ফেইরিটেল পর্ব-৬

0
1923

#ফেইরিটেল
#Arishan_Nur (ছদ্মনাম)
Part–6

রাস্তা দিয়ে সাই সাই করে যাওয়া গাড়িগুলোর হর্ণের বিরক্তিকর শব্দেও ইমানের ধ্যানে ভাঙ্গল না। সে এখন অব্দি ঘোরে আছে, পুলকিত নয়নে চেয়ে আছে। মেয়েটার কথার উত্তাপে সে যেন অন্যকোনো ভূবণে হারিয়ে গিয়েছিল। ইশ প্রেম নিয়ে যা হাইপোথিসিস দিল মেয়েটা!আসলেই কী তাই? সে আকাশের দিকে তাকালো।দুটো কাক উড়াউড়ি করছি। আচমকা একটা কাক এসে রেলিঙের ধারে বসে পরে বেসুরো কণ্ঠে কাকা করে গেল। তার কাছে কাকের কাকা আওয়াজেটাও আপন লাগছে। স্বদেশের সবকিছুই কেন যেন দূরে চলে গেলে প্রিয় হয়ে উঠে৷ এমন কী অপ্রিয় জিনিস গুলোও ভালো লাগে৷ এই যে আমেরিকায় কী সুন্দর পাখির অভাব আছে?উহু! চোখ ধাঁধানো একেকটা প্রজাতির পাখির ডানায় নকশা। তাও তার কাকের কাকা আওয়াজ ভালো লাগছে। শুধুমাত্র মায়ের দেশ বলেই কী এই অবান্তর টান? “মা” শব্দটা যেন তার মস্তিষ্কে পেরেক গুচানোর মতো যন্ত্রণা দিল। তার ভাবনার ছেদ ঘটে মিরার ঝাঝালো কণ্ঠের দাপটে।

মিরা কিছুটা রাগান্বিত গলায় বলে, “আপনি হয়তোবা মেয়েদের সঙ্গে খুব ফ্রি। আপনাদের ওয়েস্টার্ন দেশে এসব নরমাল হলেও, আমি রক্ষণশীল ফ্যামিলির মেয়ে। নেক্সট টাইম থেকে আমার সাথে কোন আচরণ করার আগে নিজেকে সংযত রাখবেন৷ আমি আপনার মতো উচ্ছৃঙ্খল না।”

কথাটা এক নিশ্বাসে বলেই দুম করে একটা বড় শ্বাস নেয় মিরা। এভাবে কঠিন ভাবে কথা বলে না সে সাধারণত। এজন্য কঠিন কথা বলতে গেলে নিজেরই বুক কাঁপে। নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। ছেলেটা এখনো তার দিকে হা করে চেয়ে আছে৷ সম্ভবত মিরার কথাগুলো হজম করতে পারেনি। সে অন্যদিকে চলে আসলো। এরপর হাতে মেহেদী লাগাতে ব্যস্ত হলো। সে ঘুণাক্ষরেও ভাবে নি তার শেষেদিকের কথা গুলো শোনার পর ইমান ভয়ংকর রেগে আছে। এই রাগ সুপ্ত রাগ, যা বাইরের জগতের কারো কাছে প্রকাশ পায় না। কেবল নিজের মনের সিন্দুকে জমা থাকে। জমে থাকা রাগ যে ক্ষতিকর তা খুব কিম সংখ্যক মানুষ উপলব্ধি করতে পারে। বেশিরভাগ মানুষই মনের মধ্যে রাগ পুষে রাখে, বিধায় নষ্ট হয় হাজার সম্পর্ক, ভঙ্গন ঘটে লাখো প্রিয় মায়ায়, তৈরি হয় দামামা।

