নীল চিরকুট’ পর্ব-১৮

0
3999

#নীল চিরকুট
#লেখনীতে- নৌশিন আহমেদ রোদেলা

১৮.

ঘড়িতে পাঁচটা বাজতে আর চল্লিশ মিনিট বাকি। আরফান ক্লান্ত চোখে ঘড়িতে চোখ বুলাল। দেয়াল ঘড়ি থেকে চোখ সরিয়ে হাতের ঘড়ির দিকে তাকাল। সময়ের হেরফের নেই, পুরোপুরি চারটা বিশ। আরফান ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলে প্রেসক্রিপশনে মনোযোগ দিল। প্রেসক্রিপশন লেখা শেষ করে সামনে বসে থাকা বয়স্ক লোকটির দিকে তাকিয়ে নম্র হাসল। বৃদ্ধ লোকটির মাথায় ধবধবে সাদা চুল। চোখে-মুখে তীক্ষ্ণ চিন্তার ছাপ। এয়ার কন্ডিশনার যুক্ত রুমে বসেও কপালে কয়েক ফোঁটা ঘাম। আরফান প্রেসক্রিপশনটা ঠেলে এগিয়ে দিয়ে শান্ত কন্ঠে বলল,

‘ রিপোর্ট খুব একটা ভালো আসেনি চাচা। এই বয়সে একটু নিয়ম মাফিক না চললে চলে? তবে, এখনই খুব একটা ভয়ের কিছু নেই। সাত দিনের ঔষধ দিয়েছি। ঠিকঠাক ঔষধ খান। ব্যথা কমলে ভালো। নয়তো একজন কার্ডিওলজি স্পেশালিষ্ট দেখাতে হবে। অযথা চিন্তা করবেন না। তেমন কিছু হয়নি। এই বয়সে এসব স্বাভাবিক। কিছুদিন একটু নিয়ম মাফিক চলুন। দেখা যাক কী হয়।’

আরফানের কথায় বৃদ্ধের চিন্তা কিছু কমলো বলে মনে হলো না। বয়স্ক লোকটির পাশে থাকা জোয়ান মতো লোকটি আরও অস্থির হয়ে উঠল। ছেলেটার বয়স পঁচিশের বেশি হবে না। চোখে-মুখে একটা আদর আদর ভাব আছে। ছোট থেকে কোলে কোলে বড় হওয়া ছেলেদের মুখে এই ভাবটা বেশি থাকে। একটু আহ্লাদী ভাব। অল্পতেই অস্থির হয়ে উঠাই এদের স্বভাব। আরফান কাটা কাটা চোখে ছেলেটিকে পর্যবেক্ষন করল। ছেলেটির চোখের দৃষ্টি অস্থির। সে সেই অস্থিরতা নিয়েই প্রশ্ন করল,

‘ এনিথিং সিরিয়াস ডক্টর? উনার এট্যাক ফেট্যাক হওয়ার সম্ভবনা নেই তো? আমি আর দাদু একা বাড়িতে থাকি। হঠাৎ এট্যাক ফেট্যাক হয়ে গেলে ঝামেলা। বাবা জাস্ট খুন করে ফেলবে আমায়।’

আরফান ছেলেটির দিকেই তাকিয়ে ছিল। ছেলেটির কথা শুনতে শুনতে পুরু ভ্রু’জোড়া খানিকটা কুঁচকে এলো। ছেলেটা বেশি কথা বলে। এই বয়সের ছেলেদের অযথা বকবক করা শোভা পায় না। কিন্তু এই ছেলেটাকে পাচ্ছে। ছেলেটির কথায় একটু শিশুসুলভ ভাব আছে। আরফান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চেয়ারে ঠেস দিয়ে বসল। আরফান মেডিসিন ডাক্তার। কার, কখন এট্যাক ফেট্যাক হয়ে যাবে তা তার জানার কথা নয়। তাছাড়া, হার্ট অ্যাটাকটা অধিকাংশ সময়ই আকস্মিক। কিছু কিছু ক্ষেত্রে যে সূক্ষ্ম লক্ষ্মণ দেখা যায় না, তা নয়। লক্ষ্মণ দেখা যায়। রুগী সেই লক্ষ্মণগুলো ঠিকঠাক বলতে পারলে এট্যাকের আগেই কিছু একটা ব্যবস্থা নিতে পারে চিকিৎসক। তাই বলে এভাবে আগাম জানা সম্ভব নয়। আরফান ডাক্তার বলেই তো আর বলতে পারে না, অমুক সাহেব? আপনি শনিবার সকাল দশটায় হার্ট এট্যাক করবেন। আপনার উচিত সকাল ছয়টায় হাসপাতালে এসে বসে থাকা। নয়ত কেল্লা ফতে। বিষয়টা ভাবতেই কেমন অদ্ভুত লাগছে আরফানের। আরফান মৃদু শ্বাস টেনে বলল,

