প্রেমাসক্তি’ পর্ব – ১৫

0
5808

#প্রেমাসক্তি
#ফাতেমা_তুজ
#part – 15

তন্ময় তুই ঠিক আছিস ?
রবিনের ডাকে তন্ময় মাথা উঁচু করলো।
তিন ঘন্টা ধরে কপালে হাত গুঁজে বসে আছে তন্ময় ।

তন্ময় কিছু বলছে না দেখে রবিন দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
তন্ময় কিছুক্ষণ রবিনের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল
– সি ইজ ফাইন নাউ রবিন?

রবিন মৃদু হেসে বলল
– ইয়াহ অলরেডি , বাট

তন্ময় বসা থেকে উঠে ভ্রু কুঁচকে বলল
– বাট ,, কি হয়েছে কি ওর ?

রবিন তন্ময়ের কাঁধে হাত রেখে বলল
– কেবিনে আয়।

তন্ময়ের শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা,, মাথায় নানান চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে।
রবিনের সাথে কেবিনে ঢুকতেই তন্ময় দেখলো নীলিমা গুটি শুটি মেরে শুইয়ে আছে।
তন্ময়ের চোখ জোড়া চিক চিক করে উঠলো।
রবিন দীর্ঘশ্বাস টেনে বলল
– ইউ নো তন্ময়, এই মেয়েটা রোজ এলকোহল খেতো।
আর কিছুক্ষণ আগে হাই ডোজ এর ড্রাগ নিয়েছে।

রবিনের কথা শুনে তন্ময় নাক কুঁচকে বলল
– হোয়াট , আর ইউ মেড ?
ওও এমন না , এটা হতেই পারে নাহহ, কখনো এই সব ছুঁইয়ে দেখবে নাহহ ওও।

রবিন দীর্ঘশ্বাস টেনে বলল
– বাট হয়েছে এমন , কিন্তু তুই জানিস কি করে ?
ওকে চিনিস তুই ?

তন্ময় থম মেরে গেল, মাথা ঝাঁকিয়ে বলল
– নাহহহ।

রবিন কিছু টা সন্দেহ করলে ও তন্ময় কে কিছু বলল নাহহ।

তন্ময় ব্যস্ত হয়ে বলল
– যাই হোক এখন বল মেয়েটা কে একদম সুস্থ করতে কি কি ট্রিটমেন্ট করা লাগবে।

রবিন ফাইল হাতে নিয়ে বলল
– আমি অনেক গুলো টেস্ট করিয়েছি, সব গুলোর রিপোর্ট পাই নিহহ এখনো ।
আর কি আশ্চর্য বিষয় জানিস এলকোহল এর সাইট এফেক্ট ওর ব্রেইন কে ক্যাপচার করতে পারে নি।

আমি টেস্ট করে যা বুঝেছি তাতে ওওও কয়েক বছর ধরে নিয়মিত বেশ অনেক পরিমানে এলকোহল খায়।
হাউ ?

তন্ময় কিছু বলল না।
তার মাথাতে ঢুকছে না , নীলিমা ড্রাগ আর এলকোহল।
এগুলো কি করে সম্ভব?

তন্ময় পকেটে হাত গুঁজে বলল
– আপাতত ওকে কি করে এই গুলো থেকে বের করতে পারবো সেটা বল।

রবিন পকেট থেকে ফোন বের করে কাউকে একটা কল দিয়ে আসতে বলল।
কিছুক্ষণের মধ্যেই দুটো লোক এসে পরলো।
রবিন ফাইল গুলো তাদের হাতে দিয়ে বলল
– ইমিডিয়েটলি টিম তৈরি করতে বলো।
জাস্ট এন্ড 30 মিনিটস।

লোক দুটো ফাইল নিয়ে বেরিয়ে পরলো।
রবিন তন্ময়ের কাঁধে হাত রেখে বলল
– ডোন্ট ওরি ।

তন্ময় মুচকি হেসে রবিন কে জড়িয়ে বলল
– থ্যাংকস ইয়ার।

রবিন চলে যেতেই তন্ময় ঢুল টেনে নীলিমার পাশে বসে পড়লো।
বেশ অনেকক্ষণ ধরে নীলিমার হাত ধরে বসে রইলো।
হাতে হালকা করে চুমু খেয়ে বলল
– ঠিক হয়ে যাবে তুমি, সেই আগের মতো।

নীলিমার কপালের সাইটে একটু কেটে গেছে।
সেখানে একটু রক্ত দেখা যাচ্ছে, তন্নয় ভ্রু কুঁচকে বলল
– নার্স রা কি করে কি ?
পেশেন্ট এর কেয়ার ও করতে পারে নাহহ।

