তুমি আমার স্বপ্নচারিণী পর্ব-৪২ ৪৩

0
716

তুমি আমার স্বপ্নচারিণী
উম্মে হাবিবা তনু
Part:42

বিকেলে ওরা রেডী হচ্ছে।এই লুবনা শোনো।কিছু বলবে আপু?হ্যা,শোনো তুমি আজ সুন্দর করে সাজবে।হটাৎ সাজবো কেনো?আমি বলেছি তাই সাজবে।কিন্তু আপু…..কোনো কিন্তু না, আমার সাজতে ইচ্ছে হচ্ছে তুমিও যদি সাজো তাহলে লিপি আপু আর লেকপুল করতে পারবেনা।হ্যা ঠিক বলছো আপু। এইতো গুড গার্ল কি সুন্দর বুঝে গেলে।লুবনা হাসলো।লুবনা হাসলে কিন্তু তোমাকে বেশ লাগে।লুবনা লজ্জা পেয়ে বলল কি যে বলনা আপু।দুবোন এই কদিনে কতটা ক্লোজ হয়ে গেছে।কিছুদিন আগেও অপলা ওর সাথে ঠিকভাবে কথাই বলতো না সে প্রশংসা করেছে।লুবনার খুব ভালো লাগছে।

রিজভী কিছুক্ষণ আগে অব্দি খুব কনফিডেন্ট ছিল সামনে গেলেই বলতে পারবে সব।কিন্তু এখন যত সময় যাচ্ছে তত নার্ভাস হয়ে যাচ্ছে।একবার বসছে একবার পায়চারি করছে কখনো আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কিছু একটা বলার চেষ্টা করছে।আর ফাঁকে ফাঁকে ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে।মাহিমের খুব হাসি পাচ্ছে।মাহিম কিছু বলবে তার সুযোগও দিচ্ছে না।নিজের মনেই আছে।যেনো আজ তার জীবন মরণ পরীক্ষা। ফেল করে গেলে জীবনটা এইখানেই থেমে যাবে। যত সময় যাচ্ছে ওর টেনশন বাড়ছে যদি ওকে রিজেক্ট করে!যদি ওর কোনো ভালোবাসার মানুষ থাকে?এইরকম কিছু হলে কি আমি মরে যাবো?কিসব ভাবছি এমন কিছু হবে না।ওর ভালোবাসা পাওয়ার জন্য যা করতে হয় আমি করবো।

ওরা তিনজন বেরিয়ে পড়েছে।কিন্তু রিজভী?সে এখনো সাহস করে উঠতে পারছে না।বাগানে পায়চারি করছে আর ভাবছে,যদি লুবনার জীবনে অন্য কেও থাকে?না এইসব আমি ভাবতে চাইনা।রিজভী বাগান থেকে একটা গোলাপ ফুল নিয়ে দ্রুত পায়ে যেতে লাগলো।আজ সে বলবেই বলবে।

ওরা হাঁটতে হাঁটতে বাসা থেকে অনেকটা দূরে চলে এসেছে।একটা বটগাছের নিচে এসে দাড়ালো।অপলার খুব ভালো লাগছে। বিকেলের মৃদুমন্দ বাতাস বইছে আর পাশে মাহিম।বেশ লাগছে।অপলা আর মাহিম পাশাপাশি দাড়িয়ে আছে।লুবনা বটতলায় একা বসে আছে।ওর কেনো যেনো মনে হচ্ছে রিজভী থাকলে ভালো হতো।এমন ভাবনার কারণ কি নিজেও বুঝতে পারছে না।এইটাও বুঝে পাচ্ছে না রিজভী ওদের সাথে এলো না কেনো? ওতো সবসময় আমরা যখন যেখানে যাই সাথে যায়।তবে আজ সে কোথায়??অপলা লুবনার পাশে এসে বসলো।কিছু খুজছো?কিছুটা দ্বিধায় পড়ে গেলো।আসলেইতো ও ওই বোকা বোকা মানুষটাকে খুঁজছে।অপলা এখনো উত্তরের অপেক্ষা করে তাকিয়ে আছে।লুবনা? হ্যা,আপু।তুমি খুজছো?লুবনা সামনে তাকাতেই রিজভীকে মাহিমের পাশে দেখ কিছুটা অবাক হলো আবার কেমন যেন ভালোও লাগছে।আমতা আমতা করে বলল,নাতো আপু কাকে খুজবো?সেইতো কাকে খুঁজবে তুমি।লুবনা চুপ করে আছে।অপলা আবার বলল,তুমি এইখানে একটু বসো,মাহিম কি একটা বলবে বলছে আলাদা করে,শুনে আসি।ঠিক আছে,কিন্তু আপু আমি এইখানে একা বসে থাকবো?একা কোথায়!রিজভী ভাইয়াতো আছে।আমি উনার সাথে একা থাকবো?উনি খুব ভালো ভয় পওয়ার কিছু নেই।বলেই লুবনাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে অপলা উঠে দ্রুত হাঁটতে শুরু করলো।মাহিমও অপলার সাথে এগুতে শুরু করলো।

