বিধবা_বিবাহ পর্ব-২৭

0
1129

#বিধবা_বিবাহ (অষ্টাবিংশ পর্ব )
অন ডিউটি পুলিশ অফিসারের গায়ে হাত দেওয়া! তাও আবার থানায় অধস্তন কর্মচারীর সামনে! নিজের স্বল্পমেয়াদী চাকরিজীবনে যতসংখ্যক অপরাধী দেখেছে অতনু, কেউই অরিন্দমের মত বেপরোয়া নয়। উচ্ছৃঙ্খল, নেশাড়ু, ব্যভিচারী বহু লোকের সংস্পর্শে এসেছে সে। কিন্তু অরিন্দম তাদের সাপেক্ষে এক্কেবারে ব্যতিক্রম। দুর্ধর্ষ সৌন্দর্য, ব্যক্তিত্বের মেলবন্ধনে এই পুরুষটি অসীম ধৈর্যশীল। সারা গায়ে কালশিটের দাগ বয়ে নিয়ে বেড়ানো পুরুষটি তদন্তের খাতিরে করা অত্যাচারের সময় টু শব্দটি করেনি। এমনকি সারা গায়ে ব্যথা বয়ে নিয়ে থেকেও হাসিমুখটি বজায় রেখেছে সযত্নে। কিন্তু আজ অতনুর মুঠোফোনে থাকা ফটোটি দেখামাত্র অরিন্দমের এহেন আক্রমণভঙ্গিতে হতচকিত হয়ে গিয়েছে অতনু। মনে পড়ে যাচ্ছে ডিউটিরত অফিসারের গায়ে হাত দেওয়ার শাস্তিস্বরূপ পুলিশি প্রহার ও ফলশ্রুতিতে অরিন্দমের ঠোঁটের কোণে লেগে থাকার পরিতৃপ্তির হাসি। এলোপাথাড়ি চড়-ঘুষিগুলো যেন স্পর্শই করছিল না পেটানো, সৌন্দর্যে খোদিত শরীরটাকে। যেন মনে হচ্ছিল মুঠোফোনটা ভেঙে দেওয়ার পরে অসীম পরিতৃপ্তি গ্রাস করেছে তাকে, অতনু ঐশী মেলবন্ধনের ফটোটা নষ্ট করে দেওয়ার পর…
কারাগারের শক্ত খাঁচার চৌহদ্দি পেরিয়ে এলোপাথাড়ি মারধরের আওয়াজ ভেসে আসছে এখানেও। কিন্তু আর্তনাদের চিহ্ন নেই। একসময় মারের একঘেয়ে শব্দ শুনতে শুনতে ক্লান্ত হয়ে এলো অতনুর কানদুটো। নিজের অজান্তেই টেনে নিলো ভেঙে চৌচির হয়ে যাওয়া দামি হ্যান্ডসেটটার দিকে। নিষ্প্রাণ যন্ত্রটায় অত্যাচারের আঁকিবুকি দাগ স্পষ্ট। ঠিক যেন অরিন্দমেরই মত। পার্থক্য কেবলমাত্র সজীব এবং নির্জীবে নয়, একজন অত্যাচারিত হওয়ার পরে নিজের জড়ত্বের দরুন নিশ্চুপ, এবং অন্যজন নিজের বিচিত্র স্বভাবের দরুন।
“এর নাম কি ভালোবাসা? নাকি স্রেফ অবসেশন?” ভাঙ্গা হ্যান্ডসেটটা থেকে মেমরি কার্ডটা বার করে এনে আপন মনেই বলে উঠল অতনু। বস্তুত এই ছোট্ট চিপটার মধ্যেই ঐশী আর অতনুর যুগলবন্দির জলছবি সুরক্ষিত রাখা আছে। মুঠোফোনটা ভেঙ্গে ফেললেও অরিন্দম যে ফটোটার বিন্দুমাত্র ক্ষতি করতে পারেনি, তা বলাই বাহুল্য।
“নিজের প্রেয়সিকে অন্য কেউ স্পর্শ করলেও পাগলের মত আচরণ শুরু করে অরিন্দম। তবে নিজের দাদার সাথে ঐশীর বিয়েটা মেনে নিল কি করে!” চিন্তাটা মাথায় আসতেই শিরদাঁড়া বেয়ে এক ঠান্ডা, শীতল স্রোত নেমে যায় অতনুর।
“তবে কি ঐশীকে বিয়ে করার অপরাধে অরিন্দম নিজের দাদাকেই মেরে ফেলেছে!” চোখটা চলে যায় দুই ভাইয়ের পছন্দের মিলের দিকে। একই রঙের ভিন্ন সাইজের শার্ট দেখা যাচ্ছে উল্টোদিকে থাকা কম্পিউটারের ডিজিটাল স্ক্রিনে। মনু যাদবের বাড়িতেও দুই ভাইয়ের শার্ট পেয়েছিল অতনু, তা বলাই বাহুল্য…
“নানা, অবিনাশ বেঁচে আছে। নইলে ওর পার্সোনাল অ্যাকাউন্টটা লগইন হলো কীকরে! দুই ভাইয়ের জামাও মনুর বাড়িতে পাওয়া গিয়েছিল।” অস্ফুটে কতটুকু বলে কনস্টেবলের উদ্দেশ্যে হাঁক পাড়ে অতনু। “অরিন্দমকে অন্য সেলে ট্রান্সফার করে দাও। ওর মেন্টাল কন্ডিশন ঠিকঠাক লাগছেনা আমার। আর অ্যান্টিসেপটিক ওষুধ কিনে দিও ওকে। সাথে খেয়াল রেখো নতুন সেলে বাথরুম পায়খানা যাতে না থাকে।”
“আজ্ঞে স্যার।” শেষের লাইনটা বুঝতে না পেরে বলে উঠলো কনস্টেবলটি। “বাথরুম পায়খানা না থাকলে লোকটা…”
“করতে দেবোনা ওকে ওসব কিছু। পেট ঠুসে গেলাও।” কনস্টেবলের কথার মাঝে বলে ওঠে অতনু। রাগে ওর মাথাটা দপদপ করছে। বুদ্ধিমান মনটা জানান দিচ্ছে অরিন্দম শক্ত ধাতুতে গড়া। মেরে মেরে হাড়গোড় ভেঙে দিলেও ভাঙ্গাচোরা মোবাইলের মত চুপচাপ পড়ে থাকবে। তাই প্রাকৃতিক কাজকর্মেই এবার নিয়ম আরোপ করল অতনু। দুমুহূর্ত থেমে ফের বলে উঠলো,”আর লক্ষ্য রাখবে সেলটা যেন আইসোলেটেড হয়। নইলে ও কিন্তু ফের হাঙ্গামা বাঁধাবে। ঘরে যেন একটা ভেন্টিলেটরও না থাকে, লাইট ফ্যান কিচ্ছু না!’
“আচ্ছা স্যার” নির্দেশ পাওয়ার মাত্র কনস্টেবল চলে যেতেই অরিন্দমের সেলের দিকে পা বাড়ালো অতনু। মারধোর খেয়ে খেয়ে অরিন্দমের ক্লান্ত শরীরটা তখন খাটের এককোণে বসে বসে ঝিমাচ্ছে।