তন্ময় আশে পাশে তাকিয়ে সেফটি টিসু খুঁজতে লাগলো।
কিন্তু পেলো নাহহ , না পাওয়ার ই কথা বিডি তে ট্রিটমেন্ট ব্যবস্থা অনেক উইক।

তন্ময় দীর্ঘশ্বাস টেনে পকেট থেকে রুমাল বের করে স্প্রে করে নিলো।
রুমাল টা ভাঁজ করে ধীরে ধীরে নীলিমার কপালে লেগে থাকা সূক্ষ্ম রক্ত টুকু মুছে দিলো।
মুছে দেওয়া হলে নীলিমাকে নিখুঁত ভাবে দেখতে লাগলো।
মেয়েটার চোখ দুটো তো একদম গর্তে ঢুকে গেছে , অবশ্য মুখের রঙ টা খানিকটা উজ্জ্বল হয়ে গেছে।
হাত গুলো কেমন শুষ্ক দেখাচ্ছে , যেন রক্ত নেই।
নাকের পাটা টা লাল হয়ে আছে , সাথে ঠোঁট কামড়ে আছে।

নীলিমার এমন কান্ডে তন্ময় ফিক করে হেসে উঠলো।
মানুষ ঘুমের ঘোরে কতো কিছুই না করে।
নীলিমা পুরো বাঁচ্চা, কে বলবে এ মেয়েটির বুকে জমে আছে পাহাড় সমান কষ্ট।
তন্ময় আলতো হাতে নীলিমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল
– হে মিস , তুমি ঠিক হয়ে যাবা।
উফফফসসস আমি ও নাহহহ যা তাহহ
তন্ময় আবরারের মাথা টাই খারাপ হয়ে গেছে ।
মিস কি করে হও তুমি , তুমি তো মিসেস, মিসেস আরিয়ান।
এই টুকু বলেই তন্নয় মলিন হাসলো চোখের পানি টুকু মুছে বলল
– একদম ঠিক হয়ে যাবা , একদম ঠিক, যেমন টা আগে ছিলে।
আরিয়ানের নীলি যেমন ছিলো , ঠিক তেমন। ট্রাস্ট মি তন্ময় আবরার সব ঠিক করে দিবে।

নীলিমার হাত ধরে তন্ময় নিজের দু হাতে আবদ্ধ করে নিলো।
বুক টা কেমন করছে , নানান রকমের যন্ত্রণা হচ্ছে।

*
আজাদ চৌধুরী পুরো শহর খুঁজে ফেলেছে।
এমন কোনো পাব নেই খুঁজে নিহহ।
তার মেয়ে টা গেল কোথায় ?
কোনো সমস্যায় পরে গেল না তো ?

মিসেস চৌধুরী কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞান হাড়িয়ে ফেলছেন।
সার্ভেন্ট রা মাথায় পানি দিতে ব্যস্ত।
আজাদ চৌধুরী একের পর এক ফোন লাগিয়ে যাচ্ছেন।
রাত তিনটে চল্লিশ মিনিট, এতো রাতে মেয়ে কোথায় যেতে পারে।

আজাদ চৌধুরী মাথায় হাত গুঁজে বসে আছেন।
যেন কোনো ছিন্নহারা মানব।
ফোন বাজতেই আজাদ চৌধুরী হুরমুরিয়ে ফোন ধরলেন।
কাঁপা কাঁপা হাতে ফোন রিসিপ করে বললেন
– নীলিমার খোঁজ পেয়েছো ?

– স্যার ম্যাডাম একটা পাবে এসেছিলেন।
ম্যানেজার বললেন ম্যাডাম নাকি শরীরে ড্রাগ পুশ করে সাড়ে দশটার দিকে বেরিয়ে পরেছেন।

আজাদ চৌধুরীর হাত থেকে ফোন পরে গেল।
মিসেস চৌধুরী দৌড়ে এসে বললেন
– কি হয়েছে আমার নীলুর ,

আজাদ চৌধুরী থম মেরে বসে আছেন।
মিসেস চৌধুরী উদ্বিগ্ন কন্ঠে বললেন
– বলছো না কেন ?
আমার মেয়েটার কি হয়েছে ?

আজাদ চৌধুরীর চোখ থেকে এক ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো।
মিসেস চৌধুরী আচলে মুখ গুঁজে বললেন
– আমার মেয়েটা ঠিক আছে তো ?

