আজ সকাল থেকে এলাকায় একটি ভয়ংকর আলোচনা ঘুরে বেড়াচ্ছে। রেলওয়ে স্টেশন থেকে দুটো ক্ষতবিক্ষত হওয়া লাশ পাওয়া গিয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে কোন এক ভয়ংকর প্রাণীর কাজ। উমায়ের ছোটোবেলা থেকে এসব বিষয় খুব ভয় পায়। ভার্সিটি যাওয়ার পথে এমন ঘটনা শুনে সে ঠাই দাঁড়িয়ে আছে। ভয়ে তার পা নড়ছে না। যেহেতু সবাই বলাবলি করছে এটা প্রাণীর কাজ তার মানে এলাকায় ভয়ংকর প্রাণী ঢুকে পড়েছে। যদি উমায়েরকে ধরে ফেলে? হঠাৎ উমায়ের কাঁধে কারো হাতের ছোঁয়া পেয়ে চমকে উঠলো। সাথে সাথে ঘুরে দাঁড়াল। ভয়ে তার কলিজার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। সামনে থাকা ব্যক্তিটাকে দেখে নিশ্চিন্তের নিশ্বাস ফেলে বলল-
“তুই? নাম ধরেও ডাকতে পারতি। আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।”
রুম্মান উমায়ের এর কথা শুনে এক ভ্রু উঁচু করে মুখ বাকালো। উমায়ের ডান বাম দেখে আবার রুম্মানের দিকে তাকাল।
“চল তারাতাড়ি ভার্সিটি যাই।”
“তোর কি হয়েছে বল তো।”
“এলাকায় ভয়ংকর প্রাণীর আভাস পাওয়া গিয়েছে, কথা শুনিস নি?”
“হ্যাঁ শুনেছি, তো?”
রুম্মানকে দেখে মনে হচ্ছে তার জন্য বিষয়টা খুব স্বাভাবিক। উমায়ের বিরক্ত হলো। রুম্মান নামক মেয়েটা সবসময় এত স্বাভাবিক কিভাবে থাকে সে বুঝে উঠতে পারে না। রুম্মান হাতের কব্জি উল্টে ঘড়ির সময় দেখে বলল-
“১০ মিনিটের মধ্যে ক্লাস শুরু হবে এখন হাঁটা ধর।”
উমায়ের মাথা নাড়াল। দুজন ভার্সিটি পৌঁছে তারাতাড়ি ক্লাসরুমে গেল। ঘন্টা বেজে গিয়েছে কিছুক্ষণের মধ্যে স্যার আসবে। উমায়ের আর রুম্মান গিয়ে বেঞ্চে বসলো। কাঁধ থেকে ব্যাগ রাখতে রাখতে রুম্মান উমায়েরকে বলল-
“আজ তোর মজনুকে দেখলাম না। আসে নি?”
রুম্মানের প্রশ্নটা উমায়েরকে রাগানোর জন্য যথেষ্ট ছিল। উমায়ের রাগী দৃষ্টি নিয়ে তাকাল রুম্মানের দিকে। রুম্মান ঢোক গিলে চুপচাপ বসে রইলো। উমায়ের চুপচাপ স্বভাবের মেয়ে। রাগ তাকে বশে আনতে পারে না। কিন্তু তার জীবনে এমন কেও আছে যার নাম উল্লেখ করলে উমায়ের রেগে আগুন হয়ে যায়। তখনই ক্লাসে স্যার আসলো। সবাই দাঁড়িয়ে স্যারকে সালাম দিয়ে বসে পড়লো। উমায়ের রুম্মানের দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় বলল-
“তার সম্পর্কে কোন কথা আমি শুনতে চাই না।”
“আমার মনে হয় ছেলেটা তোকে ভালোবাসে।”
“যখন সে আমার সম্পর্কে জানবে তার ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালাবে।”
উমায়ের কথাটা শেষ করেই সামনের দিকে তাকাল। রুম্মান কিছু বলতে চেয়েও বলল না। সে চুপসে গেল।
অন্যদিকে……
খালিদ খান জানালার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আজ উনি বেশ খুশী। উনার জীবনের দুজন শত্রু চিরকালের জন্য দুনিয়া ছেড়ে চলে গেল। পেছন থেকে রাশিদ খান ফোনালাপ শেষ করে হাসিমুখে বলল-
“ভাইজান, আপনার রাস্তা একদম ক্লিয়ার। এইবারের চেয়ারম্যানের পজিশন একমাত্র আপনার।”
ছোটো ভাইয়ের মুখে এমন কথা শুনে নতুন ফুলের মতো হাসি ফুটে উঠলো খালিদ খানের চেহারায়। পেছনে ফিরে বলল-
“সে কোথায়?”