_______________________

দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার পর আবার সবাই মিলে ছাদে আড্ডার আসর জমাবে বলে পরিকল্পনা করে রেখেছিল। যেমন ভাবা তেমন কাজ। সবাই এক এক করে দুপুরে খেয়ে-দেয়ে ছাদে গিয়ে হাজির হলো। দুপুরের ঠাঠা রোদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ছাদের কোণে বাঁশ লাগিয়ে উপরটায় সামিয়ানা টাঙ্গানো হয়েছে যেন ছায়া পাওয়া যায়। টেবিল ফ্যান আর চেয়ারের ব্যস্ত করা হয়েছে। এই আসরে রসালো সব কথা-বার্তা হবে। বাড়ির বড় বা মুরুব্বি সদস্যরা নেই এখন। সবাই নিচে কাজে ব্যস্ত৷ খাওয়া শেষ করেই, মিরা একগাদা পপকর্ণ ভেজে নিয়ে এসেছে। পপকর্ণ ভাজার সময় মায়ের ঝাড়ি ফ্রিতে খেতে হয়েছে। মা বারবার বলছিল, দুপুরে কীসের আবার হৈচৈ। সারাদিন তো হৈচৈ করেই দিন পার হচ্ছে৷ এইসময়টাই রেস্ট নিক সবাই। মায়ের বকা খেয়েও সে পপকর্ণ ভেজেছে সবার জন্য। খাবার নিয়ে ছাদে আসতেই জানতে পারলো, আড্ডায় আসর জমানোর জন্য ঝালমুড়ির আয়োজন করা হবে। অথচ মিরা ফ্লাস্কে করে চা, দু’বোতল পানি আর পপকর্ণ ভেজে, সব কাজ গুছিয়ে রেখে নিজে সুন্দর করে সেজে উপরে আসলো। তখনই সোনালী আপু বলল, তারা নাকী ঝালমুড়ি খাবে৷ মিরা যেন কষ্ট করে রান্নাঘর থেকে ঝালমুড়ি বানিয়ে আনে। হুট করে ঝালমুড়ি কেন খেতে চাচ্ছে? ঝালমুড়ি খাওয়ার তো কোন প্লান ছিল না। সে এখন নিজের সাজ নষ্ট করে রান্নাঘরে গিয়ে ঝালমুড়ি বানাবে?

সিড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থেকেই সে চোখ মেলে দেখতে পেল, ভাইরাসটা মুড়ির প্যাকেট হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করছে। পাশেই কিনে আনা ছোলাবুট৷ মিরার বুঝতে বাকি রইল না, এই ঝালমুড়ি খাওয়ার ইচ্ছা সোনালী আপুর নয় বরং ইমানের খেতে মন চাচ্ছে। আগে বললেই তো হত! শুধু শুধু মিরার কাজ বাড়ানোর ফন্দি। অযথা এই ব্যাটা তার পিছনে কোন কারণ ছাড়াই হাত ধুয়ে লেগে আছে। বিরক্তিকর।

সোনালী আপু অনুরোধের সুরে বলে, “মিরা শুন না, সবাই তো ঝালমুড়ি খেতে চাচ্ছে। তুই পিয়াজ-মরিচ আর সরিষার তেল এনে দে না কিউটি বোনটা আমার৷”

মিরা বেজায় চটে গিয়ে বলে, “আমি পারব না। এতোগুলা পপকর্ণ ভেজে আনলাম কষ্ট করে। এখন আবার ঝালমুড়ি কেন খাবে?”

ইমান এবারে মিরার দিকে এসে তার হাত থেকে, পপকর্ণের প্লেটটা কেড়ে নিয়ে একটা পপকর্ণ মুখে তুলে নিয়ে বলে, তোমার সবকিছুতেই ঝামেলা করতে মজা লাগে তাই না? এতো অলস ক্যান তুমি? লেযি গার্ল। সামান্য ঝালমুড়ি বানাতে বলা হয়েছে অথচ রিয়্যাক্ট এমন দেখাচ্ছো যেন ট্রয় নগরী ধ্বংস করতে বলা হয়েছে৷ বেশি আদর দিয়ে দিয়ে বাদড় বানানো হচ্ছে। ”

ইমানের কথায় ছাদে উপস্থিত অনেকেই হেসে দিল৷ এতে মিরা খুব অপমানিত বোধ করে।মনে মনে বলে উঠে, আপনি বাদড়। সে তীব্র অপমানবোধ থেকে যেই বেগে এসেছিল, তার চেয়ে বেশি বেগে নিচে নেমে গেল।

ইমান পপকর্ণ হাত থেকে নামিয়ে চেয়ারে রাখল। এরপরে নিজেও নেমে যায় ছাদ থেকে।

ছাদের সবাই তাদের দুইজনের যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকল। তাদের মাথায় কিছুই ঢুকলো না। দুজন মিলে ঝালমুড়ি বানাবে কী?

