ছায়া হয়ে থাকবো পাশে
part ঃ 7
writer ঃ humayra khan
ফোন রিসিভ হলে…..
আহানঃ হ্যালো সোহেল।
সোহেলঃ হ্যা বল।( কান্নার কন্ঠে)
আহানঃ কি রে এই ভাবে কান্না করে কথা বলছিস কেন তুই
সোহেলঃ দোস্ত মেহজাবিন এর বিয়ে হয়ে যাচ্ছে দোস্ত।
মেহজাবিন আমাকে রেখে বিয়ে করে ফেলছে।(কান্না করে)।
আহানঃ বিয়ে হচ্ছে তো কি হচ্ছে? বিয়ে তো সবাই করে।
সোহেলঃ তুই ভুলে গেলি আহান।মেহজাবিন যে থাকে আমার বুকের বা পাশে। ওকে ছাড়া আমি কিভাবে বাঁঁচব??? এ্যাাাাা…..
আহানঃ হায়রে কারে ফোন দিলাম। মনে মনে।
আচ্ছা দোস্ত তুই মন ভরে কান্না কর। আমি রাখি।
কথাটি বলে ফোনটা কেটে দেয় আহান..
আহানঃমার্কেট এ তো ফর্সা হওয়ার ক্রিম পাওয়া যায়।তাহলে শ্যামলা হওয়ার ক্রিম ও নিশ্চয়ই পাওয়া যায়।আমি কালই যাব মার্কেট।
এখন তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পরি। কিন্তু ঘুম আসবে কিভাবে ভাইয়া যে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে।
কিন্তু এখন না ঘুমালে তো কাল তাড়াতাড়ি উঠতে পারব না আমি।
কথাটি বলে আহান বিছানায় গিয়ে কানের উপর একটা বালিশ রেখে ঘুমিয়ে পরে।
সকাল হলে আহান মার্কেট যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হতে নিলে….
দিশাঃ ভাইয়া কোথায় যাচ্ছ এই সাজ সকালে??
আহানঃ এই তো ভাবি একটু কাজ আছে।চারু কোথায় ভাবি??
দিশাঃ ওর কাল রাতে অনেক মাথা ব্যাথা করছিলো।তাই ঘুমাতে পারেনি। একটু আগেই ঘুম দিল।
আহানঃ কি বল ভাবি??? আমি তাহলে দেখে আসি ওকে।
দিশাঃ হায়রে ভাইয়া এখন ও ঘুমাচ্ছে।তুমি রুমে গেলে ওর ঘুম ভেঙে যেতে পারে।অনেক কষ্টে ঘুম আসছে বেচারির। এখন তুমি যেই কাজে জন্য বাইরে যাচ্ছিলে সেই কাজে যাও।ফিরে আসলে ওর সাথে দেখা করে নিও।
আহানঃ আচ্ছা।।।
তারপর আহান চলে যায় মার্কেট এর উদ্দেশ্য এ।।।।
মার্কেট এ পৌছালে এক দোকানে গিয়ে……
দোকানদারঃ জ্বী ভাইয়া কি লাগবে বলেন আমাদের দোকানে সব পাওয়া যায়।( হাসি মুখে)
আহানঃ ভাই শ্যামলা হওয়ার কোনো ক্রিম আছে আপনার দোকানে???
দোকানদারঃ কি বলল শ্যামলা হওয়ার ক্রিম। নিশ্চয়ই আমি ভুল কিছু শুনেছি ।মানুষ তো ফর্সা হওয়ার ক্রিম চায় শ্যামলা হওয়ার নয়।মনে মনে
একটু আবার বলবেন কি বললেন???
আহানঃ আরে শ্যামলা হওয়ার ক্রিম আছে আপনার দোকানে???
দোকানদারঃ ভাই আপনি কি নেশা করে আসছেন সকাল সকাল????
আহানঃ ওয়াট ননসেনস।মাথা ঠিক আছে আপনার কি বলছেন এই সব??
