ভালোবাসার চেয়েও বেশি💞পর্ব-১৯

0
7120

#ভালোবাসার_চেয়েও_বেশি 💞💞
#লেখিকা- Mehruma Nurr
#পর্ব-১৯

★ নূর ওখান থেকে আসতেই সানা ওর সামনে দুহাত ছড়িয়ে ওকে আটকে দিল। নূর একটু ঘাবড়ে গেল। সানা নূরের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে থেকে নূরের চারিদিকে গোল গোল ঘুরতে লাগলো। যেন নূর বড়ো কোনো অপরাধী আর সানা কোনো পুলিশ। নূর বেচারিতো ভয়ে শেষ। মনে মনে ভাবছে মেয়েটা কে?আমাকে এভাবে দেখছে কেন ?আর আমার কাছে কি চায়?নূরের ভাবনার মাঝেই সানা নিজের হাতের পাঁচ আঙুলগুলো নূরের মুখের সামনে নিয়ে নাড়িয়ে নাড়িয়ে, সিআইডি সিরিয়ালের এসিপি প্রদ্যিয়ুমানের মতো করে বললো।
….”কুছ তো গরবর হে দয়া”।

নূর কনফিউজ হয়ে চেয়ে রইল সানার দিকে। সানার কথা ও কিছুই বোঝেনি। সানা আবার মাথাটা উপর নিচে হালকা ঝাকিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বললো।
….হুউউম।তাহলে তুমিই সেই মেয়ে, যে আমার ভোলাভালা ভাইটাকে দিনেদুপুরে সবার সামনে চুমু দিয়ে তার ইজ্জত হরণ করেছিলে।

নূরের তো এবার কেঁদে দেয়ার মতো অবস্থা। মনে হচ্ছে এখান থেকে একছুটে পালাতে পারলে বাঁচে। কি দরকার ছিল এখানে আসার?এখানে এসেই ফেঁসে গেলাম।এখন কি করবো?

নূরের এমন ভীতু ফেস দেখে সানার প্রচুর হাসি পাচ্ছে। মনে মনে ভাবছে মেয়েটা সত্যিই খুব সহজ সরল। নাহলে কেউ নিজের থেকে ছোট কোনো মেয়েকে এভাবে কেউ ভয় পায়।সানা আবারও বললো।
….কি হলো বলো?

এতক্ষণে আদিত্য চলে আসে। নূর আর সানাকে এভাবে দেখে ওর বুঝতে বাকি থাকে না যে, সানা নূরের সাথে দুষ্টামি করছে।আদিত্য মুচকি হেসে ওদের কাছে এগিয়ে যায়। সানার কাঁধে হাত দিয়ে একপাশ থেকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলো।
…..বাচ্ কর এখন পিচ্চি। নাহলে কিন্তু ও এখনি কেদে ফেলবে দেখিস।

সানা আদিত্যের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বললো।
…সত্যিই???

আদিত্য মাথা ঝাকিয়ে হ্যা বুঝালো। সানা আবার নূরের দিকে তাকালো। তারপর হঠাৎ অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো।

নূর বেচারি এদের কান্ড দেখে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল। এখানে কি হচ্ছে ও কিছুই বুঝতে পারছে না। বেকুবের মতো শুধু ওদের দিকে তাকিয়ে রইলো।

সানা হাসতে হাসতে নূরের কাছে এসে ওর গাল দুটো টেনে দিয়ে বললো।
…অঁওওওওও,,,ইউ আর সোওও সুইট। জাস্ট লাইক স্টবেরি আইসক্রিম। আরে আমিতো শুধু মজা করছিলাম। আর তুমি সত্যি সত্যিই ভয় পেয়ে গেছ?

আদিত্য এগিয়ে এসে নূরকে বললো।
….নূর ও আমার ছোট বোন সানা।ওর কথায় কিছু মনে করোনা। ও একটু দু্ষ্টু স্বভাবের। কিন্তু মনের দিক থেকে অনেক ভালো।

আদিত্যের কথায় এতোক্ষণে নূরের জানে পানি আসলো। নিজেকে একটু স্বাভাবিক করে মুচকি হেসে বললো।
….না না কিছু মনে করিনি। ইটস ওকে।
তারপর সানার দিকে তাকিয়ে বললো।
…আর হ্যা তুমিও খুব সুইট।

সানা হেসে দিয়ে নূরকে জড়িয়ে ধরে বললো।
…থ্যাংক ইউ আপু। তোমার সাথে পরিচয় হয়ে অনেক ভালো লাগলো।

নূর প্রথমে একটু অবাক হলেও পরে সেও মুচকি হেসে সানাকে জড়িয়ে ধরে। আদিত্য কান্ড দেখে মুচকি হাসছে।
এতক্ষণে আবির তাসির আর তানিও চলে আসে ওদের কাছে । আবির সানাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো।
….কিরে তোদের ভারত মিলন শেষ হলো?

