ফেইরিটেল পর্ব-৩৬

0
1158

#ফেইরিটেল
#Arishan_Nur (ছদ্মনাম)
Part–36

” গ্রান্টেড” শব্দটা নোটে লিখে ওইদিকে পাঠিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইমান পর্দার এপাড়ে চলে আসল। যেন সে অধীর আগ্রহে ওপাশে অনুমতির জন্য অপেক্ষায় ছিল৷ সে হুড়মুড় করে আসায় সামান্য ইতস্তত হয়ে পড়ল মিরা। বেচারি মাত্র শোবার জন্য ওড়নাটা সরিয়ে রেখেছে৷ আজকে ওয়েস্টার্ন ড্রেসেও তার ভারী আনকম্ফোটেবল লাগছিল। এখনোও অস্বস্তি ভর করলো মনের কোণে৷ ইমান অবশ্য তার অস্বস্তি বা ইতস্ততবোধের কারণ ধরতে পারল না৷ বুঝতেও পারেনি। এতো বুঝ তার মধ্যে নেই৷

সে গলার স্বর উচিয়ে জোরে করে বলে, “থ্যাংক ইউ।”

এরপর শিস দিতে দিতে বেরিয়ে গেল। মিরার পুনরায় হাসি পাচ্ছে। আসলে হাসি এমন একটা ব্যাপার, একবার শুরু হলে থামতেই চায় না৷ ইমানের যে বাইরে কোন কাজ নাই এটা দিব্যি বুঝে ফেলেছে সে। কিছু বাচ্চা আছে, ওদের যদি ডেকে এনে বলা হয়, ” বাবু এই জিনিসটা ধরবা না৷” ব্যাস হলো কাজ। ওরা বেশি বেশি করে সেই জিনিসটা ধরবে। বারং করা হয়েছে বলে৷ ইমানও ওই সব বাবুর মতো। এদিকে আসতে নিষেধ করা হয়েছে জন্যই, এখানে আসার জন্য তার যতো উতলা! মিরা ডিভানে গা এলিয়ে দিল। আজকে যা ধকল গেছে শরীরের উপর। চোখের নিচে ঘুম আপনা-আপনি ঢলে পড়ছে। জেগে থাকা দায়। মাকে ফোন করতে হবে৷ কিন্তু মনে হচ্ছে আজ আর সম্ভব না। কালকে সকালে মাস্ট কল করা লাগবে৷ ক্ষণে সে নিদ্রা রাজ্যের এক আদুরে সদস্য বনে গেল। ঘুম রাজ্যে প্রবেশ করে সে। তখন রাত বারোটা বাজে৷ ইমান কিছুক্ষণ রুমের বাইরে পায়চারি করে ফিরে আসে। রুমে এসে দেখল মিরা ঘুমাচ্ছে৷ গভীর ঘুম যাকে বলে। চারপাশ নিস্তব্ধতায় ঘেরা৷ পর্দা টেনে দেওয়ার কারণে সে নিজেই নিজের রুম চিনতে সামান্য সময় নিল এরপর মৃদ্যু হাসল মিরার দিকে তাকিয়ে। কালকে তাকে আবার টেক্সাস যেতে হবে তিনদিনের জন্য। রোজ রোজ শহরের বাইরে যাওয়াটা খুব বিরক্তির কারণ হয়ে পড়ছে৷ প্রথমবার ট্রিপের মতো আনন্দ করেছিল। এরপর এখন বাইরে যাওয়ার কথা শুনলেই মেজাজ চটে যায়৷ সারাদিন বাসায় বসে থাকতে ইচ্ছা করে৷

সে মিরার দিকে চেয়ে থাকে কিছুক্ষণ। এই মুখমণ্ডলটা এতো নিষ্পাপ কেন? হুয়াই? দুমিনিট তার দিকে তাকিয়ে থেকে সে ডিভানের সামনে গিয়ে বেশ সাবধানে মিরাকে কোলে তুলে নিল৷ এরপর বেডে এসে আস্তে করে একপাশে শুইয়ে দিল৷ নরম তুলতুলে কম্বলটা গায়ে মুড়িয়ে দিল। বীনা শব্দ করে সে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়। বাইরে বেশ জোরে জোরে বাতাস বইছে। বৃষ্টির পূর্বাভাস। ইমানের একটা অদ্ভূত ক্ষমতা আছে। বৃষ্টি হওয়ার আগ মুহুর্তে বুঝে যায় বৃষ্টি পড়বে৷ যতোবারই মনে হয় বৃষ্টি পড়বে তার কিছুক্ষণ পর ঝুমঝুম করে বৃষ্টি নামে৷ সিগারেট ধরিয়ে সে মনে মনে দোয়া করে যেন কালকে এতো বৃষ্টি হোক যে প্রাকৃতিক বিপর্যায়ের কারণে তাদের যাওয়া পিছাক বা ক্যান্সেল হোক৷ তার নিজেরও দুচোখে ঘুম নেমে আসলো। সকালে উঠেছে৷ আর ঘুমানো হয়নি৷ সে রুমে এসে বিছানার একপাশে এসে শুয়ে পরে। এরপর মিরার দিকে ঘুরে শুলো। দুইজন এই প্রথম একসঙ্গে ঘুমাচ্ছে কী? মনে আসছে না ইমানের। এতো গুরুত্বপূর্ণ একটা ইস্যু তার মনে আসছে না? এতো মনভুলো কবে থেকে হলো সে?