‘ তা বলতে পারছি না। তবে, ঔষধগুলো ঠিকঠাক নিন। আর অযথা চিন্তা-ভাবনাগুলোকে একদম লাল কার্ড দেখিয়ে দিন। ইন-শা-আল্লাহ এমন কিছু হবে না।’

বৃদ্ধ ও তার নাতির সাথে আরও কিছুক্ষণ কথা বলে তাদের বিদায় করল আরফান। তাড়াহুড়ো করে আবারও ঘড়ির দিকে তাকাল, চারটা ত্রিশ। এর মধ্যেই দরজা ঠেলে ভেতরে ডুকল পরবর্তী রুগী। আরফান হাতের কাছের ফাইলগুলো গুছাতে গুছাতে সামনে না তাকিয়েই বলল,

‘ বসুন প্লিজ।’

আগুন্তকঃ নিঃশব্দে বসল। আরফান দীর্ঘশ্বাস ফেলে সামনের দিকে তাকাতেই অবচেতন মনটা খানিক চমকে উঠল। বুকের ভেতরটা পরিচিত প্রশ্নে উথাল-পাথাল হয়ে উঠল, এই মেয়ের এখানে কী? আবারও নতুন কোনো এলিগেশন লাগাতে এসেছে নিশ্চয়? আরফান নিজের অজান্তেই প্রশ্ন করল,

‘ আপনি এখানে?’

নম্রতা ‘ডোন্ট কেয়ার’ ভাব নিয়ে বলল,

‘ ডাক্তার দেখাতে এসেছি।’

আরফান বিরক্ত হয়ে বলল,

‘ ডাক্তার দেখানোর মতো কি হয়েছে আপনার? দেখুন, ফাজলামো করার মতো সময় আমার হাতে নেই। ইউ মে লিভ।’

‘ আরে! বাইরে ভিজিট দিয়ে, এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে, গোটা দু’ঘন্টা অপেক্ষা করে তারপর ডুকেছি। আর আপনি বলছেন চলে যেতে? আশ্চর্য! নিন বসুন, চিকিৎসা করুন।’

আরফানের পুরু ভ্রু জোড়া আরও খানিকটা কুঁচকে এলো। নম্রতার প্রতি সে মাত্রাতিরিক্ত বিরক্ত। কাল রাতেই আরফান প্রতিজ্ঞা করেছে নম্রতার সাথে এ-জীবনে দ্বিতীয়বার কথা বলবে না। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজই এমন অঘটন ঘটে গেল। নম্রতা নামের মেয়েটা একদম সামনে এসে দাঁড়িয়ে গেল। জীবনে প্রথম বারের মতো আরফানের পরিকল্পিত চিন্তা-ভাবনা একদম মাঠে মারা গেল। আরফানের রাগটা আবারও তরতর করে বাড়ছে। আরফান গাল ফুলিয়ে শ্বাস নিল। তারপর নিঃশব্দে টেলিফোনটা তুলে নিল কানে । মৃদু,শান্ত স্বরে প্রশ্ন করল,

‘ আর ক’জন পেশেন্ট বাকি আছে আসাদ?’