“বেকার বেকার এত কষ্ট করে ফোনটা ভাঙতে গেলি! কি লাভ হল ফোনটা ভেঙে।”পকেটে রাখা মেমোরি কার্ডটা উঁচিয়ে ধরল আসামির সামনে। সেটা দেখেই গুলি খাওয়া বাঘের মত তীরবেগে অরিন্দম ছুটে এলো অতনুর দিকে। দুজনের মাঝখানে উঁচিয়ে থাকা শক্ত লোহার অাগলটা সাক্ষী রইল ওদের কথোপকথনের।
“এত ভালবাসিস মনিকে?” লোহার গরাদে নিজের টিকোলো নাকটা ঠেকিয়ে বলে উঠলো অতনু। ধাতব শীতলতায় ডুবতে ডুবতে ফের গলাটাকে একেবারে খাদে নামিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিল,”তোর দাদাও তো মনিকে ছুঁয়েছিল। তোর ভালোবাসার মানুষটাকে কেড়ে নিয়ে নিজের লালসা মিটিয়েছিল ইচ্ছেমত। আজ, আমি তোর দাদা অবিনাশ হলে সহ্য করতিস কাপুরুষের মত, নাকি তেড়ে আসতিস। যেমনটা কিছুক্ষণ আগে আমার দিকে তেড়ে এসেছিলিস…” বলে যন্ত্রণায় নীল হয়ে যাওয়া হনুর হাড়ের উপর হাত রেখে অতনু। জমাট বাঁধা কালচে ছোপটা জানান দিচ্ছে অরিন্দমের শক্তির তীব্রতা। ইচ্ছে না থাকলেও নিজের ফিয়ানসে ঐশীকে কেন্দ্র করে খারাপ শব্দটা ব্যবহার করতে বাধ্য হল অতনু। হিতাহিত জ্ঞানশুন্য হয়ে অরিন্দম যদি নিজের কোনো কুকীর্তি ফাঁস করে ফেলে সেই আশায়।
তবে, অতনুর এই ট্রিক্স কাজে লাগলোনা। প্রত্যুত্তরে কোন জবাব না দিয়ে মিটিমিটি হাসিতে ভরে উঠলো অরিন্দমের মুখটা। একঝলক গরম বাতাস ছিটিয়ে হিসহিসিয়ে বলে উঠলো,”খবরদার ওকে মনি নামে ডাকবিনা। নইলে গরাদের ফাঁক দিয়ে ফের আরেকটা ঘুষি খেলে সোজা হাসপাতালে ঠাই হবে তোর!”
ঠোঁটের ফাক থেকে উঁকি মারা ঝকঝকে সাদা দাঁতের পাটিটা দেখে অতনুর ফের মারতে ইচ্ছা করলেও আত্মসংবরণ করতে বাধ্য হলো শেষমেষ। প্রতিপক্ষের মনের অবস্থাটা বুঝতে না পারলেও সযত্নে রক্ষিত ব্রম্ভাস্ত্রটা বার করে আনল অতনু,”একদিন পরেই আমার আর মনির বিয়ে। আটকাতে পারবি তো? নাকি কাপুরুষের মত জেলের এককোণে বসে বসে বিটাডাইন ঘষবি চোখের জল মুছতে মুছতে?”
কথাটা শেষ হওয়ার আগেই ফের আরেকটা ঘুষি আছড়ে পড়ল অতনুর মুখটাকে তাক করে। সৌভাগ্যবশত লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় আঘাতটা গিয়ে লাগলো লোহার শক্ত গরাদে। অবর্ণনীয় ব্যথায়, যন্ত্রণায় অরিন্দমের মুখটা কুঁচকে উঠলেও নিজেকে সামলে নিল সে। তারপর ব্যথায় গোঙাতে গোঙাতে ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটিয়ে বলে উঠলো,”মেরে দিয়েছি! মনির কাছে যেই আসবে, তাকেই অমন কচুকাটা করে রেখে দেবো।”
“কি! কিন্তু কেন! নিজের দাদাকে…” শ্বাসটাকে গলার কাছে আটকে রেখে কোনমতে বলে উঠলো অতনু। এখনো বিশ্বাস হতে চাইছে না মুহূর্তখানেক আগে শুনে নেওয়া শব্দসমষ্টিগুলোকে।
