#ধর্মের_দেয়াল
-নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ২৩
– রুপ বাসায় এসে সোজা রোজের রুমে
চলে গেল।
– রোজ রুপকে দেখে বলল কিছু বলবি!
– তুই যে তোর বান্ধবীর সার্পোট নেস
সবসময় ও আজ কি করেছে জানিস?
– রোজ বিরক্ত স্বরে বলল কি করছে!
– আজ আমাকে মারার জন্য কাইফ কে
পাঠিয়েছে।
– কিহ!
– হুম এবার ওর খেলা শেষ এর শাস্তি
ওকে পেতেই হবে।
– রোজ বসা থেকে উঠে রুপের কাছে
এসে দাড়ায়। নাফিসা কাইফকে
পাঠিয়েছে তোকে মারতে?
– ভাইয়া এই কথা আমায় বিশ্বাস করতে
বলিস?
– আমার কথা তোর বিশ্বাস হয়না।
– না একদম ই হয়না। কারণ এই কাইফ ই
নাফিসার মৃত্যুর কারন হয়ে দারাবে।
নাফিসা নিজেও জানেনা কাইফ ওর
কতবড় ক্ষতি করতে চায়।
– ওর বাবা মাকে যে কাইফ মেরে
ফেলার সহযোগিতা করেছে সেটা ও
নিজেও জানেনা।
– আমাদের বাসায় mom ছাড়া আমরা
সবাই ওকে খুব ভালবাসি। এমনকি তুই ও।
– ভাই ওর শেষ ঠিকানা তুই ছিলি
যেটা mom ওর কাছ থেকে কেরে
নিয়েছে। মেয়েটা এতিম। তোকে
আকড়ে ধরে বাচতে চেয়েছে। কাইফ
প্রতিদিন ছক কষছে ওর উদ্দেশ্য সফল
করতে আর তুই ওকে শাস্তি দেওয়ার জন্য
উঠে পড়ে লাগছিস?
– যানিনা আমি আর আজগড় ওকে কতটুকু
সাহায্য করতে পারব। ওর সামনে ভয়াভয়
বিপদ এতে ও মারাও যেতে পারে।
লড়াইটা ওর বেচে থাকা।
– ভাইয়া তুই ওকে খুব ভালবাসিস যেটা
তুই এখন বুঝতে পারছিস না। ওকে একটু
বেচে থাকার জন্য সাহায্য কর। ও তোর
থেকে ভালবাসায় চায় একটু সেটা না
দে কিন্তু ওকে মারার জন্য তুইও
উঠেপড়ে লাগিসনা মমের মত। আর শোন
মমের কথা সব বিশ্বাস করিস না। mom
তোর ভাল চাইতে পারে কিন্তু
নাফিসার মৃত্যু চায়।
.
.
– রুপ ওর নিজের রুমে চলে আসে। ও বুঝতে
পারছেনা কি করবে। কি সত্য কি
মিথ্যা। কার কথা বিশ্বাস করবে। ও
ধীরে ধীরে ওয়াড্রপের কাছে
নাফিসার রেখে যাওয়া পোষাকটা
বের করে। খুব যত্ন করে রেখে দিছে।
বার বার স্মেল নেয়। কি অদ্ভুদ স্মেল।
মনে হয় কত দিনের চেনা এই ঘ্রানটি
পাগল করে দেয়।
–
।
।
– গভীর রাত। বার বার যাদু করার
চেষ্টা করে যাচ্ছে ছোট্ট রুপম কিন্তু
বার বারই ব্যার্থ হচ্ছে।
– oh God please help me বলে প্রার্থনা করল
হাত জোড় করে।
– আবার try করল। ৩ বার try করার পর সফল হল
এবং বাসার বাহিরে আসতে সক্ষম
হলো। উদ্দেশ্য নাফিসার কাছে
যাওয়া।
– বাসার বাহিরে যখন আসতে পারছে
তখন আর কোন সমস্যা হবে না নাফিসার
কাছে যেতে।
– রুপম নাফিসার রুমে দাড়িয়ে আছে
এমন সময় কে যেন ওর জামা ধরে টান
দিল।
– রুপম বলল কে তুমি সামনে আসো।
– একটা ছোট বাচ্চা সামনে আসে।
।
।
।