আবিরের কথা শুনে সানা নূরকে ছেড়ে দিয়ে আবিরের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকায়। সানার তাকানো দেখে আবির মিথ্যে ভয় পাওয়ার ভান ধরে বলে।
….এভাবে তাকাস ক্যান?আমি ভয় পাইনা বুঝি?আমার মতো মাছুম বাচ্চাটা যদি তোর মতো ডাইনির ভয়ে মরে যায়। তাহলে আমার হবু বউটাতো বিয়ের আগেই বিধবা হয়ে যাবে তাইনা?

আবিরের কথায় সবাই হেসে দেয়।
সানার হাসি দেখে তাসিরের বুকের ভেতর আবারও সেই ধুকধুক শুরু হয়ে যায়। যেটা এখন নতুন না তাসিরের কাছে। সেই ছোটবেলা থেকেই এই পিচ্চি মেয়েটাকে দেখলেই ওর হার্টবিট বেড়ে যায়।মনের মাঝে অনূভুতিরা এসে ঘিরে ধরে। তাসির হাজার চেষ্টা করেও এই অনুভূতি থেকে মুক্তি পায়নি।এতো বছর বিদেশে থেকেও মনের ভেতর থেকে মেয়েটাকে দূর করতে পারেনি। বরং সময়ের সাথে অনুভূতি গুলো আরো গাঢ় হয়ে উঠেছে। কিন্তু তাসির কখনো কারো সামনে সানার প্রতি ওর অনুভূতি গুলো প্রকাশ হতে দেয় নি। কারণ এমনিতেই মেয়েটা ছোট, তারপর আবার প্রিয় বন্ধুর বোন।আদিত্য জানতে পারলে যদি তাসির কে ভুল বোঝে। এসব ভেবেই তাসির নিজের অনূভুতি গুলো নিজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছে।
হঠাৎ আদিত্যের কথায় তাসিরের ভাবনায় ছেদ পরে। আদিত্য নূরকে বললো।
…চলো তোমাকে বাবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই।

নূর মাথা ঝাকিয়ে আদিত্যের সাথে গেল। আদিত্যর বাবা চেয়ারে বসে ওখানকার বৃদ্ধ লোকদের সাথে কথা বলছিল। আদিত্য নূরকে ওর বাবার কাছে নিয়ে যেয়ে বললো।
….বাবা,ও নূর।
আবার নূরের দিকে তাকিয়ে বললো।
…আর নূর উনি আমার বাবা।

নূর আদিত্যের বাবাকে নম্র স্বরে সালাম দিয়ে বললো।
…আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল। কেমন আছেন?

আদিত্যের বাবা মুখে একরাশ হাসি নিয়ে বললো।
…ওয়ালাইকুম আসসালাম।আমি ভালো আছি। তুমি কেমন আছো?

…..জ্বি ভালো।

ওদের মাঝে আরো কিছু টুকটাক কথা হলো। আদিত্যের বাবা নূরের সাথে কথা বলে অনেক খুশি হলেন। মেয়েটা সত্যিই অনেক ভালো।

আদিত্য নূরকে নিয়ে ওখানে থাকা বৃদ্ধদের কাছে গেল। নূর সবার সাথে খুব সহজেই মিশে গেল। সবার সাথে হাসিখুশি ভাবে কথা বললো নূর। আদিত্য শুধু মুগ্ধ হয়ে দেখছে ওকে।

একটু পরে আদিত্য আবার বললো।
… চলো তোমাকে বাচ্চাদের কাছে নিয়ে যাই।

নূরও উৎসাহ নিয়ে বললো।
…হ্যা হ্যা চলুন। আমিও বাচ্চাদের সাথে দেখা করতে চাই।

আদিত্য নূরের উৎসাহ দেখে জিজ্ঞেস করলো।
….কি ব্যাপার? বাচ্চাদের কথা শুনে এতো এক্সাইটেড হয়ে গেলে যে? বাচ্চা কাচ্চা খুব পছন্দ নাকি?

