বেখায়ালি ভালোবাসা পর্ব-৩২

0
2647

#বেখেয়ালি_ভালোবাসা,
#পর্ব_৩২
#লেখাঃসাবেরা_সুলতানা_রশিদ
.
মেঘ পিছন ফিরে দেখে সৈকত ওর দিকে হাত বাড়িয়ে দাড়িয়ে আছে ।
মেঘের কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না যে এটা সৈকত!!
সৈকত এতো রাতে আবার কোথা থেকে আসবে!??
নাকি সবটাই নিজের চোখের ভুল?
মেঘ অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে সৈকতের মুখের দিকে।
মেঘের অবস্থা দেখে মিতু,বৃষ্টি , ইরা মিটমিট করে হাসতে থাকে ।
মিতু আস্তে করে মেঘের হাতটা সৈকতের হাতের উপর তুলে দেয় । সৈকত টেনে তোলে মেঘকে । মেঘের মুখ দিয়ে কোন কথাই বের হচ্ছে না । মনে হচ্ছে সৈকতের চোখের দিকে তাকিয়ে কোন এক সম্মোহনীতে ডুবে গেছে ।
হঠাৎ মেঘের প্রিয় একটা বাংলা গান সাউন্ড বক্সে বেজে ওঠে
তুমি চাইলে আমি তোমার…,
না চাইলেও তুমি আমার । –
তুমি বসে থাকলে আমি আবেগে উড়ে যাই,
তুমি চলে গেলে আমি
আমি যেন আমি নাই ।
তুমি চাইলে আমি তোমার…,
না চাইলেও তুমি আমার ।
অনন্ত রাতের ছায়া পথে,হারিয়েছো কিনা জানিনা ।
শুধু জানি তুমি আছো খুব কাছে,ছোয়াতো যাবে না … ।
তোমায় আমি লিখে দিলাম,আমার প্রিয় আকাশ ।
তোমার মাঝে গড়ি আমি আমার বসবাস ।
তুমি চাইলে আমি তোমার…,
না চাইলেও তুমি আমার ।
ঘুম ভাঙা অস্থির প্রহরে সাদাকালো রোদের আল্পনা,নিশ্বাস ফিরে আসে বারেবার,ফিরে আসে তোমার কল্পনা ।তোমায় আমি লিখে দিলাম,আমার প্রিয় শহর ।
তোমার মাঝে ছুঁয়ে দিলাম
আমার পূর্ণিমা রাত ।
তুমি চাইলে আমি তোমার…,
না চাইলেও তুমি আমার ।
তুমি বসে থাকলে আমি আবেগে উড়ে যাই,তুমি চলে গেলে আমি
আমি যেন আমি নাই ।
তুমি চাইলে আমি তোমার…,
না চাইলেও তুমি আমার ।
সৈকতের হাত ধরে মেঘ অজানা এক ঘোরের মধ্য নেচে চলেছে ।
গানটা শেষ হতেই উপস্থিত সবাই করতালি দিয়ে উঠলো ।
চারিদিকের করতালির শব্দে মেঘ যেন ঘোর কাটিয়ে বাস্তবে ফিরে লজ্জা পেয়ে কোন কথা না বলে মাথা নিচু করে নিজের জায়গায় বসে ।
সৈকত মেঘের সামনা-সামনি বসে ।
মেঘের বান্ধবী গুলি মেঘ কে খোচাতে শুরু করে ।
হঠাৎ পাশ থেকে একটা মেয়ে এসে সৈকতকে বলে আপনি খুব ভাল ড্যান্স করেন। যদি আপত্তি না থাকে তাহলে —-
সৈকট মেঘের দিকে তাকাই দেখে মেঘ মাথা নিচু করেই বসে আছে। তাই মেঘ কে রাগানোর জন্য উঠে দাড়ায় বলেঃ
না আপত্তি থাকবে কেন চলুন—
সৈকতের কথাটা শোনার পরে মেঘের পা থেকে মাথা পর্যন্ত রাগে শরীর জ্বলতে শুরু করে ।
তারপরও চুপ করে বসে থাকে ।
মিতু বলে দেখ মেঘ ভাইয়া কি সুন্দর করে পারফরমেন্স করছে ।
আহ মনে হচ্ছে প্রফেশনাল ড্যান্সার !!
