তুমি_যে_আমার🥀 Writer_Nondini_Nila Part_31

তুমি_যে_আমার🥀
Writer_Nondini_Nila
Part_31

আরিয়ান ঝামেলা শুরু করে দিলো। রিভলভার বের করে তূর্যর কপালে ঠেকাল। তাতে তূর্য এর মুখে ভয়ের কোন রেশ পাওয়া গেলো না। স্বাভাবিক ভাবেই বসে আছে। আরিয়ান দাঁতে দাঁত চেপে চেঁচিয়ে বললো,

‘ ওই মেমোরি কার্ড আমাকে দিয়ে দে। না হলে তোকে মারতে আমি এক সেকেন্ডও সময় নেবো না তূর্য।’

তূর্য আরিয়ানের কথা শুনে তাচ্ছিল্য করে হেসে উঠলো। তূর্য এর লোকেরা এসব দেখে তো সবাই বন্দুক বের করে আরিয়ান দের দিকে তাক করে রেখেছে। তা দেখে তূর্য বাম হাত উঁচু করে রিভলবার নিচে নামাতে বললো। সবাই অবাক হয়ে নামালো।

আরিয়ান তূর্য এর হাসির মানে বুঝতে পারছে না।
‘ তোর ভয় করছে না! তুই এমন করে হাসছিস কেন?’

‘ তোকে আমি ভয় পাবো হা হা হা। হাসির কথা বলিস না। তুই আমার কপালে বন্দুক ঠেকিয়ে কি ভয় দেখাচ্ছি মৃত্যুর? আমি যে মৃত্যুর ভয় পায় না খুব ভালো করে এতো দিনে বুঝা উচিত তোর‌। আর আমাকে মেরেও তুই নিজের কাজে সফল হবি না। কারণ এর কপি আমার লোকের কাছে আছে। আমার কিছু হলে ওরা এটা ভাইরাল করে দিবে। আমি মরলেও দুই বাচবি না।’

আরিয়ান এসব শুনে বন্দুক নামিয়ে ফেললো। সাথে ওর লোকরাও। তূর্য মুখ বাঁকা করে হাসছে।
আরিয়ানের শরীর জ্বলে যাচ্ছে এই হাসি দেখে। কি করবে ও এখন। ওই শিশুদের কাল বিদেশে না পাঠালে ওর অনেক বড় লস হয়ে যাবে। কতো কোটি নিয়েছে সেসব সুদ করবে কি করে। দুশ্চিন্তায় হাত পা অবশ হয়ে আসছে।
তূর্য পায়ের উপর পা তুলে আরিয়ানের মুখটা দেখছে আর তাচ্ছিল্য হাসি দিচ্ছে।

আরিয়ান তূর্য কে সব বলে দিলো। এছাড়া উপায় নেয়। এসব ভাইরাল হলে ওকে জেলে গিয়ে পচে মরতে হবে। এখন এই তূর্যর কাছে নিচু হতে হবে। কিন্তু পরে এর প্রতিশোধ নিয়েই ছারবে ও।
তূর্য আরিয়ানের থেকে খবর নিয়ে সাথে সাথে শাওন কে কল করলো। আর জায়গায় ঠিকানা দিয়ে দিলো।

‘ এবার প্রমাণ দে।’

‘ ওয়েট এতো তারা কিসের।’

বলেই তূর্য উঠে দাঁড়ালো। আরিয়ান তা দেখে বললো,

‘ না দিয়ে কোথায় যাচ্ছিস?’

‘ কি দেবো?’

‘ কি দিবি মানে! ইয়ার্কি হচ্ছে আমার সাথে! প্রমাণটা তাড়াতাড়ি দে না হলে বেচে ফিরতে পারবি না এখান থেকে!আমার সাথে চালাকি!’