“হয় তো ঘুমাচ্ছে। রাতে মার্ডার করে এসেছে। আমি বলেছিলাম যতক্ষণ মন চায় রেস্ট নিতে।”
“যাক, ভালো করেছো। ছেলেটা বিশ্রাম নিক।”
খালিদ খান এসে সোফায় বসলেন। মনটা আজ বেশ ভালো তাই ভাবছে তার সবচেয়ে প্রিয় মানুষটাকে উপহার দিবে। কি নিখুঁত ভাবে খুন করতে পারে ছেলেটা। লাশ দেখে সবাই ভাবছে ভয়ংকর প্রাণীর কাজ। হঠাৎ দরজা ঠকঠক করার শব্দ আসলো। রাশিদ খান বলল ভেতরে আসতে। দরজা ঠেলে একজন মাঝবয়েসীর ছেলে ভেতরে প্রবেশ করলো। খালিদ খান হাসিমুখে দাঁড়িয়ে ছেলেটার দিকে এগিয়ে গেল। ছেলেটার কাঁধে হাত রেখে বলল-
“তুই কেন আমার নিজের ছেলে হলি না বল তো? তুই না থাকলে আজ আমি কি করতাম ভেবে পাচ্ছি না।”
ছেলেটা হাসিমুখে বলল-
“বস, আমি না থাকলে উপর ওয়ালা আপনার জন্য ঠিক কোন না কোন ব্যবস্থা করে দিতেন।”
“তা ঠিক, কিন্তু আমি বেশ খুশী তুই আমার জীবনে আছিস।”
ছেলেটা হাসলো, রাশিদ খান অভিমানী স্বরে বলল-
“বুরাক শাহরিয়ার শাহ, তুই আসার পর থেকে আমার ভাইজান আমাকে ভুলেই গিয়েছে।”
বুরাক আর খালিদ খান হো হো করে হেসে উঠলো। খালিদ খান বুরাককে ছেড়ে রাশিদের দিকে এগিয়ে গেল। হাসিমুখ নিয়ে বলল-
“তুই শুধু আমার ছোটো ভাই না। আমার ছেলে। কিন্তু বুরাককে আমি তোর থেকেও বেশী বিশ্বাস করি।”
রাশিদ খান চোখ বুরাকের দিকে দিয়ে বলল-
“সারাজীবন তোমার বিশ্বাসের মর্যাদা দিতে পারলেই হলো।”
বুরাক প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে বাঁকা হাসি দিলো।
ছুটির ঘন্টা বাজতেই উমায়ের ও রুম্মান ক্লাস থেকে বের হলো। দুজনেরই মেজাজ বিগড়ে আছে। কারণ ক্লাস টিচার বলেছে তাদের টেস্ট এক্সাম নিবে। এক্সাম নামক জিনিসটা তারা ভীষণ অপছন্দ করে। হাটতে হাটতে রুম্মান বিরক্ত হয়ে বলল-
“এক্সাম যদি মানুষ হতো আমি সর্বপ্রথম তাকে খুন করে ফেলতাম।”
“তোর আগে আমি খুন করতাম। আচ্ছা এক্সাম নেয়া কি খুব প্রয়োজন?”
“এইটা আমারও প্রশ্ন।”
রুম্মান সামনের দিকে তাকালো। পার্কিং প্লেসে চোখ বুলিয়ে বলল-
“আজ তোকে নিতে আসে নি?”
“না”
“কেন?”