– এই তোর সাহস হয় কিকরে আমার গায়ে
হাত দেওয়া বলেই তেরে যায়
বাচ্চাটার কাছে রুপম ।
– বাচ্চার মা টুকনি খপ করে হাত ধরে
রুপমের। ঐ কেরে আমার ছাওয়াল রে
ধরে মারে।
– এতো জ্বীনের সন্তান তাও রক্ত
খেকো বলে টুকনি হাত ছেড়ে দেয়।
– এক নিমিষেই সবাই রুমে হাজির।
সবাই রুপম কে ধরে ফেলে। রুপম বার বার
চেষ্টা করছে কিন্তু নিজেকে
ছাড়াতে পারছেনা।
– রুমের ভিতর শব্দ সুনে আমার ঘুম ভেঙ্গে
গেল। উঠে বসতেই দেখি রুপম কে বেধে
রেখছে। আর বাচ্চাটা ওর কখনও জামা
কখনও হাত কখনও চুল ধরে টান দিচ্ছে।
– রুপম কেমন করে আসল এখানে। ঐ ছেড়ে
দে ওকে। কি করছিস তোরা। সম্টা বলল
আম্মা আপনি জানেন ও জ্বীনের
বাচ্চা। আপনার রুমে আসছে আপনার
ক্ষতি করনের লাইগা।
– ছাড় ওকে বলছি ও আমার বরের ভাই
ছেড়ে দে ওকে।
– জয়মুন এসে জলদি ওকে ছেড়ে দেয়।
– আম্মা কন কি আন্নের বিয়া হইছে?
– হুম এখন তোরা যা পরে কথা বলব এই
বিষয়ে।
– রুপম তুমি এখানে কেমনে সোনা।
– আমি আর ঐ বাসায় যাব না। mom
আমায় খুব মেরেছে। mom খুব খারাপ।
– না রুপম এভাবে বলতে নেই।
– দেখ sis তুমিও যদি এভাবে বলো
তাহলে আমি কিন্তু এখান থেকেও
চলে যাব।
ok ok আর বলবোনা। আস আমার সাথে
ঘুমাও।
– না আমি তোমাকে নিয়ে আজ ঘুড়ব।
কতদিন ঘুড়ি না। কেউ আমায় সময় দেয়
না।
আমি তোমাকে নিয়ে যাদু প্রাক্টিস্
করব বলে আমার কাছে এসে আমার হাত
ধরে ভ্যানিস হয়ে গেল।
– আমরা এসে মেইন রাস্তায় পড়লাম।
বেশ মজা লাগছে। রুপমের মা বুঝুক এবার
প্রিয় মানুষ কাছ থেকে কেড়ে নিলে
কতটা কষ্ট হয়।
।
।
– রুপম এবার আমরা কি করব? দুরে দেখি
একটা সাদা ঘোড়া আসছে এদিকে।
রুপম চট করে আমাকে নিয়ে ঝোপে
লুকিয়ে পড়ে।
– আমি ফিসফিস করে বললাম ওটা কি
ছিল রুপম?
– ওটা একটা মুসলিম জ্বীন ছিল। চল
এখান থেকে বলে আমাকে নিয়ে
জঙ্গলের দিকে নেমে গেল।
– এইরে এত্ত অন্ধকারের মধ্য কেমনে কি
দেখব।
– তোমায় সেটা ভাবতে হবে না বলে
ওর চোখ দিয়ে নির্মল সাদা আলো বের
হল। আলো যেদিকে যায় সে দিকে চল।
আমি তো অবাক। এর মধ্য এত্ত কিছু
শিখে ফেলছ রুপম!
– yes my princes.
– আমি আর কোন কথা না বাড়িয়ে
ওকে অনুসরন করলাম।
– আমি আর হাটতে পারছিনা রুপম খুব কষ্ট
হচ্ছে।
– ওয়েট একটু খানি তোমায় খুব সুন্দর
একটা জায়গায় নিয়ে যাব বলে চলতে
লাগল।
– দুরে একটা আলো দেখা যাচ্ছে
সেখানেই নিয়ে গেল আমাকে।
– Oh my God এটা কেমন জায়গা। এত্ত সুন্দর
জায়গা এই পৃথিবীতে ও আছে?
– প্রজাপতি উড়ছে। ঝর্না বইছে। পানির
রং নীল গাড় রঙ্গের। ছোট ছোট গাছ
গছালি। রংবেরঙ এর ফুল just wow.
