#ইসলামিক_গল্প #ISLAMIC_STORY
===========================
❝ ফিরে_আসা ❞
———————-
লেখিকা – Umma Hurayra Jahan
পর্ব- ৩১
মাহিন দেখল ফাতেমা নামাযে আছে।কিছুক্ষন পর ফাতেমা নামায শেষ করে উঠলো।
মাহিন- এই মেয়ে আমার সাথে তুমি এমন করলে কেন হুম??????জবাব দাও।আরেকটু হলেই তো…..
ফাতেমা – আপনাকে একটু শায়েস্তা করার সুযোগ পেয়েছিলাম।সেই সুযোগটা কিভাবে হাত ছাড়া করি বলুন তো???হিহিহি
মাহিন- খুব হাসি পাচ্ছে তাই না???
ফাতেমা – যাই হোক গোসল করে আসুন।মা হয়তো একটু পর খাবার খাওয়ার জন্য ডাকবে।
এই বলে ফাতেমা তার শ্বাশুড়ির ঘরে গেল।
ফাতেমা – আস সালামু আলাইকুম মা।আসি??
মেহেঘ- আয়। ভিতরে আয়।
ফাতেমা – তোমার নামায শেষ মা??
মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে ফাতেমা কথাটা বললো?
মেহেঘ- হে রে মা।
ফাতেমা – মা একটা কথা বলবো??
মেহেঘ- হে বল না কি বলবি?
ফাতেমা – না মানে আমার কয়েকটা জিনিস লাগবে।বাবাকে একটু বলবে যাতে আসার সময় নিয়ে আসে।
মেহেঘ- হে অবশ্যই।বল কি লাগবে??
ফাতেমা – না মানে এই বাড়িতে তো কোন কোরআন শরিফ নেই।তাই আমি পড়তে পাড়ি না।যদি বাকাকে বলে একটা কোরআন শরিফ ,একটা রেহাল আনতে বলতে খুব ভালো হতো।
বাড়িতে কোরআন শরিফ নেই বলে মেহেঘ বেগম কিছুটা লজ্জিত বোধ করলো।মনে মনে নিজেকে প্রশ্ন করলো “আমরা কেমন মুসলমান ?যাদের বাড়িতে একটা কোরআন পর্যন্ত নেই আর তা পাঠ করার মতো এতোদিন কেউ ছিলো না।””নিজেকে খুব ছোট মনে হচ্ছে মেহেঘ বেগমের।
মেহেঘ- ঠিক আছে রে মা।আমি তোর শ্বশুড়কে বলে দিব যাতে অফিস থেকে ফেরার পথে নিয়ে আসে।আর কিছু লাগবে??
ফাতেমা – হে আর কয়েকটা ইসলামিক বই আনলে ভালো হতো।আমিও পড়তে পারতাম আর তুমি ,বাবা,আর মহিমা পড়লেও খুব উপকার হতো আমাদের সবার জন্য।দ্বীনের বিষয়ে অনেক কিছু জানতে পারতে।
মেহেঘ- আচ্ছা ঠিক আছে।কোন কোন বই লাগবে আমাকে বল আমি তোর শ্বশুড়কে আনতে বলে দিবো।
ফাতেমা কতগুলো ইসলামিক বইয়ের নাম বললো তার শ্বাশুড়ি মাকে।
মেহেঘ- আচ্ছা ঠিক আছে আমি এই বই গুলো আনতে বলে দিবো।আচ্ছা শুন রে মা।আজকে সন্ধ্যার সময় মাহিনের চাচা আর চাচি আসবে।তুই একটু রেডি থাকিস।
ফাতেমা – কিন্তু মা আমি তো চাচার সামনে যেতে পারবো না।
মেহেঘ- কেন রে মা।মাহিনের চাচা তো মাহিনের বাবার মতই।আর মাহিনের বাবার মতো মানে তরও বাবার মতো।তাহলে সামনে গেলে সমস্যা কি???
ফাতেমা – না মা।উনি বাবার মতো হলেও তো উনি আমার আপন বাবা বা আপন শ্বশুড় না ।তাই তার সামনে যাওয়ার কোন বিধান ইসলামে নেই।কারন তিনি আমার গায়রে মাহরাম।
গায়রে মাহরাম হলো যাদের সাথে বিয়ে জায়েজ হবে।যারা পরপুরুষ।ইসলামে ১৪ জন পুরুষের অর্থাৎ ১৪ রকম সম্পর্কের পুরুষের উল্লেখ আছে মাহরাম।তাদের সামনে পর্দা করতে হয় না ।তাদের সামনে যাওয়ার বিধান ইসলামে আছে।
মেহেঘ- এই ১৪ জন কারা কারা ???