লুবনার খুব অসস্তি হচ্ছে।লুবনা উঠে জড়সড় হয়ে দাড়ালো।রিজভী আগের জায়গায়ই দাড়িয়ে আছে।কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না।কিছুক্ষণ ভেবে লুবনার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো।কি দিয়ে কথা শুরু করবে তাই ভাবছে।আড় চোখে লুবনার দিকে তাকাচ্ছে বারবার।অন্যপাশে ঘুরে জোরে জোরে নিশ্বাস নিয়ে বুকে সাহস সঞ্চয় করার চেষ্টা করে আবার লুবনার দিকে ঘুরে দাড়ালো।
– কেমন আছো?
– ভালো।(আড়ষ্ট ভাবে জবাব দিলো)
– আমি কেমন আছি জানতে চাইলে না?
– (কি বলবে বুঝতে পারছে না)আপনি কেমন আছেন?
– ভালো।ঐদিকে কি দেখছো?
– আপু….
– ওরা কথা বলছে আসতে লেট হবে।
– তাহলে আমি বাসায় চলে যাবো।
– আমার সাথে ভালো লাগছে না বুঝি??
– ঠিক তা না।
– তাহলে কি?
– কিছুনা।
– তুমি কি আমাকে ভয় পাচ্ছো?
– (খুব হাসি পাচ্ছে।অনেক কষ্ট চেপে মনে মনে বলল এইরকম বোকাসোকা মানুষটাকে নাকি ভয় পাবো?)
– কিছু বললে না তো?
– কি বলবো?
– অনেক কিছুই তো বলতে পারো।
– (আড় চোখে তাকালো।এখন অব্দি ভালো করে কখনো দেখিইনি।মানুষটা দেখতেতো মাশাআল্লাহ।মাহিম ভাইয়া উনার পাশে কিছু না।জিম করা বডি ফিটনেস।চেহারা বডি সব মিলিয়ে তামিল মুভির হিরোর চেয়ে কম না।যে কেউ একদেখায় পছন্দ করবে।)
– কি দেখছো?
– (লুবনা লজ্জা পেয়ে চোখ সরিয়ে নিলো)আমতা আমতা করে বলল কিছুনা।
– তোমাকে আমি কিছু কথা বলতে চাই।
– জি বলুন।
– কিভাবে বলবো সেটাই বুঝতে পারছি না।শুনো তুমি কিন্তু আমার কথা শুনে রাগ করতে পারবেনা।
– না শুনেই বলি কি করে রাগ করবো না?
– তাইতো।তাহলে বলি??
– জি বলুন।
– আচ্ছা তোমার কী কোনো ভালোবাসার মানুষ আছে?
– হ্যা আছে তো।
– (মনিক্ষুন্য হয়ে)কে সে?
– আমার মা,বাবা,অপলা আপু,মামা,মামী……
– থাক আর বলতে হবে না।স্পেশাল কেও আছে?
– যাদের ভালোবাসি তারাইতো স্পেশাল।
– আমি বুঝাতে চাচ্ছি…মাহিম আর অপলা ভাবির মত মানে এইরকম সম্পর্কের কেউ আছে কি?
– না নেই।
– (প্রচন্ড খুশি হয়ে)yes, yes!!
– কেনো বলুনতো?
– (আনন্দে আত্মহারা হয়ে জোস থেকে বলে ফেললো)কারণ আমি তোমাকে ভালোবাসি, I love you so much লুবনা।
– (চোখ বড় বড় তাকিয়ে আছে বলে কি!!)
– হ্যা লুবনা আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি(চিৎকার করে)।
– কি বলছেন এইসব(লজ্জা পেয়ে)
– (লুবনার কথায় বাস্তবে ফিরে এলো মাথা চুলকে শার্টের ভিতর লুকানো গোলাপফুল বের করে হাঁটু মুড়ে লুবনার সামনে বসে পড়লো)লুবনার দিকে তাকিয়ে ঘোর লাগা কন্ঠে বলল,love at first sight মানে কি আমি জানিনা,তবে তোমাকে যখন প্রথমবার দেখি তখনই আমি তোমার মধ্যে বিলীন হয়ে যাই।হয়তো সেটাই love at first sight।এরপর তোমাকে যতবার দেখেছি ততবারই সে ফি্লটা যেনো আরো গভীর হয়েছে।ভালোবেসে ফেলেছি তোমার ওই লজ্জা রাঙ্গা হাসি।ভালোবেসে ফেলেছি তোমার রক্তিম হয়ে যাওয়া গালের আভা।ভালোবেসে ফেলেছি তোমার ওই ভীত চোখ দুটোর।ভালোবেসে ফেলেছি তোমার গোটা তুমিটাকে।ভালোবেসে ফেলেছি তুমি নামের অস্তিত্বকে।love you,love you so much লুবনা।
– (নির্বাক হয়ে মাটির দিকে তাকিয়ে আছে।বুঝে উঠতে পারছে না কি বলবে?)
– প্লিজ লুবনা কিছু বলো, চুপ করে থেকো না।
– (মাটির দিকে তাকিয়েই আছে।লজ্জায় তাকাতে পারছে না)
– তোমাকে কিছু বলতে হবে না।তুমি ফুলটা হাতে নিলেই আমি বুঝে যাবো তোমার উত্তর।
– (কিছু একটা ভাবছে।চোখ তুলে একবার রিজভীর দিকে তাকালো।ওর মনে হচ্ছে রিজভীর চোখের ভাষা ও পড়তে পারছে।খুব করে চোখ দুটো বলছে লুবনা তুমি আমার।)লুবনা খপ করে ফুলটা নিয়ে সামনের দিকে দ্রুত পা বাড়ালো।

