তোমাতে মাতোয়ারা পর্ব-১৬

0
2015

#তোমাতে_মাতোয়ারা ১৬তম পর্ব

_আরশিয়া জান্নাত

একটা বক্স হাতে নিয়ে অনেকক্ষণ ধরে কারিয়ান ঘুরে বেড়াচ্ছে।কিন্তু চৈতিকে দেওয়ার সাহস পাচ্ছেনা।কি বলেই বা দিবে তাও ভেবে পাচ্ছেনা।এদিকে ব্যাগপত্র সব গাড়িতে উঠানো হয়ে যাচ্ছে কিছুক্ষণের মধ্যেই ওরা ঢাকায় চলে যাবে।
চৈতি শেষবারের মতো পুকুরঘাট টা দেখে গেল,কারিয়ান সেই সুযোগে চৈতিকে প্যাকেট ধরিয়ে বললো,এটা তোমার জন্য।Please don’t refuse.
চৈতি কিছু বলার আগেই কারিয়ান চলে গেল, বান্দাকে আর দেখা যায়নি।গাড়ি ছাড়ার পর কোত্থেকে দৌড়ে এসে চৈতির জানলার সামনে দাঁড়ালো।হাসিমুখে সবাইকে হাত নেড়ে বিদায় জানালো।
চৈতি বক্স খুলে দেখে খুব সুন্দর একটা ব্রেসলাইট।সাথে একটা চিরকুট।চিরকুটে লেখা,
“”প্রথমে ভেবেছিলাম ফেসবুকে নক করে কথাটা বলবো,কিন্তু ভার্চুয়ালে মনের ভাব প্রকাশ করাটা পছন্দ হয়নি শেষে।ভাবলাম সরাসরি বলে দেখি,কিন্তু ছোটবোনের বিয়েতে আসা গেস্টকে কিভাবে প্রপোজ করি?বহুভেবে চিরকুট লেখাকেই বেস্ট মনে হলো!
চৈতি আমি তোমাকে ভালোবাসি।
তুমি রাজী থাকলে পারিবারিকভাবে প্রপোজাল দিতে চাই,,,,
ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করলেই বুঝে নিবো সম্মতি জানাচ্ছো নাহয় রিজেক্ট করে দিও।””
কারিয়ান।
পুষ্পি— কি রে এমন লাল টমেটোর মতো লাল হয়ে কি পড়ছিস?লাভ লেটার পেলি নাকি?
চৈতি–আস্তে বল।সবার সামনে এতো চিল্লাস ক্যান?
পুষ্পি—চিল্লাইলাম কই!আমার গলা সবসময় ই এরকম।
চৈতি–হ ফাঁটা বাঁশ!
পুষ্পি–কি বললি তুই??
চৈতি– কিছু না ঘুমা।
পুষ্পি–আগে বল কে দিলো?
চৈতি–কারিয়ান ভাই।
পুষ্পি–ওহো……বিয়া আরকটা খামু রে কি মজা!
চৈতি ডাটা অন করে কারিয়ানের আইডিটা ঘুরে দেখলো।কিন্তু এক্সেপ্ট করলো না,করুক একটু অপেক্ষা সমস্যা কি?

ঐন্দ্রিলা ঘুম থেকে উঠে নামায পড়েই সকলের জন্য নাস্তা বানিয়েছে,নাহিদা বলেছিল পায়েস রান্না করতে।নাতবৌয়ের হাতে মিষ্টিমুখ করতে চান তিনি।সবাই ঘুম থেকে উঠে ডাইনিং এ এসে অবাক হয়ে গেল,কয়েক পদের পিঠা,পায়েস আর পরোটা মাংস তৈরি করেছে সে।
নাঈমা–এ কি ঐন্দ্রিলা প্রথমদিন ই কিচেনে এলে কেন?এতো কষ্ট করে এসব করার দরকার ছিল না তো।
তাহজীব–বাহ কি স্মেল এসেছে।বৌমা ঘ্রাণ শুনেই তো খিদে পেয়ে গেছে।দেখি কি আছে খেতে দাও।
ঐন্দ্রিলা হেসে সবাইকে পরিবেশন করে দিলো,দিয়াও সহযোগীতা করলো।নিরবও ততক্ষণে চেয়ারে এসে বসে গেছে।
নাহিদা বললো,নাতবৌ পায়েসটা অনেক ভালো হয়েছে,আর নারকেল পিঠাটাও দারুণ।
নিরবের চাচী দিলারা বললো,এতো অল্প সময়ে এতোকিছু কিভাবে করলে?কাজে দেখি বেশ পটু মাশাআল্লাহ!