-আমি গিয়ে পানিতে হাত দিলাম।
উফ্ কি শীতল পানি। রুপ বলল খেয়ে দেখ
খুব সুস্বাধু।
– আমি হাতে পানি নিয়ে খেয়ে
দেখলাম oh my God এতো মিঠা সরবত। এত
সুস্বাধু শরবত ছিল ভাষায় প্রকাশ করা
যাবেনা।
– পাশে আরও একটি ঝর্না। সেটা মনে
হয় পানির ঝর্না। আমি নেমে পড়লাম।
ভিজছি আর ভিজছি।
– sis এখানে বেশিক্ষণ থাকা যাবেনা
এটা অদৃশ্য হয়ে কই জানি চলে যায়।
– আমি ওর কথা না শুনে চুল গুলো খুলে
দিয়ে পানিতে ডুব দিলাম। পানির
নিচে বিভিন্ন রঙ্গের মাছ ছাড়া জলজ
প্রানী আছে। এক কথায় মনে হচ্ছে
দুনিয়ার বুকে একটুকরো স্বর্গ। আমি বার
বার ডুব দিয়ে দেখছিলাম।
– এবার রুপ এসে এক ঝটকায় টান দিয়ে
আমাকে নিয়ে লুকিয়ে পড়ে। সামনে
দেখলাম ১ পাল রাজহাঁস ঝর্নার দিকে
যাচ্ছে। এরা স্বাভাবিক হাঁস যে
ছিলনা সেটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
কি বড় বড় এবং পুরোই ধবধবে সাদা
রঙ্গের।
– ওরা নিজেদের মধ্য কি যেন কথা
বলছে। রুপম আমাকে নিয়ে বের হয়ে
আসল। রুপম আর একটু থাকতাম আমরা।
– না sis ওরা খুব ভয়ানক প্রানী বলেই
আমার হাত ছেড়ে দিয়ে এগিয়ে চলল।
আমি বসে পড়লাম। আর হাটতে
পারছিনা রুপম বলে দেখি ও নেই।
আমার তো সেই ভয় লেগে গেল।
– এমন সময় অদ্ভুদ আওয়াজ কানে এল। রুপম
তুমি কি আমার সাথে হেয়ালি করছো!
কোন শব্দ নেই। ঐ আওয়াজটা যেন
বেড়েই চলছে
– আমি আওয়াজের দিকে ছুটলাম। যা
দেখলাম মোটেও দেখার প্রস্তুত
ছিলাম না। ভয়ঙ্কর অদ্ভুদ প্রানী যাদের
শরীরে শুধু বড় বড় পশম ছিল। ওরা রুপম কে
নিয়ে খেলছিল আর ছোড়াছুড়ি করছিল
আর বলছিল আজ আমরা একে দিয়েই
ভোজ করব।
।
।
।- মিনার ঘুম ভেঙ্গে যায়। মনে হয় কিছু
একটা ঘটছে।
– সিড ওঠো আমার ভাল লাগছেনা
বলে রুপের রুমে গেল। না সব ঠিক।
রোজকে ও দেখল সব ঠিক আছে। এবার
রুপমের রুমে গিয়ে দেখে ও নেই। জলদি
সব খুজল কিন্তু কোথাও পেল না। এবার
চিৎকার করে কেদে ওঠে মিনা। সিড
সহ সবাই আসে বলল কি হয়েছে।
– আমার মন বলছে আমার ছেলে বিপদে
আছে বলে কান্না করে উঠল মিনা।
আমার উপর রাগ করেছে। অভিমানে কই
গেছে অতটুকু ছেলেটা।
– সিড কিছু কর ও বড় বিপদে পড়েছে।
– রোজ বলে উঠল ওকে মারার সময়
তোমার মনে ছিল না এখন ও কি
অবস্থায় আছে আমরা কি ভাবে জানব।
– সিড ওর রুমে আসনে গিয়ে বসল।
মিনা,রোজ, রুপ ওরাও বসল।
– একের পর এক চেষ্টা করে যাচ্ছে
কিন্তু কিছু তথ্য পাওয়া যাচ্ছেনা।
– এবার একসাথে শক্তি প্রয়োগ করল
সবাই। আবছা আলোতে যা দেখল
তাতে সবার রক্ত হিম হয়ে গেল।।
।
।
।
– – লোমশ প্রানী গুলো রুপম কে নিয়ে
ছোড়াছুড়ি করছে আর পাশে কেউ একজন
দাড়িয়ে চিৎকার করছে।
– সাথে সাথে আলো মিলিয়ে গেল
হাওয়ায়।
– মিনা কেদে উঠল ওরা আমার
ছেলেকে খেয়ে ফেলবে।
– সিড শুধু বলল এই প্রানী গুলোর আজও
অস্তিত্ব আছে।
– রোজ কেদে বলল রুপম কে কেমনে
ফিরে পাব dad.
