ধর্মের দেয়াল পর্ব:২১

0
1116

#ধর্মের_দেয়াল
-নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ২১
———————
– আমি জড়িয়ে ধরেই রুপ কে বললাম
আপনি আমাকে কল দেননি কেন?
– রুপ পিছন ফিরে আমার দিকে ভ্যাব
চ্যাকার মত তাকিয় বলল hey who are you?
-আমি কিছু না বুঝে বললাম দেখেন ২
দিন পর এসে বলছেন আমি কে?
ফাজলামি বাদ দেন। আমার টেনশন
হয়না বুঝি।
– এই মেয়ে তুমি কে? আমার অনুমিত
ছাড়া রুমে ঢুকো কি ভাবে তারপর
আবার জড়িয়ে ধরো?
.
.
.
– আমি কে? দেখাচ্ছি আমি কে বলেই
চট করে গালে kiss করে আবার আমার
জায়গায় এসে দাড়িয়ে গেলাম।
.
.
– রুপ রাগে ফেটে পড়ল মনে হয়।
ঠাসসসসসস করে আমার গালে চড়
বসিয়ে দিল। sir কে kiss করা stupid girl!
.
.
– আমি একটু অবাক গেলাম।
– Get out বলে দরজার দিকে আঙ্গুল তুলে
নির্দেশ করল।
– আমার খুব খারাপ লাগল। আমি রেগে
গিয়ে ওর সাধের স্পাইক করা চুলগুলো
এলো মেলো করে দিয়ে বললাম next
time যেন এত্ত সাজ গোজ করে
ভার্সিটি তে না আসা হয়।
– রুপের এবার যতটুকু ধর্য্য ছিল সেটারও
বাধ ভেঙ্গে গেল এবার। এবার আবার
চড় মাড়ল আমি টাল সামলাতে না
পেরে টেবিলের উপর পড়ে গেলাম।
ঠোট কেটে ঝড় ঝড় করে রক্ত বের হতে
লাগল।
– রাগে অপমানে আমি চিয়ারে এক
লাথি মেরে বলি আপনার সমস্যা কি!
ভিমরতি শুরু করছেন? আপনার ভিমরতি
ছুটাচ্ছি দাড়ান বলেই ওর কাছে
যেতেই রোজ আমাকে পিছন দিক
থেকে আটকে ধরে।
– চল এখান থেকে। আর রুপকে বলল
ভাইয়া কাউকে কিছু বলিস না। ওর
মাথায় একটু ছিট আছে।
– আমার মাথায় ছিট আছে! তোর
ভাইয়ের সখ জাগছে লুচু গিরি করা।
তোর ভাইকে বলে দে আজতো রুমে
চুলের স্টাইল নষ্ট করছি কাল যদি আবার
এই ভাবে দেখি তাহলে পুরো
কাম্পাসে একি কাজ যদি না করি
তাহলে আমার নাম নাফিসা নয় বলে
সামনের টেবিলে জোড়ে একটা
লাথি দিলাম।
– রোজ আমাকে টানতে টানতে
বাহিরে নিয়ে এল।
– ও নিজেকে কি ভাবে হুম। হিটলার,
চেংগিস খান কোথাকার আমায়
মারা?
– রোজ কি বলবে ভাষা খুজে পাচ্ছে
না।
– আমাকে নিয়ে কান্টিনে বসল এবং
বলল কি খাবি বল।
– তোর ভাইয়ের চড় খেয়ে আপাতত পেট
ভরে গেছে।
– রোজ বলল দেখ ভাইয়াকে ভুল বুঝিস
না।
– ভুল মাই ফুট! বলেই হোস্টেলে ফিরে
আসলাম।
.
.
.
-রোজ ড্রাইভ করছে সামনে কাউকে
দেখে ব্রেক করল।
– আজগড় এসে বলল নামুন গাড়ি থেকে।
– রোজ নেমে পড়ল এবং বলল কিছু
বলবেন?
– হুম বলার জন্যই আসছি। রুপের কি সমস্যা
হইছে একটু বলবেন কি?
