ভালোবাসি আমি যে তোমায় ২*পর্ব:১৮

0
1730

#ভালোবাসি_আমি_যে_তোমায়_২
#Sohani_Simu

১৫.

দিন শেষে ম্লান আলো এসে পড়েছে শহরের বুকে।এমন সময় নির্ভীকদের বাসার সামনে একটা কালো গাড়ি এসে দাঁড়ালো।গাড়ি থামার সাথে সাথে ইচ্ছেমতি কোনো বিলম্ব না করেই গাড়ি থেকে নেমে দৌঁড়ে বাসার ভেতরে ঢুকে অন্তকে ডাকতে লাগলো।নির্ভীকের মা ঘর থেকে বেড়িয়ে এসে খুশি হয়ে বললেন,
‘তোরা চলে এসেছিস?অন্ত উপরে ঘুমোচ্ছে।’

ইচ্ছমতি কথা বলতে বলতে সোফায় গিয়ে বসলো।একে একে জারিফ,কুহেলী,আফ্রা আর আরাফও বাসায় ঢুকলো।সবার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষ করে নির্ভীকের মা আর ইচ্ছেমতি অন্তকে ডাকতে গেল।অন্ত দুপুরে মেডিসিন খেয়ে ঘুমিয়েছে সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে উঠার নাম গন্ধ নেই।অন্তকে দেখেই ইচ্ছেমতি মন খারাপ করে বলল,
‘একদম শুকিয়ে গেছে।’

নির্ভীকের মা অন্তর মাথায় হাত বুলিয়ে ধীরে ধীরে ডাকতেই অন্ত চোখ খুললো।ইচ্ছেমতি অন্তর পাশে বসে অন্তর হাত ধরে বলল,
‘কেমন আছিস জানু?’

অন্ত ইচ্ছেমতিকে চিনতে পারলোনা ভ্রু কুচকে নির্ভীকের মায়ের দিকে তাকিয়ে ঘুম ঘুম কন্ঠে বলল,
‘ও কে অ্যান্টি?’

ইচ্ছেমতির মুখ মলিন হয়ে গেল।নির্ভীকের মা মুচকি হেসে বললেন,
‘তোকে বলেছিলাম না তোর বেস্টফ্রেন্ড আছে?ও তোর বেস্ট ফ্রেন্ড।তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নে।তোর ভাইয়া,আপু আর ভাবিও এসেছে।সকালে তোকে বলেছিলাম মনে আছে?’

অন্ত খুশি হয়ে বলল,
‘হ্যাঁ মনে আছে।ভাইয়া এসেছে?আর ভাবিও?’

নির্ভীকের মা অন্তর পাশে বসে বললেন,
‘হুম,ওরা কিন্তু তোকে খুব ভালোবাসে।ওরা তোর নিজের ভাই-বোন,ওদের সাথে ভাল করে কথা বলবি ঠিক আছে?’
অন্ত মন দিয়ে কথা গুলো শুনে ইচ্ছেমতির দিকে তাকিয়ে খুশি হয়ে বলল,
‘তুমি আমার বেস্টফ্রেন্ড।এখন থেকে এখানেই থাকবে?’

ইচ্ছেমতিও খুশি হয়ে বলল,
‘হুম আমরা বেস্টফ্রেন্ড কিন্তু এখানে থাকবোনা আমরা এখন থেকে তোদের বাসায় থাকবো।এটা তো অ্যান্টিদের বাসা এখানে মজা হয় না।আমরা ওই নতুন বাসায় গিয়ে অনেক মজা করবো ওকে?’

‘ওকে।’

বলে অন্ত তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিচে আসলো।তাকে খুব খুশি দেখাচ্ছে।নিচে এসেই অন্ত সবাইকে দেখে মুচকি হেসে নির্ভীকের মায়ের পেছনে লুকিয়ে পড়লো।জারিফ উঠে গিয়ে অন্তর এক হাত ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে এসে খুশি হয়ে বলল,
ছোটপাখি কেমন আছিস?চিনতে পারছিস আমাদের?’

অন্ত মুচকি হেসে বলল,
‘হুম তুমি ভাইয়া।’

কুহেলী অন্তর পাশে দাঁড়িয়ে অন্তকে একপাশ থেকে জড়িয়ে ধরে বলল,
‘এই তো চিনতে পারছে।আমার নাম কি জানিস?’

