পাগল প্রেমিকা পর্ব-২৭

0
655

#পাগল_প্রেমিকা
#sharmin_akter_borsha (লেখিকা)
#পর্ব_২৭
________
কোনো ভাবেই মানতে পারছে না। একবার মনে হচ্ছে রিমনের কথা বিশ্বাস করতে পরক্ষণেই আবার মাথা বলছে সে মিথ্যে বলছে বিশ্বাস করলেই ঠোকে যাবে।
সবাই একসাথে খেতে বসেছে সবাই কে খাবার সার্ভ করছে আর আনমনে ভাবছিলে তখনই অপূর্ব বৃষ্টির হাতে চিমটি কেটে বলল…

‘ কিরে তোর খেয়াল কোথায় দেখ তো কি করছিস ‘

অপূর্বর চিমটি তে বৃষ্টি বাস্তবে ফিরে আসে আর থুতুমুতু খেয়ে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে…

‘ কি করলাম? ”

‘ কি করিসনি তুই দেখ আমার খাবার প্লেটে ডাল দিয়ে তুই প্লেট ভরে ফেলছিস। ডাল চেয়েছি তোর থেকে আমি চেয়েছে নাহিদ আর দিচ্ছিস আমাকে। ‘ এক বস্তা বিরক্ত নিয়ে বলল।

‘ স্যরি আমি খেয়াল করিনি ‘ শান্ত ও নিচু কন্ঠে বৃষ্টি বলল।

বৃষ্টির হাবভাব অপূর্বর কাছে ঠিক লাগছে না। এমন ভাব বৃষ্টি কখনোই করে না। কিছু বললে তো হিংস্র বাঘিনীর মতো ক্ষিপ্ত হয়ে যায় নানান কথা শোনায় আর সে এখন চুপ করে আছে কিছু না বলে স্যরি বলছে ব্যাপার টা ঠিক সুবিধার লাগছে না অপূর্বর কাছে বৃষ্টি কে দেখতেও তার কাছে বেশ চিন্তিত লাগছে।
নাকি বিয়ে হয়েছে বলে পরিবর্তন ঘটেছে কথা বলতে হবে বৃষ্টির সাথে তার।
তখনই বা অপূর্বর হাতে খুঁচা দিয়ে বলে উঠে..

‘ খাওয়া বন্ধ করে কি ভাবছিস? ‘

‘ কাব্য লক্ষ্য করে দেখ বৃষ্টি কে কেমন অন্য মনস্ক উষ্কখুষ্ক লাগছে না? ‘

‘ আরে বিয়ের পর সব মেয়েকেই এমন লাগে কাল চলে যাবে তাই হয়তো মন খারাপ চিন্তা করিস না তুই খা ‘

অপূর্ব আর কথা বাড়ালো না তবে খাবার প্লেটের দিকে তাকাতেই মুখ কালো করে অসহায়ের মতো তাকিয়ে রইল। এই ডাল দিয়ে প্লেট ভরে ফেলছে সমুদ্র বানিয়ে ফেলছে।

পুরো দিন রিমনকে এড়িয়ে চলেছে বৃষ্টি তবে রিমন দু এক বার বৃষ্টি কে বুঝানোর জন্য পেছন পেছন রুমে আসলে বৃষ্টি উপেক্ষা করে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
____

পুরো বিকাল থেকে বোন ও ভাইদের সাথে মাতিয়ে আড্ডা দেয়। রাতে খাবার খেয়ে সবাই রুমে চলে যায়। বিছানার উপর আধশোয়া অবস্থায় বসে নোখ কামড়াচ্ছিল রিমন তখন বৃষ্টি একটা হোয়াইট টি-শার্ট পরে বের হয়ে আসল। রিমন একবার তাকিয়ে মাথা নত করে ফেলে।
বৃষ্টি চুল বাঁধতে বাঁধতে পাশে শুয়ে পরল টু শব্দ টিও করল না। রিমন অবশ্য কথা বলার আগ্রহ জাগিয়ে আবার নিজের মধ্যেই ধমিয়ে ফেলে।

মাঝ রাতে ফোন রিং হচ্ছে মাথার কাছে থাকার কানে যেতেই ঘুম ভেঙে গেলো।
ঘুম পুরো পুরি ভাঙ্গেনি ঘুমের ঘোরে থেকে নীল হাত দিয়ে মোবাইল নিয়ে কানে লাগালো। ভেবেছিল ওর মোবাইল তাই নিয়ে নিছে। কল রিসিভ করে কানে দিতে অপর পাশ থেকে বলে উঠে…

‘ বেবি তুমি ভুলে গেছো আমাকে? জান আমি তোমাকে সত্যি অনেক ভালো বাসি প্লিজ। আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না প্লিজ বুঝার চেষ্টা করো.. ‘

এক নজর রিমনের দিকে তাকালো তারপর বিছানা থেকে নেমে বেলকনিতে চলে গেলো। রাগী কন্ঠে বলল..

