ধর্মের_দেয়াল (সিজন-২)পর্বঃ১২

0
534

#ধর্মের_দেয়াল (সিজন-২)
নাফিসা মুনতাহা পরী
পার্টঃ ১২

” মারিয়াম নাফিসাকে নিয়ে একটা শহরে পৌছে যায়। শহরটির নাম ছিল ব্যাবিলন শহর। যাকে বলা হয় যাদুর রাজ্য। এই শহরে প্রাচীন কাল থেকে যাদু বিদ্যা চর্চা হয়। এখানে জ্বীন সন্তান গুলো তাদের যাদু বিদ্যা চর্চা করতে আসে।



– মারিয়াম ব্যাবিলন রাজ্যর রাজার কাছে হাজির হল। ব্যাবিলন রাজা আলিক্স সব শুনে বলল দুঃখিত মারিয়াম কোন মনুষ্য কন্যাকে এই রাজ্যতে এলাউ নিষেদ।
– এবার মারিয়াম নাফিসার নানা আলবার্টের একটা পত্র এগিয়ে দেয়। আলিক্স সব দেখে বলে এই মেয়েটি তার কে হয়!


– আমি জানিনা my lord…… আমি শুধু মেয়েটির খেদমতে হাজির। এর বেশি জানাতে পারবনা। আপনাকে একে শ্রেষ্ট তালিম দিতে হবে আর সেটা আপনাকেই। মেয়েটি খুবই প্রখর। আপনার সব থেকে উত্তম শিষ্য হবে আশা করি।



– আলিক্স বেশ দুশ্চিন্তা তে পরে যায়। এটা নিয়মের বাহিরে। কেউ জানলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। এদিকে রাজা আলর্বাট এর হুকুম কোন দিকে যাবেন। শেষে তিনি নিজেই নাফিসার ভার নিলেন। কোন স্কুল না তিনি নিজেই এর শিক্ষক হবেন। এটা শুধু নাফিসার জন্য। ওনাকে কেউ প্রথম শিক্ষক হিসেবে পেতে যাচ্ছেন।



– আলিক্স নাফিসার দিকে তাকিয়ে দেখল ওর শরীর দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। আলিক্স হাত বুলাতেই সব স্বাভাবিক হয়ে যায়। ওদের প্রাসাদের একটি রুমে থাকতে দেওয়া হলো।


– মারিয়াম কাল থেকে ওর শিক্ষা শুরু হবে ওকে প্রস্তুত করে রেখ।



– রানী মুনিকা এলিনার কক্ষে গিয়ে পালংকে বসে চিন্তা করতে লাগে। একটা মনুষ্য মেয়ের জন্য আলবার্ট এত কঠিন ভাষায় আমার সাথে ব্যাবহার করবে না তো…… তাহলে মেয়েটি কে? এতদিন কেন মাথায় এলো না। আর তাছাড়া মেয়েটির পক্ষে এই কক্ষে প্রবেশ করা অসম্ভব। দ্বার বন্ধ করা ছিল খুলল কেমনে! কি সেটা যা মুনিকার নজরের বাহিরে বলে তাকাতেই কিছু ছোপ ছোপ রক্ত দেখতে পেল। হ্যাঁ রক্তগুলো ঐ মেয়ের বলে রক্তে হাত দিতেই কেমন জানি অনূভুতি হল।



– রানী মুনিকা তার স্বামীর কাছে ছুটে গেল এবং বলল আলবার্ট মেয়েটি কোথায়?
– সেটা জেনে তোমার কি হবে!
– আলবার্ট আমার মন বলছে মেয়েটির সাথে আমি খারাপ কিছু করেছি। ও কে?

