ব্যবধান ( অন্তিম পর্ব )

ব্যবধান ( অন্তিম পর্ব )
শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য্য

নার্সিংহোমে পৌঁছে রিসেপসনে সমস্ত কিছু ফরমালিটি শেষ করে, কৌস্তভ কেবিনে ঢুকে দেখে ততক্ষণে চিকিৎসা শুরু হয়ে গেছে রণর। তাকে ঘিরে ডাক্তার, নার্সদের এত তৎপরতা দেখে, ভয়ে মাকে আঁকড়ে মায়ের বুকে মুখ গুঁজে আছে, অসুস্থ ভীত শিশু। হাতে চ্যানেল করে স্যালাইন চলছে। একটি ছোট হাল্কা কাঠের তক্তা দিয়ে হাতের কব্জি শক্ত করে বাঁধা, যাতে রণ হাত নাড়িয়ে চ্যানেলটা খুলে ফেলতে না পারে। ছেলেটার করুণ অবস্থা, চোখে দেখা যায়না। বাবাকে দেখেই হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে সজল চোখে অসহায় শিশু এইসব যণ্ত্রণাদায়ক জিনিস খুলে দেওয়ার কাতর অনুরোধ জানাচ্ছে অনবরত। বেডের কাছে এসে মাথায়, পিঠে আস্তে আস্তে হাত বুলিয়ে যতটা পারা যায়, ওকে শান্ত করবার চেষ্টা করতে লাগল কৌস্তভ। কিন্তু এত যণ্ত্রণায় রণকে ভোলান সম্ভব হচ্ছেনা। শিখা যেন পাথরের মূর্তি। ছেলের অবস্থা দেখে ভয়ে, দুশ্চিন্তায় ফ্যাকাশে বিবর্ণ মুখে, বুকে আঁকড়ে ধরে রয়েছে রণকে।

একটু পরে দ্বিতীয় রাউন্ডে এসে ডাক্তারবাবু, অনেকক্ষণ ধরে পরীক্ষা করলেন অসুস্থ রণকে। এত দেরি করে রণকে নার্সিংহোমে আনার জন্য যথেষ্ট ভৎসর্ণা করলেন কৌস্তভ ও শিখা দুজনকেই। কেঁদে কেঁদে নিজের কষ্ট জাহির করে, শেষে নিরুপায় হয়ে একসময় ক্লান্ত রণ ঘুমিয়ে পড়ল মায়ের কোলে। বেডের পাশে চিন্তিতমুখে ঠায় বসে আছে কৌস্তভ। চিকিৎসকদের উপর ভরসা করা আর অপেক্ষা করা ছাড়া আর তো কিছুই করণীয় নেই এখন।

সন্ধ্যের পর ভিজিটিং আওয়ার শেষ হলে, উঠে পড়ল কৌস্তভ। বাচ্চার সাথে মা ছাড়া আর কারো থাকবার অনুমতি নেই। শিখার ভীত মুখের দিকে তাকিয়ে আশ্বস্ত করে বলল—-” ভয় পেয়োনা শিখা? আমার উপর একটু ভরসা রাখো। দেখবে আমাদের রণ ঠিক সুস্থ হয়ে উঠবে। সাহস রাখো মনে।“

রণকে কোলে নিয়ে কৌস্তভের চলে যাওয়ার পথের দিকে আকুল নয়নে চেয়ে রইল শিখা। কেন জানিনা আজ কৌস্তভকে ছাড়তে কিছুতেই মন চাইছেনা। এতদিন মনে যে সাহস ছিল, এখন তা যেন নিমেষে উধাও। এমনই হয় হয়তো। ভরসাযোগ্য মানুষ পাশে এসে দাঁড়ালে হয়তো নিজের প্রতি ভরসাটাই হারিয়ে যায়। খুব ইচ্ছে করে সেই মানুষটার প্রতিই সম্পূর্ণ রূপে নির্ভরশীল হয়ে পড়তে। তাই আজ ওর মন শুধু খড়কুটোর মত সেই মানুষটাকেই আঁকড়ে ধরে শান্ত হতে চাইছে। এই বিপদে সর্বান্তঃকরণে তাকেই চাইছে পাশে পেতে।