অন্ত ফট করে হুদায় একটা নাম বলে দিল।সাথে সাথে আরাফ বাদে সবাই হেসে উঠলো।আরাফ তো সেই তখন থেকে অন্তর দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।অন্তর ফোলা ফোলা চোখ আর স্নিগ্ধ মুখ দেখে আরাফ ফিদা।নির্ভীক এখানে থাকলে আরাফের তাকিয়ে থাকা দেখে নির্ঘাত ঝামেলা করতো।।কুহেলী সবাইকে হাসতে বারণ করে বলল,

‘আমার নাম কুহেলী আর তোর ভাইয়ার নাম জারিফ।ওই ভাইয়াটার নাম আরাফ,আপুর নাম আফ্রা আর ওর নাম ইচ্ছে,মনে থাকবে?’

‘হুম।’

অন্ত সোফায় গিয়ে আফ্রা আর ইচ্ছের মাঝখানে বসে সবার সাথে কথা বলতে লাগলো।আরাফ অন্তর সাথে কোনো কথা বলছেনা দেখে অন্ত আরাফের দিকে তাকিয়ে চিন্তিত হয়ে বলল,
‘আরাফ ভাইয়া কথা বলতে পারেনা?’

ইচ্ছেমতি অন্তর হাত ধরে বলল,
‘হুম পারে।তোর এখন ভাইয়ার সাথে কথা বলতে হবে না,তুই আমার সাথে কথা বল।’

অন্ত মুচকি হেসে বলল,
‘জানো আমার একটা ফ্রেন্ড আছে।রিংকু নাম ওর।ভূতের ছবি আঁকতে পারে।আমি ওর কাছে ছবি আঁকানো শিখি।’

ইচ্ছেমতি হাসতে হাসতে বলল,
‘ওই রিংকু ভুটকু টা তোর ফ্রেন্ড? সিরিয়াসলি? ‘

অন্ত উৎসুক কন্ঠে বলল,
‘তুমি চিনও ওকে?এত মোটা!!জানো ড্রেস পরলেও ওর ভুরি বের হয়ে থাকে।’

বলে অন্তও হাসতে শুরু করলো।এভাবে কথার পৃষ্ঠে কথা চলতে চলতে অন্ত সবার সাথে একদম ফ্রী হয়ে গেল।রাতে ডিনার সেরে জারিফ অন্তকে নিয়ে নিজের বাসায় চলে গেল।নির্ভীকের সাথে আগের থেকেই সব কথা হয়ে আছে।নতুন বাসায় অন্ত নিজে নিজেই রুম পছন্দ করলো।নির্ভীকের বেলকুনির সোজা রুমটাতেই অন্ত থাকবে।ইচ্ছেমতিও অন্তর সাথে থাকবে।জারিফ অন্তর পাশের রুমে থাকবে, তার পাশে আফ্রা আর একদম কর্নারে আরাফের রুম।আরাফ এখানে জারিফের সব শর্ত মেনে এসেছে।কয়েকদিন থেকেই তাকে চলে যেতে হবে।রাতে ইচ্ছেমতি অন্তকে অন্তর ফোন দিয়ে সবকিছু বুঝিয়ে দিল।ফোনের গ্যালারিতে পুরোনো ছবি গুলো দেখে অন্তর অসস্তি হতে লাগলো।ডক্টর এসব দেখাতে নিষেধ করেছিল।অন্ত নিজের মাকে দেখলেও অসস্তিতে পরতো তাই জারিফ তার বাবা-মাকে এখানে আসতে দেইনি।নির্ভীকও অন্তর সামনে আসা বন্ধ করে দিয়েছে কারন ডক্টর বলেছেন নির্ভীকের নাম অন্তর কাছে বিরাট ধাঁধা,সারাদিন যতবার নির্ভীকের নাম শুনে ততবার অন্তর টেনশন হয় আর অতিরিক্ত টেনশন থেকে মাথাব্যথা শুরু হয়।এদিকে ইচ্ছেমতি না জেনে একটা ভুল করে বসলো।অন্ত ছবি গুলো একটার পর একটা দেখেই যাচ্ছে। অসংখ্য ছবির মধ্যে একটা ছবিতে এসেই সে থেমে গেল।ছবিতে অন্ত চোখবন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে আর পেছন থেকে নির্ভীক ওকে জড়িয়ে ধরে আছে।একদিন ছাদে ইচ্ছেমতি দূর থেকে এই সুন্দর ছবিটা তুলেছিল।ছবিতে নির্ভীকের মুখ দেখা যাচ্ছে না।অন্ত অনেক মনে করার চেষ্টা করেও মনে করতে না পেরে ইচ্ছেমতির দিকে তাকিয়ে বলল,
‘এই ছেলেটা কে?’