নূর মুচকি হেসে বললো।
…হ্যাঁ, আমার বাচ্চা কাচ্চা অনেক ভালো লাগে। ওদের সাথে সময় কাটাতে অনেক ভালো লাগে।

কথা বলতে বলতে ওরা মাঠের ভেতর চলে এলো। যেখানে বাচ্চারা খেলাধুলা করছে। ওঁরা দুজন ওখানে পৌঁছাতেই আদিত্য সবাইকে ডেকে বললো।
….বাচ্চারা তোমরা সবাই তোমাদের নতুন একটা আপুর সাথে পরিচিত হও। তারপর নূরকে দেখিয়ে বললো। ওর নাম হলো নূর।
সব বাচ্চারা একসাথে বলে উঠলো।
…হাই নূর আপু।

নূরও খুশি হয়ে সবার সাথে কথা বলা শুরু করলো। বাচ্চাদের নূরকে অনেক পছন্দ হলো।
ততক্ষণে বাকি সবাইও ওদের কাছে চলে এলো।
হঠাৎ বাচ্চারা বলে উঠলো ওরা কানামাছি খেলবে। নূর আর বাকি সবাইকেও ওদের সাথে খেলতে বললো। নূরও খুশি খুশি রাজি হয়ে গেলো। সানাও রাজি হয়ে বললো।
…হ্যা হ্যা চলো আমরা সবাই খেলবো। অনেক মজা হবে।

তানিও রাজি হয়ে গেলো। ব্যাঘাত ঘটালো ছেলেরা। তারা কেউই এসব বাচ্চামো খেলা খেলবে না।আবির তানির দিকে ঝুকে আস্তে করে বললো।
…..বাচ্চা পয়দা করার বয়সে কিনা বাচ্চাদের সাথে খেলবো?

তানি লজ্জা পেয়ে বলে উঠলো।
….ছিহ, অসভ্য। দেখো তুমি যদি না খেলো।তাহলে কিন্তু আর কখনো চুমু খেতে দিব না।মনে থাকে যেন। হুহ্।

আবির ভয় পেয়ে বললো।
….না না এটা কিন্তু ঠিক না।এই মাছুম বাচ্চার সাথে এতবড় অবিচার? জাতি কিন্তু সহ্য করবে না।

তানি সয়তানি হেসে বললো।
…তাহলে বলো খেলবে?

আবির গাল ফুলিয়ে বললো।
…হ্যাঁ হ্যাঁ। ঠিক আছে, ঠিক আছে। না খেলে কি আর উপায় আছে।

তাসির মানা করতেই সানা এসে ওর হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল। বেচারা আর কিছুই বলতে পারলো না। শুধু হা করে সানার দিকে তাকিয়ে রইলো।

আদিত্যকে কেউ কিছু বলার সাহস পেল না। তাই ওকে বাদ দিয়েই সবাই খেলা শুরু করে দিল। আদিত্য শুধু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নূরকে দেখতে লাগলো।

প্রথমেই নূরের চোখ বাঁধা হলো। চোখ বাঁধার পর সবাই নূরের চারিদিকে ঘুরতে লাগলো আর পিন্চ করতে লাগলো। নূর ঘুরে ঘুরে দুহাত বাড়িয়ে সবাইকে ধরার চেষ্টা করতে লাগলো। সবাই চারিদিক থেকে আওয়াজ দিচ্ছে। নূর বুঝতে পারছে না কোনদিকে যাবে? ও এলোমেলো হাঁটছে আর সবাইকে ধরার চেষ্টা করছে।

আদিত্যের ফোন আসায় ও একটু সরে গিয়ে অন্য দিকে ঘুরে কথা বলতে থাকে।

সানা সবাইকে চোখ দিয়ে ইশারা করে কিছু একটা বুঝায়। তারপর আদিত্য যেদিকে দাঁড়িয়ে আছে ওইদিকে যেয়ে সানা নূরকে ডাকতে ডাকতে বলে।
…..নূর আপু?আমি এখানে এদিকে আসো আমাকে ধরো।নূর আপু।

নূর সানার কন্ঠ অনুসরণ করে সেদিকেই এগিয়ে যায়। সানা ধীরে ধীরে আদিত্যের দিকে যেতে থাকে আর নূরকে ডাকতে থাকে। নূরও সেদিকে যেতে থাকে। নূর আদিত্যের কাছাকাছি আসতেই সানা মাঝখান থেকে সরে যায়। আর নূর যেয়ে আদিত্যকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। তারপর খুশি হয়ে বলে।
…..ইয়েএএএ। ধরে ফেলেছি, ধরে ফেলেছি।

