তোমার_নেশায়_নেশাক্ত_আমি পার্ট:২

তোমার_নেশায়_নেশাক্ত_আমি
পার্ট:২
#পিচ্চি_লেখিকা

আরুশ বাড়িতে ঢুকতেই তার ফুপি আর আয়ান এগিয়ে আসলো তার দিকে,,,

“” কি রে আজ এতো তাড়াতাড়ি আসলি যে?
“এমনি ফুপি,,ভালো লাগছিলো না তাই,,
“” শরীর খারাপ করছে নাকি?
“” না তেমন কিছু না,,এই পুচকে তুই কলেজ যাসনি?
“” না ভাইয়া,,কাল যাবো,,
“”নতুন নতুন কলেজে উঠেই মিস দিচ্ছিস,,আচ্ছা কাল যাস,,
“” হুম ভাইয়া,,
আরুশ আর কথা বাড়ালো না এমনিতেই রেগে আছে সে তার উপর বারবার আরিয়ার মুখটা তার সামনে ভেসে আসছে।আরুশ ভাবছে,,
“”এতো মায়াবী চেহারা কেন মেয়েটার?পরক্ষনেই ভ্রুকুচকে নিজেই নিজেকে বলে,,না না এটা আমি কি ভাবছি,,উফফস এসব চিন্তা করা যাবে না,,কারো মায়ায় পড়তে চায় না আমি,,,

আরিয়া ভার্সিটি শেষ করে চলে আসলো বাসায়,,এসে সোজা তার রুমে গিয়ে বেডে শরীরটা এলিয়ে দিল,,
“”কি রে আপু,,এভাবে শুয়ে পড়লি যে?
“” ভালো লাগছে না আইরা,,
“” কিছু কি হয়ছে?
“” না রে,,ভাবছি মামা মামি তো অনেক করলো আমাদের জন্য,,আমি যদি একটা জব পায় তাহলে অনেক ভালে হয়,,,মামা আর কত একা সামলাবে পরিবারটা,,
“” হুম কিন্তু তোর তো পড়াশোনাই শেষ হয়নি,,
“” হুম তবুও যদি কিছু করতে পারি,,

আরিয়া আর আইরা কথা বলছিলো তখনই নিচ থেকে তার মামি ডেকে উঠলো,,আরিয়া আর আইরার বাবা মা নেই,,আইরার জন্মের ৪ বছর পরই তার মা মারা যায় তখন থেকেই তারা মামা(আজাদ ইসলাম)মামির(তালেহা বেগম) কাছে থাকে মামা মামি অবশ্য খুবই ভালোবাসে ২ বোনকে,,আরিয়ার ২ টা মামাতো ভাই বোন আছে,,,তন্ময় আর তিনা,,,তিনা এবার কলেজে পড়ে আর তন্ময় অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়ে পাশাপাশি একটা পার্টটাইম জব ও করে,,,মামা একটা জব করে,,এত বড় পরিবার তার নিজের সামলাতে হয় তবুও কখনো কাউকে মুখ ফুটে কিছুই বলেননি,,,আরিয়া আর আইরা মাঝে মাঝে নিজেদের খুব ভাগ্যবান মনে করে কয়জন আছে এমন ভাবে আগলে রাখার,,আইরা আরিয়া বলতে পাগল,,
“” হ্যা মামি ডাকলে,,
“” হুম ডাকলাম,,,খাবি না,,অনেকক্ষণ হলো এসেছিস,,
“” হ্যা মামি,,তন্ময় ভাইয়া তিনা ওরা কই?
“” তন্ময় ফিরেনি এখনো তিনা হয়তো রুমে,,
তখনই তিনা সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে বললো,,
“” এই তো আমি এখানে,,
“” হুম বোনটি আসো,,তোমার জন্যই অপেক্ষা করছি,,
“” জানি তো,,,তুমি তো আমার সুইট বোন,,
“” হুম হয়ছে এবার আয়,,
সবাই মিলে খেতে বসলো,,খেতে খেতে আরিয়া তার মামির উদ্দেশ্যে বললো,,
“” মামি একটা কথা বলার ছিলো,,
“” হ্যা বল,,,পারমিশন কেন নিচ্ছিস মা?
“” না মানে মামি,
“” হুম বল,,
“”” বলছি যে আমি যদি একটা জব করি খুব বেশি প্রবলেম হবে কি তোমাদের?
“” কিহ?জব করবি মানে কি?
“” না মানে,,
“” কি না মানে করছিস আমরা কি তোকে কখনো বলেছি জব করতে,,,তোর মামা আর তন্ময় যা করে সেটাই অনেক,,তোর কোনো জব করতে হবে না,,
“”মামি প্লিজ,,না করো না,,আমার দরকার একটা জব করা,,আর কত বসে বসে খাবো,,একটা জব করলে ভালোই হবে মামি,,সংসারের জন্যও একটু ভালো হবে,,