ইচ্ছেমতি মুচকি হেসে বলল,
‘আমি কি করে জানবো?তুই তার সাথে প্রেম করছিলি তুই ভাল জানিস।’

অন্ত ভ্রু কুচকে বলল,
‘প্রেম করছিলাম?কখন?কিসের প্রেম?’

ইচ্ছেমতি বলল,
‘এসব তোকে পরে বুঝিয়ে দিব ওকে?এখন ঘুমোতে হবে,ফোনটা দে কালকে আবার দেখিস।’

অন্ত ইচ্ছেমতিকে ফোন দিয়ে শুয়ে পরলো।ইচ্ছেমতি অন্তর ফোন ড্রয়ারো রাখলো।অন্তর পাশে শুয়ে ডিম লাইট অন করে বলল,

‘এখন থেকে আমরা ফোনে গেইমস খেলব ওকে?’

অন্ত উঠে বসে বলল,
‘গেইমস খেলতে আমার খুব ভাল লাগে।রিংকুর সাথে খেলি।’

ইচ্ছেমতিও উঠে বসে অন্তর সাথে হাত মিলিয়ে একসাথে গেইমস খেলার চুক্তি করে নিল।ইচ্ছেমতি চাইছে অন্তর সাথে তার সম্পর্ক আবার আগের মতো হোক।দুজন মধ্যরাত পর্যন্ত গল্প করল।কিচেনে গিয়ে কফি বানিয়ে খেল,ফ্রিজ থেকে চকলেট আর আইসক্রিমও খেল।অন্তর আজকে খুব ভাল লাগছে।এতদিন বড়দের সাথে থেকে অনেক বোর হয়েছে আজকে সমবয়সী কাউকে পেয়ে তার ভালই সময় কাটছে কিন্তু মাথাব্যথার জন্য শান্তি পাচ্ছে না।ইচ্ছেমতিকে বলছেও না তার মাথাব্যথা করছে।দুজন আড্ডা শেষে আবার যখন বিছানায় ঘুমোতে আসলো তখন রাত দুটো বাজে।অন্তর এখন অনেক বেশি মাথাব্যথা করছে।শুয়েও থাকতে পারছেনা বসেও থাকতে পারছেনা।অন্তকে এমন উস খুস করতে দেখে ইচ্ছেমতি চিন্তিত হয়ে বলল,

‘এই কি হয়েছে তোর?কোথায় প্রবলেম হচ্ছে?’

অন্ত ফুঁপিয়ে উঠে বলল,
‘মাথাব্যথা করছে।অ্যান্টিকে ডাকো,মেডিসিন খেতে হবে।’

শেষের কথা গুলোতে কোন জোর ছিলনা।অন্ত ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে।ইচ্ছেমতি ভয় পেয়ে দৌঁড়ে জারিফের রুমে যেয়ে দরজায় জোরে জোরে ধাক্কা দিয়ে বলল,
‘ভাইয়া?ভাবি?তাড়াতাড়ি এসো।অন্তর কি যেন হচ্ছে।মাথাব্যথা করছে,কথা বলতে পারছেনা।’

জারিফ আর কুহেলী সারারাত গল্প সল্প করে কেবলই একটু ঘুমিয়েছে তখনই ইচ্ছেমতির ডাকে ঘুম ভেঙ্গে গেল।ওরা ঘর থেকে বেড়িয়ে আসার আগে ইচ্ছেমতির চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে আরাফ আর আফ্রা অন্তর ঘরে আসে।আরাফ অন্তর গাল ঝাকিয়ে ভীত কন্ঠে বলল,

‘এই জানপাখি!কি হয়েছে তোমার?কোথায় কষ্ট হচ্ছে?’