“কি বললাম আমি! কানে বেশি শুনিস মনে হচ্ছে!” অরিন্দমের মুখের চওড়া হাসিটা ফিরে এসেছে আবারো।”কিছুই তো বলিনি আমি। হঠাৎ কি হলো স্যার আপনার।”
অরিন্দমের কথা শুনে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ল অতনু। ইসস! কি যে মোক্ষম ভুলটা করে বসলো ও। বুদ্ধি করে সাউন্ড রেকর্ডারটা সাথে নিয়ে গেলে আর কোন চিন্তাই ছিলনা। কাকে বিশ্বাস করাবে একটু আগেই অরিন্দম নিজের দোষ নিজেই স্বীকার করেছে।
“ন্যাড়া বেলতলায় যায়, বারবার যায়, বহুবার যায়। উপযুক্ত সময় দেখে যায়, বেল পেকে যাওয়ার আগে যায়..” অস্ফুটে কথাগুলো বলে চরম আক্রোশে অতনু কারাগারের কপাট ধরে ঝাঁকাতে শুরু করে।”বল কি করে মেরেছিস তোর দাদাকে! কেন মেরেছিস?”
“আমি আমার দাদাকে কেন মারতে যাব? ওকে আমি ভালবাসতাম। আপনি দেখেননি স্যার, আমরা পছন্দ করে একরঙেরই জামা কিনতাম!” গোঁফের আগায় সূক্ষ্ম হাসিটা ঝুলিয়ে রেখে নিজের বক্তব্যের থেকে একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে বলে উঠলো অরিন্দম। সরু সরু ধূর্ত দুই চোখে খেলা করছে রামধনুর সাতটি রং।
সেদিক থেকে চোখটা ফিরিয়ে নিয়ে বড় বড় পা ফেলে অতনু ফিরে আসলো নিজের চেয়ারে। তারপর টেবিলে পড়ে থাকা ল্যান্ডফোনটা দিয়ে কানেক্ট করল সঙ্গীতাকে। কয়েকবার রিং বাজার পর রিসিভ হতেই তড়িঘড়ি বলে উঠলো অতনু,”সংগীতা, অবিনাশ বেঁচে নেই। নিজের দাদাকে অরিন্দমই মেরে ফেলেছে। চুনা লাগিয়েছে আমাদের গোটা ডিপার্টমেন্টকে। কিন্তু কোন সাক্ষ্য প্রমাণ নেই আমাদের হাতে। ইনফ্যাক্ট স্বীকার করার পরেও নিজের বক্তব্য থেকে পুরোপুরি ঘুরে গিয়েছে লোকটা। তুমি মনুকে আমাদের হাতে ট্রান্সফার করার পর ফের বেগুসারাইতে ফিরে যাবে।” ওপ্রান্তে থাকা সঙ্গীতাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো অতনু। তারপর টেবিলে পড়ে থাকা রাইটিং প্যাডটা নিজের দিকে টেনে নিল সে। ছোট ছোট হস্তাক্ষরে ডিপার্টমেন্টের পরবর্তী নির্দেশনা লেখা আছে সেখানে। “অরিন্দমের ব্যাংক একাউন্ট সিল করে দাও। আর এয়ারওয়ে এজেন্সিকে বলো অরিন্দমের ট্রাভেল হিস্ট্রি পাঠাতে।”
“ওকে স্যার…” মুঠোফোন ছাপিয়ে সংগীতা মেয়েলি কণ্ঠস্বর এপ্ৰান্তে আসতেই মনমধ্যে গজিয়ে ওঠা পরিকল্পনাটা খোলসা করে অতনু,”বেগুসারাই এর কাছাকাছি যতগুলো শ্মশান বা কবরখানা আছে তার একটা লিস্ট পাঠাও। আর খোঁজ লাগাও বেগুসরাইয়ের কাছাকাছি নির্জন জায়গা কতগুলো আছে।”
“আর কিছু স্যার?” সঙ্গীতার কণ্ঠস্বরটা ভেসে আসতেই দু মুহূর্ত চুপ করে গেলো অতনু। বোধ করি কথাগুলো সাজিয়ে নিচ্ছিলো নিজের মনমধ্যে।
“মনু যাদবের কানে বিষ ঢালা শুরু করো। এভিডেন্স না পেলে ওই লোকটাই আমাদের সম্বল।” শেষের নির্দেশটুকু দিয়ে চেয়ারে ধপ করে বসে পড়ল অতনু। তারপর কানেক্ট করল ঐশীকে।