– আমার জানা নাই রোজ বলে সিড
কেদে ফেলল। উমহ্ যারা অন্যর
সন্তানের কষ্ট বোঝেনা তাদের এই হল
শাস্তি।
– এই ছাড়ুন ওকে বলছি ছাড়ুন বলে ভয়ে
ভয়ে ওদের কাছে গেলাম।
– রুপমটা কাহিল হয়ে পড়েছে। ওরা রুপম
কে ছেড়ে দিয়ে আমার দিকে
তাকাল। এই ফাকে রুপম আমার দিকে
ছুটে এলো।
– রুপম এরা কারা কি ভয়ঙ্কর দেখতে।
– sis আমরা মনে হয় আর বাচবনা। এরা নর
খাদক জ্বীন।
– রুপমের কথা শুনে আমার কলিজা
শুকিয়ে গেল। কি বল!
– ওদের চোখগুলো ছিল কালো মিহি।
পুরো শরীর বড় বড় লোমে এবং চোখ
দিয়ে ঘেরা। এদের হাজার চোখ
দেখলেই হার্ড এট্যাক হবে।
– ওদের একজন একনিমিষে আমার কাছে
এসে জোড়ে জোড়ে নিস্বাস টানতে
লাগল
– রুপম আর আমি একে অপরকে ধরে
চিৎকার দিয়ে উঠি।
.
.
.
– ওরা আমাদের ২ জন কে বেধে ওদের
সাথে নিয়ে গেল।
– রুপম ওরা আমাদের কোথায় নিয়ে
যাচ্ছে?
– জানিনা বলে হাউমাউ করে কাদতে
লাগল
আমি কি করব ভেঙ্গে পড়লে চলবে না
কিছুতো করতেই হবে।
– একটা ডেরায় নিয়ে গেল আমাদের।
আর বাকিরা আমাদের দিয়ে ভোজ
করবে বলে উল্লাস করছে।
– ওদের মধ্য একটা বৃদ্ধ এসে আমাকে
দেখতে লাগল ভাল করে এর পর আমায়
আর রুপম কে বেদির উপর বেধে ফেলল।
– আমাদের সামনে বিশাল বিশাল
সাপ ছেড়ে দিল। মনে হয় সাপগুলো কে
ভোগ দেওয়া হয়েছে।
– মোট ১৫ টা সাপ ছিল। রুপমের তথ্য মতে
ওরা একেকটা ১০০০ বছরের সাপ।
– আমি আল্লাহ্ কে স্মরন করছি। আল্লাহ
রক্ষা কর আমাদের।
– ১৫ টা সাপ আমাদের ঘিরে নেয়।
এবার বুঝি আমরা শেষ। কিন্তু আমাকে
অবাক করে দিয়ে সাপগুলো সব
একসাথে আমার পিছনে বিশাল
ফোনা তুলে ওদের সামনে দাড়ায় আর
হিসহিসহিস শব্দ করে।
– ওরা সবাই মাটিতে মাথা হেলে
বসে পড়ল।
– ওদের মধ্য একজন দৌড়ে এসে আমাদের
বাধন খুলে দেয়। রুপমতো আমায় ভয়ে
জড়িয়ে ধরে।
– আমাকে ওরা একটি মূর্তির কাছে
নিয়ে গেল। পাথরের মূর্তি দাড়িয়ে
আছে।
– ওরা নাকি ৫০০ বছর ধরে অপেক্ষায়
আছে আমার আশার জন্য। আমিতো শুনেই
অবাক। আমার বয়স এখনও ২৫ বছর পূর্নই হয়নি
আর ওরা ৫ শত বছর ধরে অপেক্ষায় আছে।
– এরা নাকি জ্বীনদের ধরে ধরে খেত
আর তাদের শক্তি হরন করত তাই একটা
সিদ্ধ প্রাপ্ত পরী এসে এদের রাজার এই