তফুরা–এখনকার মেয়েরা ইউটিউব দেইখা কত কি শিখে।তোতাপাখির বুলির মতো মুখস্থ রান্ধে।
সাহেরা বললো–হ্যাঁ আপা।সবাই ইউটিউব দেখেই শিখে,কেউ রেঁধে খাওয়ায় আর কেউ কেউ শুধু মেকাপ ই করে যায়।চুলার ধারে গিয়ে করে খাওয়ায় না।
তফুরার ছেলের বৌ সোমা বিরক্ত মুখে বললো,খালামণি আপনি কি আমাকে ইন্ডিকেট করে বলছেন?ভালো করে তাকিয়ে দেখুন ঐন্দ্রিলা রান্না করে বলেই ওর চেহারার গ্লো-টা কম।আগুনের আঁচে স্কিন বেশিদিন ভালো থাকেনা।তাছাড়া এতো কাজের মানুষ আছে কিজন্য?
নিরব হেসে বললো,ও কৃত্রিমতার মাঝে নিজেকে ঢেকে রাখেনা ভাবী।ন্যাচারাল লুকেই থাকে তাই আপনার মনে হচ্ছে ওর গ্লো কম।তাছাড়া ঐন্দ্রিলার কাছে স্কিনের চেয়ে আপনজনদের গুরুত্ব বরাবরই বেশি,তাই সবার জন্য ভালোবেসে রেঁধেছে।আপাতত ওর রান্নাটা চেখে দেখুন,ওর রূপ লাবণ্য নিয়ে আপনাদের কমেন্ট না করলেও চলবে।ঐটা আমার জন্য ছেড়ে দিন।
নাঈমা বেশ খুশি হলো নিরবের কথা শুনে।
তফুরা আর সোমা মুখ কালো করে খেতে লাগলেন।
নাহিদা ঐন্দ্রিলাকে দুটো স্বর্ণের বালা পড়িয়ে বললেন,বাঙালি নারীর অহঙ্কার হচ্ছে পাকা রান্নার হাত,পুরুষ মানুষের পেট শান্তি তো দুনিয়া শান্তি।
আল্লাহ তোমাকে দীর্ঘায়ু করুন,স্বামী সংসার নিয়ে সুখে থাকো এই দোআ করি।নানুভাই ভাগ্যগুনে এমন বৌ পেয়েছিস,কদর দিস কিন্তু।
নিরব হেসে মাথা নাড়ালো।
দিয়া ফিসফিস করে বললো,ভাবী নানুর কিন্তু যাঁর তাঁর রান্না পছন্দ হয় না।তোমার রান্না পছন্দ হয়েছে মানে তুমি নানুর মন জয় করে নিয়েছ।

ড্রইং রুমে বসে সবাই গল্প করছে।দিয়া তাঁর নানুকে জড়িয়ে ধরে বসে বসে সবার গল্প শুনছে,ঐন্দ্রিলাও সেখানে বসা।দিয়ার ছোট ফুপী সাহেরা বললো,এবার দিয়ার বিয়েটা ঠিকঠাক হলেই আমার ভাই নিশ্চিন্ত হয়ে যাবে।
দিলারা হেসে বললো,তা দিয়া তোর পছন্দের কেউ আছে নাকি?
তফুরা বললেন,এক কপাল পাইছে আমার ভাইয়ে।কোনো ছেলেমেয়েরে নিজে পছন্দ করে বিয়ে দিতে পারলোনা,কয়দিন পর শুনুম দিয়ার ও পছন্দের মানুষ আছে।
দিয়া ফুরফুরে গলায় বললো,ফুপী আব্বু কিন্তু লস খায় নি।আরমান ভাইয়ের গল্প তো কম শুনলেন না।
তফুরা–আমি তো বলিনাই কেউ খারাপ।বাপ মায়ের তাও খায়েশ থাকেনা!পছন্দমতো ছেলেমেয়েদের বিয়া করাইবো,সেই খায়েশ তো পুরণ হইলোনা।এখন তোর বেলা যদি হয় আর কি!

