ভালোবাসার_ফোড়ন পর্ব_৩১

ভালোবাসার_ফোড়ন পর্ব_৩১
#মিমি_মুসকান ( লেখনিতে )

১১ দিন পর আজ ভার্সিটিতে যাচ্ছি। আমি আর উনি আজ একসাথে যাচ্ছি উনার গাড়ি করেই। ভাবছি সেই বিয়ের দিন পর আজ নিতি’র সাথে দেখা হবে। কি হবে জানি না, তবে কিছু একটা হবে বলে মনে হচ্ছে। যাই হোক সেটার জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখা ভালো। ভার্সিটিতে পৌঁছালাম, উনি গাড়ি থেকে নামলেন কিন্তু আমার কেন জানি খুব অস্বস্তি লাগছে। হঠাৎ করেই উনি আমাকে হাত ধরে নামালেন। আমি নেমে আশপাশ তাকাচ্ছি সবাই কেমন ভাবে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। কেউ কেউ বলাবলিও করছে, কে জানে কিসের এতো কৌতুহল ওদের। বিয়েটা কি কারনে হয়েছে এটা নিয়ে? তবে এটা নিয়ে সবচেয়ে বেশি কৌতুহল তো আমার’ই।

ইতি দৌড়ে আমার কাছে আসল। উনি আমার হাত ছেড়ে দিয়ে বললেন…
– ক্লাসে যাও!.

বলেই চলে গেলেন উনি। ইতি আমাকে খোঁচা মেরে বলল…
– ব্যাপার টা কি?

– তোর মাথামাথা আর আমার মন্ডু।

– হি হি হি। আচ্ছা এতো দিন আসি নি কেন?

– আরে যা কান্ড হয়েছে, এর পরে আবার আমার ভার্সিটিতে আসা।

– কেন কি হয়েছে?

– শোন তাহলে……

আমার কথা শুনে ইতি হাসতে হাসতে মাটিতে গড়াগড়ি খাবার অবস্থা। আমি রেগে ওর দিকে তাকিয়ে আছি।
ইতি হাসতে হাসতে বলল…

– লাইক সিরিয়াসলি নিহা! ওরা ভেবেছিলো তুই আসলেই প্রেগন্যান্ট!

– কথা বলিস তো আর! আমার অবস্থা কি হয়েছিল এটা তো আমি’ই জানি।

– যাই’ই বলিস না কেন? ভাইয়া কিন্তু খুব ভালো মজা নিয়েছে তোর সাথে!

– মজা আমার আত্না শুকিয়ে যাচ্ছিল। জানিস তুই!

– আরে তোর বর তো তোর মতোই হবে তা নয় কি?

– হয়েছে তোর! এখন চুপ কর।

– ইশ্ কি লজ্জা।

– লজ্জা হবে কেন?

– কারন ভাইয়া তোর বর!

– বর তো কি?

– কিছু না বোন! তুই জীবনেও বুঝবি না বাদ দে।

– হুম সেটাই ভালো।

ইতি আর আমি কথা বলতে বলতে আসছিলাম দেখলাম নিতি আর টিনা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের সাথে আমার চোখাচোখি হয়ে গেল। ইতি আমাকে ধরে সেখান থেকে নিয়ে আসলো। ওদের সাথে আর কথা হলো না।

ক্লাস শেষে ভার্সিটির পিছনের বাগানে আসলাম। এখানে উনার সাথে আমার প্রথম দেখা। ইতি অনেক সাধলাম আসলো না তাই একা’ই আসলাম। আজও বাদাম কুঁড়ানোর ইচ্ছা আছে। আজও ভূতের ভয় লাগছে কিন্তু আজ তো আমি যাবোই।

বাদাম সব কুঁড়িয়ে যেতে হঠাৎ করেই কেউ আমার কানে ফুঁ দিলো। আমি লাফিয়ে উঠে পিছনে ফিরলাম। দেখি উনি দাঁড়িয়ে দাঁত বের করে হাসছে।

– আপনি!

– কেন ভূত ভেবেছিলে সেদিনের মতো!

– আসলেই, আপনি সত্যি একটা ভূত।

– আর তুমি ভূতনি! তো এখানে কি করছিলে ভূতনি।

– বাদাম নিতে এসেছি।

– সেদিনের মতো।

– হুম।

– কোনো কাজ না থাকলে যা হয় আর কি। তা কুড়াঁনো শেষ হলে চলো এখন।

– হুম চলুন।

দুজনেই হাঁটতে হাঁটতে বাগানের বাইরে আসলাম।‌‌ বাগানের বাইরে বিরাট একটা বটগাছ। উনি গিয়ে সেই বটগাছের তলায় বসলেন। আমিও উনার সাথে গিয়ে ওখানে বসলাম। দু’জনের মাঝে খানিকক্ষণ নিরবতার পর উনি বলে উঠেন…

– ভূতনি তোমার কোন ফুল পছন্দ!