– সেটা তোমার না জানলেও চলবে। তুমি কি ভাবে একটা বাচ্চা মেয়েকে আঘাত করতে পারলে। তুমি পাগল হয়ে গেছ মুনিকা না হলে নিজের………..
– আলবার্ট থামলে কেন বল সে কে! আমার কেমন জানি মনে হচ্ছে ও আমার খুব আপনজন…. বলে মুনিকা হাত বের করে নাফিসার রক্ত দেখাল।
– এবার আলবার্ট মুনিকার গলা চিপে ধরে বলে কি করে ওকে আঘাত করতে পারলে। ও প্রথম আমাদের প্রাসাদে এসেছে আর তার সাথে এরকম ব্যবহার কি করে করতে পারলে। কোন সন্তান তার মায়ের জিনিসে হাত দিলে বুঝি তাকে এই রকম শাস্তি দিতে হয় বলে মুনিকা কে ছুড়ে মারল।



– মুনিকা নিজেকে সামলে নিয়ে এসে আলবার্টের পায়ের নিচে বসে বলল আমি বুঝতে পারছিনা ও কে হয় আমার একটু বল প্লিজ। এলিনার সাথে ওর কি রকম সম্পর্ক যে মেয়েটার মা এলিনাকে দাবী করছো।

– ও আমাদের এলিনার মেয়ে। ওর শেষ অস্তিত্ব এলিনার। তাছাড়া ও একজন শ্বেতপরী। আমাদের বংশে একটা শ্বেতপরী জন্ম নিয়েছে ভাবতে পার মুনিকা! আমরা কতটা সৌভাগ্য বান। ও অনেক দুঃখের সাথে জিবন কাটিয়েছে। ওর চারদিকে শত্রুর অভাব নেই। নিজের রক্তও ওর শত্রু হতে পারে। ও জ্বীন ও মানুষের মাধ্যমে জন্ম নিয়েছে বলে খুব দুবর্ল ও। ওকে আমাদের চেষ্টায় ওর অবস্থানের অনুভূতি করাতে হবে। কারন দুনিয়াতে আর যে ৪ জন শ্বেতপরী পরী আছে তারা অত্যন্ত শক্তিশালী। ওদের কাছে নাফিসা কিছু না। ওদের সাথে পাল্লা দিয়ে ওকে টিকে থাকতে হবে।



– ও আমাদের এলিনার কন্যা বলে কেঁদে উঠল মুনিকা।
আলবার্ট এক নিমিষেই মুনিকার মুখ চিপে ধরে বলে চুপ! এ কথা যেন কেউ না জানে। এমন কি তোমার ছেলেও যেন না জানে।



– রুপ বিছানায় চুপ করে বসে আছে। সিড ও আজগড় সামনে বসে আছে।
– রুপ কেমন আছো বলে আজগড় রুপের দিকে তাকালো।
– সেদিকে কোন খেয়াল না দিয়ে রুপ বলল আজগড় নাফিসা কোথায় আছে প্লিজ বলবা।
– আজগড় রুপের কথায় চুপ করে গেল। কারন এর কোন জবাব নেই আজগড়ের কাছে।
– রুপ please চুপ কর। তুমি নিজে দায়ী এসবের জন্য। (সিড)
– Dad আমার নাফিসাকে চাই। যেকোন মূল্যই হোক না কেন!
– জানিনা তুমি নাফিসাকে পাবে কিনা কিন্তু please তোমার শক্তির আর প্রয়োগ করোনা কখনও। এতে নাফিসার জন্য বিপদ ডেকে আনবে। নেকড়ে গুলো তোমার সম্পর্কে আয়ত্ব করে ফেলেছে।(সিড)



– রুপ শুধু চুপচাপ কথাগুলো শুনে যায়। কারন সব সঠিক কথায় বলেছে সিড। আজ নাফিসা ওর কাছে নেই কিন্তু শক্তি গুলো রয়ে গেছে। আজগড় আর সিড রুম থেকে বের হতেই রুপ ল্যাপটপ খুলে নাফিসার ছবি গুলো দেখতে লাগল। কত স্মৃতি জড়িয়ে আছে ছবিগুলোতে। কোথায় নাফিসা তুমি। আমাকে ছেড়ে তুমি কেমন করে আছো। আমাকে কি তোমার একটুও মনে পড়ছেনা। ফিরে আসো নাফিসা।