ও পাশ থেকে ফ্যাসফ্যাসে গলায় উত্তর এলো,

‘ ছিলো কয়েকজন। তাদেরকে আটটার পর আসতে বলেছি স্যার।’

আরফান হালকা কেঁশে গলা পরিষ্কার করল। ইতস্তত কন্ঠে বলল,

‘ মাত্রই যিনি ঢুকলেন তার কাছে এপোয়েন্টমেন্ট আছে?’

‘ জি স্যার। বারো নাম্বার সিরিয়াল। কেন স্যার? কোনো সমস্যা?’

আরফান ক্লান্ত কন্ঠটা খানিক উঁচু করল। নম্রতা শুনতে পায় এমন করেই বলল,

‘ না। কোনো সমস্যা নেই। আমি আজ আর রুগী দেখব না। বেরুচ্ছি। উনাকে উনার ফিসটা ব্যাক করে দাও।’

আসাদ অবাক হলো। বিনয়ী কন্ঠে বলল,

‘ আচ্ছা স্যার।’

আরফান টেলিফোন নামিয়ে রেখে উঠে দাঁড়াল। চেয়ারের হাতলে থাকা এপ্রনটা হাতে তুলে নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে লাগল। নম্রতার দিকে ফিরেও তাকাল না। নম্রতা কিছুক্ষণ কপাল কুঁচকে তাকিয়ে থেকে বলল,

‘ আশ্চর্য! পেশেন্ট না দেখেই চলে যাচ্ছেন। এটা কেমন বিহেভিয়ার? আপনারা রুগীদের সাথে এমন ব্যবহার করেন? রুগী যদি এখন মরে টরে যায় তার দায় ভার কে নেবে শুনি?’

আরফান ভ্রু কুঁচকে তাকাল। ঘাড়টা হালকা কাত করে বলল,

‘ আপনি মরে যাচ্ছেন নাকি? কই? দেখে তো মনে হচ্ছে না।’

নম্রতা লাফিয়ে উঠে বলল,

‘ বলছেন কি? আপনি এভাবে ফ্লুয়েন্টিলি আমার মৃত্যু কামনা করতে পারছেন? মানবতা বলে কিছু নেই? সাংঘাতিক!’

আরফান এবার চরম বিরক্ত। এই মেয়ের এক্চুয়াল সমস্যাটা কোথায়? ঝড়ের মতো হুটহাট কোথা হতে আছড়ে পড়ে। আরফানের মন-মেজাজকে লন্ডবন্ড করে দিয়ে আবার মুহূর্তেই হাওয়া হয়ে যায়। খানিকটা উদ্ভট, খানিকটা আশ্চর্য! আরফান গাল ফুলিয়ে শ্বাস ছাঁড়ল। যথেষ্ট শান্ত কন্ঠে বলল,

‘ দেখুন মিস. নম্রতা মাহমুদ। এটা আমার চেম্বার কোনো পাগলাগারদ বা নাট্যশালা নয়। আপনি প্লিজ আপনারা ড্রামা বন্ধ করুন এবং বাড়ি যান। আপনার মিথ্যে অসুস্থতার গল্পের থেকে সত্যিকার অসুস্থ দুটো পেশেন্ট আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ক্যান ইউ লিভ নাও?’

নম্রতা যেন আকাশ থেকে পড়ল। বিস্মিত কন্ঠে বলল,

‘ আশ্চর্য! আপনি আমার সাথে এমন ব্যবহার কেন করছেন ডক্টর? আমার অসুস্থতাটা আপনার কাছে নাটক বলে মনে হচ্ছে? বি জেন্ট্যাল ডক্টর আরফান। আপনি তো নিজেই দেখলেন কতটা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম সেদিন। দেখেননি? তারপরও অসুস্থ, অসহায় মেয়ের সাথে এমন ব্যবহার? আর আপনার কী ধারনা? টাকা-পায়সা গাছে ধরে? আমি টাকা-পয়সা খুইয়ে ঢ্যাং ঢ্যাং করে নাটক করতে চলে আসব? তাও বেছে বেছে আপনার চেম্বারে? আপনি কী আমার প্রেমিক? নাকি আমি আপনার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি? কোনটাই তো নয়। আপনাকে দেখার জন্য মারা যাচ্ছি এমন সাংঘাতিক ঘটনাও কখনও ঘটবে না। তাহলে?’

