নতুন তুই আমি পর্ব-৩৪

0
1908

#নতুন_তুই_আমি#
💜💜💜💜💜💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
!
পর্ব:-৩৪………………………….
ধাক্কা তো খাওয়ার-ই কথা।
সিয়ামকে দেখে যে কোনো মেয়েই ধাক্কা খাবে।
আর সেখানে তো তামান্না তার নিজের বিয়ে করা বউ।
ফরমাল লোকে যে এতটা হ্যান্ডসাম দেখাবে সিয়ামকে সেটা তামান্না ভাবতে পারে নি।
তামান্নাকে দেখে সিয়ামও হা করে তাঁকিয়ে আছে।
বিয়ের দিন তো ঝমকালো একটা সাজে সেজেছিল।
কিন্তু আজ!!!ব্রাইটাল সাজ না সেজেও একদম পরী লাগছে।
সোনালী রঙের শাড়ি,হালকা সোনার গহনা অল্প মেকাপ..এতেই বেশ লাগছে।
সিয়াম এগিয়ে এসে তামান্নাকে বলল,
“চল…দেরী হয়ে যাচ্ছে…”
“হুম….”
সিয়াম হাত বাড়ালো।
তামান্না মুঁচকি হেঁসে সিয়ামের হাতে হাত রেখে বাসা থেকে বেড়িয়ে আসে।
!
সব অয়োজন শেষ হতে হতে রাত এগারো টা বেজে গেছে।
সিয়াম তখন তামান্না না বললেও এখন সে ঠিকই যাচ্ছে তাদের বাসায়।
বরং তামান্নাদের বাসার সবাইকে পাঠিয়ে দিয়ে আরও লেট করেই তামান্নাকে নিয়ে রওনা দিয়েছে সে।
সেই বিকাল থেকে এত এত সাজসজ্জায় থেকে ক্লান্ত হয়ে গেছে তামান্না।
তাই সরাসরি রোমে ডুকে বিছানায় শুয়ে পড়ে বেচারী।
সিয়াম নিজের ফোনটা তামান্নার ড্রেসিং এর উপর রেখে বলল,
“ট্রায়াড লাগছে??”
তামান্না চোখ বন্ধ রেখেই বলল,
“হুম…খুব।”
“ভালো তো লাগছে নাকি??”
তামান্না এবার এক্সাইটেড হয়ে বসে পড়ল,
“হ্যাঁ।খুব।আমার তো মনে হচ্ছিল আমি এক বছর পর বাসায় আসলাম।অনেক দিন পর তাদের দেখে যেনো আমার আত্মা টা শান্তি পেলো।”
সিয়াম তামান্নার এই মুড টাই দেখতে চায় সব সময়।
তবে এই মুহুর্তে তামান্নার এতোটা খুশি দেখে তার হাঁসি পাচ্ছে।বাচ্চারা যেমন প্রিয়ে কোনো খেলনা পেলে খুশিতে গদগদ হয়ে যায় তামন্নাও ঠিক তেমন টাই করছে।
সিয়াম তামান্নার পাশে বসে বলল,
“আচ্ছা??তা কদিন থাকবি??”
তামান্না হাঁসি থামিয়ে দিলো।
সিয়ামের দিকে তাঁকিয়ে বলল,
“জাস্ট তো আসলাম….”
“হুম।তা ঠিক তবে পরশু কিন্তু ফাইনাল….”
“এই না।প্লিজ।আর দুদিন….”
সিয়াম তামান্নার দিকে আরও একটু এগিয়ে গেল।বলল,
“উমহু।পরশু…..”
“কিন্তু কেনো??”
সিয়াম তামান্নার কমড় চেপে ধরে নিজের বুকে নিয়ে আসে তামান্নাকে।চোখে চোখ রেখে বলল,
“আমার বউ যে তাই…..”
“ঠিক আছে তোর বউ।তাই বলে মাম্মামের কাছে….”
“হুসসসস…..”
