বিধবা_বিবাহ পর্ব-২৯

0
1278

#বিধবা_বিবাহ (ত্রিংশ পর্ব)
নিজের কর্ণারে চুপচাপ বসে আছে অতনু। বিক্ষিপ্ত মনটাকে শান্ত করার চেষ্টা করেও হেরে যাচ্ছে । বারবার চোখটা চলে যাচ্ছে উল্টোদিকে রেখে দেওয়া কম্পিউটারের ডিজিটাল স্ক্রিনে। মেঝেতে গোল পাকিয়ে শুয়ে থাকা অরিন্দমের শক্তপোক্ত চেহারাটা ফুটে উঠেছে স্পষ্টভাবে। মনে পড়ে যাচ্ছে দুই ভাইয়ের পছন্দমত কেনা একইরঙের পোশাকের দিকে।
অতনুর কাছে পুরো গোলকধাঁধাটা এখন হাতের তালুর মতো স্পষ্ট। বড়ভাইকে অতিরিক্ত ভালোবাসার জন্য অরিন্দম দাদাকে অনুকরণ করতে চাইত। ভাবতো, রুচি পছন্দের মিল হলে মা তাকেও ভালবাসবে। মনোযোগ দেবে বাড়ি ছোট সন্তানকেও।
“এই কারণেই দাদার পছন্দ-অপছন্দগুলোকে আপন করে নিয়েছিল ছেলেটা।”এক অজানা কারণে মানুষটাকে লোকটা বলতে ইচ্ছে করছে না আর… বারেবারে চোখ চলে যাচ্ছে মেঝেতে কুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়ে থাকা ছেলেটার দিকে। বয়সে হয়তো খানিক ছোটই হবে তার থেকে। ঐশীর সমবয়সী বলে কথা.. মনে পড়ে যাচ্ছে বোঝার বয়সে উপনীত হওয়ার পর মায়ের কাছে একটা ভাই, বোনের আবদার রাখা। অভাবের সংসার সামলাতে অতনুর মা যদিও ছেলের আবদার রাখতে দ্বিতীয় সন্তান আনার সিদ্ধান্ত নেননি।
“এরা পেয়েও হারায় কেন?”আপনমনে বলে উঠল অতনু… তারপর গলাখাকরি দিয়ে ডেকে উঠলো চেয়ারে বসে ঝিমুতে থাকা অধঃস্তন কর্মচারীর দিকে।
“থানায় কটা কম্বল আছে?”
আচমকা এমন ডাক শুনে অধস্তনের তন্দ্রা ছুটে গেল। পড়িমড়ি করে সে দৌড়ে আসলো অতনুর কাছে। “আজ্ঞে স্যার।”
“থানায় কটা কম্বল আছে দেখোতো। নতুন আসামির ঘরে কম্বল দিয়ে এসো। বলো মেঝেতে পেতে ঘুমোতে।”নির্দেশটুকু দিয়ে অতনু বেরিয়ে আসলো থানার বাইরে। সময়টা এখন ভোর পাঁচটা। পুব দিক একটু একটু করে ফর্সা হতে শুরু করেছে। ভোরের নরম আলো মেখে অতনুর মনটাও আসামির প্রতি একটা স্বচ্ছ ধারণা তৈরি করছে।
“ছেলেটা চুপচাপ, কিন্তু রগচটা। ঐশীকে ভালোবাসে, কিন্তু সেখানেও অধিকারবোধ প্রবল। এটা কি ভালোবাসা, নাকি স্রেফ অবসেশন।”অস্ফুটে বলে উঠলো অতনু। তারপর কি মনে হতেই ফের চলে এলো টেবিলে থাকা ল্যান্ডফোনের দিকে।
“হ্যালো ডাক্তারবাবু। এত সকালে ফোন করার জন্য প্রথমেই ক্ষমা চাইছি। কিন্তু ব্যাপারটা একটু আর্জেন্ট ছিল।”কথা বলতে বলতে অতনু চোখ রাখলো ডিজিটাল স্ক্রিনে। মেঝেতে পেতে দেওয়া কম্বল চাদর পড়ে আছে এককোনাতে। অরিন্দম সেগুলো ছুঁয়ে দেখেনি, তা বলাই বাহুল্য। মনটা চেনা বিরক্তিতে ভরে উঠলো। নিজের অজান্তেই হাতটা চলে গেল গালে বসে যাওয়া আঘাতের দিকে। মনে পড়ে যাচ্ছে অরিন্দমের মায়ের স্বীকারোক্তি। রাগ, কষ্টের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে নিজেকে এমন ভাবেই কষ্ট দিতো অরিন্দম। মায়ের মন ছুটে যেত ছেলের দিকে। যদিও তার পরে যে কে সেই…
