তুই_আমার_অন্যরকম_নেশা ৬

1
3109

🍂#তুই_আমার_অন্যরকম_নেশা 🍁
#পর্ব-৬
#Jannatul_ferdosi_rimi(Writer)

আজকে সবাই অনেক ব্যাস্ত কেননা আজকে মৌ আপুরমেহেদী+সংগীত বাড়িতে মেহমান আসা শুরু করে দিয়েছে শুনলাম অই পায়েল পেত্নিটাও নাকি আসবে উফফ অসহ্য অই পেত্নিটা একটা গায়ে পড়া মেয়ে যখনি আসি খালি অয়ন ভাইয়ার পিছনে ঘুরঘুর করে দেখলাম অয়ন ভাইয়ারা চলে এসেছে অই পায়েল পেত্নিটা ও এসেছে তখনি কাকিমনির ডাক
—-কিরে রিমি রিক মিনি কই তোরা দেখ কতদিন পর পায়েল এসেছে

পায়েলঃ আরে কাকিমনি ব্যাস্ত হবেন না আচ্ছা মৌ আপু কই?

কাকিমনিঃ ওতো পার্লারে এখন ওর বান্ধুবিদের সাথে গেছে সন্ধার আগে ফিরবে বলে মনে হয় না আচ্ছা অয়ন