সকাল হতে না হতেই, সুলেখাদেবীকে নিয়ে কৌস্তভ এসে পড়েছে। অসম্ভব দুশ্চিন্তায়, টেনশনে কোনমতে পার করেছে রাতটুকু। কৌস্তভকে দেখে শিখাও এখন কিছুটা আশ্বস্ত। রাত জেগে ক্লান্ত শিখাকে একটি বিশ্রাম দেওয়ার জন্য, রণকে পরম স্নেহে কোলে নিয়ে বসলেন সুলেখাদেবী। শিখার সাথে দুয়েকটা কথা বলেই, বেডের পাশে রাখা প্রেসক্রিপশন মিলিয়ে, রণর ওষুধ কিনে আনতে বেরিয়ে গেল কৌস্তভ। দুজন কাছের মানুষকে পাশে পেয়ে, সারারাতের দুশ্চিন্তা কাটিয়ে, এখন কিছুটা স্বস্তি পেল শিখা।

দুটোদিন হয়ে গেল, রণ নার্সিংহোমে অ্যাডমিট। তবে শারীরিক অবস্থা এখন অনেকটাই স্থিতিশীল। চিকিৎসকদের সুদক্ষ তত্বাবধানে রণর পায়খানা আর বমির বেগও কমে এসেছে। জ্বরের উত্তাপ অনেকটাই কম। ছেলের মুখে আগের সেই হাসি ফিরে এসেছে আবার। ছেলের এই আরোগ্য লাভের জন্য মনে মনে কৌস্তভের প্রতি আজ সত্যিই কৃতজ্ঞ শিখা। ওর সঠিক সময়, সঠিক সিদ্ধান্তেই এত দ্রুত সুস্থ হতে পেরেছে রণ।

এতদিন ধরে নার্সিংহোমের কেবিনটায় বন্দী থেকে, বাইরে বেরোনোর জন্য এখন ছটফট করে রণ। বিকেলবেলা তাই ছেলেকে কোলে নিয়ে নার্সিংহোম সংলগ্ন লনটায় একটু হাঁটতে বেরিয়েছে শিখা। মায়ের কোলের নিশ্চিন্ত আশ্রয়ে ঘুরতে ঘুরতে মনের আনন্দে মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে অনেক কথাই বলে চলেছে সে। শেষে আনন্দের আতিশয্যে একসময় ক্লান্ত হয়ে, ঘুমিয়ে পড়ল মায়ের কোলে। লনের বেশ কোনার দিকের একটা বেঞ্চে, ঘুমন্ত ছেলেকে কোলে নিয়ে সন্তর্পনে বসল শিখা। ক্লান্তি তো তারও কিছু কম নয়। আনমনে কতক্ষণ বসে রয়েছে খেয়াল নেই, সম্বিৎ ফিরলো কৌস্তভের ডাকে।
——–” এখানে বসে আছ শিখা? আর তোমায় আমি সারা নার্সিংহোম খুঁজে বেড়ালাম। ঘুমিয়ে পড়েছে রণ?“
প্রত্যুত্তরে সামান্য হেসে, চুপ করেই রইল দীপশিখা। একটু ইতস্তত করে, কৌস্তভই আবার কথা বলল—–“সেদিনের ব্যবহারের জন্য আমি দুঃখিত শিখা। ছেলের অবস্থা দেখে, মাথার ঠিক ছিলোনা। অন্যায় হয়ে গেছে।“