– রোজ আজগড়ের দিকে চেয়ে থাকে।
জানিনা কেমন জানি এই
ছেলেটাকে এত ভাল লাগে তা
বোঝানো দায়।
– আজগড় বলল রোজ আমি আপনাকে কিছু
বলেছি আপনি কি দয়া করে বলবেন!
– আজগড়ের কথায় রোজের ধ্যান ভাঙ্গল।
না মান কি যেন বলছিলেন?
– হায় খোদা আমি কাকে কি বলি। রুপ
কেন এই রকম করছে বলবেন একটু। ওর কি
সমস্যা!
.
.
.
– রোজ দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলল mom ওর
স্মৃতি থেকে নাফিসাকে মুছে দিছে
তাই এসব করছে।
– আজগড় সব ব্যাপারগুলো বুঝে ফেলল।
– শোনেন আমি নাফিসার সাথে
থাকি সব সময় প্রায় এতে আমারও
বিপদের ঝুকি আছে তাই বলে কি আমি
ওর সাথ ছাড়ব?
আমারও তোহ পরিবার আছে তাই নয়
কি?
– আপনার mom খুব বাজে কাজ করেছে।
– রুপকে ভালও করা যাবেনা আপনার
mom কে ছাড়া?
– ঐ আশা ছেড়ে দেন আপনি। mom কখনও
ভাইয়াকে ভাল করবেনা।
.
.
– ওকে আমি তাহলে আসি। ভাল
থাকবেন।
– এই যে শুনুন!
– আজগড় পিছনে ফিরে বলল আর কিছু
বলবেন?
– আপনার সাথে আমার কিছু কথা ছিল।
– হুম জলদি বলেন।
– না মানে আপনার পরিবারে কে কে
আছে?
– আমি আর বাবা মা। বোন ছিল কিন্তু
একটা মানুষকে ভালবাসার দায়ে পুড়ে
মারা ফেলেছে গোএ প্রধান রা বলে
কয়েক ফোটা অশ্রু পড়ল আজগড়ের চোখ
দিয়ে।
– আমি নাফিসা কে খুব ভালবাসি
ঠিক আমার সেই ছোট বোনটির মত।
– আমি যেদিন ওর প্রথম দায়িত্ব পাই তখন
থেকে দেখার জন্য ছটফট করি কারন
নাফিসার অতীত জিবন অনেক কষ্টের।
আমি এক বোন কে বাচাতে পারিনি
কিন্তু ওকে জিবন দিয়ে হলেও হেফাযত
করব।
– ওর কথা শুনে রোজ আবিভূত হয়ে যায়।
– অপর কোন মেয়ে তাও সে একটা মানুষ
তাকে কেউ নিস্বার্থ ভাবে এরকম
ভাল বাসতে পারে সেটা ওর জানা
ছিলনা।
– আপনি নাফিসার কাছে কখন যান?
– কেন!
– না এমনি বলছি আরকি।
– সেটা আপনার জানার প্রয়োজন নেই
বলে আজগড় চলে গেল।
– কেউ কারো সাথে এভাবে কথা
বলে?
.
.
.
– আমি রুমে বসে আছি আর কাদছি। ২
দিনে মানুষ কেমনে বদলে যায়।
– আমি কি এমন অপরাধ করছি যে তিন
তিনটা থাপ্পড় খাইতে হল?
– আমি কিছু না ভেবে ওদের বাসার
লাইনে ফোন দিলাম যা কপালে
থাকে থাক।
– রুপম ধরে বলল hlw
-যাক রুপম ধরেছে।
– রুপম কেমন আছো বাবু।
sis তুমি আমাকে আবার বাবু বলছো?
– sry sry আর ভুল হবে না। কেমন আছো?
– ভাইয়া কে চাও তাইতো।
– হুম সোনা please একটুু দিবা?
.
রুপম রুপকে ফোন দিয়ে গেল।
– রুপ hlw বলতেই আমার রাগ ১০৫ ডিগ্রী
তে উঠে গেল।
– এই হিটলার, চেংগিস খান,
কাঠবিড়ালি, জলহস্তী কোথাকার
আমায় চড় মারলেন কেন?
– hey তুমি ঐ পাগল মেয়েটা না!
