ভালোবাসার চেয়েও বেশি 💞পর্ব-৬৭

0
5217

#ভালোবাসার_চেয়েও_বেশি 💞💞
#লেখিকা-Mehruma Nurr
#পর্ব-৬৭

★ ♬ ♬ নাগিন দিন গিন গিন গিন গিন গিন
♬ ♬ গিন গিন গিন গিন গিন গিন মার গায়
তানি সারা রুমে ঘুরে ঘুরে নাচছে আর গান গাইছে।
বেচারা আবিরের অবস্থা কেরাসিন। কোথায় সে আশায় ছিল কাল বিয়ে করবে, বাসর করবে। তানা এখন এই পাগলকে সামলাতে হচ্ছে। নাজানি আমার বাসরের স্বপ্নের কি হবে?

আবির তানিকে ধরে বললো।
….শোন না তানি বেবি, এমন করেনা প্লিজ? দেখ কাল না আমাদের বিয়ে? তুমি বউ সাজবে আমি বর সাজবো। তারপর আমাদের বিয়ে হবে এন্ড ফাইনালি আমাদের বাসর হবে। তাই এখন লক্ষী মেয়ের মতো শুয়ে পড় প্লিজ।

তানি ঢুলতে ঢুলতে বাচ্চা মেয়েদের মতো ঠোটে আঙ্গুল রেখে বলে উঠলো।
….সত্যিই কাল আমাদের বিয়ে হবে? কিন্তু বিয়ে কেন করে?

আবির বেচারা এখন এই প্রশ্নের কি উত্তর দিবে? ও ওর মতো বলে উঠলো।
….বিয়ে করে কারণ বিয়ে ছাড়া তো আর বাসর করা যায়না তাইনা?

….তাই? আচ্ছা বাসর কিভাবে করে? আর বাসরে কি করতে হয়?

আবির মনে মনে বলছে, এখন যদি হুঁশে থাকতে তাহলে প্রাক্টিক্যালি বুঝিয়ে দিতাম বাসর কিভাবে করে।
আবিরের ভাবনার মাঝে তানি আবার বলে উঠলো।
….কি হলো বলো,কি করে বাসরে?

আবির জোরপূর্বক হাসি দিয়ে বললো।
….বাসর ঘরে বিড়াল মারতে হয়। বাচ্ আর কিছুই না।

তানি চমকে উঠে বললো।
….কিহহ্ তুমি বাসর ঘরে বিড়াল মারবে? এই কথাটা বলতে তোমার লজ্জা করলো না? তোমার কি দয়ামায়া নেই? তুমি ওই কিউট কিউট বিড়াল মারবে, একবারও তোমার হাত কাঁপবে না? তুমি একটা খুনী দারিন্দা। যাও তোমার সাথে বিয়েও করবো না বাসরও করবো না। কাট্টি তোমার সাথে। হুহ্ খুনি একটা।
কথাটা বলে তানি আবিরকে ছেড়ে বেডের ওপর গাল ফুলিয়ে বসে রইল।

তানির এমন রিয়্যাকশন দেখে আবির বেচারার কেঁদে দেওয়ার জোগাড়। ও কি বললো আর তানি কি ভাবলো। আবার নাকি বিয়েও করবে না, বাসরও করবে না। আয় হায় তাহলে আমার কি হবে?
এসব ভেবে আবির তানির কাছে যেয়ে বললো।
…আরে আরে বেবি তুমি ভুল বুজছ। এটাতো একটা কথার কথা। সত্যি সত্যিই কি আর বিড়াল মারবো নাকি। আমিতো বিড়াল দের অনেক ভালবাসি।

তানি এবার খুশী হয়ে বললো।
….সত্যিই? তাহলে ঠিক আছে। এখন বলো বাসর আরও কি কি হয়?

আবির এবার আহ্লাদী হয়ে বললো।
….বাসর ঘরে না স্বামী তার স্ত্রীকে অনেক আদর করে।

….তাই? কিভাবে আদর করে?

