ভালোবাসার চেয়েও বেশি 💞পর্ব-৪১

0
8203

#ভালোবাসার_চেয়েও_বেশি💞💞
#লেখিকা-Mehruma Nurr
#পর্ব-৪১


♬ আজকের এই নিশি, ভালোবাসি, ভালোবাসি
নিকষ মেঘে তোমার ওই চোখ
দেখেছি আজ এই আমি

মৃদু বাতাস বলে, ছিলে সেই তুমি
তোমারই মোহে হারাই আমি
নিজেকে যে খুঁজি ফিরি
তোমার প্রেমের সুখ সারি

আজকের এই নিশি,ভালোবাসি,ভালোবাসি
নিকষ মেঘে তোমার ওই চোখ
দেখেছি আজ এই আমি

যখন দাঁড়াও এসে,ভুলে যাই সবই
হৃদয়ের সব কথা,বলে দেই আমি
তোমারই যে চিরদিনই
রবো আমি তোমারই

হোওও আজকের এই নিশি ভালোবাসি ভালোবাসি
নিকষ মেঘে তোমার ওই চোখ
দেখেছি আজ এই আমি ♬ ♬

(#হৃদয় খান। গানটা লেখিকার অনেক প্রিয়)

আদিত্য এতক্ষণ নূরের মুখের ওপর ঝুঁকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে হাত দিয়ে নূরের গালে স্লাইড করে মুচকি হেসে গানটা গাইলো।

আদিত্যের এতো ভালোবাসায় আবেগে আবারও নূরের চোখ ভরে উঠলো। চোখের কোন দিয়ে অশ্রু গরিয়ে পরলো। আদিত্য ভ্রু কুঁচকে উদ্বিগ্ন হয়ে বললো।
…..হেই প্রাণপাখিটা কাঁদছ কেন? কি হয়েছে? শরীর খারাপ করছে?

নূর মাথা নাড়িয়ে করুন সুরে বললো।
…..আমার খুব ভয় করছে। আমার মতো অপয়ার কপালে এতো সুখ সয়বে তো?

আদিত্য চোয়াল শক্ত করে দাঁতে দাঁত চেপে বললো।
……দিলেতো মুডটা নষ্ট করে? এই ফালতু ওয়ার্ড টা শুনলেই আমার মাথা নষ্ট হয়ে যায়। আর কখনো আমার সামনে এই ডিসকাস্টিং ওয়ার্ড টা উচ্চারণ করবে না।
কথাটা বলেই আদিত্য নূরের ওপর থেকে সরে এসে রাগ করে চিৎ হয়ে রইলো।

নূর বুঝতে পারছে আদিত্য রাগ করেছে। তাই নূর এগিয়ে এসে আদিত্যের বুকের ওপর শুয়ে পরলো। দুই হাতে আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে বললো।
….সরিইই,,ভুল হয়ে গেছে। আর কখনো বলবোনা ওটা।সত্যিই বলছি। আপনি রাগ করেননা প্লিজ?

আদিত্য গম্ভীর কণ্ঠে বললো।
….কি বললে?

নূর বুঝতে পারলো ও আবারও ভুল কথা বলেছে। তাই জিহ্বায় কামড় দিয়ে বললো।
…আ আই মিন। তুমি রাগ করোনা প্লিজ?

আদিত্য এবার মুচকি হেসে নিজেও দুই হাতে নূরকে জড়িয়ে ধরে বললো।
….হুম এখন ঠিক আছে। তুমি আমার জীবনের এনজেল। তাই নিজেকে কখনো আনলাকি ভাববে না বুঝেছ?

নূর মাথা ঝাকিয়ে বললো।
……হুম। কিন্তু আমার সত্যিই ভয় করছে। তোমার ফ্যামিলি যদি আমাকে পছন্দ না করে তখন?