———-‘এসব তুমি কী বলছো কৌস্তভ? এখন এই কথার কোন প্রয়োজনই নেই। এই আলোচনা আমার একদম ভালো লাগছেনা।“——-বলে শিখা ওঠবার উদ্যোগ করলে, তৎক্ষণাৎ হাতটা চেপে ধরল কৌস্তভ।
——-” হাতটা ছাড়ো কৌস্তভ। সবাই দেখছে।“
——–” দেখুক। আমার কিছু যায় আসেনা। পরস্ত্রীর হাত ধরিনি, ধরেছি নিজেরই স্ত্রীর হাত। এতে লজ্জা কীসের? তোমার কাছে আমি পরপুরুষ হতে পারি। কিন্তু আমার চোখে তুমি এখনও আমার স্ত্রী।“
———“কৌস্তভ আমার আর ভালো লাগছেনা। আমি বড় ক্লান্ত। এইসব কথা ——”
শিখার কথা শেষ হলোনা, তার আগেই কৌস্তভ বলে উঠল——” ক্লান্ত আমিও শিখা। মানসিকভভাবে আমিও আজ বিধ্বস্ত। আমার মনোবল যে একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। আমিও আর পারছিনা। জানিনা, নিজেকে সংযত না রাখতে পেরে, কোনদিন হয়তো চরম কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলবো। কেন আমায় এভাবে কষ্ট দিচ্ছো শিখা? কেন আমায় আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছো ক্রমশ? তুমি তো এত নিষ্ঠুর নও? আমি বাঁচতে চাই শিখা। নিজের স্ত্রী-পুত্র নিয়ে সুখে জীবনটা কাটাতে চাই। ফিরে এসো। এভাবে নিঃস্ব করে দিওনা আমায়। কেন জানিনা, বেঁচে থাকার চেয়ে, মৃত্যুকেই এখন বড় বেশি আপন লাগে আমার।“

কৌস্তভের এই মর্মস্পর্শী আবেদন নিমেষেই ধূলিস্যাৎ হয়ে গেল, শিখার ছোট্ট একটা উপেক্ষার হাসিতে। কোন উত্তর না দিয়ে কৌস্তভের হাত ছাড়িয়ে, উদাসীনভাবে রণকে নিয়ে ধীর পায়ে চলে গেল শিখা। বেঞ্চের উপর হতাশ হয়ে বসেই রইলো কৌস্তভ। বুঝতেই পারছে শিখা ওর জীবনে ফিরবেনা আর। নিজের সন্তানকে কাছে পাওয়ার আশা আর পূরণ হবেনা কোনদিনও। নিঃসঙ্গ একা এতবড় জীবনটা, কাটবে কী করে? কীসের মায়ায়, কীসের টানে বেঁচে থাকবে সে? নিজের জীবনটাই নিজের কাছে এক মস্ত বড় উপহাস হয়েই রয়ে যাবে।

রাতে রণকে ঘুম পাড়িয়ে শিখার আর ঘুম আসছেনা চোখে। অনেক চিন্তা মনের মধ্যে আনাগোনা করছে। অদ্ভুত দোটানায় পড়ে গেছে শিখা। একদিন যে মানুষটা একবারও না ভেবে শিখাকে নিজের জীবন থেকে সরিয়ে দিল। আজ সেই মানুষটাই কাতর হয়ে পড়েছে নিজের স্ত্রী, পুত্রকে ফিরে পাওয়ার জন্য। কিন্তু সেই মানুষটার কাতর আহ্বানে পুনরায় সারা দেওয়া কী এতই সহজ? যে বিশ্বাস একবার ভেঙ্গে যায়, তা আবার কী ফিরে আসে? তবে বিশ্বাস ফিরে না আসলেও, কৌস্তভের প্রতি শিখার ভালোবাসাটা এখনও যে রয়ে গেছে ঠিক আগের মতই। তা কী করে অস্বীকার করবে শিখা? শত আঘাতেও, সেই স্বার্থপর মানুষটাকেই আজও ভালোবাসে সে। নির্লজ্জ মন যে আজও তার কাছেই ফিরে যেতে চায়। নিজের এই দুর্বল মন নিয়ে আর কতদিন পারবে, কৌস্তভের ভালোবাসার টান উপেক্ষা করতে? আর রণও তো এখন তার বাবাকে বেশ চিনেছে, ভালোবাসে। বাবা আর ছেলের ভালোবাসার মাঝখানে ব্যবধান হয়ে কী ছেলের প্রতি কোন অন্যায় করছে শিখা? এই ভাঙ্গা সংসারে রণ কী পারবে সুস্থ হয়ে বেড়ে ওঠবার সুযোগ? অনেক অনেক প্রশ্ন আছড়ে পড়ছে মনে। কিন্তু কোথায় পাবে এর সঠিক উত্তর? কে দেবে, সঠিক পথের সন্ধান?

