নতুন তুই আমি পর্ব-৪২

0
1698

#নতুন_তুই_আমি#
💜💜💜💜💜💜💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
!
পর্ব:-৪২……………………….
তামান্না বারান্দায় ইজি চেয়ারে বসে আছে।
দিনের আলো কমে আসছে।
সূর্য ডোবাতে খুব বেশি হলে আর বিশ পনেরো মিনিট।
তামান্না সেই আসরের নামায পড়েই এখানে বসেছে।এখনো উঠে নি।
উঠতে মন চাইছেও না তার।
পড়ন্ত বিকালের মিষ্টি রোদ গাছের পাতার উপর যে লাল আলোপ্রভা সৃষ্টি করেছে তার সৌন্দর্য যেন তামান্নাকে মোহিত করছে।
তবে কেনো জানি সে এমন পরিবেশেও বেশ আনমনা।
যদিও কয়েক মুহুর্ত সে নিজের ভেতরের অস্থিরতা আবিষ্কার করতে পারে নি।
কিন্তু পরমুহুর্তেই তার মনে হলো সে যেন সত্যিই বুঝতে পেরেছে কি কারণে তার এতটা ছটফট লাগছে।
তবে বুঝলেই বা কি?
কারণ যে সিয়াম!সে মানুষ টা তো নেই এখন।
কোনো একটা কাজে বাইরে গেছ।
তামান্না আজকাল ঘন্টা খানেক সিয়ামকে না দেখলে কেমন যেনো উতলা হয়ে যায়।
মনে হয় কিছু একটা নেই।
আবার যখন সিয়াম সামনে চলে আসে তখন মনে হয় এইতো সব আছে।
পরিপূর্ণ মনে হয় নিজেকে।
এই মুহুর্তে তামান্নার তার মাম্মাকেও খুব মনে পড়ছে।
মাম্মামের বলা কথাগুলোও ভাবছে সে।
মাম্মাম তো ঠিকই বলতো-তোর প্রতিটা সময় কাটবে সিয়ামের অপেক্ষায়।সিয়ামের সঙ্গ মানেই নাকি থাকবে বিশাল পূর্ণতা!
সত্যিই।মাম্মামের প্রতিটা কথা তার জীবনে এক এক করে প্রতিফলিত হচ্ছে।
তামান্না মুঁচকি হাঁসলো।
ফোন গ্যালারি থেকে সিয়ামের একটা ফটোও বের করলো সে।ফটো টা তে সিয়াম মুঁচকি মুঁচকি হাঁসছে।
ইশশশ!!হাঁসিটা যে তামান্নাস কি ভালো লাগে!
তামান্নার মনে হলো এই ‘কবুল’ শব্দ টা বোধহয় পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী শব্দ।
যে শব্দটা এতো সহজেই আলাদা দুটো মানুষে একত্রে জোড়ে দেয়।একটা পড়িচয় গড়ে তোলে বানিয়ে ফেলে পরষ্পরের অর্ধাঙ্গিনী।
আল্লাহ তা’আলার কি লীলা দুটো মানুষকে সর্বোচ্চ কাছে এনে সবচেয়ে সহজ,মামাময়,মধুর একটা সম্পর্কে বেঁধে ফেলার একটা অভিনব উপায় ‘বিবাহ’ কি মার্জিত করে দিয়েছেন।
কত যে পবিত্রি উপায়!!কত যে মৌহময়!!