….পছন্দ করবে না, অলরেডি পছন্দ করে ফেলেছে। সানা তো তোমাকে আগে থেকেই পছন্দ করে। আর বাবাকেও তোমার কথা বলেছি। সেও তোমাকে অনেক পছন্দ করে। শুধু চাচা চাচিই জানে না তোমার কথা। উনারাও তোমাকে নিশ্চয় পছন্দ করবে। আর বাদ বাকিতো আমি আছিই তোমার পাশে। তাহলে ভয় কিসের হুম? বাবা গ্রামে গেছে, সামনে সপ্তাহে ফিরবে। আর বাবা ফিরে আসলেই আমাদের বিয়েটা হয়ে যাবে।

এভাবেই কথা বলতে বলতে একসময় নূর আদিত্যের বুকের ওপর ঘুমিয়ে পরে। আদিত্য বুঝতে পেরে মুচকি হেসে নূরের মাথায় একটা চুমু দিয়ে নূরকে জড়িয়ে ধরে ও নিজেও নৌকায় ঘুমিয়ে পরে।
————————————–

ভোরের আলো চারিদিকে ছড়িয়ে পরতেই, পাখির কিচির মিচির শব্দে নূরের ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম ভাঙতেই নূরের কানের কাছে ঢিপঢিপ আওয়াজ শুনতে পেল। নূর মাথাটা একটু উঠিয়ে দেখলো ও আদিত্যের বুকে শুয়ে আছে। এটা দেখে নূর লাজুক হাসলো। আদিত্যের দিকে তাকিয়ে দেখলো। আদিত্য এখনো গভীর ঘুমে মগ্ন। ঘুমন্ত অবস্থায় কতো কিউট লাগছে উনাকে। একদম ছোট্ট বাচ্চাদের মতো। নূর মুচকি হেসে আদিত্যের কপালে পরে থাকা চুলগুলো হাত দিয়ে সরিয়ে দিল।

হঠাৎ নূরের মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি এলো। নূর নৌকার নিচে হাত নামিয়ে দিয়ে নদীর পানি হাতে নিয়ে আদিত্যের মুখে ছিটিয়ে দিলো।
মুখে পানি পরতেই আদিত্য হকচকিয়ে উঠলো। সামনে তাকিয়ে দেখলো নূর খিলখিল করে হাসছে। সকাল সকাল নূরের এমন হাসিমুখ দেখে আদিত্যের মনটাও ফ্রেশ হয়ে গেল। আদিত্য নূরের হাত ধরে টান নিজের বুকের ওপর ফেলে বললো।
…..সকাল সকাল খুব দুষ্টুমি হচ্ছে হুম? তাহলে আমিও আমার দুষ্টুমি শুরু করে দেই নাকি?

নূর কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো।
….আ আআমাদের এখন যাওয়া উচিৎ। সকাল হয়ে আসছে, আসেপাশে লোকজন চলে আসবে।

আদিত্য নূরের কপালে একটা চুমু দিয়ে বললো।
….ঠিক আছে চলো যাই।

আদিত্য উঠে যেয়ে নৌকা চালাতে লাগলো।
—————————————

সকাল ১১ টা
তাসির বেডে বসে মোবাইল হাতে নিয়ে ফেসবুকের নিউজ ফিড স্ক্রোল করছে। হঠাৎ একটা পোস্টে ওর চোখ আটকে যায়। তাসির ভ্রু কুঁচকে তাকায় পোস্টের ছবিগুলোর দিকে।

পোস্ট টা সানা করেছে। ছবি গুলোতে সানা ওর ফ্রেন্ডসদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে। কয়েকটা মেয়ে আর কয়েকটা ছেলে আছে। সবগুলো ছবিতে সানাকে একটা ছেলের সাথে অনেক ক্লোজ ভাবে দেখা যাচ্ছে। ছেলেটা কখনো সানাকে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে আছে। তো কখনো সানা ছেলেটার গলা ধরে ঝুলে আছে। দুজনকেই খুবই হাসিখুশি লাগছে। ছবিগুলো দেখতে দেখতে তাসিরের চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে। ইচ্ছে করছে এখুনি যেয়ে ঘুষি মেরে ছেলেটার নাক ফাটিয়ে দিতে। কতো বড়ো সাহস? আমার পিচ্চিটার সাথে এভাবে ক্লোজ হয়। এসব ভেবে তাসির রাগী মুডে সানার নাম্বারে কল দিলো। কিন্তু সানা রিসিভ করলো না। তাসির আরো কয়েকবার কল দিলো কিন্তু সানা ধরলো না। এতে তাসিরের রাগ আরো বেড়ে গেল। তাসির বিড়বিড় করে বললো।
….এটা তুমি ঠিক করছো না পিচ্চি। একদম না।