‘ ল*জ্জা করে না যত সব বে*হায়া মেয়ে মাঝরাতে একজন বিবাহিত পুরুষকে কে কল দিয়ে বিরক্ত করতে? ‘

‘ না করে না কারণ আমি তাকে ভালোবাসি ‘ ফোনের বিপরীতে থাকা মেয়েটা বলল।

‘ তুঔ চিনিস আমাকে তুই জানিস আমি কে তোর ধোরে পা ড়া দিয়া তোর জিহ্বা টেনে ছিড়ে নিয়ে আসবো। এত সাহস তুই আমার জামাইয়ের দিকে নজর দেস। ফর দ্য এই নাম্বার কল দিলে তোর নাম্বার আমি আমার চাচ্চুকে দিয়ে দেবো জানিস আমার চাচ্চুকে এ.সি.পি ভুলেও জেনো কল না আসে। ‘

বলে কল কেটে দেয়। পেছনে ঘুরতে দেখে দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে রিমন বৃষ্টি তা দেখে তোয়াক্কা না করেই রুমের ভেতরে চলে গেলো। রিমন দাড়িয়ে থেকে মুচকি হেঁসে বিছানার অপর পাশে গিয়ে শুয়ে পরে।
_____

রিমনকে সামনে দেখলেই বৃষ্টি কুঁচকে ফেলে কপাল ভাজ করে অন্য দিকে তাকিয়ে থাকে যা রিমনের মোটেও দেখতে ভালো লাগেনা।
আজই তাদের ফিরে যেতে হবে দেখতে দেখতে দু’দিন কেটে গেছে। সবাই বিস্মিত হয়ে গেল, বৃষ্টি কে জরিয়ে ধরে কান্না করতে করতে বিদায় দিলো।
গাড়ি চলছে তার আপন গতিতে আঁড়চোখে রিমন দু’বার তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নেয়।
এলাকার মোড়ে গাড়ি যেতেই রিমন ড্রাইভার কে গাড়ি থামাতে বলল..

ড্রাইভার গাড়ি ব্রেক করলে। রিমন গাড়ি থেকে নামে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে অহনা। রিমন গাড়ি থেকে নামলেই দৌঁড়ে এসে রিমন বলে গায়ে হেলে পরে। ভ্রু কুঞ্চিত করে তাকিয়ে আছে শুধু কোমড় থেকে পা পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। তারা খুব হেঁসে হেঁসেই কথা বলছে যা বৃষ্টি ভেতরে বসেই শুনতে পারছে রিমন অহনাকে উদ্দেশ্য করে বলল…

‘ তুই কি কিছুদিন থাকবি নাকি আবারও বেক করবি। ‘

‘ না রে কিছু দিন থাকবো’ অহনা বলল।

‘ ও গ্রেট, তাহলে চল আমার বাড়িতেই আড্ডা দেওয়া যাবে? ‘

‘ যাওয়াই যায়। By the way, শুনেছি বিয়ে করেছিস? ‘

‘ হুম ওই এবার দেশে আসার পর আম্মু জোর করেই বিয়ে দিয়ে দিলো। ‘

‘ বয়স তো আর কম হচ্ছে না একা একা বিয়ে না করলে জোর তো করবেই। ছাড় এইসব কথা বল বউ কোথায় দেখি তাকে? ‘ অহনা বলল।

‘ গাড়ির ভেতরে ‘

‘ তুই সামনে দাঁড়িয়ে আছিস কেন সর সামনে থেকে! ‘

কথাটা বলে রিমনের এক হাত ধরে টান দিয়ে গাড়ির দরজার সামনে থেকে সরিয়ে দিলো। নিজেকে গাড়ির দিকে একটু ঝুঁকে ভেতরে তাকালো।
মাথা নত করে বসে আছে অহনাকে দেখেই সালাম দিলো বৃষ্টি…

‘ আসসালামু আলাইকুম ‘

অহনার বৃষ্টির দিকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে দেখতে সালামের উত্তর নিলো।

‘ ওয়া-আলাইকুমুস সালাম ‘

গাড়ির দরজা আটকে দিয়ে রিমনকে উদ্দেশ্য করে বলল।

‘ দোস্ত ভালোই তো আগলে রাখিস আকাশের চাঁদ পেয়েছিস। খুবই সুন্দর মনে হচ্ছে আমারই নজর লেগে যাবে। ‘

‘ খবর দার আমার বউয়ের দিকে নজর দিবি না। ‘

‘ ইশশ এখনই এত জ্বলছে বাকি দিন তো পরেই আছে। ‘
‘ আর নয়তো কি জ্বলবে না আমার দশটা না পাঁচ টা না একটা মাত্র.. ‘

‘ গার্লফ্রেন্ড তো ছিলো হিসাব ছাড়া ‘ অন্য দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলল।