“আমি আব্বুকে বলেছি আমাকে নিতে আসতে না।”
“এখনো রেগে আছিস আংকেলের উপর।”
উমায়ের জবাব দিলো না। চুপচাপ মাথা নিচু করে হাটছে। রুম্মান ভাবলো এটা উমায়ের এর ব্যক্তিগত বিষয়। তাই এত প্রশ্ন না করাই উত্তম। দুজনই চুপচপ ফুটপাতে হাটছে। বেশ কিছুক্ষণ পর হঠাৎ ফুল স্পিডে ২ টি গাড়ি এগিয়ে আসতে লাগলো সামনে থেকে। রাস্তার অনেকেই ভয়ে এদিক সেদিক চলে গেল। গাড়ি দু’টো এসে উমায়ের ও রুম্মানের বরাবর থামলো। উমায়ের গাড়ি দেখে একট ঢোক গিলল। গাড়ির দরজা খুলে একজন ভদ্রলোক বের হলেন। বয়স ৫০ এর কাছাকাছি হবে। উমায়ের মানুষটাকে দেখে বিরক্ত চেহারা বানিয়ে নিচের দিকে তাকাল। মানুষটা তাদের সামনে এসে দাঁড়াতেই রুম্মান হাসিমুখে বলল-
“আসসালামু আলাইকুম আংকেল, কেমন আছেন আপনি?”
“ওয়ালাইকুম আসসালাম, আমি ভালো আছি। তুমি কেমন আছো রুম্মান?”
“জি আংকেল ভালো।”
ফিরোজ আনোয়ান সাহেব মুচকি হাসলেন। উমায়ের বিনতে ফিরোজের বাবা ফিরোজ আনোয়ার। পেশায় একজন শিক্ষক ছিলেন। বর্তমানে এলাকার চেয়ারম্যান সিলেকশনে নাম লিখেছেন। উনাকে এলাকার অনেকেই বেশ সম্মান করেন। এলাকার মানুষদের অনুরোধে উনি চেয়ারম্যান সিলেকশনে নাম লিখেছেন। বাবা উমায়ের এর দিকে তাকিয়ে বললেন-
“আজ আমার মেয়ে আমার সাথে দেখা না করে চলে এসেছে তাও হেটে। বিষয়টা আমার মোটেও ভালো লাগেনি।”
উমায়ের মাথা তুলে বাবার দিকে তাকাল। তার মোটেও ইচ্ছে করছে না এখন বাবার সাথে কথা বলতে। রুম্মান বুঝতে পারলো এখন বাবা মেয়েকে একা ছেড়ে দেয়া দরকার। রুম্মান হাসিমুখে বলল-
“আংকেল, আমি আসি। আপনি উমায়েরকে নিয়ে বাসায় যান।”
“গাড়িতে বসো আমরা তোমাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে চলে যাব।”
“লাগবে না আংকেল ধন্যবাদ। আমার বাসা তো একদম কাছে। ৫ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাব। আর আমি গাড়িতে বসতে পারি না ২ মিনিটের মধ্যে অস্থিরতা শুরু হয়ে যায়।”
“ঠিক আছে, তাহলে সাবধানে যেও আর পৌঁছে উমায়েরকে কল দিয়ে বা মেসেজ করে বলে দিও।”
“জি আংকেল নিশ্চয়ই, আসি তাহলে আল্লাহ হাফেজ।”
“আল্লাহ হাফেজ।”
রুম্মান বিদায় নিয়ে হাঁটা ধরলো। বাবা উমায়ের এর দিকে তাকিয়ে দেখে মেয়ে মাথা নিচু করে রেখেছে। উনি ঘাড় ঘুরিয়ে ড্রাইভারকে ইশারায় বললেন গাড়ির দরজা খুলতে। ড্রাইভার মাথা নাড়িয়ে দরজা খুলে পাশে দাঁড়াল। বাবা আবার উমায়ের এর দিকে ফিরে নিচু স্বরে বললেন-
“মামনি, আর কতক্ষণ রেগে থাকবে আব্বুর উপর? এখন তো মাফ করে দাও।”
উমায়ের এখনো জবাব দিলো না। বাবা হাসিমুখে বললেন-
“আচ্ছা এখন রাগ সাইডে রেখে গাড়িতে উঠে বসো। আমরা আইসক্রিম খেতে যাব।”
উমায়ের মাথা তুলে বাবার গাড়ির পেছনে থাকা গাড়ির দিকে এক নজর দেখে বাবার দিকে তাকিয়ে বলল-
“আইসক্রিম খেতে গেতে হলে বডিগার্ডের প্রয়োজন হয়?”
