ভালোবাসার চেয়েও বেশি💞পর্ব-৩

0
8329

#ভালোবাসার_চেয়েও_বেশি💞💞
#লেখিকা-Mehruma Nurr
#পর্ব-৩

★আদিত্য ভার্সিটির সামনে এসে, গাড়ি পার্ক করে ভিতরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়। হঠাৎ ওর ফোনটা বেজে ওঠে। আদিত্য ফোন বের করে চেয়ে দেখে আবিরের কল।
আদিত্য ফোনটা কানে নিয়ে কথা বলতে বলতে গেটের দিকে এগিয়ে যায়। ফোনে কথা বলতে ব্যাস্ত থাকায় ও সামনে তেমন খেয়াল করেনা।গেটের সামনে যেয়ে দেখে ওর সামনে একজন মহিলা।
আদিত্য অন্য দিকে তাকিয়ে ফোনে কথা বলায় ব্যাস্ত।

হঠাৎ সামনের মহিলাটিকে পিছন থেকে কে যেন ডাক দেয়। আর মহিলাটি ওখান থেকে চলে যায়।আর আদিত্য সামনে এগিয়ে যায়।
আদিত্য এখনো অন্য দিকে তাকিয়ে ফোনে কথা বলছে।

হঠাৎ ওর হাতে থাকা ফাইলটা নিচে পরে যায়। আদিত্য ফাইলটা তোলার জন্য মাথা একটু নিচে ঝুকাতেই।
আচমকা ওর গালে কেউ চুমু দিয়ে দেয়।😚💋

আচমকা এমন হওয়ায়,আদিত্য থ হয়ে যায়। কয়েক সেকেন্ড ওভাবেই মাথা ঝুকে দাঁড়িয়ে থাকে।বোঝার চেষ্টা করে ওর সাথে আসলে কি হয়েছে।

তারপর যখন বুঝতে পারে কেউ ওকে চুমু দিয়েছে। তখন মাথা নিচু অবস্থাতেই দেখলো সামনে একটা মেয়ে। মুখটা এখনো দেখেনি আদিত্য। শুধু জামা কাপর দেখেই বুঝলো যে সামনে একটা মেয়ে।আর এটা বুঝতে পেরেই আদিত্যর রাগ উঠে গেলো। যেখানে কোনো মেয়ে ওর হাত ধরার সাহস পায়না, সেখানে এই মেয়ের এত সাহস যে সোজা চুমু দিয়ে দিলো।ভাবতেই আদিত্যর চোয়াল শক্ত হয়ে এলো।এসব গায়ে পরা মেয়ে ওর একদম পছন্দ না।এই মেয়েকে তো আজ সে চরম শিক্ষা দিবে। এসব ভেবেই আদিত্য প্রচন্ড রাগ আর বিরক্তিভরা মুখ নিয়ে উপরের দিকে তাকালো মেয়েটিকে দেখার জন্য।

কিন্তু যেই সামনে তাকালো,দেখলো মেয়েটি ভয়ে চোখ মুখ খিচে দাঁড়িয়ে আছে। মুহূর্তেই যেন পৃথিবীটা থমকে গেল আদিত্যর। আশেপাশের সবকিছু ঘোলাটে হয়ে গেলো।মস্তিষ্ক যেন শুন্য হয়ে গেল।মুখের ভাবভঙ্গি পাল্টে গেলো। রাগ আর বিরক্তির যায়গায় চলে এলো একরাশ বিস্ময় আর মুগ্ধতা।বুকের বাম পাশে এই প্রথম কিছু একটার উপস্থিতি টের পেলো।যেটা খুব তিব্রো গতিতে শব্দ করছে। যেনো এখনি বুক ফেটে বেড়িয়ে আসবে।
আদিত্য ভাবছে, কারো ভিতু চেহারাও যে এতো সুন্দর হতে পারে ওর যানা ছিলোনা। এতো নিস্পাপ কারোর চেহারা কিভাবে হতে পারে। যেনো সদ্য ফোটা কোনো ফুল। রাজ্যের যত মায়া যেনো এই মুখটাতে ঢেলে দিয়েছে। আদিত্যর যেন চোখের পলকই পরছে না।মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছে না। ভাষা হারিয়ে ফেলেছে সে

একটু পরে ধীরে ধীরে মেয়েটা তার চোখ খুলে তাকালো। আর তাতেই যেন আদিত্যর সর্বনাশ ডেকে আনলো। কাজল কালো ডাগর ডাগর ওই দুটি চোখ যখন বড়ো বড়ো হয়ে গেলো। আদিত্য যেন ওই দুটি চোখের গভীরতায় তলিয়ে গেল। যেখান থেকে বেরোবার কোনো কুলকিণারা নেই।

