তুমি আমার স্বপ্নচারিণী পর্ব-২০ ২১ ২২

0
834

তুমি আমার স্বপ্নচারিণী

উম্মে হাবিবা তনু

Part:20

যতটা সম্ভব গাম্ভীর্য এনে বলল,আপনি বিল দিলেন কেনো?মাহিম ধাক্কা মত খেলো।তুমি থেকে আপনি?এতটাই রেগে আছে,কেনো?ঐদিনের জন্য?মাহিমকে চুপ থাকতে দেখে আবার বললো,কথা কি শুনতে পান না?মাহিম এবার অপলার চোখ বরাবর তাকালো।তার আগে বল তুমি আমার একটা কথার উত্তর দেও।মাহিমের চোখের এই দৃষ্টি উপেক্ষা করার ক্ষমতা যেনো অপলার নেই।তাই চোখ সরিয়ে নিলো।আমি আপনার কোনো কথার জবাব দিবো না।তাহলে আমিও দিবনা।প্লিজ আমার সাথে হেয়ালি করবেন না।আমার সাথে আপনার হেয়ালি করার সম্পর্ক না।মাহিম কিছুটা ঝুঁকে অপলার কাছে এসে বললো তাহলে কিসের সম্পর্ক?অপলার ভিতরে অজানা এক ঝড় বয়ে চলেছে।ওর ঠোঁট জোড়া কাপছে।কিছু বলতে পারছেনা।

মাহিম গেছে অনেকক্ষণ তবে আসছে না কেনো?তাই এগিয়ে দেখতে উঠে সামনে এগুলো নিঝুম।যা দেখছে তা তো ওর চোখ মানতে পারছেনা।মাহিম একটা মেয়ের সাথে এত ক্লোসলি কথা বলছে।এত আবেগ নিয়ে তাকিয়ে আছে।কে এই মেয়ে দেখতে এগিয়ে গেলো।

কি হলো বলো কিসের সম্পর্ক?অপলা কিছুটা দূরে সরে গিয়ে বলল,আপনার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।আপনি এক্ষুনি কাউন্টার থেকে টাকা ফেরত নিবেন। তাতো আমি পারবোনা।কেনো পারবেন না?তুমি আমাকে আপনি করে বলছো কেনো?অপলার চোখ গেলো নিঝুমের দিকে।মেয়েটা এইদিকেই আসছে।হয়তো মাহিমের জন্য।শুনুন আপনার সব কথার জবাব দিতে পারবনা।তুমি কি কোনো কারণে রেগে আছো আমার উপর?আপনার সাথে আমি রাগ করবো কেনো?শোনো সেদিন আংকেল……(অপলা বুঝলে উনার সাথে কথা বলা মানে মায়া বাড়ানো।উনার প্রেমিকা অপেক্ষা করছে।না আর কথা বাড়ানো যাবেনা।)শুনুন সেদিনের কথা আমি শুনতে চাইনা।আপনার গার্লফ্রেন্ড অপেক্ষা করছে আপনি সেখান যান আর আমার পথটা ছেড়ে দাড়ান।তোমার কথা বুঝলাম না?বুঝা লাগবেনা,ভালোই অভিনয় করতে পারেন।বলেই অপলা পাশ কেটে চলে গেল।মাহিম আটকাতে চেয়েও পারলনা।অপলা দাড়াও, শোনো…… কিন্তু অপলা সেদিকে না তাকিয়ে চলে গেলো। ও কি নিঝুমকে আমার গার্লফ্রেন্ড ভাবছে!!!

ততক্ষণে লুবনাও চলে এসছে। ও কিছু বুঝতে পড়ছেনা।সেদিনের পার্টিতে ছেলেটিকে দেখেছে।কিন্তু তার সাথে তো অপলা আপুর ভালোই বন্ধুত্ব শুনেছে সে,তাহলে আজ কি হলো?তখনই অপলা এসে বলল,গাড়িতে উঠ।লুবনাও কথা না বাড়িয়ে গাড়িতে উঠলো।আর মাহিম ওদের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। sorry ভাইয়া।আমি আগে জানলে কখনই আসতাম না।আমার জন্য আপনার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেলো।মাহিম নির্বিকার।আমি যদি বুঝতেও পারতাম তাহলে কখনোই আসতাম না ভাইয়া। নিজেকে শান্ত রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করছে মাহিম।মাহিম আস্তে করে বলল, চলো।বলেই হাঁটা শুরু করলো।নিঝুম বোবার মত ওর পিছন পিছন যাচ্ছে।ওর খুব অনুসুচনা হচ্ছে।