অনেক বুঝাচ্ছে আরিয়া কিন্তু তার মামি মানতে নারাজ,,উনি কিছুতেই দিবেন না জব করতে,,অনেক বুঝানোর পর অনেক কিছু দিয়ে বুঝিয়ে তারপর তার মামিকে রাজি করালো,,
“” ঠিক আছে,,তোর মামা যা বলবে তাই হবে,,তুই তোর মামাকে রাজি করা,,
আরিয়াও মাথা নাড়িয়ে হুম বুঝালো,,

___________আরুশ না চাইতেও বারবার আরিয়ার কথা ভেবেই চলেছে আরিয়ার টানা টানা মায়াবি চোখ গোলাপি ঠোট কথা বলার ধরন বাতাসে উড়তে থাকা তার চুল সব যেন মন মাতিয়ে দিচ্ছে তার,,কই এত মেয়ে ক্রাশ খায় তার ওপর কখনো তো কাউকে নিয়ে এত সে ভাবেনি,,,তবে কি সে মেয়েটার মায়ায় ডুব দিলো বাট এক দেখায় কিভাবে হয়,,,এটা কি আদৌও সম্ভব?আরুশের ভাবনার মাঝেই তার ফোনটা বেজে উঠলো,,ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখে তার পি.এ রাসেলের নাম টা ভাসছে,,একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ফোনটা ধরলো,,
“” হ্যা বল,,
“” বস অফিসে কিছু হচ্ছে,,
“” মানে?
“” বস আজ যখন 5th ফ্লোরের সিসি ক্যামেরা চেক করতে গিয়েছিলাম কখন দেখলাম তারটা কাটা,,
“” হোয়াট?এটা কিভাবে হলো?
“” জানি না বস,,
“”” কি জানিস তোরা,,ঠিক মতো চেক করে দেখ,,
“”” আচ্ছা বস,,
আরুশ ফোন টা কেটে ভাবছে 5th ফ্লোরে আবার কি হলো,,কিন্তু সব কিছুর মাঝেই আরিয়া চলে আসছে,,আরুশ এবার বিরক্ত হয়ে বললো,,
“” কি আছে এই মেয়ের মধ্যে? এত কেন ভাবছি ওর বিষয়ে,,
আরুশ আর কিছু না ভেবে এলকোহল নিয়ে বসে পড়ে,,অনেক ড্রিংক করে সে তবুও বারবার সেই আরিয়ার কথায় তার মনে পড়ছে,,,সব ড্রিংকের উর্ধ্বে আরিয়া,,,আরুশ আনমনেই বলে ফেললো,,
“”” হয়তো অনেকের ক্রাশ আমি তাতে আমার যায় আসে না কিন্তু এই মেয়েটা সবার থেকে আলাদা বাঘিনী একদম,,যার দিকে একবার কেউ তাকিয়ে কথা বলার সাহস পায় না তাকে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো,,বাহ বাহ আমার তো এই বাঘিনীটা কেই চায়,,
আরুশ ভাবলো কাল থেকে মিশন আমার বাঘিনী,,আরুশ ফোনটা তুলেই একটা গার্ডকে কল করলো,,
“” জি বস,,
“” আজ ভার্সিটিতে আমাকে যে মেয়েটা থাপ্পড় মেরেছিলো তার ফুল ডিটেইলস আমার চায়,,
“”ওকে বস,,