সকালের স্নিগ্ধ আলো যখন নিউইয়র্কের বুকে ফুটতে শুরু করলো ঠিক ওই বেলায় মিরার ঘুম ভাঙ্গে। নিজেকে সে নরম তুলতুলে কম্বলের নিচে অনুভব করে। সঙ্গে আরো একটা বিষয় সে অনুভব করছে৷ কারো গরম নিশ্বাস তার গলায় এসে লাগছে। সে পিটপিট করে নেত্রপল্লব মেলে ধরতেই বাকরুদ্ধ হয়ে গেল। বেডে শুয়ে আছে সে। শুধু তাই নয়, ইমানের গায়ে নিজের একটা পা তুলে দিয়েছে। সে হুড়মুড়িয়ে উঠে পড়ে৷ ইশ কী অবস্থা! সে কী আবারো স্লিপ ওয়াক করে নিজের বর্ডার লাইন ক্রস করে ইমানের সাইডে চলে এসেছে? ওহ নো! তাহলে তো মসিবত! ইমান কী জানে সে এখানে ঘুমের মধ্যে চলে এসেছে? দ্রুত ইমানের পানে তাকালো। নাহ! ও বড্ড আরামদায়ক এক ঘুমে আচ্ছন্ন। এমন ঘুমের মধ্যে টের পাওয়ার কথা৷ মিরা কম্বল সরিয়ে উঠে আসবে৷ তখনই ইমানের কণ্ঠ ভেসে আসে। সে ইতস্তত করে ঘার ঘুরিয়ে তাকাতেই দেখল, ইমান ঘুমের মধ্যে হাত ছোড়াছুড়ি করতে করতে কথা বলছে৷ অস্পষ্ট, জোড়ালো কথা৷ ঘুমের মধ্যে কেউ কথা বলে এটা মিরার জানা ছিল না৷ কিন্তু ইমানকে সে আগেও একটা ঘুমে বিড়বিড় করতে দেখেছে৷ সে আড়ি পেতে শোনার চেষ্টা করল কী বলছে। ইমান অগোছালো ভাবে বলছে, ” আমি আর চাকরিই করব না৷ এতো খাটায়। কামলা খাটতে আর মন চাচ্ছে না। কোথায় যাব না আমি।সারাদিন বাসায় থাকব আর ঘুমাবো।”

মিরার চোখ কপালে। ঘুমের মধ্যে একটা মানুষ এতো কথা বলতে পারে। সে আনমনে তার মাথার চুলে হাত বুলিয়ে দিল এবং ক্ষণেই তার মস্তিষ্ক স্মৃতিচারণ করে বিভীষিকাময় সেই রাত্রীর। দ্রুত সে কেটে পড়ে। বাথরুমে গিয়ে ফ্রেস। ওয়াশরুম থেকে সে এলার্মের আওয়াজ পেল। নিশ্চয়ই ইমান এখন ঘুম থেকে উঠবে। সে বের হতেই ইমানকে জাগ্রত অবস্থায় দেখল। ওর দেখে বোঝা ও ভারী বিরক্ত। মুখ শক্ত করে বসে ঝিমাচ্ছে।

মিরা চুপ থাকতে পারল না। জিজ্ঞাসা করেই বসে, ” কী হয়েছে আপনার? মুখটা কাকের মতো বানিয়ে রেখেছেন কেন?”

–” রোজ রোজ ছয়টায় উঠে অফিস গেলে কাকের মতো কাকা করতে মন চাইবে। ”

মিরা শব্দ করে হাসল৷ ইমান বিরক্তিতে চ বর্ণ উচ্চারণ করে বলে, ” ব্রেকফাস্টে কী খাবে? ওর্টস?”