‘ কি বললি? ‘ রিমন।

‘ কিছু না। ‘ অহনা।

‘ শুনেছি কিন্তু আমি। ‘

‘ শুনেছিস যখন তাহলে আবার জিজ্ঞেস করছিস কেন? ‘

‘ তোর সাথে কথা বলে পারা যায় না। কথা না বলে গাড়িতে উঠ। আমাদের সাথে বাড়ি যাবি। ‘

‘ কিন্তু রিমন ‘

‘ কোনো কিন্তু না গাড়িতে উঠ.. ‘

এক প্রকার ঠেলে ঠুলে গাড়ির মধ্যে বসিয়ে নিজেও বসলো ড্রাইভার কে গাড়ি স্টার্ট দিতে বলল অহনা রিমনকে থামিয়ে দিয়ে বলে উঠে…

‘ মিমিয়া কে কি এখানেই রেখে যাবো ওকে আসতে তো দে। ‘

‘ মিমিয়া! মিমিয়া তোর সাথে আসছে আগে কেন বলিসনি?’

‘ তুই বলার সুযোগ দিলে তো বলতাম। ‘

গাড়ির উইন্ড এর উপর আঙুল দিয়ে টোকা দিচ্ছে বিরক্ত হয়ে দরজা লক খুলে দেয়। মিমিয়া গায়ে পরা মেয়ে দরজা খুলে রিমনের সাথে গেষে বসে আর বলে..

‘ বেবস তুমি অন্য মেয়েকে বিয়ে করে নিয়েছো কেনো? আমি কি মরে গেছিলাম নাকি? ‘

রিমন: 🙄 এই ভাবেই চোখ উপরে তুলে তাকিয়ে আছে।

অহনা, ‘ মিমিয়া ‘

মিমিয়া: উফফ আপু তুমি চুপ করো তো’

বলেই হাত রাখল রিমনের হাতের। যা উপস্থিত বৃষ্টি কে বিস্মিত করল। চোখ বেরিয়ে আসার মতো উপক্রম তো তখনই ঘটল যখন রিমনের কাঁধের উপর মাথা রেখে বকবক করছে মিমিয়া। দুই হাত মুঠ করে কচলাচ্ছে। রাগে অগ্নিকান্ড হয়ে গেছে চোখ। ঠোঁটে ঠোঁট চেপে চোখ বন্ধ করে রেখেছে অহনা হয়তো বৃষ্টির দিক টা বুঝতে পেরেছে। কিন্তু মিমিয়া কারো কথার ধার ধারেনা খুবই অদ্ভুত একটা মেয়ে।

রিমন ওকে শুধুই বন্ধু মনে করে সেটা ও ভালো করেই জানে তবুও নচ্ছার গিরি করে। একটা এত যে এত বেহায়া হয় সেটা মিমিয়া কে না দেখলে জানাই হতো না অহনার। মিমিয়া হচ্ছে অহনার খালাতো বোন তবে নাম টার সাথে কোনো মিল নেই তার। রিমনের জন্য বড্ড পাগল। কিন্তু রিমন তাকে পছন্দ করে না এটাও মিমিয়া জানে তবুও রিমনের সাথে ঘেষাঘেষি করে। কোথাও দাঁড়িয়ে থাকলে গা ঘেষে গিয়ে দাড়াবে বসে থাকলে পাশে গিয়ে বসবে সুযোগ পেলে জরিয়ে ধরে।
রিমন অনেকবার মিমিয়াকে বুঝিয়ে ছিল ও যে তাকে যায় না কিন্তু সে বুঝতেও নারাজ।
______
বাড়ি পৌঁছে সবার সাথে কথাবার্তা বলে নিজের রুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে।
রাতে ডাইনিং টেবিলে, বৃষ্টি রিমি দুজনে খাবার আনছিল কিচেন থেকে বাকিরা সবাই টেবিলে চেয়ার টেনে বসে গেছে। সব কিছু টেবিলের উপর সাজিয়ে রেখে যখনই রিমনের পাশে চেয়ারে বসতে যাবে হুট করে এসে মিমিয়া চেয়ার টায় বসে পরল। ইচ্ছে তো করছিল ঠাসস করে কানের নিচে একটা বসিয়ে দিতে কিন্তু এত মানুষের সামনে শুধু চেয়ারে বসার জন্য তো আর থাপ্পড় মারতে পারে না সবাই কি ভাববে? নিজের রাগ নিজের মধ্যে দমিয়ে নেয়। হেঁটে মা’র পাশের চেয়ার টায় বসে যায় সবাই এক সাথে খাওয়া শেষ রুমে চলে যায়। বৃষ্টি রুমে যেতেই জেনো আকাশ থেকে ভাজ এসে পরল সোজা বৃষ্টির মাথায়। রিমন সোফায় বসে ল্যাপটপে কাজ করছে। আর মিমিয়া পাশে বসে চুলে হাত বুলাচ্ছে। তড়িঘড়ি করে ওদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো হাত ধরে টান দিয়ে পাশ থেকে উঠিয়ে দিলো আর বলল।