ঐন্দ্রিলা পড়েছে মহা ঝামেলায় না পারছে সবার সামনে উঠে যেতে না পারছে বসে থাকতে।নিরব একটার পর একটা মেসেজ দিয়েই যাচ্ছে রুমে যাওয়ার জন্য।তাইয়্যেবা যেন ঐন্দ্রিলার অবস্থা বুঝলো।সে বললো, ঐন্দ্রিলা চলোতো আমার সাথে একটু কাজ আছে।
ঐন্দ্রিলা যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো।তাইয়্যেবার সাথে উঠে গেল।তাইয়্যেবা বললো,যাও রুমে যাও।আমি এমনি ডেকে এনেছি।এরা তো যে গল্প জুড়ে দিয়েছে সারাদিনেও থামবেনা।
ঐন্দ্রিলা রুমে ঢুকতেই নিরব ওকে হেচকা টান দিয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো।
–উফফ কখন থেকে তোমাকে ডাকছি আসার নাম গন্ধই নেই!বরটাকে একা ফেলে কি করছিলে এতক্ষণ হু??একটুও কি মায়া লাগে না সেই সকালে ঘুমে রেখে গেছ একবার এসে দেখলেও না।এতো কেয়ারলেস?
–সবার সামনে হুট করে চলে আসবো কিভাবে?
দেখি ছাড়ুন এতো শক্ত করে কেউ জড়িয়ে ধরে!
নিরব ছেড়ে দিয়ে বললো,শোনো ঐন্দ্রিলা ঘুম থেকে উঠে যদি তোমাকে না দেখি আমি কিন্তু খুব রাগ করবো।আজকে যে ভুলটা করেছ তাঁর জন্য তোমার শাস্তি পেতে হবে।
–ওমা কি ভুল করেছি আমি!শাস্তিই বা পাবো কেন?
–তুমি জানো আমার কত শখ ছিল বিয়ের পরদিন আমার বৌ ভেজা চুলে ঘুম ভাঙাবে,আর তুমি কিনা ,,,,
–ইয়া আল্লাহ এতো ন্যাকামি আপনি পারেন!আমি আপনাকে ফজরের সময় কতবার ডেকেছি জানেন?আপনি তো নাক ডাকায় ব্যস্ত।শুনুন নামাযে মনোযোগী হতে হবে।
নিরব মুখ ফুলিয়ে বললো,আমি মোটেও নাক ডাকিনা মিথ্যে বলছো কেন?
–আপনি নাক ডাকেন না সিরিয়াসলি!!কি জোরে ডাকছিলেন জানেন??
–উহু মিথ্যা কথা।
–আমি জানতাম অস্বীকার করবেন তাই রেকর্ড করে নিয়েছি।দেখুন ভিডিও ক্লিপটা!!
নিরব ফোনটা ছোঁ মেরে নিতে চাইলেই ঐন্দ্রিলা পিছনে নিয়ে গেল,ইশ এতো সোজা ঐন্দ্রিলা থেকে ফোন নেওয়া?
–ঐন্দ্রিলা এটা রেখোনা।প্লিজ ডিলেট করে দাও।
–উহু করবোনা।এটা সবাইকে দেখাবো,জাতীয় ক্রাশ সিঙ্গার সাহিল ইবনানের দূর্লভ ভিডিও ভাইরাল! হাহাহা
নিরব ঐন্দ্রিলার থেকে ফোনটা নেওয়ার জন্য অনেকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে।কিন্তু ঐন্দ্রিলাকে ধরতেই পারছেনা।ঐন্দ্রিলা হাসতে হাসতে পুরো ঘরে ছোটাছুটি করছে।নিরব না পেরে হাঁপাতে হাঁপাতে বললো, আচ্ছা হার মানলাম এবার সমতা করো,এর বিনিময়ে কি করতে হবে বলো।
ঐন্দ্রিলা বললো ওয়েট ভেবে নি একটু।
ঐন্দ্রিলা ভাবতে ভাবতে নিরব ঐন্দ্রিলাকে দেওয়ালে চেপে ধরলো।ঐন্দ্রিলা হাত পেছনে নিয়ে বললো,চিটার!এটা চিটিং আমাকে ভাবতে বলে ধরে ফেলেছেন হবেনা হবেনা।
নিরব শয়তানি হাসি দিয়ে বললো,চিটিং কই করলাম সোনা।আমি তো বৌকে আদর করতে এসেছি।
নিরবের এতো নিকটে আসা ঐন্দ্রিলার হার্টবিট বাড়িয়ে দিলো,ও কাঁপা গলায় বললো,সরুন আমার অনেক কাজ আছে।
নিরব আলতো করে ওর কপালে আঙুল ছুঁইয়ে বললো,কি কাজ আছে?
ঐন্দ্রিলা পরম আবেশে চোখ বন্ধ করে বললো,ঐঐ মমমা কে ফোনন করবো।
–এ কি ঐন্দ্রিলা তোতলাচ্ছ কেন?তুমি কি ভয় পাচ্ছ??