ফাতেমা – যেমন বাবা,ভাই,ছেলে ,স্বামী,দাদা ,নানা,আপন চাচা ,মামা ,শ্বশুড়,মেয়ের জামাই,নাতি ,দুধ সম্পর্কীয় বাবা ও অন্যানরা„যেমন -ভাই,চাচা ,মামা ,ছেলে ইত্যাদি
মেহেঘ- ও বুঝতে পেরেছি।এদের সামনে পর্দা করতে হয় না তাই তো??
ফাতেমা – হুম ।কিন্তু পর্দা না করলেও শালীনতার সাথে থাকতে হয় এদের সামনে।
মেহেঘ- আমি তো এসব কিছুই জানতাম না রে মা।কেউ কোন দিন এসব ব্যাপারে বুঝায় নি।
ফাতেমা – এখন তো আমি এসে গেছি।আস্তে আস্তে তোমাদেরকে সব শিখিয়ে দিবো আমি যা যা জানি।
মা গো তুমি হয়তো মনে মনে ভাবতে পারো যে আমি নতুন বউ হয়েও তোমাদেরকে এসব জ্ঞান দিই।কিন্তু মা বিশ্বাস করো আমি যে এই পরিবারের প্রত্যেকটা সদস্যকে নিজের মনে করি ।তোমরাই তো আমার আপন জন।আমি চাই আমার এই পরিবারটা যাতে তাড়াতাড়ি দ্বীনের পথে আসতে পারে।আমরা সবাই একসাথে মিলে যাতে দ্বীনের পথে চলতে পারি।আমরা সবাই যাতে জান্নাতে যেতে পারি।এই ক্ষনস্থায়ি দুনিয়াটা তো আখিরাতের শস্যক্ষেত।আমরা এই দুনিয়াতে যেমন আমল করবো সে অনুযায়ী আখিরাতে ফল পাবো।তাই আমাদের উচিত আল্লাহ আমাদের যে উদ্দেশ্যে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন আমরা যেন সেই কাজ করে ইমানের সহিত মৃত্যু বরন করতে পারি।
মেহেঘ- সত্যি কথা বলতে কি জানিস?প্রথম প্রথম তুই যখন এসব বলতিস আমার খুব রাগ হতো।আমি তোর এসব কথা সহ্য করতে পারতাম না।কিন্তু এখন আস্তে আস্তে বুঝতে পারতেছি যে তুই যা বলিস তাই ঠিক।কিন্তু মা রে এতো দিনের অভ্যাস তো আর চাইলেই হুট করে বদলানো যায় না।এতো দিন যেভাবে জীবন যাপন করেছি সেটা বদলাতে একটু সময় লাগবে।কিন্তু তুই চিন্তা করিস না।আমি নিজেকে বদলানোর পুরপুরি চেষ্টা করবো।
ফাতেমা – আলহামদুলিল্লাহ।আল্লাহ যেন তোমার ইচ্ছা পূরন করেন।আমিন।
মেহেঘ- ও জানিস মা মাহিনের চাচিও তোর মত বোরকা পড়ে।ওদের পরিবারটাও অনেক ধার্মিক।ঐ যে ইমনকে দেখলি না??ইমনের বাবা মা উনারা।
ফাতেমা – না তো মা।আমি তো ইমন নামে কাউকে দেখি নি।
মেহেঘ- ও আচ্ছা।জানিস ইমন এমন একটা ছেলে ওর মতো আমি আর একটাও দেখি নি।আজ পর্যন্ত আমাদের দিকে তাকিয়ে কথা বলে না।মহিমা যদি ওর সামনে যায় সবসময় চোখ নিচে মাটির দিকে রেখে কথা বলে।৫ ওয়াক্ত নামায পড়ে।ঐ যে কি যেন বলে সুন্নতি পোষাক না কি ঐগুলা পড়ে সেই ক্লাস টেন থেকে।দুনিয়া উল্টে যাবে কিন্তু সে নামায বাদ দেয় না।
ফাতেমা – আলহামদুলিল্লাহ।
মেহেঘ- ঐ ইমনের কথাতেই তো আমরা তোর আর মাহিনের বিয়েটা ঘরোয়া ভাবে করেছি।
ফাতেমা – আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো তো।আচ্ছা উনার কি বিয়ে হয়ে গেছে???
মেহেঘ- না ।কেন বল তো???
