তবু মনে রেখো পর্ব-১২ শেষ

0
4806

তবু মনে রেখো
১২দশ তথা অন্তিম পর্ব

রাত ৯.৪০, বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে শিমুল। নিহাল আজ তাকে এতো বড় সারপ্রাইজ দিবে বুঝতে পারে নি। প্রথমে ভেবেছিলো নিহাল হয়তো তাকে প্রপোজ করছে, কিন্তু পরক্ষণেই নিহাল তাকে এতো বড় একটি সারপ্রাইজ দেয় যা সে কল্পনাও করে নি।

৬ ঘন্টা আগে,
– বলেছিলাম, যেদিন ইফতি তোকে ছেড়ে দিবে সেদিন আমাকে তোর মেনে নিতে হবে। কোনো ছাড় পাবি না। এবার ডিসিশন তোর নেওয়ার পালা।
– নি..নিহাল, প্লিজ
– কি ভাবছিস? ডিসিশন নিতে হবে তোর।
– তুই কি এইজন্য আমাকে এখানে নিয়ে এসেছিস? আমার ভালো লাগছে না নিহাল। প্লিজ, আমি, আমি এখনি বাসায় যাবো।

বলে যেতে নিলেই নিহাল হাত টেনে ওকে দাঁড় করায়। তখন একটা মেয়ে ছাদে উঠে আছে, পরণে কালো শাড়ি, গোলগাল চেহারা, উচ্চতা শিমুলের থেকে একটু কম, গায়ের রঙ যেন চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে। মেয়েটা এসে নিহালের পাশে দাঁড়িয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলো,
– আমার একটু দেরী হয়ে গেছে, জ্যাম ছিলো তো

শিমুলের মাথায় যেন কিছুই ঢুকছে না কি হচ্ছে তার সাথে, শিমুলের কৌতুহল দেখে নিহাল বলতে লাগলো,
– ভেবেছিলাম শেষ ট্রাইটা করি, যদিও জানতাম তুই কখনোই হ্যা বলবি না। তাও লাস্ট ট্রাই করতে ক্ষতি কি বল? আর সানজিদা (মেয়েটির দিকে তাকিয়ে) তুমি একদম ঠিক সময়ে এসেছো।
– মানে? (শিমুল)
– শিমুল, ওর নাম সানজিদা; মায়ের বান্ধবীর মেয়ে। যাই বল বিয়ের বয়স তো হয়েছে। তাই মা এই মেয়েটাকে আমার জন্য পছন্দ করেছে। আজ আমি ওকে ডেকেছি একটাই কারণ, তুই যদি আমায় হ্যা বলতি তাহলে ওকে মানা করে দিতাম। কিন্তু সেটাতো হওয়ার নয়, তাই বিয়েটা এবার আমি করেই ফেলবো ভেবেছি।
– ও সব জানে?
– হ্যা আমি সানজিদাকে আগ থেকেই সব জানিয়ে রেখেছিলাম। তো সানজিদা আমার মতো দুই বার রিজেক্টেড আশিককে কি তুমি বিয়ে করবে?
– আপনাকে যদি আমার বিয়ে নাই করার ইচ্ছে থাকতো তবে আপনার দেওয়া সময়ে এখানে আসতাম না।
– হাতটা আগাও

বলেই রিংটা সানজিদার আংগুলে পরিয়ে দিলো নিহাল। শিমুলের বুক থেকে যেনো একটি বোঝা কমে গেলো। না চাইতেও চোখ থেকে পানি পড়ছে। সব শেষে সানজিদাকে একটু আলাদা করে আনলো শিমুল কিছু কথা বলার জন্য।
– সানজিদা, তোমার মনে যদি কোনো রকম কথা থাকে তুমি আমায় বলতে পারো।
– কোন কথা?
– এই যে নিহাল আর আমি বিষয়ে
– আমি জানি তোমার ইতস্ততবোধ হচ্ছে, বাট ট্রাস্ট মি আমার কোনো কিছু জানার নেই। নিহাল আমাকে সব বলেছে। প্রথমে ভেবেছিলাম যে অন্য কাউকে ভালোবাসে তাকে বিয়ে করলে আমি সুখী হবো তো? পরে ভাবলাম একটা মানুষ যে তার জীবনে আশার কোনো সম্ভাবনা নেই তাকে যদি কেউ এতো ভালোবাসতে পারে তবে আমি যখন তার জীবনে আমার জায়গা করে নিবো তখন আমাকে কতোটা ভালোবাসবে। আর ওর সময় লাগবে সেটা সে আমাকে জানিয়ে দিয়েছে। দেখি না যদি আমাদের জীবনটাকে এক সুতোয় বাধতে পারি।