আরফান এবার খানিকটা নরম হলো। এপ্রনটা চেয়ারে ঝুলিয়ে রেখে ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলল। চেয়ার টেনে বসে সন্দিহান চোখে তাকাল। গম্ভীর কন্ঠে প্রশ্ন ছুঁড়ল,

‘ আচ্ছা। আপনার সমস্যা বলুন।’

নম্রতা রহস্যময় হাসল। আরফান গম্ভীর চোখদুটো মেলে বলল,

‘ কী হলো, বলুন।’

কথাটা বলে আরও একবার ঘড়িতে চোখ বুলাল আরফান। নম্রতা ফট করে বলল,

‘ নিষাদ সাহেবের নাম্বারের চিন্তায় জ্বর উঠে গিয়েছি। মনের থার্মোমিটারে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ধরা পড়েছে। আপনি তার নাম্বারটা দিয়ে আমায় জ্বর মুক্ত করুন, ডক্টর।’

আরফান ঘড়ি থেকে চোখ ফিরিয়ে অন্যমনস্ক দৃষ্টিতে নম্রতার মুখের দিকে তাকাল। কপাল কুঁচকে বলল,

‘ জি?’

নম্রতার কথার মূলভাব উদ্ধার করতে আরফানের অন্যমনস্ক মস্তিষ্ক দুই তিন সেকেন্ড সময় নিল। অর্থোদ্বার করার পর চট করেই উঠে দাঁড়াল আরফান। চোয়াল শক্ত করে বলল,

‘ কী! আপনি কী মজা করতে এসেছেন এখানে?’

নম্রতা বেশ সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলল,

‘ একদমই নয়। রোগ সারাতে এসেছি। যেহেতু রোগের ঔষধ আপনার কাছে সেহেতু রোগ তাড়ানোর দায়িত্বটাও আপনার। নাম্বারের চিন্তায় রাতে ঘুমোতে পারছি না। খেতে পারছি না। প্রেশার ফল করছে। তাই ভিজিট দিয়ে নাম্বার নিতে এসেছি। এবারও দিবেন না?’

আরফান অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। এই মেয়ে নির্ঘাত পাগল। আর এই মেয়ের পাল্লায় পড়ে সে রীতিমতো ছাগল। একটা নাম্বারের জন্য এতো কাহিনী করার কোনো মানে হয়? কী এমন সম্পর্ক নিষাদ আর তার? নিষাদের ইতোপূর্বে কোনো গার্লফ্রেন্ড ছিল কি-না মনে করার চেষ্টা করল আরফান। এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না। ছাত্র জীবনে থাকলেও থাকতে পারে কিন্তু তখন তো এই মেয়ের নিতান্তই বাচ্চা থাকার কথা। নম্রতা আবারও একই কথা বলায় বিরক্ত কন্ঠে বলল আরফান,

‘ আপনার ভিজিটের জন্য আমি মারা যাচ্ছি না। বার বার ভিজিট ভিজিট করবেন না। আপনার টাকা নিয়ে আপনি বিদেয় হোন। নাম্বার আমি দেব না, ব্যস।’

নম্রতা নাক-মুখ ফুলিয়ে বলল,

‘ আপনি তো সাংঘাতিক নির্দয় মানুষ। একটা নিষ্পাপ মেয়েকে এভাবে ঘুরাচ্ছেন।’

আরফান বাঁকা হাসল। টেবিলের ওপর খানিকটা ঝুঁকে এসে বলল,

‘ ডোন্ট বি সো সিলি মিস.নিম পাতা। আপনি নিষ্পাপ হলে এই পৃথিবীতে কনভিকটেড কোনো মানুষ থাকবে বলে মনে হয় না। সবাই নিজেকে ইনোসেন্ট বলেই দাবি করবে।’

নম্রতা রাগী দৃষ্টিতে তাকাল। নিম পাতা? নম্রতাকে এই ডাক্তার ফট করে নিম পাতা বানিয়ে ফেলল? নম্রতা নিজেও খানিকটা ঝুঁকে এলো টেবিলে। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,