সানা বাঁকা হেসে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে। মনে মনে ভাবছে, এটাতো মাত্র শুরু মিস্টার তাসির। আপনি কি ভেবেছিলেন, আপনাকে এতো তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেব আমি? কখনোই না। আমাকে ইগনোর করেছিলেন না? এখন আপনি নিজে এসে আমাকে ভালোবাসি বলবেন। নাহলে আমার নামও সানা না হুহ্ 😎
————————————-

দুপুর ২-৩০
নূর বাগানের দোলনায় বসে আছে। একটু আগেই লাঞ্চ করেছে। আদিত্য ফোন করে যতক্ষণ নূর লাঞ্চ শেষ না করে ততক্ষণ ছাড়ে না। সকালে ওখান থেকে আসার পর আদিত্য ব্রেকফাস্ট করে অফিসে চলে গেছে। আসতে নাকি সন্ধ্যা হবে। নূর ওর আঙ্গুলে আদিত্যের পরিয়ে দেয়া আংটি টার দিকে তাকিয়ে এসব কথা ভাবছিলো আর মুচকি মুচকি হাসছে। নূর কখনো কল্পনাও করেনি যে ওর কপালেও এতো সুখ আছে।

নূর দোলনা থেকে উঠে সামনের দিকে একটু হাটতে লাগলো। হঠাৎ কিছুটা দূরে তাকিয়ে দেখলো , মালি কাকার বউ মালি কাকাকে নিজের হাতে খাবার খাইয়ে দিচ্ছে। নূর গাছের আড়াল থেকে মুচকি হেসে এসব দেখতে লাগলো। মনে মনে ভাবছে, কতো কিউট লাগছে উনাদের। এই বয়সেও উনাদের ভেতর কত ভালোবাসা। আচ্ছা আমি আদিত্যও কি বুড়ো বয়সে এমনই হবো? কথাটা ভেবে নূর লজ্জায় লাল নীল হয়ে গেলো।

—-

রাত ৯-৩০
নূর ছাদে এসে ছাদের ধরে দাঁড়িয়ে আছে। ডিনার শেষে বিছানায় শুয়ে ঘুম আসছিলো না, তাই একটু ফ্রেশ হাওয়া নেওয়ার জন্য ছাঁদে এসেছে। ছাঁদে এসে ঠান্ডা ঝিরিঝিরি বাতাসে নূরের শরীর মন জুড়িয়ে যাচ্ছে। নূর চোখ বন্ধ করে ছাঁদের রেলিংয়ে দুই হাত রেখে পরিবেশ টা উপভোগ করছে।

হঠাৎ ওর কোমড়ে কারোর ছোঁয়া পেল নূর।কেউ পেছন থেকে দুই হাত দিয়ে ধীরে ধীরে ওর কোমড় জড়িয়ে ধরলো। নূর প্রথমে একটু চমকে গেলেও পরে বুঝতে পারলো এই স্পর্শ আর এই ঘ্রাণ ওর খুবই পরিচিত। এটা আর কেউ না,এটা যে ওর রাজকুমার।

আদিত্য পেছন থেকে নিজের দুই হাত নূরের কামিজের ফাঁকে গলিয়ে দিয়ে, ধীরে ধীরে নূরের মেদহীন পেটে হাত রেখে , নূরকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল। নূরের চুলে নাক ডুবিয়ে কতক্ষণ নূরের চুলের ঘ্রাণ নিলো।
নূরের এদিকে কাঁপা কাঁপি শুরু হয়ে গেছে। নিঃশ্বাস ঘন হয়ে আসছে। আদিত্য হাত দিয়ে নূরের পিঠের ওপর থেকে চুলগুলো সরিয়ে একপাশে রাখলো। মুখ নামিয়ে নূরের ঘাড়ের খোলা জায়গায় ঠোঁট ডুবিয়ে ডিপলি চুমু খেল। আদিত্যের স্পর্শে নূরের যেন দম বন্ধ হয়ে আসছে। শিহরণে নূরের ঘাড়টা হালকা বাঁকা হয়ে গেলো। আদিত্য ঘাড় থেকে চুমু দিতে দিতে ঠোঁট দিয়ে স্লাইড করে কানের কাছে এসে, কানে একটা চুমু দিয়ে নেশা ভরা কন্ঠে বললো।
…..আমার প্রাণপাখিটা এখানে? আর আমি পুরো বাসায় খুঁজছি। তুমি জানো তোমাকে একমূহুর্তও চোখের আড়াল হতে দেখলে, আমার দমটাই বন্ধ হয়ে আসে? এখানে আসবে আমাকে বলোনি কেন? আমিও তোমার সাথে আসতাম।