আবির পরে গেছে এক বিপাকে।এখন একে কিভাবে বুঝাবে যে আদর কিভাবে করে? আবির তানির কানে কানে কিছু বললো। তানি কথাটা শোনার সাথে সাথে লাফিয়ে উঠে বললো।
….কিহ্ তুমি আমার সাথে এসব করবে? ছি ছি ছি এতো খারাপ তুমি? তুমি আমার ইজ্জত ছিনিয়ে নিবে? লজ্জা করে না তোমার? আমি এখুনি মা বাবাকে যেয়ে বলবো তুমি কতো খারাপ।
কথাটা বলে তানি জোরে জোরে চিল্লিয়ে বলতে লাগলো।
….মা বাবা কোথাই তোমরা?বাঁচাও আমাকে। এই বদমাইশটা আমার ইজ্জত ছিনিয়ে নিতে চায়। কে কোথায় আছ বাচাও আমাকে।

আবিরের ইচ্ছে করছে কচু গাছের সাথে গলায় দড়ি দিতে। এইদিনও দেখার ছিল আমার? আবির দৌড়ে গিয়ে তানির মুখ চেপে ধরে আবার বেডের ওপর এনে বসালো। তানি শুধু ছাড়া পাওয়ার জন্য হাত পা ছোটাছুটি করছে। আবির বলে উঠলো।
….চুপ করো মেরি মা। মান ইজ্জতের ফালুদা করে দিবে নাকি? আমি তোমার সাথে কিছুই করবো না। তোমাকে বাসর ঘরে সুন্দর করে ঘুম মাসি পিসি গান গাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেব।হয়েছে এখন?

তানি মাথা ঝাকিয়ে বুঝাল ঠিক আছে। আবির একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে তানির মুখ ছেড়ে দিল। তারপর তানির দিকে তাকিয়ে বললো।
….এখন তো খুশী তাইনা?তাহলে এখম গুড গার্লের মতো ঘুমিয়ে পড়? নাহলে কাল তোমাকে বউয়ের সাজে একদম পঁচা লাগবে।

তানি বাচ্চাদের মতো বললো।
…তাই? ঠিক আছে, ঠিক আছে আমি এখুনি ঘুমিয়ে পরছি।
কথাটা বলে তানি ঠাস করে শুয়ে পড়লো।
আবির অসহায় করুন চোখে উপরের দিকে তাকালো।
————–

তাসির সানাকে অনেক কষ্টে টেনেটুনে রুমে নিয়ে এসেছে। এইটুকুতেই বেচারার অবস্থা কাহিল। রুমে এসেও সানা এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছে। তাসিরের মনে হচ্ছে ও কোনো বড়ো বাচ্চাকে সামলাচ্ছে। তাসির সানার হাত ধরে বেডে এনে বসিয়ে দিয়ে বললো।
…সানা অনেক হয়েছে এবার চুপচাপ শুয়ে পড়।

সানা তাসিরের কথায় কোনো পাত্তা না দিয়ে। কেমন দুষ্টু ভঙ্গিতে তাসিরের দিকে তাকিয়ে আছে। সানার চাহনি তাসিরের কাছে ঠিক মনে হচ্ছে না। তাসির গলা খাঁকারি দিয়ে শার্টের কলার টেনেটুনে ঠিক করতে লাগলো।
সানা দুষ্টু হেসে তাসিরের গলা জড়িয়ে ধরে আহ্লাদী কন্ঠে বললো।
…..শোন না, আমারও না ভাবির মতো তোমাকে কিচ্ছি দিতে ইচ্ছে করছে। একটা কিচ্ছি দেই?

সানার কথায় তাসিরের চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেল। গলা শুকিয়ে আসছে বেচারার। তাসির ঢোক গিলে বললো।
….ক কি বলছ এসব? দেখ তোমার এখন হুঁশ নেই। কি বলছ তুমি নিজেও জানোনা। এখন এসব ঠিক না। শুয়ে পড়ো এখন।

সানা একটু রাগ দেখিয়ে বললো।
……কেন? কেন ঠিক না? এই তুমি সবসময় এমন করো কেন বলতো? এক মিনিট, তুমি ওই কাটাপ্পার মতো আবার গে নাতো?

