প্রেমাসক্তি’ পর্ব – ১৬

0
5603

#প্রেমাসক্তি
#ফাতেমা_তুজ
#part – 16

তন্ময়ের শরীর টা মেজ মেজ করছে।
বোধহয় লাস্ট ইনজেকশন টা পুশ করা সত্যি ই খুব প্রয়োজন ছিলো।
ঘুম থেকে উঠে ফোন হাতে নিয়ে অন করে দেখলো অলরেডি একটা বাজে।
তন্ময় মাথা চেপে ধরে বলল
– উফফফসস মাথা টা ব্যাথা করছে কেন।
বারোটা তো অলরেডি বেজে এক ঘন্টা বেশি চলে গেছে।
রবিনের কথা মতো মিসেস আরিয়ান তো উঠে পরেছে এতোক্ষন।

তন্ময় হাই তুলে উঠে ফ্রেস হয়ে আসতেই তন্ময়ের ফোন বেজে উঠলো।
তন্ময় ভ্রু কুঁচকে চুল ঠিক করতে করতে ফোন রিসিপ করে বলল
– হ্যালো

– তন্ময় এটা কেমন কথা, তুমি ফোন কেন সুইচ অফ করে রেখেছো ।
আমরা কি তোমার ভালো চাই না বলো ?
এজ এ ডক্টর হিসেবে তোমার আম্মু কি কিছু না বুঝেই বলেছে ?
তোমার শরীরে ইনজেকশন টা 12 ঘন্টার মধ্যে পুশ করার কথা ছিলো।
না হলে তোমার জীবনের রিস্ক হতে পারে ।

তন্ময় খুব মনোযোগ দিয়ে মায়ের কথা গুলো শুনলো।
আসলেই তার শরীর টা কেমন যেন লাগছে।
কিন্তু এই ইনজেকশন দেওয়ার পর দু দিন কোনো জ্ঞান থাকবে না।
এই মূহুর্তে জ্ঞান থাকা টা তার প্রয়োজন। আর সে দুদিন অপেক্ষা করতে পারছিলো নাহহ।
তন্ময় কিছু বলছে না দেখে মিসেস আবরার বললেন
– তন্ময় বাবা কিছু বলছিস না কেন ?
শরীর খারাপ লাগছে কি ?

তন্ময় মৃদু হেসে ধীর কন্ঠে বলল
– আম্মু বিচলিত কেন হচ্ছো ?
তুমি জানো না ব্রেভ তন্ময় আবরার কোনো কিছু ভয় পায় না আর।
তোমরা তো আছো আমার জন্য, আমার কোনো ভয় নেই এখন।

মিসেস আবরার চোখের পানি মুছে নিয়ে বললেন
– টাইমলি খাবার খেয়ে নিবি , তোর পাপার শরীর টা ভালো নেই।
তোর কিছু হলে কিন্তু এবার মরেই যাবে , গত মাসে কতো বড় ঝড় বয়ে গেল তোর ওপর।

তন্ময় রাগি কন্ঠে বলল
– হোয়াট , আম্মু কি সব আজে বাজে কথা বলো।
পাপার কিছু হবে না , আর নাহ আমার।
তুমি কাঁদবে না একদম , এখন রেস্ট নাও তো।
তোমার ছেলে কতোটা রাগি জানোই তো , আমি কিন্তু এই সব একদম টলারেট করবো না।

মিসেস আবরার মৃদু হেসে বললেন
– তোর পাপা কে নিয়ে ইমিডিয়েট লি বি ডি তে আসছি আমরা।

তন্ময় মৃদু হেসে বলল
– আচ্ছা আসো ,,

তন্ময় ফোন রেখে মাথা চেপে ধরে বেডে বসলো।
সত্যি খুব খারাপ অবস্থা এখন, বেড থেকে উঠতে চেয়ে ও পারছে নাহহ।

রবিন কে ফোন দিতেই রবিন ফোন রিসিপ করে বলল
– হুমমমম তন্ময় ঠিক আছিস তুই?
হসপিটালে আসবি এখন ?

– হুমম শরীর টা কেমন যেন লাগছে একটু তাই হসপিটালে যাচ্ছি নাহ।
আচ্ছা মিস আরিয়ান নীলিমার কি অবস্থা?