অন্তর বন্ধ চোখের কোণ বেয়ে পানি পরছে,দূর্বল হাতে মাথায় আর কপালে হাত দিচ্ছে।জারিফ আর কুহেলী এসে অন্তকে এমন করতে দেখে ভয় পেয়ে যায়।আফ্রা টেবিল থেকে মেডিসিন বক্স নিয়ে আসে কুহেলী অন্তর মেডিসিন গুলো বুঝিয়ে নিয়েছিল তাই হন্ত দন্ত হয়ে অন্তকে মেডিসিন খাইয়ে দিল কিন্তু অন্ত খেতে পারলোনা।উল্টো আরাফের গায়ে বমি করে দিল।লক্ষণ খারাপ দেখে জারিফ নির্ভীক কে ফোন করলো।

রাত দুটো বাজে।ঘরের মধ্যে টেবিল ল্যাম্প জ্বালিয়ে গুন গুন করে পড়া মুখস্থ করছে নির্ভীক।পাশের ঘরে প্রান্ত পড়ার নাম করে ঘুমোচ্ছে।প্রান্তর মা ছেলের ব্যাপারে অনেক যত্নশীল।একটা মাত্র সন্তান তাই সবসময় মাথায় তুলে রাখেন।রাতের মধ্যে কয়েকবার উঠে প্রান্তর ঘরে যেয়ে প্রান্তকে দেখে আসেন।সামনেই প্রান্তর ফাইনাল এক্সাম সেজন্য উনি এখন আরও বেশি যত্নশীল হয়েছেন।উনি ঘুম থেকে উঠে প্রান্তর ঘরে যেয়ে দেখেন প্রান্ত ঘুমোচ্ছে।ছেলের বুকের উপর থেকে মোটা বই সরিয়ে দিয়ে লাইট বন্ধ করে পাশের ঘরে নির্ভীককে দেখতে গেলেন।নির্ভীককে এত রাতেও টেবিলে বসে পড়তে দেখে উনি আবার প্রান্তর ঘরে যেয়ে প্রান্তকে ডেকে তুলে বললেন,

‘তুমি ঘুমোচ্ছো?আর চাঁদকে দেখো এখনও পড়ছে।সেজন্যই তুমি ওর মতো সিজি তুলতে পারনা।সারারাত ঘুমাও সকালেও উঠতে উঠতে দুপুর হয়ে যায়।তাহলে পড়বে কখন তুমি?এখন ঠিক হয়ে বসে থেকে পড়,আমি একটু পর এসে আবার দেখে যাব।’

প্রান্ত মায়ের কথা এক কান দিয়ে শুনে আরেককান দিয়ে বের করে দিয়ে আবার শুয়ে পরলো কিন্তু অসময়ে ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ায় তার আর ঘুম আসছে না।তার এখন ইচ্ছে করছে পাশের ঘরে যেয়ে নির্ভীককে উরাধুরা কয়েকটা কিল ঘুঁষি দিতে।সত্যি সত্যি প্রান্ত রেগে পাশের ঘরে যেয়ে ধপ করে নির্ভীকের পিঠে কিল দিয়ে বলল,

‘শালা বিদ্যাসাগর হয়েছিস?এত কি বাল পড়া লাগে ঘুম নাই?’

নির্ভীক ল্যাপটপ আর বই বন্ধ করে হাত পা টান টান করতে করতে বলল,

‘ঘুম আসছেনা তাই ভাবলাম একটু পড়াশুনা করি।’

‘অহ হো বাঘিনীর মুখে চুমু দিতে না পেরে তোমার ঘুম আসছেনা বুঝি?’

নির্ভীক প্রান্তর পেটে ঘুঁষি দিয়ে বলল,
‘আজকে সকালেরটা দিয়েই চালিয়ে নিতে হবে রে ভাই।ব্যাপারটা সত্যিকারের বাঘের মুখে চুমু দেওয়ার চেয়েও রিস্কি হয়ে গেছে।ছাগলের দল চলে এসেছে।এখন আমি আর চান্স পাচ্ছিনা বাট একবার যদি পাই এ্যাডভান্স দিয়ে এগিয়ে থাকবো।’

প্রান্ত টেবিলে হেলান দিয়ে বুকে হাত গুজে ভ্রু কুচকে বলল,
‘তোর কথা কিছু বুঝতে পারছিনা।বোনুকে না দেখে একটা দিনও থাকতে পারবিনা,দিনশেষে একটু নাছুলে নাকি ঘুমোতে পারবিনা তাহলে ওকে ওদের বাসায় কেন যেতে দিলি?আরাফ ভাইয়া আছে তাও কিছু বলছিসনা।কি করতে চাইছিস কি তুই?’