– নীলিমা শরীরে ড্রাগ পুশ করে পাব থেকে সাড়ে দশটার সময় বেরিয়ে পরেছে ।

মিসেস চৌধুরী কথা টা শোনা মাত্র জ্ঞান হাড়ালেন।

সার্ভেন্ট রা এসে ধরে ফেললেন।
আজাদ চৌধুরী সার্ভেন্ট দের বললেন
– ওকে রুমে গিয়ে শুইয়ে দাও।
ম্যাডাম এর খেয়াল রেখো , আমি নীলিমা কে খুঁজতে যাচ্ছি।
গাড়ির চাবি নিয়ে আজাদ চৌধুরী মেয়ে কে খুঁজতে বেরিয়ে পরলেন।

*

ফোন বাজতেই বিরক্তি তে ভরে উঠলো ইথিনার মুখ।
গাড়ি ড্রাইভ এর সময় ফোন বিষয় টা অত্যন্ত বাজে লাগে ওর।
তাড়াহুড়ো তে সাথে করে ব্লু টুথ টা ও আনে নি সে।

বিডির আবহাওয়া তে তার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
ধুলো বালি , জ্যাম , রাস্তা ঘাট একে বারে যা তা অবস্থা।
বরাবর ই বিডি তার অপছন্দের কিন্তু বাবার কারনে বছরে একবার দেশে আসতেই হয়।
অবশ্য তবে আজকাল বিডির প্রতি তার ভালো লাগা কাজ করে ।
কারন তার খুব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস বিডি থেকে পেয়েছে সে।

ইথিনা গাড়ি থামিয়ে পার্স থেকে ফোন করে বলল
– ইয়াহ পাপা , আম ওকে।
আমি বিডি তে ল্যান্ড করেছি বেশ কিছুক্ষণ আগে।

– ফোন দিয়ে জানানো উচিত ছিল ডিয়ার।

– ফোন দেওয়ার টাইম নেই পাপা।

– ওকে ওকে , তন্ময় কে ফোন দিয়েছিলে ?

– আমি তন্ময়ের ফোনে কল দিয়েছিলাম।
কিন্তু ফোন টা সুইচ অফ বলছে।

– ওহহহ , রবিনের নাম্বার কালেক্ট করো।
দেখো সোসাল মিডিয়া তে আছে নাকি, তারপর তন্ময়ের খোঁজ নাও।
মেইবি তন্ময় রবিনের কাছেই গিয়েছে।

– ওকে পাপা।
ইউ আর দা গ্রেট , আর আঙ্কেল আন্টি কে চিন্তা করতে বারন করো।
তন্ময়ের সাথে কন্ট্রাক্ট করেই আমি জানিয়ে দিবো।

এই টুকু বলেই ইথিনা ফোন রেখে দিলো।
বুক ভরে শ্বাস নিয়ে সোসাল মিডিয়া তে গিয়ে রবিন কে কল দিলো।

রবিন ফোন রিসিপ করে বলল
– hyy ethi , how are you?

– not good yr.

– why ? Anything rong ethi ?

– yeah.
তন্ময় রাগা রাগি করে বিডিতে এসেছে।
কিন্তু ওর ফোন সুইচ অফ বলছে।

– ওহহ এই ব্যাপার।
ডোন্ট ওরি , ওহহহ আমার হসপিটালে এসেছে।

– উফফফ , এই ছেলেটা জ্বালিয়ে মারছে।
এনিওয়ে লোকেশন টা ম্যাসেজ করে গুগল ম্যাপ লিংক দিয়ে পাঠিয়ে দাও।

– ওকে টেইক কেয়ার।

– ইয়াহ । ইউ অলসো,

ইথিনা ফোন টা কেটে বুক ভরে শ্বাস নিলো।
মুচকি হেসে আপন মনে বলল
– তন্ময় এবার তোমাকে কান ধরে নিয়ে যাবো। বড্ড জ্বালাচ্ছো তুমি ।

*

সকাল সাত টা নীলিমার ঘুম ভাঙ্গে নি।
তন্ময় সারা রাত ঘুমোয় নিহহ , চোখে ঘুম নেই।
বার বার নীলিমার দিকে আকর্ষিত হচ্ছে সে।

মেয়েটা বড্ড মায়ায় জড়ানো যে।

রবিন কেবিনে ঢুকে বলল
– সারা রাত তো ঘুমোলি নাহহহ।
রেস্ট নেওয়া দরকার , আঙ্কেল আন্টির সাথে রাগ না করলে ও পারতি।
বি ডি তে আসার এতো কিসের তাড়া ছিলো।
লাস্ট ইনজেকশন টা কতোটা জরুরী ছিলো তুই তো জানিস ই।

তন্ময় মৃদু হেসে বলল
– কিছু সময় শরীরের যত্নের থেকে মনের যত্নের বেশি প্রয়োজন হয়।
আর মনের অবস্থা ভালো থাকলে শরীর এমনি তেই সুস্থ হয়ে যায়।

আর তুই তো দেখেছিস লাস্ট 6 মাস ধরে আমি একদম ফিট।
ডক্টর তো বলেছেন ই ম্যাজিকের মতো আমি ঠিক হয়ে গেছি।

– বাট লাস্ট মান্থ এর এক্সিডেন এর কথা মনে আছে ?
ব্রেইন এ আঘাত পেয়েছিলি কতোটা ?