সিয়াম তামান্নাকে বুকে নিয়ে ধপাস করে শুয়ে পড়ল।
সিয়ামের বুকের উপর শুয়ে তামান্না।অথচ কোনো ছটফট করছে।ভালো লাগে ওর আজকাল সিয়ামের সংস্পর্শে থাকতে।
সিয়াম হা করে তামান্নাকে দেখে যাচ্ছে।তামান্না সিয়ামের মাথায় আলতো করে একটা চাটি মেরে বলল,
“হাবলার মতো তাঁকিয়ে আছিস কেনো??”
হাঁসলো সিয়াম।
জবাবে তামান্নাকে ক্ষেপানোর জন্য বলল,
“কেউ যদি আমার সামনে পেতনীর মতো সেজে থাকে তাহলে তো তার দিকে এভাবেই তাঁকানো উচিত। তাই না??”
“সিয়াম!!!!!কি বললি তুই??আমি পেতনীর মতো সেজেছি??ছাড় ছাড় তুই আমায়…..”
আরে আস্তে আস্তে।পেতনীর মতো শুধু সাজিসই নি।আচরণও করছিস।
তামান্না রাগে দুঃখে সিয়ামের শার্টের উপরেই খামচি দিতে লাগল।
এতে সিয়াম খুব মজা পাচ্ছে।
হাঁসতে হাঁসতে একদম শেষ হয়ে যাচ্ছে সে।
“আরে আস্তে বউ।এভাবে খামচায় তো রাক্ষসীরা।শেষমেষ আমি রাক্ষসীকে বিয়ে করলাম!!!!”
“সিয়ামমমমম!!!!!!!”
তামান্না দু হাতে সিয়ামের গলা চেপে ধরতে গিয়েও ধরল না।
হাত দুটো সরিয়ে নিলো।
তারপর শান্ত গলায় বলল,
“ছাড়….ফ্রেস হবো আমি।”
সিয়াম হাঁসতে হাঁসতে বলল,
“কেনো??”
“গরম খুব….”
“তো এসব কেনো পড়ে আছিস??”
বলেই সিয়াম টান দিয়ে তামান্নার শাড়ির আঁচল টা সরিয়ে তামান্নাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলো।
“আআ…সিয়াম!!”
“লাগলো??”
তামান্নার খুব লজ্জা লাগছে।সে আঁচল টা ঠিক করে নিতে চাইলে সিয়াম বাঁধা দিলো।
“তোর না গরম লাগছে??”
“প্লিজ….”
“এই শোন না।কাল রাতে না একটা জিনিস আমি খুব মিস করেছি….”
তামান্না অবাক হয়ে বলল,
“মানে??”
সিয়াম তামান্নার গলার হার খুলতে খুলতে বলল,
“কাল রাতে তো তোকে আমি আদর করেছি তাই না??”
তামান্না কোনো কথা বলল না।
সিয়াম বলল,
“কিন্তু লাইট টা না বন্ধ ছিলো। কিন্তু আজ না লাইট টা অন থাকবে।”
সিয়ামে সাথে সাথে তামান্নার গলায় মুখ গুজল।
তামান্নাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই গলায় একের পর এক চুমু দিয়ে যাচ্ছে।
তামান্নার বুকের ভেতর টা ধরফর করছে।
কি করছে কি সিয়াম!!
তামান্না আর কিছু ভাবার আগেই সিয়াম তার ঠোঁট দুটো নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিলো।
চুলটাও এর মধ্যে খোলে নিয়েছে সে।
একটু একটু করে তামান্নাকে নিজের করে নিচ্ছে সিয়াম।
তামান্না প্রথমে সারা না দিলেও সিয়াম ঠিকই তাঁকে বাধ্য করল সারা দিতে।
!
রাত প্রায় একটা……..
“উঠবো একটু…..”
“উমহু….”
“একটু….”
“না…..চুপ কর….”
“ওয়াশরোমে যাবো…..”
“লাগবে না….”
“সাওয়ার….”
“সকালে নিস….”
“এখন সাওয়ার টা করলে ঘুম টা ফ্রেস হবে…..”
“ধুর…..”