– রাফসান ওর মেয়েকে নিয়ে লন্ডনে বিমান থেকে নামে। চারদিকে তাকিয়ে শুধু বার বার মনে পড়ছে ওর মেয়ে এই ঠান্ডা পরিবেশ মানিয়ে নিতে পারবে তো!
– মেয়েকে নিয়ে একটা ট্যাক্সি করে রাফসান ওর বন্ধুর বাসায় রওনা দিল।



– মারিয়াম রুমে এসে দেখে রানী মুনিকা ঘুমন্ত নাফিসার পাশে বসে আছে।
– মারিয়াম বেশ ভয় পেয়ে যায় ওকে দেখে।
– রুমে দেখল আলবার্ট, আলিক্স ও আছে। তার মানে এরা সবাই জেনে গেছে নাফিসার পরিচয়।
– মারিয়াম তোমাকে দেখে সত্যই গর্ব হচ্ছে। এলিনার অবর্তমানে নাফিসাকে কেমন করে আগলে রেখেছো।(আলিক্স)
– My lord ও আমার মেয়ে ছাড়া কিছু ভাবিনা। ও আমার এখন বাঁচার একমাত্র অবলম্বন।(মারিয়াম)



– এলিনা আমার সহপাঠী ছিল এই খানের। অত্যন্ত প্রখর মেধাবী ছিল এলিনা। তার মেয়েকে এভাবে পাব কখনও ভাবতে পারিনি। আমি আমার সর্বোচেষ্টা দিয়ে ওকে গড়ে তুলব। আপনারা এখন এখান থেকে যান। এক সাথে সবাইকে দেখলে ওর জন্য ভাল হবেনা বলে আলিক্স সবাই কে বিদায় দিল।



– আমার সামনে একটা ভদ্র লোক বসে আছে।
– Hlw নাফিসা কেমন আছো বলে আলিক্স হাত বাড়াল।
– ভাল! আমার নাম কি নাফিসা…….
– আলিক্স বুঝল নাফিসার অতীত জিবন হয়ত তারা বন্দী করে ফেলেছে তাই কিছু মনে নেই এর।



– ইয়েস মাই প্রিন্সেস। বলে নাফিসার হাত ধরে বাহিরে আনল।
– আমার সামনে এ এক কল্পনার রাজ্য। আমার বয়সী ছেলেমেয়ে বেশিভাগ। কেউ মাটিতে হাটছে না। সবাই মাটি থেকে ২/৩ হাত উচু দিয়ে শূন্য ভেসে ভেসে চলছে যেটা দেখে আমার খুব ভয় লেগে যায়।
– ভয় পাচ্ছ কেন নাফিসা আমি আছিতো বলে সেখান থেকে আমাকে নিয়ে একটা পাহারের উপর এক নিমিষেই হাজির হল।
৭তোমাকে এই স্থানে থাকতে হবে কিছু দিন। কিছু মায়া বিদ্যা তোমায় শিখানো হবে। সম্পূর্ন শিক্ষা শেষে তুমি কিন্তু ফেরত আসতে পারবেনা। তোমাকে নিজেই ওখান থেকে পথ খুজে বের হয়ে আসতে হবে। তাছাড়া ওখানে চিরদিনের মত আটকা পড়ে যাবে। আর ভয় পাবেনা। ওখানে সবাই বড় বড় যাদুকর। তবে তুমি তোমার জানা কোরআনের আয়াত দ্বারা তাদের প্রতিহত করতে পারবে। কোরআন সম্পর্কে খুব বেশি ধারনা নেই।