সে যখন সবে রান্নাঘরে ঢুকল, তখন মেইন গেট খোলার শব্দ পেলেও আমলে নিল না ব্যাপারটা। রান্নাঘর থেকে মরিচ বের করে, এরপর চোপিং বোর্ড এনে মরিচটা রেখে ইচ্ছামত কুঁচি কুঁচি করে কাটলো। যেন সব রাগ এই অবলা মরিচটার উপর মেটাচ্ছে সে। মরিচ কাটা শেষ হলে, সরিষার তেলের বোয়াম বের করে পাশে রেখে, ফ্রিজে পিঁয়াজের বাটি খুঁজতে লাগে। মিরাদের বাসায় একবারে অনেক পিঁয়াজ কেটে ফ্রিজে ফ্রোজিং করে রাখা হয়। এতে সময় বেচে যায় রান্না করার সময়। কালকেও তো সে এখান থেকে পিঁয়াজ বের করে ডিম ভাজলো। এখন সেই পাত্রটা কই গেল? সম্পূর্ণ ফ্রিজ তন্নতন্ন করে খুঁজেও পিঁয়াজের পাত্র খুঁজে না পেলে, সে সিদ্ধান্ত নিল, নিজেই পিঁয়াজ কাটবে৷ কিন্তু পিঁয়াজ তো তার জন্ম-জন্মান্তরের দুশমন। পিঁয়াজ কাটার আগেই মিরা চোখ জ্বলে। কিন্তু ওই বেয়াদব ছেলেটাকে তো দেখাতে হবে, সে মোটেও অলস না। বরং পরিশ্রমী সে।মনের মধ্যে রাগটা আগ্নেয়গিরির মতো লাফাতে লাগলো তার। তাই একটা গোটা পিঁয়াজ বের করে, এর খোসা ছড়িয়ে চোপিং বোর্ডে রেখে একফালি করতেই তার চোখে জল এসে গেল। চোখ জ্বলা শুরু করল ক্ষণেই। তবুও থামলো না। রাগ হচ্ছে নিজের উপর কেন সে সামান্য একটা পিঁয়াজই কাটতে পারে না!

মিনিট এক পর কেউ যেন তার পিছে এসে দাঁড়ালো। মিরা ঘাড় ঘুরে তাকাতেই অপ্রস্তুত বনে গেল। লম্বাচওড়া শরীরটার ছায়া চোখে-মুখে পড়তেই কেন যেন প্রশান্তি বয়ে গেল শরীর জুড়ে। সে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে৷ মিরার অবস্থা তখন করুণ। চোখ দিয়ে টপটপ পানি পড়ছে। শুধু কী তাই? নাক দিয়েও পানি পড়ছে। এমন পরিস্থিতি তে এই ছেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ মানেই তাকে নিয়ে এখন তামাশা করা হবে৷ কিন্তু মিনিট এক পরেও ইমান কিছু বলে না। তা দেখে মিরা আপন গতিতেই বলে গেল, “চুপ আছেন যে? বলছেন না কেন আমি কতো ইউসলেস, অপদার্থ সামান্য পিঁয়াজ কুঁচি করতে পারি না।কিছু বলুন!”

ইমান পকেট থেকে নিজের হাত বের করে মিরার গাল বেয়ে পড়ে যাওয়া অশ্রুকণা নিজ হাতে পরম যত্নে মুছিয়ে দিয়ে বলে, “সবসময়ই তো খোটা মারি। আজকে ভিন্ন কিছু বলি।”

— মানে?