– আপনাকে খুন করে তেতুল গাছের
মগডালে বসে থাকব আর ১বার যদি
পাগলি বলছেন।
– এই তোমার সাহস কিরে হয় এসব বলার।
তুমি নাম্বার পেলে কই থেকে।
.
.
.
-যেখান থেকে মানে সেখান থেকে
পাই আপনার কি?
– shut up বাচাল মেয়ে কোথাকার
বলেই লাইন কেটে দিল।
– আমি এবার ঢুকরে কেদে উঠলাম।
আমার শেষ ঠিকানাও এভাবে
হারিয়ে ফেললাম?
– আজগড় আমার সামনে বসে আছে।
– রুপ আর রুপের মাঝে নেই। ওর সাথে
খারাপ কিছু ঘটেছে বলে সব খুলে বলল
আজগড়।
– আজগড়ের কথা শুনে আমার মাথায়
বাজ পড়ল। রুপ হয়ত আগে থেকেই কিছু
টের পাইছিল তাই আমাকে সেদিন ও
ভাবে সব দেখিয়ে দিয়েছিল।
– আমি চুপ করে আছি কি বলব। সব আমার
হাতের বাহিরে চলে গেছে।
– আজগড় বলল তুমি ভাল ভাবে নিজের
মত চেষ্টা কর একটু যদি কিছু পরি বর্তন হয়।


-অন্ধকারের মধ্য একা বসে আছি। আমি
এখন কি করব?
– নাফিসা ঘুমে আছে। মাঝরাতে ২১
জন ভূত ওর ঘরে প্রবেশ করে।
– এই যা ডাক গিয়ে ওনারে।
– একজন কাছে গিয়ে নাফিসাকে
ডাকল আম্মা…… আম্মাগো……
– লাফ দিয়ে বললাম এই কে কে আমার
রুমে।
– আজ্ঞে আমরা আম্মা। আজ মিটিং
ডাকছিলেন তাই হগ্গলে মিলা চইলা
আচি।
– আমি চোখ পিট পিট করে তাকালাম
অনেক গুলো ছায়া দাড়ানো।
– আমি হাই তুলে বললাম অহ তুই!
– তোর নাম কিরে?
– আজ্ঞে জয়মুন আমার নাম। তারপর বুলি
ছাড়তে লাগল, ও আয়মুন, ও সম্টা, ওর নাম
টুকনি বলে আরও বলতে গেলে আমি
বাধা দিয়ে বললাম এই হইছে হইছে কি
শ্রী নামের!
– এই তোমরা কত বছর ধরে এখানে থাক?
– আম্মা সেই ১৯০৫ সাল থেকে থাকি।
আগে এটা ছিলনা। তৈরি হওয়ার পর
থেকে থাকি। আগে এইহানে জঙ্গল
ছিল।
– ওদের মধ্য থেকে একটা ছোট বাচ্চা
এসে আমার চুল ধরে টান দেয়।
– আমি বললাম এই সর এখান থেকে বলছি
ভুতের বাচ্চা কোথাকার।
– সম্টা বলে উঠল ঐ টুকনি বাচ্চা সামলা
আম্মা রাগ করব কিন্তু।
– আমি বললাম দেখ তোমরা আছো ভাল
কথা। যত দিন মন চায় ততদিন থাক কিন্তু
মেয়েদেরগুলোকে জ্বালিওনা।
– আজ্ঞে আম্মা আমরা তাহলে যাই।
– ওরা চলে গেল। আমি বসে আছি।
– রোজ কে কল দিলাম।
– হুম বল কি বলবি।
– একটু রুপকে দেখবরে। একটু ইমুতে কল দেই।
– এই না সম্ভব না।
– আচ্ছা আমি রুম থেকে বের হয়ে তোর
বাসায় যাচ্ছি।
– এই পাগলামি করিস না।
– পাগলামি তোরা ২ ভাইবোন অনেক
করছোস এবার আমার পালা।
– ওয়েট দেখি কি করা যায় বলে রোজ
রুপের রুমে গেল।
– ও কল দিল। আমি রিসিভ করতেই রুপকে
দেখলাম। ও ঘুমিয়ে আছে। আমি ওকে
দেখে আর চোখের পানি আটকাতে
পারলাম না। কেদেই যাচ্ছি।
– এই কাদবিনা একদম ভাইয়া জেগে
যাবে।
– কেন এমন হলোরে রোজ!