তবে কি অরিন্দম এটেনশন চাইছে? ঠিক যেমন ছেলেবেলাতে চাইতো। কিন্তু ও যে বড়ো হয়ে গিয়েছে… মনের ভাবনাটা চেপে রেখে অতনু মনটাকে জোর করে টেনে নিয়ে গেল কথোপকথনের দিকে।
“আমার মনে হচ্ছে আসামি আবনর্মাল বিহেভিয়ার করছে। থানার ফেসিলিটি রিজেক্ট করছে। দুপুর থেকে কিচ্ছুটি মুখে তোলেনি। ইনফ্যাক্ট ঠাণ্ডা মেঝেতে শুয়ে আছে। আপনি একটু আসতে পারবেন?” ওপ্রান্তের সম্মতি পাওয়া মাত্র বুকের উপর থেকে বোঝাটা নেমে গেল অতনুর। সাইকোলজিস্ট ব্যাপারটাকে ঠিক সামলে নিতে পারবেন। খানিকটা নিশ্চিন্ত হয়ে অতনু চোখ রাখলো ঘড়ির দিকে, সময়টা সাড়ে পাঁচটা। নাইট ডিউটিতে থাকা সকল কর্মচারী ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এদিকে-সেদিকে। কারোর চোখ মুঠোফোনে নিবদ্ধ, কেউ বা ঘুমে ঢুলছে। সেদিক থেকে দৃষ্টিটা সরিয়ে টেবিলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কাগজগুলোকে গুছিয়ে রাখতে শুরু করলো অতনু। ইনভেস্টিগেশনের এভিডেন্স কপি গচ্ছিত আছে সেখানে। এমন সময় দরজার কাছ থেকে অতিচেনা কন্ঠস্বরটা ভেসে আসতেই চমকে উঠল অতনু। সাতসকালে ঐশি এসে সেখানে হাজির হয়েছে থানাতে।
“কি ব্যাপার বলোতো? কিছুতেই তোমার সাথে কানেক্ট করা যাচ্ছে না। কোথায় ছিলে তুমি গোটাদিন?” কোনরকম ভুমিকা ছাড়াই গলাটাকে খানিক উঁচিয়ে বলে উঠলো ঐশী। ওর কণ্ঠস্বরে ঢুলতে থাকা কর্মচারীরা জেগে গিয়েছে ততক্ষণে।
“এই দেখো..” বলে ভাঙ্গা মুঠোফোনটা অতনু এগিয়ে দিল ওর দিকে।
“এটা কি করে হলো!” মোবাইলটার অবস্থা দেখে প্রায় চিল্লিয়ে উঠলো ঐশী। তারপর চোখ গেল অতনুর গালে। অযত্নে বেড়ে ওঠা দাঁড়ির ভ্রুকুটি ছাড়িয়ে কাটার দাগটা বোঝা যাচ্ছে স্পষ্টভাবে।
“সবই এনার কীর্তি।” বলে ডেক্সটপটা অতনু ঘুরিয়ে দিল ঐশির দিকে। মেঝেতে পড়ে পড়ে অরিন্দম তখনও ঘুমুচ্ছে নিঃসাড়ে। জেলের ভিতর থাকা অপরাধীদের জন্য কড়া নিয়মকানুন তখনো যে প্রযোজ্য হয়নি, তা বলাই বাহুল্য।
“একি! সারা গায়ে কি দাগ!” জমাট বাঁধা কালশিটের দাগগুলো দেখে শিউরে উঠল ঐশী। বুঝতে পারল কথা বের করার সবরকম ফন্দি অরিন্দমের উপর প্রয়োগ করা হলেও কার্যকর হয়নি কিছুই। ওর মুখে তখন ফুটে উঠেছে ঘৃণা, করুণায় মিলেমিশে যাওয়া অভিব্যক্তি।
“বাইরে এসো…”বলে দরজার দিকে হাঁটা লাগাল অতনু। পিছুপিছু অনুসরণ করলো ঐশী।