–” কালকে আন্টি গল্প করতে করতে বলছিল আজ আলুর পরোটা বানাবো হবে৷ সাদের আজ ভার্সিটি অফ।”

–” ভালোই খাতির জমিয়েছো দেখছি।”

–” আপনার মতো খাইশটা না যে কারো সঙ্গে কোন যোগাযোগ রাখব না। কথা বলব না৷”

ইমান খুকখুক করে কেশে বলে, ” আজকে লেইট হয়ে গেছে। আমার আবার বেড কফি না খেলে চলে না। তুমি কী আমার জন্য এককাপ কফি বানাবে পারবে? ”

–” অবশ্যই পারব।”

–” সুগারের জায়গায় সল্ট দিও না।

মিরা কটমট করে তাকায় তার দিকে৷ ইমান উঠে দাড়িয়ে বলে, ” টেক্সাস থেকে ফিরে আসলে তোমাকে আমি ক্যাপেচুনা বানিয়ে খাওয়াব। আমার ক্যাপেচুনার প্রশংসা করে মানুষ।”

–” যাচ্ছেন কবে?”

–” আজকে রাতে।”

–” বিকেলে বাসায় আসবেন?”

–” সিউর না।”

সে ওয়াশরুমে গেলে মিরা একফাকে দু কাপ কফি বানিয়ে আনে কিচেন থেকে। এখনো এ বাসায় কেউ উঠেনি। তাই বলে নিউইয়র্ক কিন্তু ঘুমিয়ে নেই। এ শহর নাকী চব্বিশ ঘন্টা জেগে থাকে!

বাথরুমের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে বুঝতে পারে ইমান বেরিয়েছে। বারান্দার দরজা খোলা। সারারাত বারান্দা বন্ধ ছিল। মাত্র খোলা হয়েছে৷ মুহুর্তে রুমটা হীম শীতলে রুপান্তর হলো। ইশ কী শান্ত, মোলায়েম বাতাস। সে বারান্দায় গিয়ে দেখে ইমান কেবল একটা স্যান্ডোগেঞ্জি পড়ে টাওয়াল দিয়ে চুল মুছতে মনোযোগ দিয়েছে। মিরা কাশি দিয়ে এটেনশন সিক করে বলে, “কফি।”

ইমান হাত বাড়িয়ে কফি নিল। দুজন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে কফি উপভোগ করছে৷ সকালটা কী আজ অতিরিক্ত সুন্দর? পাখির কলকলানি আওয়াজ ছাড়া অন্য বাড়তি কোন কোলাহল নেই৷ বরং মন ভুলানো প্রাকৃতিক শোভা ছড়াচ্ছে চারপাশ। নিচ দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ পরপর একটা করে সাইকেল যাচ্ছে। সাইকেলের টুংটাং ধ্বনি শুনতে ভালো লাগছে৷ তারা দুইজনই খামোশ যেন খেই হারিয়ে ফেলেছে।

মৌনতা ভেঙে ইমান বলে, ” নেক্সট ডে থেকে ডায়েট শুরু করতে হবে।”

–” আপনি ডায়েট করেন? ”

–” জি ম্যাডাম। আমি স্ট্রিক ডায়েটে থাকি। এক্সারসাইজ করি। ভোর পাঁচটায় উঠে মনিং ওয়াকে যাই।”

মিরা বলে, ” আমিও ফুলে যাচ্ছি দিন দিন৷ আমিও ডায়েট করব৷”

— তাহলে দুজন একসঙ্গে ডায়েট শুরু করব।”

–” ঠিক আছে।”

_____________________

দুপুর একটা। সূর্য একদম মাথার উপরে। এসি অন থাকায় গরমের গ ও অনুভব হয় না। লাঞ্চ আওয়ারে ইমান মাত্র কেবিনে গিয়ে নিজের চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়েছে৷ মাথা ব্যথা করছে তার৷ কোমড় ব্যথাও সঙ্গে আছে। অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে তার কোমড় ব্যথা করে৷ মাত্র বসেছে ওমনি ফোনটা বিকট আওয়াজ তুলল। সে মনে মনে কলদাতাকে কঠিন একটা শব্দে গা*লি দিল৷ এরপর ফোন হাতে নিয়ে দেখে হাসনাহেনা কল করছে। সে সঙ্গে সঙ্গে জিভ কাটে। এরপর ফোন তুলে ভরাট কন্ঠে বলে, ” কী দরকার? ”

-” কোন দরকার নাই। তুমি বাসায় আসো।”

–” বিকেলে আসব তো।”

–” বিকেল না এখনই আসো।”

–” ইমার্জেন্সি?”