ভাবতেই কৃতঙ্গতায় তামান্নার বুক ভরে যাচ্ছে।
পাশের মসজিদ থেকে মাগরিবের আযান ভেসে আসছে।তামান্না উঠে দাঁড়াল।
বারান্দার গ্লাস গুলো লাগিয়ে রোমে চলে আসে সে।ওযু করে নামায আদায় করে শাশুড়ী মায়ের ঘরে যাওয়ার জন্য বের হচ্ছে এমন সময় সিয়াম রোমে ডুকছে।
আর একটু হলে দুজনের ধাক্কা লাগতো।
দুজনেই মুঁচকি হাঁসলো।
তামান্না বের হলো না আর রোম থেকে।
সিয়ামকে দেখে ক্লান্ত লাগছে।সেই দুপুরে বের হয়ে কোথায় যে কি কাজে গিয়েছিলো সেটা তামান্নাকে বলে যায় নি।
আর এখন এসে সে জুতা পায়েই বিছানায় গা এলিয়ে দিলো।
এই জিনিস টা তামান্নার ভালো না লাগলেও সে কিছু বললো না।
তবে পাশে বসে সিয়ামের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো,
“ট্রায়াড??”
সিয়াম চোখ বন্ধ রেখেই জবাব দিলো,
“একটু….”
“ফ্রেস হয়ে রেস্ট নে।ভালো লাগবে।”
“হবো একটু পরে।চুলগুলো একটু জোরে জোরে টেনে দে।”
“হুম…..”
তামান্না চুল টানতে টানতে জানতে চাইলো,
“কোথায় গিয়েছিলি??”
“একটু দরকার ছিলো।”
“সেটা তো যাবার সময়-ই বলেছিস….”
“পরে বলছি।এখন ভালো লাগছে না….”
“আচ্ছা।”
সিয়াম চুপচাপ শুয়ে আছে।তামান্না চুলগুলোও নীরবে টেনে দিচ্ছে।বেশ ভালো লাগছে দুজনেরই।
সিয়াম হঠাৎ বালিশ ছেড়ে তামান্নার কোলে মাথা রাখলো।তামান্না একটু চমকে উঠলো।
খানিকটা শিউরেও উঠে।
তবুও কেউ কিছু বললো না।
তবে সিয়াম যখন তামান্নার কমড়ে হাত রেখে কোলে শুয়েই তামান্নার পেটে ফুঁ দিতে লাগলো তখন বেচারী আর চুপ করে থাকতে পারে নি।
আঁতকে উঠে বলে,
“কি করছিস।”
সিয়াম জবাব দিলো না।পেট থেকে শাড়িটা আলতো করে একটু সরিয়ে দিলো।
তারপর মুখ গুঁজলো সাদা ধবধবে উন্মুক্ত পেটে।
চোখ দুটো বন্ধ করে ফেললো তামান্না।
সিয়াম শাড়িটা একটু নিচে নামিয়ে নিলো।
তারপর একবার মুখ তুলে তাঁকালো তামান্নার দিকে।তামান্না চোখ বন্ধ করে আছে।
দেখে মুঁচকি হাঁসলো সিয়াম।
দৃষ্টিটা সরিয়ে নিলো সে।
চোখ রাখলো তামান্নার পেটে।
নাভীর আশপাশে আঙ্গুল ছুঁইয়ে যাচ্ছে সিয়াম।
আর সেই সাথে কেঁপে কেঁপে উঠছে তামান্না।
সিয়াম আলতো করে একটা চুমু খেলো তামান্নার নাভীতে।তারপর আরোও একটা।
তারপর আরোও একটা।একটা…দুটো…তিনটা…চারটা….আর পঞ্চমবারের টা পড়লো কামড়।
“আওওওওও……”
সিয়াম তৎক্ষনাৎ উঠে বসে হাত দিয়ে তামান্নার মুখ চেঁপে ধরে,
“আরে আস্তে।”
তামান্না বোঁকার মতো তাঁকিয়ে রইলো সিয়ামের দিকে।সে আসলেও আওয়াজটা একটু জোরে করে ফেলেছে।
সিয়াম বললো,
“এতো জোরে এমন সাউন্ড করে???”
তামান্না চোখ নামিয়ে ফেললো।
কী এক কান্ড!!লজ্জার বিষয়!!!
সিয়াম মুখ থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে বললো,
“দরজা খোলা।যদি আব্বু-আম্মু বা রাইয়ানের কানে সাউন্ড টা যেতো!!”