“তুমি অরিন্দমকে বন্ধুর চোখে দেখতে?” কোনরকম ভুমিকা ছাড়াই সরাসরি প্রশ্ন করে উঠলো অতনু। মনের মধ্যে তখন অন্যরকম অনুভূতি খেলা করছে।
“অফকোর্স। এটা আবার কিরকম প্রশ্ন? ওর দাদা আমার স্বামী ছিল। স্বামীর ভাইকে নিজের বন্ধু ভাববোনা তো কি ভাববো!” কণ্ঠস্বরে ফুটে উঠেছে স্পষ্ট বিরক্তি। অতনু গোটা একটা দিন যোগাযোগ রাখেনি ওর সাথে। এমনকি বাড়ির সাথেও যোগাযোগ করেনি। হবু শাশুড়িমাকে মাসকাবারি বন্দোবস্তে রাখা একজন কাকিমার হাতে ছেড়ে দিয়ে থানায় বসে আছে নিশ্চিন্তভাবে। বিয়ে আগামীকাল হলেও কোন রকম তাপ উত্তাপ নেই তার। এইরূপ গা ছাড়া মনোভাব দেখে ঐশী স্পষ্টত বিরক্ত ছিল। উৎকণ্ঠাতে ঘুমোতেও পারেনি ঠিকঠাক। কিন্তু এখন থানায় এসে ওর মনের উদ্বেগ মিলিয়ে গেল। প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েটি বুঝতে পারলো তদন্তের খাতিরে অতনু প্রায় নিজেকে ভুলতে বসেছে। নির্ঘুম চোখ, ক্লান্ত শরীরই তার সুস্পষ্ট প্রমাণ। কিন্তু ভাবী স্বামীর মুখ থেকে এরূপ প্রশ্ন শুনে মনটা ভরে উঠল বিরক্তিতে।
“অবিনাশ তোমার জীবনে আসার আগেও অরিন্দমকে বন্ধুর চোখে দেখতে?” ঐশীর বিরক্তিভাবটা বুঝতে পেরেও বলে উঠলো অতনু। এই কেসটাই ওর ধ্যান জ্ঞানের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়ে গিয়েছে।
“সত্যি বলতে, ভালো লাগতো… কিন্তু অবিনাশ নিজের মনের কথা জানানোর পর কখনো ভেবে দেখিনি। অরিন্দম আমাদের রিলেশনশিপের স্টার্টিং এর মাসখানেক পরে নিজের মনের কথা জানায়। কিন্তু ততদিনে আমি এনগেইজড। স্বাভাবিকভাবেই ওর প্রতি ভালোলাগাটা বজায় ছিলনা আর।” ভাবি স্বামীর কাছে নিজের মনের কথা তুলে ধরতে আজ একটুকুও সংকোচ বোধ হলো না ঐশির। কারণ, সম্পর্কটা ততদিনে বন্ধুত্বের সীমানায় প্রবেশ করেছে। অতনুর কাছে ফিরে পেয়েছে কাঙ্ক্ষিত সেই কমফোর্ট জোনকে। যেটা বহুবছর আগে অরিন্দমের কাছে পেতো সে। যদিও স্বামী হওয়ার সুবাদে অবিনাশ কোনদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক উপহার দেয়নি তাকে।
“অরিন্দম তোমাকে ভালবাসত ঐশী। ফ্রাস্ট্রেশনে বা অন্য কোনো কারণে সেই ভালোবাসা পরিবর্তিত হয়েছিল অবসেশনে।” একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে দুই ভাইয়ের বোঝাপড়ার কাহিনী বলে গেল নিজের ভাবি স্ত্রীকে। অরিন্দমের জীবনের পাওয়া না পাওয়া, পড়াশোনায় দুর্দান্ত হওয়া সত্ত্বেও অপরাধের গহীনে তলিয়ে যাওয়া, এমনকি দাদাকে মেরে ফেলার ঘটনাটাও।
