তোমার_নেশায়_নেশাক্ত_আমি পার্ট:৮

#তোমার_নেশায়_নেশাক্ত_আমি
পার্ট:৮
#পিচ্চি_লেখিকা

আরিয়া আর দিশা খুশিতে এক প্রকার নাচছিলো,,তখনই কেউ এসে বললো,,

“” কি ব্যাপার তোমরা কোন খুশিতে এত নাচছো?

আরিয়া আর দিশা পিছন ফিরে তাকাতেই দেখলো আরুশ দাড়িয়ে,,,আরিয়া আজ অনেক খুশি তাই আরুশ কে কোনো কথা না শুনিয়ে বলতে লাগলো,,

“” আরে মিস্টার গুন্ডা আপনি এখানে?যায় হোক আমি জব পেয়ে গেছি এই খুশিতেই আমরা নাচছি,,,

“” ওহ আচ্ছা,,

“” জি এখন আপনি আপনাার রাস্তা দেখেন,,,

বলেই দিশা কে টানতে টানতে আরিয়া ক্লাসের দিকে গেলো,,,দিশা আরুশের সাথে কথা বলতো কিন্তু আরিয়ার টানাটানি তে বলতে পারলো না আর আরুশ বাকা হেসে বললো,,

“” আমাকে তুমি সহ্যই করতে পারো না,,,কাল থেকে কি করবে আরুজান,,,

আরুশ শিষ বাজাতে বাজাতে চলে গেলো তার গন্তব্যে,,,

আরিয়া আর দিশা ক্লাস করে বাড়ি চলে গেলো,,,আরিয়া বাড়ি গিয়েই আগে ওর মামিকে বললো জবের কথা,,,সবাই অনেক খুশি ওর জবে,,,

পরেরদিন সকালে আরিয়া তাড়াতাড়ি উঠে রেডি হয়ে নিলো,,,আজ তার ফার্স্ট ডে অফিসে তাই তাড়াতাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো,,তিনা কে বলে দিলো যেন আইরা কে স্কুলে দিয়ে আসে,,,আরিয়া খুশি মনে অফিসের দিকে রওনা দিলো,,,আজ আর কালকের মতো ভয় লাগছে না তার,,,সিম্পল একটা ব্লাক কালারের গোল জামা পড়েছে,,চুল গুলো ছেড়ে দিয়েছে হালকা ভাবে সেজেছে,,ব্যাস এটুকুই যথেষ্ট,,,দুধে আলতা গায়ের রংটাও ফুটে উঠেছে,,,আরিয়া অফিসের ভিতর ঢুকেই অবাক হয়ে গেলো,,,সবাই তাকে ওয়েলকাম করার জন্য ফুলের বুকে হাতে দাড়িয়ে আছে,,,একজন স্টাফ কে এমন ভাবে স্বাগতম করে কেউ,,তার জানা ছিলো না,,,আরিয়া অফিসে ঢুকছে আর সবাই ওয়েলকাম করছে ভিষন খুশি লাগছে তার,,,কয়েকটা স্টাফ এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেন অপ্সরী দেখছে,,,চোখের পলকও ফেলছে না,,কিন্তু সামনে তাকাতেই আরিয়ার খুশি ফুস হয়ে গেলো,,,সামনে আরুশ দাড়িয়ে মুখে তার বাকা হাসি,,,আরিয়া ভ্রুকুচকে সামনে তাকালো,,,তারপর আরুশের কাছে গিয়ে বললো,,,

“” আপনি এখানে কেন?

“” বাহ রে,,,আমার অফিসে আমাকেই জিজ্ঞেস করছো আমি এখানে কেন?

আরিয়া চোখ বড় বড় করে আরুশের দিকে তাকায়,,

“” আপনার অফিস মানে?