তন্ময় মুচকি হেসে বলল
– লাক বদলে গেছে সেই এক্সিডেন এ ।

তন্ময়ের কথা বুঝতে পারলো না রবিন।
রবিন ক্যাবলার মতো করে তাকিয়ে আছে দেখে তন্ময় বলল
– সব তো হলো , তোর খবর ই তো নেওয়া হলো না ।
দ্যা গ্রেট বি ডি তে কেমন যাচ্ছে সব ?

– নট ব্যাড ইয়ার , বাট ইউ এস এ তে বেশি ভালো ছিলো।
যদি ও আমি বি ডি তে অভ্যস্ত ।

– ওহহ তা ঠিক।
ডোন্ট ওরি আর মাত্র চার মাস ই তো আছে।
তারপর তো আবার ইউ এস এ তে ডক্টর রবিন
ক্রুস ডাক্তারি করতে যাবে।

তন্নয়ের কথা শুনে রবিন হাসতে হাসতে বলল
– আম নট ক্রুস ওকে।
আম দ্যা গ্রেট রবিন মাহমুদ,

তন্ময় বাকা হেসে বলল
– আম দ্যা গ্রেট গ্রেইমার আরররর , উফফফস আবরার তন্নয়।

তন্নয়ের কথা শুনে রবিন হাসতে লাগলো।
রবিন টাইম দেখে বলল
– ইটস 7’30 , কাল বিকেল থেকে এখন অব্দি না রেস্ট নিয়েছিস আর নাহহ খেয়েছিস।

হসপিটাল থেকে দুইটা বিল্ডিং পর আমার কোয়ার্টার ।
আমি লোক পাঠিয়ে দিচ্ছি , ড্রেস আপ সব কিছু রাখা আছে , ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে রেস্ট নিবি।

আর কোনো কিন্তু শুনবো না আমি , এমনিতেই একটা ইনজেকশন পুশ করা বাকি আছে।
ইমিডিয়েট লি বিডি তে ট্রান্সফার করে পুশ করতে হবে।
দ্যান দ্যা গ্রেইমার আবরার তন্নয় যা ইচ্ছে করতে পারে।

আপাতত ওনি ওনার বেস্ট ফ্রেন্ড এর কথার নড়চড় করতে পারবেন নাহহহ।

তন্ময় হাসতে হাসতে বলল
– ওক্কে। বাট ইউ নো রবিন, বড়দের কথা শুনতে হয়।

রবিন চোখ দুটো ছোট ছোট করে বলল
– তোহহহ ?

তন্ময় রবিনের কাঁধে হাত রেখে করিডোর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বলল
– মানে এই যে আমি তোর 7 hours এর বড়, সেই হিসেবে আমার কথা শোনা তোর কর্তব্য।

রবিন তন্ময়ের হাত কাঁধ থেকে নামিয়ে বলল
– ঐ ব্যাটা তুই দেখছিস আমি তোর বড় নাকি ছোট, আঙ্কেল আন্টির মিস্টেক হয়ে গেছে।
তাই ওনারা তোকে বড় বলে দাবি করেন।
বাট আই নো আমি ই তোর বড়।

তন্ময় বাঁকা হেসে বলল
– ছোট বেলার সেই ঠাপ্পর টার কথা মনে আছে তোর।
উফফফস সেই ছিলো রে ,,,

রবিন দাতে দাত চেপে বলল
– ঠাপ্পর দিয়ে দাত ফালাই দিবো শালা হনুমান।
কারো দু বছর বয়সের কথা মনে থাকে ?
আমার সাথে ফাজলামি করিস ?
আম্মু বলেছিলো আমি তোকে ঠাপ্পর দিয়েছিলাম।

তন্ময় মুখ চেপে হাসতে লাগলো।
রবিন কে নাকি ছোট বেলায় সে রোজ কাদিয়ে ছাড়তো।
আর দিন শেষে রবিন সেই তন্ময়ের সাথেই ঘেঁষাঘেষি করতে চাইতো।

তন্ময় রবিনের গলা জড়িয়ে ধরে বলল
– ওওহহহ আমি যাই তাহলে।

– ওহহ ভালো কথা মেয়েটার হাতের কোনে ট্যাটু করে নাম লেখা ‘ প্রেমাসক্তিতে আসক্ত আরিয়ান নীলিমা’
মেইবি মেয়েটার নাম নীলিমা।

তন্ময়ের বুক টা ছ্যাত করে উঠলো।
তন্ময় মলিন হেসে বলল
– ওহহহহ , তো মিস আরিয়ান নীলিমার ঘুম কখন ভাঙবে ?