এসে থেকেই অপলা বাগানে একা বসে আছে। ওর কিছু ভালো লাগছে না।কতক্ষণ যাবত এইখানে বসে আছে তা ও নিজেও জানে না।অন্ধকারে ডেকে গেছে রাত হয়ে গেছে।এসব নিয়ে ওর এখন চিন্তা নেই।ওর মনে যেনো ঝড়ো হাওয়া বইছে।কে ছিল মেয়েটি?ওর গার্লফ্রেন্ড?নাকি relative? আর মেয়েটি যেই হোক মাহিমের সাথে যে কেউই থাকতে পারে।তাতে আমার কেনো খারাপ লাগবে?কে ও?কি হয় আমার?কেউ না তো।তবে কেনো আমার খারাপ লাগছে?কেন ওর পাশে মেয়েটিকে মেনে নিতে পারছি না?কেনো এতো তোলপাড় চলছে আমার মধ্যে?এক একটা প্রশ্ন যেনো বিনি সুতার মালার মতো বুকের মধ্যে গেঁথে যাচ্ছে।আর খুব জ্বালা করছে।

রহিমার চিৎকার এর শব্দে অপলার ঘোর কাটল।ভিতরেও অনেক শব্দ হচ্ছে।কিছু হলো নাকি?অপলা উঠতে যাবে তার আগেই রহিমা ছুটে এসে বলল,আফা শিগগির ভিতরে আহেন।খালাম্মায় জানি কেমন করতাছে।অপলা দৌড়ে ওর মা এর কাছে গেল।এসে দেখে ওর মা বুকের মাঝে চেপে ধরে চট্ফট করছে।মুখ বেকে যাচ্ছে।বুঝতে পারলো ওর মায়ের অ্যাটাক হয়েছে।অপলা দ্রুত পায়ে ঘষতে থাকে।রহিমা ড্রাইভারকে গাড়ি বের করতে বলো।লুবনা বাবাকে ফোন করে জানাও।আর রুনু ঝুনুকে হাত মাসার্জ করতে বলল।

আজ তিনদিন পর হসপিটাল থেকে বাড়ি ফিরলো।ওর মায়ের হার্ট এ্যাটাক হয়েছিল।এখন আগের চেয়ে ভালো আছে।অপলা লুবনা হসপিটালে ছিল।লুবনা রাতে বাড়ি ফিরে এসেছে কিন্তু অপলা রাতেও ছিল।আজ বাবা থাকবে হসপিটালে তাই ওদের পাঠিয়ে দিল।অপলা লুবনা দুইজনই খুব tried।দুইজনই রুমে গেলো।

অপলা ফ্রেশ হয়ে সটাং হয়ে শুয়ে পড়ল।অপলার চোখে ঘুম।তবুও ঘুমাতে পারছে না।খুব অস্বস্তিকর একটা অবস্থা।মনের মধ্যে হাজারটা প্রশ্ন এই কয়দিন উকি না দিলেও আজ সব ভাবনারা জড়ো হয়েছে ।এইসব ভাবনার মাঝে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ল বুঝতে পারলো না।

চলবে……..

তুমি আমার স্বপ্নচারিণী

উম্মে হাবিবা তনু

Part:21

আজ তিন দিন ধরে মাহিম কেমন যেন হয়ে গেছে।খুব মনমরা হয়ে থাকে।কারো সাথে কথা বলছে না,খাওয়া,ঘুম কোনোকিছুরই ঠিক নেই।সকালে বের হয় ঘেমে নেয়ে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে সারাক্ষণ ফোন নিয়ে বসে থাকে।কিছু একটা দেখে আর কাকে যেনো কল করে পরক্ষণেই ফোনটাকে বিছানায় ছুড়ে ফেলে।আবার কিছুক্ষণ পর ফোনটা হাতে নিয়ে কিছু একটা দেখে।অহনা বহুবার জিজ্ঞেস করেছে কি হয়েছে?ঘুরতে গেলি ভালো তারপর বাসায় এসে এইরকম কেনো করছিস।সে জবাবে শুধু বলে আপু আমাকে একটু একা থাকতে দেও।নিঝুমকেও জিজ্ঞেস করেছে অহনা।নিঝুম একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেছে ভাবী আমার জন্যই মাহিম ভাইয়ার এই অবস্থা,চিন্তা করো না ভাবী আমি সব ঠিক করে দিবো।অহনা বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে।