‘ বের হও আমার রুম থেকে.. ‘

রিমন উঠে দাঁড়িয়ে বলল, ‘ আহ এমন বিহেভ করছো কেনো ও আমাদের গেস্ট, গেস্টের সাথে এমন বাজে বিহেভ করছো। ‘

বৃষ্টি বলল, ‘ গেস্ট গেস্টের মতো থাকুক না অন্যের বরের সাথে এত কিসের তার হুলাহুলি? ‘

মিমিয়া ভ্রুকুটি কুঞ্চিত করে বেশ কিছুক্ষণ দাঁত কিলবিল করে বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। অবশ্য রিমন মনে মনে এটাই চাচ্ছিল শুধু বৃষ্টি কে বুঝতে দেয়নি।
মিমিয়ার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘ নষ্টা! ‘

‘ কাকে বললে? ‘
‘এখানে আপনি ছাড়া অন্য কাউকে তো আমি দেখছি না। তাই আপনাকেই বলেছি সিম্পল। ‘

‘ আমি কি করেছি? ‘

‘ উঁহু আপনি তো কিছুই করেন মা শুধু শুধু মেয়েরা আপনার উপর এসে **** পরে ”

রিমন: নিশ্চুপ!

বৃষ্টি আলমারির সামনে গেলো। আলমারি খুলে স্বস্ত হয়ে রইল কি দেখছে এইসব। আলমারিতে ওর রাতে পরার কোনো শার্ট টপস গেঞ্জি কিছুই নেই গেলো কোই সব? দরজা লাগিয়ে মাথা ঘুরি রিমনের দিকে তাকালো আর রাগ মিশ্রিত কন্ঠে দাঁত চিবিয়ে চিবিয়ে প্রশ্ন ছুড়ল….

‘ আমার ড্রেস কোথায়? ‘

‘ ওয়াশরুমে দেখতে পারো। ‘ রিমন ল্যাপটপে চোখ রেখেই বলল।

বৃষ্টি ছুটে ওয়াশরুমের ভেতরে গেলো। বালতি ভর্তি ওর সব জামা ভিজিয়ে রেখেছে।
কোমড়ে হাত রেখে দাড়িয়ে কন্ঠ কঠোর করে বলল..

‘ ওইগুলো ভিজিয়ে ছেন কেন? এখন আমি পরবো কি? ‘

‘ যাতে না পরতে পারো তাই ভিজিয়েছি ‘

‘ কেন ভিজিয়েছেন?’

‘ কতবার বলেছিলাম আমার সামনে ওইসব ছোটো জামা পরে না আসতে শোনোনি তাই বাধ্য হয়ে করেছি। ‘

‘ আপনি কি ভেবেছেন শুধু ভিজিয়ে দিলেই আমার পরা বন্ধ হয়ে যাবে কিছুতেই না আমি শার্ট পরবো আর পরেই ঘুমাবো। ‘

‘ ওও, ভেজা গুলোই পরবে ওকে সমস্যা নেই তবে আমার বেডে ভেজা শার্ট পরে শুতে পারবে না মনে রেখে। ‘

‘ আমি আপনার সাথে শুতে চাইও না.. ”

‘ আমার সাথে শুতে বলিনি বেডে শুয়ার কথা বলছি। ‘ কথাটা বলে মেকি হাসি দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।

‘ নষ্টা ‘
_______
ফোনে কথা বলতে বলতে রুমে ঢুকল তবে কোথাও বৃষ্টি কে দেখতে পেলো না ভেবেই নেয়। ও রুমে নেই, কানে ব্লুটুথ লাগিয়ে ফোন ডেস্কের উপর রেখে কথা বলছে আর ল্যাপটপে কাজ করছে। এমন সময় বৃষ্টি বেলকনি থেকে বের হয়ে আসল। দরজা চাপাতে নিলে একটু শব্দ হয় তাতে রিমন মাথা তুলে এক নজর সামনে তাকায়। কি জেনো একটা লক্ষ্য করল সেটা ভালো ভাবে দেখার জন্য আবার তাকালো।
তাকিয়ে প্রশ্ন ছুড়ল…

‘ তুমি আবারও শার্ট পরেছো? ‘

‘ আপনি কিভাবে জানলেন স্যার আমি শার্ট পরেছি কেবিনের মধ্যে কোথাও সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে রাখেননি তো?’