ইমান নিজের পকেট থেকে টিস্যু বের করে মিরার নাকের কাছে ধরতেই, সে টিস্যু নিজ হাতে তুলে নিয়ে বলে, “থ্যাংকস।”

— “মেনশন নট।”

মিরা চোখ-মুখ মুছলেও, চোখের জ্বালাতন কমেনি পিয়াজের ধাঁচে। ইমান যেন তা বুঝে যায়৷

সে বেসিনের কল খুলে, দু’হাতের তালুতে পানি জমিয়ে, সেই পানি মিরার চোখ-মুখে ছিটকে ফেলে। সে সঙ্গে সঙ্গে চোখ বুজে বলে, “সমস্যা কী আপনার? আমার গায়ে পানি ছিটাচ্ছেন কেন?”

— “কাউকে কষ্ট দিতে চাইলে, তার জীবনে পিঁয়াজের মতো ভূমিকা পালন করবে। যেন তোমাকে কেটে শেষ করলেও, অশ্রুকণা তোমাকে কেটে টুকরো করা ব্যক্তির চোখ দিয়েই গড়ায়।”

ইমানের কথার আগামাথা বুঝে না মিরা। সে চোখে পানি দিতে আরম্ভ করে। পানি দিতে থাকায় চোখে আরাম মিলছে। চোখের জ্বালাতন কমে আসতেই, সে পিঁয়াজ-মরিচ, সরিষার তেল নিয়ে ছাদের উদ্দেশ্য বের হয়। তার সঙ্গে ইমানও আসে৷

মিরা অবশ্য একবারও জিজ্ঞেস করেনি ইমান কেন নিচে এসেছিল। ছাদে পৌছানোর আগ মুহূর্তে ইমান বলে উঠে, “জানালে না তো, যাবে না?”

মিরা ভ্রুকুটি করে বলে, “কোথাও যাওয়ার কথা ছিল?”

— “আমার সঙ্গে কফি ডেটে।”

সে যেন বিষম খেল তবুও নির্বিকার থেকে বলে, “আব্ব-আম্মুর কাছে পারমিশন নেন। তারা রাজী হলে আমি আপনার সঙ্গে কফি ডেটে যাব।”

ইমান হতবিহ্বল হয়ে বলে, ডেটে যাওয়ার অনুমতিও কেউ প্যারেন্টসের কাছ থেকে নেয়?

— আমি নিই।

বলেই সে ভীষণ সুন্দর একটা হাসি উপহার দিয়ে ইমানকে অতিক্রম করে ছাদে উঠে যায়৷ ওই হাসিটা ইমানের জন্য সর্বনাশ ছিল! বাপ রে! একটা হাসির এতো শক্তি। ইমানের মনটা খাঁখাঁ করে উঠলো। এম্নিতেই তার মনে খড়ার মৌসুম চলছিল। এই হাসি যেন খড়ায় তীব্র উত্তাপে সূযার্লোকের রশ্মিকণা সমতুল্য!

ঝালমুড়ি খাওয়া শেষ করে, সবাই গোল হয়ে বসলো। মেঝেতে পাটি বিছানো আছে। সামনেই একটা খালি কোকের বোতল। এখন ট্রুথ এন্ড ডেয়ার খেলা হবে। সবাই উত্তেজিত হয়ে গোল হয়ে বসলো। মিরা বসেছে সোনালী আপুর পাশে। ইরাও আছে তার বাম পাশে। এবং ইমান বসেছে একেবারে মিরার বিপরীতে। দুজনের বারংবার চোখাচোখি হয়ে যাচ্ছিল।

সোনালী আপু বোতল ঘুরালো। বোতল গিয়ে থামলো ইরার দিকে। ইরা ট্রুথ নিলে, তাকে একটা সিক্রেট রিভেল করতে বলা হলো। ইরা অনেক ভেবে বলল, গত টিউটোরিয়াল এক্সামে সে ম্যাথে পঁচিশে সাত পেয়েছিল। সেই খাতা সে মাকে দেখায়নি। টিচার গার্ডিয়ান কল করতে বললে, নিজের এক ফ্রেন্ডকে গার্ডিয়ান সাজিয়ে কথা বলিয়েছে। অথচ টিচার বুঝতে পারেনি৷ তার ফ্রেন্ডকে গার্ডিয়ান ভেবে এক্সট্রা কেয়ার নিতে বলেছেন।