সানজিদা মেয়েটার কথাগুলো শিমুলের খুব মনে ধরেছে। মেয়েটা খুব বুঝদার, নিহাল ওকে নিজের জীবনে পেয়ে খুব সুখী হবে। সবাই সুখে থাকুক এটাই শিমুল চায়। সুখ না হয় তার ঘরের চৌকাঠ পেরোলো না, তাতে কি খুব ক্ষতি হবে! কলিংবেলের আওয়াজে ভাবনার জগতে ছেদ পড়ে। এই অসময়ে কারোর আসার কথা নয়। লোকমান ঘুমিয়ে পড়েছে হয়তো তাই এতোবার বাজছে অথচ কেউ খুলছে না। ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে দরজাটি খুললো শিমুল। দরজা খোলার পর দুই কদম পিছিয়ে এলো, কারণ যে মানুষটি দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে সে যে এই মুখী হতে পারে কল্পনাতেও ভাবে নি শিমুল।
– কে এসেছেরে মা?

কলিংবেলের শব্দে হারুন সাহেবের ঘুম ভেঙে গেছে। এতো রাতে কে এলো দেখতেই উঠে আসা, ততক্ষনে শিমুল দরজা খুলে ফেলেছে বলেই প্রশ্নটা করলেন তিনি। শিমুল অবাক নয়নে তাকিয়ে আছে লোকটির দিকে। হ্যা ইফতি এসেছে, ইফতির অবস্থা খুবই বিধ্বস্ত লাগছে; টাই হাফ খোলা, শার্ট কুচকে আছে, চুল এলোমেলো, চোখ মুখ ফুলে আছে যেন ঝড়ের গতিতে এসেছে। আজ এক মাস পর ইফতিকে দেখতে শিমুল। তাই খুতিয়ে দেখে নিলো তার মানুষটাকে। পরক্ষণে সেই বেদনাদায়ক স্মৃতি মনে পরতেই চোখমুখ খিচে গেলো। কঠোর কন্ঠে উত্তর দিলো,
– বাবা তোমার ছোট মেয়ে-জামাই এসেছে।

বলেই নিজের ঘরে চলে গেলো শিমুল। হারুন সাহেব লোকটা খুব নম্র স্বভাবের, কোনোদিন কারোর সাথে উচ্চবাচ্য করেন নি তিনি। ইফতি মাথা নিচু করে দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে, তাই সব জেনেও তাকে ভেতরে আসতে বলেন হারুন সাহেব। ইফতির খুব অনুতাপ হচ্ছে, সে ব্যক্তি তার মেয়েকে ভরসা করে তার হাতে উঠিয়ে দিয়েছিলো, সেই মেয়ে ঘর থেকে তাড়িয়ে নিতে এক বিন্দু চিন্তাও করেনি ইফতি।
– এতো রাতে কি মনে করে?
– বাবা, আমি আমার স্ত্রীকে বাড়ি নিতে এসেছি।
– তোমার একজন স্ত্রী যে ছিলো সে মারা গেছে, আর একজন যে আছে তাকে তো শুনলাম ডিভোর্স করার প্রস্তুতি নিচ্ছো।
– বাবা আমি শিমুলের অপরাধী, ও যা শাস্তি দিবে আমি মাথা পেতে নিবো। শুধু ওকে আমার থেকে দুরে সরিয়ে নিবেন না।
– এইটার সিদ্ধান্ত আমার নয় ইফতি। শিমুল যা চাবে সেটাই হবে। কিন্তু শিমুল কি তোমায় ক্ষমা করবে?
– বাবা আমি ওর সাথে কথা বলতে চাই।
– বেশ, ও ওর রুমেই আছে।

