তুইতেই আমি🏵পর্বঃ৩

0
3106

🏵তুইতেই আমি🏵
লেখিকাঃইসরাত আয়রা ইচ্ছে
পর্বঃ৩

🍁🌼🍁

আমার কিছুই বলার নেই আসলেই তাকে ছেড়ে দুইটা দিন দূরে থাকা হয় নি।বেড়াতে গেলে তাকে নিয়ে যেতাম বা তার সাথে আমি যেতাম।

হটাৎ আমার গলায় মুখ ডুবালো,,,,,,,,,,,,,

ঘটনার আকস্মিকতায় আমি নিস্তব্দ।আচ্ছা ছেলেরা কাছে আসলে তো মেয়েদের অস্বস্তি হয় যাকে বলে পরপুরুষ এর ছোয়া মেয়েরা মেনে নিতে পারে না কিন্তু আমার ভালো লাগছে কেন এত? তাহলে সে কি আমার আপন কেউ? তাকে কি আমার মন নিজের অজান্তেই এত আপন করে নিল? আমার তো তাকে ভালো লাগে অসম্ভব ধরনের ভালো লাগে কিন্তু শুধু ভালোলাগার মানুষ কাছে এলে তো তাকে মেনে নেওয়া যায় না তাহলে কি ভালোবা,,,,,,,

না না তা কিভাবে তার মুখে সারাদিন অন্য মেয়েদের নাম থাকে সে হয়তো কাউকে ভালোবাসে।আর তার যা মনে আসে সে তাই করে এই ব্যাপারটা সিরিয়াস নেয়া মানেই বোকা সাজা।

কিন্তু সে এত অস্থির কেন? কিসের এই অস্থিরতা?

–আহান আপনি উঠুন।কি হয়েছে আমাকে খুলে বলুন।আমি এভাবে থাকতে পারছি না আহান

–(নো রিপ্লাই)

— আহান আমার সুরসুরি লাগছে আহান।।আপনি কি ঘুমিয়ে গেলেন আহান?

–একটাও কথা বলবি না টুকি।এতক্ষণ পেরেছিস। আরও পারবি।তোর সুরসুরি কতটা তা আমাকে জানাতে আসিস না।আমাকে এভাবে থাকতে দে। আর নয়তো এতক্ষণ যা ভাবছিলি তাই ভাব।।ভাবার মধ্যে থাকলে কিছু টের পাওয়া যায় না।

–হুহ।কিন্তু আহান আপনার না কাল এক্সাম?

— আমি এভাবে কিছুক্ষণ থাকতে চাইইইইইইইইই

এবার ভয় পেয়ে গেলাম আর কিছু বলার আর সাহস আমার নেই।আল্লাহর কাছে একটাই কথা বলসি আল্লাহ আমাকে ধৈর্য দাও।এভাবে সে কখনও করে না কখনও না

হঠাৎ মনে হলো গলায় একটা চুমু দিয়েছে

আমি আহান বলে চিল্লাতে আ অক্ষর টা উচ্চারণ করেছি তার আগেই আমার গলা থেকে মুখ উঠিয়ে মুখে আঙুল দিয়ে

–হুসসসসসস একটা আওয়াজও করবি না তুই,,,, গলা টিপে দেব একেবারে

আমি শুধু ফেলফেলিয়ে তাকিয়ে আছি। কি হচ্ছে এসব?আমার সাথেই কেন? আহান ই বা কেন?এই ছেলেটাকে আমি কোলেও নিয়েছি। নিজে হাটতে পারতাম না ঠিক মতো তাও আমি তাকে কোলে নিয়ে হেটেছি।আমার কোল থেকে পরে গিয়ে তার মাথাও ফেটেছে। ছোটোবেলার একটা সৃতি আজও খুব হাসায় আমায়।যখন আহান কে হসপিটাল থেকে বাসায় আনা হলো

–ভায়ো(ভালো) মা ইতা তি তুলাম(তোমার) বাবু?

–হ্যা মা এটা আমাল বাবু।

–এতাতে(এটাকে) আমাল কুলে দিবে?

— হ্যা মা

–আচ্ছা ভায়ো মা এটা কি আমাল বল হবে?

–বর?

–হ্যা হ্যা(মাথা ঝাকিয়ে)

–মা বর দের তো বড় হতে হয় কিন্তু এই বাবু টা তো তোমার থেকে ছোট?

–না এটা আমালই বল হবে। নইলে আমি লাগ কলব

— আচ্ছা মা এটা তোমারই বর

–ইয়ে তি মদা(মজা)

আহান এর কামড়ে হুস ফিরলো।

— তুই আমার মাথায় হাত বুলাচ্ছিস কেন রে?

আমি কিছু বলতে পারলাম না কখন এ কাজ করেছি আমি জানি না।মাথা টাই গেছে আমার।

কি বলব মাথায় আওরাচ্ছি

–আসলে কি হয়েছে আহান আপনি আমার ছোট ভাইয়ের মতো তো তাই ছোট ভাইকে,,,,,,,,,

আমি আর কিছু বলতে পারলাম না ওর চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে দেখে আমার আত্মা কেপে উঠেছে

–ঘুমা তুই। তোর উপর দিয়ে ধকল গিয়েছে অনেক। গেলাম আমি

–হুম

উঠে গিয়েও আবার ফিরে এলেন।

–আচ্ছা আমি মাথায় বিলি কেটে দি? ঘুমা

–হুম

আহাম্মক এর মতো তাকিয়ে হুম হুম করে যাচ্ছি এ কাকে দেখছি আমি? ২০দিন দূরে রইলাম তার মধ্যে এত চেঞ্জ।ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে গেলাম।

🍁🌼🍁

ঘুম থেকে উঠে দেখি ঘড়ির কাটা রাত ১১ টা ছুই ছুই।

–আল্লাহ এতক্ষন ঘুমালাম আমি।আম্মু আয়ান কি একটু ডাকেও নি আমায়

— ডেকেছে কিন্তু তুই উঠিস নি

হঠাৎ আহান এর গলা পেয়ে চমকে গেলাম।আহা সে আমার টেবিলে বসে মন দিয়ে পড়াশুনা করছে।

–অহ হবে হয়তো। সবাই কি ঘুম আহান? আর আপনি এখানে যে,,,,

— আমি এখানে তাতে তোর কোনো প্রবলেম হচ্ছে?