– আমাকে ঐ পাহারের মধ্য ডুকে দেয়। সেখানে হাজার হাজার আমার বয়সী জ্বীন ছেলে মেয়ে আছে।
শহরটি যেন মুভিতে দেখা হ্যারি পটারের মুভির মত। একটা কৃশাঙ্গ মেয়ে আমার কাছে এগিয়ে এসে বলে তুমি আজই এসেছো এখানে?
– আমি মাথা নাড়িয়ে বললাম হ্যাঁ আজই এসেছি। তোমার নাম কি?
– অলিভিয়া আমার নাম….. তোমার?
– নাফিসা……
– নাফিসা তুমি আমাদের মাঝে বড্ড বেমানান। যানো এখানে আমি দেড়শত বছর ধরে আটকা পড়ে আছি। আমি এখান থেকে বেরই হতে পারিনা। কতদিন ভাইবোন, বাবা মাকে দেখিনা।
– অলিভিয়ার কথা শুনে আমার গলা কাঠ হয়ে গেল। আমাকেও এত দিন থাকতে হবে। আমিতো এতদিন বাঁচবইনা।
– আরে চিন্তা করছো কেন! আমি পারিনি তুমি হয়ত পারবা। চলো তোমাকে একজনের সাথে পরিচয় করে দেই বলে আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল একটি ছেলের কাছে।



– মার্ক দেখো আমাদের নতুন বন্ধু। আমি ছেলেটির দিকে তাকিয়ে জোরে একটা চিৎকার দিলাম। ছেলেটা দেখতে সাপের মত অনেকটা। মাথা ভর্তি সাপ। মুখদিয়ে বার বার জ্বিভ বের করছে।
– এই ওকে আমার সামনে থেকে সরাও সরাও এক্ষুনি সরাও। ছেলেটি আমার কাছে এসে বলল বাহ্ আমাদের নতুন বন্ধু দেখতে তো বেশ…… আমি আরও জোড়ে চিৎকার দিয়ে ভয়ে থরথর করে কাঁপতে লাগলাম। কি বিশ্রী দেখতে।


– মার্ক চেহারা পাল্টাও ও তোমাকে দেখে ভয় পাচ্ছে। মার্ক চট করে মানুষের চেহারায় পরিবর্তন হয়ে যায়।
– নাফিসা এবার দেখতো ওকে দেখে ভয় পাচ্ছো আর?
– আমি চোখ খুলে দেখলাম সব স্বাভাবিক। আমার আর কোন বন্ধু জুটলো না এই ২ জন ছাড়া। কেউ আমার সাথে মিশতেই চাইলো না। আমি নাকি অদ্ভুত দেখতে। মানুষ আর জ্বীনের হাফ। এই জন্য অনেকে তিরষ্কার ও করল।



– চলো আমরা ক্লাসে যাই বলে আলভিয়া আমাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল। মার্কও আমার সাথে সাথে চলতে থাকল।
– এই দুর হও। তুমি খবরদার আমার গাঁ ঘেষে চলা ফেরা করবেনা। তোমাকে আমার ভয় লাগে। বেচারা মন খারাপ করে আলিভিয়ার কাছে যায়।



– আমরা বিশাল একটা হল রুমের মধ্য গেলাম। দেখলাম দুরে ইয়া বিশাল একটা আধা বৃদ্ধ মহিলা বসে আছে। আলভিয়া আর মার্ক মাথা নিচু করে সম্মান জানালো। আমাকেও বলল… ধুর কে মাথা হালাবে আমরা আল্লাহ্ কে ছাড়া কারো নিকট সেজদাহ্ দেই না।



– মহিলাটি হুংকার ছেড়ে বলে কে এই বিয়াদপ মেয়ে যে তার শিক্ষক কে সম্মান জানায় না।
– ভুল হয়ে গেছে teacher। ও নতুন তাই কিছু বোঝেনা আলিভিয়া বলল।
– আমিতো মহিলার দিকে গট গট করে তাকিয়ে আছি। কি লম্বা লম্বা চুল রে বাবা মহিলার। যত্ন করে কিভাবে আমার এই চিন্তা মাথায় ঢুকে ঘুরপাক খাচ্ছে।
– আমরা ক্লাসে বসে গেলাম। আরও অনেক শিক্ষার্থী ইতি মধ্য চলে এলো। হাজার হাজার শিক্ষার্থী ছিল ওখানে।



