ধর্মের দেয়াল পর্ব:১১

0
1090

#ধর্মের_দেয়াল
-নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ১১

– কাইফ মারিয়ামের গলা চাপায় ধরে
আছে।
– নাফিসা কই বল জলদি না হয় আজ তোর
এখানেই সমাপ্তি ঘটাব।
.
.
– অনেক কষ্টে হেসে উঠল মারিয়াম
এবং বলল অনেক খেলা খেলছিস ওকে
নিয়ে। তোর পুরো গাং মিলে ওর
পরিবারকে শেষ করছিস। আর না।
.
.
– কাইফ রেগে মারিয়াম কে জোড়ে
ছুড়ে মারে আর বলে ও শুধু আমার। ওর সব
কিছু আমার।
.
.
– সেদিন যদি বোকার দলগুলো আমায়
আক্রমন না করত তাহলে তুই কোন দিন
ছাড়া পেতি না।
.
– তোর আশা আমি শেষ করে ওকে
নিরাপদ জায়গায় রাখছি তাই আমার
মৃত্যু হলেও কোন আফসোস নেই বলে
হেসে উঠল মারিয়াম।
.
.
– কাইফ ওকে বোতলে বন্দী করে রাখল
আর বলল মনে রাখ কোন অবস্থায় ওকে
আমার কাছে থেকে দুরে সরে রাখতে
পারবিনা।
আমি ওকে খুজে বের করবই।
.
-শক্তি ও নাফিসা এই ২টাই আমার চাই।
.
.
.
.
.
-মিনা ও সিড একে অপরের দিকে
চেয়ে আছে এর মধ্য নাফিসা বলে উঠল
কিছু সমস্যা আন্টি?
– মিনা বলল না মাই চাইল্ড, কোন
সমস্যা না। তুমি খাও।
.
.
.
-রুপ খাওয়া কমপ্লিট না করেই উঠে চলে
গেল।
– এভাবে কেউ খাবার নষ্ট করে! কত্ত
মানুষ না খেয়ে থাকে আর এই খাটাস্
ছেলে নষ্ট করছে। ব্যাটা যেদিন
খাবার পাবিনা সেদিন বুঝবি
খাবারের কি মূল্য!
.
.
.
.
-নাফিসা খাবার শেষ করার আগেই
সবার খাওয়া শেষ করে যে যার কাজে
উঠে গেল।
.
.
.
-নাফিসা কোনমতে খাবার শেষ করে
একরকম দৌড় দিয়েই সিডের হাত ধরে
নিরাপদ জায়গায় গিয়ে জিঙ্গাসা
করল, এই আপনার নাম আজগড় নাহ! আর
আমাকে দেখে না চিনার ভান কেন
করছেন?
.
.
-তখনতো খুব বললেন এই বাড়িতে আপনি
আসতেই পারবেন না আর এখন নিজেই এই
বাড়ির মালিক।
-এত্ত মিথ্যা কথা কেন বলেন আপনি হুম?
.
.
.
– নাফিসা আরও বলল দেখেতো সেই
ইয়াং লাগে কিন্তু বাসায় দেখি
আমার থেকেও বড় ছেলে আপনার আছে।
.
.
.
ব্যাপার কি বলেন তো। জলদি জলদি মুখ
খোলেন না হলে আন্টিরে বলব আপনিত
আমাকে লাইন মারতে এসেছিলেন।
.
.
.
.
– নাফিসার কথা শুনে সিড একটু অবাক
হয়ে গেল এবং বলল এই মেয়ে পাগল হয়ে
গেছ।
– ধমক শুনে নাফিসা দমে গেল আর বলল
তাহলে কে ছিল ওখানে একদম আপনার
মত?
.
.
.
.
.
– সিড বলল পৃথিবীতে একই রকম ৬ ধরনের
মানুষ থাকে আর যাকে দেখেছো
সেটা হয়ত আমার মত কেউ ছিল। not
me…..




