#ইসলামিক_গল্প #ISLAMIC_STORY
===========================
❝ ফিরে_আসা ❞
———————-
লেখিকা- Umma Hurayra Jahan.
পর্ব- ১৯
বাবার চিৎকার শুনে মাহিন দৌড়ে নিচে এলো।দৌড় দিয়ে মাহিন হাপিয়ে গেল।
মাহিন- কি….কি..হয়েছে বাবা??
ভয়ে ভয়ে বললো।
আরমান- তুমি কি কোন দিন ঠিক হবে না?
মাহিন বাবাকে অনেক ভয় পায়।
মাহিন- না মানে…
আরমান- কি না মানে মানে করছো।এতো বেলা পর্যন্ত কেউ ঘুমায় নাকি?তুমি যে এখন বিয়ে করেছো সেটা কি ভুলে গেছো?
যাও তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে এসো। সবাই একসাথে নাস্তা করবো।
মাহিন – ঠিক আছে বাবা।
মাহিন মনে মনে বলছে “ধুর ভাল্লাগে না।””ঐ মেয়েটা তো জ্বালিয়ে মারলো।সব হয়েছে ঐ মেয়ের কারনে।
মাহিন ফ্রেশ হয়ে নিচে এলো।
মেহেঘ- তাড়াতাড়ি বস ।তোর জন্য সবাই অপেক্ষা করছে।
আরমান- শোন তোমরা ।আজ কমিউনিটি সেন্টারে বৌভাত হবে। দুপুর ১টায় অনুষ্ঠান শুরু হবে।সবাই তৈরি থেকো। আমি সবাইকে আগে থেকেই দাওয়াত দিয়ে রেখেছি।
মাহিন তুমি তোমার বন্ধুদের বলেছো তো??
মাহিন- জ্বি বাবা বলেছি।
মেহেঘ- আমিও আমার কিছু বান্ধবিদের বলেছি ।ওরা সবাই আসবে।
মহিমা – বাবা আমিও আমার বান্ধবীদের বলেছি ।ওরাও আসবে।
আরমান- ঠিক আছে ।সবাই সময় মতো তৈরী থেকো।
ডাইনিং টেবিলে ফাতেমাকে দেখে মাহিন একদম সহ্য করতে পারছে না।ফাতেমাকে দেখে ওর খাওয়ার মুড চলে গেল।
মাহিন- আমার খাওয়া হয়ে গেছে আমি চললাম।
মেহেঘ- একি তুই তো কিছুই খাস নি। খাওয়া হয়ে গেছে মানে????
মাহিন- হুম মা ।আমি আর খাবো না। আমার এমনিতেই পেট ভরে গেছে।
{ফাতেমার দিকে তাকিয়ে কথাটা বললো মাহিন।}
আমি চললাম আমার কিছু দরকারি কাজ আছে।
এই বলে মাহিন খাবার টেবিল ছেড়ে চলে গেল।
সবার খাওয়া শেষে যে যা রুমে গেল।
ফাতেমা রুমে যেতেই খাদিজা বেগম তাকে ফোন দিল।
ফাতেমা – হ্যালো মা আসসালামুআলাইকু।কেমন আছো।??
খাদিজা- ওয়ালাইকুমুস সালাম। আলহামদুলিল্লাহ রে মা আছি ভালোই। তোকে একদিন দেখিনি ।মনে হচ্ছে যেন কত বছর ধরে দেখি না।তুই কেমন আছিস রে মা?
ফাতেমা – আলহামদুলিল্লাহ মা। আমারও তোমাদেরকে খুব মনে পড়ছে।
খাদিজা- ও বাড়িতে তোর কোন অসুবিধা হচ্ছে নাতো???ওরা সবাই কেমন রে মা???
ফাতেমা – না মা কোন অসুবিধা হচ্ছে না।ওরা সবাই খুব ভালো মা।
খাদিজা- আর জামাই????
ফাতেমা এই কথা শুনেই কিছুটা থমকে গেলো।কি বলবে বুঝে পাচ্ছে না ।মিথ্যা তো আর বলা যাবে না ।কারন মিথ্যা বলা মহাপাপ।আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সা: মিথ্যা বলতে নিষেধ করেছেন। কারন আল্লাহ মিথ্যাবাদীদের পছন্দ করেন না।
ফাতেমা – না মানে মা…..
খাদিজা- আমি বুঝতে পেরেছি রে মা। আমি তো তোর মা আমি সবি বুঝি।আমি জানি জামাই তোকে বেশি পছন্দ করে নি।কারন তুই তার মতো না।
কিন্তু কি আর করবি মা ।সবি আল্লাহর ইচ্ছা ।উনি যা ভালো বুঝেছেন তাই করেছেন।হয়তো মাহিনের সাথে তোর বিয়ে হয়েছে কোন বড় কল্যাণের জন্য।তুই আশা ছাড়িস না মা। তুই তোর সব দায়িত্ব পালন করবি। দায়িত্ব পালনে তুই অবহেলা করিস না। দেখবি একদিন সে ফিরে আসবে দ্বীনের পথে।যেটা হবে আল্লাহর দেওয়া তোর জন্য সবচেয়ে বড় উপহার।মা হিসেবে আমি এটাই দোয়া করি।
ফাতেমা – আমি জানতাম মা, তুমি আমার মনের কথা বুঝবে।তুমি শুধু দোয়া করো মা আমি যেন সফল হয়।
খাদিজা- দোয়া করি রে মা তুই সুখী হ।
ফাতেমা – আচ্ছা মা তোমরা কখন আসবে?বাবা আর ভাইয়া কোথায়?