– রোজ কি বলবে। একদিকে মা অন্য
দিকে ভাই। রোজ চট করে ফোন কেটে
দিল।
.
.
.
– রুপ রোজের হাত ধরে আছে।
– রোজ তো ভয়েই শেষ।
– মেয়েটি কে?
– রোজ চুপ করে আছে।
-রুপ চিৎকার দিয়ে বলে answer me রোজ।
– আমার বান্ধবী।
– কাপছিস কেন?
– এমমমনি।
– ও নাকি পাগল। দেখেতো পাগল মনে
হয়না।
– আমি রোজকে ফোন দিয়েই যাচ্ছি।
– রোজ ফোনটি ধর। রোজ মনে মনে বলল
এই রে পাগলির পাল্লায় পড়ে এবার
বুঝি আমিও চড় খাই।
– কি হল ফোন ধর! আর লাউড স্পিকার
দে।
– রোজ ভয়ে রিসিভ করল।
– এই শাঁকচুন্নি ফোন কেটে দিলি
কেন? বুঝিসনা কিছু। আমার কি হচ্ছে।
জিবনে প্রেমম করেছিস যে প্রেমের
মর্যাদা বুঝবি বলে কেদে ফেললাম।
– রোজ বার বার চুপ চুপ বলছে। কে কার
কথা শোনে।
– ঐ তোর ভাইয়ের দিকে ক্যামের দে
ওকে দেখব।
– এবার রুপ নিজেই ফোন নিল।
– আল্লাহ রুপ জেগে আছে! কি করব এখন।
আমি ওকে ভয় পাই নাকি?
– আমি রুপকে দেখে বললাম ঐ ভুতের মত
তাকিয়ে থেকে কোন লাভ নাই বলেই
ফ্লায়িং কিস করলাম।
– কাল যদি দেখছি সাজুগুজো করে
ভার্সিটি তে আসছেন তাহলে এই kiss
টা কাম্পাসে সবার সামনে আপনার
ঠোটে পড়বে হুম।
– বাই অনেক রাত হইছে ঘুমে পড়ুন।
– এই রোজ শোন তোর ভাই যদি বেশি
টেরিবেরি করে তাহলে ওর ফেসবুকের
পাসওর্য়াড জন্মের মত হারাবে বলে
দিলাম।
– যা ২জনেই ঘুমিয়ে পড় বলেই কেটে
দিলাম।
.
.
.
– রুপ ২ দিন ধরে ফেসবুকে লগইন করার
ট্রাই করেই যাচ্ছে কিন্তু পারছেনা।
– রুপ কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা।
রোজের দিকে কঠোর দৃষ্টিতে
তাকিয়ে আছে।
– রোজ কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা শুধু
হাত কামড়াচ্ছে।
– তোর সাথে তো দেখছি ওর বেশ
ভালই মিল।
– আসলে ভাইয়া মানে।
– চুপ একদম চুপ ঠাস করে গালে চড়
লাগিয়ে দিব।
– আমায় কেন বকছিস! ও তোর password
কেমনে জানল? তুমি যদি ওকে না দিস!
– ও হ্যাক করছে হয়ত।
– ভাইয়া আমরা মানুষ না তাই আমাদের
বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে গোপন সব কিছু লক
করি যা কোন মানুষের দ্বারা সম্ভব নয়।
বলেই চলে গেল।
– রুপ কে বেশ ভাবিয়ে তুলছে
নাফিসার কথা গুলো।
– শেষ পর্যন্ত একটা মেয়েকে আইডি
দিলাম?
তাও আবার মানুষ?
.
.
.
– যাক আজ রুপের সাথে কথা বলে মন
অন্তত ভরেছে। যা ওকে ভয়
দেখাইছিনা মনে হয়না কাল ও স্টাইল
দিয়ে আসবে।
– উফ্ এবার শান্তির ঘুম দিতে পারব।
.
.