অয়ন ভাইয়াকে উদ্দেশ্য করে
অয়নঃ জ্বী কাকিমনি?
কাকিমনিঃ আন্টি আপা আর ভাইয়া কোথায়?
অয়নঃ বাবা-মা আর দিদুন সন্ধায় আসবে
ততক্ষনে আমি নীচে চলে আসলাম
রিমিঃ কেমন আছো পায়েল আপু?
পায়েল আপু আমাকে দেখে কিছুটা বিরক্তিবোধ করলেন সেইটা খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারছি তাও মুখে হাঁসি ফুটিয়ে উত্তর দিলো
পায়েলঃ এইতো ভালো..তুমি কেমন আছো?
রিমিঃ এইতো ভালো
পায়েলঃ সবাই নাকি পার্লারে গেছে তুমি যাওনি কেন?
রিমিঃ আমার এইসব পছন্দ না বাসাই আমি বেশী কম্ফোর্টেবল..
আমার কথার মাঝেই অয়ন ভাইয়া বলে উঠলেন
অয়নঃ এম্নিই ওকে যা পেত্নি লাগে পার্লারে গেলে তো শাকচুন্নির দাদি লাগবে ( এই বলে অট্টহাসিতে ফেটে পড়লেন)
কাকিমনি মুচকি হাসছে পায়েল আপুর ঠোটেও ডেবিল স্মাইল এই লোকটাও না আমাকে সবসময় এইরকম করে
পায়েল আপু ন্যাকামি করে বলে উঠলো
পায়েল আপুঃআহ অয়ন এইভাবে বলো না বাচ্ছা মেয়েটা সব সময় সত্যি কথা বলতে নেই ( এই কথা তে কাকিমনি খানিকটা অসন্তুস্ট হলেন) আমি অভিমানি সুরে বলে উঠলাম
রিমিঃ আমি তো পায়েল আপুর মতো এতো ফর্সা বা স্টাইলিস নই তাই আমাকে পেত্নি লাগবেই ( এই বলে আমি উপরে চলে গেলাম)
আমার কথায় অয়ন ভাইয়া খানিকটা অবাক হলেন
অয়নঃ ওহ শীট ও কি মাইন্ড করেছে? আমি তো জাস্ট মজা করছিলাম(মনে মনে)
অয়ন ভাইয়া যেই উপরে যাবে তখনি পায়েল আপু আটকালো
পায়েলঃ কোথায় যাচ্ছো অয়ন?
অয়নঃ আমার উপরে একটু কাজ আছে
পায়েলঃ কি এমন কাজ?
অয়নঃ সব কিছু কি তোমাকে বলে যেতে হবে?😡
পায়েলঃ এইভাবে রেগে যাচ্ছো কেন? তাহলে আমিও যাবো তোমার সাথে
অয়নঃ নো কোনো দরকার নেই
পায়েলঃ তাহলে আমি কি করবো একা একা
তখনি কাকিমনি বলল
—পায়েল একটু পর মিনিও পার্লারে চলে যাবে তুমি বরং ওর সাথে চলে যাও
তখনি মিনি চলে আসে
—হ্যা পায়েল আপু চলো তুমি আমার সাথে চলো
পায়েলঃ আমি যদি চলে যাই তখন যদি অই মেয়েটা অয়নের পিছনে ঘুরে খালামনি আমাকে বার বার নিষেধ করেছে অয়ন কে একা না ছাড়তে কিন্তু আমি যদি পার্লারে না যাই তাহলে আমাকে সুন্দর লাগবে না ওহ না না এইটা হতে পারে না আজকে অনুসঠানে আমাকেই সবচেয়ে বেশি সুন্দর লাগবে ইয়েস তখন অয়ন আমার পিছনেই ঘুরবে(মনে মনে)
পায়েলঃ হ্যা আমি যাবো
মিনিঃ তাহলে চলো
মিনি আর পায়েল পার্লারের উদ্দেশ্যে বের হলো কাকিমনিও রান্নাঘরের দিকে চলে গেলো অয়ন একটা শ্বাস নিয়ে উপরের দিকে হাঁটা ধরলো অনেক রাগ হচ্ছে প্রচুর আমি নাকি শাকচুন্নির নানির মতো দেখতে লাগবো আর তোর অই পায়েল শাকচ্চুন্নি অনেক সুন্দর খাটাশ পোলা তোর ধান্দা কি আমি বুঝি না
আমি এইসব বকবক করছি তখনি রিকের ডাকে হুশ আসে
রিকঃ দি তুই কি এতো বকবক করছিস?
আমি চোখের পানি মুছে ওর দিকে তাকিয়ে বলি
—কই কিছু না তো
রিকঃ আমাকে মিথ্যে বলো না আমি দেখেছি অই পায়েল আপু একটা শাকচুন্নি আর অয়ন ভাইয়া তোমাকে কীভাবে অইসব বলতে পারে আমার দি হলো সবথেকে সুন্দর
আমি রিকের কথা শুনে হেঁসে দেই
ওর চুল গুলো নাড়িয়ে বলি
–তাই নাকি?
—হ্যা দি তুমি এই রিক হ্যান্ডসাম বয় সব মেয়ের ক্রাশ এর দি কখনো পেত্নি হতে পারে
আমি রিকের কথা শুনে হা হয়ে আছি ওর কান মুলে দিয়ে বলি
–ওরে পাঁকনা এই বয়সেই সবার ক্রাশ(মুঁচকি হাসি দিয়ে)
–আহ দি ছাড় তুই জাতির ক্রাশ কে এইভাবে ইন্সাল্ট করতে পারো না
আমি ওর কান ছেড়ে দিয়ে বলি
ওর পুঁচকে ছেলে তাই না দাড়া এই বলে আমি ওকে মারতে ওর পিছনে দৌড়ালাম আর ও আমার থেকে বাঁচার জন্য ছুটে চলেছে
আমাদের এইসব বাচ্ছামো দেখে আড়াল থেকে অয়ন ভাইয়া হেঁসে চলছে যা আমি খেয়াল করিনি…রিক দৌড়াতে দৌড়াতে দরজার কাছে চলে আসে আমিও ওকে ধরতে দরজার কাছে যাই কিন্তু দরজার আমার প্লাজো বেজে যেই না আমি পড়তে যাবো ওমনি অয়ন ভাইয়া আমাকে ধরে ফেলে আমরা একে অপরের দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি রিক আমাদের এই সিন দেখে মুঁচকি হেঁসে বলে
—রাজা কো রানীসে পেয়ার হো গেয়া ( এই বলে একটা সিটি মারে)
আমরা ওর এইসব কান্ডে একে অপরের থেকে দূরে সরে যাই খুব লজ্জা লাগছে আর অয়ন ভাইয়া বাঁকা হাসছে বুঝি না এই লোকটার লজ্জা বলতে কিছুই নেই এই টাইমেই কেমনে হাঁসে? আমি রেগে রিককে কিছু বলতে যাবো তার আগেই রিক ভৌ দৌড় আমিও কিছু না বলে যেই না বেড়োতে যাবো তার আগেই অয়ন ভাইয়া৷ খপ করে আমার হাত ধরে ফেলে
আমি রাগি চোখ দিয়ে অয়ন ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বলি
—কি হচ্ছে টা কি হাত ছাড়ুন
—যদি না ছাড়ি তো(ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)
—আমি তো পেত্নির মতো দেখতে তাই না শাকচুন্নির নানি আমার হাত ধরবেন কেন? যান না যান আপনার পায়েল সুন্দরীর কাছে যান 😠😡
অয়নঃ যা ভেবেছিলাম তাই মহারানী ক্ষেপেছে(মনে মনে)
অয়ন ভাইয়া আমার দিকে অনেকটা ঝুকে বললেন
— কিন্তু এই পেত্নির প্রেমেই তো একজন মরে গেছে সেইটা কি এই পেত্নিটা জানে (নেশাক্ত কন্ঠে)
অয়ন ভাইয়ার এমন কথায় খানিক্টা ভ্যাবাচাকা খেয়ে গেলাম…অনেক লজ্জা লাচ্ছি🙈🙈আর অয়ন তার রিমিপরির লজ্জামাখা মুখ দেখে যেন হারিয়ে যাচ্ছে অয়ন ভাইয়া নিজের মুখ আমার দিকে আনছে আমি বুঝতে পারছি বেশীক্ষন এখানে থাকলে নিশ্চই কোনো অঘটন করবেন তাই অয়ন ভাইয়াকে আস্তে ধাক্কা দিয়ে চলে আসলাম আর অয়ন ভাইয়া ধরজায় হেলান দিয়ে দাড়িয়ে বাঁকা হেসে বললেন..
—রাজা কো রানীসে পেয়ার হো গেয়া ওয়াও ইন্টারেস্টিং 😏