ইফতি খুব ভেবেচিন্তে পা রাখলো শিমুলের ঘরে। সেদিন যেভাবে অপমান করেছিলো, যেভাবে ওর কথা না শুনে বিনা দোষে ঘর থেকে বের করে দিয়েছিলো সেটার পর শিমুলের সামনে দাঁড়াতে লজ্জায় মাথা নত হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তবুও বেহায়ার মতো ওর কাছে যাবে সে। নিজের ভুল স্বীকার করতে পিছ পা হবে না ইফতি। যা শাস্তি দিবে শিমুল মাথা নত করে মেনে নিবে শুধু নিজের কাছ থেকে দুর হতে দিবে না। রুমে ইফতির অস্তিত্ব বুঝতে পেরেও ভাবলেশহীনভাবে বারান্দায় দাঁড়িয়ে রইলো শিমুল।
– শিম…শিমুল
– এই স্বার্থপর, কালনাগিনীর ঘরে কি মনে করে?

কথাটা শুনেই মাথা নিচু হয়ে গিয়েছিলো ইফতির। শিমুল একটু থেমে আবার বললো,
– আমার মতো ছলনাময়ীর কাছে কি চাই? যে নিজের স্বার্থে আপনার স্ত্রী যে কিনা আমার বোন ও তাকে আমি মৃত্যুর পথে ঠেলে দিয়েছি। আমি তো নিজে মা হতে পারবো না সেকারণে ওই কাজটা করেছিলাম। বলুন কি প্রয়োজন হলো আমার?

কথাগুলো ইফতির বুকে তীরের মতো লাগছে, শিমুল পাল্টে গেছে। এই শিমুলের নাগাল পাওয়া খুব দুষ্কর। একটু কাছে যেয়ে বলতে থাকে,
– শিমুল আমায় কি একবার সুযোগ দেয়া যায় না?
– আমায় দিয়েছিলেন? একবার আমার কথা রাখার? কাল পর্যন্ত আমি আপনার ওয়াইফের অপরাধী ছিলাম,যে তাকে ইচ্ছে করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে তাহলে আজ কি হলো? কেনো এসেছেন আবার? চলে যান, প্লিজ চলে যান।
– শিমুল একবার আমার দিকে তাকাও প্লিজ

ইফতি জোর করে শিমুলের গাল আলতো করে ধরে নিজের দিকে ফেরায়।
– ভুল করেছি, না ভুল না, অন্যায় করেছি। তুমি আমায় যা শাস্তি দিবে আমি মেনে নিবো। কিন্তু তুমি বলো আমার কি করার ছিলো বলো, ডা. ইশরাতের কথাগুলো শুনে আর বকুলের রিপোর্ট গুলো দেখে আমার মাথা ঠিক ছিলো না।
– একবার কি আমার কথা শোনা যেত না? যাক যা হয়ে গেছে তা হয়ে গেছে। এখন কি চাই আপনার?
– শিমুল প্লিজ, একবার আমায় সুযোগ দিয়ে দেখো। আমি আমার সব ভুল শুধরে নিবো।
– যাকে স্ত্রী বলেই মেনে নিতে পারেন নি তার কাছে এতো সুযোগ চাচ্ছেন কেন।

ইফতির চোখে চোখ রেখে কথাগুলো বলে শিমুল। ইফতির চোখ ছলছল করছে, তার চোখে আজ অনুতাপ স্পষ্ট।
– ভালোবাসি তোমায়, পারবো না আমি থাকতে। আজ যখন নিহাল তোমাকে রিং দিয়ে প্রপোজ করছিলো বুকটা ফেটে যাচ্ছিলো। খুব ভালোবাসি তোমায় শিমুল। আমার চলবে না তোমাকে ছাড়া।
– এক মাস তো চলেছে, এখনো চলবে। আমি ওই বাড়ি যাবো না। আমি যেতে পারেন
– আমায় ক্ষমা করা কি সত্যি যায় না?
– আমি আল্লাহ নই, আমি মানুষ। আমার ও কষ্ট হয় ইফতি। হ্যা আপনাকে ভালোবেসেছি আমি। কিন্তু কারোর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার মতো মন কোনোদিন ছিলো না। তাও কার থেকে নিবো? বকুল? ওকে মেয়ের মতো ভালোবাসতাম আমি। কিভাবে ভেবে নিলেন আপনি যে আমি… যাক আমি ফিরবো না। চলে যেতে পারেন।