“সমস্যা নেই, আমি ওদের বলছি চলে যেতে। আমরা শুধু একটা গাড়ি নিয়েই যাব।”
“আব্বু, আমাকে মানানোর জন্য নিজের প্রাণের রিস্ক নিতে হবে না তোমার। চলো আমরা বাসায় যাব এখন।”
“আচ্ছা, কিন্তু আমরা আইসক্রিম কিনে নিব। তারপর বাসায় গিয়ে ডোরেমন দেখতে দেখতে খাব ঠিক আছে?”
উমায়ের মুচকি হেসে মাথা নাড়াল। বাবা মেয়ে গিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো। রাস্তার মাঝে একবার গাড়ি থামিয়ে বাবা দোকান থেকে আইসক্রিম কিনে নিলেন। উমায়ের যতবার বাবার বডিগার্ডদের দেখে ততবার ভয়ে চুপসে যায়। তাদের কাছে রিভলবার থাকে এর জন্য না। বাবার প্রাণের উপর এর আগে হামলা হয়েছিল এই কারণে। যবে থেকে ইলেকশন শুরু হয়েছে তার পরিবারের উপর অনেকবার বিপদ আসতে আসতে বেঁচেছে৷ এইতো কিছুদিন আগের ঘটনা। রাতেরবেলা সবাই খাওয়া দাওয়া করছিলো তখনই উমায়েরদের বাসার কলিংবেল বেজে উঠে। উমায়ের এর মা দরজা খুলে দেখে একটা বক্স রাখা ছিলো দরজার পাশে। বক্সটা খোলার পর সেখানে তাদের পরিবারের ছবি ছিলো যেখানে সবার চেহারায় ক্রস চিহ্ন দেয়া ছিলো। সেদিন রাতের বেলা কারো চোখে ঘুম ছিলো না। বাবার কথায় উমায়ের এর ধ্যান ভাঙলো।
“মামনি, চকোলেট ফ্লেভারের আইসক্রিম কিনেছি তোমার জন্য। আর এই নাও জুসটা পান করতে থাকো তোমার পিপাসা পেয়েছে হয়তো।”
উমায়ের মুচকি হাসলো। তার সত্যি পিপাসা পেয়েছে খুব। বাবা কি করে বুঝলো সে জানে না। বাবার হাত থেকে জুসের বোতল নিলো। বাবা ড্রাইভারকে বলল গাড়ি স্টার্ট করতে।
রাশিদ খান কিছুদিন আগে তার জন্মদিনে বড়ো ভাইকে বলেছিলো তার নতুন রিভলবার লাগবে। আজ রিভলবার সেলার এসেছে। বুরাক সোফায় বসে চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছে আর টেবিলে সাজিয়ে রাখা রিভলবারগুলোর উপর চোখ বুলাচ্ছে। রাশিদ খান এক এক করে রিভলবার চেক করছে কিন্তু তার একটাও পছন্দ হচ্ছে না। খালিদ খান হেসে ছোটো ভাইকে বলল-
“যেহেতু পছন্দ হচ্ছে না আজ থাক। উনি পরে নাহয় আরো কালেকশন নিয়ে আসবে নি।”
“না ভাইজান, আমার আজই লাগবে রিভলবার।”
বুরাক চায়ের কাপ টেবিলের উপর রেখে বলল-
“রিভলবার চুজ করতে এত সময় লাগছে মানুষ খুন করতে কতক্ষণ সময় লাগবে শুনি।”
চোখ বাঁকা করে রাশিদ বুরাকের দিকে তাকাল। তার মাঝে মধ্যে ইচ্ছে করে বুরাককে মাটির নিচে পুঁতে ফেলতে। কিন্তু তার বড়ো ভাই বুরাক ছাড়া আর কিছু বুঝে না। অন্যের মত বিশ্বাস করে। খালিদ খান হেসে বলল-
“ও শুধু খেলার জন্য রিভলবার কিনছে। মার্ডার তার পক্ষে সম্ভব না হয়তো।”
রিভলবার বিক্রেতা, বুরাক, খালিদ খান তিনজনই শব্দ করে হাসছে। রাশিদ খান চুপচাপ সব হজম করে নিলো। তার পক্ষে সম্ভব হলে একদিন বুরাককে দিয়েই খুন করা শুরু করবে। বুরাক আড়চোখ রাশিদ খানের দিকে তাকাল। সে ভালো মতো জানে রাশিদ তাকে একদমই সহ্য করতে পারে না। কিন্তু মাঝে মধ্যে ভালো মতো কথা বলে। তার একটা বিষয়েই রাগ হয়। তার আপন ভাই তার থেকে বেশী বুরাককে বিশ্বাস করে। হঠাৎ খালিদ খানের এক চ্যালা দ্রুত হেটে এসে বলল-
“বস একটা ব্যাড নিউজ আছে।”
খালিদ খান ভ্রু কুঁচকালো। ধীরে ধীরে দাঁড়িয়ে বলল-
“কি ব্যাড নিউজ?”