নূর চোখ বন্ধ করে কাঁপা কাঁপা স্বরে বললো।
….ভা ভাভাবলাম তুমি হয়তো ব্যাস্ত আছো। তা তাই ডাক দেইনি।

আদিত্য নূরের কানে নাক ঘষে বলে উঠলো।
……তোমার থেকে বেশি কোনকিছুই ইম্পর্ট্যান্ট না আমার কাছে। বুজেছ প্রাণপাখী।

একটু পরে আদিত্য আবার বলে উঠলো।
…আচ্ছা তুমি কি পারফিউম ইউজ করো বলতো?তোমার শরীর আর চুল থেকে সবসময় দেখি শুধু একটা বেলিফুলের মিষ্টি ঘ্রাণ পায়। আর সেটা একদম ন্যাচারাল। এমন কোনো পারফিউম আছে কি বলোনা?

নূর মুচকি হেসে বললো।
…..ওটা কোনো পারফিউমের ঘ্রাণ না। ওটা বেলি ফুলের ঘ্রাণ। আসলে আমার একটা বেলিফুল গাছ আছে। আমি রোজ ওখান থেকে একটা করে বেলিফুল নিয়ে আমার চুলে গুঁজে রাখি। সেটারই ঘ্রাণ পাও তুমি।

আদিত্য নূরকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো।
….ওয়াও। আমার প্রাণপাখী সত্যিই সবার থেকে আলাদা, সবচেয়ে স্পেশাল একটা ন্যাচারাল বিউটি। যেটা শুধু আমার আর কারোর না।

নূর মাথা নিচু করে লাজুক হাসলো।
আদিত্য নূরের পেটে হাত বুলিয়ে হালকা চাপ দিয়ে দুষ্টুমির সুরে বললো।
….আচ্ছা তুমি কি তুলো খাও নাকি?

আদিত্যের এমন প্রশ্নে নূর ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল । আমতা আমতা করে বললো।
…কি বলছেন এসব? তুলো আবার কেউ নাকি?

আদিত্য নূরের পেটে হাত বুলিয়ে বললো।
….তানাহলে তোমার শরীর এতো নরম আর সফট কিভাবে? মনে স্পঞ্জ কেক।
নূরের কানে আলতো করে একটা কামড় দিয়ে বললো।
…ইচ্ছে একদম কামড়ে খেয়ে ফেলি।

নূর লজ্জা পেয়ে সাথে সাথে আদিত্যের দিকে ঘুরে আদিত্যের বুকে মুখ লুকিয়ে আলতো করে একটা কিল দিয়ে বললো।
….ছিহ্ তুমি কিন্তু দিন দিন চরম অসভ্য হয়ে যাচ্ছো।

আদিত্য দুষ্টু হেসে বললো।
…বারে,অসভ্যের কি হলো এখানে যা সত্যি তাইতো বলছি।
আদিত্য দুই হাতে নূরের মুখটা ধরে ওপর তুলে নেশাক্ত কন্ঠে বললো।
…..আর সবচেয়ে সফট জিনিস কোনটা জানো? তোমার এই অধরজোড়া। একদম স্পঞ্জ রসগোল্লার মতো।
এসব বলতে বলতে আদিত্য নূরের ঠোঁটের দিকে এগুতে লাগলো।

নূর আদিত্যের মনোভাব বুঝতে পেরে আদিত্যর মাইন্ড ডাইভার্ট করার জন্য ঝট করে বলে উঠলো।
….এ এ একটা গান শোনাবে প্লিজ?

নূরের ঠোঁটের অনেকটা কাছে চলে এসেছিলো আদিত্য। হঠাৎ নূরের কথায় থেমে যায় আদিত্য। নূরের দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে বললো।
….মাইন্ড ডাইভার্ট করার চেষ্টা করছো?

নূর থতমত খেয়ে বললো।
…না না স সসত্যি বলছি। আমার না এই পরিবেশে একটা গান শুনতে ইচ্ছে করছে খুব। তু তুমি গাইবে প্লিজ?