ফাতেমা – না মানে ..।পরে বলবো।
মেহেঘ- ওর বাবা মা তো ওর বিয়ের জন্য পাত্রী খুজছে।হয়তো এই ব্যাপারেই কথা বলতে আজ আমাদের বাসায় আসবেন।এই তো পাশের কয়েকটা বাড়ির পরেই তো ওদের বাসা।
ফাতেমা – ও আচ্ছা।
ফাতেমা একটু চিন্তাই পড়ে গেল।কি যেন একটা ভাবছে।
মেহেঘ- কি রে ফাতেমা কি ভাবছিস মা?
ফাতেমা – একটা কথা ভাবছিলাম।মা আমার একটা বান্ধবি আছে ।ওর নাম হেন্সি।ওর বাবা খুব অসুস্থ।তাই ওর বাবা মা ওর বিয়ে দেওয়ার জন্য পাত্র খুজছেন।
মেহেঘ- তাই নাকি??
ফাতেমা – হে মা।আমার বান্ধবিটা অনেক ভালো।ও এখন পরিপুর্ন পর্দা করে।ইসলামের সব বিষয় মেনে চলার চেষ্টা করে।তুমি কি চাচা চাচির সাথে ওর ব্যাপারে একটু কথা বলবে???মেয়েটা অনেক ভালো।
মেহেঘ- আচ্ছা ঠিক আছে।ওরা আগে আসুক।
ফাতেমা – আচ্ছা ঠিক আছে।মা আজ সন্ধার নাস্তা কিন্তু আমি বানাবো।
মেহেঘ- আচ্ছা ঠিক আছে।এবার চল খাবার খেতে চল।কত দূর থেকে জার্নি করে এসেছিস।যা মাহিনকে ডেকে নিয়ে আয়।
ফাতেমা – আচ্ছা ঠিক আছে।
এই বলে ফাতেমা মাহিনকে ডাকতে গেল।
মাহিন ফোনে কার সাথে যেন কথা বলছিলো।
মাহিন – আচ্ছা কালকে তাহলে দেখা হচ্ছে। এখন রাখছি।
মাহিন ফোন কেটে দিয়ে পিছনে তাকালো ।দেখল ফাতেমা পিছনে দাড়িয়ে আছে।
ফাতেমাকে হঠাৎ দেখে মাহিন চোরের মতো ভয় পেল ।
মাহিন মনে মনে বলছে “ এই মেয়ে কিছু শুনে ফেলে নি তো???
মাহিন- কি ব্যাপার তুমি এখানে কখন এলে??
ফাতেমা – আপনি কার সাথে কথা বলছিলেন??
এই মেয়ে কিছু শুনে ফেলে নি তো???
মাহিন- আ. .আ…আমি যার সাথে মন চায় তার সাথে কথা বলবো ।তোমার তাতে কি???তোমাকে কি কৈফত দিতে হবে নাকি??আর তোমাকে কে অধিকার দিল???
ফাতেমা – আপনার সব বিষয়ে জানার আমার ১০০% অধিকার আছে ।আর ইসলাম আমাকে সেই অধিকার দিয়েছে।
মাহিন- কিন্তু আমি তোমাকে জবাব দিতে বাধ্য নই।
ফাতেমা – আচ্ছা ঠিক আছে।জবাব দিতে হবে না।মা খাওয়ার জন্য ডাকছে ।চলুন।
মাহিন আর ফাতেমা খেতে গেল।
সারাটা দিন কেটে গেল।
মাগরিবের নামাযের পর মাহিনের চাচি আর চাচা আসলো।
ফাতেমা আগে থেকেই সব নাস্তা তৈরী করার জন্য মেখে রেখেছিলো।এবার ফাতেমা আর নুরি সব ভেজে রেডি করলো।
ফাতেমা রান্না শেষ করে নিজের ঘরে গিয়ে হাতমুখ ধোয়ে রেডি হলো।
আরমান সাহেবও এসে গেছেন বাসায় অফিস থেকে।আর ফাতেমা যা যা আনতে বলেছিলো সব নিয়ে এলেন।
আরমান সাহেব বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে ওনার ভাইয়ের সাথে ড্রয়িং রুমে বসে আলাপ করছেন।
মেহেঘ বেগম মাহিনের চাচিকে ডেকে নিয়ে আসলেন ফাতেমার রুমে।
আপাদমস্তক ঢাকা মাহিনের চাচিকে দেখে ফাতেমার খুব ভালো লাগলো।
মাহিনের চাচিরও ফাতেমাকে দেখে খুব পছন্দ হলো আর ভালো লাগলো।কারন চাচি ফাতেমাকে এর আগে বোরকা ছাড়া দেখেননি।বৌভাতের দিন ফাতেমাকে বোরকা পড়া অবস্থায় দেখেছিলো।আজ প্রথম বোরকা ছাড়া দেখলো।