মেঘের রাগ আরোও বেড়ে গেল ।
বললো তুই দেখ আমার দেখা লাগবে না।
—তুই অামার উপর কেন রাগ করছিস ?আমি কি করলাম। রাগ তো তোর ঐমেয়ে টাকে দেখানো উচিত যে সৈকত ভাইয়াকে নিয়ে হাত ধরে চোখে চোখ রেখে —
—এই তুই থামবি ?যার যা খুশি করুক তাতে আমার কি!!?
—সত্যি তোর কিছু না?
—না আমার কিছু না।
—তাহলে এতো জ্বলেপুড়ে মরছিস কেন?
—মিতু দেখ একদম ভাল হবে না বলছি—-
সৈকত মেয়েটির সাথে পারফর্ম করছে ঠিকিই কিন্তু চোখ মেঘের দিকে ।
মেঘের রাগান্বিত মুখ দেখে সৈকতের মনে মনে হাসি পাচ্ছে ।
মেঘ মাথাটা তুলে দেখে আরে এ তো সেই মেয়েটা দুপুরে যার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল কি যেন নাম বলেছিল??
ও হ্যা নীলা।
মেঘের রাগ আস্তে আস্তে বাড়ছে যখন দেখলো সৈকতের বাম হাতটা নীলার কোমরে আর ডান হাতটা নীলার বাম হাতের মধ্য।
মেঘ মনে মনে বিড় বিড় করছে–
এই মেয়েটা এখানে হানিমুন করতে আসছে স্বামীর সঙ্গে আর রোমান্স করছে দেখ আমার বরের সঙ্গে ।
আর এই মেয়েটার সে ডাক্তার স্বামীই বা কোথায় সারাদিন কাজ নিয়ে আছে আর তার বউ—
নিজের বউকে অন্য একজনের সঙ্গে ড্যান্স করতে দিয়ে নিজে কি দর্শকের ভুমিকা পালন করছে?“
আর আমারটাই বা কম কিসের!!?
কখনও নিজের বউয়ের মুখের দিকে ভাল করে তাকাই দেখে না আর আজ —-
নিজের বউ কিছু বললে কিছু করলে খারাপ ।
আর সে যে এখন পরনারীর হাত ধরে নাচছে তাতে কিছু হচ্ছে না।
হঠাৎ মেঘ উঠে দাঁড়িয়ে ওর কলেজ ফ্রেন্ড আবিরের দিকে হাত বাড়িয়ে বলে ওঠ
আবির অবাক হয়ে বলে কোথায়!!?
—আগে ওঠ চল তুই আর আমি একসঙ্গে নাচ করবো।
—এই তোর কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে ?
—কেন তুই আসবি না আমার সঙ্গে ?
—না বাবা আমার সেই পুরাতন কথা মনে আছে এখনো ভুলিনি।
—এই রাখতো আগের কথা । এখন চল নইলে কিন্তু খুব খারাপ হবে —
আবির জানে এবার যদি ও নিজ থেকে না ওঠে তাহলে এতো মানুষের সামনে ইজ্জতের বারোটা বাজাবে ।
আবিরের সাথে নাচ করার সময় পাশ থেকে একটা ছেলে এসে মেঘের হাত ধরে
ব্যাক সাইডের গানটাও ততক্ষনে চেন্জ করা হয় ।
“কদম ছে কদম জো মিলে
তো ফির সাথ হাম তুম চেলে
চালে সাথ হাম তুম জাহান
ওয়াইন পে বানে কাফিলে
মন আমোর
ছোড় দো খুদকো এ্যাইসে মেরি বাহনে
মেইন জেসি হাওয়নে মেইন বাদল কওই
কদম ছে কদম জো মিলে—–
জামিন বোলে সারি রি রারা রে রি রি রাআআআ
ইয়ে দিওয়ানগি কা হি সোর
আজ সারি স্বপ্নে চাল পালকন মেইন
বাহারলে
আজ সারি খুশিওছে ইয়ারা না কারলে
দ্বারা দি দ্বারা , সুনো তো ইয়ারা
আজ কারলে মানমানি থোরি আওর —–
Roz roz aaye kahanYe neeli shaameinRoz roz honge naAise hungaameDara di dara, suno toh yaaraBekhudi si chaayi hai charo oreSay 1, 2, 3, 4——————
সবাই মুগ্ধ হয়ে দেখছে মনে হচ্ছে #কাবিল সিনেমার (ঋত্বিক আর ইয়ামিনি) সেই নজর কাড়া পারর্ফম ।
সৈকত রাগে ফুলতে থাকে মেঘের অন্য একটা অচেনা ছেলের সঙ্গে পারর্ফম করতে দেখে । সৈকত আর সহ্য করতে পারে না যখন দেখে ছেলেটা মেঘকে দুহাত দিয়ে ধরে উচু করে তোলে ঠিক মুভির মতো করে ।
গান শেষ হওয়ার আগেই সৈকত সাউন্ড বক্সটা অফ করে দেয় তারপর হুট করে এসেই মেঘের হাত ধরে টেনে গালে একটা কষে চড় বসিয়ে দেয় ।
উপস্থিত সবাই হতবিহ্বল হয়ে যায় ।
মেঘ আর নিজেকে সামলাতে না পেরে ছুটে দৌড়ে সিড়ি দিয়ে নেমে যায়।
মিতু আর ইরাও মেঘের পিছু পিছু যায়।
মেঘ,মেঘ দাড়া ।
কিন্তু মেঘ আর কারোর কথায় কর্নপাত না করে দৌড়াতে থাকে।
মেঘের বাকি বন্ধুরা সবাই সৈকতের
কাছে এসে বলেঃ
—এটা আপনি কি করলেন ভাইয়া??