.পরের দিন হোস্টল কতৃপক্ষ নাজমা আন্টি
আমাকে ডেকে পাঠালো।
– আমি বুঝলামনা আমাকে কেন
ডাকছে।
– আমি যেতেই বলে উঠল এই মেয়ে
রাতে তোমার রুম থেকে চেঁচামেচির
শব্দ কেন পাওয়া গেছে।
– কই নাতো আমিতো একাই থাকি।
– তোমাদের মত মেয়েদের বেশ চেনায়
আছে তোমরা কি করতে পার।
– অভিভাবকহীন মেয়ে বড় লোকদের
ছেলেদের রুপের জালে ফেলে ভোগ
ভালয় করতে করতে জানো তোমরা।
– আমি ওনার কথা শুনে চুপ করে আছি।
কি বলব উনি হয়ত ঠিকি বলছেন।
– নাজমা আন্টি বলল যাও এখন। এর পর যদি
কোন রিপোর্ট শুনি তোমার নামে
তাহলে এই হাত আর শাসন করবে না
সোজা তোমার ঘাড়ে হাত দিয়ে
বের করে দিবে।
– এত্ত বড় কথা বলল উনি! আমি কি করছি?
.
.
– আমি ভার্সিটি তে গেলাম। ক্লাসে
বসে আছি। এমন সময় রোজ এসে বলল কাল
ওরকম কান্ড করতে গেলি কেন?
– রুপ কে দেখতে মন চাইছিল তাই।
– আর যেন এরকম পাগলামি করিস না।
.
– রুপের নাম্বার দে তো?
– না নিষেদ আছে। ভাইয়া বা mom
জানলে মেরে ফেলবে।
– আর আমি না পেলে নিজেই মরে যাব
বলে ওর হাত থেকে ফোন নিয়ে
নাম্বারটা নিলাম।
এবার আর তোকে জালাব না। তোর
ভাইকে প্রস্তুত থাকতে বলবি বলেই
উঠে আসলাম।
.
.
– আমি কাম্পাসের পুকুর পাড়ে শান
বাধানো ঘাটে পা ২টো পানিতে
নেমে দিয়ে বসে আছি।
– এমন সময় কাইফ sir এসে বলল hey তুমি
এখানে কি করছো?
– সালাম দিলাম ওনাকে। বসে আছি
sir.
– মন খারাপ?
– নাতো! আপনি এখানে কেন?
– না মানে তোমাকে একা বসে
থাকতে দেখলাম তারপর আবার মন
খারাপ এই জন্য আসলাম আর কি।
– sir একটু দুরে বসে আমার সাথে কথা
বলছে আর হাসানোর চেষ্টা করছে।
মনে খুশি থাকলে তো হাসব?
– এমন সময় রোজ এসে আমাকে ডাকল।
– আমি ওর দিকে তাকিয়ে দেখলাম খুব
রেগে আছে।
– আমি বললাম sir তাহলে আসি কেমন।
– কাইফ গম্ভীর ভাবে বলল হুম।
– আমি উঠে এসে রোজকে বললাম কি
হইছে?
– ভাইয়া শহরের বাহিরে কিছু কাজে
যাচ্ছে চাইলে এখানে তোর
কারিসমা খাটাতে পারিস। তোর
তো আবার বুদ্ধির অভাব নেই।
– আমি খুশিতে রোজে গালে একটা
কিস করে সেখান থেকে চলে এলাম।
– কাইফ আর রোজ মুুখোমুখি। কাইফ বলল
আর কতদিন ওকে আমার কাছ থেকে
সরাবে।
– যতদিন তুই নামক জন্তুটির সমাপ্ত না
হচ্ছে ততদিন।
– কাইফ চট করে রোজের গলা চিপে
ধরে। খুব বাড় বেরেছিস না। তুই আমার
কাছে চুনোপুঁটি।
– আজগড় এসে একধাক্কা দিয়ে সরে
ফেলে। রোজ ওকে সাথে সাথে
জড়িয়ে ধরে।
– ও একা না সাথে আমিও আছি। তুইতো
কাপুরুষ পিছন থেকে বাড় করতে পটু।
– কাইফ আজগড়কে দেখে কিছু না বলে
চলে গেল।
– এই যে mam ও চলে গেছে এবার তো
আমায় ছাড়ুন।
– রোজ লজ্জা পেয়ে ছেড়ে দেয়।
– ওর সাথে কেন লাগতে
গিয়েছিলেন? ও অনেক ভয়াভয় জ্বীন।
নিজের স্বার্থে সব করতে পারে।
– আমি বুঝতে পারিনি।
ok এবার বাসায় যান বলে আজগড় চলে
গেল।
– আজগড় আমি আপনাকে মনে হয় খুব
ভালবেসে ফেলেছি আপনি কি বুঝেন
না?