রাগ দেখলেও সিয়াম তামান্নাকে ছাড়লো না।জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকল তখনও।
কিছুক্ষণ পর সিয়াম নিজে থেকেই উঠে বসে।
তামান্না এবার ছাড়া পেয়ে বাঁচলো বোধহয় তাই সে দ্রুত উঠে কাপড় টা পেঁচিয়ে নিচে নামতে নিল।
কিন্তু তখনি সিয়াম আচমকা তাঁকে কোলে তুলে নিল।
“আরে কি করছিস???”
“ওয়াশরোমে যেতে চেয়েছিলি তো!”
“হ্যাঁ।কিন্তু তুই কোল থেকে নামা….”
“তোর কষ্ট করে যেতে হবে না আমিই নিয়ে যাচ্ছি…..”
“না প্লিজ…..”
“বেশি বকবক করবি তো ঠাস করে ফ্লোরে ছুড়ে মারবো…”
তামান্না আর কথা বাড়ালো না।এই ছেলেকে বিশ্বাস নেই যদি সত্যি সত্যিই ছুড়ে মারে!
!
এই রাতে সাওয়ার নিয়ে নিজেকে বেশ হালকা লাগছে তামান্নার।
সিয়ামও সাওয়ার নিয়ে নিয়েছে।তবে সাওয়ারের নিচে সিয়ামের করা দুষ্টুমিগুলো ভেবেই তামান্না কেমন শিউরে উঠছে।
সিয়াম বিছানায় শুয়ে পড়ল।
তামান্না আয়নার সামনে বসে চুল টা ভালো করে মুছে নিল।
হঠাৎ কিছু একটা মনে করে সিয়ামের পাশে গিয়ে বসল সে।
সিয়াম চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে।তবে এই অল্প সময়ের মধ্যে সে ঘুমিয়ে যায় নি।
তাই তামান্না ডাকলো,
“সিয়াম…..”
সিয়াম চোখ খুললো না।তাই তামান্না আবারও ডাকলো।
“শোন না।একটা কথা বলবো……”
এবার চোখ মেলে তাঁকাল সিয়াম।
তামান্নার দিকে তাঁকিয়ে চোখ টিম্পানি দিয়ে বলল,
“কি??চাস নাকি আবার??”
তামান্না সিয়ামের বুকে একটা ঘুষি দিয়ে বলল,
“সব সময় ফাযলামি করবি না তো।আমি একটা সিরিয়াস কথা বলবো….”
সিয়াম তামান্নাকে নিজের বুকে টেনে নিল,
“আচ্ছা।বল তাহলে কি সিরিয়াস কথা??”
“উমম।এখন তো রাত দুটো বাজে।সাড়ে চার টার দিকে আযান দেয়।তারমানে তাহাজ্জুদ নামায পড়ার সময় এখন।পড়বি??”
সিয়াম কিছু বলল না।
শুধু তাঁকিয়ে রইলো।
“চল না পড়ি।আমাদের নতুন জীবনে আল্লাহর রহমত টা আরোও দৃঢ় হোক।যেনো ইহকাল পরকাল দু জগতেই তুই আর আমি এভাবে থাকতে পারি।পড়বি??”
সিয়াম মুঁচকি হাঁসল।
তামান্না নিয়ে উঠে বসল।
দু হাতে তামান্নার মাথা চেপে ধরে বলল,
“এতো কি করে বুঝিস তুই??”
“তুই যে গাঁধা তাই!!!হা হা হা….”
“কিহ!!!আমি??”
তামান্না উঠে পালাতে চাইল।
কিন্তু সিয়াম আটকে নিয়ে বলল,
“থাক।আর পালাতে হবে না।নামায পড়বো তাই মাফ করে দিলাম তোকে।তা না হলে খবর ছিলো তোর।”
তামান্না বেশ খুশি।
“সত্যি পড়বি??”
“সিউর…..”
তামান্না সিয়ামকে টেনে ওয়াশরোমে নিয়ে গেলো।
দুজনে একসাথে ওযু করে এসে তাহাজ্জুদে দাঁড়াল।
তাঁদের এই নামায আল্লাহর দরবারে ইহকাল আর পরকাল দু জীবনেই অনেক অনেক বরকতময়ী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here