দোকানদারঃ মাথা তো আপার গেসে।তাই তো এতো সুন্দর হয়েও শ্যামলা হওয়ার ক্রিম চাচ্ছেন।
আহানঃ চারু শ্যামলা ছেলে পছন্দ করে তাই তো ফর্সা থেকে শ্যামলা হতে চাচ্ছি( আনমনে)
হায়রে জিলাপির মতো কথা না পেচিয়ে বলেই তো দিতে পারেন আছে নাকি নেই??
দোকানদারঃ নাই নাই।অন্য কোথাও পাবেন না এইটাও সিউর।
দোকানদার এর কথার কোন উত্তর না দিয়ে চলে আসে আহান।
অনেক দোকানে গিয়ে শ্যামলা হওয়ার ক্রিম খুজে আহান
কিন্তু পায় শুধু নিরাশা
খুজতে খুজতে হয়রান হয়ে আহান একটা পার্কে এসে বসে।
আহান যে বেঞ্জ এ বসে ছিলো সে বেঞ্চ এ একটা লোক এসে বসে। আহানকে চিন্তিত দেখে-
লোকটিঃ ভাই কোনো সম্যসা?।আপনাকে অনেক চিন্তিত মনে হচ্ছে???
আহানঃ লোকটাকে কি বলব আমার প্রব্লেম এর কথা যদি সেও আমার উপর হাসা হাসি করে অন্যান্য মানুষ দের মতো। কিন্তু আমাকে তো শ্যামলা হতেই হবে চারুর জন্য। থাক তাকে আস্ক করে দেখি যদি সে জানে কোনো ক্রিমের নাম।আনমনে
লোকটির দিক এ মুখ করে –
আহানঃ ভাই শ্যামলা হওয়ার কোন ক্রিম এর নাম জানেন??
সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে “নীল ক্যাফের ডায়েরী ” পেজে পাবেন।
লোকটিঃ কি ছ্যামরা হওয়ার ক্রিম??
আহানঃ এই মিয়া আমার ফেস দেখে কি আমাকে মেয়ে মানুষ মনে হচ্ছে যে আমি আপনার কাছ থেকে ছ্যামরা হওয়ার আই মিন ছেলে হওয়ার ক্রিম চাইব??
কথাটা আহান একটু জোরেই বলে যার কারনে লোকটি রেগে মেগে যায়।
লোকটিঃ ওই মিয়া এতো চেচিয়ে কথা বলছেন কেন।?(কান থেকে হেড ফোনটা খুলে)
আপনার কি মনে হয় আমি কানে কম শুনি যে এতো চেচিয়ে চেচিয়ে কথা বলছেন আমার সাথে???
আর কি বলছিলেন শ্যামলা হওয়ার ক্রিম? ক্রিম ট্রিম না খুজে পাগলা মাথা টা ঠিক হওয়ার ঔষধ খুজুন গিয়ে।আপনার ওইটাই বেশি জরুরি।।।।
আহানঃআরও কিছু??
লোকটি আহানের কথা শুনে অবাক হলে-
আহানঃ অবাক হওয়ার মতোই কিছুই নেই
আরও কিছু বলতে মন চাইলে বলে ফেলুন একবারেই।
আর এইখান থেকে যান।
লোকটি ঃ ওই মিয়া বেঞ্জ টা কি আপনার? নাকি এই পার্ক টা আপনার যে আপনি বললেন আমি চলে যাব?
আহানঃ ভাই অনেক বড় ভুল হয়েছে আমার।আপনার যাওয়া লাগবেনা।।আপনি এইখানে আরামসে বসুন আর আমিই চলে যাচ্ছি।
কথাটি বলে আহান চলে যেতে নিলে
লোকটিঃ কোথা থেকে যে আসে এই সব পাগল টাগল.
লোকটির কথা শুনে আহানের বেশ মাথা গরম হয়।
কিছু বলতে গিয়েও থেমে যায়ও
আহানঃ না কিছু বলার দরকার নেই।কিছু বলতে গেলে আরও কথা শুনিয়ে দিবে আমাকে।আমি বরং কেটে পরি এই খান থেকে।
আহান চলে যেতে নিলে লোকটি ওকে ডাক দিয়ে-
এই যে মিস্টার??