সানার কথা শুনে তাসিরের হার্ট অ্যাটাক হওয়ার উপক্রম। তাসিরের কাশি উঠে গেল। বেচারা কোনরকমে কাশি থামিয়ে বললো।
….ওয়াট? কি বলছ এসব? পাগল হয়ে গেছ? এমন কিছুই না।

….ঠিক আছে তাহলে প্রুভ করো সেটা।

…মানে?

….মানে আই ওয়ান্ট প্রুফ রাইট নাও। কাম অন প্রুফ ইট, প্রুফ ইট।
কথাটা বলে সানা ঠোঁট চোখা করে তাসিরের দিকে এগুতে লাগলো।

তাসির ভয়ে পেছন দিকে হেলে যেতে লাগলো। বেচারার এখন ইজ্জত বাঁচানো দায় হয়ে গেছে। তাসির সানা ছেড়ে সরে এসে বললো।
…..সানা কি করছ এসব? দেখ তোমার হুঁশ নেই, তুমি শুয়ে পরো আমি যাই।

কথাটা বলে তাসির তড়িঘড়ি বেড়িয়ে যেতে লাগলো। দরজা পর্যন্ত আসতেই সানা দৌড়ে এসে তাসিরের সামনে এসে দরজা আটকে দিল। তারপর আবেদনময়ী ভঙ্গিতে তাসিরের এগিয়ে আসছে, আর তাসির বেচারা ভয়ে ভয়ে পেছাচ্ছে। সানা এগিয়ে আসতে আসতে গেয়ে উঠলো।
♬ ♬ ও শ্যামরে তোমার সনে
♬ ♬ শ্যামরে তোমার সনে
♬ ♬ একেলা পাইয়াছি রে শ্যাম
♬ ♬ এই নিঠুর বনে
♬ ♬ আইজ পাশা খেলবো রে শ্যাম
(তাসির পেছাতে পেছাতে খাটের সাথে ঠেকে বেডের ওপর চিত হয়ে পরে গেল। সানা তাসিরের ওপর শুয়ে পড়লো।তর্জনী আঙুল দিয়ে তাসিরের কপাল থেকে নাকের ওপর দিয়ে নিচ দিকে স্লাইড করে গাইলো)
♬ ♬ একেলা পাইয়াছি হেতা
♬ ♬ পালাইয়া যাবে কোথা
♬ ♬ চৌদিকে ঘিরিয়ারে রাখবো
♬ ♬ সব সখি সনে
♬ ♬ আইজ পাশা খেলবোরে শ্যাম
(তাসির বেচারা নিজের ইজ্জত বাচাতে সানাকে নিজের ওপর থেকে সরিয়ে দিয়ে উঠে যেতে নিলেই সানা তাসিরের হাত ধরে আটকে দিল। তারপর টি-টেবিলের ওপর থাকা গ্লাস থেকে একটু পানি নিয়ে তাসিরের গায়ে ছিটিয়ে দিয়ে গাইলো)
♬ ♬ আতর গোলাপ চন্দন
♬ ♬ মারো বন্ধের গায়
♬ ♬ ছিটাইয়া দাও ছোঁয়া চন্দন
♬ ♬ ঐ রাঙা চরনে
♬ ♬ আইজ পাশা খেলবোরে শ্যাম
(সানা তাসিরকে সোফায় ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল।তারপর নিজে তাসিরের কোলের উপরে বসে গলা জড়িয়ে ধরে গাইলো)
♬ ♬ দীনহীন আর যাবে কোথায়
♬ ♬ বন্ধের চরন বিহনে
♬ ♬ রাঙ্গা চরন মাথায় নিয়া দীনহীন কান্দে
♬ ♬ আইজ পাশা খেলবো রে শ্যাম

♬ ♬ ও শ্যামরে তোমার সনে
♬ ♬ একেলা পাইয়াছিরে শ্যাম
♬ ♬ এই নিঠুর বনে
♬ ♬ আইজ পাশা খেলবোরে শ্যাম