– সি ইজ ফাইন নাউ।
ডোন্ট ওরি ,,,

– ওকে।

এই টুকু বলেই তন্ময় ফোন রেখে দিলো।
শরীর কেমন অষাঢ় হয়ে যাচ্ছে, মাথায় প্রচন্ড যন্ত্রণা হচ্ছে।
তন্ময় মাথা চেপে ধরে চিৎকার করলো, সব কেমন এলোমেলো লাগছে।
কেমন ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে সব ,,,

*

নীলিমা ব্যলকনিতে দাড়িয়ে আছে।
মেজাজ প্রচন্ড গরম , কাল রাতের ঘটনা সাথে আজকের ঘটনা দুটো বিষয় নিয়ে মাথায় চাপ পরছে খুব।
শরীরে সমস্ত এফেক্ট গুলো যেন এক সাথে জেকে বসেছে।

রবিন একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে।
নীলিমা তার দিকে ফিরে ও তাকাচ্ছে নাহহ।
কেন তাকাবে সে ?
এই মানুষ টা কি তার কথা ভেবেছিলো ?
ভাবে নি তো তাহলে কেন ভাববে ও ?

রবিন দীর্ঘশ্বাস টেনে বলল
– নীলিমা একটু শুনবে আমার কথা ?

নীলিমা উত্তর দিলো নাহহ।

রবিন আবার ডাকলো ,,, এতে ও নীলিমার উত্তর আসলো নাহ।

রবিন নীলিমার পাশে গিয়ে দাঁড়াতেই নীলিমা দূরে সরে গেল।

রবিন মুচকি হেসে বলল
– আমার থেকে কতো দূরে যেতে পারবে তুমি ?

নীলিমা উত্তর দিলো না।
রবিনের চোখে পানি চিক চিক করছে।
রবিন ঠোঁটে হাসি ফুটিয়ে বলল
– আমরা ছোট্ট নীহু আমার কাছে আগের মতো আসবে না তাই নাহহহ।

রবিনের মুখে নীহু শব্দ টা শুনেই নীলিমার চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়লো।
নীলিমা চোখের কোন থেকে পানি মুছে বলল
– আমাকে আমার সেই সুপারম্যান নীহু বলে ডাকতে পারে যে আমাকে ভালোবাসতো।
যে আমার কথা ভাবে না একটু ও সে কেন নীহু বলে ডাকবে।
আমাকে মিথ্যে ভালোবাসা দেখানো লাগবে না।
সাত বছর আগেই সব আগেই ভলোবাসা দেখা হয়ে গেছে আমার ।
যে আমাকে সব সময় আগলে রাখতো , আমি তার নীহু ছিলাম।
আমার সামনে দাড়িয়ে থাকা ডক্টর রবিন মাহমুদের নীহু না।
সাত বছর আগে কি এমন হয়েছিলো যার জন্য সে তার নীহু কে একবার বলার প্রয়োজন মনে করলো নাহ।
যেদিন সে হাড়িয়ে গিয়েছিলো সেই দিন ই তার নীহু মরে গেছে ।

এই টুকু কথা বলেই নীলিমা অঝোরে কেঁদে দিলো।
রবিনের দিকে তাকাতেই রবিন ছলছলে নয়নে তাকিয়ে রইলো।
রবিনের কানে বেজে চলছে মরে গেছে তার নীহু।

নীলিমা ডুকরে ডুকরে কাঁদছে । সে জানে রবিন বিনা কারনে তাকে ছেড়ে যায় নি।
তার সুপারম্যান তাকে কতো টা ভালোবাসে তা জানার জন্য কোনো দলিল এর প্রয়োজন নেই।
তবে একবার বলে কেন গেল না ?
কতো শত দিন অপেক্ষা করেছে সে।

নীলিমা কাঁদতে কাঁদতে রবিনের দিকে তাকালো।
রবিনের চোখ থেকে নিঃশব্দে পানি ঝরছে।
রবিনের চোখের পানি নীলিমার বুকে এসে লাগলো।
রবিন কোনো কথা বলল নাহহ, তার কাছে কোনো উত্তর যে নেই।
নীলিমা ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে রবিনের হাতের উপর হাত লাগলো।
রবিন ছলছল চোখে তাকাতেই নীলিমা রবিন কে জড়িয়ে ধরলো।
কাঁদতে কাঁদতে বলল
– কেন ভাইয়া , কেন ছেড়ে গেলে , তুমি তো আমাকে সব থেকে বেশি ভালোবাসতে তাহলে কেন চলে গেলে আমায় ছেড়ে।
রিহু তো সেই কবেই ধোঁকা দিয়ে চলে গেছে , আর তুমি থেকে ও নাই হয়ে গেলে ?