চলবে………….

তুমি আমার স্বপ্নচারিণী
উম্মে হাবিবা তনু
Part:43

কিছুটা দূরে আড়ালে দাড়িয়ে সব দেখছিল মাহিম আর অপলা।অবশ্য দেখার প্ল্যানটা মাহিমের।মাহিমের খুব ইচ্ছে হচ্ছিল রিজভী গাধাটা কি করে দেখার।এতটাও রোমান্টিক ভাবেনি।মাহিমতো সেই কবে থেকে তার স্বপ্নচারিণীকে ভালোবাসে তবু আজও এইভাবে প্রপোজ করতে পারেনি।অপলার তাড়া পেয়ে মাহিমের ভাবনা ভাঙলো।এই দেখো লুবনাতো লজ্জা পেয়ে চলে যাচ্ছে, ওতো একা চিনে যেতে পারবেনা।তুমি ভেবোনা রিজভী আছেতো,দেখো লুবনার পিছন পিছন যাচ্ছে।অপলা সেদিকে তাকিয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে মুচকি হাসলো।মাহিম সেদিকেই তাকিয়ে আছে।অপলা আবার তাড়া দিলো, চলো আমরাও ফিরে যাই।এখনই?ওদের একটু একা থাকতে দেও না।হ্যা সন্ধ্যা হয়ে আসছে,মা চিন্তা করবে।ঠিক আছে চলো।