–ভভয়য় পপাবো কেনন?
নিরব আলতো করে ঐন্দ্রিলার কোমড় জড়িয়ে হাতে স্লাইড করে বললো,আমি কি জানি?
ঐন্দ্রিলার নিঃশ্বাস ঘন হয়ে আসতেই নিরব ফোনটা নিয়ে দিলো এক দৌড়।ভিডিওটা ডিলেট করে বিজয়ের হাসি দিয়ে ঐন্দ্রিলাকে বললো,দেখেছ সাহিল ইবনান কি চিজ?
–সামান্য একটা ভিডিও ক্লিপের জন্য এমন চিটিং করেছেন।এতেই বোঝা যাচ্ছে আপনি কেমন ভীতু।
–আমি মোটেও ভীতুনা।তুমি ভীতু।
–ঘোড়ার ডিম।
–এবার শাস্তিটা শোনো
–আমি কোনো শাস্তি পাবোনা।যাচ্ছি আমি থাকুন আপনি আপনার শাস্তি নিয়ে।
–ওকে যাও পরে যেন কেউ না বলে আগে কেন বলেননি।
ঐন্দ্রিলা না শুনেই চলে গেল।কেমন দমবন্ধকর সিচুয়েশনে পড়েছিল সে ,বাপরে!
_____________
ইশতিয়াক বেশকিছু ফলমিষ্টি নিয়ে ঐন্দ্রিলাকে দেখতে এলো।একটু আগেই ঢাকায় এসে পৌঁছেছে তাঁরা,বোনকে দেখার জন্য মরিয়া হয়ে ছুটে এসেছে একনজর দেখতে।
ইশতিয়াককে দেখে দিয়া ঐন্দ্রিলাকে ডেকে নিয়ে আসলো।ঐন্দ্রিলা ভাইকে দেখে খুশিতে আটখানা হয়ে জড়িয়ে ধরলো।ইশতিয়াক হেসে বললো,মনে হচ্ছে কয় বছর পর তোকে দেখছি!
দিয়া নিজে গিয়ে ইশতিয়াকের জন্য ট্রে সাজাতে লাগলো।
ঐন্দ্রিলা বললো–বাসার সবাই ভালো আছে?কাল তোমরা সবাই আসবেতো?দাদাই দাদুন ওরা আসেনি?
–এতো প্রশ্ন একসঙ্গে করলে উত্তর দিবো কিভাবে?সবাই ভালো আছে।আর কাল সবাই আসবে।দাদাইরা আজ আসেনি,বাড়ির গেস্টদের ঠিকঠাক বিদায় করে কাল আসবে।
–ভাইয়া তুই বস আমি তোর জন্য কিছু নিয়ে আসছি।
এমন সময় দিয়া ট্রে নিয়ে এসে বললো,ভাবী তুমি বসো আমি এনেছি।
ইশতিয়াক আড়চোখে দিয়াকে দেখে বললো,আঙ্কেল আন্টি উনারা কোথায়?
দিয়া-আম্মুতো চেম্বারে গেছে,বাবা কালকের প্রিপারেশনের জন্য গেছে।আর গেস্টরা সব সিরিয়ালে বিজি।
–ওহ।তা নিরব কোথায়?
ঐন্দ্রিলা বলবার আগেই দিয়া বললো,ভাইয়া তো বাইরে গেছে।
ঐন্দ্রিলা দিয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো,ইশতিয়াক আসার পর থেকেই দিয়া কেমন অস্থির অস্থির করছে মনে হচ্ছে!
ইশতিয়াককে চুপচাপ দেখে দিয়া বললো,ওমা কিছু নিচ্ছেন না যে?এই প্রথম আমাদের বাসায় এলেন ডিনার না করে যাবেন না কিন্তু।
ইশতিয়াক সৌজন্যমূলক হাসি দিয়ে বললো,না না ঠিক আছে।আমাকে এখনই বের হতে হবে।বাসায় অনেক কাজ আছে।ঐন্দ্রিলাকে দেখতে ইচ্ছে করছিল তাই এসে দেখে যাচ্ছি।আমি বরং উঠি,কাল তো দেখা হচ্ছেই।
ঐন্দ্রিলা বললো,ভাইয়া কিছু একটা অন্তত মুখে দে?