সবটুকু শোনার পর ঐশীর চোখে তখন ভিড় করেছে দু’ফোঁটা বিন্দু। তীক্ষ্ণ নাকের ডগাটা লাল হয়ে গিয়েছে ততক্ষণে। সেদিকে তাকিয়ে বুকটা ধক করে কেঁপে উঠলো অতনুর। মনের মধ্যে ঘুরতে থাকা সম্ভবনা তীব্র হয়ে ফিরে এলো মস্তিষ্কের কোটরে। এই ত্রিকোনে আবেগের বশবর্তী হয়ে ঐশী কি তবে আমাকে ছেড়ে দেবে! বস্তুত এতক্ষণ ধরে এই সম্ভাবনায় মাথাটা তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছিল তার। সাথে তীব্রতর হচ্ছিল বিরহের বেদনা। গোটাদিন ঐশীর সংস্পর্শে না থেকেও মনটা পড়েছিল সেইখানেই। এর নামই কি ভালোবাসা, নাকি অরিন্দমের মত জোরজবরদস্তি করে আটকে রাখার চেষ্টা ভালোবাসার আরেক নাম, কোনটা.. উত্তর পেলনা অতনু।
“আমি অরিন্দমের সাথে দেখা করতে চাই, এখনই। এবং অবশ্যই একা। তোমার পারমিশন পেলে অফটাইমে দেখা করতে বিশেষ অসুবিধা হবে না আশা করি।গরাদের বাইরে থেকে কথা বলব।” চোয়াল শক্ত করে উত্তর দিল ঐশী।
কথাটা শুনে অতনুর চোখটা নেমে আসলো ড্রয়েরের দিকে। মানসিক উদ্বিগ্নতায় সে শুনতেই পারেনি ঐশী চাবি চায়নি, চেয়েছে ইনচার্জের পারমিশন।
“আমি তোমার কাছে চাবি চাইনি অতনু।” উত্তেজনায় কাঁপতে থাকা হাতটার দিকে বলে উঠলো ঐশী। একজন নারীর মন বুঝে গেল অতনুর ভাবাবেগকে। গোটা দিন যোগাযোগ করে না থাকা একটা মানুষের অবলম্বন হারিয়ে ফেলার ভয় কে…
“যাও।” সংক্ষেপে নির্দেশটুকু দিয়ে নিজেকে সামলানোর চেষ্টায় অতনু চেয়ারে বসে পড়ল ধপ করে। ওর দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে ততক্ষণে এগিয়ে গিয়েছে ঐশী।
“বাই দ্যা ওয়ে, আই থিঙ্ক কোন জামিনদার পাওয়া যায়নি ওর জন্য, তাই না?” যেতে গিয়েও থমকে দাঁড়িয়ে গেল ঐশী। ওর প্রতি পদক্ষেপে ফুটে উঠেছে দৃপ্ততা। কিন্তু প্রেয়সীকে হারানোর চিন্তায় বিভোর অতনু প্রতিটি পদক্ষেপকে কল্পনা করে নিচ্ছে প্রেয়সীর সাথে দূরত্বকে, মানসিক ব্যবধানকে।
“না।” সংক্ষেপে উত্তর দিয়ে ফাইলের মধ্যে ডুবতে চেষ্টা করল অতনু। এখনো বিশ্বাস হতে চাইছে না ঐশী নিজের মুখে অরিন্দমের সাথে দেখা করতে চাইবে। “যাকে কিনা একসময় সে ঘৃনা করতো..” অস্ফুটে বলে ওঠে অতনু “মানুষের মন বোঝা বড়ই জটিল…” আবেগমথিত এই মেয়েটাকে সে এতদিনে অনেকটাই চিনে ফেলেছে। বুঝেছে দুর্বলের প্রতি ঐশীর মমতা জেগে থাকে সর্বক্ষণ। ঠিক যেমন দাদার কাছ থেকে খারাপ ব্যবহার পেলেও ডুবতে থাকা মানুষটার প্রতি ঐশী এগিয়ে দিয়েছে সাহায্যের হাত। আগুপিছু না ভেবেই টাকা দিতে রাজি হয়ে গিয়েছে। কোনরকম এগ্রিমেন্ট ছাড়াই…