– কেন?

– আমি প্রশ্ন করছি উওর দাও, প্লাটা প্রশ্ন কে করো?

– হুহ শিউলি ফুল!

– শিউলি! কাঠগোলাপ পছন্দ করো না।

– নাহ্ কাঠগোলাপ ও ভালো লাগে তবে শিউলি ফুল বেশি প্রিয়, শিউলির ঘ্রাণ,স্নিগ্ধতা, সৌন্দর্য খুব ভালো লাগে। এই ছোট ফুলের পরশ মনকে সতেজ করে।

– বাবা তুমি তো মনে হচ্ছে ফুলের প্রেমে পড়ে গেলে

– পড়লে বা কি? এটা কি মন্দ!

– না মন্দ কে বললো, যারা ফুলকে ভালোবাসে তাদের মন টাও ফুলের মতোই স্নিগ্ধতায় মুখর হয়।

– আমার প্রশংসা করছেন না নিজের!

– মানে?

– আপনি কি ফুল কে কম ভালোবাসেন নাকি!

– ভালো তো বাসি কিন্তু তোমার মতো সৌন্দর্য বর্ণনা করতে পারি না।

– সৌন্দর্য বর্ণনা করতে পারেন মানেই কি আপনি তাকে অনেক ভালোবাসেন।

– ভালোবাসলেই তো মানুষ সৌন্দর্য বর্ণনা করে তাই নয় কি!

– তার মানে কি? আপনি বলতে চান ‌আপনি ভালোবাসেন না,‌তাই সৌন্দর্য বর্ণনা করতে পারেন না!

উনি বিচলিত হয়ে বলেন..
– না মানে!

আমি কিঞ্চিত হেসে বলি…
– নাহ আপনার কথা ঠিক আছে, ভালোবাসলেই তার সৌন্দর্য বর্ণনা করা যায় তবে কি জানেন একদল মানুষ আছে যারা স্বার্থের কারনেও শুধু শুধু সৌন্দর্য বর্ণনা করে। আবার এটাও সত্যি ভালোবাসলে তার সৌন্দর্য বর্ণনা না করে নিজের মনকে তার সৌন্দর্য বোঝানো এটা খুব কম লোক পারে।

– আমি কোনটা বলে তুমি মনে করো!

– আপনার প্রশংসা আমি করবো না।

– ভূতনি রা কি ভালো মানুষের প্রশংসা করে নাকি।

– হুম বুঝতে পেরেছেন। তবে আপনি ভালো মানুষ না।

বলেই ওপাশে তাকালাম। অতঃপর তার দিকে তাকাতেই তাকে আর দেখতে পেলাম না। খানিকক্ষণ এর জন্য ভড়কে গেলাম। আমি দাঁড়িয়ে আশপাশ ভালো মতো দেখছি। না তার কোনো চিহ্ন নেই। ভয় পেতে শুরু করি, আসলে কি সেটা উনি ছিলেন নাকি ভূত ছিলো। সত্যি সত্যি যদি ভূত হয় তাহলে এতোক্ষণ আমি একজন ভূতের সাথে বক বক করছিলাম। কিভাবে?

হুট করেই আমার এক পাশে দু’হাত ভর্তি শিউলি ফুল নিয়ে আসল। আমি জলদি ঘুরে দেখি উনি। একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছি। উনি চোখ দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন “কি হয়েছে”?

আমি মাথা নেড়ে না বলি। উনি ফুল গুলোর দিকে ইশারা করেন।‌আমি মুচকি হেসে ফুল গুলো’র দিকে তাকাই। উনি একটা ফুল নিয়ে আমার কানে গুঁজে দিয়ে বলে…
– ফুল গুলো খুব ছোট কানে গোঁজার জন্য নাহ!

– তবে ভালোবাসা ভরপুর!

উনি হেসে বাকি ফুল গুলো আমার হাতে দেন। আমি বাদাম গুলো উনার জ্যাকেটের পকেটে রেখে ফুল গুলো নিই আর বলি…
– কোথায় পেলেন এগুলো!

– এখানে ছিল একটা গাছ।

– গ্রীষ্ম চলে এসেছে নাহ!

– হুম এসেছে বটে।

– যাওয়া যাক।

– হুম!
.