কেটে গেল আরও তিনটে দিন। আজ নার্সিংহোম থেকে রণর ছুটি। এখন সম্পূর্ণ সুস্থ রণ। ঠিক সময় কৌস্তভও চলে এসেছে, ওদের নিয়ে যেতে। ঘুমন্ত রণকে তৈরি করে, সাথে আনা প্রয়োজনীয় টুকিটাকি জিনিস গুছিয়ে, নার্সিংহোম থেকে বেরিয়ে এল শিখা। গেটের কাছে গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কৌস্তভ। গাড়ির পেছনের সিটে ঘুমন্ত ছেলেকে সযত্নে শুইয়ে, সামনের সিটে কৌস্তভের পাশে এসে বসল শিখা।

পাশাপাশি সিটে বসে আছে দুজন। কিন্তু কারো মুখেই কোন কথা নেই। কৌস্তভের মুখ চোখ অসম্ভব থমথমে। গম্ভীর হয়ে একমনে গাড়ি চালাচ্ছে। শিখার ভাড়া বাড়ির সামনে এসে, গাড়িটা দাঁড় করালো কৌস্তভ। কিন্তু নামবার কোন লক্ষণ নেই শিখার।
শিখার আচরণে বিস্মিত হয়ে, নীরব জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে চেয়ে রইল কৌস্তভ। কৌস্তভের মনের ভাব অনুমান করে শিখা বলল———” এখানে নয় কৌস্তভ। আজ আমি নিজের বাড়ি ফিরে যেতে চাই। আমায় ফিরিয়ে নিয়ে চল তুমি।“
হঠাৎ শিখার এই পরিবর্তনে, বিস্ময়ের ঘোর কিছুতেই কাটছেনা কৌস্তভের। নিজের কানকেও যেন বিশ্বাস করতে পারছেনা।——” মানে? আমি ঠিক বুঝলাম না।“
———–“মানেটা অতি সহজ কৌস্তভ। আজ থেকে রণ তার মাকে নিয়ে, তার বাবার কাছেই থাকবে। আজ রণ যাবে, তার নিজের বাড়ি।“
——–” তুমি সত্যি বলছো শিখা? আমি ভুল শুনছি নাতো?”
অশ্রুসিক্ত আনত চোখদুটো তুলে, এবার সরাসরি চাইলো শিখা।
মৃদু হেসে বলল—-” তুমি ঠিকই শুনছো কৌস্তভ। আজ আমি তোমার হাত ধরে বাড়ি ফিরে যেতে চাই। অনেক কষ্ট দিয়েছি তোমায়। কিন্তু আর নয়। বিশ্বাস কর, তোমায় যত কষ্ট দিয়েছি, ততোধিক কষ্ট পেয়েছি আমি নিজে। বিশ্বাস ভাঙ্গার যণ্ত্রণা যে কী, তা তুমি বুঝবে না কৌস্তভ। তাই কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছিল না যে তুমি আমার আর রণর জীবনে আবার ফিরে আসতে পারো। নিজের বন্ধুবান্ধব ছেড়ে আমাদেরও যে তোমার কোন প্রয়োজন আছে, আমরাও যে তোমার জীবনে কিছু মূল্য রাখি, এ আমার ধারণার অতীত। তাই ভয় পেতাম, তোমার ভালোবাসায় বিশ্বাস করে আবার যদি আঘাত পাই, আবার যদি ভোগ করতে হয় একাকীত্বের যণ্ত্রণা। আবার নতুন করে সেই যণ্ত্রণা সইবার ক্ষমতা আমার নেই কৌস্তভ। তাই আঘাত দিয়ে শক্ত হাতে তোমায় দূরে সরাবার চেষ্টা করেছিলাম এতদিন। বোঝাতে চেয়েছিলাম কতখানি ঘৃণা করি তোমায়। কিন্তু নিজের সাথে আর প্রতারণা করতে পারছিনা আমি। নিষ্ঠুর সত্যি এটাই যে আমি আজও তোমাকেই ভালোবাসি। সে যতই আঘাত তুমি দাওনা কেন। লুকোচুরির এই খেলা এবার বন্ধ হোক। আজ আমি সম্পূর্ণ রূপে তোমার কাছে নিজেকে সমর্পন করছি কৌস্তভ। নিজের ভালোবাসার কাছে আমি পরাজিত। শুধু একটাই অনুরোধ, ভালোবাসার এই সম্পর্কটাকে তার প্রাপ্য সম্মান থেকে কখনও বঞ্চিত করোনা তুমি। বুকের মধ্যে আগলে রেখো সারাজীবন।“