মনোযোগটা অন্যদিকে সরানোর চেষ্টা করলেও সফল হচ্ছেনা। বারে বারে চোখ চলে যাচ্ছে কম্পিউটারের স্ক্রিনের দিকে। মেঝেতে শুয়ে থাকা অরিন্দম ততক্ষনে এসে গিয়েছে গরাদের দিকে। ঐশীর সাথে কথাবার্তা চলছে স্বাভাবিক ছন্দে। কোনরকম রাগ, আক্রোশ নেই তার অভিব্যক্তিতে। বড্ডো শুনতে ইচ্ছে করছিল ওরা কি বলছে।কিন্তু প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার দরুন কিচ্ছু শোনা যাচ্ছেনা এখান থেকে।
এমন সময় টেবিলে পড়ে থাকা প্রাণহীন যন্ত্রণাটা বেজে উঠতেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো অতনু। সঙ্গীতা ফোন করেছে বোধহয়।
“হ্যালো।” রিসিভারটা কানে ঠেকিয়ে সঙ্গীতার গলাটা পেতেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো অতনু। চাতক পাখির মতো অপেক্ষা করছিল এই মুহূর্তটার।
“স্যার, মনু অরিন্দম আমাদের বোকা বানিয়েছে। অবিনাশ কোনোদিন ওই বাড়িতে যায়ইনি! কাবার্ড এ পেয়ার জামাকাপড় রাখা, একাউন্টে লগইন সবকিছু তদন্তের মোড় অন্যদিকে ঘোরানোর জন্য।”
“ব্রাভো!” অনুমান ক্ষমতার সাথে মিলে যাওয়ার সাথে সাথে প্রায় চিল্লিয়ে উঠলো অতনু। ওর মনটাও বলছিলো অবিনাশ সত্যিই আর বেঁচে নেই। শুষ্ক ঠোঁটের কোণে ফুটে উঠলো হালকা হাসি।”তারপর?”
“মনুর মেঝে অবজার্ভ করে মনে হচ্ছে রিসেন্টলি তৈরি করা হয়েছে। একটা ঘরের মেঝে ব্যবহার করতে করতে প্রায় তেলতেলে, নোংরা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু অন্য ঘরের মেঝে খসখসে, বেশ পরিষ্কার।” কিছুক্ষণ আগেই পরিষ্কার দিনের আলোতে ঘরখানা পর্যবেক্ষণ চালিয়েছে সংগীতা। সুতীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা জানান দিচ্ছে মেঝেটা সদ্যনির্মিত, কিন্তু কেন…
“লাশ ঐখানেই আছে। মেঝে খোঁড়ার সরঞ্জাম, লোকজন নিয়ে আসো।” কনফিডেন্স চুঁইয়ে পরেছে অতনুর কণ্ঠস্বর থেকে। “তারপর মনুকে বলবে অরিন্দম ওর এগেইনস্টে রাজসাক্ষী হতে রাজি হয়ে গিয়েছে। আর কিচ্ছু করতে হবেনা। ওদের খেলা শেষ!” কলটা ডিসকানেক্ট করে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো অতনু।
ইতিমধ্যেই ঐশী এসে দাঁড়িয়েছে ওর পাশে।
“কথা শেষ?” হাসিমুখে ওকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলে উঠলো অতনু।

“হ্যাঁ শেষ। জানতে চাইবেনা কি কথা বললাম?”
অতনুর চোখে চোখ রেখে বলে উঠলো ঐশী।
“একজন অফিসার হিসেবে জানতে চাওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু তোমার কিছু পার্সোনাল স্পেস আছে আমি জানি।” মনের ভাবটা চেপে রেখে বলে উঠলো অতনু।

ক্রমশ।
আগের পর্ব https://www.facebook.com/114703953643370/posts/191442072636224/

আশা করি ভালো লাগছে সবার, সঙ্গে থাকবেন সবাই।
©সম্প্রীতি রায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here