– নাফিসা এবার খুব লজ্জা পেয়ে
একপ্রকার দৌড়ে চলে গেল।
– মাথায় থাবি দিয়ে বলল উহ্ নাফিসা
কি করে ফেললি এটা, এখন আঙ্কেল এর
সামনে কেমনে যাবি। কি লজ্জা কি
লজ্জা।
.
.
.
.
– সিড বেশ চিন্তিত হয়ে রুমে ঢুকল এবং
দেখল মিনা যেন ওর জন্যই অপেক্ষায়
ছিল।

.
.
.
– সিড বুঝতে পারছো ও…..কে?
– হুম ও এলিনার মেয়ে। মানুষ এবং
মেয়ে জ্বীনের একমাএ মেয়ে
নাফিসা।
.
.
.
.
– মিনা বলল যার সন্ধানে আমরা
এদেশে আসছি সে আজ নিজেই
আমাদের কাছে এসেছে ভাগ্যর
জোড়ে।
.
.
– সিড বলল ও নিজে আসেনি ওকে কেউ
পাঠিয়েছে আমাদের কাছে। ওর
কাছে যা শুনে বুঝতে পারলাম, কেউ
আমাদের মত এখানে ওকে রেখে
গেছে যে আমার রুপ ধরে এসেছিল
যাতে তাকে কেউ সন্দেহ না করে।
.
.
.
– বল কি কার সহস হবে এত্ত বড় কাজ করা।
-উফ্ মিনা মানুষদের মত কেন বোকামো
কথা বল! ওর সাহস নেই বলেই তোহ আমার
রুপ ধরে এখানে এসেছে।
.
.
.
.
– শোন এই ব্যাপারে বাচ্চাদের কিছু
বলনা। কারণ আমাদের পরিবার এখন
অনেক বিপদের আশাংকায় আছে।
.
.
.
.
– কি করব তাহলে ওকে কি অন্য জায়গায়
পাঠিয়ে দিব?
– সিড বলল, নাহ্ ওর জন্য কোন জায়গা
নিরাপদ নয়।




– মিনা বলল আমাদের সমাজ ওকে
মেনে নিবেনা আর যদি জানে
তাহলে ওকে হত্যা করবে এবং
আমাদের সমাজচ্যুত করবে।
.
.
.
.
– সিড বলল এলিনা আমাদের যে
সাহায্য করেছিল নিজের জিবন বাজী
রেখে তাতে এবার আমাদের উচিত নয়
কি ওর একমাএ মেয়েকে আশ্রয় দান
করা?.
-হ্যাঁ তা ঠিক বলছ।
– সিড তুমি আসনে বসে দেখ এলিনার
সাথে কি হয়েছিল।
.
.
.
.
– সিড মায়া করে সামনে আগুন
জ্বালাল এবং আসনে বসে পড়ল।