‘এতো ভয় পাস না। এটা আমি ভাইরাল করবো না। কিন্তু এই প্রমাণটা আমি তোকে দিয়ে দেবো না।’

বলেই তূর্য চলে যেতে নেই আরিয়ান রেগে ওর কলার চেপে ধরে। তা দেখে রাগে তূর্য এর কপালের রগ ফুলে উঠে আর হাত মুষ্টিবদ্ধ করে আরিয়ানের গাল বরাবর ঘুসি মারে আরিয়ান ছিটকে পড়ে টেবিলের উপর। ছোটখাটো যুদ্ধ লেগে যায়। আরিয়ান ও ওর লোকদের আধমরা করে তূর্য ওর লোকদের নিয়ে বেরিয়ে আসে। ঘুসাঘুসি করতে গিয়ে ওর সানগ্লাসটা ভেংগেছে ভাংগা সানগ্লাস টা দেখতে দেখতে গাড়িতে উঠে বসে। শাওন কল‌ করে জানায় বাচ্চা দের উদ্ধার করেছে।

শাওন এর কাছে যায়। বাসায় আসতে রাত এগারোটার বাজে। একসাথে দুজন আসে।
বাসায় এসে ওয়াশরুমে গিয়ে গোসল সেরে নেয়।
রুমে আসতেই ওর কল আসে। নাম্বার দেখেই ওর ঠোঁটের কোনে হাসি চলে আসে।

‘ হ্যালো অফিসার আদিল।’

‘ ইয়েস। কি খবর স্যার?’

‘তোমাকে আসতে বলেছিলাম বাসায় কিছু দরকারি কথা ছিলো।’

‘ ও হ্যা। আসলে একটা জরুরী কাজে গেছিলাম তাই আপনার ব্যাপারটা একদম ভুলে গেছি। আজকে বোধহয় আসতে পারবো না। আমি আপনার সাথে কাল মিট করি স্যার!’

‘ ওহ আচ্ছা সমস্যা নাই। কিন্তু আমি কি জন্য তোমাকে আসতে বলেছি তুমি কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পেরেছ কি?’

‘ আমার মনে হয় পেরেছি। আমি আপনাকে সাহায্য করবো। আপনাকে আমি বিশ্বাস করি আর কেউ পাশে না থাকলেও আপনি আমাকে পাশে পাবেন স্যার।’

‘ থ্যাংক ইউ অফিসার এজন্যই তো আপনার সাথে আমি কথা বলি। আপনি আমাকে ওই লম্পটায খুঁজে এনে দিন। যে আমাকে নিঃস্ব করেছ।’

‘ চিন্তা করবেন না। তাকে খুব তারাতাড়ি পেয়ে যাবো।’

‘ মেয়েটার দিকে তাকাতে পারি না।’

‘ ও আচ্ছা রাখছি। কাল দেখা হচ্ছে কেমন।’

‘ আচ্ছা।’

তূর্য কল কেটে দিলো।

‘ আমার সাহায্যে আমাকেই খুঁজতে চায়। ও গড! কিন্তু আমি আপনার বিশ্বাস যোগ্য পাত্র হয়ে থাকব স্যার।আপনার বিশ্বাসযোগ্য না হলে যে আপনার কলিজাটা আমার হবে না। আপনি নিজের হাতে আমার হাতে তুলে দিবেন তাকে।’

শাওন ওর দিকে তাকিয়ে আছে সন্দেহ চোখে।

‘ ওই কি ভেবে হাসছিস?’

‘ কিছুনা।’

শাওন ওর ব্যাপার বাদ দিয়ে তিশাকে কল করলো।

.
নিদ্রা এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে যাচ্ছে না। আরিয়ানের ভয়ে যাওয়ার সাহস করতে পারছে না। ও বারান্দায় বসে ছিলো অভ্র ওর পাশে এসে বসলো। ওকে চিন্তিত দেখে বললো,

‘ কি হয়েছে? কি এতো চিন্তা করছিস?’