”শাট আপ আমির! আমি তোমাকে পরে কল বেক করছি। ‘

কল কেটে দিয়ে সোফা থেকে উঠে বৃষ্টির সামনে দাড়িয়ে বলল।

‘ তোমার সাহস হয় কি করে আমার শার্টে হাত দেওয়ার আবার সেটা পরিধান করার? ‘

‘ আপনার যেভাবে সাহস হয়েছিল আমার শার্ট টপস গুলো পানিতে ভেজানোর ওইভাবেই হয়েছে। ‘

‘ তুমি খুব জেদী? ‘

‘ আজকে জানলেন বুঝি? ‘
_____

এদিকে বৃষ্টির জেলাসি দিন দিন মিনিটে মিনিটে বেড়েই চলেছে মিমিয়া রিমনের থেকে সব সময় চিপকে থাকে আর সেও কিছু বলে না। এখন সে মুখে যতই বলুক রিমনকে ভালোবাসে না। তাই বলে কি সেটা সত্য হয়ে যাবে নাকি? এক তো ভালোবাসার মানুষ দ্বিতীয় তো জামাই এখন চোখের সামনে নিজেরই জামাইয়ের সাথে অন্য একটা মেয়ে মাতামাতি করছে সেটা কিভাবে সহ্য করবে?
__________
রাত প্রায় ১১টা বাজে রিমন হুট করে রুমে ঢুকে চেঞ্জ করতে বাথরুমে চলে গেলো। দেখে তো মনে হচ্ছে কোথাও যাবে কিন্তু বৃষ্টি কে সে কিছু বলল না। বৃষ্টি ওকে কিছু জিজ্ঞেস করল না। সোজা রুম থেকে বের হয়ে হল রুমে চলে গেলো সেথায় গিয়ে সবাই কে এক জোট দেখে সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতেই প্রশ্ন ছুড়ল…

‘ তোমরা সবাই এক সাথে কোথাও যাচ্ছো নাকি? ‘

নিলয়/অভ্র/শুভ: আরে বৃষ্টি কেমন আছো?

রিমি/ সোহান: বৃষ্টি কি ভাবি বল।

নিলয়/ অভ্র/ শুভ: সরি ভাবি!

বৃষ্টি: সবাই মিলে কোথায় যাচ্ছো? রিমি আপু সোহান ভাইয়া তোমরাও কি যাচ্ছো নাকি?

রিমি: হ্যাঁ আমরা সবাই এতদিন পর একত্র হয়েছি তাই সারারাত ক্লাবে পার্টি দেবো।

বৃষ্টি: আমিও যাবো তোমাদের সাথে তাছাড়া তোমরা সবাই চলে গেলে আমার একা একা ভালো লাগবে না আর রাতে ঘুমও আসবে না আমিও যাবো প্লিজ।

সোহান: আচ্ছা যাও তারাতাড়ি গিয়ে রেডি হয়ে আসো!

বৃষ্টি: পাঁচ মিনিটে যাচ্ছি দশ মিনিটে আসছি।

বলে দিলো দৌঁড় উপস্থিত সকলে বৃষ্টির কথায় হেঁসে ফেলল। সিঁড়ি দিয়ে দৌঁড়ে যাচ্ছে তখন নামছিল রিমন। এভাবে দৌঁড়াতে দেখে অবাক হয় নিচে এসে সবার কাছে জানতে চাইলো এভাবে ছুটল কেনো?

রিমি: ও যাবে আমাদের সাথে!

রিমন: ও গিয়ে কি করবে আমাদের সাথে?
সোহান: কেন ও রিমি অহনা মিমিয়া জিনা আর বাকি মেয়েদের সাথে থাকবে সমস্যা কোথায় ওরাও তো যাচ্ছে।
রিমন: ভাইয়া তুমি বুঝতেছো না ও দেখো বোরখা পরে আসবে আর বোরখা পরে কোন মেয়ে নাইট ক্লাবে যায় ওকে নিতে হবে না ও বরং বাড়িতেই থাকুক।
রিমি: রিমন বেশি বেশি বলছিস।
রিমন: আপু!

বেশ কিছুক্ষণ তাদের সাথে কথা কাটাকাটি হল রিমনের কিন্তু তারা তাদের কথা থেকে একচুল ও নড়লো না। বৃষ্টি যখন যেতে চেয়েছে ওকে নিয়ে যাবেই।

রেডি হয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামছে সবার মুখ হা হয়ে গেছে। সাদা গায়ে কালো গোলজামা ঝকঝক করছে হাঁটু সমান জামা চুল গুলো ছাড়া চোখে গাঢ করে কাজল ঠোঁটে লাল লিপস্টিক দেখতে মাশাআল্লাহ কোনো হুর পরীর থেকে কম লাগছে না। সবাইকে পেছনে তাকিয়ে থাকতে দেখে পেছনে তাকালো। তার চোখও আটকে গেলো। পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখল সবার সামনে এসে বলল।

‘ আমি রেডি চল। ‘

রিমি: কি রে কি বলেছিলি কি পরে আসবে বোরখা?
রিমন: ———–
বৃষ্টি: কি…..