মাহিম অপলার খোজে ওর কলেজে গিয়েছে এই তিনদিন কিন্তু তার স্বপ্নচারিণীর দেখা মেলেনি।আজ ওর ফ্রেন্ড মৌনতার সাথে দেখা হয়েছে।কিন্তু ওর কোনো খোঁজ পেলো না।মৌনতা নিজেও অপলার খবর জানেনা।আজ তিন দিন অপলা কলেজে আসে না এমনকি ফোনটাও switch off।মাহিমের টেনশন বেড়েই চলেছে।ওকি অপলার বাসায় যাবে?বুঝতে পারছে না।তাই ও বাসায় ফিরে গেলো।

মাহিম বাসায় এসে ওয়াশরুমে গেলো ফ্রেশ হতে।ঠিক তখন নিঝুম মাহিমের রুমে ঢুকলো।ওর জন্য যখন মাহিম ভাইয়া এতটা কষ্ট পাচ্ছে তখন ও ই ঠিক করে দিবে সব।মাহিমের ফোনটা হাতে নিল।ওই মেয়েটার নাম তো অপলা। হ্যা,তাহলে অপলা নামেই সেভ করা থাকবে।কিন্তু না পুরো কল লিস্টে কোথাও অপলা নামে কেউ নেই।তবে স্বপ্নচারিণী নামে একজনকে বহুবার কল করেছে।স্বপ্নচারিণীই হয়তো অপলা।খুব ভালোবাসে বুঝাই যাচ্ছে।নিঝুম তাড়াতাড়ি নাম্বার টা নিজের ফোনে তুলে নিচ্ছে।তখনই ওয়াশরুমের লক খোলার সাউন্ড পেয়ে নিঝুম দ্রুত পায়ে যেতে নিলে কিছু একটার সাথে গেষে গেছে।কানে হালকা টান অনুভব করে কিন্তু সেদিকে লক্ষ্য না করে নিজের রুমে চলে গেল।

অপাপু ও অপাপু উঠ।অপলা দরফরিয়ে উঠল।কি হয়েছে ঝুনু এইভাবে ডাকছো? মা ঠিক আছে?hmm আপু ঠিক আছে।কিন্তু তোমার ফোন অফ কেনো?চার্জ দেওয়া হয়নি তো তাই।তাড়াতাড়ি অন করো।বাবা ফোন করে তোমাকে পাচ্ছে না।আচ্ছা সোনা অন করছি।ওকে আপু।অপলা উঠে ফোনটা চার্জে লাগিয়ে অন করতেই বাবার ফোন এলো। কাল ওর মাকে ডিসচার্জ করে দিবে।যাক একটা কিছু ভালো খবর তো পেলো।

নিঝুম রুমে ডুকেই অপলার নাম্বার এ try করছে কিন্তু switch off বলছে।তখনই মাহিমের চিৎকার শুনতে পেলো।কিন্তু কেনো সেটা বুঝতে পারছে না।ওকি এগিয়ে দেখবে?না থাক মাহিম ভাইয়ার থেকে যত দূরে থাকা যায় ততই ভালো দুজনের জন্যই।

