নতুন তুই আমি পর্ব-৩৬

0
1765

#নতুন_তুই_আমি#
💜💜💜💜💜💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
!
পর্ব:-৩৬………………………………..
তামান্না-সিয়ামের দিন ভালোই কেটে যাচ্ছে।
ভালোবাসা,দুষ্টুমি,একটু আধটু ঝগড়া সব মিলিয়ে একরকম চমৎকার ভাবেই কেটে যাচ্ছে তাদের সংসার।সংসার বলতে যেখানে দুজনের বন্ধুত্ব টাই বেশী চোখে পড়ে সবার।
আর ভালোবাসা সে তো আছেই।
সিয়াম তামান্না এখন ভার্সিটিতে যাওয়া শুরু করেছে।আগে দুজনেই কেউ গাড়ি ব্যবহার করতো না ভার্সিটি যাওয়ার জন্য।কিন্তু এখন সিয়ামের মায়ের কড়া বারণ।তার বাড়ির বউ যেনো বাসে চড়ে না বেড়ায়।তাই সিয়াম রোজ তামান্নাকে নিয়ে গাড়ি করেই বের হয় আজকাল।
আজও তাই করতে হবে।
প্রতিদিন কার মতো সিয়াম রেডি হয়ে তামান্নার জন্য অপেক্ষা করছে।
সিয়াম অবশ্য দুই-তিন মিনিট-ই অপেক্ষা করে।
তবুও এইটুকু সময়ে সে তামান্নার উপর যা তা শুরু করে একদম।
আজ একটু বেশীই দেরী হচ্ছে তামান্নার।কারণ সে হিজাব টা ঠিকঠাক লাগতেই পারছে না আজ।আর সিয়াম সোফায় বসে বকবক শুরু করছে এরমধ্যে।
তামান্না ভালো ভাবেই বলল,
“হিজাব টা হচ্ছে না তো।ক্লাসের টাইম তো আছে এখনো।আস্তে ধীরে লাগাই একটু।”
এ আর কি এমন বলল মেয়েটা!কিন্তু রগচটা সিয়াম তাতেই উল্টাপাল্টা আরও বেশী করতে লাগলো।
“মেজাজ গরম করবি না তামান্না।রোজ রোজ সকাল বেলা তোর এতো নাটক…..”
যাক বাবা এখানে নাটকের কি হলো!!!আর এভাবে ধমক দেওয়ারই বা কি ছিলো!!
তামান্না একবার সিয়ামের দিকে তাঁকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিলো।সে জানে একে কিছু বলা মানে এখন শুধু শুধু আরও সময় নষ্ট করা।
তাই খারাপ লাগলেও সে কিছু বলছে না।
তামান্না বারবার চেষ্ঠা করেও কিছুতেই হিজাব টা ঠিকমতো লাগাতে পারলো না।
তাই শেষমেষ বাধ্য হয়ে মাথায় ওড়না টা ভালো করে পেঁচিয়ে নিলো।
সিয়ামের সামনে গিয়ে বলল,
“চল….”
সিয়াম ফোন দেখছিলো।
তামান্নার কথায় তামান্নার দিকে ফিরে তাঁকায় সে।
উঠে না দাঁড়িয়ে বেশকিছুক্ষণ তামান্নাকে দেখলো সিয়াম।
তারপর বলল,
“এভাবে কেনো যাচ্ছিস??”
তামান্না সরাসরি ই বলল,
“আসলে হিজাব টা লাগাতে পারছি না আজ।তুই তো অনেকক্ষণ অপেক্ষা করছিস।তাই এভাবেই হবে আজকে…”
সিয়ামের কি মনে হলো কে জানে!
সে হঠাৎ করে কোনো কিছু না ভেবেই বলে ফেলল,
“আমাকে পাগল করে এবার চুল দেখিয়ে আর কত জনকে বশ করার ইচ্ছা হচ্ছে তোর?”
তামান্নার মনে হলো কেউ আচমকা তার পিঠে একটা চাবুক বসিয় দিয়েছে।
কারণ একুশ বছরের এই জীবনে তামান্না কখনো নিজের রূপ দিয়ে কাউকে আর্কষণ করাতে চায় নি।
বা সেটা প্রকাশও করে নি।
সিয়াম সেটা ভালো করেই জানে।
এমনি আজও সে ওড়না টা এমন ভাবে পেঁচিয়েছে যে চুল কোনোভাবেই দেখা সম্ভব না।
কিন্তু কি ভাবে সিয়াম এই কথাটা বলল ভেবে পাচ্ছে না তামান্না।
চোখ দুটো তামান্নার অজান্তেই জলে ভরে এসেছে।
এরমধ্যে সিয়াম আবারও বলল,
“ডং এর মতো দাঁড়িয়ে না থেকে যা হিজাব পড়ে আয়।”
তামান্না একটা কথাও বলল না।সিয়ামের দিকে এক মুহুর্ত তাঁকিয়ে থেকেই আয়নার সামনে এসে এক টানে নিজের ওড়না টা খুলে ফেলল।
মাথার ক্লিপ টা খোলে ঠাস করে ড্রেসিং টেবিলে ছুড়ে মাড়ল।
এই শব্দে সিয়াম ফিরে তাঁকাল সামনের দিকে।
আর তখনি তামান্না নিজের হিজাব টা ফ্লোরে ছুড়ে দিয়ে দৌড়ে রোম থেকে বেরিয়ে গেলো।
সিয়াম হা হয়ে দেখলো শুধু।
সে ঠিকঠাক কিছু বুঝে উঠতে পারছে না।
সিয়াম তামান্নাকে ডাকার জন্য রোম থেকে বের হয়ে তাঁকে না দেখে ছাদে চলে যায়।
কারণ তামান্নার যখন কোনো কারণে কোনো মন খারাপ থাকে সে ছাদে যায়।এটা সিয়াম জানে।
কখনো যদি রেজাল্ট খারাপ বা ভাইয়া বকতো তাহলে তামান্না ঠিক এই কাজটাই করতো।
সিয়াম ছাদে গিয়ে দেখে তামান্না সত্যই ছাদে।
এক কোণায় দাঁড়িয়ে আছে সে।
সিয়ামের একটু খারাপ লাগছে।আর যাই হোক তামান্না যে লোক দেখিয়ে চলে না সিয়াম সেটা জানে।
কিন্তু সে অনেকটা মজার ছলেই কথাটা বলে ফেলেছে।
যা সে ভেবে বলে নি।
তবে কথাটা যে মেয়েটার জন্য অপমানজনক হয়েছে সেটা সিয়াম এখন বুঝতে পারছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here