হাল করছে এবং এদের নিদির্ষ্ট
জায়গায় আবদ্ধ করে রাখছে।
–
–
–
–
– সেই পরীটি নাকি আমার মা ছিল।
তারা বার বার মার কাছে ক্ষমা চায়
তখন মা বলেছিল এখানে আমার মেয়ে
আসবে তোমাদের উদ্ধার করতে। কারন
তত দিন হয়ত আমি বেচে থাকবনা। তাই
আমার অসম্পূর্ণ কাজ আমার মেয়ে করে
যাবে। ওখানে আমার মায়ের মূর্তিও
ছিল। কি নিখুত মূর্তি। মনে হয় এখনি
এসে মা আমার সাথে কথা বলবে।
-ওদের কথা গুলো আমার মাথার উপর
দিয়ে গেল।
কিছুই বুঝতে পারলাম না। যারা রুপম কে
খাওয়ার জন্য এতক্ষন উঠেপরে
লেগেছিল তারা আজ ওকে কি
আপ্যায়ন করছে। দুনিয়া বরই আজব।
– আমাকে একটা সুন্দর ঘরে থাকতে
দেওয়া হলো সাথে রুপম কেও।
– রুপম আমার পাশে শুয়ে আছে আর আমি
ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
– sis ওরা আমাদের ছেড়ে দিল কেন?
– আমরা ভাল এই জন্য ছেড়ে দিল।
– সত্যই বলছো।
-হুম। রুপম রুপ এখন কি করছে বলতে পার?
– ভাইয়া তো বেশি ভাগ সময় রুমেই
থাকে। কারো সাথে তেমন কথাই বলে
না।
– কেন?
– জানিনা। প্রতি রাতে mom ভাইকে
কি যেন খাওয়ায়। তারপর ভাইয়া রুমে
চলে যায়। ভাইয়া কেমন জানি হয়ে
গেছে।
– আমার চোখে পানি চিকচিক করছে।
আমি কার উপর রাগ করব যে কিনা
নিজেই নিজের মধ্য নাই।
.
.
.
– রুপের কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে
পড়লাম।
– রুপের বাসায় শোকের মাতাম চলছে।
মিনা যেন পাগল হয়ে গেছে।
– রুপ, রোজ, সিড ওদের মত চেষ্টা করে
যাচ্ছে। সব বড় বড় ফাদার দের কাছে
গেছে তাদের একই কথা রুপমের ফিরে
আসার কোন সম্ভবনাই নেই।
–
–
– আজগড় নাফিসার রুমে এসে দেখে ও
নেই। রুম লক করা কিন্তু ও নেই।
-ভয়ে বুক কেপে উঠল। ওকে দেখে সম্টা
এসে বলল বাবু আম্মাকে দেখছিনা যে।
সেটা তোমাদের জানা উচিত । একটা
ছোট ছেলে আসছিল। ছেলেটি
জ্বীনের বাচ্চা ছিল। আজগড় কিছু
বুঝতে পারছেনা কি হলো। কোন শক্তি
কাজে লাগিয়ে ওর খোজ পাওয়া
যাচ্ছেনা। আজগড় পাগলের মত হয়ে
যাওয়ার অবস্থায়।
.
.
.
– আমার যখন ঘুম ভাঙ্গল তখর দেখি রুপম
আমার পাশে বসে খাবার খাচ্ছে।
– রুপম কি খাচ্ছো?
– ও খাবার দেখাইয়া আমাকে বলল
খাবা!