হিশাম আহমেদ এসেছেন সেই কখন।অপলা বেরিয়ে যাবার পরপরই।সবার সাথে দেখা হলো।কিন্তু তার বড় মেয়েটা না দেখা পর্যন্ত যেনো মন শান্তি পাচ্ছে না।বারান্দায় দাড়িয়ে গেটের দিকে তাকিয়ে আছেন।সন্ধ্যা হয়ে এলো তবুও আসছে না।রেহনুমা আহমেদ পাশে এসে দাড়ালেন।স্ত্রীর দিকে মুখ তুলে তাকিয়ে আবার গেটের দিকে তাকিয়ে আছেন।
– ওরা এত দেরি করছে কেনো?
– বেরিয়েছে বেশিক্ষণ হয়নি।
– ওরা জানতো না আজ আমি আসবো?
– তোমারতো রাতে আসার কথা,আগে আসবে জানবে কি করে।
– কতদিন মেয়েটাকে দেখিনা।
– এই কদিনেই হাপিয়ে গেলে?বিয়ে হয়ে যাবে তখন কি করবে?
– যখন হবে তখন ভাবা যায়।আর যদি সেরকমই হয় মেয়ের বিয়েই দিবো না।
– মেয়ের বাবার এত আবেগ ভালো না।
– এখনো আসছে না কেনো?
– এইখানে এসে থেকেই মেয়েটার ঘুরাঘুরির নেশা বড্ড বেরে গেছে।
– তাহলেতো ভালোই।
– ভালো হলেও আমার খুব ভয় হয়।
– (স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে)এত বছর পরও ভয় পাওয়ার কি আছে?
– তোমাকেতো বলা হয়নি অপলা এইখানে আসার দিন স্টেশনে বসে ওল্ডহোমটার কথা জানতে চাইলো।
– আর সেটা শুনে তুমি ভয় পেয়ে গেলে?
– তুমি বলছো ভয় পাবোনা?
– শুনছে এইখানে ওর বাবার ওল্ডহোম আছে তাই জানতে চেয়েছে।ভয় পাওয়ার কি আছে?
– জানি না।আমার খুব ভয় হয়।তারউপর অনেক ঘুরাঘুরি করছে।এইখানে ঐখানে কতদিকে যায়।যদি……
– যদি কি?
– যদি কিছু জেনে যায়?
– দূর বোকা।মহিলা মানুষ যে বড্ড বোকা তোমাকে দেখলেই বুঝা যায়।
– বোকা হই আর যাই হই যদি..
– রাখো তোমার যদি ১৬বছর আগের ঘটনা কে মনে রাখছে?আর রুমানার অবস্থাও খুব একটা ভালো না।অনেকতো চেষ্টা করলাম সুস্থতো হলো না।এখনতো প্রায় মৃত্যুশয্যায়।ওর কি আর এত কিছু বলার অবস্থা আছে?
– তুমি যাই বলো ওর এত ঘুরাঘুরি আমার মনে ভয়টাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে।যদি অপলার কোনোভাবে রুমানার সাথে দেখা হয়ে যায়?
– দেখা হলেও কি চিনতে পারবে?তোমার মেয়ে এখন আর সেই ২বছরের বাচ্চাটি নেই।এখন সে ১৮বছরের যুবতী।এখন দেখলেও চিনতে পারবে না।
– তাই যেনো হয়। আমি আমার মেয়েকে হারাতে পারবোনা।
– তাই হবে এত ভয় পেও নাতো।নিজেই বলছো তোমার মেয়ে আবার নিজেই বলছো হারানোর কথা?তোমার মেয়ে তোমারই কেউ নিবেনা।(স্ত্রীকে বুঝ দিতে পারলেও তিনি নিজেকে বুঝাতে পারছেন না।ভয় যে উনি নিজেও পাচ্ছে।তাইতো কাজ ফেলে চলে এলেন)।
অপলাকে গেট দিয়ে ঢুকতে দেখলেন।তাই আর বারান্দায় দাড়িয়ে না থেকে ড্রয়িংরুমের দিকে পা বাড়ালেন।