…এদিকে নূর তো ভয়ে এখন অজ্ঞান হবার অবস্থা। ও একটা ছেলেকে চুমু দিয়েছে, ভাবতেই ওর হাত পা অবশ হয়ে আসছে । নূর আর কিছু না ভেবে ওখান থেকে দৌড়ে চলে যায়।

নূরের পিছে পিছে তানিও দৌড় দেয়।

নূর চলে যেতেই আদিত্যর হুঁশ আসে। মাথাটা একটু ঝাকিয়ে নিজেকে ঠিক করে।
সে ভাবছে কি হয়ে গিয়েছিল আমার? আমি কিনা একটা মেয়ের দিকে এভাবে তাকিয়ে ছিলাম! এক মিনিট মেয়েটা তো আমাকে চুমু দিয়েছিল। আমিতো কিছু বলতেই পারলাম না।
চুমুর কথা ভাবতেই আদিত্যর এক হাত আপনাআপনি ওর গালে চলে যায়। যেখানে নূর চুমু দিয়েছিল।

এদিকে এতক্ষণ ভার্সিটির সবাই হা করে এদের কান্ড দেখছিলো।সবাই অবাকের চরম পর্যায়ে।
আদিত্যকে শুধু ভার্সিটির মানুষ না। বাংলাদেশের প্রায় সবাই কমবেশি চেনে। এই প্রথম তারা আদিত্যের সাথে এমন কিছু হতে দেখছে।আর মেয়েগুলো সব রাগে ফুঁসছে। যেখানে তারা কখনো আদিত্যর সাথে কথা বলারি সুযোগ পায়না। সেখানে এই মেয়ে কিনা বাংলাদেশের ক্রাশ আইকনকে সোজা চুমু দিয়ে বসলো।

যে গ্রুপ এতক্ষণ রেগিং করছিলো। তাদের এখন ভয়ে হালুয়া টাইট।কারণ আদিত্যর রাগ আর ক্ষমতা সম্পর্কে সবারি থারনা আছে।আদিত্য এইসব রেগিং করা একদম পছন্দ করে না।যারাই করে তাদের অবস্থা খারাপ করে দেয়।
তাই সবগুলা ওখান থেকে পালনোর জন্য দৌড় দিতেই একটার ওপর আরেকটা হুমরি খেয়ে পরে। তারপর কোনরকমে আবার উঠে যে যার মতো ভো দৌড় দেয়।
———————————

নূর ক্লাসের এক কোনায় জড়োসড়ো হয়ে বসে আছ।বুকটা এখনো ভয়ে কাঁপছে ওর। যেন কাওকে এইমাত্র খুন করে এসেছে। আর পুলিশ ওকে ধরতে আসবে।
ওখান থেকে দৌড়ে আসার পর। নূর কোনরকমে একজনের কাছ থেকে ক্লাসটা চিনে ক্লাসের ভিতর এসে বসে পরে।

এতক্ষণে তানিও চলে আসে। নূরের পাশে বসে হাঁপাতে থাকে। তারপর বলে,
….এই তুই কোথায় চলে গিয়েছিলি এত তারাতাড়ি।”জেইন কসম” খুজতে খুজতে আমার জান শেষ।

নূর তানির দিকে করুণ ভাবে তাকিয়ে কাঁদো গলায় বললো।
….এখন কি হবে তানি?দেখলিতো যে ভয়টা পাচ্ছিলাম সেটায় হলো।এখন ওই ছেলেটা রাগ করে যদি আমার সাথে কিছু করে তখন ??
….আরে ইয়ার রিলাক্স। কি এমন হবে কিছুই হবে না। আরে তোর তো খুশি হওয়া উচিত। যেটা করার জন্য বাংলাদেশের প্রতিটা মেয়ে স্বপ্ন দেখে। সেই কাজটা তুই এতো সহজেই করে ফেললি।বাংলাদেশের ক্রাশ আইকন “দা” সাদমান শাহরিয়ার আদিত্যকে চুমু খেয়ে বসলি। ইশশ, তোর জায়গায় যদি আমি হতাম।কি মজা হতো।