লোকটির ডাক শুনে আহান থেমে যায়।
আহানঃ নিশ্চয়ই আরও কিছু শুনানোর জন্য ডাকছে আমাকে। মনে মনে
আহানঃ জ্বী বলুন আরও কিছু শুনানোর বাকি আছে(শুকনো একটা হাসি দিয়ে)
লোকটিঃ হুম।আমার কাছে শ্যামলা হওয়ার একটা আইডিয়া আছে।
লোকটির কথা শুনে আহান খুশি হয়ে তার পাশে বসে–
আহানঃ জ্বি ভাইয়া বলুন আমাকে প্লিজ আইডিয়া টা।আমার যে শ্যামলা হওয়া অনেক বেশি দরকার।
লোকটিঃ আপনি চাইলে বাচ্চাদের কপালে দেওয়ার কাজল উইস করতে পারেন মুখে।ওই টা উইস করলে আমি ডেম সিউর আপনি কয়েক দিন এর মধ্যেই ফর্সা থেকে শ্যামলা হয়ে যাবেন
লোকটির কথা শেষ না হতেই আহান লোকটির গালে চুমু দিয়ে বসে।
লোকটিঃ এইটা কি ছিলো? ( অবাক হয়ে)
আহানঃ থ্যাংকস ভাই আপনি জানেন না আপনি আমার কতো বড় উপকার টা করলেন।
লোকটিঃ বলদ একটা আমার কথা বিশ্বাস করে ফেল্ল
(আনমনে)
তারপর আহান লোকটির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মার্কেট থেকে বাচ্চাদের দেওয়া কাজলের কৌটা কিনে বাসায় ফিরে আসে।।
বাসায় এসে দরজায় নক দিলে দিশা এসে দরজা খুলে দেয়।
আহান ভিতরে ডুকলে-
দিশাঃ ভাইয়া কোথায় ছিলে এতক্ষন ধরে???সেই কোন সময় বের হয়েছো আর এখন আসলে বাসায় ;
আবির দিশার কথা মাঝ খান দিয়ে বলে উঠে-
আবিরঃ আরে বাবা। ভাইটাকে তো একটু বসতে দিবা শান্তি তে বাইরে থেকে আসছে বেচারা।তা নয় টিচার এর মতো করে প্রশ্ন করেই যাচ্ছ আমার ভাই টাকে।
দিশাঃ কি বললে আমি টিচার এর মতো প্রশ্ন করি(কোমড়ে হাত রেখে)
আবির দিশা কে কিছু বলতে যাবে-
আহানঃ উফফ দুই জন চুপ করো তো। কি শুরু করেছ আবার।।।
দিশাঃ আমি শুরু করলাম নাকি তোমার ভাই শুরু করল???
আবিরঃ ইসস নিজে মনে হয় দুধের দোয়া তুলসি পাতা( ভেংচি কেটে)।
আহানঃ আল্লাহর দোহায় লাগে দুই জন চুপ কর।
আমার মাথা ধরে গেছে তোমাদের বক বক শুনতে শুনতে।আর নিতে পারছিনা আমি।।।
আচ্ছা ভাবি চারু কোথায় ওকে দেখছিনা যে??
দিশাঃ ভাইয়া ও তো রুমে।
আহানঃ আচ্ছা আমি ওকে দেখে আসছি।কথাটি বলে আহান চলে আসে সেখান থেকে।আর দিশা আর আবির চুহা বিল্লির মতো ওই খানে দাড়িয়েই ঝগড়া করতে থাকে
আহান রুমে আসলে দেখে দরজা খোলা। নক দিতে নিলে খেয়াল করে চারু গোসল করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ওর ভিজা চুল গুলে হেয়ার ড্রায় দিয়ে শুকাচ্ছে আর বিড় বিড় করে গান গাইছে।
আহান চারুকে এইভাবে দেখে–
আহানঃ হায়….. মার হি ডালা( বুকের বা পাশে হাত রেখে)।।।
চারু আয়নায় আহানকে দেখতে পেলে পিছনে ঘুরে তাকায়।
চারু ঃ ভাইয়া আপনি????…….
আহানঃ……
চলবে……