সোহান: কিছু না সবাই চলো।

বাড়ির বাহিরে দুইটা গাড়ি ফুল হয়ে গেছে বেঁচে আছে তিনটা বাইক মানুষ ৭জন। প্রথম বাইকে অভ্র উঠে পেছনে নিলয় আর শুভ, দ্বিতীয় বাইকে আহাদ উঠে বসেছে তবে পেছনে যার বসার জন্য সিট রেখেছে সে গিয়ে এখনও বসেনি। তৃতীয় বাইক রিমনের তবে সে সবার থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে ফোনে কথা বলছে যাওয়ার সময় বলে গেছে ২ মিনিট তবে এতক্ষণে পাঁচ মিনিট হয়ে গেছে। কথা শেষ করে ফোন পকেটে গুঁজে বাইকে উঠে বসল। বাইক স্টার্ট দিলো তখনই পেছন থেকে লাফ দিয়ে বাইকের পেছনে উঠে বসতে নিলে বৃষ্টি মিমিয়ার হাত ধরে হিচকা টান দিয়ে নিজের সামনে দাঁড় করিয়ে বলে…

‘ বৃষ্টি: একটা সিঙ্গেল ছেলের বাইকের পেছনে উঠার অধিকার চারজনের আছে আর তারা হলো… ১, তার মা অথবা বাবা/ ২, তার ভাইবোন/ ৩, তার ছেলে বন্ধু বান্ধব/ ০৪, মেয়ে বান্ধবী।
আর একজন বিবাহিত পুরুষের বাইকের পেছনে সবার অধিকার শুধু তিনজনের আছে, ১, বাবা/মা ২, তার স্ত্রী ৩, ছেলে বন্ধু।
মিমিয়া তুমি তার মা-বাবা নও না তার ছেলে ফ্রেন্ড আর না তুমি তার স্ত্রী। তো কেনো লাফিয়ে তার বাইকের পেছনে বসতে যাচ্ছিলে। ভুলে যেও না সে সিঙ্গেল না তার স্ত্রী আছে আর তোমার সামনেই দাড়িয়ে আছে।

কথাটা বলে মিমিয়ার হাত ছেড়ে দেয় এতক্ষণ সবাই বৃষ্টির কথাই শুনছিল। বৃষ্টি বাইকে রিমনের পেছনে উঠে বসতে রিমন বাইক স্টার্ট দেয় আবারও চলে গেলো তার সাথে অভ্রও বাইক স্টার্ট দেয়। পেছনে রইল আহাদ আর লামিয়া। আহাদ বাইক স্টার্ট দিতে দিতে মিমিয়ার উদ্দেশ্যে বলল…

আহাদ: মিমু তুই কি যাবি আমার সাথে নাকি আমি চলে যাবো?

মিমিয়ার মুখের অবস্থা দেখার মতো না কতগুলো মানুষ আছে তারা রেগে গেলে দেখতে মোটেও ভালো লাগে না। মিমিয়া ও তেমন ওকে রাগলে ভালো দেখায় না। রাগে গজগজ করতে করতে আহাদের বাইকের পেছনে গিয়ে বসল… মনে মনে বলল…

‘ আমাকে এভাবে অপমান করার শাস্তি আমি তোমাকে দেবো বৃষ্টি ‘
______

নাইট ক্লাব…
সবাই বেশ আনন্দ করছে নাচানাচি করছে কয়েকজন ড্রিংকস করছে বৃষ্টি বসে বসে দেখছে এটা ছাড়া ওর এখানে করার মতো কিছুই নেই। কয়েকজন লোক অবশ্য তাদের সাথে ডান্স করার জন্য বৃষ্টির কাছে প্রস্তাব নিয়ে এসেছিল বৃষ্টি তাদেরকে প্রত্যাখান করে দিলে তারা চলে যায়। এখানে এসেছে প্রায় এক ঘন্টা হয়ে গেছে বসে বসে ঘুমে ঢুলে পরছে এমনই সময়ে ফোনটাও কাঁপতে শুরু করে। ফোন চোখের সামনে নিয়ে আসলে আবছা আবছা দেখছে হাত দিয়ে চোখ কয়েক সেকেন্ড চেপে ধরে রাখলে স্বাভাবিক হয়ে যায় অতিরিক্ত ঘুম পেলে যায় হয়। আবারও ফোনের দিকে তাকালে দেখে আননোন নাম্বার থেকে কল আসছে। কল টা রিসিভ করে ‘ হ্যালো ‘ বললেই অপর পাশ থেকে কিছু একটা বলে আর সেটা শুনেই বৃষ্টি দৌঁড়ে ক্লাব থেকে বের হতে লাগল তবে অনেক মানুষ তাই ঠেলাঠেলি করেই যেতে হচ্ছে। ক্লাবের বাহিরে সম্পূর্ণ ফাঁকা সামনে পেছনে ডানে বামে কেউ নেই। তখনই একজন মধ্য বয়স্ক লোক ছুটে এসে বৃষ্টির হাত ধরে ফেলে আর বলতে লাগে।

‘ ওই খানে ওই খানে একটা বাড়ি আছে ওই খানে যেও না গেলেই মরবে যেও না. ‘
কথাটা বলে হাত ছেড়ে দিয়ে লোকটা অন্য দিকে অন্ধকারে তলিয়ে যায়। আবারও বৃষ্টির ফোনে রিং হচ্ছে কল রিসিভ করলে বলে ‘ তারাতাড়ি আসো নয়তো তোমার স্বামীকে বাঁচানো যাবে না। ‘