নূর তানির দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললো।
…এই কি বলছিস তুই এসব।এমনিতেই আমি টেনশনে মরছি। আর তুই আছিস তোর ফ্যান্টাসি নিয়ে। আমি কি ইচ্ছে করে ওনাকে চুমু দিয়েছি নাকি। আমতো ওই মহিলাটাকে দিচ্ছিলাম। যানিনা ওই লোকটা কোথা থেকে চলে আসলো।

…ওকে ওকে রিলাক্স। এতো টেনশন নিসনা। চুমুই তো দিয়েছিস। গুলি তো আর করিস নি। যে তোকে একদম ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিবে। আমি ওনার সম্পর্কে যতটুকু জানি। উনি খুব রাগী তবে,মেয়েদের কখনো অসম্মান করেন না।

নূরের ভয় যা একটু কমেছিল, রাগী কথাটা শুনে ভয়টা আবার বেড়ে গেলো।
তানি বুঝতে পেরে নূরের কাঁধে হাত দিয়ে বললো।
…আরে আমি আছিতো কিছু হবে না। তুই এখন একটু শান্ত হ।

নূর মাথা নাড়িয়ে সায় দিল।তবে সে এখনো ভিতরে ভিতরে ভয়ে মরছে।

——-_—————–_-_—-

♬ ””একখান চুম্মা দে,কারেন্ট লাগাইলি।

দুইখান চুম্মা দে,ভোল্টেজ বাড়াইলি।

তিনখান চুম্মা দে আমায়, হাই হুয়া টেম্পেরেচার।

হায় হায় চাড়গেয়া পেয়ার কা বুখার….…….

আদিত্য তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আবিরের দিকে তাকাতেই, আবিরের গান গাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো।
ওরা তিনজন এখন ক্যান্টিনে বসে আছে।
আবির আর তাসির ক্যান্টিন থেকেই আদিত্যর চুমু খাওয়া দেখেছে।
তারপর আদিত্য ওদের কাছে এসে বসতেই আবির গান গাওয়া শুরু করে দেয়।

আদিত্যর এভাবে তাকানো দেখে, আবির বলে উঠলো।
….কি ভাই এমনে তাকাই আছোস কেন?মাছুম বাচ্চাটারে মারার ইচ্ছা আছে নাকি। আমরা তোর সেই ল্যাঙ্গটা কালের ভাই বন্ধু। তোর এই ২৬ বছরের জীবনে এই প্রথম কোনো মেয়ে তোকে চুমু খেলো।এখন আমরা এটা নিয়ে কি একটু মজাও নিতে পারবো না?ভাই দিস ইস নট ফেয়ার।

আদিত্য ভ্রু কুচকে বললো।
…. হইছে? তোর ড্রামা শেষ?আর তোর ভাষায় এত অধপতন হয়েছে কবে থেকে? ওয়াট ইজ ল্যাঙ্গটা?

আবির বাঁকা হেঁসে বললো।
….ড্রামা তো তুই দেখালি ভাই।একদম সুপার ডুপার হিট। ওয়াহ..কি ড্রামা,কি সিন লা জবাব। আগে জানলে মোবাইলে ভিডিও কর নিতাম। নেটে ছাড়লে সব রেকর্ড ভেঙে ফেলতো।কি বলিস তাসির?

তাসির এতক্ষণ আদিত্যর মনের ভাবভঙ্গি বোঝার চেষ্টা করছে।ও ভালো করেই যানে আদিত্য এসব ব্যাপারে খুব রাগ করে থাকে। তবে আজকে ওর ভাবভঙ্গি অন্যরকম লাগছে তাসিরের কাছে।তখনও মেয়েটাকে কিছু না বলে ওভাবে তাকিয়ে থাকাটা ওর চোখ এড়ায় নি।তবে কি আদিত্য প্রেমে পড়ে গেলো।

আবিরের ডাকে ভাবনা থেকে বেড়িয়ে আসে তাসির।তারপর আদিত্যর উদ্দেশ্যে বলে,
…হ্যা ঠিকই তো বলেছে আবির।আমরা তোকে সেই ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি। মাছি যেমন গুড়ের ওপর ভিন ভিন করে। মেয়েরাও তোর কাছে সবসময় ভিন ভিন করে, একটু কথা বলার জন্য, ফ্রেন্ডশিপ করার জন্য, বয়ফ্রেন্ড বানানোর জন্য, এমনকি তোর বেড পার্টনার হওয়ার জন্যেও রেডি হয়ে থাকে। অথচ তুই কোনো মেয়েকে তোর আশেপাশেই ঘেষতে দিসনা।তো তোর এতবছরের বাচিয়ে রাখা ইজ্জতের ওপর কেউ এভাবে হাত মেরে গেলো। আর এটা নিয়ে আমরা কথা বলবো না তাকি হয়।হা হা হা।

আবিরও হাসতে হাসতে বলে উঠলো।
….হুম তাসির ঠিকই বলেছে।আমার তো মাঝে মাঝে সন্দেহ হয় তোর ওপর।

আদিত্য এক ভ্রু উঠিয়ে বললো।
…মানে?