রকিং চেয়ারে রিমির ছবির দিকে এক দৃস্টিতে তাকিয়ে আছে আমান যতই রিমিকে ঘৃণা করুক সে একদিন হলেও ভালোবাসতো রিমিকে তখনি আমানের ফোনে একটা ফোন বেজে উঠে অচেনা নাম্বার আমান ফোনটা রিসিভ করে বলে
—হ্যালো কে?
অচেনা ব্যাক্তিঃ আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী (বাঁকা হেসে)
আমানঃ মানে?
অচেনা ব্যাক্তিঃ এইদিকে আপনি আমেরিকায় পড়ে আছেন অইদিকে রিমি খান আর অয়ন চৌধুরি তাদের প্রেমের লীলাখেলা করছে
আমানঃ ওয়াট
অচেনা ব্যাক্তিঃ একদম তাড়াতাড়ি দেশে ফিরুন না হলে আপনারি লোস
আমানঃ কিন্তু কে আপনি?
অচেনা ব্যাক্তিঃ অইযে বললাম না আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী ওকে বায়
টুট..টুট..টুট..
আমানের ফর্সা মুখ মুহুর্তেই লাল আভা ধারন করছে চোখ দিয়ে যেন সব কিছু শেষ করে দিবে

আমান ঃ রিমিপাখি তোমাকে এতো ভয় দেখালাম তাও তোমার একটু সাহস কমলো না আগের মতোই রয়ে গেলে এইবার দেখো আমান কি করে

এই বলে আমান ঘরের সব কিছু ভাংতে লাগলো সব স্টাফ রা ভয়ে যাচ্ছেও না নীচে মিজান সাহেব ড্রাইনিং টেবিলে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে কেননা তার ছেলের রাগ উঠলে তিনিও তাকে সামলাতে পারে না…
চলবে কি?
(আচ্ছা একটা কথা কিছু মানুষ বলছে আমানের সাথে রিমির মিল দিতে কিছু মানুষ আবার বলছে অয়নের সাথে রিমির মিল দিতে এখন আপ্নারাই ডিসাইড করুন কার সাথে মিল দিবো? আর একটা কথা আমি না বলে পারছি না আপনার সবাই জানেন দুইদিন আগেও আমি হসপিটালে এডমিট ছিলাম এখনো পুরোপুরো সুস্থ হয়নি হাতে প্রচুর ব্যাথা এই ব্যাথা নিয়েও প্রতিদিন গল্প লেখি অন্য লেখিকারা হলে কিন্তু গ্যাপ দিতো আমি দেই নি আপনাদের জন্য তাও কিছু পাবলিক বলে এতো ছোট কেন পার্ট আরেকটু বড় করে দিতে পারেন না এতোও যখন অসুস্থ গল্প লেখতে আসেন কেন? সত্তিই আমি শীহরিত এইসব কমেন্টস দেখে)
আজকে পর্ব কেমন হয়েছে জানাবেন কিন্তু
ধন্যবাদ🖤🖤🖤🖤

1 COMMENT

  1. Thik bolechen Apu …Ara akdin let hole Amon kore kotha sonai but amader moto lekhika dero j problem thakte pare seta aktu vebe dekhe na.Tobu tader jonne amader proti niyoto likhte hoi….Jai hok,,,golpo ta sundor hocche khub,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here