নিদ্রা চমকে উঠে তাকায়।

‘ কিছুনা।’

‘ মিথ্যা বলছিস?’

‘ আমার একা বাইরে যেতে ভয় করে আমি এখন কি করবো?’

‘ একা যাবি কেন? দরকার হলে আমাকে সাথে নিয়ে যাবি একা যাওয়ার দরকার কি?’

‘ হাসপাতালে যাব কি করে?’

‘ চাকরি ছেড়ে দে। তোর চাকরি করার কি দরকার। আমার ইনকাম এ কি তোর চলবে না।’

‘ তোর ইনকাম এ আমি চলবো কেন?’

‘ তো কার ইনকাম এ চলবি? বর এর ইনকাম এই তো ব‌উ চলে।’

‘ হুম জানি। কিন্তু আমি তোর ইনকাম এ চলবো কেন? তুই কি আমাকে ব‌উ মানিস?তুই তো আমাকে যেকোনো সময় ডির্ভোস দিয়ে দিবি।’

‘ আমি তোকে ডির্ভোস দেবো না।’

নিদ্রা অবাক হয়ে তাকালো,’ কেন? ভালোবাসিস আমাকে?’

‘ জানিনা। কিন্তু আমি তোকে ছারবো না। সারাজীবন তুই আমার ব‌উ থাকবি আর আমি তোর বর।’

‘ কি সব বলছিস? পাগল হয়ে গেলি নাকি? আর তোর বর্ষার কি হবে?’

‘ ওর আবার কি হবে?’

‘ তুই তো ওকে ভালোবাসতি। আরেকটা কথা তুই বর্ষার সাথে দেখা করেছিস আর?’

‘ না।’

‘ কেন?’

‘ ওর সাথে কেন দেখা করবো?’

‘ তুই ওকে ভালোবাসিস। বিয়ে করতে চাস এসব বলবি।’

‘ জোর করে সংসার ভাঙতি চাইছিস কেন? আমি বলছি তো আমি তোর সাথেই থাকতে চাই। বর্ষাকে আমি ভুলে যেতে চাই।’

‘ জোর করে আমাকে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করিস না। আর আমাকে দয়া করিস না। আমি কারো দয়া নেবো না‌‌।’

‘ আমার ভালোবাসা তোর কাছে দয়া মনে হচ্ছে।’

‘ তুই ভালোবেসে এসব বলিস নি। তুই দয়া করে বলছিস।আমি কারো দয়া চাই না।’

অভ্র নিদ্রার এক হাত ধরে বললো।
‘ তোর মুখে ভালোবাসার কথাটা জানার পর থেকে আমার নিজের মধ্যে আমি পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি। তোকে যখন সেদিন পাওয়া গেল না। আমার মনে হয়েছিল তোকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারবো না। তোর কিছু হয়ে গেলে আমি মরে যাব। কিছুক্ষণের জন্য আমার দুনিয়া থমকে গিয়েছিল। তোকে দেখে আমি আবার জীবন ফিরে পেয়েছিলাম। তোকে আমি ভালবাসি কিনা জানিনা কিন্তু আমি তোকে ছাড়া থাকতে পারবো না সেটা বুঝে গেছি। সারাক্ষণ তোর চিন্তা আমার মাথায় ঘুরপাক খায়। বিশ্বাস কর। বর্ষা ফিরে এসেছে জানা সত্ত্বেও আমার ওকে দেখতে যেতে ইচ্ছে করে নি। ওর জন্য সে আগের ফিলিংস আমি পাইনা। আর মনে হয় বর্ষার প্রতি শুধু আমার চোখের ভালোলাগা ছিল ভালোবাসা না। আমার ভালোবাসা অন্য কেউ। সেই অন্য কে ও টা…..

‘সে অন্য কেউটা আমি অন্তত না আমি জানি।’

বলেই নিদ্রা ভেতরে চলে গেল। আর অভ্র অসহায় মুখ করে বসে রইলো।

#চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here