সানা ঠোঁট চোখা করে তাসিরের দিকে এগুতে লাগলো। তাসির ভয়ে চোখ খিঁচে বন্ধ করে নিল। আজ বুঝি আর নিজের ইজ্জত বাচাতে পারলো না ও। সানা হঠাৎ বেহুশ হয়ে তাসিরের বুকে ঠাস করে পরে গেল। তাসির চোখ খুলে দেখলো সানা ঘুমিয়ে পড়েছে। তাসির যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল। আজতো বাল বাল বাচ গায়ি।তাসির সানাকে কোলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিল। তারপর তাসির বেড়িয়ে গেল।
———-

নূর কখন থেকে আদিত্যের পেটের ওপর উপর হয়ে শুয়ে থেকে দুই পা উপর দিকে দোলাচ্ছে। আর বাচ্চাদের মতো ফেস করে আদিত্যের ঠোঁট নিয়ে টানাটানি করছে। কখনো ঠোঁট রাবারের মতো দুই দিকে টানছে, আবার কখনো ঠোঁটের দুইদিকে চাপ দিয়ে ঠোঁট চোখা করে ফেলছে। আদিত্য বেচারা চেয়েও কিছু করতে পারছে না। নূর ওকে উঠতেই দিচ্ছে না। নূরের এসব কান্ডে আদিত্য হাসবে না রাগ করবে বুঝতে পারছে না। তবে যাইহোক না কেন নূরকে এভাবে প্রচুর কিউট লাগছে আদিত্যের কাছে।আদিত্য বলে উঠলো।
…..কি করছ প্রাণপাখী? আমার ঠোট দুটো কি রাবার নাকি যে এভাবে টানছ?

নূর বাচ্চাদের মতো করে বললো।
….উহুম রাবার না,তোমার ঠোঁট হলো চকলেট। অনেক মজা, ইচ্ছে করে কামড়ে খেয়ে ফেলি।

নূরের কথা শুনে আদিত্য ঠোঁট কামড়ে হাসলো। যে মেয়েকে অন্য সময় আদর করতে গেলে লজ্জায় কুকরে যায়। সে কিনা এখন এসব বলছে।
আদিত্যকে ঠোঁট কামড়ে হাসতে দেখে নূর বাচ্চাদের মতো রাগ দেখিয়ে বললো।
….এই এই তুমি আমার চকলেট খাচ্ছ কেন? এটা শুধু আমার চকলেট, শুধু আমিই খাব। তুমি একদম খাবে না।
কথাটা বলে নূর আদিত্যর ঠোঁটে একটা কামড় বসিয়ে দিল।

আদিত্য একটু ব্যাথা পেলেও কিছু বললো না। এই ব্যাথাতেও যে একরকম সুখ আছে। নূর কিছুক্ষণ পরে আদিত্যের ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে জিহবা দিয়ে নিজের ঠোঁট মুছে নিয়ে বললো।
…..উমমম অনেক ইয়াম্মি চকলেট। 😋

আদিত্য যেন অবাকের শেষ পর্যায়ে চলে যাচ্ছে নূরের কান্ডে। আদিত্য এবারে বলে উঠলো।
….আচ্ছা ঠিক আছে চকলেট খাওয়া হয়েছে তো? এখন একটু নাম, আমি তোমার জন্য লেবু পানি নিয়ে আসি। লেবু পানি খেলে তোমার ভালো লাগবে।

নূর মাথা ঝাকিয়ে বললো।
….না না খাবনা, ওটা পঁচা একদম মজা না। আমি তোমাকে খাব,তুমি অনেক মজা,অনেক ইয়াম্মী।
নূর আদিত্যের টিশার্ট দেখিয়ে বললো।
…..এটা কি পরেছ? এটা পচা,আমার একদম পছন্দ হয়নি। এটা তোমার বডিকে ঢেকে রেখেছে। খোল এটা, খোল তাড়াতাড়ি।
নূর আদিত্যের টিশার্ট ধরে টানাটানি করতে লাগলো।

আদিত্য বেচারা না পেরে বললো।
….ওঁকে ওঁকে দাঁড়াও খুলছি।
কথাটা বলে আদিত্য টিশার্ট টা খুলে ফেললো।