‘ আমি এখনই আসছি ‘

কল কেটে দিয়ে ফোনটা পার্সের মধ্যে গুঁজতে নিলে তারাহুরোর মধ্যে ফোন মাটিতে পরে যায়। সেদিকে খেয়াল ছিল না। দিলো আবারও দৌঁড় কার না কার নাম্বার সেটা যাচাই পর্যন্ত করেনি কে হতে পারে কোথা থেকে কল দিয়েছে। রিমনের বিপদ হয়েছে শুনে দৌঁড়ে আসে। আসার আগে একবার ক্লাবে খুঁজে দেখলেই পারতো কিন্তু সেটা তখন বৃষ্টির মাথায় আসেনি। রাস্তার মধ্যখানে যেতেই একজন লোক পেচন থেকে বৃষ্টির মুখে চেপে ধরল। বৃষ্টি অনেক ছোটাছুটি করে কিন্তু হেতে বিপরীত হয় লোকটা বৃষ্টি কে নিজের দিকে ঘুরিয়ে ঠাসস করে গালে এক চড় মারে যার ফলে তাল সামলাতে না পেরে মাটিতে পরে যায়। ঠোঁট কেটে রক্ত বের হচ্ছে বৃষ্টির এক হাত শক্ত করে ধরে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে। অনেক কাঁদছে চিৎকার করছে কিন্তু কেউ শুনতে পারছে না। রাস্তায় এত রাতে কেউ নেই শুনবে কে আর দেখবে কে তবুও এই অন্ধকার ও নির্জন রাতে এভাবে বৃষ্টি কে নিয়ে যেতে চারটি চোখ দেখছে। একজনের চোখের মধ্যে খুশির জ্বলক আরেক জনের পানি। বৃষ্টি কে টেনে একটা পুরানো বাড়ির মধ্যে ঢুকিয়ে দিলো বৃষ্টি কে ছুড়ে ফ্লোরে ফেলল কপালে লেগে অনেকটা জাগা কেটে রক্তক্ষরণ হচ্ছে । লোকটা বৃষ্টি কে ওই অবস্থা তেই রেখে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলেন। বাহির থেকে দুইজন বাড়ির চারদিকে কেরাসিন তেল ঢালতে লাগল বাড়ির দেয়ালে অন্তিমে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিলো। লোকটাকে তার টাকা বুঝিয়ে দিলো সে চলে গেলো। বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পৈশাচিক হাসি হাসতে শুরু করল। ভেতর থেকে বৃষ্টি চিৎকার করে কাদছে সাথে সাহায্য চাইছে কিন্তু এ ডাক কারো কান পর্যন্ত যাচ্ছে না। আগুনের কালো ধোঁয়া নাক দিয়ে যাচ্ছে অনেক কষ্ট হচ্ছে ফ্লোটে ধপ করে বসে পরে চোখ জ্বলছে চোখ দিয়ে পানি পরছে অনবরত কাশি শুরু হয়েছে। বাঁচার আশা বৃষ্টি ছেড়ে দিয়েছে চোখ দু’টো নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে আর পারছে না তাকিয়ে থাকতে চোখ বন্ধ হয়ে উল্টো দিকে মাটিতে পরে যায় পুরো বাড়িতে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে তার পৈশাচিক হাসি ও থেমে গেলো। কারো পায়ের চলে যাওয়ার আওয়াজ হচ্ছে।

ওইদিকে ক্লাবের মধ্যে রিমির হঠাৎ করে বৃষ্টির কথা মনে হলো। ক্লাবে কোথাও খুঁজে পেলো না সবাইকে বলল কিন্তু কেউ বৃষ্টির খবর জানে না। রিমন সবার উপর ক্ষিপ্ততা প্রকাশ করে জানালো।

‘ আমি বলেছিলাম না আনতে বৃষ্টি এইসব জায়গায় কমফোর্টেবল নয়। এখন কোথায় খুঁজবো? ‘

ক্লাবের মধ্যে কোথাও পায়নি খুঁজে নাম্বারে কল দিলেও বলছে সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। রিমন বিস্মিত হয়ে গেল মনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে, রাতে একস ঘুমাতে যে মেয়ে ভয় পায় সে এত রাতে একা কোথায় যাবে কোনো বিপদ হয়নি তো? না না এইসব আমি কি বাজে চিন্তা করছি বৃষ্টির কিছু হয়নি.. রিমন নিজেই নিজের সাথে বিড়বিড় করছে।

সবাই মিলে ক্লাবের বাইরে যায়। ক্লাব টা একটু নির্জন জায়গার মধ্যে নির্মাণ করেছে। সোজা রাস্তা আর চারদিকে শুধু জঙ্গল বড় বড় গজারি গাছ। আশে পাশে কাউকেই দেখা যাচ্ছে না সবাই বেশ চিন্তিত..
রিমন আহত কন্ঠে বাকিদের কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে..