–“হ্যাঁ। ”

–” আসছি।”

হাসনাহেনার সঙ্গে যতোই মনোমলিন্য থাকুক ইমানের, উনি কিছু বলবে তা মানে সে৷ আজও তার কথা অনুযায়ী লাঞ্চ না করে বেরিয়ে পরে বাসার উদ্দেশ্য। এই অযুহাতে মিরার সঙ্গেও একবার দেখা হবে৷ ড্রাইভ করে বাসায় এসে সে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বেল বাজালো৷ পর পর দুবার। কেউ গেইট খুলল না। বেশ চিন্তা হয়ে লাগে তার। হাসনাহেনার কিছু হলো নাকী? বা মিরা? ও ঠিক আছে তো? দরজার নব ঘুরিয়ে সে ভেতরে ঢুকতেই হাসাহাসির শব্দ কানে আসে। সম্পূর্ণ বাসা খাবারের গন্ধে মো মো করছে৷ এই সুস্বাদু খাদ্যের ঘ্রাণ সে চেনে। তার সবচেয়ে প্রিয় বিরিয়ানির গন্ধ। কয়েক কদম এগিয়ে ডাইনিং টেবিলের সামনে দাড়ালো সে। সাদ, মিস হাসনাহেনা এবং মিরা কী নিয়ে যেন হাসাহাসি করছে৷ অনেকদিন পর বাসায় এভাবে হাসাহাসি-মজা করতে দেখলো সে। নাহলে এ বাসা শশ্মানের চেয়েও নিস্তব্ধ থাকে৷ সে দু’কদম এগিয়ে এসে কড়া গলায় বলে, ” আপনার জরুরি কাজ কোনটা?”

–” মিরা আজ সবার জন্য নিজ হাতে বিরিয়ানি বানিয়েছে। বিরিয়ানি খাওয়াই তোমার জরুরি কাজ৷”

সে রাগী চোখে একবার প্রতিটা সদস্যের দিকে তাকালো। সাদ-মিরা দুজনই তাকে দেখে খাওয়ায় মনোযোগ দিল যেন তারা ইমানকে দেখেইনি৷

ইমানের হাতে একটা ফাইল ছিল।সে ফাইল ফেলে দিয়ে টাই লুজ করে উপরে উঠে যায়৷

ও যাওয়ার পর মিরা বলে উঠে, ” উনি বোধহয় খাবেন না।”

–” খাবে। বিরিয়ানির গন্ধ পেলে ওর মাথা ঠিক থাকবে না৷ একটু পর নিজ থেকে আসবে।”

হলেও তাই ইমান দোতলা থেকে জোরে চেচিয়ে বলে উঠে, ” আমি কী না খেয়ে থাকব? আমার লাঞ্চ উপরে পাঠিয়ে দাও।”

ইমান কথাটা কাকে বলল মিরা তা বুঝল না। তবে হাসনাহেনা খাবার প্লেটে বেড়ে মিরার হাতে ধরিয়ে দিল৷

সে বলে, ” আমি দিয়ে আসব?”

–” আমি দিলে আরো রেগে যাবে। তুমি যাও।”

অগত্যা মিরা দোতলায় যায়। ইমান বেডে হেলান দিয়ে ল্যাপটপে কাজ করছে৷

মিরা বলে, ” আপনার লাঞ্চ। কই রাখব?”

–” আমার মাথায় রাখো। দেখছো কাজ করছি। এছাড়া আমার হাত ব্যথা। নিজ হাতে খেতে পারব না। খাইয়ে দাও।”

— এতো বড় ছেলেকে খাইয়ে দিব? বুড়ো মানুষ আপনি।”

— ” আমি বুড়া না। যথেষ্ট ইয়ং আমি।”

–” আমি পারব না আপনাকে খাইয়ে দিতে৷”

ইমান ল্যাপটপ থেকে চোখ সরিয়ে তার দিকে তাকালো এবং শীতল কন্ঠে বলে, ” তাহলে তোমাকে আমি বারান্দা থেকে উষ্টা মেরে নিচে ফেলে দিব।”

–” আশ্চর্য! ”

–” আমাকে মিথ্যা বলে কেন বাসায় আনলে? বিরিয়ানি খাওয়া জরুরি কাজের মধ্যে পরে? পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে কী বিরিয়ানি খাওয়া অন্যতম? এম আই এ জোক টু ইউ ওল? তোমাদের কী মনে হয় আমি অফিসে ঘাস কাটি?যখন-তখন কল দিবে আর আমি ঘাস কাটা বাদ দিয়ে বাসায় আসব? বল? ঘাস কাটতে যাই আমি? আমি কী গরু? স্পিক আপ!

মিরার তার বেসুরা গলার কথা মাথা ধরে যায়। সে বিরিয়ানির দলা বানিয়ে আচমকা ইমানের মুখে পুড়ে দেয়।মুখে খাবার পুড়ে দেওয়ার জন্য ইমান কথা বলতে পারল না। মুখের বুলি সব থেমে গেল এবং বিষ্মিত চোখে মিরার পানে তাকালো। অনেকদিন পর এতো মজাদার খাবারের স্বাদ পেল সে!

  • চলবে৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here