– আজ কারা কারা নতুন এসেছো দাড়াও সবাই।
– আমি দাড়িয়ে গেলাম। অবিশ্বাস্য ভাবে আমি একাই শুধু এসেছি।
– এইরে নাফিসা তোমার কপালে আজ দুঃখ আছে। পাঁচশত student এর কাজ তোমায় দিয়ে একা করাবে। নিয়ম তো নিয়মই হয়।(মার্ক)


– সবাই আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। নিজেকে চিড়িয়াখানার জন্তু মনে হচ্ছে।
– Teacher টি বলল তুমি কি কি পারো আমাদের একটু দেখাও।
– আমি আবার কি পারি…. কি দেখাব!
– এই মেয়ে আমার কথা তোমার কানে যায়না!
– আমি ভয়ের ঠেলায় সুরা ফাতিহা পড়তে শুরু করে দিলাম। বার বার রিপিট করে পড়ছি। এতে টিচারের চুলে আগুন ধরে যায়।
– এই আলিভিয়া ওকে থামাও ও কি পাঠ করছে এসব বলেই দাফাতে লাগল।
– ওনার কথা শুনে আমি থেমে গেলাম। ওনার স্বাধের চুল অনেক খানি পুড়ে গেছে।
– প্রথম দিন এসেই টিচার কে আক্রমণ করার দায়ে আমাকে একটা ভয়ঙ্কর প্রানীর খাঁচায় ছেড়ে দেওয়া হলো। যদি বেঁচে ফিরতে পারি তাহলে পরের দিন ক্লাস করতে পারব। লও ঠেলা কি বাজে দেখতে প্রানীটা। ভয়েই আমার গা ঠান্ডা হয়ে গেল।


– প্রানী টি এসেই আমার গায়ের ঘ্রান নিতে লাগল। বাবাগো মাগো বলে চিল্লায় উঠলাম।
– প্রানী টি একটা মানুষের আকৃতি নিয়ে বলল এই চিল্লাও কেন? আমি কি তোমাকে খেয়ে ফেলছি!
– দুর হোন আমার সামনে থেকে বলেই দৌড়াতে লাগলাম। যতই দৌড়াই ততই মনে হয় ওখানেই দাড়িয়ে আছি।
– আমি না চাইলে তুমি দৌড়াতে পারবা না তো।
– ওনার কথা শুনে থেমে গেলাম।
– তুমিতো জ্বীন না একটা সাধারন মানুষ হয়ে এখানে কেমনে এলে?
– জানিনা।
– মিথ্যা বলনা সত্যি বল তাহলে এই রাজ্য থেকে বের হওয়ার উপায় বলে দিব।
– সত্যি বলছি যানিনা বাবা।
– তুমি আমায় বাবা বললে।(খুশিতে গদ গদ হয়ে বলল)
………………………..? বললাম কি আর বুঝলো কি।
– উনি খুশিতে সব ঝর ঝর করে বলে দিল কেমনে কি করতে হবে।
– আমাকে উনি বের করে দিলেন এবং আমি চোখের পলকে অলিভিয়ার কাছে হাজির হলাম।
– অলিভিয়া আমায় দেখেতো খুব খুশি হল। এই নাফিসা তুমি কেমনে ছাড়া পেলে।
– হুম বাছা ধন কি আমায় এমনি ছেড়ে দিছে! মানুষ বলে আমাকে খেতে পারেনি। এতক্ষন তোমরা থাকলে মনের আনন্দে ভোজন সেরে নিত। আর ঐ বুড়ি টিচার কে যদি উচিত শিক্ষা না দিছি। কেবল তো চুলে আগুন ধরাইছি এবার দেখ তোর কোথায় কোথায় আগুন ধরায়। শাস্তির নাম দিয়ে কত জ্বীন বাচ্চাদের তুই ও ভক্ষন করেছিস সেটা জেনে গেছি।