বাসায় এসে সব গুলো ফুল টেবিলে রাখলাম। ভালোই লাগছে ছোট ছোট এসব ফুল গুলো। এগুলোর ঘ্রাণ দারুন। দেখতেও খুব সুন্দর। আসার সময় উনি একটা শিউলি ফুলের চারা নিয়ে এসেছিলেন। সেটা বেলকনিতে রেখেছেন। আমি সেটাতে একটু পানি দিয়ে আসলাম। ব্যাগ থেকে একটা ডায়রি করলাম। সেটাতে ফুল গুলো রাখলাম। কিন্তু মানুষ এটা কেন করে। স্মৃতি রাখার জন্য! হয়তো কিন্তু আমি কেন রাখছি। উনার আর আমার স্মৃতি গুলো সাজিয়ে রাখার জন্য। কিন্তু কেন?

এই কথাটা ইতি কে জিজ্ঞেস করলাম। কারন এটা সারাদিন আমার মাথায় ঘুরছিলো। তাই পরদিন ভার্সিটিতে এসে ইতি কে জিজ্ঞেস করলাম মানুষ স্মৃতি গুলো কেন সাজিয়ে রাখে। ইতি’র উওরটা এমন ছিলো…

– স্মৃতি অনেক রকমের হয়, কিছু দুঃখের কিছু ভালোবাসার। তবে মানুষ ভালোবাসার স্মৃতি রাখতে বেশি ভালোবাসে। কারন সেগুলোতে ‌কিছু সূক্ষ্ম সুখ থাকে। আর এই সূক্ষ্ম সুখ গুলো বরাবরই ‌ক্ষণস্থায়ী। যার কারনে এই সুখ গুলোকে স্মৃতি হিসেবে রাখতে খুব ভালো লাগে।

ওর কথা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছি আর ভাবছি, তখনকার উনার আর আমার স্মৃতি গুলো তো দুঃখের ছিল না তবে কি….

ইতি বলে উঠে…
– কি রে কি ভাবছিস?

– কিছু না।

– আমি জানি!

– কি?

– তুই এটাই ভাবছিস নাহ তোর আর ভাইয়ার স্মৃতি গুলো কিসের ভালোবাসার না দুঃখের।

– তোর কি মনে হয়?

– দুঃখের তো হতেই পারে না। সেগুলো ভালোবাসার ছিল।

– ভালোবাসার স্মৃতিতে কি ভালোবাসা’র প্রয়োজন নেই।

– অবশ্যই আছে, ভালোবাসা না থাকলে সেগুলো কি ভালোবাসার স্মৃতি হয়।

– তাহলে তোর ধারনা ভুল। কারন আমাদের মাঝে ভালোবাসা নেই।

– না আছে।

– ইতি আমি বলছি তো নেই।

– আচ্ছা তাহলে কেন আছিস ভাইয়ার কাছে, বিয়েটা তো জোর করে হয়েছে তবে কেন যাস নি তার কাছ থেকে। এখন বল…

– যায় নি কারন… ওয়েট তুই কি বললি! জোর করে বিয়ে, তোকে এটা কে বললো উনি আমাকে জোর করে বিয়ে করেছে। আমি তো তোকে বলেনি আর উনি ও না তাহলে…

ইতি বিচলিত হয়ে গেল। সে আমতা আমতা করে বললো…
– আমি মানে আমাকে বলেছে মানে।

– কি লুকাচ্ছিস আমার কাছ থেকে।

ইতি ভড়কে গিয়ে বলো..
– কি লুকাবো, আর লুকানোর’ই বা কি আছে? বল!

– আমি জানি তুই, ভাইয়া, আর উনি আমার কাছ থেকে কিছু লুকাতে চাইছিস। কিন্তু সেটা কি? আমাকে বললেই বা কি হবে?

– নিহা এমন কিছু না।

– তাহলে আমার থেকে মুখ লুকিয়ে কেন কথা বলছিস? আচ্ছা বাদ দে সেদিন যেমন তুই আমাকে জোর করিস নি আমি ও করবো না। বিয়েটা উনি প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য করেছে আমি জানি। তবে এখনো তেমন কিছু করেনি কিন্তু করবে।

– তুই ভুল ভাবছিস ভাইয়া এমন কিছু করবে না।

– করবে?

– করবে না

– তুই চিনিস না ওকে তাই এভাবে বলছিস। উনি যে কি আর উনার মনে কি সেটা উনাকে দেখে বোঝা যায় না বুঝলি।

– না নিহা তুই ভুল। তুই কখনো তাকে বোঝার চেষ্টা করিস নি তাই এটা বলছিস। সেদিন উনি তোকে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বিয়ে করেনি বিয়ে করেছে যেন তোর সাথে ওই বুড়ো লোকটার বিয়ে আটকাতে পারে তাই।

– তুই এতো নিশ্চিত ভাবে কি করে বলছিস? আর যদি বিয়ে টা ভাঙতেই চাইতো তাহলে অনেক ধরনের পথ ছিলো বিয়েটা ভাঙার কিন্তু উনি তা না করে আমাকে বিয়ে করেছেন। তাহলে…

– হ্যাঁ তোর কথার যুক্তি আছে। তবে সবসময় পরিস্থিতি’র সাথে যুক্তি খাটে না নিহা।

– তুই কি বলতে চাস?