শিমুলকে কোনো মতেই ইফতি রাজী করাতে পারলো না। আজ সে হেরে গেছে, সত্যি হেরে গেছে। তবে হাল ছাড়বে না সে। সেদিন শিমুলের বাসা থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরত যায় নি। ওদের বাসার নিচেই গাড়িতে বসেছিলো।

আজ ৩ দিন ইফতি শিমুলের বাড়ির নিচে অপেক্ষা করছে, এই আশায় যাতে শিমুল তাকে ক্ষমা করে দেয়। শিমুল বারান্দা থেকে সকাল সন্ধ্যা ইফতি আর ওর গাড়ি দেখতে দেখতে মেজাজ খারাপ হতে লাগলো। পেয়েছে কি এই লোক, গোসল নেই, খাওয়া নেই একটা মানুষের বাসার বাইরে বসে আছে। আর নিজেকে আটকে রাখতে পারলো না সে। কিছুক্ষণ পর গাড়িতে কারোর টোকা পেয়ে চোখ খুললো ইফতির, গাড়ির গ্লাস নামিয়ে লোকমানকে দেখে চমকে উঠলো। চোখ কুচকে বলতে লাগলো লোকমান,
– আফায় আপনেরে ঘরে যাইতে কইছে। আইয়েন
– তোমার আপা পাঠিয়েছে?
– না আমি তো বলদ, নাচতে নাচতে আপনেরে লইয়া যামু। আফায় কইছে গোসল কইরে খাইয়ে লইবেন। আইয়েন

খুব ক্ষুদ্ধ মনে হচ্ছিলো লোকমানকে। হবে না কেনো যে আফাকে নিজের চেয়ে বেশি ভালোবাসে এই লোক তার সেই আফাকে ঘরছাড়া করেছে। ইফতিকে তার দু চোখে সহ্য হচ্ছে না। কথাগুলো বলেই গটগট করে বাড়ির ভেতর চলে গেলো। ইফতি মুচকি হেসে বাড়ির ভেতরে গেলো। গোসল করে কিছু খেয়ে নিলো ইফতি। আজ তিন দিন ধরে তিন বেলা ঠিকমত খেয়েছে কিনা সন্দেহ। শিমুলের মুখে কোনো কথা নেই, চুপচাপ ইফতিকে খাবার বেরে রুমে চলে গেলো। খেয়ে ইফতিও রুমে আসলে শিমুল বলতে লাগে,
– কি প্রমাণ করতে চাচ্ছেন? এভাবে ঘরের নিচে বসে থাকলে আমি ক্ষমা করে দিবো?
– যতদিন করবে না ততদিন আমি এভাবেই থাকবো
– চানটা কি?
– তোমাকে চাই। আমার বউকে ঘরে নিয়ে যেতে চাই। আমার মেয়ের মামুনিকে আমার ঘরে নিয়ে যেতে চাই।

বলেই শিমুলকে কাছে টেনে নিলো ইফতি। শিমুলের প্রচুর রাগ লাগছে, এতো জিদ কেনো এই লোকটার। নিজের থেকে সরিয়ে দিতে চাইলেও পারছেনা, ইচ্ছে মতো কিল ঘুষি দিচ্ছে কিন্তু ইফতিকে নড়াতে পারলো না। এক সময় হাল ছেড়ে দিলো শিমুল। আজ চোখের পানি বাধ মানছে না, ইফতির কলার চেপে ধরে বলতে লাগলো,
– আমার আর কষ্ট দিলে আপনার শান্তি হবে বলুন তো, আর কত কষ্ট দিবেন। আমি আর পারছি না। আর কষ্ট নিতে পারবো না আমি।
– আর কষ্ট দিবো না আমার বউটাকে। সত্যি বলছি, আর কোনো কষ্ট ছুতে দিবো না।
– এবার কষ্ট দিলে আমি সত্যি মরে যাবো, সত্যি মরে যাবো।