আবির বললো,
…মানে তুই আবার গে নাতো। না মানে আমরা তো লন্ডনে ছিলাম। ওখানে তো আবার এগুলো চলে।

আদিত্য উচ্চস্বরে বলে উঠলো।
…ওয়াট?আর ইউ ম্যাড? কি বলছিস এসব?নিজের পুরুষত্ব দেখানোর মানে এই নয় যে সবসময় মেয়েদের সাথে ইন্টিমেট হতে হবে।

আবির আর তাসির উচ্চস্বরে হেসে উঠলো।
…রিল্যাক্স ইয়ার উই আর জাস্ট কিডিং।

এদের কথাবার্তায় আদিত্যর প্রচুর বিরক্ত লাগছে।ভাবছে এসব ওই মেয়েটার জন্য হয়েছে। ওই মেয়টাকে তো শিক্ষা দিতেই হবে।

আদিত্য তাসিরকে ডেকে বললো।
…মেয়েটা কোন ইয়ারে?
…দেখেতো ফাস্ট ইয়ার মনে হলো।আগে কখনো দেখিনি।
…..হুম চল।
…কোথায়?
…ফাস্ট ইয়ারের ক্লাসে।

তাসির আর আবির দুজনেই অবাক তাকালো আদিত্যের। আবির বাঁকা হেসে বললো।
…কেন ভাই আরো চুমু খাইতে মন চাইছে??হাহা হা..

এবার কিন্তু বেশি করে ফেলছিস। মেয়েটার আগে তোদের দুজনকেই মনে হয় শায়েস্তা করতে হবে।

আবির একটু ভয় পেয়ে মেকি হেসে বললো।
…না না ভাই তার কোনো দরকার নেই। আমার কি জানের ভয় নেই। এখনো বিয়ে শাদি করলাম না।বাচ্চা কাচ্চার বাপ হলাম না।আমার ভাই বাসর করার আগে মরার ইচ্ছে নাই।তার চেয়ে বরং চল ওই মেয়েটাকেই শায়েস্তা করে আসি।এতো বড়ো সাহস আমার মাসুম ইনোসেন্ট ভাইকে এভাবে দিন দুপুরে চুমু খায়। হে হে..

আদিত্য বিরক্ত হয়ে আবিরের মাথায় একটা চাটি মেরে দিলো।

তারপর ওরা তিনজন বেড়িয়ে গেলো নূরের ক্লাসের উদ্দেশ্যে।

————————+————–
নূরের ক্লাসের সবাই নূরের দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে। যেন নূর কোনো অপরাধী।আর মেয়েগুলো তো পারলে খেয়ে ফেলে এমন অবস্থা। নূরের কাছে খুব খরাপ লাগছে সবার এভাবে তাকানোয়।আজ ওর সাথে সব কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছে না।কি ভেবে ছিলো আর কি হচ্ছে ভেবেই ওর কান্না পাচ্ছে।

নূরের ভাবনার মাঝেই হঠাৎ দেখলো ক্লাসের সবাই দাঁড়িয়ে পরেছে।নূর ভাবলো হয়তো প্রফেসার এসেছে। তাই ওরা দুজনোও দাঁড়িয়ে গেলো।

নূর সামনে তাকাতেই ভয়ে থরথর করে কাপা শুরু করে দিলো।এতক্ষণ যে ভয়টা পাচ্ছিলো সেটায় হতে চলেছে। এখন কি হবে। কি করবে এরা আমার সাথে। যদি পড়ালেখা বন্ধ করে দেয় তাহলে আমি কি করবো। এসব ভেবেই নূরের হাত পা অবশ হয়ে আসছে। তানির হাত শক্ত করে ধরে ওর পিছনে মুখ লুাকালো।ওরা দুজন বসে পড়লো নিচে। যাতে ওদের দেখা না যায়।

আদিত্যরা এদিক ওদিক তাকিয়ে মেয়েটাকে খুজতে লাগলো। ক্লাসের সব মেয়েরাতো পাগল হওয়ার উপক্রম।হা করে তাকিয়ে আছে আদিত্যর দিকে।ওদের বিশ্বাসই হচ্ছে না যে আদিত্য সয়ং ওদের সামনে।