‘ আপনি নাম্বার দেবেন কি-না বলুন।’

আরফান ড্যাম কেয়ার ভাব নিয়ে বলল,

‘ দিব না।’

নম্রতা বুঝলো, এই লোকের সাথে শক্ত হয়ে লাভ নেই। এই লোক নিদারুণ খেলোয়াড়। নম্রতাকে খুব একটা পাত্তা সে দিবে না। নম্রতার মস্তিষ্ক বিজ্ঞের মত উপদেশ দিল,

‘ চোখ বন্ধ করে অপমান সয়ে নে, নমু। বিপদের সময় অপমান গায়ে মাখতে নেই। তেল দে। এই আরশোলাকে হালকা পাতলা তেল দেওয়া যেতেই পারে। বেঁচে থাকলে শোধ নেওয়ার অসংখ্য সুযোগ পাবি। ডু ইট ফ্যাস্ট।’

নম্রতা মস্তিষ্কের উপদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে আরফানের দিকে মায়া মায়া চোখে তাকাল। মনের ভেতর এক আগ্নেয়গিরি সমান রাগ নিয়ে সে মৃদু হাসল। ইনিয়ে বিনিয়ে বলল,

‘ আমাদের পার্সোনাল প্রবলেমগুলো এখানে টানার কী কোনো মানে হয়?একজন দায়িত্ববান পুরুষ হিসেবে এতোটুকু সাহায্য তো আপনি করতেই পারেন। তাছাড়া, একটা ফোন নাম্বারই তো…’

এমন অসংখ্য নরম কথাতেও আরফানের মন গললো বলে মনে হলো না। সে অস্থির ভঙ্গিতে বারবার ঘড়ি দেখতে লাগল। ঘড়িতে সাড়ে পাঁচটা বাজতেই তাড়াহুড়ো করে উঠে দাঁড়াল আরফান। ব্যস্ত কন্ঠে বলল,

‘ টাইমস্ আপ। আমায় যেতে হবে।’

নম্রতা গো ধরে বলল,

‘ আমার প্রেসক্রিপশন না দিলে আমি যাব না। ভিজিট দিয়ে এসেছি। বিনে পয়সায় নয়।’

আরফান নম্রতার দিকে তাকাল। আবারও ভিজিট ভিজিট করছে মেয়েটা। ভাবভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে আরফানকে সে কোটি টাকা ডোনেশন দিয়ে ফেলেছে। অসহ্য। আরফান একটা কাগজ টেনে নিয়ে কিছু একটা লিখল। তারপর নম্রতার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,

‘ আই ডোন্ট ওয়ান্না মিট ইউ এগেইন মিস. নম্রতা।’

নম্রতা কাগজটা হাতে নিল। খুশি হয়ে বলল,

‘ মি টু।’

শব্দ দুটো উচ্চারণ করেই কাগজের দিকে তাকাল নম্রতা। আরফান ততক্ষণে চেম্বার থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। সাদা কাগজে ইংরেজিতে লেখা শব্দগুলো দেখে চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম হলো নম্রতার। কাগজের ঠিক মাঝখানে লেখা,

‘ You are mad. I don’t wanna meet you again.’

নম্রতা প্রথমে ভীষণ ক্রুদ্ধ তারপর আশাহত দৃষ্টিতে চেয়ে রইল কাগজটির দিকে। রাগে দুঃখে কাগজটি দুমলে মোচড়ে ফেলে দেওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে কাগজের অপর পৃষ্ঠায় থাকা এগারো ডিজিটের নাম্বারটি চোখে পড়ল তার। নম্রতা খুশিতে ঝলমলিয়ে উঠল। শেষমেশ নিষাদের নাম্বারটা পেল সে। সত্যিই পেল? এবার নিশ্চয় জবাব মিলবে? এতো বছরের জমিয়ে রাখা প্রশ্নের জট খুলবে?

#চলবে…

[ বিঃদ্রঃ রি-চেইক করা হয়নি। আরেকটু বড় হতো পর্বটা কিন্তু লেখার সময় হলো না। ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here