সৈকত কোন কথা বলে না।
—এটা আপনি একদম ঠিক করেন নি ভাইয়া। আপনার এভাবে পাবলিক প্লেসে মেঘের গায়ে হাত তোলা একদমই উচিত হয়নি। এমনিতেই এ কয়দিন ও খুব কষ্টে আছে আর আজ আপনি !!!!—–
সৈকত একটু ভেবে বলে সরি আসলে হঠাৎ কি যে হলো বুঝতে পারিনি। মেঘ কে ঐভাবে অন্য একটা ছেলের সাথে দেখে —–
—বুঝতে পেরেছি আর এমন হওয়াটাই স্বাভাবিক । তাহলে বুঝুন আপনি যখন অন্যে মেয়ের সাথে ঐভাবে পারর্ফম করছিলেন তখন মেঘের কি হচ্ছিল!!??
হঠাৎ পাশ থেকে সেই মেয়েটি এসে বলে
সরি সৈকত আমার জন্যই এমনটা হলো।
—তুই কেন সরি বলছিস । আরে ওটাতো আমাদের প্লান করা ছিল। মেঘ কে জেলাস করার জন্য।
অন্যেরা সৈকত আর নীলার কথা শুনে একে অপরের মুখ চাওয়া চায়ি করতে লাগলো ।
সৈকত সেটা বুঝতে পেরে বললো সরি গাইজ । কথা বলতে বলতে একটা কথা বলতে ভুলে গেছি।
আসলে মেঘ আর তোমরা যাকে অন্যে মেয়ে ভাবছো আসলে সে হচ্ছে আমার কলেজ ফ্রেন্ড । আজ সকালে এখানে আসার পর হঠাৎ আকস্মিক ভাবে ওর সাথে আমার দেখা হয়ে যায় ।
ওর নাম নীলা। হাজবেন্ডের সঙ্গে হানিমুনে এসেছে।
তখন নীলা বলেঃ
—আসলে সৈকতকে সকালে এ হোটেলে একা দেখে মনে একটু কৌতূহল হয়েছিল । কারণ সৈকতের মতো একটা মানুষ এরাকম একটা রোমান্টিক জায়গায় সেটা ঠিক মেনে নিতে পারছিলাম না।
কারণ আমি ওকে যতদূর দেখেছি ওর দ্বারা রোমান্টিক কিছু হওয়া সম্ভব না।
ইউনিভার্সিটি লাইফে দেখেছিতো । ওর আশে পাশের মেয়েগুলো ওর জন্য কেমন পাগল ছিল আর ও!!!
বোরিং!!
এসব দিকে ওর কোন খেয়ালই ছিল না।
আর আজ আমাদের অনেক দিন পর দেখা তাই আমি জানতাম যে সৈকত আদেও বিয়ে করেছে কিনা। যখন ওর সঙ্গে কথা বললাম তখন বুঝতে পারলাম। দোস্ত আমার এখানে এসেছে বউয়ের মান ভাঙ্গাতে । তাই সকালে তিনজন মিলে এরাকম একটা প্লান করেছিলাম।
কারণ আমি জানি মেয়েরা তার ভালবাসার মানুষের সঙ্গে অন্যে কাউকে শেয়ার করতে পারেনা।
কিন্তু এখন তো দেখছি সব হিতে বিপরীত হয়ে গেল।
বৌয়ের মনে জেলাসি ধরাতে গিয়ে সৈকত নিজেই এখন জেলাস ফিল করছে। বলে নীলা হো হো করে হাসতে শুরু করে ।
সৈকত বলে তুই এরাকম একটা জটিল সিচুয়েশনে হাসছিস!!??