তামান্না মাথা নিঁচু করেই কোনো রকমে বললো,
“ইচ্ছা করে তো আর হয় নি…..”
“হুম।বুঝলাম….”
তামান্না চোখ তুলে তাঁকালো।
বললো,
“তোর দোষেই এমন হয়েছে।নিজে দরজা লাগিয়ে কাজ করতে পারিস নি?”
সিয়াম ভ্রু কুঁচকে তাঁকালো তামান্নার দিকে।
তামান্না মুখের ধাতে কি বলে ফেললো।
সিয়াম অবশ্য দুষ্টুমি বাড়ানোর সুযোগ পেয়ে গেলো।বললো,
“দরজা না লাগিয়েও কিন্তু কাজ করা যায়।”
“কিহ??”
“তুই ই তো কাজ করতে…..”
তামান্না লজ্জায় লাল হয়ে গেলো।সে কি এতো কিছু ভেবে বলেছে নাকি।
অথচ সিয়াম??সে তো এবার পঁচিয়ে মারবে।
সিয়াম নিজের জুতা জোড়া খুলে বিছনায় পা তুলে বসলো।তামান্নার মুখের কাছে মুখ নিয়ে বললো,
“তুই বললে আমি আমার কাজ শুরু করতে পারি।করবো??”
“যাহ্।অসভ্য…..”
তামান্না ছুটে যাওয়ার চেষ্ঠা করলো।তবে পাড়লো না।সিয়াম হাত ধরে ফেলেছে।
“ছাড়,আম্মুর কাছে যাবো।”
“আম্মু তো সারা দিন-ই বাসায় ছিলো।এবার আমি এসেছি।”
“তোর সাথেও সারা দিন ভার্সিটিতে ছিলাম।”
“ভার্সিটতে তো আর রোমান্স করি নি তামান্নু….”
বলেই সিয়াম তামান্নার নিজের পায়ের উপর বসালো।
পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে কাঁধে থুতনী রেখে বললো,
“একটা কথা বলবো??”
“কি??”
“আগে বলতে হবে তুই মন খারাপ করবি না।”
“কি কথা যে আমি মন খারাপ করতে পারি??”
“মন খারাপ করলে কিন্তু বলবো না।”
“কি???বল।”
“কান্নাকাটি করলে মাইর খাবি কিন্তুু….”
“ইশশশ।বল না কি বলবি।এতো পেঁচাচ্ছিস কেনো??”
“তোর বাসায় গিয়েছিলাম।”
তামান্না চমকে উঠলো।
সিয়ামের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে বললো,
“সত্যি??”
“হ্যাঁ।বাবা ফোন করেছিলো।”
তামান্নার মুহুর্তেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো।বললো,
“কই তুই তো আমাকে বলিস নি।আর বাবাও তো আমাকে যেতে বললো না।শুধু তোকে বললো!”
“ঐ।এই কারণেই কিন্তু বলতে চাই নি।”
“নাহ্।ঠিক আছে আমি মন খারাপ করি নি।”
“আচ্ছা।করলে না হয় একটু করলি।”
“বাবা কি কোনো দরকারে ডেকেছিলো না এমনি।”
সিয়াম কিছু একটা ভাবলো।
তারপর বললো,
“নাহ্। এমনি….”
“ও….”
“মন খারাপ করছিস??”
“উমহু….”
“তাহলে প্লিজ যা আমার জন্য এক কাপ কফি নিয়ে আয়।”
তামান্না মুখ ভার করে উঠে গেলো।সিয়াম তাঁকিয়ে রইলো।
তবে সে যে কিছু একটা গোপন করলো সেটা তামান্না বুঝতে পারে নি।
সিয়াম চাইছে না তামান্নার মনটা এই মুহুর্তে আরো খারাপ হোক।তাই বললো না।
পরেও তো বলা যাবে।
সিয়াম ফ্রেস হয়ে এলো।ততক্ষণে তামান্নাও কফি নিয়প এসেছে।
সিয়াম কফিতে চুমুক দিয়েই বললো,
“তুই করে আনলি নাকী??”