.
– সিডের চোখ বন্ধ কিন্তু অনরবত চোখের
জল পড়েই যাচ্ছে। তাহলে কি সিড
কাদছে?
কি এমন কাহিনী ঘটছে যে ওর এই
অবস্থা।
– মিনার টেনশন যেন বেড়েই চলছে। কি
ঘটেছে এবং সিড কেন কাদছে?
.
.
.
.
.
– অপেক্ষার প্রায় ১৫ মিনিট পর শেষ
হলো।
সিড উঠে দাড়াল। এবং বলল সব শেষ
করে দিছে ওরা।
– একটা ৬৩৭ বছরের শক্তিশালী পরীকে
ওরা কেমনে মেরে ফেলল এটা ভেবে
আমি শিহরিত মিনা। তার উপর এলিনা
সিদ্ধ প্রাপ্ত একটা পরী ছিল যেটা সে
৪০০ বছর সাধনার মাধ্যমে পেয়েছিল।
ওর মত পরি হাজার বছরে ১ বার জন্মে
কিন্তু অনেকে প্রাপ্ত বয়স হওয়ার আগে
শত্রুর হাতে মারা পড়ে।
– যেমন নাফিসার সাথেও হতে পারে
এই ঘটনা।
– কিন্তু এলিনা তোহ প্রাপ্ত ছিল,
তাহলে ওর পরিনিিত এটা কেন হল?
.
.
.
.
– অনেক আগের কথা এলিনা, ক্যাথরিন,
মিনা, মারিয়াম ও লুসি এই ৫টা পরী
এক চার্জের কাছে দিক্ষা নিতে
গিয়েছিল।
– সেখানে এলিনা ছিল একজন
প্রিন্সেস। সব দিক থেকে সে এগিয়ে।
সেখানকার ফাদার ছিল ‘লুসিথ’।
ফাদারের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে
এলিনা ৪০০ বছর ধরে ধ্যান করে এবং
সিদ্ধিপ্রাপ্ত হয়।
– এমন সময় মিনা তার পরিবারকে নিয়ে
এক বিপদে পড়ে যা এলিনা নিমিষেই
সলভ্ করে দেয় যা ছিল অসাধ্য ঘটনা। এই
ঘটনা গুলো শত্রুপক্ষের চোখ
এড়ায় নি।
– ক্যাথরিন ফাদার কে নানা মিথ্যা
কথা বলে এলিনার বিপক্ষে
ক্ষেপিয়ে তোলে। যার ফল স্বরুপ
এলিনাকে গাছ রুপে বন্দি করে রাখে
ফাদার। এই কথা সুনে এলিনার বাবা
রাজা এ্যাডোর্য়াড সেখানে আসে
কিন্তু কোথাও খুজে পায়না
এলিনাকে।
.
.
.
-এভাবে ৩০ বছর বন্দী হয়ে থাকে।
কানাডার জঙ্গলে কিছু শিক্ষার্থী
কাম্প করতে আসে।
– একদিন রাতে একটা ছেলে কাম্প
থেকে বের হয় এবং দুরে দেখে ছোট
আলো জ্বলছে। সেখানে গিয়ে দেখে
গাছের পাতাগুলো দিয়ে পানি
ঝড়ছে। ছেলটি গাছের গায়ে হাত দেয়
এবং গাছের গা থেকে পাথর সরিয়ে
দেয়। তারপর সেখান থেকে চলে আসে।
.
.
.
– সকালে ঘুম ভেঙ্গে দেখে একটা সুন্দর
মেয়ে পাশে বসে আছে। এভাবেই
তাদের আলাপ।
.
.
– ফাদার অন্যায় ভাবে এলিনাকে
মায়া বলে গাছ করে রাখে ফলে
ফাদারের সব শক্তি হারিয়ে যায় এবং
তা এলিনার হয়ে যায়।
.
.
এলিনা ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে আর সেই
ছেলেটি মানে মেহেদি কে বিয়ে
করে। তাই সে সব শক্তি ত্যাগ করে
স্বামীকে নিয়ে বাংলাদেশে
আসে। পরের ঘটনা তোহ সবাই জানেন।
.
.
.
.
.- নাফিসা রুমে বসে আছে এমন সময় রুপম
এসে বলে sis কেমন আছেন।
– নাফিসা হেসে বলল ভাল। তুমি কেমন
আছো পিচ্চুটা।
– Hey girl. I am not picchu.
– I am big man.
you understand?
– নাফিসা চমকে গেল এই পিচ্চির মুখে
ইংরেজী শুনে।
– হায় হায় আমি গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট
করেও ইংলিশ বলতে হাফসুল খাই আর এহ!
.
.
.
-মিনা সিড কে বলল ওকে এভাবে
বাসায় না রেখে ভার্সিটি তে
ভর্তি করে দেয়। রুপ কে বলি দেখি ও
কি বলে।
– সিড তুমি বল ওরে, তোমার কথা
ফেলতে পারবেনা।
.
.
.
.
– নাফিসাকে রুপম বলল এই আজ আমরা
বিকেলে বাহিরে যাব, তুমি যাবা