কোথাই তোরা সবাই মিলে আমাকে হেল্প করবি তা না——!!!
মেঘের বন্ধুরা বলে উঠলোঃ
—আমরা না হয় সবটাই বুঝলাম কিন্তু এখন মেঘ কে ,কে বোঝাবে??আর ও যেমন জেদী আর অভিমানী একটা মেয়ে তাতে মনে হয়না এতো সহজে মানবে ।
আর সৈকত ভাইয়া আপনি শেষে যেটা করলেন এরাকম একটা পাবলিক প্লেসে দেখুন এর খেসারত আপনাকে কতটা চুকাতে হয় ।
তবে মেঘের গায়ে হাত তোলাটা মনে হয় একটু বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেছে ।
আপনি মেঘকে রাগানোর জন্য যেমন প্লান করেছিলেন। ঠিক তেমনি মেঘ ও আপনার উপর রাগ করেই হয়তো আপনাকে দেখানোর জন্য এমন করেছিল ।
নীলা বলেঃ
—তুমি এখনো দাড়িয়ে থাকবে!!?মেঘের কাছে যাও তাড়াতাড়ি । দেখ কি করছে–
আমি পরে সময় করে মেঘের সঙ্গে দেখা করে সরি বলে নিব । আর এটা যে আমাদের একটা প্লান ছিল সেটাও বলবো।
পাশ থেকে ওরা সবাই বলে হ্যা ভাইয়া আপনি মেঘের কাছে যান ।দেখেন ওর অভিমান ভাঙ্গাতে পারেন কিনা!!?
সৈকত একটু মুখে হাসি ফুটিয়ে বললো ঠিক আছে যাচ্ছি।
পিছন থেকে সবাই বললো অল দ্যা বেস্ট ভাইয়া।
সৈকত দু পা এগিয়ে কি ভেবে থেমে যায় ।
—কি হলো থামলেন কেন??
—ভাবছি।
—কি ভাবছেন??
—মুখ কালো করে বলে যদি মান ভাঙ্গাতে না পারি তখন কি হবে??
সবাই বলে উঠে তারপরের টুকু না হয় আমরা ম্যানেজ করে নিব ।
সৈকত ঠিক আছে বলে হাসিমুখে চলে যায়।
সৈকত মেঘের রুমের সামনে আসতেই দেখে মিতু আর ইরা মেঘের রুমের দরজার বাইরে দাড়িয়ে আছে । আর দরজা নক করছে আর মেঘ কে ডাকছে ।
মিতু সৈকতকে দেখে বললো দেখুন ভাইয়া আজ আপনার জন্যেই এসব কিছু হলো । কেন শুধু শুধু কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিলেন মেয়েটার ।
কি দোষ ওর ??
আপনাকে সবটা দিয়ে ভালবাসে এটাই কি অপরাধ ??
কেন শুধু শুধু শাস্তি দিচ্ছেন ওকে?
আপনি ওর সঙ্গে এতদিন থেকেও উপলব্ধি করতে পারেননি ও আপনাকে কতোটা ভালবাসে ।
সৈকত বলে এসব এখন থাক। এগুলো নিয়ে না হয় পরে কথা বলবো।
এখন প্লিজ আমাকে একটু ওর সঙ্গে কথা বলতে দিন।
মিতু আর ইরা বলে ঠিক আছে আপনি চেষ্টা করুন । দেখুন মেঘ দরজা খোলে কিনা । আমরা সেই তখন থেকে এভাবে বাইরে দাড়িয়ে আছি কিন্তু ও দরজাও খুলছে না সাড়া ও দিচ্ছে না ।
—ঠিক আছে আমি দেখছি।
মিতু আর ইরা চলে যেতেই সৈকত মেঘের রুমের দরজায় নক করে।
মেঘ,মেঘ দরজা খোল ।
আই এ্যাম সরি। এক্সট্রিমলি সরি।
প্লিজ মেঘ দরজা খোল।
সৈকত অনেকক্ষন ডাকা ডাকি করেও মেঘ কে দিয়ে দরজা খুলাতে পারলো না।
ওদিকে রুমের ভিতর থেকে কোন সাড়াশব্দও পাওয়া যাচ্ছে না।
সৈকতের এবার মনের মধ্যে কেমন জানি ভয় কাজ করতে শুরু করলো ।
পাগলীটা আমার উপর রাগ করে কি করছে কি জানি!!?