.
.
.
.
– নাফিসা একটা স্কার্ট, টপস আর ওড়না
পড়ে আছে।
চুলগুলো বেনী করা পিছনে। যা কোমর
পার হয়ে গেছে। অদ্ভুত সুন্দর একটা
মেয়ে। যার চেহারার থেকে মায়া
বেশি কাজ করে।
.
.
– আমি রুপের গাড়ির পিছনে বসলাম।
একদম লুকিয়ে পড়লাম যাতে ও দেখতে
না পারে।
.
.
– একটু পর রুপ গাড়ির কাছে আসল দেন
গাড়িতে চড়ল।
– স্টার্ট করেতেই আমি মনে মনে
ভাবলাম এখন কিছুতেই ওর সামনে
যাওয়া যাবেনা। তাহলে এখানেই
রেখে চলে যাবে।
– প্রায় ১ ঘন্টা পর যখন পাহাড়ি জঙ্গলের
রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলছে তখন আমি
চিৎকার দিয়ে উঠলাম রুপ!
.
.
– রুপ গাড়ি ব্রেক করেই পিছন দিকে
তাকাল।
– আমি ভ্রু নাচিয়ে বললাম কেমন ভয়
পাইয়ে দিলাম হুম?
– ও গাড়ি থেকে নেমে আমাকে
গাড়ি থেকে বের করে বলল এই মেয়ে
তুমি এখানে?
– হুম আমিই তোহ থাকব। কেন অন্য
কাউকে আশা করেছিলা।
– shut up. কি পাগলামি শুরু করেছো হুম?
– পাগলামি কই? আমিতো আমার বরের
কাছে আছি বলে হাত ধরে আমার
হাতের মধ্য নিলাম।
– ও আমার হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলল
চলে যাও এক্ষুনি।
– আমি বললাম যাবনা বলেই গাড়িতে
উঠলাম।
sir আমার আর ফিরে যাওয়ার কোন পথ
নেই। অনেকদূর চলে এসেছি তাই
আমাকে সাথে নিয়ে যেতেই হবে।
– রুপ আর কোন পথ না পেয়ে আমাকে
নিয়েই চলল।
– বাছাধন এই বার লাইনে আইছো।
– প্রায় আধাঘন্টা পর দুপুর ২.৪৫ মিনিটে
পৌছে গেলাম।
– রুপ একটা হোটেলে গাড়ি পার্কিং
করে ভিতরে ঢুকে গেল। পিছে পিছে
আমিও দৌড় দিলাম।
– একটা রুম বুক করল। ম্যানেজার বলল sir
আপনি আর mam এই রুমটা নিন। সুন্দর রুম।
– আমিও বললাম ইশ্ আপনার চয়েস আছে বর
বউ কে কেমন রুম দিতে হয়।
– sry আমরা কয়েক ঘন্টার জন্য রুম বুক করছি।
মিটিং শেষ করলেই back করব।
– আমার মন খারাপ হয়ে গেল সাথে
সাথে।
– আমরা রুমে ঢুকলাম
দারুন ছিল রুমটা।
– রুপ বলল এত্ত সখ করে যখন এসেছো তখন
একা কয়েক ঘন্টা বসে থাক। আমি
মিটিং এ যাচ্ছি।
– ও ওর ল্যাপটপ বের করল এবং বলল oh no
এটা নিয়ে আসছি? এটাতো আমি
খুলতেই পারছিনা।
– আমি বললাম ওটা খুলবেনা। আমার
নাম দিয়ে password দেওয়া আছে।
ও রেগে গিয়ে বলল সব জায়গায় কেন
ফাজলামি কর?