আমার সাথে?
– নাফিসা বলল বাসার সবাই?
– আরে বুদ্ধু তুমি আর আমি যাব।
– আজ রাতে নীলা আন্টিদের ওখানে
পার্টি আছে ওরা সবাই যাবে
বিকেলে। ফিরতে রাত হবে। এর
ফাকে আমরা যাব আবার ওরা আসার
আগে ফিরেও আসব।
.
.
.
.
নাফিসা রাজি হয়ে গেল। এই ফাকে
আজগড় কে খুজা যাবে। বলে রাজি হল।
.
.
– নাফিসা আর রুপমের বেশ ভাব হয়ে
গেছে। দিনটা এভাবেই কাটল।
সন্ধায় ওরা সবাই রেডী হল এবং রুপম কে
ডাক দিল কিন্তু রুপম তো রেডী না।
– What has happened রুপম
– এখনও রেডী হওনি কেন বলে মিনা
দাতে দাত চাপল,
.
.
.
– রুপম কিছুটা ভয় পেয়ে বলল Mom আমি
Sis এর সাথে থাকি না!
– মিনা কি জানি ভেবে বলল ওকে। ওর
সাথে কিন্তু দুষ্টমি করবা না আর ও
কিন্তু একদম নতুন তাই ওকে বাহিরে
নিয়ে যাবেনা বুঝছ?
– রুপম একটা হাসি দিয়ে বলল ওকে।
.
.
.
এই অপেক্ষায় যেন রুপম ছিল। জলদি
নাফিসাকে নিয়ে গাড়িতে চড়ল।
.
.
.
– নাফিসা রুপমকে বলল ডাইভার কই।
-রুপম ফিক করে হেসে বলল কেন! তুমি
আছনা?
.
.
.
_নাফিসা ভয় পেয়ে গেল এবং বলল
পাগল হয়ে গেছ! আমি ড্রাইভ করতে
পারিনা।
– আরে আমি আছি না! আমি যেভাবে
বলছি ঠিক সেই ভাবে চালাও।
.
.
.
নাফিসা চুলগুলো বেধে রুপমের কথা মত
স্টার্ট দিল।
– yah huoooooooo……….. আমি পেরেছি।
বলে নাফিসা খুশিতে চিৎকার দিয়ে
উঠল।
.
.
.
-রুপম বলল ক্রেডিট কিন্তু আমার।
– হু তোমারই তো। বলে গাড়ি চলতে
লাগল।
.
.
.
পাহারি পথ রাস্তা প্রায় ফাকা। একটু
সমস্যা হচ্ছে নাফিসার কিন্তু ওর আর রুপম
মিলে সামলিয়ে উঠছে।
.
.
.
– অনেক দুর চলে এসেছে। নাফিসা বলল
চল বাসায় যাই। কিন্তু গাড়ি
ঘোড়ানোর মত প্রসেস পাচ্ছেনা
তারা।
.
.
.
রুপম বলল আর একটু চল বলার সাথে সাথে
গাড়ি বন্ধ হয়ে গেল। রুপম এবং
নাফিসা ২ জনেই ভয় পেয়ে গেল।
.
.
– চারদিক অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। রুপম
দরজা খুলে বাহরে বের হল সাথে
নাফিসা ও।
– এবার কি হবে!
– তোমার কথা আমার শোনাই উচিত
হয়নি বলে রাগী দৃষ্টি নিয়ে রুপমের
দিকে তাকাল।
.
.
– ও বেচারা নাফিসাকে ঐ ভাবে
দেখে চুপসে গেল।
-রুপম বলল SiS আমরা গাড়ির ভিতর যাই
জায়গাটা নিরাপদ মনে হচ্ছে না।
বলেই ২ জনে আবার ঢুকে পড়ল এবং
অপেক্ষায় থাকল যদি কাউকে পাওয়া
যায়।
.
.
– বেচারা নাফিসা আজগড় কে
খোজার জন্য বের হয়েছিল কিন্তু কি
হল! সব মাঠে মারা গেল।



রাত কত হবে ২ জনের জানা নাই।
চারদিক অন্ধকার। ভয়ে গাড়িতে লাইট
ও জ্বালাতে দেয় নি রুপম। এতে নাকি
বিপদ আরো বাড়বে।
.
.
.
.
– দুরে কাউকে দেখা যাচ্ছে। একটু
কাছে আসতে দেখে রোজ দাড়িয়ে
আছে। নাফিসা চিৎকার দিয়ে উঠল
রোজ!
.
.
– বলেই ডোর খুলতে যাবে এমন সময় রুপম
বলে উঠল ওটা রোজ না তুমি ডোর খুল
না।
– তারপর একটু পর তাকিয়ে দেখল
সেখানে কেউ নেই।
.
.
– এমন সময় ঝাকি দিয়ে উঠল পুরো
গাড়ি।
– রুপম এবং নাফিসা ২ জনেই চিৎকার
দিয়ে উঠল এবং দেখল ওদের গাড়ির
আগে পিছে হলুদ জোড়া জোড়া
অনেকগুলো চোখ দেখা যাচ্ছিল। এতেই
শরীর হিম করার জন্য যথেষ্ট।
চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here