“” আমার অফিস মানে এই A A group of industries এর ওনার আমি,,আর মিস আরিয়া আফরিন আপনি আমার পি.এ,,,

আরিয়া এবার মাথায় হাত ঠেকিয়ে চোখ ছোট ছোট করে বাচ্চা মার্কা ফেস নিয়ে বললো,,

“” শেষে কি না এই গুন্ডাটার পি.এ হলাম,,,এ্যাাাা এটা ঠিক না,,,করবো না আমি জব,,,

আরিয়া পিছন ঘুরে আসতে গেলেই আরুশ বলে উঠে,,

“” এই যে মিস পি.এ কেবিন এই দিকে ওই দিকে না,,,আর আপনি যদি ভাবেন জব করবেন না তাহলে নিশ্চয় কালকের কন্ট্রাক পেপারের কথা মনে আছে,,

আরিয়া কন্ট্রাক পেপারের কথা শুনে আর এগোলো না,,,নিজের চুল তার নিজেরই ছিড়তে ইচ্ছা করছে,,নিজেই নিজেকে বললো,,

“” কোন শখে আসছিলি এই অফিসে,,,আর কেন নাচতে নাচতে কন্ট্রাক পেপারে সাইন করলি হ্যা,,,যা এবার মর,,,এই গুন্ডার পি.এ হয়ে মর,,,তুই ওই গুন্ডাকে কি তেলাপোকার শরবত খাওয়াবি,,ওই তোকে খাইয়ে দেবে যা যা ভালো মতো পি.এ হ যা,,,তোর মতো বলদ আছে নাকি পৃথীবিতে,,অনার্স কমপ্লিট না হওয়া সত্ত্বেও তোকে জব দিচ্ছে কেন ভাবলিও না,,,উগান্ডি দিশা না তুই নিজে,,,

বিড়বিড় করে নিজেই নিজেকে ১০০ টা গালি দিলো আরিয়া,,,,আরুশ আরিয়ার বিড়বিড় করা দেখে বললো,,,

“” এই যে মিস বিড়বিড় না করে কেবিনে আসেন,,,অনেক কাজ আছে,,,যে যার কাজে যান,,,

সবাই নিজের কাজে চলে গেলো,,,আরুশও নিজের কেবিনের দিকে হাটা ধরলো আরিয়া আর কি করবে বেচারি নিজেও আরুশের পিছে পিছে যাচ্ছে আর নিজেকে বকা দিচ্ছে,,,

“” ওইভাবে নিজেকে না বকে চুপচাপ হাটো,,,

আরিয়া আর কিছু না বলে চুপচাপ হাটছে আরুশের পিছে,,,এবার মনে মনে নিজেকে না আরুশের গুষ্টি উদ্ধার করছে,,,আরুশ নিজের কেবিনে এসে বসে পড়লো আর আরিয়াও পিছন পিছন গিয়ে দাড়িয়ে রইলো আরুশের সামনে,,,

“” স্যার,,আপনি আমাকে এখানে কেন আনলেন?আমি আমার কেবিনে গেলাম,,,

“” আমি তো তোমাকে তোমার কেবিনেই আনলাম,,,

“” আমার কেবিন কোথায়?এটা তো আপনার কেবিন,,

“”চোখের মাথাও খায়ছো নাকি,,,পাশে তাকাও,,

আরিয়া পাশে তাকাতেই দেখে ছোট একটা টেবিল,,অনেক সুন্দর,,,সেইটার উপর একটা লেপটপ,,আর কিছু ফাইল রাখা,,আরিয়া খুশি হয়ে টেবিলের দিকে এগিয়ে গিয়ে আবার মুখ কালো করে বলে উঠলো,,

“” কিন্তু স্যার আমার কেবিন আপনার কেবিনে কেন?

“” আমার পি.এ কে?

আরিয়া মুখ বেজার করে বললো,,,

“” আমি,,

“” আমার পি.এ আমার কেবিনেই থাকবে,,,বুঝছো,,,এবার নিজের কাজ করো,,

“” এবাল নিজল তাত তলো,,,হুহ(ব্যাঙ্গ করে)

আরিয়া টেবিলে বসে সব ফাইলগুলো একটা একটা করে চেক করতে লাগলো,,আর আরুশের তো কাজে মন নেই উলটো এত শান্ত পরিবেশ ওর মোটেও ভালো লাগছে তাই আরিয়া কে জালানো শুরু করলো,,,

“”” এই যে মিস পি.এ যাও কফি নিয়া আসো,,,

“” কফি কেন আনবো আমি?চোখে দেখেন না কাজ করি,,,

“” আরু যাও তাড়াতাড়ি,,তুমি কিন্তু আমার পি.এ আর কন্ট্রাক পেপারে কিন্তু লিখা আছে আমি যা বলবো তুমি তাই করবে,,,

আরিয়া এবার বিরক্তি নিয়ে বললো,,,

“” হু,,,আপনার পি.এ হয়ে তো নিজেই নিজেকে উদ্ধার করেছি মরতে মরতে আপনার অফিসেই এসেছি,,,আর এসেছি তাও ঠিক আছে আবার কন্ট্রাক পেপারে সাইনও করেছি,,,ধুর ভাল্লাগে না,,,গুন্ডা একটা,,