আপু আপু…..।কথাই বলে না এতদিন আর আজ কি হলো এইভাবে চিৎকার করছে কেনো?অহনা দ্রুত পায়ে মাহিমের রুমে গেলো।কি হলো তোর এইভাবে চেচাচ্ছিস কেনো?আপু চেচাবো না?এইসব কি? আস্তে কথা বল কি দেখি?নিজের জিনিস সামলে রাখতে পারিস না?বলে একটা কানের দুল অহনার সামনে এগিয়ে দিল।অহনা দুলটা ভালো করে দেখে বলল,এইটা তো আমার না।মাহিম কপাল কুচকে বলল,তাহলে কার?আমার রুমে এলো কি করে?নিঝুমের নয়তো?যদি হয় তাহলে দিয়ে এস আপু।আমি কেনো যাবো?তুই গিয়ে দিয়ে আয়।আপু আমাকে কখনো দেখছো ওর রুমে যেতে?দেখিনাই তো কি হইছে,আজ যাবি তাহলেই দেখা হবে।আপু প্লিজ….অহনা চলে গেল।মাহিম কিছু না ভেবে নিঝুমের রুমের দিকে গেল।

নিঝুম এর রুমের সামনে দাড়িয়ে আছে মাহিম।মাহিমকে দেখে মোটেই অবাক হলো না নিঝুম।বুঝলো হয়তো সেদিনের রাগটা আজ দেখাবে।নিঝুম গেটের কিছুটা কাছে গিয়ে বলল,ভাইয়া ভিতরে এসো।মাহিম কিছুনা বলে দুলটা নিঝুমের দিকে এগিয়ে দিল।এইবার নিঝুম খুব অবাক হল।সে কানে হাত দিয়ে দুল খুঁজছে। একি এক কান তো খালি।(তখন কানে টান লেগেছিল তাড়াহুড়োয় খেয়াল না করে চলে এলাম । না জানি কি ভাবছে ভাইয়া ।)হাত বাড়িয়ে দুলটা নিল।আসলে ভাইয়া…মাহিম হন হন করে চলে গেল কিছু না শুনেই।নিঝুমকে খুব কষ্ট দিল ব্যাপারটা। না ও সব ঠিক করে দিবে।ওর জন্য মাহিম ভাইয়ার কষ্ট হোক ও চায়না।

অপলার ফোনটা বাজছে।সবে চার্জে লাগিয়ে আবার শুয়েছিল।উঠতে ইচ্ছে করছেনা।তবে বাবা যদি ফোন করে থাকে?তাই সে উঠলো।কিন্তু একটা unknown number থেকে আসছে।ওর খুব বিরক্ত লাগলো তাই আর ধরলো না।ফোন টা কেটে গেল।পরক্ষনেই আবার ফোনটা বেজে উঠলো।দরকারি ফোন নাতো?তাই ভেবে বিরক্তি নিয়ে ফোনটা রিসিভ করল।

চলবে…….

তুমি আমার স্বপ্নচারিণী

উম্মে হাবিবা তনু

Part:22

– আস্সালামুআলাইকুম!
– ওয়ালাইকুমুসালাম!
– এইটা কি অপলা আপুর নাম্বার?
– হ্যা,কিন্তু আপনি কে?
– আমার নাম নিঝুম।
– আমিতো নিঝুম নামে কাউকে চিনি না।
– তুমি আমাকে চিনবেনা।আমি তোমার থেকে বড় তুমি করে বলছি কিছু মনে করোনা।
– ঠিক আছে।কিন্তু আপনি কে?
– আমি মাহিম ভাইয়ার বোনের ননদ।সেদিন মাহিম ভাইয়ার সাথে দেখেছিলে।
– ওহ,তো আমাকে কেনো কল করেছেন?
– আপু তুমি ভাইয়াকে ভুল বুঝছো।
– উনার সাথে আমার ভুল বুঝাবুঝির মত কোনো সম্পর্ক নেই।
– তোমার আছে কি নেই তাতো আমি জানিনা।তবে মাহিম ভাইয়া গত কয়েক দিনে খুব ভেঙ্গে পড়েছে। কারো সাথে কথা বলে না,খাওয়া দাওয়া করে না।সারাদিন ফোন নিয়ে বসে থাকে।সব আমার জন্য।
– বুঝতে পারছিনা আপনার কথা।
– আসলে আপু সেদিন আমাকে ভাইয়ার গার্লফ্রেন্ড ভেবেছো।ভেবে রাগ করে চলে আসলে আর ফোনটাও switch off ছিল।আমিও আজ সকাল থেকেই try করছি।
– ভাবছি মানে?আপনিতো ওর গার্লফ্রেন্ড।
– না আপু।আমি বললাম তো আমি উনার বোনের ননদ।
– আচ্ছা।আমাকে কেনো কল করেছেন?
– এইটাই বলতে আমি উনার গার্লফ্রেন্ড না।উনি ঢাকায় এসে কোথাও যায়নি।তাই আমি জোর করে উনাকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছি।আর তুমি ভুল বুঝলে।
– আমার ভুল বুঝায় কি হবে আপু।আমাকে এইসব না বললেও হতো।
– তুমি ভুল বুঝলে অনেক কিছু হবে।তুমি যে ভাইয়ার স্বপ্নচারিণী।
– (স্বপ্নচারিণী?এর কি মানে?মাহিমও তো এইটা বলে উইশ করেছিল)
– আপু কিছু বলছো না কেনো?
– আপু আমি রাখছি।
– ঠিক আছে।তুমি কিন্তু ভাইয়াকে আর ভুল বুঝনা।
– ঠিক আছে।
– ভাইয়ার সাথে কথা বলো প্লিজ।উনি অনেক কষ্ট পাচ্ছে।
– আচ্ছা।
– আর আমি যে তোমাকে কল করেছি ভাইয়াকে বলনা প্লিজ।
– ওকে আপু বলবো না।রাখছি।
– আল্লাহ হাফেজ।
– আল্লাহ হাফেজ।