মেঘ সকালে ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে দরজা খুলতেই দেখে ।
সৈকত বড় করে সরি লিখে তার মুখ বরাবর ধরে দাড়িয়ে আছে ।
মেঘ দেখেও না দেখার ভান করে হাটতে থাকে ।
সৈকত তাড়াতাড়ি করে মেঘের পিছন পিছন হাটতে শুরু করে ।
মেঘ হাটতে হাটতে বিচে এসে দাড়ায় ।
—সরি মেঘ। আমার তখন কি যে হয়েছিল তা আমি নিজেও জানিনা ।ঐ ছেলেটা যখন তোমাকে ওভাবে ধরল তখন আমি নিজেকে আর কোন ভাবেই কনট্রোল করতে পারিনি।
বিশ্বাস করে আমি ইচ্ছা করে আমি তোমার গায়ে হাত দিতে চাইনি।
—আপনার যদি কথা শেষ হয়ে থাকে তাহলে এবার আসতে পারেন।
—আমি জানি মেঘ তুমি আমার উপর এখনো অনেক রেগে আছো । আর রাগ করে থাকাটাই স্বাভাবিক । সরি,এই কানে ধরছি দেখ–বলেই সৈকত মেঘের সামনে দাড়িয়ে কান ধরে ।
মেঘ খেয়াল করে আশেপাশের লোকদের সবার নজর তাদের দিকে ।
সবাই কেমন যেন কৌতূহলী দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে ।
মেঘ বুঝতে পারছেনা তারা সৈকত কে চিনেছে কিনা।
মেঘ তাড়াতাড়ি করে বলে দেখুন এরাকম পাবলিক প্লেসে আমি আপনার মতো কোন সিনক্রিয়েট করতে চাই না।
আপনার এই ছেলেমানুষি কার্যকলাপ বন্ধ করুন। তা না হলে আমি এখান থেকে চলে যাবো।
—আচ্ছা বন্ধ করবো তবে একটা শর্তে।
—শর্তে!!?
—হ্যা
—কি শর্ত বলুন?
—আমাকে এখান থেকে চলে যেতে বলবে না।
—সী বিচ টা তো আর আমার একার না যে এখান থেকে চলে যেতে বলবো । তবে একটা কথা সেটা হলো আপনি এখন আমার আশে পাশে থাকবেন না।
—এই না,না,কি বলছো তুমি!!?এই তো এই কথাটাই একটু আগে মিন করেছি ।
—দেখুন আমি আপনাকে বিচ ছেড়ে যেতে বলিনি। বলেছি আমার থেকে দূরে যেতে।
—ঐ একই কথা।
—না ,একই কথা না। তুমি বিচ দেখতে এসেছ বিচ দেখ। আর আমি তোমাকে দেখতে এসেছি সো আমাকে ডিস্টাব করো না।
—মানে!!?
—মানে কিছু না।
—আচ্ছা তাহলে এবার আমাকে একটু একা থাকতে দিন।
—ওকে তবে একটু না পুরোটাই দিলাম।
বলে সৈকত দাড়িয়ে যায় ।
আর মেঘ হাটতে হাটতে সামনের দিকে এগিয়ে যায় ।
কিছুক্ষন পর মেঘ খেয়াল করে ওর দিকে কিছু বাচ্চা ছেলে মেয়ে এগিয়ে আসছে ।
বাচ্চা গুলো এসে মেঘের সামনে সারি বেধে দাড়ায় ।
—মেঘ কিছুটা অবাক হয়ে বলে তোমরা কিছু বলবে ??
বাচ্চা গুলো হ্যা সূচক মাথা নাড়ায় ।
—কি বলবে বলো?
বাচ্চা গুলো একে একে তাদের পিছনে রাখা হাত গুলো সামনে এনে একটা একটা কাগজ মেলে ধরে।
s o o r y m e g h
মেঘ লেখা দেখে বুঝতে পারে এটা সৈকতের কাজ।
মেঘ মনে মনে হাসে আর ভাবে অনেক কষ্ট দিয়েছ আমাকে এর শোধ যদি আমি না তুলেছি তাহলে আমার নাম ও মেঘ চৌধুরী নয়।
(চলবে…..)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here