মাথা নিচু করে বসে আছে কৌস্তভ। শিখার বলা কথাগুলো যে আজ নিজেও অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করে। দুচোখের জলে ধারা ক্রমাগত ভিজিয়ে দিচ্ছে ওর গাল, চিবুক, গন্ডদেশ। বেশ কিছুক্ষণ পর শিখার দিকে চোখ তুলে তাকাল কৌস্তভ। সেই আবেগপূর্ণ চাওনিতে ছিল, শিখার অনুরোধ সারাজীবন রক্ষা করবার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি। সেই চাওনি ছিল ভরসার। সেই চোখের ভাষায় ছিলোনা এতটুকুও মিথ্যা।

আনন্দের এই মুহূর্তে, দুই নারী-পুরুষের হৃদয়ের চরম উন্মাদনা যেন ক্রমশ সংযম হারাচ্ছে। শিখাকে কাছে পাওয়ার জন্য, শিখার স্পর্শে নিজের উথাল পাথাল হৃদস্পন্দনকে শান্ত করবার জন্য, উন্মুখ হয়ে উঠছে কৌস্তভ। আজ শিখার চোখে সে দেখেছে, লজ্জা মেশান প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়। আবেগতাড়িত হয়ে সজোরে নিজের বুকের মধ্যে ঘনিষ্ঠভাবে টেনে নিল শিখাকে। বহুদিন পর নিজের কম্পিত ঠোঁটের উষ্ণ স্পর্শ রাখলো শিখার নরম ঠোঁট যুগলে। নিজের এতদিনের সঞ্চিত ভালোবাসা, আবেগ, আকাঙ্খা, তৃষ্ণা, বাসনা পাগলের মত উজাড় করে দিতে লাগল শিখার ওষ্ঠধারে। দুচোখ বন্ধ করে পরম শান্তিতে সেই মধুর ভালোবাসার আস্বাদ গ্রহণ করতে লাগল শিখা। এই ভালোবাসার জন্য তার হৃদয়ও তো ছিল একইভাবে আকুল। এই ভালোবাসার ছোঁয়ায়, মনের ভেতরে জমে থাকা সব মান-অভিমান, যন্ত্রণাগুলো দুচোখের অশ্রুকণা রূপে একে একে নির্গত হয়ে, বহুদিন বাদে ভারমুক্ত করলো ওর ভারাক্রান্ত হৃদয়কে। ভালোবাসার মানুষের এই উষ্ণ স্পর্শেই, খুঁজে পেল মনের ভেতর কুন্ডলীকৃত সকল প্রশ্নের অজানা উত্তর। ক্ষমা করে দেওয়ার মধ্যেও যে কত সুখ আছে, তা আজ প্রথম উপলব্ধি করলো শিখা। পরম নিশ্চিন্তে তাই দুই বাহু প্রসারিত করে, নিবিড় আলিঙ্গনে আরও আরও কাছে টেনে নিল কৌস্তভকে।
—————–সমাপ্ত———–

https://www.facebook.com/107986137690507/posts/300749381747514/
নবম পর্বের লিঙ্ক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here