ফোন টা কেটে নিঝুম বিছানায় শুয়ে পড়লো।বাইরে ঝড়ো বাতাস বইছে।সাথে তোলপাড় করছে ওর মনে।ওর খুব কান্না পাচ্ছে।বালিশে মুখ চেপে চিৎকার করে কাদঁছে।সে নিজে হাতে তার ভিতরে বেড়ে উঠা ভালোবাসাকে গলা টিপে হত্যা করেছে।সেটা সে ছাড়া পৃথিবীর আর কেউ জানলোও না।

ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে।অপলা বারান্দায় দাড়িয়ে হাত দিয়ে বৃষ্টি ছোঁয়া নিচ্ছে।মার্চ মাসে বছরের প্রথম বৃষ্টি।হালকা ঝড়ো বাতাস বইছে।তবুও অপলার ভালো লাগছে। ও শুধু হাতে না আজ সারা গাঁয়ে বৃষ্টি ছোঁয়া নিবে।ওর আজ খুব ভালো লাগছে। কাল ওর মা ফিরে আসবে।আর মাহিমও…….. ও বাগানে চলে গেল।প্রকৃতির সাথে ও আজ তাল দিয়ে বৃষ্টি ছোঁয়ায় আর ঝড়ো বাতাসে মাতাল হচ্ছে।ওকে ভিজতে দেখে রুনু ঝুনু লুবনাও নেমে এলো বাগানে।সবাই খুব হৈ হৈ করছে।কিছুক্ষণ পর রহিমাও ওদের সাথে যোগ দিল।প্রকৃতি মাতাল করে দিয়ে যাচ্ছে সকলকে।

কি অদ্ভুদ পৃথিবী কারো মনে প্রকৃতির মত আনন্দের ঝড় বইছে তো কারো মনে কষ্টের।কিন্তু প্রকৃতি কাউকে ঠকায় না।সে তার জায়গা থেকে ঠিক।সবসময় মানুষের পাশে থাকে।”life is a great challenge, trace it by nature.”

মাহিম অপলাকে কল করছে।এখনতো কল হচ্ছে।কিন্তু রিসিভ করছেনা।মাহিমের মাথা আর কাজ করছে না।ওর এখন মনে হচ্ছে অপলা শুধু রাগ করে আছে তা না।ওর কিছু একটা হয়েছে। প্রকৃতির মত ওর মনটা অশান্ত হয়ে আছে স্বপ্নচারিণীর জন্য।সে কোনোভাবেই তার স্বপ্নচারিণীকে হারাতে পারবেনা।কোনোভাবেই না। কাল যদি ও কলেজে না আসে তবে আমি ওর বাসায় যাবো কালই । ও আর এই কষ্ট নিতে পড়ছেনা।বড্ড বেশী ভালোবাসে যে সে তার স্বপ্নচারিণীকে।স্বপ্নচারিণীর ছবিটা চোখের সামনে ধরে বসে আছে সে।

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here