নূর হাসি মুখে বললো,
…হুম এখন ঠিক আছে।
নূর নিজের দুই আঙুল দিয়ে আদিত্যের বুকের ওপর হাঁটার মতো করে আঙুল সামনে পেছনে নিতে নিতে দুষ্টু ভঙ্গিতে বললো।
….ইউ নো ওয়াট, ইউ আর সোওওওও হ…..ট। ইচ্ছে করে একদম কামড়ে খেয়ে ফেলি।

নূরের কথায় আদিত্যর চোখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম। বেচারার অবস্থা শোচনীয়। এই প্রথম নূরকে দেখে ওর ভয় লাগছে। নাজানি কি করে বসে? আদিত্যের অবাকের মাত্রা আরও একধাপ বাড়িয়ে দিয়ে নূর বলে উঠলো।
….আচ্ছা শোন না,তুমি যে এতো হট। তাহলে আমরা তোমার ওপর রান্নাও করতে পারবো তাইনা? তাহলে আমাদের গ্যাসও অনেক বেচে যাবে। দারুণ না আইডিয়া টা?দেখেছ তোমার বউ কতো বুদ্ধিমান?

বেচারা আদিত্য কি রিয়্যাকশন দিবে বুঝে উঠতে পারছে না। ওর বডির ব্যবহার যে এভাবেও করা যায় সেটা কখনো কল্পনাও করেনি ও। আদিত্য নূরকে সরানোর চেষ্টা করে বললো।
…আচ্ছা ঠিক আছে তোমার যা খুশী তাই করো। এখন ওঠনা প্লিজ। তুমি না গুড গার্ল? প্লিজ ওঠনা বাবু।

নূর আবারও বাচ্চাদের মতো রাগ দেখিয়ে বললো।
…..এই আমাকে বাবু বলছ কেন? আমি কি বাবু নাকি? আমিতো বাবুর মা হবো।
নূর কিছু একটা মনে পরার মতো করে বললো।
….এক মিনিট, ভালো কথা মনে হয়েছে। আমার বাবু হয়না কেন? তুমি আমাকে বাবু দাওনা কেন হ্যাঁ? নাকি তোমার সেই ক্ষমতা নেই? তুমি পারোই না বাবু দিতে?

নূরের কথায় আদিত্যর মাথা ঘুরে ওঠার উপক্রম। কি বলে এই মেয়ে? আমার নাকি বাবু দেওয়ার ক্ষমতা নেই। আরে আমিতো ওর কথা ভেবেই এখন বাচ্চা কাচ্চা নিচ্ছি না। কারণ ওর বয়স কম আর ওর পরাশুনারও ক্ষতি হবে। এসব ভেবেই এখন বাবু নিচ্ছি না। আর এই মেয়ে কিনা আমার পুরুষত্বের ওপরই প্রশ্ন তুলছে? এখন যদি হুঁশে থাকতো, তাহলে বুঝিয়ে দিতাম যে আমার কি ক্ষমতা আছে। আদিত্যের ভাবনার মাঝেই নূর আবার বলে উঠলো।
….কি হলো কথা বলছ না কেন? দেখ আমার বাবু চাই এক্ষুনি। চাই মানে চাই। তুমি যদি আমাকে বাবু না দাও, তাহলে কিন্তু আমি অন্য কারো কাছে যাবো বাবু নিতে?

নূরের কথা এতক্ষণ কিউট লাগলেও এবারের কথা শুনে আদিত্যর রক্ত মাথায় উঠে গেল। আদিত্য রাগে চোয়াল শক্ত করে বললো।
….শাট আপ ইডিয়ট, কি বলছ এসব মাথা খারাপ হয়ে গেছে তোমার? আবার যদি মুখে এই কথা এনেছ তো একদম মেরে ফেলবো।