– ইতি এটাই বলতে চায় নিহা আহি তোমাকে বিয়ে করে দয়া করেছে। এতটুকু কথা বুঝতে পারছো না তুমি!

আমি আর ইতি সামনে তাকায় দেখি নিতি দাঁড়িয়ে আছে। নিতি কে আসতে দেখে আমরা দাঁড়িয়ে গেলাম। নিতি আমাদের কাছে এসে বলতে লাগলো…

– ভেবো না তোমাদের কথা আড়ি পেতে শুনছিলাম ব্যাপারটা তেমন না। আমি শুধু এখান দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন বিয়ের কথা টা কানে গেল তাই দাঁড়ালাম আর কি। আসলে বিয়েটা নিয়ে আমার কৌতুহল কম ছিল না নিহা। দিনরাত এটাই ভাবছিলাম তোমার মতো একটা মেয়েকে কি করে বিয়ে করলো আহি। যে তোমাকে দেখতে পারতো না, কথায় কথায় তোমাকে অপমান সে কি করে তোমাকে এতো কেয়ার করছে।‌ কিন্তু এখন,‌এখন আমার মাথায় সব ঢুকল। আসলে কি বলোতো আহি যেমন’ই হোক না কেন? ওর দয়ার পরিমান টা অনেক বেশি আর সেই দয়ার কারনেই বিয়ে করেছে ও তোমায়।

ইতি বলে উঠে…
– নিতি মুখ সামলিয়ে কথা বলো। ভাইয়া জানলে কিন্তু..

– আহি জানলে… ( হেসে আবার বলতে লাগল ) আহি জানলে এখন আর কি হবে, কিছুক্ষণ আমায় বকবে তাই বলে কি সত্যি টা বদলে যাবে। আচ্ছা নিহা তোমার কি মনে হয়েছিল, ও তোমায় ভালোবেসে বিয়ে করেছে।

আমি নিতি’র‌ দিকে তাকিয়ে আছি। নিতি আবার বলতে থাকে…

– একটু আগেই তো তুমিও বললে যে ও তোমাকে ভালোবাসে না। তাহলে তো এটা সত্যি যে ও তোমাকে শুধু দয়া করেছে আর কিছু না।

ইতি বলে উঠে…
– না ভাইয়া কোনো দয়া করেনি।

– ওহ্ আচ্ছা দয়া করেনি। তাহলে কি, ভালোবেসে বিয়ে করেনি,‌দয়া করেনি তাহলে কি? তাহলে তোমাকে কি কারনে বিয়ে করেছে। রক্ষিতা করে রাখার জন্য!

নিতি’র কথা শুনে আমি চমকে উঠি। ইতি নিতি বলে চেঁচিয়ে উঠে। আমার চোখের কোনে পানি জমে গেছে।‌ নিতি আবার বলে উঠে…

– ইতি চেচিও না, এটাই সত্যি! আহি তোমাকে রক্ষিতা করে রাখার জন্য’ই বিয়ে করেছে। আর কিছু না। আমি চিনি আহি কে, ও তোমার মতো মেয়েকে কাখনো ভালোবাসতে পারে না। এখন বিয়ে করে ঠিক’ই ঘরে রেখেছে কিন্তু যখন ওর মন ভরে যাবে তখন ঠিক’ই তোমাকে ছুড়ে ফেলে দেবে, তোমার থেকে ততোটাই দূরে থাকবে যেভাবে আমরা ময়লা আবর্জনা থেকে দূরে থাকি।

নিতি কথা শুনে আমি নিঃশব্দে কাঁদছি। ইতি কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না। নিতি বলে উঠে…
– নিহা! তুমি যথেষ্ট বুদ্ধিমতি মেয়ে, এতো টুকু বোঝার ক্ষমতা তোমার নিশ্চিত আছে বলেই আমি মনে করি তাই নয় কি!

আমি আর ওখানে দাঁড়ালাম না। দৌড়ে বাইরে এসে পরালাম।‌ চোখ দিয়ে অঝরে পানি ঝড়ছে। থামার নাম’ই‌ নিচ্ছে না। কাঁদতে কাঁদতে বাসায় চলে এলাম।

#চলবে….

আগের পর্বের লিংক
https://www.facebook.com/groups/371586494563129/permalink/426102109111567/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here