আদিত্য ঠোঁট কামড়ে হেসে বললো।
…..তুমি আমার কাছে কিছু আবদার করবে , আর আমি সেটা পূরণ করবো না। তাকি হতে পারে কখনো?

আদিত্য নূরের কপালের সাথে নিজের কপাল ঠেকিয়ে দুই হাত দিয়ে নূরের গালে হাত বুলিয়ে নেশা ভরা চোখে তাকিয়ে গাওয়া শুরু করলো।

♬ চান্দ ছুপা বাদল মে, শারমা কে মেরি জানা
সিনে ছে লাগজা তু, বালখাকে মেরি জানা।

গুমছুম সা হে,গুপছুপ সা হে
মাদহোঁশ হে, খামোশ হে
ইয়ে সামা হাই ইয়ে সামা কুছ অর হে

ও হো হো……..
চান্দ ছুপা বাদল মে,শারমাকে মেরি জানা
সিনে ছে লাগজা তু,বালখাকে মেরি জানা

( গান গাইতে গাইতে আদিত্য নূরের গলায় নেমে এলো। নূরের গলায় মুখ ডুবিয়ে গলায় নাক ঘষে গেয়ে উঠলো)

♬ নাজদিগিয়া বাঢ় জানে দে

( নূর এবার আদিত্যের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে মাথা বামে ডানে নেড়ে নেড়ে লাজুক হেসে গেয়ে উঠলো)

♬ আরে নেহি বাবা নেহি, আভি নেই নেই নেই

(আদিত্য আবারও নূরের কাছে এসে নূরের ঠোঁটের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে গাইলো)

♬ ♬ দুড়িয়া মিট জানে দে

(নূর আবারও আদিত্যর কাছ থেকে সরে যেয়ে লাজুক হেসে ছাদের রেলিংয়ে হাত রেখে পেছাতে পেছাতে মাথা নেড়ে নেড়ে না বোধক ইশারা করে গাইলো)

♬ ♬ আরে নেহি বাবা নেহি,আভি নেই নেই নেই
দূর ছে হি তুম, জ্বী ভাড়কে দেখো

( আদিত্য নূরের কাছে যেতে যেতে গাইলো)

♬ ♬ তুম হি কাহো,ক্যায়সে দূর সে দেখু

(নূর আকাশের দিকে হাত দিয়ে ইশারা করে গাইলো)

♬ চান্দকো জেই সে দেখতা চাকোর হে

( আদিত্য নূরের হাত ধরে ফেলে নিজের কাছে টেনে নিয়ে কোমড় জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে গেয়ে উঠলো)

♬ এই গুমছুম ছা হে,গুপছুপ ছা হে
মাদহোঁশ হে, খামোশ হে
ইয়ে সামা হা ইয়ে সামা কুছ অর হে

ও হো হো…
চান্দ ছুপা বাদাল মে,শারমাকে মেরি জানা
সিনে ছে লাগজা তু,বালখাকে মেরি জানা

( নূর আবারও নিজেকে ছাড়িয়ে লাজুক হেসে উল্টো ঘুরে দৌড়ে চলে যেতে নিলেই আদিত্য হেসে পেছন থেকে নূরের ওড়নার আঁচল টেনে ধরে গেয়ে উঠলো)

♬ ♬ আঁচাল মে তু ছুপ জানে দে

( নূর আদিত্যের দিকে ঘুরে নিজের ওড়না হাত দিয়ে আটকে ধরে লাজুক হেসে মাথা নেড়ে নেড়ে না বোধক ইশারা করে গেয়ে উঠলো)

♬ ♬ আরে নেহি বাবা নেহি,আভি নেই নেই নেই

( আদিত্য নূরের কাছে এসে নূরের চুলে মুখ ডুবিয়ে গেয়ে উঠলো)

♬ ♬ জুলফো মে তু খো জানে দে

( নূর আবারও নিজেকে আদিত্যর কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে লাজুক হেসে পেছন দিকে দ্রুত যেতে যেতে গাইলো)

♬ ♬ আরে নেহি বাবা নেহি, আভি নেই নেই নেই
পেয়ার তো নাম হে সাবর কা হামদাম

(নূর পেছাতে পেছাতে ছাদের সিড়ি ঘরের দেয়ালের সাথে আটকে গেল। আদিত্য ঠোঁট কামড়ে হেসে এক ছুটে নূরের কাছে এসে নূরের দুই পাশে হাত দিয়ে আটকে দিয়ে নূরের মুখের ওপর ঝুকে গেয়ে উঠলো)