“হুম….”
“গুড।স্বাদেই বুঝেছি।”
তারপর কেউ কিচ্ছু বললো না আর।সিয়ামও তামান্নাকে ঘাটালো না।কিছুক্ষণ এভাবেই থাকুক।
!
রাতে ঘুমানোর সময়ও তামান্না গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে।
বাড়ির জন্যই যে তার মন উতলা সিয়াম সেটা ভালো বুঝতে পারছে।
সিয়াম আলতে করে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো তামান্নাকে।
বললো,
“তামান্নু,শীত পড়বে এক-দেড় মাস পড়।তুই কি জানিস আমার এই শীত কালে বউয়ের খুব শখ ছিলো??”
তামান্না কিছু বললো না।
সিয়াম তার হাত টা তামান্নার পেটে চেপে ধরে বললো,
“আমার স্বপ্ন টা এবার পূরণ হলো।সামনের শীতে কম্বলের নিচে আর একা থাকতে হবে না।কারও উষ্মতায় আমিও কম্বলের ভেতর উষ্মতা নিবো।”
তামান্না কিছু না বললেও সিয়ামের শরীরে স্পর্শে তার শরীর সারা দিতে শুরু করছে।
সিয়াম তামান্নার কথার অপেক্ষাষা করলো না।
সে বলতেই থাকলো,
“তারওপর তোর শরীর তো গরম।আমার জন্য সুবিধাই হবে।”
তামান্না ফিরে তাঁকালো সিয়ামের দিকে।
“কি সব বাজে বলছিস?”
“উমহু।বাজে ন।সত্যি…..”
“ছাই….”
সিয়াম মুঁচকি হাঁসলো।
বললো,
“ক্রিম দিলি না আজ??”
“উমহু।ইচ্ছা করছে না।”
“নাইট ক্রিম দেওয়া তোর তো অভ্যাস।”
“আজ দিবো না।”
সিয়াম তামান্নার বালিশের কাছাকাছিই ছিলো।এবার সে তামান্নার বালিশেই মাথা রাখলো।তামান্নার কানের কাছে ফিসফিস করে বললো,
“না লাগিয়েই ভালো করেছিস।ক্রিম লাগালে কি হয় আর??সব তো আমার পেটেই যায়।”
“যাহ্….”
“আাহারে লজ্জাবতী!!!”
বলেই সিয়াম একটানে তামান্নার বুকের কাপড় সরিয়ে নিলো।
তামান্না মর্মাহতে মতে তাঁকিয়ে রইলো শুধু।
সিয়াম মুঁচকি হেঁসে বললো,
“ট্রুলি বলতল ইউ আর লুকিং সো…..”
“চুপ…..”
“বা রে বলিও তো নি!”
“আর বলতে হবে না।”
“একদম পারফেক্ট ফিগার।”
তামান্না লজ্জায় কিছু বলতে পারলো না।
সিয়াম বললো,
“যদিও সব বাচ্চা বাচ্চা।তবে আমার সংস্পর্শে এবার সব এডাল্ট হবে।”
সিয়াম আস্তে কর তামান্নার বুকের উপর মাথা রাখলো।
তামান্নার নিশ্বস ঘন থেকে ঘনতর হচ্ছে।সিয়াম তামান্নার বুক থেকে মাথা তুলে নিজেই আরোহণ করলো তার উপর।
হাত দুটো চাদরে চেঁপে ধরলো
মুখ গুজলো গলায়।ভালোবাসা বইয়ে দিতে লাগলো তানান্নার মাঝে।
খুব বেশী সময় লাগে নি।
তামান্নাও সারা দিতে লাগলো সিয়ামের সাথে।
একটা সময় গভীর নিসঙ্গ রাতের আধাঁর তাদের দুজনের জন্য হয়ে উঠলো পরশ সুখের চাদর।যে চাদরে আবৃত হয়ে ভেসে যাওয়া যা সুখের গভীরতম সমুদ্রে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here