‘ আমার বৃষ্টির কিছু হয়নি তো? ‘

বাকিদের মধ্যে কেউ কিছু বলার আগেই একটা পাগল ছুটে আসে আর এসেই রিমনের হাত ধরে ফেলে। হঠাৎ এমন ভাবে একজন পাগলকে দেখে সবাই একটু ঘাবড়ে যায় রিমন নিজের হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে তখন পাগলটা বলে উঠে..

‘ মেয়েটাকে বাঁচাও মেয়েটার অনেক বিপদ ‘

সবাই জেনো স্বস্ত হয়ে যায় কোন মেয়ে কিসের বিষয়? কথাটা জিজ্ঞেস করে রিমন।
রিমনের দিকে তাকিয়ে বলল, একটা মেয়ে খুব সুন্দর ওইদিকে যাচ্ছিল আমি বারণ করেছিলাম যেতে তবুও গেছিলো দু’জন মানুষ তাকে ওই যে ওইদিকে জঙ্গলের মধ্যে একটা বাড়ি নিয়ে বাহির থেকে আটকে দেয় দু’জনে মিলে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে মেয়েটা কাঁদছে চিৎকার করছে তাকে তোমরা বাঁচাও মরে যাবে মেয়েটা।

মিমিয়া ছুটে এসে পাগলটার হাত রিমনের গাত থেকে ছাড়িয়ে বলল…

‘ কোথাকার না কোথাকার এক পাগল আর তুমি ওর কথা শুনছো চলো ভেতরে চলো বৃষ্টি হয়তো ভেতরেই কোথাও আছে। ‘

মিমিয়ার কথা শুনে সবাই চলে যেতে নিলে পাগলটা পেছন থেকে আবারও বলে উঠে..

‘ মেয়েটাকে তোমরা বাঁচাও মেয়েটা পুড়ে মরে যাবে মেয়েটা বারবার রিমন বাঁচাও রিমন বাঁচাও বলে চিৎকার দিয়ে কেঁদেছিল এখন ও সময় আছে মেয়েটাকে তোমরা বাঁচাও ‘

পাগলের মুখে রিমন নাম শুনে সবাই পেছনে ঘুরে তাকালো মিমিয়ার হাত ছাড়িয়ে লোকটার কাছে গিয়ে বলল।

‘ বাড়িটা কোন জায়গায় আপনি আমাদের নিয়ে চলুন’

পাগল টা ছুটতে লাগল তার পেছনে সবাই ছুটছে শুধু মিমিয়া দাঁড়িয়ে হাত কচলাচ্ছে।
জঙ্গলের ভেতরে একটা বাড়ি আর পাগলটার কথা মতো বাড়িতে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। সবাই বাড়িটা দেখছে কেরাসিনের গন্ধ শুকেই বুঝা যাচ্ছে কেউ ইচ্ছে করে আগুন লাগিয়েছে। রিমির জুতার নিচে কিছু একটা বাজছে পা সরিয়ে মাটিতে পরে থাকা একটা চকচকা জিনিস উঠিয়ে হাতে নিলো। আর সেটা দেখে চিৎকার দিয়ে বলল…

‘ এই কানের ঝুমকা টা বৃষ্টির এখানে কি করে এলো মানে বৃষ্টি এই বাড়ির ভেতরে? ‘

রিমির হাত থেকে ঝুমকা টা টান দিয়ে নিয়ে নেয় রিমন। ঝুমকা টা দেখে মনে পরল। বৃষ্টি যখন সিঁড়ি দিয়ে নেমে এসে পাশে দাঁড়িয়ে ছিল তখন কানে এি ঝুমকা টাই দেখেছিল। রিমন জলন্ত বাড়ির দিকে তাকিয়ে চিৎকার দিলো…

রিমন: বৃষ্টি….

বাড়ির দিকে এগিয়ে যেতে নিলে সোহান রিমনের হাত ধরে নেয় আর বলে..

‘ কোই যাচ্ছিস বাড়িতে আগুন লেগেছে ভেতরে গেলে আর বেরোতে পারবি না। বৃষ্টি ওর মধ্যে নাও থাকতে পারে। ‘

‘ আমি আমার চিন্তা করে আমার বৃষ্টি কে মরতে দিতে পারবো না ভাইয়া ছেড়ে দাও আমাকে মরলে দু’জনে এক সাথে মরবো। ‘

হাত ছাড়িয়ে বাড়ির দিকে দৌঁড় দিলে পেছন থেকে অভ্র আর নিলয় ও রিমনের সাথে….

চলবে?

(অনেক দিন পর লিখলাম এই গল্পটা তাই কেমন কেমন জেনো লাগছে। রি-চেইক করা হয়নি ভুলক্রটি ক্ষমা ও সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আশা করি সবাই রেসপন্স করবেন। ঘটনা মূলক মন্তব্য করবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here