“বৃদ্ধা আশ্রমের সবাই বলেছে তারা আপনার বিরোধীকে ভোট দিবে।”
“আমার বিরোধী? কিন্তু ওরা তো গতকালই…”
“না বস তারা, আরো একজন আছে যে এখনো বেঁচে আছে।”
“কে সে?”
“ফিরোজ আনোয়ার।”
খালিদ খান হাতমুঠো শক্ত করে ফেলল। সে তো অনেকবার ফিরোজ আনোয়ারের উপর হামলা করিয়েছি। তবুও ফিরোজ আনোয়ার নিজের নাম ইলেকশন থেকে তুলে নেয় নি। খালিদ খান সোফায় বসে রইলো। রাগে তার মাখা ফেটে যাচ্ছে। আরো বিরোধী যারা আছে তাদের কখনে এলাকাবাসী ভোট দিবে না খালিদ খান জানে। কিন্তু ফিরোজ আনোয়ার? উনি সবচেয়ে শক্তিশালি বিরোধী। হঠাৎ খালিদ খান কাঁধে কারোর হাতের ছোঁয়া পেল। মাথা তুলে দেখে বুরাক দাঁড়িয়ে আছে। খালিদ খান লম্বা নিশ্বাস ফেলে বলল-
“সে নাম তুলে না নিলে আমি জিততে পারবো না বুরাক।”
“আমি আপনার সাথে থাকতে আপনার কিসের চিন্তা? চেয়ারম্যানের পজিশন শুধুমাত্র আপনার।”
“কিন্তু কিভাবে কি? আর মাত্র ৩ দিন পর ভোট।”
“ফিরোজ আনোয়ারের পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের ছবি আমি চাই।”
এই কথাটা বলে বুরাক হাঁটা ধরলো। দরজা দিয়ে বের হতে নিবে তখনই খালিদ খান জিজ্ঞেস করলো-
“কেন? কী করবে তুমি?”
বুরাক থেমে গেল। ঘাড় ঘুরিয়ে খালিদ খানের দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসি দিলো। বুরাকের সেই রহস্যময় হাসি দেখে খালি খানের মুখে হাসি ফুটে উঠলো। সে ভালো মতো জানে বুরাক নিশ্চয়ই কিছু ভেবেছে। বুরাক ঘুরে হেটে চলে গেল। রিভলবার বিক্রেতা খালিদ খানকে বলল-
“খুব ভালোবাসে ছেলেটা আপনাকে।”
“হ্যাঁ, ও আছে বলে আমি নিশ্চিন্তে থাকতে পারি। আমার জন্য যে কিছু করতে পারবে ও।”
“সে কি ভাবছে এখন?”
“আর কি, আমাকে টেনশন দেয়ার মানুষদের সাথে সে যা করে ফিরোজ আনোয়ার ও তার পরিবারের সাথেও তাই করবে।”
চলবে……
#ভরসার_দুহাত
#শোভা_আক্তার(লাভলী)
#পর্ব_১
[আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? লম্বা ব্রেকের পর নতুন গল্প নিয়ে হাজির হলাম। প্রতিবারের মতো প্রথম পর্ব তাই ছোটো করে দিলাম। বুরাক আর উমায়ের এর গল্প চাচ্ছিলেন অনেকেই। নিয়ে আসলাম তাদের। প্রথম পর্ব কেমন লেগেছে জানাতে ভুলবেন না। আর ভুল ত্রুটি ধরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ রইল❤️❤️]