আদিত্যের ধমক শুনে নূর কেঁপে উঠল। কিছুক্ষণ পর বাচ্চাদের মতো ভ্যা ভ্যা করে কান্না শুরু করে দিল। আদিত্যের বুকে হালকা চাপড় মারতে মারতে কান্না করে বলতে লাগলো।
…..এ্যাএএএএএ,,,,পচা তুমি। তুমি আমাকে বকা দিয়েছ।আমাকে ইডিয়ট বলেছ। খুব পঁচা তুমি, পঁচা, পঁচা, পঁচা। তোমার সাথে কাট্টি, আর কথা বলবো না তোমার সাথে। 😭
নূর কাঁদতে কাঁদতে আদিত্যের উপর থেকে সরে গিয়ে বিছানায় উল্টো দিকে হয়ে শুয়ে কাঁদতে লাগলো।

নূরের এমন কান্না দেখে আদিত্য ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল। আদিত্য চোখ বন্ধ করে নিজের রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করলো। ওতো রাগের মাথায় ভুলেই গিয়েছিল যে নূরের এখন হুঁশ নেই। ও কি বলছে ও নিজেও জানে না। নূরকে এভাবে কান্না করতে দেখে আদিত্যের এবার প্রচুর খারাপ লাগছে । আদিত্য নূরের কাঁধে হাত দিয়ে নূরকে ওর দিকে ঘুরানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু নূর অভিমান করে শক্ত হয়ে আছে। একটুও ঘুরছে না। আদিত্য এবার পেছন থেকে নূরের পেট জড়িয়ে ধরে নূরের ঘাড়ে মুখ নিয়ে আদুরে গলায় বললো।
….আই এ্যাম সরি সোনা।প্লিজ রাগ করে না, তুমি এমন কথা বললে তাইতো আমার রাগ উঠে গেল। প্লিজ এদিকে ঘোর।

নূর এখনো শক্ত হয়ে আছে। আর মাথা ঝাঁকাচ্ছে। মানে ও ঘুরবে না। আদিত্য আবারও বললো।
….সরি না কলিজাটা। এমন করে না প্লিজ। আই প্রমিজ আর কখনো বকা দিব না। তুমি যা বলবে তাই করবো,এবার ঘোরনা প্রানপাখী।

নূর ফট করে কান্না বন্ধ করে হাসি মুখে আদিত্যের দিকে ঘুরে বললো।
…সত্যি? আমি যা বলবো তাই করবে?

আদিত্য মুচকি হেসে নূরের গালে হাত বুলিয়ে বললো।
….অফকোর্স প্রানপাখী তুমি যা বলবে তাই হবে।

….ঠিক আছে তাহলে আমাকে বাবু দাও এখুনি।

….আবারও সেই কথা? এটা ছাড়া কি আর কোনো কথা নেই তোমার?

…না না নেই। তুমি এখুনি আমাকে বাবু দিবা ব্যাচ। আর কিছু শুনতে চাই না। বাবু দাও, বাবু দাও, বাবু দাও।

আদিত্য নূরের মুখ বন্ধ করার জন্য নূরের ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরলো। তারপর নূরের ঠোঁটে চুমু খেতে লাগলো। নূরও আদিত্যের সাথে তালে তাল মিলিয়ে চুমু খেতে। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ আদিত্য খেয়াল করলো নূর রেসপন্স করা বন্ধ করে দিয়েছে। আদিত্য নূরের ঠোঁট ছেড়ে নূরের দিকে তাকিয়ে দেখলো নূর ঘুমিয়ে পড়েছে। আদিত্য বিড়বিড় করে বললো।
…দিস ইস নট ফেয়ার প্রানপাখী। আমার আরমান জাগিয়ে তুমি ঘুমিয়ে পড়লে?

আদিত্য ঠোঁট কামড়ে হেসে বললো।
….পাগলি একটা।
কথাটা বলে আদিত্য নূরের কপালে একটা চুমু খেয়ে নূরকে বুকের মাঝে নিয়ে নিজেও একসময় ঘুমিয়ে পড়লো।

চলবে…..
(বাসায় মেহমান আছে। প্রচুর ব্যাস্ত আছি।অনেক কষ্টে এইটুকু লিখতে পেরেছি।
রিচেক করার সময় পাইনি তাই ভুল থাকতে পারে। সবাই ক্ষমার চোখে দেখবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here