– আমি ওর কাছে গিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে
password এর জায়গায় আমার নাম দিয়ে
ক্লিক করতেই খুলে গেল।
– ও তো অবাক।
– আমি বললাম যান কি হলো দেরি হয়ে
যাচ্ছেতো।
– ও চলে গেল আর আমি ঘুমিয়ে পড়লাম।
রাতে ভাল ঘুম হইছিলনাতো তাই সুয়ে
পড়তেই চোখে ঘুম চলে এলো।
– এদিকে সন্ধা হয়ে গেল নাফিসা
আম্মা ঘরে আইল না ব্যাপার কি?
– সম্টা বলল বিপদে পড়েনি তো?
– আয়মুন বলল একটা কাজ কর রুমে ওনাকে
কেউ খুজতে আসলে তুই আম্মার রুপ ধরে
থাকবি।
.
.
.
– এই মেয়ে ওঠো জলদি।
– রুপের ডাকে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম
মেয়ে মেয়ে বলছো কেন বউ বল বউ।
Stop your mouth…..
stupid girl.
– এই আমার নাম আছে আর আমি stupid girl
না।
– চল রওনা দিব।
– আমার খুদা লাগছে। সেইই সকালে
খাইছি এখন অবদি না খেয়ে আছি।
– রুপ খাবার অর্ডার দিল। খাবার চলে
আসলে আমি খেতে শুরু করলাম।
– খাওয়া শেষ করে রওনা দিলাম। আমি
কথাই বলেই যাচ্ছি ও কোন জবাব
দিচ্ছেনা।
– রুপ থামাও এখানে বলে চেচাতে
লাগলাম।
– ও থামল আর বলল কি সম্স্যা হুম। এমনি
রাত তার মধ্য ঘন জঙ্গল আবার কি শুরু
করছো।
– আমি ডোর খুলে বের হয়ে এলাম। রুপ
জায়গা টা খুব চেনা লাগছে। অহ হুম
আমরা আগেও এখানে আসছিলাম। তার
মানে কাছেই ঝর্না আছে।
– রুপ বিরক্ত হয়ে বলল তুমি কি আসবা না
আমি তোমাকে এখানে রেখে যাব?
– না আসুন না একটু। বলেই ওর হাত ধরে
টেনে বাহিরে আনলাম।
– রুপকে নিয়ে ঝর্নার খোজে পা
বাড়ালাম। হুম পেয়ে গেছি আমরা
এখানেই আসছিলাম।
.
.
.
– আমি রুপকে বললাম রুপ মনে কর আমরা
এখানে আগেও এসেছিলাম।
– তুমি তোমার বানানো গল্প শুনানো
বন্ধ করবে?
– আমি রেগে গিয়ে বললাম গল্প যদি
বানানো হয় আমি আপনার ল্যাপটপ,
ফেসবুকের, পাসওর্য়াড কেমনে
জানলাম। তোমার প্রতিটা তথ্য আমি
জানি। তোমার কাছে আমার মার
লেখার একটা চিঠি আছে হিব্রু
ভাষার। গিয়ে খুজে দেখ। তোমার কি
পছন্দ অপছন্দ সব জানি আমি সব। তোমার
মা আমার লাইফ শেষ করে দিছে। তুমি
বলতে পার আমি কি নিয়ে বাচব?
– রুপের মায়ের কথা তুলতে রুপ খুব রেগে
যায়।
– হেই একদম mom এর কথা বলবা না বলে
নাফিসার গলা চেপে ধরে।
– খুব কষ্ট হচ্ছে তবুও মুখে হাসি ফুটিয়ে
বললাম আমিতো তোমার হাতে মরতেই
চাই। আজ আমি সফল।
– রুপ চট করে ছেড়ে দিয়ে চলে যেতো
লাগল।
– রুপপপপ যেওনা আমায় ছেড়ে। তুমি
ছাড়া আমি পূর্ন না। আমি কিন্তু
নিজেকে শেষ করে দিব। আমি কিন্তু
সাতার জানিনা।
– ও পিছনে একবারও তাকালো না।
– আমি রাগে অভিমানে পানিতে
ঝাপ দিলাম।
– এবার রুপ পিছন ফিরে দেখল ও সত্যই
ঝাপ দিছে। রুপ বিদ্যুৎ গতিতে দৌড়ে
এসে পানিতে লাফ দিল।
– আমার এর মধ্য পানি খাওয়া শেষ।
– ও আমাকে উপরে উঠায়ে নিয়ে আসল।
আমি তো বিষম উঠে কাশতে কাশতে
শেষ।
– ও আমাকে কোলে নিয়ে গাড়িতে
বসে দিল দেন গাড়ি স্টার্ট করল।
– পথে আর একটি বারও কথা বলল না। শুধু
এটাই বলল এত্ত রাতে হোস্টেলে তোহ
তোমায় ঢুকতে দিবে না। কই যাবা
ভেবেছো?