আদিত্য ফোনে কথা বলছিল।হঠাৎ নূরের এভাবে জড়িয়ে ধরায় আদিত্য থ হয়ে যায়। এই প্রথম নূর ওকে এভাবে জড়িয়ে ধরেছে।নূরের স্পর্শে মুহূর্তেই যেন আদিত্যের সারা শরীরে কারেন্ট বয়ে গেলো। আদিত্যর মনের ভেতর ভালো লাগার ঢেউ খেলছে। ইচ্ছে করছে সময়টাকে এখানেই থামিয়ে দিতে।

বাচ্চারা সবাই জোরে জোরে হাতে তালি দিয়ে লাফাতে লাফাতে বলে উঠলো।
…..ইয়েএএএ,, আপু ভাইয়াকে ধরে ফেলেছে। ইয়েএএ,,

বাচ্চাদের কথা শুনে নূর ঝট করে আদিত্যকে ছেড়ে দিয়ে চোখের বাঁধন খুলে ফেলে। আদিত্য নূরের দিকে ঘুরে দাঁড়ায়।
নূর সামনে তাকিয়ে আদিত্যকে দেখে ৪৪০ ভোল্টেজের ঝটকা খায়।লজ্জায় নূরের ইচ্ছে করছে মাটির ভেতর ঢুকে যেতে। সবসময় ওর সাথেই কেন এমন হয়?
আদিত্য নূরের লজ্জা রাঙা মুখটা দেখে ঠোঁট কামড়ে হাসছে। আর
বাকি সবাই মুখ টিপে হাসছে।

আরো কিছুক্ষণ খেলা ধুলার পর সবাইকে খাবারের জন্য ডাক দিল।আদিত্যরা সবার জন্য খাবার আর উপহার এনেছে। সেগুলো ওদের সবাইকে দেওয়া হলো।

সবাই একসাথে খেতে বসলো।সবার জন্য বিরিয়ানি আনা হয়েছে। নূর বেশি ছোট বাচ্চগুলোকে নিজেই খাবার খাইয়ে দিচ্ছে। আদিত্য এসব রিচ ফুড খায় না। তাই ও বসে বসে শুধু নূরকে দেখছে। নূরের ব্যবহারে আদিত্যের বাবাও মনে মনে প্রসন্ন হলেন। যাক তার ছেলে হিরা খুঁজে বের করেছে।মেয়েটা সত্যিই খাঁটি সোনা।

হঠাৎ একটা বাচ্চা ছেলে আদিত্যের উদ্দেশ্যে বলে উঠলো।
….ভাইয়া তুমি খাচ্ছো না কেন? তোমকেও কি খাইয়ে দিতে হবে? তাহলে আপুকে বলো তোমাকেও খাইয়ে দিবে। তাইনা আপু?

বাচ্চাটার কথা শুনে নূরের চোখ কপালে উঠে গেলো। কি বলে এই ছেলে?
বাকি সবাই মুখ টিপে হাসছে। আদিত্যের বাবা ছোটদের মাঝে অস্বস্তিতে পরে গেলেন। তাই তিনি বাহানা দিয়ে ওখান থেকে চলে গেলেন।

সানা দুষ্টু হেসে বললো।
….হ্যা নূর আপু ও ঠিকইতো বলেছে। ভাইয়া কখনো হাত দিয়ে খাবার খায়না। সবসময় চামচ ছুরি দিয়ে খায়।এখন এখানে তো আর ওগুলো নেই। তাই বেচারাকে মনে হয় না খেয়েই থাকতে হবে।

এতক্ষণে আদিত্য বলে উঠলো।
…এমন কিছুই না।এসব খাবার আমার পছন্দ না তাই খাচ্ছি না।

আবিরও দুষ্টু হেসে বলে উঠলো।
….আরে ভাই লজ্জা করছিস কেন? আমরা জানি তোর ক্ষিদে লেগেছে সেই সকাল থেকে কিছু খাসনি। আর কতক্ষণ খালি পেটে ক্ষিদে নিয়ে বসে থাকবি? তারপর নূরের দিকে তাকিয়ে বললো।
…নূর তুমি কিছু মনে না করলে।ওঁকে একটু খাইয়ে দিবে প্লিজ?