– না তুমি খাও।
– রুমে কিছু মানুষ এল। আমি অবাক। ওরা
বলল আমি যাতে ভয় না পাই তাই
তারা মানুষ রুপ ধারন করে আছে সবাই।
– আমাকে বাহিরে নিয়ে যাওয়া হল।
আমায় কিছু মেয়েরা মিলে দুধ দিয়ে
গোসল করাল এবং বিশেষ ক্ষমতা সম্পূর্ন
পানি গায়ে ঢেলে দিল।
– আমাকে একটা পোষাক পড়তে দেওয়া
হলো এটা নাকি মার পোশাক ছিল।
– আমাকে নতুন একটা বেদীতে শুয়ে
দেওয়া হল এবং সেই সাপগুলো সব
আমার চারপাশে হাজির হয়ে গেল।
– ওদের পুরোহিত সব মন্ত্র জপ করতে
লাগল। হাঠাৎ এক আলোর ঝলকানি এসে
আমার বুকে বসে গেল। আমি ছটফট করতে
করতে ঙ্গান হারিয়ে ফেললাম।
–
–
–
–
– আজগড় রোজকে বার বার ফোন দেয়
কিন্তু রিসিভ হয়না।
– রাগে অভিমানে ছুড়ে ফেলে
ফোনটা।
– আজগড় সোজা ভার্সিটি তে যায়
কিন্তু ওখানে কাইফ কে পায় না।
– আজগড় কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা।
কি করা উচিত তার। সোজা কাইফের
বাসায় গেল। বিপদ হবে তবুও গেল।
– কলিং বেল বাজাতেই কাইফের মা
খুলে দিল।
– আজগড় সালাম দিয়ে সোজা ভিতরে
ঢুকে। কাইফ সোফায় বসে ছিল।
– আজগড় সোজা গিয়ে কাইফের কলার
চেপে ধরে বলে নাফিসা কই। ওকে
কোথায় রাখছিস বল।
– কাইফ এক ঝটকানি দিয়ে আজগড়কে
সরিয়ে দেয়।
– বাঘের খাচায় আসছিস বাঘ কেই
শিকার করতে বলে কাইফ হংকার
দিয়ে আজগড়কে আঘাত করতে গেলেই
ওর মা ওকে থামিয়ে বলে নিশ্চয়
মেয়েটাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।
– কাইফ এবার চুপ করে গেল। সত্যই তোহ
আজগড় জেনে শুনে এখানে রিক্স
নিয়ে আসবেনা। তার মানে নাফিসা
নেই। তাহলে কই গেল।
– আজগড় হাটু গেরে চিৎকার দিয়ে বলল
নাফিসাকে যদি না পাই তাহলে হয়
তুই বাচবি না হয় আমি বলেই উঠে পড়ল।
– আজগড়ের চলে যাওয়া দেখল শুধু কাইফ।
কারন হাজার হোক ও নাফিসাকে খুব
ভালবাসে।
– কাইফ সব মায়া বিদ্যা কাজে
লাগিয়েও নাফিসার খোজ পেল না।
–
–
– নাফিসা সুয়ে আছে নিথর দেহ
নিয়ে। একজন পুরো পাএ রক্ত এনে ওর
গায়ে ঢেলে দিল।
– এর পর বিভিন্ন প্রকার নিয়ম মত চলতে
থাকল। সব কাজ শেষ করে ওকে আবার
পরিষ্কার করে আবার সুয়ে দিল।
–
– আমি চোখ খুলে দেখলাম অনেকে
দারিয়ে আছে। রুপম এসে বলল ৬ দিন
নাকি এর মধ্য কেটে গেছে।
– আমাকে ফ্রেস হতে বলা হল। আমি
ফ্রেস হয়ে আসতেই আমায় খাবার
দেওয়া হলো।
আমি খাবার খেলাম। আমাকে আবার
সেই মূর্তিটির কাছে নিয়ে যাওয়া
হলো। আমি যেই মূর্তিটির মাথায় হাত
দিলাম ওমনি আস্তে আস্তে পাথর
গলতে শুরু করল।
– পুরোহিত টি বলল যেদিন আমি সম্পূর্ন
শক্তি পাব সেদিন উনি ভাল হয়ে
যাবেন।
– আরও একটি তথ্য আমাকে দিল যা শুনে
আমি অবাক হয়ে গেলাম। আমি ১০০১
শক্তির মালিক নাকি।
– ৮ শত শক্তি আমার শরীরে প্রবেশ
করেছে বাকি গুলো আমার শরীর
পরিবর্তনের সময় প্রকাশ পাবে।
– আর ১ টা তাদের জানা নেই। আমি
নিজেই একজন রানী এবং আমার
প্রতিটা শরীরের অঙ্গ একেকটা শৈন্য।
তাই আমার অন্য কিছুর দরকার নেই।
-আমার সব শক্তি ২৫ বছর পূর্ন হওয়ার
দিনে প্রকাশ পাবে।
-আমি যদি এর মধ্য নিজেকে বাচিয়ে
রাখতে পারি তাহলেই শক্তিগুলো
লাভ করতে পারব
.