নির্ভীক চেয়ার ছেড়ে উঠে বিছানায় শুয়ে বলল,
‘আমি আবার কি করব।প্রেম করা ছাড়া তো আমার আর কোনো কাজ নেই।’

প্রান্ত হেসে বলল,
‘নিজের বাসায় চোরের মতো উকি দেওয়া কোনো প্রেম হলো নাকি?প্রেম করতে হবে মাঠে-ময়দানে,খোলা আকাশের নিচে,নদীর ধারে কিংবা রাস্তায়।গার্লফ্রেন্ডের চৌদ্দ গোষ্ঠীর চোখে ধুলো দিয়ে তাদের বাসায় ঢুকে তাকে তুলে নিয়ে আসতে হবে।’

নির্ভীক উঠে বসে বলল,
‘ওকে ডান,এখনই তুলে নিয়ে আসবো আর…..’

আর কিছু বলার আগেই নির্ভীকের ফোন বেজে উঠে।এত রাতে জারিফের কল দেখে নির্ভীক ভয় পেয়ে যায়।মনে মনে ভাবে অন্তর কিছু হলো নাতো!!তাড়াহুরো করে কল ধরতেই জারিফ উদ্বিগ্ন হয়ে বলল,

‘চাঁদ কোথায় তুই,ছোটপাখি অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’

নির্ভীক উত্তেজিত হয়ে বলল,
‘হোয়াট!কি হয়েছে ওর?

‘মাথাব্যথা করছে।মেডিসিন খেতে পারছেনা।সেন্সলেস হওয়ার মতো হয়ে যাচ্ছে।কোন হসপিটালে নিয়ে যাবো?’

নির্ভীক দৌঁড়ে ঘর থেকে বাহিরে যেতে যেতে বলল,
‘ইন্জেকশন কর জলদি।একসাথে দুটো।কখন থেকে এমন হচ্ছে?আগে বলনি কেন? আমি আসছি।’

অন্ত পুরো সেন্সলেস হয়ে গেল।বাসায় যারা আছে কেউ ইন্জেকশন করতে জানে না।পাশের বাসায় নির্ভীকের মা ডক্টর কিন্তু উনি এখন রাতের ডিউটিতে হসপিটালে আছেন।আরাফ একটা ঢোক গিলে কাঁপা কাঁপা হাতে ইন্জেকশন করে দিল।ভয়ে সবার চোখ মুখ শুকিয়ে গিয়েছে।জারিফ গাড়ি বের করতে গিয়েই দেখলো নির্ভীক বাইক নিয়ে চলে এসেছে।পনেরো মিনিটের রাস্তা কিন্তু তার আসতে পাঁচমিনিটও লাগেনি।নির্ভীক দৌঁড়ে সিঁড়ি ভেঙ্গে উপরে অন্তর ঘরে আসলো।বিছানার উপর উঠে অন্তর পাশে বসে অন্তর গালে কপালে হাত দিয়ে আরাফের দিকে তাকিয়ে বলল,

‘ইন্জেকশন করেছো?পানি কোথায়?পানি নিয়ে আসো এক বালতি,মাথায় পানি দিতে হবে।এত জ্বর কখন আসলো?’

আরাফ মেঝেতে হাঁটু গেরে বসে ছিল পানির কথা শুনে হন্ত দন্ত হয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে বালতি খুঁজতে লাগলো।ওয়াশরুমে শাওয়ার সিস্টেম করা আছে তাই বালতি নেই আরাফকে খালি হাতে বেড়িয়ে আসতে দেখেই কুহেলী আরাফকে নিয়ে বালতি নিতে গেল।একটু পর আরাফ এক বালতি পানি নিয়ে আসলো।নির্ভীক বিছানার ধারে বসে অন্তকে কোলে নিয়ে অন্তর মাথা নিজের ডান হাতের কনুই এর ভাজে রাখলো।বাম হাতে পানির নাগাল পাচ্ছেনা দেখে রেগে আরাফকে বলল,

‘দাঁড়িয়ে আছো কেন?পানি দাও।’