রবিন চোখের পানি মুছে বলল
– সময় হলে বলবো নীহু, তুই নিজের হাল দেখেছিস ?
ভাইয়া নেই বলে নিজের এমন হাল করবি ?

নীলিমা রবিন কে ছেড়ে বলল
– আমি তো থেকে ও নেই ভাইয়া।
আমি তো শেষ হয়ে গেছি , শেষ করে দিয়েছে আমায় কিছু নড়মানব।
যেমন করে শেষ হয়েছিলো তেরো বছর আগে।

রবিন দীর্ঘশ্বাস টেনে বলল
– তেরো বছর আগে আমরা অসহায় ছিলাম নীহু , কিন্তু এখন নই।
এখন অনেক কিছু করার আছে , রাঘব বোয়াল টাকে ধরতে হবে।
সেদিন যদি মামা আমাদের কথা শুনতো তাহলে আজ এমন পরিস্থিতিতে পরতে হতো নাহ রে ।
তবে সবসময় মামা কে দোষারোপ করা ও যায় না, প্রমান তো ছিলো বিরুদ্ধে।

নীলিমা নাক টেনে বলল
– আজাদ চৌধুরী চোখ থেকে ও অন্ধ হয়ে আছে।
ওনার মানসিকতার জন্য তেরো বছর আগে আমাদের পরিবার গুলো আলাদা হয়ে গিয়েছিলো।
আর এখন আমাকে য্যন্ত কবর দিয়েছেন।

রবিন নীলিমার মাথায় হাত রেখে বলল
– চিন্তা করিস নাহহহ নীহু , ভাইয়া সব ঠিক করে দিবো।

নীলিমা মৃদু হেসে বলল
– আমি জানি আমার সুপার ম্যান সব ঠিক করে দিবে।
কিন্তু আমি যে যন্ত্রমানবী হয়ে আছি।
এটা ঠিক করতে পারবে নাহহহ আমার সুপারম্যান।

রবিন মুচকি হেসে বলল
– সুপারম্যান এর উপর বিশ্বাস রাখ সব ঠিক হয়ে যাবে।

নীলিমা মৃদু হাসলো ,,, যা হবার নয় তাতে আশা রাখা টাই অন্যায়।

তেরো বছর আগে

রবিন হলো নীলিমার ফুফাতো ভাই।
রবিনের ছোট বোন ছিলো , নীলিমার বয়সী কিন্তু একটা এক্সিডেন এ রবিনের ছোট বোন রেহানা (রিহু) মারা যায়।
রবিনের চোখের মনি ছিলো রেহানা আর নীলিমা।
রেহানা কে রিহু আর নীলিমা কে নীহু বলে ডাকতো রবিন।
রবিনের বাবা আলতাফ মাহমুদ ও তার স্ত্রী ইউ এস এ তে বারো বছর ছিলেন।
রবিনের যখন দশ বছর তখন সবাই কে নিয়ে চলে আসেন নীলিমার দাদার বাসায়।
নীলিমার দাদার ইচ্ছে ছিলো ছেলে মেয়ে নাতি নাতনি নিয়ে মরার আগ পর্যন্ত এক সাথে থাকবেন।
রিহুর আর নীলিমার তখন চার বছর।
দুটিতে ভারী মিল ছিলো ,,দু বছরের মাথায় রিহুর ভাইরাস জ্বর হওয়াতে রিহু মারা যায়।
তারপর থেকেই নীলিমাই ছিলো রবিনের এক মাত্র প্রান।
বড্ড ভালোবাসতো নীলিমা কে ,,,
তবে রবিনের বড় মামার ছেলে অথার্ৎ নীলিমার চাচাতো ভাই সাহেল কাউ কে সহ্য ই করতে পারতো নাহহ।
রবিন আর সাহেল এর তো লেগেই থাকতো।
এ ভাবেই কেটে যায় ছয়টি বছর ,, কিন্তু বিপদ আসে তখন যখন নীলিমার দাদা মারা যান ।
নীলিমার দাদা মারা যাওয়ার পর হানিফ চৌধুরী এসে বলেন তাদের কম্পানি থেকে টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে।
যার ফলে বিরাট লস হয়েছে তাদের কম্পানি তে।
কম্পানির অবস্থা নাজেহাল,
আর পরে তাহহ তদন্ত করে দেখা যায় সেই টাকা সরিয়েছেন আলতাফ মাহমুদ।
সেই দিন আলতাফ মাহমুদ অনেক বলেছিলেন সে এ কাজ করেন নি।
কিন্তু প্রমান ছিলো তার বিরুদ্ধে,,
কেউ তার কথা শুনেন নিহহ।