ইশতিয়াক বোনের মাথায় হাত রেখে বললো,তোকে দেখেছি মনটা শান্ত হয়ে গেছে কিছু খেতে হবেনা।
আমি যাই,কোনো অসুবিধা হলে ফোন করিস কেমন?
ঐন্দ্রিলা বিষন্নমনে ভাইকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিলো।ঐন্দ্রিলা ভেতরে যেতেই দিয়া দৌড়ে গেট অবদি গেল।
—এই যে দাঁড়ান?
ইশতিয়াক পিছু ফিরে দিয়াকে দেখে কিছুটা অবাক হলো।দিয়া হাঁপাতে হাঁপাতে বললো,কাল যে পাজেলটা দিয়েছিলেন ঐটার সমাধান করবেন কবে?
ইশতিয়াক মাথা চুলকে বললো,খুব শীঘ্রই।
।।
রিসিপশনে নিরবের ক্লোজ কিছু সিঙ্গার,এক্টোর আর প্রেস এসেছে।ঢাকায় চেনাজানা সকলকেই ইনভাইট করা হয়েছে।।
ঐন্দ্রিলা পারপেল কালারের সুন্দর একটা সারারা পড়েছে।চুলগুলো হালকা কার্ল করে একপাশে পাফ করে বেনী করা।তাতে হোয়াইট ফ্লাওয়ার পিনড করেছে।মাথায় পারপেল হোয়াইটের কম্বিনেশনের টায়রা,গলায় আর কানে ডায়মন্ডের গয়না,বেশ সুন্দর করে সাজানো।
নিরব ব্ল্যাক ফর্মাল স্যুট পড়েছে।দুজনকে একসঙ্গে বেশ মানিয়েছে।সবাই একে একে গ্রিটিংস জানাতে স্টেজে উঠছে,ফটোসেশন করছে।
সেখানে একজনকে দেখে ঐন্দ্রিলার চেহারা ফ্যাকাসে হয়ে গেল।লোকটা হেসে তাঁর ওয়াইফকে নিয়ে স্টেজে উঠে আসছে।ইরফাজ সাহেব ও সেদিকে তীক্ষ্ন নজরে চেয়ে রইলেন।
নিরব ঐন্দ্রিলাকে বললো,R u okay ?
ঐন্দ্রিলা কিছু না বলে বিস্ফোরিত চোখে লোকটার দিকে তাকিয়ে রইলো।ওর কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম,হাত পা ও অবস হয়ে আসছে।
নিরব ঐন্দ্রিলার অবস্থা দেখে সামনে তাকাতেই তাহজীব বললো নিরব এ হচ্ছে মিঃ জুনায়েদ তোমার জোবায়ের আঙ্কেলের ছেলে,খুব ট্যালেন্টেড পলিটিশিয়ান।
জুনায়েদ হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করে বলল,Congratulation Nirob.Wish u a very happy Married life.
নিরব ঐন্দ্রিলার হাত ধরে শান্ত হবার ইশারা দিলো।ঐন্দ্রিলা কিছুটা সময় নিয়ে স্বাভাবিক হলো।নিরব ঐন্দ্রিলার কাঁধে হাত রেখে বলল,Thank you Very much Mr Junayed.Meet my wife Mrs Sahil Ebnan.
জুনায়েদ হেসে বললো,হেই ঐন্দ্রিলা কেমন আছ?
অনেকদিন পর দেখা।
জুনায়েদের ওয়াইফ মিরা বললো,তুমি ওকে চেনো নাকি?
–হ্যাঁ আমরা এক কলেজে পড়েছি,দুই ব্যাচ জুনিয়র ছিল।Btw Nice to meet with u again.
মিরা– তুমি ভারী মিষ্টি তো! তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে।congrats.
ঐন্দ্রিলা হেসে বললো,ধন্যবাদ।জুনায়েদ ভাইয়া আপনাকে এখানে দেখে অনেক খুশি হয়েছি।ভাবী ও মাশাআল্লাহ দারুণ।
তাঁরা চলে যাওয়ার পর ঐন্দ্রিলা টিস্যু দিয়ে ঘাম মুছলো।নিরব বললো,আর কখনো এমন নার্ভাস হবেনা কেমন?সবকিছু সামনে থেকে কনফিডেন্টলি হ্যান্ডেল করবে।
ঐন্দ্রিলা হেসে বললো, আপনি পাশে থাকলে সব সম্ভব।
ইরফাজ সাহেব হাসিমুখে তাকিয়ে রইলেন।যাক নাতনীকে সামলানোর জন্য সঠিক মানুষটাই পেয়েছেন তিনি।

চলবে,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here