আদিত্যের না খেয়ে থাকার কথা শুনে নূরের একটু মায়া হলো। নূর একটা প্লেট নিয়ে আদিত্যের কাছে গিয়ে বসলো। প্রচুর লজ্জা লাগছে নূরের। তারপরও মনে সাহস যুগিয়ে হাতে এক লোকমা
বিরিয়ানি তুলে আদিত্যের মুখের সামনে ধরলো।

আদিত্য অবাক হয়ে কতক্ষণ চেয়ে রইল নূরের দিকে। তারপর নূরের দিকে তাকিয়ে থেকেই হা করে খাবার টা মুখে নিল।

সানা ফোন বের করে ওদের এই মূহুর্তটা ক্যামেরা বন্দী করে নিল।
তাসির হা করে চেয়ে আছে ওদের দিকে। ওর বিশ্বাসই হচ্ছে না আদিত্য এসব খাবার খাচ্ছে। সানা নিজের হাত দিয়ে তাসিরের থুঁতনির নিচে হাত দিয়ে তাসিরের হা বন্ধ করে দিয়ে বললো।
…..এভাবে কি দেখছেন? এটাকে বলে ভালোবাসা। আর ভালোবাসা মানুষের সবকিছু বদলে দিতে পারে।

তাসির অবাক হয়ে তাকালো সানার দিকে। এতটুকু পিচ্চি মেয়ে আবার ভালোবাসা সম্বন্ধেও বোঝে? তাহলে কি পিচ্চিটা বড়ো হয়ে গেছ? তাসির একটু তাচ্ছিল্যের সুরে বললো।
….তোমার মতো পিচ্চি মেয়ে কি বোঝে ভালোবাসার?

কথাটা শুনে সানার একটু রাগ হলো।ও রাগী স্বরে বললো।
….পিচ্চি মানে? কে পিচ্চি? আমাকে আপনার কোন দিক দিয়ে পিচ্চি মনে হয়? আমি এখন কলেজে পড়ি বুঝেছেন? আমি মোটেও পিচ্চি না হুহ্।

সানার কথা শুনে তাসির মনে মনে হাসলো। তারপর বললো।
…জ্বি জ্বি মহারানী আপনি সবার বড়ো। এখন খুশি?

সানা ভাব নিয়ে বললো।
…হুম ঠিক আছে।মনে থাকে যেন কথাটা।

খাওয়া দাওয়া শেষে নূর আদিত্যকে বললো।
….আমাদের এখন যেতে হবে। নাহলে বাসায় যেতে দেরি হয়ে যাবে।

আদিত্য বললো।
….ঠিক আছে চলো আমি নামিয়ে দিয়ে আসছি।

….কিন্তু আপনিতো বললেন আজকে যাবেন না।

…আগে বলেছিলাম কিন্তু এখন যাবো। বেশি কথা না বলে চলো আমার সাথে।

নূর আর কিছু না বলে মাথা ঝাকিয়ে আদিত্যের সাথে গেল। বাইরে আসতেই তানি নূরকে বললো।
…নূর আমি আবিরের সাথে যাচ্ছি। তুই ভাইয়ার সাথে চলে যা।

নূর মাথা ঝাকালো তারপর সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেড়িয়ে গেলো।

আদিত্য গাড়ি চালাচ্ছে আর নূর পাশে বসে আছে। আদিত্য হঠাৎ বলে উঠলো।
…অনেক ধন্যবাদ তোমাকে নূর। আজকের দিনটা আমার পাশে থাকার জন্য। প্রতিবছর এই দিনটা অনেক ডিপ্রেশনে যায় আমার। তবে আজকে তোমার জন্য আমি অনকটা স্বাভাবিক হতে পেরেছি। থ্যাংক ইউ সো মাচ।

নূর মুচকি হেসে বললো।
….থ্যাংকস আমার আপনাকে বলা উচিৎ। আপনার জন্য আজকে এতো সুন্দর একটা দিন কাটালাম সবার সাথে। সত্যিই আজকের দিনটা অনেক স্পেশাল ছিল আমার জন্য। বিশেষ করে বাচ্চাদের সাথে সময় কাটিয়ে আমার অনেক ভালো লেগেছে।

কথা বলতে বলতে ওরা নূরের বাসার কাছে চলে আসে।
আদিত্য গাড়ি থামিয়ে বলে।
…ঠিক আছে তাহলে যাও।কাল সকালে আবার দেখা হবে ইনশাআল্লাহ।

নূর মাথা ঝাকিয়ে গাড়ি খুলে বায় বলে বের হয়ে যায়। আদিত্য নূরের যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকে। নূর চলে যেতেই আদিত্যও গাড়ি। স্টার্ট দিয়ে চলে যায়।

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here