খাদিজা- ওরা রেডি হচ্ছে ।একটু পরেই আমরা রওনা দেব।তুই চিন্তা করিস না।
ফাতেমা- হুম ঠিক আছে। আর হে আরেকটা কথা বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় আয়াতুল কুরসি পড়তে ভুল করো না যেন।আয়াতুল কুরসি পড়ে বের হয়ো সবাই ।কারন এর ফজিলত অনেক।কোন ব্যাক্তি যদি বাড়ি থেকে আয়াতুল কুরসি পড়ে বের হয় তাহলে তাকে ফেরেশতারা সারা রাস্তা পাহাড়া দিয়ে নিয়ে যায়।আর তার উপর কোন বালামুসিবত আসতে পারে না।
খাদিজা- ঠিক আছে রে মা।মনে থাকবে। এখন রাখছি ।আসসালামুআলাইকুম।
ফাতেমা – ওয়ালাইকুমুস সালাম।
মেহেঘ বেগম সবাইকে তাড়া দিচ্ছে তৈরী হওয়ার জন্য।
সবাই তৈরী হচ্ছে ।
মেহেঘ- এই মহিমা তাড়াতাড়ি তৈরী হ। মাহিন আর ফাতেমাকে তৈরি হতে বল।
মহিমা – ঠিক আছে মা ।
ফাতেমা – এই যে রাগি মশাই তাড়াতাড়ি তৈরি হন ।মা না হলে রাগ করবে।
মাহিন বিছানায় বসে মোবাইল টিপছিলো।
মাহিন- এই মেয়ে তোমার সমস্যা কি হে?????আমাকে রাগি মশাই বলছো কেন??
মাহিন রেগে গিয়ে কথাটা বললো।
ফাতেমা – তাহলে কি বলবো বলুন তো???আপনি তো আমার উপর সবসময় রাগ করে থাকেন। তাই এই নামটাই আপনার জন্য শ্রেয়।
আপনি তাড়াতাড়ি রেডি হন। আমি যোহরের নামাযটা পড়ে নিচ্চি তারপর রেডি হব।
এর মধ্যেই মহিমা ঘরে ঢুকলো
মহিমা – আরে ভাবি এখন কিসের নামায পড়বে।???এখনো তো আজান পড়ে নি।
ফাতেমা মুচকি হেসে বললো
ফাতেমা- বোন আমার নামাযের ওয়াক্ত আছে যা নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হয়ে যায়। আযানের আগেই ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায়। তাই এখন তো যোহরের নামাযের ওয়াক্ত শুরু হয়ে গেছে তাই নামাযটা পড়ে নিচ্ছি।কারন ঐ অনুষ্ঠানে গিয়ে হয়তো নামায পড়ার সুযোগ পাবো না।
মহিমা – Wow you are great ভাবি। তুমি কত কিছু জানো। তোমাকে যতই দেখছি মুগ্ধ হচ্ছি।
মাহিন- মুগ্ধ না ছাই। এসব কয়েকটা কথা জানলেই কেউ মহান হয়ে যায় না বুঝলি ।যত্ত সব ফালতু গাইয়্যা ক্ষেত কোথাকার।
মহিমা- এটা তুই কি বলছিস ভাইয়া ?এগুলো কেউ নিজের বউকে বলে।????
মাহিন – আচ্ছা তুই যা এখান থেকে।
মহিমা – হুম যাচ্ছি ।মা তোদেরকে রেডি হতে বলেছে।তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আয়।
মাহিন- যা আসছি
ফাতেমা এদিকে নামায পড়ে তৈরি হচ্ছে।
ফাতেমা বোরকা ,হিজাব ,হাত মোজা ,পা মোজা পড়ে রেডি হলো।
মাহিন ফাতেমার এই সাজ দেখে রেগে গেল।
ফাতেমাকে দেখে রাগ করা ছাড়া তো তার আর কোন কাজ নেই।
মাহিন মনে মনে বলছে“ এইযে আবার ভুত সেজেছে।এবাই এই ভুত সেজেই আমাদের সাথে অনুষ্ঠানে যাবেন মহারাণী।বাবা যে কি দেখে একে পছন্দ করলো আমার মাথায় ঢুকছে না ”
মাহিন- আচ্ছা তোমাকে মনে হয় আমি আগে কোথাও দেখেছি।
কিন্তু মনে করতে পারছি না।
ফাতেমা – হুম ।আপনার মনে আছে একদিন আপনার গাড়ির সাথে ধাক্কা লেগেছিলো।
মাহিন- ও হে মনে পড়েছে।হাহাহাহাহা
ফাতেমা – পাগলের মতো হাসছেন কেন রাগি মশাই????
মাহিন- হাহাহাহাহাঅ
ফাতেমা – আরে হাসছেন কেন?
মাহিন- হাহহাহা। তাহলে তুমিই সেই চাচি।হিহাহা
ফাতেমার একটু মন খারাপ হলো।
ফাতেমা- হাসেন হাসেন ।কিন্তু একদিন আপনি পস্তাবেন বলে রাখলাম।
এই বলে ফাতেমা দৌড়ে নিচে চলে গেল।
মাহিন- হু….পস্তাচ্ছি তো তোমার মতো একটা ক্ষেতকে বিয়ে করে।
ফাতেমা নিচে যেতেই………
চলবে ইনশাআল্লাহ……….
কমেন্ট প্লিজ…..😍