অপমান করে বের করে দেওয়া হলো তাকে।
আলতাফ মাহমুদ তার পরিবার নিয়ে বের হয়ে যায়।
নীলিমা আর রবিন দু ভাই বোন একে অপরে জড়িয়ে কাঁদতে থাকে।
যেন দুজন দুজনার প্রান থেকে আলাদা করে দেওয়া হচ্ছে ।
সাহেল এসে জোড় করে নীলিমা কে সরিয়ে নিয়ে যায়।
তখন নীলিমার বয়স ছিলো দশ ,, আর রবিনের ষোলো।
কিন্তু রবিন প্রতি মাসে লুকিয়ে নীলিমার সাথে দেখা করতো।
বিপদ ঘটে তখন যখন নীলিমার এস এস সি পরীক্ষা তখন , নীলিমা কে চকলেট দিতে আর উইস করতে আসে রবিন।
সেটা দেখে ফেলে সাহেল ,, সাহেল হুমকি দিয়ে বলে
যাতে নীলিমার সাথে আর যোগাযোগ না রাখে, যদি যোগাযোগ রাখে তো আজাদ চৌধুরী কে সব বলে দিবো।
রবিন রিকোয়েস্ট করে বলে ভাই এমন করো নাহহ প্লিজ।
কিন্তু সাহেল শুনে না,,, অগত্যা তাকে সাহেল এর শর্তে রাজি হতে হয়।
নীলিমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় ওহহ।
কারন বলেছিলো সাথে ইনিয়ে বিনিয়ে আর ও অনেক কিছু বলবে।
যার ফলে তার বাবা কে আবার দোষারোপ করা হবে।
রবিন অসহায় ছিলো সেদিন, তার পরিবারের উপর ছিলো অভিযোগ।
রবিন চোখের পানি ফেলে বাসায় চলে আসে।
রবিনের জোড়াজোড়ি তে আলতাফ মাহমুদ ইউ এস এ তে ফিরতে পারেন নি।
রবিন বাসায় এসে বলে সে ইউ এস এ তে যেতে রাজি আর তার কিছু দিনের মাঝেই তারা ইউ এস এ তে চলে যায়।
সাত বছর পূর্বে আলাদা হয়ে যায় দুজন ভাই বোন )

ভাবতেই রবিনের চোখ থেকে দু ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো।

*

ইথিনা হসপিটাল থেকে যখন জানলো তন্ময় রবিনের কোয়ার্টার এ ঠিক তখনি চলে আসে রবিনের কোয়ার্টার্স এ।
রবিনের থেকে এক্সট্রা চাবি নিয়ে আসে ওহহ।
একস্ট্রা চাবি দিয়ে লক খুলে রুমে ঢুকে তন্ময় কে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য।
পা চেপে চেপে একটা বেড রুমে গিয়ে দেখে তন্ময় নেই।
অন্য রুমের দিকে পা বাড়াতেই চোখে পরে গেস্ট রুমে আলো জ্বলছে।
ইথিনা পা চেপে ঐ রুমের দিকে যেতেই দেখে তন্ময় ভাবলেশহীনভাবে শুইয়ে আছে।
কি মিষ্টি দেখাচ্ছে তন্ময় কে ,, ইথিনা তন্ময়ের পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে বলল
– তন্ময়, দেখো আমি চলে এসেছি।

তন্ময় আগের মতোই শুইয়ে আছে দেখে।
ইথিনা তন্ময়ের নাক টিপে দিয়ে বলল
– একদম কিউট কিউট ,, এই তন্ময় উঠো নাহহ।