শিমুলের কথা শুনে ইফতি এক মূহুর্ত দেরি না করে জড়িয়ে ধরলো ওকে। যতোটা শক্ত করে ধরলে শিমুল তার হৃদয়ের কাছে থাকবে ততোটাই শক্ত করে জরিয়ে ধরলো। শিমুল তার অভিযোগের খাতার সব অভিযোগগুলো বলতে লাগলো। আর ইফতি মাথা নিচু করে সব অভিযোগ মেনে নিলো। আজ তাদের সম্পর্কের একটি নতুন সূচনা হচ্ছে। যেখানে কোনো মান,অভিমান,অভিযোগ থাকবে না। আজ সব কিছুর সমাপ্তি করবে তারা। হঠাৎ ফোন পেয়ে নিজেকে সামলে নে শিমুল। ফোন ধরতেই ইফতির মুখের রং পাল্টে যায়।
– কি হয়েছে?
– অথৈর খুব জ্বর। কিছুতেই জ্বর নামছে না, প্রায় ১০০ এর উপরে।
– দাঁড়িয়ে আছেন কেনো? চলুন। না জানি মেয়েটা আমার কিরকম আছে।

দ্রুত বাসায় পৌছায় তারা। দেখভালের কমতির কারণে মেয়েটার জ্বর এসেছে। শিমুলকে এতোদিন পর কাছে পেতেই অথৈ তার গায়ের সাথে মিশে গেলো। এতোদিনের মমতার আঁচলটা আবার পেয়েছে সে। আসার পর থেকে অথৈকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরে শিমুল। বিকেলের দিকে জ্বরটা কমলে বাবাকে ফোন করে জানিয়ে দেয় সে পার্মানেন্টলি তার স্বামীর ঘরে চলে এসেছে। তখন তাড়াহুড়োতে লোকমান বা হারুণ সাহেব কাউকেই জানাতে পারে নি সে। কথা বলার পর গোসল সেরে বারান্দায় দাঁড়ায় শিমুল। ইফতি তখন সিগারেট হাতে বাইরে তাকিয়েছিলো।
– আপনি এই সিগারেটটা খাওয়া ছাড়তে পারেন না?
– নেশা খুব বাজে জিনিস, একবার লাগলে ছাড়তে ইচ্ছে হয় না।
– নিকোটিনের নেশাটা বাদ দিয়ে অন্য কিছুতে মন দিলেই পারেন।

কথাটা শুনে মুচকি হেসে সিগারেটটা ফেলে শিমুলকে কাছে টেনে নেয় ইফতি।
– এতো সুন্দর নারী, আমার পাশে থাকতে নিকোটিনও সেই নেশা ধরাতে পারবে না। তাহলে এই নারীতে আমার নেশার অবসান ঘটাই, যে কিনা একই সাথে একজন আদর্শ মা, একজন আদর্শ মেয়ে এবং একজন আদর্শ স্ত্রী। শিমুল আমি তোমাকে চাই, খুব করে চাই। তোমাতে মিশে যেতে চাই।
– ভালোবাসেন?
– প্রচুর, আরো ভালোবাসতে চাই।
– আমিও আপনাকে ভালোবাসি। সারাজীবন এভাবেই ভালোবাসতেই চাই।

আজ নেই কোনো রাগ, মান,অভিমান। আজ শুধু ভালোবাসাই বিদ্যমান তাদের মাঝে। এভাবেই তারা তিনজন একে অপরের মাঝে নিজের হারানো সত্তাগুলোকে খুজে পেলো। তিনজনের ছোট্ট সংসারটা এভাবেই হাসিখুশিতে থাকুক এটাই কামনা।

সমাপ্ত

মুশফিকা রহমান মৈথি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here