–না আপনি থাকলে আমার প্রবলেম হবে কেন? আমি ফ্রেস হয়ে আসছি

🍁🌼🍁

ফ্রেস হয়ে এসে দেখলাম আহান আমার ফোন ঘাটছে এখন কিছু বলা মানে ৩য় বিশ্বযুদ্ধ যেয়েচেয়ে ডেকে আনা।তাই শান্ত ভাবেই বল্লাম

— আহান খেয়েছেন আপনি?আমি ক্ষিদে পেয়েছে খাব

–(আমার দিকে তীক্ষ্ম এক দৃষ্টি) খেয়েছি খেয়ে নে তুই

সোজা রুম থেকে বের হয়ে খাবার রুম এ গিয়ে খাবার নিয়ে উপরে চলে এলাম।কেন যেন মনে হলো খায় নি সে। তাই এই কাজ

এসেই আহান এর সামনে বসে ভাত মেখে মুখে ধরলাম কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে লোকমাটা মুখে নিলো।

🍁🌼🍁

দুইজন এর খাওয়া শেষ করে রুমে এসে বসলাম।আজকে যা করল তাই নিয়ে ইকটু ভয় করছে মনে। কিন্তু মানুষটা আহান তাই আবার এক দীর্ঘশ্বাস টেনে বিশ্বাস আস্থা বুকে নিয়ে নিলাম

–টুকি এদিকে আয় । এই জিনিসটা আমার বেজে যাচ্ছে বার বার

আমার কেমিস্ট্রি নিয়ে অনার্স পড়ার কারণে বিষয় টা বুঝিয়ে দিতে পারলাম।তার মানে এই কারণে এত রাতে এখানে তার আসা।

হঠাৎ উঠে দাঁড়াল।

— চলে যাবেন আহান?

–না বেলকুনিতে আছি । কফি নিয়ে আসতে পারবি?

–হ্যা হ্যা। আপনি দোলনায় বসুন আমি আসছি ১০ মিনিট

🍁🌼🍁

রাতের বেলা বেলকুনিতে লাল নীল সবুজ ড্রিমলাইট গুলো জ্বললে অদ্ভুত সুন্দর দেখায়। যেটা ভাষায় প্রকাশ করা দায়। বেল্কুনির চারপাশ ছোট ছোট গাছপালা টব ভর্তি ফুল গাছ। গার্ডেনিং আমার অনেক গুলো শখ এর মধ্যে অন্যতম।

আহানের পাশে বসলাম

–আহান কফি

আহান হান বাড়িয়ে নিলেন কিছু বললেন না।।একচুমুক দিয়ে বললেন

–১৫ দিন ধরে কেন যেন কফি টার স্বাদের মতো জীবন টা লাগছে (গম্ভীর ভাবে সামনের দিকে তাকিয়েই বললেন কথা টা)

আমি তার দিকে তাকানো তখন।মনে মনে ভাবছি কেমন কফি বানালাম যে তার জীবন কফির স্বাদের মতো লাগছে??এত গম্ভীর হয় না তো সে এত সহজে। ভাবতে ভাবতেই মুখে দিলাম কফিটা

–ওয়াক ছি। কফিটা এত তিতে তিতে লাগছে।সরি আহান । আমি আবার বানিয়ে আনছি। আমি আসলে চেক করতে ভুলে গেছিলাম

বলেই আহান এর হাতের কফিটা নিতে গেলাম।আহান নিতে দিলেন না

–আমি খেতে পারছি ইচ্ছে

–তবুও

–পারছি তো খেতে

হঠাৎ মাথায় এল আহানের কথাটা তার জীবনটা তিতে তিতে লাগছে কেন?কি হলো এত চিল মুড এ থাকা ছেলেটার,,,,,,, কি হলো হঠাৎ?

–আচ্ছা আপনি এটা খান আমি আবার ভালো করে বানিয়ে আনছি সেটাও খাবেন কেমন?

বলেই উঠতে নিলাম। সে আমার হাত ধরে টান দিলেন।আমি গিয়ে সোজা তার গায়ের উপর পরলাম।তাড়াতাড়ি করে উঠে গেলাম।সে আবার হাত টেনে দুরত্ব না রেখে তার পাশে বসালো । আমার কাধে মাথা রাখল। আমার থেকে লম্বা হওয়ার মাথা রাখায় সমস্যা হচ্ছিলো তার। আবার উঠে বলল তোর আর একটু লম্বা হওয়া উচিত ছিলো। একটু সরে বস।

সরে বসার পর আবার আমার কাধে মাথা রাখল

–আহান আপনার কি কোনো কারনে মন খারাপ?

(চুপ)

মাথায় হাত বুলিয়ে আবার ডাকলাম

–আহান

,,,,

–আহান

–ইচ্ছে?

–হুম

–আচ্ছা তুইতেই কি আমি?

,,,,,,,

চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here