ফাতেমা চাচিকে দেখে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে সুন্দর করে সালাম দিলো।
চাচি সুন্দর করে সালামের জবাব দিলো।সবাই সোফায় বসলো
চাচির নাম জান্নাত
জান্নাত- বাহ্ আমাদের ফাতেমা তো খুব মিষ্টি।এমন একটা মিষ্টি মেয়েই তো আমরা আমাদের ইমনের জন্যও খুজছি।যাই বলো মেহেঘ তোমরা খুব ভাগ্যবান ।আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তোমাদেরকে এমন একটা মিষ্টি বৌমা দিয়েছে।শুনেছি সকল কাজের কাজি আমাদের ফাতেমা।
মেহেঘ- ঠিক বলেছেন ভাবি।ফাতেমা আমাদের সকল কাজের কাজি।হিহিহি
জান্নাত- আল্লাহর কাছে এখন শুধু একটাই চাওয়া আমাদের ইমনের বউও যাতে দ্বীনদার হয়।
ফাতেমা – ইনশাআল্লাহ চাচি।আল্লাহ অবশ্যই আপনাদের মনে আশা পূরন করবেন।
মেহেঘ- তা ভাবি আপনারা তো ইমনের জন্য। বউ খুজছেন ।কোন মেয়ে কি দেখেছেন??
জান্নাত- তেমন কোন মেয়ে দেখা হয় নি।কিন্তু একটা মাদরাসায় পড়া মেয়ে হলে ভালো হতো।কেন তোমার জানা মতে কোন ভালো মেয়ে আছে নাকি?
মেহেঘ- আমার জানা মতে না।কিন্তু ফাতেমা ওর এক বান্ধবীর কথা আমাকে বলেছে।তাই বললাম আরকি।
জান্নাত- বাহ্ খুব ভালো।তা ফাতেমা মা তোমার সেই বান্ধবি কি মাদরাসায় পড়ে???
ফাতেমা – না চাচি ও মাদরাসায় পড়ে না ।ও আমার সাথে কলেজে পড়ে।কিন্তু ও একজন সদ্য হেদায়েত প্রাপ্ত।আগে এমন ছিলো না।আগে বেপর্দা হয়ে চলতো ।কিন্তু এখন সে পরিপুর্ন পর্দা করে।আর ইসলামের সব বিষয় মানার চেষ্টা করে।যতটুকু জানে সে অনুযায়ি আমাল করার চেষ্টা করে।
জান্নাত- কিন্তু মা আমরা তো মাদরাসার মেয়ে খুজছিলাম।কারন মাদরাসার মেয়েরা একটু বেশি দ্বীনদার হয়।কিন্তু …জেনারেল পড়ুয়া তাও আবার সদ্য হেদায়েত প্রাপ্ত……
ফাতেমা মিস্টি করে হেসে চাচিকে বললো-দেখুন চাচি মাদরাসার মেয়েরা অবশ্যই বেশি দ্বীনদার ।তাদের কোরআন হাদিস সম্পর্কে যারা জেনারেলে পড়ে তাদের থেকে জ্ঞান অনেকটাই বেশি।তারা ছোট থেকে মাদরাসায় পড়ে দ্বীনি শিক্ষা লাভ করে।তারা ছোট থেকেই আল্লাহর সব বিধি বিধান ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে থাকে।যার কারনে সে অনুযায়ি তারা অন্তরে আল্লাহর ভয় রেখে আল্লাহর সব বিধি বিধান মেনে চলে।আল্লাহর প্রতি ভয়টা বা আল্লাহ কে, তিনি কেন আমাদের সৃষ্টি করেছেন,কিভাবে ইবাদত করলে আল্লাহ খুশি হয় সেটা তারা জানে ছোট থেকেই।তাই তারা আগে থেকেই আমল করে।কিন্তু একজন জেনারেল লাইনে পড়া ছাত্র বা ছাত্রী তাদের তুলনায় অনেকটা কম জানে।তাই তাদের মনে এতোটা ভয় থাকে না প্রথম প্রথম ।কিন্তু তার পরিবার যদি দ্বীনদার হয় তাহলে সেটা অন্য ব্যাপার।কিন্তু যখন একজন জেনারেল লাইনে পড়ুয়া ছাত্র বা ছাত্রী যার পরিবার দ্বীনদার না ।