আদিত্যর চোখ দুটো শুধু ওই মেয়েটাকেই খুঁজছে। আদিত্য দুই সারির মাঝ দিয়ে হেটে পিছনের দিকে যাচ্ছে খুজতে খুজতে।

একদম পিছনে যেতেই দেখতে পায় মেয়েটাকে। আরেকটি মেয়ের পিছে মাথা লুকিয়ে আছে।

আদিত্য বাঁকা হেসে মাথা দোলায়। এরপর সবাইকে ইশারা করে বেরিয়ে জাওয়ার জন্য।
বেচারি মেয়েগুলো মুখটা বাংলার পাঁচের মতো করে এক এক করে বেড়িয়ে যায়। একসময় পুরো ক্লাস খালি হয়ে যায়।

নূর এখনো তানির পিছনে লুকিয়ে আছে। ক্লাসে যে কেও নেই ও এখনো যানেই না।
আদিত্য তানিকেও চোখ দিয়ে ইশারা করলো চলে যাওয়ার জন্য।
তানি কি করবে বুঝতে পারছে না।নূরকে এভাবে একা রেখে যেতে পারবে না।আবার না গেলেও সমস্যা। আদিত্য যে এখানে নূরের সাথে কথা বলতে এসেছে তা ও ভালোই বুঝতে পারছে।
আদিত্য গলা খাঁকারি দিয়ে তানিকে বললো।
…কি হলো তোমাকে যেতে বললাম না?দাঁড়িয়ে আছো কেন?

আদিত্যর কথা শুনে নূর বুঝে গেলো যে আদিত্য ওর সামনেই দাঁড়িয়ে আছে। নূরের ভয়ে দম বন্ধ হয়ে আসছে। তানির হাত টা আরো শক্ত করে ধরে ওভাবেই তানির পিছনে লুকিয়ে রইলো। সামনে তাকানোর সাহস নেই ওর।

তানি একটু সাহস নিয়ে বললো।
…ভাইয়া আপনি প্লিজ রাগ করবেন না। আসলে ওর কোনো দোষ নেই। কিছু সিনিয়র ভাইয়ারা ওকে ওই কাজটা করতে বলেছিলো তাই….

আদিত্য হাত উঠিয়ে তানির কথা শেষ হওয়ায় আগেই ওকে থামিয়ে দিয়ে বললো।
….আমি কি তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করেছি।বেশি কথা বলা আমি পছন্দ করি না। তোমাকে যেতে বলেছি তুমি যাও।ডোন্ট ওয়ারি আমি বাঘ ভাল্লুক না যে তোমার বান্ধবীকে খেয়ে ফেললো। আমি শুধু কথা বলবো। তুমি বাইরে ওয়েট করো।

আদিত্যর গম্ভীর কণ্ঠে এমন কথা শুনে তানি আর কিছু বলার সাহস পায়না।
তানি নূরের কানে আস্তে করে বলে।
…. দেখ নূর উনি শুধু কথা বলবে। তুই ভয় পাস না।আমি বাইরেই দাঁড়িয়ে আছি কেমন?

নূর তানির পিছে মাথা ঝাকিয়ে না বুঝালো। মানে সে একা থাকবে না এখানে।

তানি পড়লো মহা মুসিবতে।কি করবে বুঝতে পারছে না।আদিত্যর ব্যাপারে ও যতটুকু যানে তাতে ওর মনে হয় না নূরের সাথে কোনো খারাপ কিছু করবে।কিন্তু এটা নূরকে কিভাবে বুঝাবে।

তানি আর কোনো উপায় না পেয়ে জোর করে নূরের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়।
নূর করুন চোখে তানির দিকে তাকিয়ে থাকে। তানির খুব খরাপ লাগে।
তানি নূরের হাত ধরে বলে। চিন্তা করিস না আমি দরজার কাছেই আছি। তারপর এক প্রকার জোর করে নূরকে রেখে চলে আসে।

নূরও তানির পিছে পিছে চলে যেতে নেয়। তখন আদিত্য ওর সামনে এসে দাড়ায়।
নূর বুঝে যায়। এখান থেকে ও বের হতে পারবে না। তাই মাথা নিচু করা অবস্থাতেই লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে কোনরকমে নিজেকে ঠিক করে ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকে।

নূর ভাবে কপালে যা আছে তাই হবে। আর কিছু করার নেই।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here