অপলা বাবাকে দেখে অবাক হলেও প্রচন্ড খুশি হল।দ্রুত বাবাকে এসে বাবাকে জড়িয়ে ধরলো।একে একে প্রশ্ন করেই চলেছে।কখন এলে?আমাকে ফোন করলে না কেন?তোমারতো রাতে এইখানে আসার কথা।তোমার শরীর ঠিক আছেতো?মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে হিশাম আহমেদ বললেন,এতগুলো প্রশ্ন একসাথে করলে কোনটার জবাব আগে দিবো?সবগুলোরই দিতে হবে,আগে বলো শরীর ঠিক আছেতো?হ্যা রে মা আমি একদম ঠিক আছি।তোদের সারপ্রাইজ দিতে আগে চলে এলাম।তবে সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে আমিই সারপ্রাইজড হয়ে গেলাম।অপলা কিছুটা অবাক হয়ে তাই নাকি বাবা?কিভাবে সারপ্রাইজড হলে?এসেই তোর মার মুখে শুনলাম এইখানে আসার পর তুই সবার সাথে গল্প করিস,এদিক সেদিক ঘুরতে যাস।আমার কিন্তু খুব ভালো লাগছে শুনে। সত্যি বাবা?হ্যাঁ রে মা।বলে অপলাকে বুকে জড়িয়ে নিলেন।মেয়েটা যদি সেই ২বছরের বাচ্চাটি হতো তাহলে সারাক্ষণ কোলের মধ্যে রেখে দিতাম,একসেকেন্ডের জন্যে চোখের আড়াল হতে দিতাম না,মনে মনে ভাবছেন।রেহনুমা আহমেদ কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে দেখছে।তার চোখ দুটো ভিজে উঠেছে।মেয়েটাকে ছাড়া আমরা দুটো মানুষ মরেই যাবো।

মামাতো আমাকে দেখছোই না।আপুই তোমার মেয়ে আর আমি?হিশাম আহমেদ মুখ তুলে তাকিয়ে দেখেছো আমি ডাকিনি বলে নাকি আমার মেয়েটা কাছে আসবে না।বলেই অন্য হাতে লুবনাকেও বুকে টেনে নিলেন।কিছুক্ষণ পর ওদের দুপাশে দাড় করিয়ে মাহিমের সাথে কথা বললেন।সব কুশলাদি জানলেন।রিজভীর দিকে তাকিয়ে তোমাকেতো চিনলাম না?আংকেল মোহন ভাইয়ার শালা হয়।ও তুমি বউমার ভাই?রিজভী সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করলো।অপলা বলল,বাবা এসেই তুমি ভাবীকেও চিনে ফেললে?চিনবনা,এইখানে আসার পর কিছুক্ষণ পরপর বাউমাইতো চা দিচ্ছে।তোর মাতো আর দেয় না।অপলা হাসলো।রেহনুমা আহমেদ শুনলেন তবু চুপ করে রইলেন।আজ আর মানুষটাকে কিছু বলতে ইচ্ছে হচ্ছেনা।মুখে যাই বলুক মানুষটাও বড্ড ভয় পাচ্ছে।এত বছরের সংসার মুখ দেখেই বুঝতে পারেন মানুষটার মনে কি চলছে।

হিশাম আহমেদ মাহিম আর রিজভীকে নিয়ে গল্প করছেন।এহসান চৌধুরীও তাদের সাথে বসবেন কিন্তু তূর্য সে সুযোগ দিচ্ছে না।অনেক কষ্টে ওকে ছাড়িয়ে রুনু ঝুনুর সাথে খেলতে বসিয়ে তিনি এলেন।সবে 5মিনিট হল চা খেয়েছে এহসান চৌধুরী আসায় আবার নতুন করে চা এর বায়না ধরলেন হিশাম আহমেদ।তার দেখাদেখি মাহিম আর রিজভীও তাল মিলিয়ে বলছে হ্যা আংকেল মন্দ হয়না আরেক কাপ চা হলে।লিপি চা দিয়ে বলল,আংকেল এইবার আর চা দিলে আণ্টি আমাকে খুব বকবে।ভয় পাচ্ছ বউমা?আমিও তোমার আন্টিকে ভয় পাই,তাহলে বউমা একঘন্টার ভিতর আর চা চাইবো না।সবাই হোহো করে হেসে উঠলেন।এইভাবে মেতে উঠেছে তাদের আজেকের রাতটা।এখন পুরো বাড়ির সবাই ড্রয়িংরুমে বসে আড্ডায় যোগ দিয়েছে।যেটা সচরাচর হয় না।আবার কখনো হবে কিনা এইখানে উপস্থিত কেউ তা জানে না।

চলবে………

সকল পর্বের লিংক
https://m.facebook.com/chayabithi.11/photos/a.158674299705436/158673836372149/?type=3

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here