তুমি একমাত্র আমার অধিকার পর্ব-১২

0
1273

#তুই_একমাত্র_আমার_অধিকার
#ছোহা_চৌধুরী
#পর্ব১২
আজকে রাতে বারবিকিউ পার্টি।ছেলেরা রান্না করবে।আর মেয়েদের ছুটি।কিন্তু বোর হয়ে যাচ্ছি বসে থাকতে থাকতে।তখনই অয়ন বলল এখন একটা গান হলে কেমন হবে?শুভ্র তুই অনেক ভালো গান গাইতে পারছ।তুই গান কর।
কিন্তু শুভ্র কোনো ভাবেই রাজি হচ্ছিল না গান গাইতে। কিন্তু আমি অনেক রিকোয়েস্ট করার পর গান গাইতে রাজি হলো।অয়ন রুম থেকে গিয়ে গিটার নিয়ে এলো।শুভ্র গিটার হাতে নিয়ে গান শুরু করল
রাতের সব তারা আছে
দিনের গভীরে,
বুকের মাঝে মন যেখানে
রাখবো তোকে সেখানে,
তুই কি আমার হবি রে?

মন বাড়িয়ে, আছি দাঁড়িয়ে
তোর হৃদয়ে, গেছি হারিয়ে
তুই জীবন-মরন সবই রে..
তুই কি আমার হবি রে?

আমার পথটা চলে যায়, তোরই দিকে
চোখের কলম, শত কবিতা লিখে,
এই হৃদয়ের ভালোবাসা দিয়ে
সেই কবিতা শুধু তোকে নিয়ে।

চোখ ভোরে তুই, দেখ পড়ে তুই
প্রেম কবিতায় তোকে ছুঁই
তুই চিনে নে সে কবি রে ..
তুই কি আমার হবি রে ?

(বাকিটুকু নিজ দায়িত্বে শুনে নিবেন)
শুভ্র গানের প্রতিটি কথা আমার দিকে তাকিয়ে গাচ্ছিলো।যেন আমাকে ডেডিকেট করে গানটি গাওয়া।ওই সময় আমার নিজেকে সবচেয়ে হ্যাপি গার্ল মনে হচ্ছিল। ইচ্ছে করছিল শুভ্রকে গিয়ে জড়িয়ে ধরি।কিন্তু সবাই সামনে থাকার কারনে চুপচাপ বসে থাকি।আর সবার সাথে হাততালি দেই। এরপর আনায়া বলে অয়ন তুমি একটা গান কর।সাথে আমি ও তাল মিলিয়ে বললাম করো না অয়ন।অনেক বছর ধরে তোমার গান শুনি না।শুভ্র ও বলল অয়ন তুই একটা গান কর সবাই যখন রিকোয়েস্ট করছে আমি গিটার বাজাচ্ছি।

আমি পারিনি তোমাকে
আপন করে রাখতে
আমি পারিনি তোমাকে
আবার আমার করে রাখতে।
তুমি বুঝোনি, আমি বলিনি
তুমি স্বপ্নতে কেন আসোনি
আমার অভিমান তোমাকে নিয়ে
সব গেয়েছি।
গানে-গানে, সুরে-সুরে কত কথা
বলেছি তোমাকে
তুমি বুঝোনি, বুঝোনি।

কখনো যদি আনমনে চেয়ে
আকাশের পানে আমাকে খুঁজো
কখনো যদি হঠাৎ এসে
জড়িয়ে ধরে বলো ভালোবাসো।
আমি প্রতি রাত, হ্যাঁ, প্রতিক্ষণ
খুব অজানায় কত অভিনয়
করে বসি তোমায় ভেবে।
আমার অযথা সব লেখা গান
সব শুনে মন করে উচাটন
তুমি বোঝোনি কেন আমাকে।
তুমি বুঝোনি, আমি বলিনি
তুমি স্বপ্নতে কেন আসোনি
আমার অভিমান তোমাকে নিয়ে
সব গেয়েছি।
(বাকিটুকু নিজ দায়িত্বে শুনে নিবেন)
গানটা শেষ হতে না হতেই আমি ওঠে চলে যেতে নিই।তখনই শুভ্র বলল,নিরাপাখি চলো আমরা রিসোর্টটা ঘুরে দেখি।হয়তো বুঝতে পেরেছিল যে আমার এখানে ভালো লাগছে না।