– আমি জাহান্নামে যাই তাতে
আপনার কি?
– রুপ আমাকে আর একা ছাড়তে সাহস
পেল না।
– আমাকে নিয়ে ও সোজা ওর বাসায়
আসল।
– আমি বললাম তোমার mom আমাকে
দেখলে আর আস্ত রাখবেনা।
.
.
.
.
টেনশন নেই mom এখন বাসায় নেই।
– আমাকে নিয়ে সোজা ওর রুমে গেল।
আমি বললাম আমায় ড্রেস দিন আমি
চেঞ্জ করব।
– আমি পুরুষ মানুষ তোমাকে কই থেকে
ড্রেস দিব!
– ওরে আমার কতভাল মানুষরে। নিজের
বউকে যে চিনতে পারেনা সে নাকি
আবার পুরুষ! বলেই ভেঙচি কাটলাম।
– এই তোমার ফাজলামি বাদ দিবা!
আমি just আর নিতে পারছিনা।
– ওয়েট রোজের একটা ড্রেস নিয়ে
আসছি।
– আপনি কি পাগল হইছেন? রোজ
ঘুমাচ্ছে না। আপনাকে আমার সাথে
দেখলে সকালে আপনাকেই ঠাট্টা
করবে।
– আর ড্রেসতো আপনার রুমেই আছে।
কোথায় আছে বলে দিলাম।
– ও বলল আমার রুমে মেয়েদের ড্রেস
আসবে কই থেকে?
– যান গিয়ে দেখুন বলে আমি
ড্রেসিং টেবিলের দিকে চলে
গেলাম।
– কত দিন পরে এই রুমের ভিতর আসলাম।
– ও চট করে গিয়ে দেখল আমার কথাই
ঠিক।
– আমি ড্রেসটি পড়লাম। ও আমাকে
কিভাবে পোষাক গিফ্ট করার কথা
ছিল আর কি ভাবে পড়লাম।
– আমি রুমে এসে দেখি ও চেঞ্জ করে
বসে আছে।
– কতদিন পর এই বাসায় আসলাম।
– আমার কথার মধ্য ছেদ ঢুকিয়ে রুপ বলল
তুমি বেডে ঘুমাও আমি নিচে
ঘুমাচ্ছি।
– আমিও আপনার সাথে ঘুমাব।
Are you crezy?
No i am fine.
– কি আর করা ঘুমিয়ে পড়লাম।
– মাঝরাতে হাঠাৎ রুপ এসে আমার
কাছে শুইলো এবং আমাকে জোরে
বুকে চেপে গায়ে কম্বল দিয়ে পুরো
ঢাকিয়ে দিল।
– আমি চমকে উঠলাম এবং উঠতে গেলে
ও আরও চেপে ধরে।
– আমি বললাম বউ কে ছাড়া থাকতে
বুঝি ভাল লাগছেনা?
– সাথে সাথে আমার মুখ চেপে ধরল।
– কিছুক্ষন পর রুপের মা মিনা রুমে
প্রবেশ করল।
– রুপ আর আমি ২ জনেই চুপ। এইরে সারছে
এখন যদি শাশুড়ি মা আমাদের এভাবে
দেখে তাহলে তো আমায় আস্ত
রাখবেনা।
– সিড মিনাকে ডাকতেই মিনা দরজা
লেগে দিয়ে চলে গেল।
আমি রুপ কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে
ঘুমাই পরলাম………
চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here