ইরার পালা শেষ হলে, বোতল ঘুরে সোনালী আপুর দিকে আসলে, ইমান বলে উঠে,” আপু তোমাকে ডেয়ার নিতে হবে। ডেয়ার হলো ভাইয়াকে ” আই লাভ ইউ” বলতে হবে সবার সামনে। ”

সোনালী আপু রাজী হচ্ছিল না। পিচ্চি-বাচ্চাদের সামনে রাকিব কে লাউন্ড স্পিকারে “আই লাভ ইউ” বলতে তার দারুণ লজ্জা লাগছিল। তবুও সে ডেয়ার পূর্ণ করে। রাকিব সব শুনে ফোনের ওপাশ থেকে বলে, লাভ ইউ ঠু, বউ। এতে যেন সোনালী আপু আরোও লজ্জা পেয়ে যায়৷ সবাই হোহো করে হেসে দেয় আপুর ফেস রিয়্যাকশন দেখে।

এবারে বোতল মিরার দিকে আসলো। সে ট্রুথ নিল। মিরার এক কাজিন তাকে প্রশ্ন করে, তোর কোন ক্রাশ আছে রে মিরা বা কাউকে ভালোবাসিস? বিএফ আছে তোর?

মিরা উত্তরে “না” বলতে গিয়েও ইমানকে দেখে থেমে যায়। ব্যাটার খুব শখ না তাকে নিয়ে ডেটে যাওয়ার। দাড়াও, তোমাকে মজা দেখাচ্ছি। সে বলে উঠে, “আছে।”

ইমান যেন বিদ্যুৎ গতিতে নড়েচড়ে উঠে। খুব তীক্ষ্ম চোখে তাকায় তার পানে।

মিরা বলে উঠে, আমার ক্রাশই আমার ভালোবাসার মানুষ। আর আমার ভালোবাসার মানুষই আমার প্রেমিক।

সোনালী আপু বলে উঠে, তুই ও মিঙ্গেল, মিরু। আমাকে জানাসনি পর্যন্ত। হুহ আজকে থেকে তুই আমার বোন না। যা তোর সঙ্গে কথা বলব না আর। আমাকে না জানিয়ে প্রেমিক বানাস।

মিরা হেসে বলে, ও অনেক হ্যান্ডসাম, জেন্টেলম্যান, ওয়েল ম্যানার্সড আর ব্রিলিয়ান্ট বলেই লজ্জা পাওয়ার ভঙ্গিমায় হাত দিয়ে মুখ ঢাকলো।

ইমান বোতলটা হাতে নিয়ে বলে উঠে, বোতল ঘুরালাম।

তাদের আবারো চোখাচোখি হয়ে গেল। ইমানের চোখে সামান্য রাগের আভাস। তার কপালে সুক্ষ্ম ভাঁজ। রাগের কারণ কী মিরা ধরতে পারল না।

পরবর্তীতে দুইবার বোতল ঘুরানো হলো।
সবাই ঠিকঠাক মতো খেলল। একেবারে খেলার শেষ মুহূর্তে ইমানের দিকে বোতল এসে তাক হলো।
সোনালী আপু সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠে, ইমান তোকে ডেয়ার নিতে হবে।

— তা নিলাম।

— তুই প্রোপোজ করবি৷ এটাই ডেয়ার৷

ইমান ড্যাম কেয়ার ভাব নিয়ে বলে, প্রোপোজ করার জন্য তো একজন মেয়ে দরকার। নাকি চাও চেয়ারকে প্রোপোজ করি।

সোনালী আপু ভেবে দেখল, আসলেই তো! প্রোপোজ একজন মেয়েকে করা লাগবে। তাহলে সেই মেয়েটা কে হবে? ভাবনা মাথায় আসতেই মিরাকে ফোন হাতে নিয়ে বসে থাকতে দেখে সে।তৎক্ষনাৎ সে মেঝেতে কিল মেরে বলে, ইমান তুই আমাদের মিরুকে প্রোপোজ করবি।

ইমান-মিরা দুইজনই যেন পিলে চমকে উঠে। কী ভয়ংকর ডেয়ার!

চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here