.
.
– সন্ধ্যার অপেক্ষায় ছিলাম আমরা।
তারপর বাসায় ফিরব।
– রুপম বলল sis আমরা সারা জিবন
এখানেই থেকে যাইনা। তাহলে
অনেক মজা হত।
.
.
.
.
– দুর বোকা আমরা এখানে কেন থাকব।
বাবা মার কাছে যাইতে ইচ্ছা
করছেনা?
– mom very bad.
-ওভাবে বলতে নাই রুপম। এখানে কয়টা
বন্ধু পাতিয়ে ফেলেছো।
– ৮ টা।
– অনেক এ্যাডভেঞ্চার করা হলো এবার
বাসায় যাওয়ার পালা।
– দিনটি আনন্দে ফুরিয়ে গেল। যাওয়ার
আগে সবাই আমাদের বিদায়
জানালো।
– ওদের রানী এসে আমায় বলে দিল
তুমিতো স্বামী হারা। আমি ওনার
কথা শুনে
কেদে ফেললাম।
– উনি আমায় বলল ৫০০ বছর পর তোমার
হাত ধরে আমি আমার স্বামীকে
ফিরে পেতে চলছি তাই তোমাকেও
সাহায্য করব আমি বলে আমাকে একটি
লাল পাথর দিল। এটা তুমি ওর বুকে
বসিয়ে দিবে যখন ও রাগ করে তোমায়
আঘাত করবে। কিন্তু ওর বাসায়
তোমাকে স্থায়ী ভাবে থাকতে হবে
বলে আমাকে পথ দেখিয়ে দিল।
– ওরা রুপমের মাথায় হাত বুলিয়ে
দিতেই রুপম সেন্সলেস হয়ে পড়ে গেল।
– আমি হচকিয়ে উঠে বললাম আপনারা
ওর সাথে কি করলেন।
– কিছুনা ওর স্মৃতি থেকে এইসব মুছিয়ে
দিলাম যাতে ও কাউকে কিছু বলতে
না পারে
– আশা করি তুমিও কিছু কাউকে
বলবেনা। এই ছেলেটির পরিবার যেন
তোমাকে না দেখতে পায়। কারন ওরা
জেনে গছে ওদের ছেলে আমাদের
কাছে। খুব গোপনে কাজ করবে।
– আমাকে হাতের ইশারা করতেই আমি
অদৃশ্য হয়ে গেলাম রুপমকে নিয়ে
– রাত ৯ টার দিকে রুপদের বাসায়
পৌছে গেলাম।
– রুপম কে কোল থেকে নামিয়ে মেইন
গেটে সুয়ে দিলাম আর কলিং বেল
চাপিয়ে আড়ালে চলে আসলাম।
– রোজ দরজা খুলে দিয়ে দেখল রুপম সুয়ে
আছে। ওকে দেখে চিৎকার দিল dad
বলে।
যাক ওরা ওকে পেয়ে গেছে বলে
আস্তে
আস্তে বাহিরে এসে দৌড় দিলাম।
– যদি একটু রুপকে দেখতে পেতাম? এই
কথা বলতেই কারো সাথে ধাক্কা
খেয়ে ছিটকে পরে গেলাম।
– আমি উঠে চট করে ভাল করে মাথায়
কাপড় দিয়ে দেখলাম রুপ দাড়িয়ে
আছে। আমি আর দেরি না করে আবার
দৌড় দিলাম।
– রুপ দাড়িয়েই আছে কে ছিল বলে ওর
দিকে পা বাড়াতেই বাসার ভিতর
থেকে শব্দ শুনতে পেল।
– শুধু একটু ঘ্রান নিল। এবং মনে মনে বলে
উঠল নাফিসা?
।
।
।
– যা হোক ওকে দেখতে পেলাম।
যানিনা আর ফিরে আসতে পারবো
কিনা কিন্তু ওকে দেখতে পেলাম
এতেই বা কম কি বলে অজানা পথে পা
বাড়ালাম। আমার যে অনেক কাজ
বাকি, অনেক দায়িত্ব……….
চলবে…….