যে আগে আল্লাহর বিধি বিধান সম্পর্কে কম জানতো সে যদি হঠাৎ আল্লাহর দ্বারা কারোর উছিলায় হেদায়েত প্রাপ্ত হয় আর পুর্বের সকল গুনাহ থেকে নিজেকে বিরত রাখে আর যা জানে সে অনুযায়ি আমল করে তাহলে একবার ভেবে দেখুন তার মনে আল্লাহর জন্য কতটা ভালোবাসা আর ভয় থাকতে পারে। যে মানুষটা তাকে কেন আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন ,পৃথিবীতে তাকে পাঠানোর উদ্দেশ্য কি সেই সম্পর্কে কোন জ্ঞানই নেই ,সেই মানুষটা যদি হঠাৎ তাকে আল্লাহ কেন সৃষ্টি করেছে ।পৃথিবীতে তার মূল কাজ কি সেটা জানতে পেরে হেদায়েতের পথে আসে তার মনে আর যাই থাকুক ভবিৎষতে যে সে আর পথভ্রষ্ট হবে না সেটা নিশ্চিত।আর প্রত্যেকটা হেদায়প্রাপ্ত ছেলে যখন বিয়ে করার কথা ভাবে তখন এমন একজন জীবন সাথি চায় যে তাকে জান্নাতের পথ দেখাবে।যে তাকে দ্বীনের কাজে সাহায্য করবে।যে তাকে আমল করতে সাহায্য করবে।প্রত্যেকটা হেদায়েত প্রাপ্ত ছেলে মেয়ে এমন একজন জিবন সাথি চায় যে হবে দ্বীন দার পরহেজগার,সুন্নত লেবাসী।যে আল্লাহর বিধান অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে।আর নবীজির সুন্নতকে বুকে আকড়ে ধরে বাচঁবে।
কিন্তু হেদায়েত প্রাপ্ত ছেলে মেয়েদেরকে যদি বিয়ের ক্ষেত্রে অবহেলা করা হয় আর তাদেরকে প্রাধান্য না দেওয়া হয় তাহলে তো সেটা তাদের সাথে অন্যায় করা হবে।তাদের স্বপ্ন তো ভেঙে যাবে।তারা যদি দ্বীনের ব্যাপারে সহযোগিতা না পায় তাহলে তো তারা আর সামনে আগাতে পেরবে না দ্বীনের ব্যাপারে।আমার বান্ধবীটার কথাই বলি।ও এখন খুব চিন্তায় আছে বিয়ের ব্যাপেরটি নিয়ে। কারন ওর অনেক ইচ্ছা কোন দ্বীনদার ছেলেকে বিয়ে করার।ও ইমন ভাইয়ের মতো দ্বীনদার ছেলেকে বিয়ে করতে চায়।কিন্তু সে আমাকে বলেছে কি জানেন??
জান্নাত- কি বলেছে???
ফাতেমা – ওকে না কোন দ্বীনদার ছেলে বিয়ে করবে না।সবাই নাকি শুধু মাদরাসার মেয়ে খুজে। ও সদ্য হেদায়েত প্রাপ্ত তাই নাকি ওকে কোন দ্বীনদার ছেলে বিয়ে করবে না।
আমাদের সমাজের অনেক জেনারেল লাইনে পড়া হেদায়েত প্রাপ্ত অধিকাংশ ছেলে মেয়েরাই এই হতাশায় ভুগে।তারা মনে করে তাদেরকে কোন দ্বীনদার পরিবার তাদের ছেলে মেয়েদের সাথে তাদের বিয়ে দিবে না।কিন্তু হতাশ হলে তো আর চলবে না।আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে।
আন্টি আপনি একটু ভেবে দেখবেন আমার বান্ধবির ব্যাপারে ।ও অনেক ভালো একটি মেয়ে।
বরাবরের মতো ফাতেমার যুক্তি আর বুদ্ধি মেহেঘ বেগম আর জান্নাত বেগমকে তাক লাগিয়ে দিলো।
জান্নাত বেগম মুচকি হেসে বললেন আর কিছু ভাবতে হবে না মা।
তুমি তোমার বান্ধবির মা বাবাকে বলে দিয়ো।যদি উনারা চান তো আমরা আগামি সপ্তাহে আমরা হেন্সিকে দেখতে যাবো।আমি তোমার চাচা আর ইমনকে জানিয়ে দিবো।
ফাতেমা – আলহামদুলিল্লাহ।ঠিক আছে আন্টি।
ফাতেমা ,মেহেঘ আর জান্নাত বেগম আরো কিছুক্ষণ আলাপ করলো।
চলবে ইনশাআল্লাহ……….