শুভ্র আর আমি একসাথে হাটছি। আজকের ওয়েদারটা ও অনেক সুন্দর। আবার পূর্নিমার রাত হওয়ার কারনে আকাশে বৃত্তাকার চাঁদ। শুভ্র বলেছিল যে এই ওয়েটারে আমি যেন শাড়ি পড়ি।ওর আবদার রাখতেই আমি আজকে শাড়ি পরেছি।হালকা বাতাসের কারনে চুলগুলো উড়ছে।তাই আমি চুলগুলো একটা খোঁপা করে নিতেই শুভ্র বলল, কিছু কিছু জিনিস অবাধ্য থাকাই সুন্দর। চুলগুলো খোলে দাও।আচ্ছা নিরাপাখি তুমি কি আমাকে বিয়ে করে হ্যাপি না?তুমি কি আমাকে হাসবেন্ড হিসেবে মানো না? নাকি এখনো অয়ন কে!

আমি তাড়াতাড়ি বললাম শুভ্র স্টপ। এরকম ননসেন্স এর মতো কথা বলছো কেনো?লজ্জা করে না নিজের বউকে জিজ্ঞেস করতে যে সে এখনো অন্য কাউকে ভালোবাসে নাকি!আমি তোমার বিয়ে করা বউ।আমি তোমাকে আমার হাসবেন্ড হিসেবে কেন মানবো না! আমি তোমাকে নিয়ে হ্যাপি থাকতে চাই।এখানে অয়নের নাম কেন আসবে?ও আমার অতীত। আর ওটা ভালোবাসা ছিল না।সাময়িক মোহ ছিল।কারন তোমার প্রতি আমার যে ফিলিংস অয়নের প্রতি ওইরকম ফিলিংস কখনোই ছিল না।তোমাকে এক মুহুর্ত না দেখলে আমার দম বন্ধ হয়ে যায়।আমার অয়নের প্রতি এমন অনুভূতি কখনোই হতো না।কারন ওটাতো সত্যিকারের ভালোবাসাই ছিল না।
শুভ্র হেসে বলল, তার মানে তুমি স্বীকার করো যে তুমি আমাকে ভালোবাসো!
হুম,যে মানুষটা আমাকে এতোটা ভালোবাসে,আমাকে নিয়ে এতোটা ভাবে,এতোটা কেয়ার করে তাকে না ভালোবেসে থাকা যায়।
শুভ্র বলল,আমার ছোট পিচ্চি তো দেখি অনেক বড় হয়ে গেছে।আজকে শাড়িতে তোমাকে পুরো বউ বউ লাগছে।ইচ্ছে করছে!
আমি আড়চোখে তাকিয়ে বললাম কি ইচ্ছে করছে?
শুভ্র আমাকে টুপ করে কিস করে বলল,আদর করতে।
হু আমি অনেক ছোট মানুষ। আর নিজের কাকাতো বোনকে এমন কথা বলতে লজ্জা করে না!নাকব বাসায় মা-বোন নেই।
শুভ্র কপাল কুঁচকে বললো, সবই আছে কিন্তু বউ নেই।
আমি বললাম, তাই নাকি!
শুভ্র একটু বিরক্তিকর ভাব নিয়ে বলল,দিলে তো আমার ফিলিংসটার দফারফা করে।আর তুমি ছোট!তাহলে একটু আগে ওই কথাগুলো কে বলছিল?
হুম আমি তো ছোটই।দেখ তোমার কাঁধের সমান। আর তুমিইতো আমাকে পিচ্চি বলে ডাকো।

________ ________

কি ব্যাপার আবির ভাইয়া? আমার ননদিনীর সাথে ওপস আমার বোনের সাথে কি করছো তুমি?একটু শালিকাদেরকে ও সময় দিও।আন এখনই তোমরা সুপারগ্লুর মতো চিপকে থাকছো তাহলে বিয়ের পরতো……….

চলবে……..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here