
মিসেস সাবিনার বলা কথা শুনে চারু চমকে উঠে।।।
এইটা হয়ত ওর ধারণার বাহিরে ছিল যে মিসেস সাবিনা ওকে তার নিজ হাতে খাইয়ে দিবে…..
তারপর মিসেস সাবিনা সবাইকে নিজ হাতে খাইয়ে দিতে লাগল।।।।।
যখন তিনি চারুকে খাইয়ে দিতে নেয়
সাবিনাঃ আমি নিজ ইচ্ছায় তোকে খাইয়ে দিচ্ছি না।। আহানের খুশির জন্য তোকে খাইয়ে দিচ্ছি।।
আমি না বললে আহান কষ্ট পেত যেটা আমি চাইনা (মনে মনে)
তারপর মিসেস সাবিনা তার হাতে থাকা ভাতের লোকমাটা চারুকে খাইয়ে দেয়….
চারু ঃ আমি জানি কাকিমা আপনি নিজ ইচ্ছায় আমাকে খাইয়ে দিচ্ছেন না।।।কিন্তু আজ আপনি আমাকে খাইয়ে দিয়েছেন সেইটাই আমার জন্য অনেক।।
জন্ম দেওয়ার সময় মা মারা যাওয়ায় মার হাতের খাবার খাওয়ার সৌভাগ্য হয়ে উঠে নি…..
অন্য বাচ্চাদেরকে যখন তার মা নিজ হাতে খাইয়ে দিত তখন আমার অনেক বেশি কষ্ট হতো. বার বার আল্লাহ কাছে কান্না করে বলতাম আমার মা নেই কেন আমাকে খাইয়ে দেওয়ার জন্য।।
কিন্তু আজ আমার সেই সৌভাগ্য হয়ে উঠেছে মার হাতে খাবার খাওয়ার আর সেইটা শুধু মাএ আহানের জন্য।।
কথাগুলো ভাবতে ভাবতে চারুর চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পরে কেউ দেখার আগেই তাড়াতাড়ি করে চারু চোখের জল মুছে নেয় কিন্তু আহান তা ঠিকই খেয়াল করে..
আহানঃ……

চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here