আরিয়া বিরক্তি নিয়ে উঠে যেতে লাগলো,,,তখনই আরুশ বললো,,,

“” এই যে মিস পি.এ আমাকে ইনসাল্ট কেন করো হুম,,,আমি তোমার বস সো ভদ্র ভাবে কথা বলবে,,,

আরিয়া পারছে না নিজের মাথা ফাটাতে আবুল মার্কা মুখ করে বললো,,,

“” ওকে স্যার,,,

বলেই গটগট করে চলে গেলো,,,আর আরুশ আরিয়ার অবস্থা দেখে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাবে পারলে,,,এমন অবস্থা,,,

আরিয়া আরুশকে বকতে বকতে যাচ্ছে হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে ওর মেজাজ আরো গরম হয়ে যায়,,,রেগে গিয়ে বলে,,,

“” এই সমস্যা কি আপনার চোখে দেখেন না,,,অন্ধ নাকি,,,এভাকে কেউ ধাক্কা দেয়,,,,

আরিয়া দেখে ছেলেটা এমনভাবে ওর দিকে তাকিয়ে আছে যেন জিবনেও কোনো মেয়ে দেখেনি,,আরিয়া এতকিছু বলছে তার যেনো কানেই যাচ্ছে না,,আরিয়া এবার বিরক্তিকর মুখ নিয়ে ছেলেটা কে একটা ধাক্কা দিয়ে সামনে থেকে সরিয়ে কিচেনের দিকে গেলো,,,আরুশ সিসি ক্যামেরায় সবটাই দেখলো,,,আরিয়ার সাথে ধাক্কা খাওয়া ছেলেটার চাহনি মোটেও ভালো লাগেনি তার,,,তাই আরুশ ছেলেটাকে ডেকে পাঠালো,,,

“” মে আই কাম ইন স্যার?

“”ইয়েস কাম,,,

“” জি স্যার আপনি আমাকে ডেকেছেন?

“” জি,,,আপনাকে একটা ইম্পর্ট্যান্ট কথা বলার জন্য ডেকেছি,,

“” জি স্যার বলুন,,,

আরুশ ছেলেটা কে বুঝিয়ে দিলো যা বুঝানোর,,মনে হয় না ছেলেটা আর জিবনেও আরিয়ার দিকে তাকাবে বলে😐,,,,

এদিকে আরিয়া কিচেনে এসে দেখে একটা মেয়ে কফি বানাচ্ছে,,,আরিয়া মেয়েটার কাছে এগোতেই মেয়েটা বলে উঠলো,,,

“”” তুমি আরিয়া,,,স্যারের পি.এ রাইট,,

“” জি,,,আপনি?

“” আমি রাইসা,,তুমি আমাকে আপনি কেন বলছো,,আমরা একই জায়গায় কাজ করি+আমি তোমার থেকে কিন্তু খুব বড় নয়,,,তাই তুমিই বলতে পারো,,

আরিয়াও খুশি মনে আচ্ছা বলে কফি বানাতে শুরু করে,,,দুজনেই কফি বানাতে বানাতে গল্প জুড়ে দিয়েছে,,,কফি বানানো শেষ করে আরিয়া আর রাইসা নিজেদের কাজে চলে যায়,,,আরিয়া কেবিনে গিয়ে নক করলো,,,আরুশ ভেতর থেকে বললো,,

“””কাম ইন,,,

আরিয়া কেবিনে ঢুকে কফির মগটা আরুশের দিকে এগিয়ে দিলো,,,

“” এই নিন আপনার কফি,,,

“”” এত লেইট করলে যে,,,কফির তলে পড়ে গেছিলে নাকি,,,

আরুশ ঠোট টিপে হাসছে,,,আরুশ জানে কিচেনে আরিয়া আর রাইসা গল্প করছিলো,,,তবুও রাগানোর জন্য বললো,,,আরিয়া রেগে গিয়ে বললো,,

“” আপনার কফি খাওয়া দরকার খান তো এতো বেশি কথা বলেন কেন?আজব,,

আরিয়া নিজের টেবিলের দিকে যেতে গিয়ে আরুশের কথা শুনে থেমে গেলো…….

চলবে…..

ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ❤️❤️🍂🥀

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here