♬ ♬ ওহি ভালা বোলো, ক্যায়সে কারে হাম

(নূর লাজুক হেসে গেয়ে উঠলো)

♬ ♬ সাওবান কি রাহ্,জেই সে দেখে মোর হে

(আদিত্য নূরকে পাঁজা কোলে তুলে নিয়ে ছাঁদ থেকে নেমে সিরি দিয়ে যেতে যেতে গাইলো)

♬ এই গুমছুম সা হে,গুপছুপ সা হে
মাদহোঁশ হে,খামোশ হে
ইয়ে সামা হা ইয়ে সামা কুছ অর হে

ও হো হো….
চান্দ ছুপা বাদাল মে,শারমাকে মেরি জানা
সিনে সে লাগজা তু,বালখাকে মেরি জানা ♬

গান গাইতে গাইতে আদিত্য নূরকে কোলে নিয়ে নূরের রুমে এলো।
নূর লজ্জায় আদিত্যর বুকে লুকিয়ে আছে।
আদিত্য নূরের রুমে এসে নূরকে বেডে শুইয়ে দিল। আদিত্য নূরের পাশে বসে দুই হাত নূরের দুই পাশে রেখে নূরের দিকে নেশা ভরা চোখে তাকিয়ে আছে। নূর লজ্জায় আদিত্যের দিকে তাকাতে পারছে না। চোখ ঘুরিয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে।
আদিত্য ধীরে ধীরে নূরের মুখের দিকে ঝুঁকতে লাগলো। নূর চোখ বন্ধ করে নিল। মনে মনে ভাবলো , আমি আর ওকে বাঁধা দিবো না।আদিত্য যদি এটাই চায়, তাহলে তাই হোক। আদিত্যর খুশীর জন্য আমি সবই করতে পারবো। নিজেকেও উৎসর্গ করে দিতে পারবো। মনে মনে এসব ভেবে নিজেকে আদিত্যের জন্য প্রস্তুত করলো নূর।

আদিত্য নূরের কপালে চুমু দিয়ে বললো।
….গুড নাইট প্রাণপাখী।

আদিত্যের কথায় নূর অবাক চোখে তাকালো আদিত্যের দিকে। মনে মনে ভাবছে, একটা মানুষ এতো ভালো কিভাবে হতে পারে? আবেগে নূরের চোখে পানি চলে এলো।

আদিত্য নূরের দিকে তাকিয়ে বিচলিত হয়ে বললো।
…কি হয়েছে প্রাণপাখী? কাঁদছ কেন? আমি কি কোনো ভুল করেছি।

নূর হঠাৎ উঠে আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে কান্না জড়িত গলায় বললো।
….ভালোবাসি তোমাকে আদিত্য। অনেক অনেক অনেক ভালোবাসি। আমাকে ছেড়ে কখনও যেওনা প্লিজ। তোমাকে ছাড়া আমি বাচবোনা।

আদিত্য একটা তৃপ্তির হাসি দিয়ে নূরকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে মাথায় চুমু দিয়ে বললো।
……এই পাগলিটা, কোথায় যাবো আমি তোকে ছেড়ে? তুই যে আমার প্রাণপাখী। আমার নিঃশ্বাসের সাথে মিশে আছিস তুই। তোকে ছাড়া যে আমার নিঃস্বাস বন্ধ হয়ে যাবে। তাহলে তোকে ছেড়ে যাবো কি করে বল? একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আমাকে তোর কাছ থেকে কেউ আলাদা করতে পারবে না। কেউ না।

আদিত্য নূরকে সামনে এনে দুই হাতে নূরের মুখটা ধরে বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে নূরের চোখের পানি মুছে দিল। তারপর নূরের কপালে ভালোবাসার পরশ দিয়ে নূরকে শুইয়ে দিয়ে বললো।
…এখন ঘুমিয়ে পরো প্রাণপাখী।

নূর মাথা ঝাকিয়ে সায় দিল।

আদিত্য নূরের গায়ে চাদর দিয়ে মুচকি হেসে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো।

চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here