তন্ময় উঠলো না ,, বেশ কয়েক বার ডাকার পর ও তন্ময় উঠছে না দেখে ইথিনার হাত পা কাঁপতে থাকে।
তন্ময়ের পাল্স চেইক করে বুঝে তন্ময় জ্ঞান হাড়িয়েছে।
এজ এ ডক্টর ইথিনা বুঝে যায় লাস্ট ইনজেকশন না নেওয়ার জন্য ই এই অবস্থা।
ইথিনা ইমিডিয়েটলি বি ডি থে থাকা তার বাবার হসপিটালে ফোন করে সব বুঝিয়ে দেয়।
যাতে ফাস্ট সব কিছু রেডি করে রাখে তারা।
এই রোগিদের চিকিৎসা সব হসপিটালে সম্ভব নয়।
ইথিনা পানি এনে তন্ময়ের জ্ঞান ফেরায় , কিন্তু তন্ময়ের সম্পূর্ণ জ্ঞান ফিরে না।
এমন মনে হচ্ছে, যেন তন্ময় নেশা করেছে।
ইথিনা তন্ময় কে ধরে নিচে নামিয়ে আনে ।
গাড়ি তে বসিয়ে দ্রুত হসপিটালের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
যেহেতু ইউ এস এ থেকে ইনজেকশন আনতে বেশ সময় লাগবে , তাই ইথিনা ইন্ডিয়া থেকে যোগাযোগ করে ইনজেকশন আনতে বলে।

হসপিটালে পৌছাতেই ওয়াড বয় রা মিলে তন্ময় কে হসপিটালের ভেতরে নিয়ে যায়।
তন্ময়ের শরীরের অবস্থা বেশ করুন দেখাচ্ছে ।

তন্ময়ের শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে দেখে তন্ময় কে অক্সিজেন দেওয়া হয় ।
কিন্তু তাতে ও কাজ হয় নাহহ , ইন্ডিয়া থেকে ইনজেকশন হসপিটালে পৌছাতেই আর ও পাঁচ ঘন্টা লাগবে ।

ইথিনা ডক্টর দের নিয়ে বোর্ড মিটিং এ বসে।
সবাই মিলে ডিজিশন নেয় তন্ময় কে আই সিউ তে পাঠানো হবে।

তন্ময় কে আই সিউ তে পাঠিয়ে ইথিনা মুখ চেপে কাঁদতে থাকে।
ডক্টর রা নাকি খুব পাষান হয় , কিন্তু আপন মানুষ দের ক্ষেত্রে ডক্টর রা হয় তুলোর মতো নরম।

রবিন তন্ময়ের শরীরে অবস্থা খারাপ তা খবর পেয়ে দ্রুত হসপিটালে আসে।
রবিনের শরীর কাঁপছে, তন্ময়ের কন্ডিশন গুরুতর।
ইথিনা কাঁদতে কাঁদতে বলল
– তন্ময়ের কি এমন দরকার ছিলো যার জন্য ইনজেকশন না নিয়ে বি ডি তে আসতে হলো।
জীবনের এতো বড় রিক্স কেন নিলো ওওও?

রবিন বুকে হাত গুঁজে দাড়িয়ে আছে।
মাথা কাজ করছে নাহহহ , তন্ময়ের শরীরের কন্ডিশন দেখে রবিনের ইচ্ছে করছে পুরো হসপিটাল গুড়িয়ে দিতে।
বি ডি তে কোন ভালো ট্রিটমেন্ট ই নেই।
একটা ইনজেকশন সেটা ও অন্য দেশ থেকে আনতে হয়।

রবিন চুল চেপে ধরে আছে।
তন্ময় কে কতোটা ভালোবাসে রবিন তা নিজে ও জানে নাহহ।
সব কিছু এলো মেলো হয়ে যাচ্ছে তার।
এই ছেলেটার একটা ছবি নিয়ে কাটিয়েছে কতো দিন।
বেস্ট ফ্রেন্ড নামক জায়গা টা ভাই হয়ে ছিলো ওর কাছে।
একটা ছবি নিয়ে ছবির সাথে কতো কথা বলেছে ওহহহ।
গত কয়েক বছরে তন্ময় নামের ছেলেটা জান হয়ে গেছে ওর।
এই ছেলেটা ই তো ওর ছোট বেলার সঙ্গি।
কিন্তু একটা বিষয় ওর মাথায় আসছে নাহহহ তন্ময় কেন এই অবস্থায় বি ডি তে আসলো?

পরবর্তী পার্ট পেতে পেইজ এ ফলো দিয়ে রাখুন

https://www.facebook.com/Fatema-tuz-ফাতেমা-তুজ-110123584545542/

বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাফ করবেন ।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here