– পরদিন সবার মুখে আমার নাম উঠে গেল আমি অনেক শক্তিশালী জ্বীন কন্যা। ভয়ে আমাদের সাথে কেউ লাগতে আসেনা। কেউ কিছু বললেই কোরআনের আয়াত দ্বারা আঘাত করি ওদের। এভাবে প্রায় ৩ মাস কেটে গেল। ওদের সব কিছু দ্রুত নিজের মধ্য রপ্ত করে ফেলি। কিন্তু ফিরে যে আসব তার কোন পথ নেই। ওরা আর ফেরত আসতে দেয়না। ”


– দম আটকে আসে এখানে থাকতে থাকতে। কি করব
কিভাবে বের হব বলে অনেক চিন্তা করে ঐ প্রানীটার কথা মনে পরে যায়। ওর কথামত চললে আমরা এখান থেকে বের হওয়ার সুযোগ পেতে পারি। বদজ্জাত টা যদি মিথ্যা বলে! হেই যা কপালে থাকুক থাক বলে অলিভিয়া আর মার্ক কে নিয়ে বের হলাম।



– এ যেন রাস্তা শেষ হতেই চায়না। মার্ক সাপের রুপ ধারন করে ফেলে।



– এই তুমি আবার এমন হয়েছো দুর হও আমার কাছ থেকে। মার্ক আমার কথার কোন জবাব না দিয়ে অলিভিয়া আর আমাকে ওর পিঠে উঠিয়ে উড়াল দিয়ে সেই জায়গায় নিয়ে আসে। বাহ্ কাজের আছে দেখছি মার্ক।



– প্রথমে মার্ক সাপ হয়ে জায়গা টা পাড়ি দিতে চাইলেই ওর সামনে বাটি বাটি দুধ এসে হাজির হয়ে যায়। ও কাজ ভুলে যেই দুধ খেতে যায় অমনি ছিটকে পড়ে যায় মার্ক।
– না হলো না।
– এবার অলিভিয়া একটা কবিতরের রুপ ধরে উড়তে লাগল এবং সাথে সাথে ওর সামনে বস্তা বস্তা সরিষা চলে আসে ও বেচারা যেহেতু কবিতর হয়ে গেছে তাই কবিতরের খাবারের দিকে নজর যায় এবং নিচে নেমে আসে। সরিষা খুটে খেতে লাগে।
– না এবার ও হলো না।
– আমি আমার থলে থেকে একমুঠ চাল বের করে মন্ত্র পড়তেই সেগুলো শত শত ছোট ছোট পাখির রুপ ধারন করে উড়তে লাগল। এতে বিপক্ষ পক্ষের হুস উড়ে গেল। এমন সময় একটা গাছ উড়ে যেতে লাগতেই আমি বুঝলাম এটার জন্যই আমরা অপেক্ষা করছি। আমি ওদের জলদি গাছে লাফ দিতে বললাম।
– ইয়াহু আমরা পেরেছি বলে চিৎকার দিয়ে উঠলাম। ওরা ২ জনেই ভয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
– এই তোমরা ভয় কেন পাচ্ছ… শুকরিয়া কর শত বছর পরে নিজের বাড়িতে যেতে পারছ বলতেই ওরা আমাকে সামনে দিকে তাকাতে ইশারা করল।
– সামনে একটা লম্বা আকৃতির প্রানী। যার ভয়ঙ্কর চেহারা দেখলেই ভয়ে মানুষ হার্ট ফেইল করবে নিশ্চিত।
– এরকম অসংখ্য প্রানী বসে থেকে কাঁচা কলিজা চিবুচ্ছে আর ওদের দাঁত গুলো থিতির নিচ অবদি।
– ওরা সবাই একসাথে খাওয়া বন্ধ করে আরও পিছনে
দেখার জন্য ইশারা করল। সেদিকে তাকাতেই বুঝলাম আমরা ঐ প্রানীটির কথা মত চলে অনেক বড় ফাঁদে পা দিছি। আর বাঁচার আশা নাই আমাদের…….. আমরা ৩ জন ৩ জনকে ধরে বসে পড়লাম।

চলবে____________

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here