ফাগুন প্রেম পর্বঃ ৩৩

0
390

#__ফাগুন_প্রেম__
লেখনীতে: Bornali Suhana
পর্ব: ৩৩

💛
রুমু এবার আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলো না। বর্ণালীর বুকে মাথা রেখে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে দেয়। বর্ণালী কিভাবে রুমুকে শান্তনা দিবে তা জানা নেই ওর। কিন্তু তারপরও রুমুর এই কান্নার কারণ ওকে জানতেই হবে। রুমুকে সে কখনোই কাঁদতে দেখে নি। কেন আজ এভাবে কাঁদছে মেয়েটা।
-“কি হয়েছ রুমু কিছু তো বল।”
রুমু শান্ত হয়ে কি বসে রইলো কিছুক্ষণ তারপর বললো,
-“সবার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে আমার বিয়ের কথা কেন কেউ বলেনা? আমার কি বিয়ের বয়স হয় নি?”
বর্ণালী রুমুর এমন কথা শুনে প্রায় আকাশ থেকে পড়লো। এই মেয়ে কি পাগল। এই কথার জন্য এভাবে কাঁদে কেউ!!! ভয় পাইয়ে দিলো শুধু শুধু। বর্ণালীর এখন ইচ্ছে করছে একটা থাপ্পড় দিতে। কিন্তু তা সে পারবে না। মাথায় হাত দিয়ে অনেকক্ষণ ধরে বসে আছে।
-“কিরে ভাইয়াকে বল না আমার বিয়ের কথা। আমি তো লজ্জা পাই।”
কথাটা বলেই রুমু চোখ নিচের দিকে নামিয়ে মিটিমিটি হাসতে লাগলো।
-“তোর লজ্জা আছে?”
-“লজ্জা না থাকলে কি শুধু শুধু এই কাপড়ের বোঝা বয়ে বেড়াই নাকি?”
-“দেবো এক থাপ্পড় মেয়ে। আমাকে ভয় পাইয়ে মজা করা হচ্ছিলো?”
-“তুই যেভাবে টেনশনে ছিলি এর চেয়ে ভালো কোন উপায় জানা ছিলো না আমার তোকে টেনশন থেকে মুক্তি দেয়ার। হিহিহিহি”
রুমু বর্ণালীকে জড়িয়ে ধরে এক ধাক্কায় বিছানায় ফেলে শুয়ে পড়লো।
-“ছাড় আমার গরম লাগছে।”
-“বাহ আজ আমি বান্ধবী ধরেছে বলে গরম লাগছে আর যখন ইভান এভাবে জড়িয়ে ধরে ঘুমাবে তখন খুব ঠাণ্ডা লাগবে না?”
বর্ণালী রুমুর মাথায় একটা চাপড় মেরে ওকে জড়িয়ে ধরে বলে,
-“ইভান ছাড়া কি তোর মাথায় আর কেউ আসেনা?”
-“নাহ দুলাভাই হিসেবে তো আমার ইভানকেই চাই।”
-“আর যদি এমন না হয়?”
-“হবে হবে ইভান তোকে অনেক ভালোবাসে আর সারাজীবন বাসবে। দেখ ওকে আর অপেক্ষা না করিয়ে তোর মনের কথা ওকে বলে দে।”
-“আমি নিজেই তো বুঝিনা রে আমার মন আসলে কি চায়।”
-“তোর মন ইভানকেই চায়। তুই বুঝতে পারছিস না। বেশি দেরি করিস না পরে না আবার আমার মতো পস্তাতে হয়।”
-“তোর মতো পস্তাতে হয় মানে?”
-“এই যে ভাই-ভাবীকে বলতে পারছি না আর বিয়েটাও হচ্ছেনা।”
-“যাহ পাজি কোথাকার। ঘুমা এখন কাল সকালে উঠিতে হবে। কলেজে কাল অনেক কাজ।”
-“কি এতো কাজ?”
-“আরে পরশু অনুষ্টান না? তুই আসবি প্লিজ? তুই আসলে আমার কাজে অনেক হেল্প করতে পারিস।”
-“১০০টাকা দিবি?”
-“১০০টাকা দিয়ে কি করবি?”
-“দিবি কিনা বল।”
-“আচ্ছা দিবো।”
-“হুম এখন ঘুমাতে দে।”
.
ইভান বর্ণালীর বাসার সামনে এসে ঘোরঘোর করছে কখন বের হবে এই ভেবে। কিন্তু ওর কোন খবরই নেই। বর্ণালীকে কল দিলো কিন্তু রিসিভও করলো না।
কিছুক্ষণের মধ্যেই বর্ণালী আর রুমুকে দেখতে পেলো বের হতে। ইভান একটু দূরে সরে দাঁড়ালো। সাদা আর বেগুনি রঙের মাঝে ড্রেসটায় বর্ণালীর সৌন্দর্য যেনো আরো কয়েকগুন বেড়ে গেছে। ইভান আরো একবার ওর প্রেমে পড়ে গেলো। চোখ সরাতে পারছে না। হা হয়ে তাকিয়েই আছে।
-“তোর আশিক সামনে।”
-“মানে?”
-“আমার দুলাভাই।”
-“কি বলিস এসব?”
-“আরে সামনে দেখ কারো সু-নজর পড়েছে তোর উপর।”
বর্ণালী সামনে তাকিয়ে দেখে ইভান দাঁড়িয়ে আছে। ওর চোখ এদিক ওদিক তাকিয়ে দ্রুত পায় ইভানের দিকে যাচ্ছে।
-“তু…তুমি এখানে কি করছো?”
-“হু….!”
-“কি হু?”
-“না মানে তোমাদের লিফট দিতে এলাম এই আরকি।”
-“তোমাকে কি কেউ বলেছে আমাদের লিফট দিতে?”
এদিকে ইভান আর বর্ণালী কথা বলছে আর ওইদিকে রুমু গিয়ে টুপ করে গাড়ির ভেতর গিয়ে বসে পড়ে।
-“তোদের ঝগড়া শেষ হলে তাড়াতাড়ি ভেতরে আয়। আমি বসলাম।”
-“রুমু নেমে আয়। আমরা রিকশা করে যাবো।”
-“আমার কাছ টাকা নেই আমি ইভানের গাড়িতে যাবো।”
-“আমার কাছে আছে আয় আমি ভাড়া দিবো।”
-“আমি তোর টাকায় যাবো না।”
বর্ণালী শুধু শুধুই কথা বাড়াচ্ছে। ও জানে রুমুর সাথে কথা বলে পারবে না। তাই আর কথা না বাড়িয়ে গাড়ির ভেতরে ঢুকে ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দেয়। সে এখনো ইভানের উপর রেগে আছে। কথাই বলবে না ভেবেছিলো। কিন্তু ইভান যেমন ছেলে কথা না বলেও থাকতে দিবে না ওকে।

💛

#______চলবে…….

Part 32
https://www.facebook.com/103632171307142/posts/127783218892037/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here