– বারোটার আগে ভাঙবে না বোধহয় ।

– ওকে আমি যাচ্ছি , দুটো একস্ট্রা নার্স অলয়েজ ওর কেবিনে পাঠিয়ে দিস।

রবিন মাথা ঝাঁকিয়ে বলল
– এখন যাহহহ ফ্রেস হয়ে ঘুম দিয়ে আয়।

তন্ময় মৃদু হেসে হসপিটাল থেকে পা বাড়ালো।
তন্ময় চলে যেতেই রবিন বাঁকা হাসলো যার অর্থ বোঝা গেল নাহহহ।

*

নীলিমা শুইয়ে আছে , রবিন কেবিনে ঢুকে নীলিমা কে চেইক করে নিলো ।
আপাতত ঠিক আছে সব , রবিন দীর্ঘশ্বাস টেনে নীলিমার মাথায় হাত রাখতে গিয়ে ও রাখলো না।

খানিক টা দূরে থেকেই বলল
– নীলিমা একদম চিন্তা করবে নাহ।
সব ঠিক হয়ে যাবে, আছি না আমি , সব ঠিক করে দিবো।
সেই নীলিমা যে সব সময় হাসতে পারে, দুঃখ তাকে ছুতেই পারে নাহ।

রবিন চোখের কোন থেকে পানি মুছে রুম থেকে বেরিয়ে পরলো।

দুপর এগারোটা,, নার্স হন্তদন্ত হয়ে রবিনের কেবিনে এসে বলল
– স্যার পেশেন্ট উঠে গেছেন।
সব কিছু ভাংচুর করছেন ,,, আপনি তাড়াতাড়ি আসুন।

রবিন হন্তদন্ত হয়ে রুম থেকে বেরিয়ে নীলিমার কেবিনে ঢুকলো।
কেবিনে ঢুকতেই নীলিমা ফ্লাওয়ার ওয়াচ ছুঁড়ে মারলো , রবিন বলের মতো ক্যাঁচ ধরে বলল
– দিস ইজ নট ফেয়ার নীলিমা চৌধুরী, আপনার হাত বরাবর ই একদম কাঁচা।
এভাবে মারলে তো হবে নাহহ , এই বলেই রবিন হাতের ফ্লাওয়ার ওয়াচ টা নীলিমার দিকে তাক করে ছুড়ে মারলো কিন্তু কি আশ্চর্য ফ্লাওয়ার ওয়াচ টি নীলিমার শরীর থেকে এক ইঞ্চি দূর দিয়ে জানালায় লাগলো।

চেনা প্রিয় এক গলার স্বর ভেসে আসতেই নীলিমা পেছন ঘুরে তাকালো।
কিন্তু ফ্লাওয়ার ওয়াচ তার দিকে তাক করা দেখে
নীলিমা চিৎকার করে উঠলো।
রবিন বাঁকা হেসে বলল
– ওপেন ইউর আই , এভরিথিং ইজ ফেয়ার এন্ড লাভলী।

নীলিমা চোখ খুলে তাকাতেই রবিন কে দেখতে পেল।
রবিন কে দেখে চোখ দিয়ে দু ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পরলো।
সাথে ঠোঁটের কোনে স্নিগ্ধ হাসি ফুটলো , যাহহ গত চার বছরে ও ফুটে নি।

রবিন মলিন হাসলো ,, চোখে পানি স্পষ্ট।
নীলিমা স্থির দৃষ্টিতে রবিনের দিকে তাকিয়ে থেকে পেছন ঘুরে মুখ চেপে কাঁদতে লাগলো।

👇
এতো এতো রহস্য সবাই কে পাগল করে দিবো। এই রহস্য কখন শেষ হবে আমি নিজে ও জানি নাহ ।

পরবর্তী পার্ট পেতে পেইজ এ ফলো দিয়ে রাখুন
https://www.facebook.com/Fatema-tuz-ফাতেমা-তুজ-110123584545542/

বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাফ করবেন ।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here