———–

“নয়মাস পেটে ধরলাম। খেটেখুটে মানুষ করলাম। নিজের পাতের মাছটা তুলে দিয়ে কাঁটা খেয়ে পেট ভরলাম। লাভ কি হলো? খালি মুখে মুখে তর্ক আর কিছু জিজ্ঞেস করলেই আমি নাকি জবাবদাহী চাইছি!” কড়াইয়ের তেলকালি মুছতে মুছতে একমনে গজগজ করে যাচ্ছেন সবিতাদেবী। কিছুক্ষণ আগেই অতনুর মা অশক্ত শরীরকে সঙ্গে করেই ঘুরে গিয়েছেন ভাবি বেয়ানবাড়ি থেকে। নানাবিধ পদ রেঁধে তাকে সাদর আপ্যায়ন করে খাওয়ানোর ভার সবিতা দেবীই নিয়েছিলেন। কিন্তু এই বিয়েতে যে তার এখনও মত নেই, তা বলাই বাহুল্য।
“আগের জনের সর্বনাশ করেছে। এখন আরেকজনের সর্বনাশ করবে। বললাম কত করে যজ্ঞটা করিয়ে নে! একটা কথা যদি শুনত আমার!” কাজের সাথে সাথে দেওয়ালকে সঙ্গী করে বকবকানি চলেছে অবিশ্রান্তভাবে।
“জানতাম মেয়েরা বিয়ে হওয়ার শেষে পর হয়ে যায়। আমার ভাগ্য দেখো! বিয়ে হওয়ার আগেই মেয়ে পর হয়ে গিয়েছে। নিজের মার থেকে মাসীর দরদ বেশি…” রান্নাঘরের পাশ থেকে যেতে যেতে মায়ের গজগজানি কানে আসে ঐশীর। কিন্তু আজ মনটা খারাপের ছোঁয়া লাগেনা বিন্দুমাত্র। মনে মনে কুসংস্কারের জাল শিকড় বিছিয়ে রাখলেও সবিতাদেবী হবু বেয়ানের সাথে বিন্দুমাত্র দুর্ব্যবহার করেননি। নিজের হাতে খাবার বানিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি গল্পগুজবও করেছেন প্রাণ খুলে। দুই মায়ের হাসিমুখটা এখনও জীবন্ত ঐশীর মানসপটে। মায়ের বকবকানি দেখে আপনমনেই ফিক করে হেসে ফেলে ঐশী, তারপর পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে সবিতাদেবীর ছোট্ট শরীরখানা।
“তোমার মেয়ে পর হয়নি মা। মাসির দরদও বেশি হয়ে যায়নি…”

ক্রমশ
আগের পর্ব https://www.facebook.com/114703953643370/posts/189500576163707/

©সম্প্রীতি রায়
আর বড়োজোর একটা বা দুটো পর্ব লাগবে সমাপ্ত হতে। আশা করি ভালো লাগছে সবার সঙ্গে থাকবেন সবাই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here