আরুশ ফোনটা রেখে বেডে হেলান দিয়ে শুয়ে পড়ে,,

_________
আরিয়া তার মামা ফিরতেই মামার কাছে গেলো,,
“” মামা আসবো?
“” হুম আয়,,
“” মামা একটা কথা বলার ছিলো,,
“”” হুম বল,,
“” মামা বলছিলাম যে আমি একটা জব করতে চায়,,
আরিয়ার কথা শুনে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকায় মিঃ আজাদ,,কি এমন হলো যার জন্য তার আদরের ভাগ্নি জব করতে চাচ্ছে,,
“” কি এমন দরকার পড়লো যে পড়াশোনার মাঝেই জব করতে চাচ্ছিস?
“”” আসলে মামা তুমি তো জানো আমি প্রতিষ্ঠিত হতে চায়,,আর তাছাড়া অনেক বসে বসে খেয়েছি,,আমার বোনটার দায়িত্বিও তো আছে আমার উপর,,
আজাদ সাহেব মুচকি একটা হাসি দিলেন,,
“” তা সেইটা তো পরে দেখলেও চলবে,,এখন তো পড়াশুনা করতেই পারিস,,
“” হুম পড়াশোনার পাশাপাশিই একটা জব করতে চায়,,প্লিজ মামা তুমি না করো না,,
আজাদ সাহেব কি যেন ভেবে বললেন,,
“” ঠিক আছে তোর যা ইচ্ছে তবে পড়াশোনাটাও কিন্ত করতে হবে,,
“” হুম মামা থ্যাঙ্কুউ,,

আরিয়া আজাদ সাহেবের রুম ত্যাগ করে নিজের রুমে গেলো,,জবের পারমিশন তো নিয়েছে তবে এখন জব টা খুজতে হবে,,খুশি মনে ঘুমিয়ে পড়লো,,,সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই আইরাকে খাইয়ে আরিয়াও খেয়ে নিলো,,,তারপর আইরা কে স্কুল পাঠিয়ে নিজেও ভার্সিটির দিকে রওনা দিলো,,হঠাৎ পিছন থেকে কেউ তাকে ডেকে উঠলো,,
“” আরুপাখি,,
আরিয়া কন্ঠস্বর চিনতে পেরে চোখে মুখে রাগ নিয়ে তাকালো পিছনে,,
“” কি সমস্যা আপনার?আমাকে কি শান্তি মতো বাচতে দিবেন না নাকি,,
শুভ ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে বললো,,
“” না গো আরু পাখি,,আমার হাত থেকে তো তোমার নিস্তার নেই,,আর তুমি আমাকে মেনে কেন নিচ্ছো না?
আরিয়া একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো,,
“” আপনাকে মানবো? মরে গেলেও না,,আপনার মতো বড়লোক আর গুন্ডাকে তো জিবনেও মানবো না,,
শুভ এবার রেগে আরিয়ার খুব কাছে চলে আসে দ্রুত আরিয়া শুভর এমন কাজে ভড়কে যায় দুকদম পিছোতে গেলেই শুভ আরিয়ার হাত চেপে ধরে,,দাতে দাত চেপে বলে,,
“” মানতে তোমার আমাকেই হবে,,শুধু শুধু নাটক করছো,,তোমার মতো হাজার টা মেয়ে আমার বেডে থাকে,,তোমাকে তো মর্যাদা দিতে চেয়েছি,,তাও তোমার এতো নাটক,,দেখি তোমাকে কে বাচায় আমার হাত থেকে,,,
আরিয়ার হাত শক্ত করে ধরায় আরিয়া ব্যাথায় ককিয়ে উঠে

#চলবে

(আসসালামু আলাইকুম,,ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন❤️❤️,,,গল্পটাতে তেমন সাড়া পাচ্ছি না তাাই ভাবছি পরের পার্ট আর দেবো না🙃)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here