আরাফ তো হতভম্ব হয়ে আছে,কি করবে বুঝতে পারছেনা।আরাফকে সরিয়ে কুহেলী মগ দিয়ে পানি তুলে দিতে লাগলো।জারিফ গাড়িতে ওয়েট করছে।অন্তকে নিয়ে কেউ নিচে নামছেনা দেখে নিজেই উপরে উঠে গেল।নির্ভীক অন্তর চোখেমুখে পানির ছিটা দিতেই অন্ত চোখ কুচকে ফেলল।হাত-পা সামান্য নাড়ালো কিন্ত জ্বরের জন্য চোখ খুলতে পারছেনা।নির্ভীক কয়েকবার অন্তর গাল ধরে ডেকেও কোন লাভ হলো না।নির্ভীক ফোনের ফ্ল্যাশ অন করে অন্তর নাক কান ভাল করে চেক করে দেখলো রক্ত আসছে কিনা।রক্ত আসছেনা দেখে চিন্তা মুক্ত হল।টাওয়েল দিয়ে মাথা মুছে অন্তকে বালিশে শুয়ে দিয়ে নির্ভীক মেঝেতে নেমে চেয়ার টেনে বসলো কারন অন্তর মাথায় পানি দেওয়ার সময় নির্ভীকের ট্রাউজার ভিজে গিয়েছে।চেয়ারে বসে নির্ভীক মেডিসিন বক্স নিয়ে দেখতে দেখতে বলল,
‘কি কি মেডিসিন দিয়েছো তোমরা?’

জারিফ অন্তর পাশে বসে বলল,
‘ব্যথা বেশি হলে অ্যান্টি দুটো মেডিসিন খেতে বলেছিল একটাও খাওয়াতে পারিনি।তুই বলার পর আরাফ এই একটা ইন্জেকশন করেছে।’

নির্ভীক ভ্রু কুচকে আরেকটা নতুন সিরিন্জ নিয়ে মেডিসিন তুলতে তুলতে বলল,
‘একটা কেন আমি তো দুটো করতে বলেছিলাম আর ব্যথা শুরু হলেই মেডিসিন দিতে হতো।ব্যথা বেশি হলে তো কিছু খেতে পারেনা তখন ইন্জেকশন করতে হবে।’

আফ্রা মুখ মলিন করে বলল,
‘আমরা তো কেউ ইন্জেকশন করতে পারিনা।আরাফ ভাইয়া ভয়ে ভয়ে একটা করতেই তুমি চলে আসলে।’

নির্ভীক অন্তর বাম হাতের উল্টো পিঠে মোটা একটা নীলাভ রগে ইন্জেকশন পুশ করতে করতে বলল,
‘দেখ দেখে শিখে নাউ।আগের টা নিশ্চয় কনুই এর ভাজে করেছ তাইনা?’

আরাফ কিছু বলল না।ইচ্ছেমতি বলল,
‘হুম তাও একবারে নয় দুইবারে।’

নির্ভীক সিরিন্জটা ফেলে দিয়ে বক্স আটকিয়ে এক সাইডে রেখে জারিফের দিকে তাকিয়ে বলল,
‘ইন্জেকশন করতে হলে হাতের উল্টো পিঠে করবা।কনুইয়ে করলে হাত ব্যথা করে আর তোমরা এতটা কেয়ারলেস আমি আগে বুঝতে পারিনি।কি বলেছো ওকে?কি টেনশন করেছে ও?কখন থেকে মাথা ব্যথা ওর?আর এত জ্বর উঠলো কখন?’

ইচ্ছেমতি সবকিছু খুলে বলল কিন্তু বকা খাওয়ার ভয়ে ফোনের কথাটা চেপে গেল।মনে মনে ভাবলো জীবনেও আর অন্তর হাতে ফোন দিবেনা।নির্ভীক ইচ্ছেমতির কাছে সব শুনে সবার দিকে তাকিয়ে বলল,

‘তোমরা ওকে কিছু মনে করানোর ট্রাই করছো কেন?ডক্টর এসব করতে নিষেধ করেছে।ঢাকা থেকে আসার পর শুধু একবারই ব্যথা করেছিল,মেডিসিনেই সেরে গেছে।তোমরা আসলা আর আবার শুরু হল।আমি নিয়ে যাব ওকে।’

জারিফ মুখ কাঁচুমাচু করে বলল,
‘সন্ধ্যার থেকেই অনেক হাসি খুশি ছিল।আমরা বুঝতে পারিনি ওর মাথাব্যথা করছিল।আর এমন হবেনা।’

নির্ভীক ভেতরে ভেতরে রেগে গেল কিন্তু স্বাভাবিক কন্ঠে বলল,
‘শোনো ওকে তোমরা চা কফি কিছু খাওয়াবানা,ক্যাফেইন আর ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়া নিষেধ।প্রোটিন বেশি দিবা কিন্তু মোটা মাংশ দিবানা,চিকেন দিবা।সকালে ডক্টরের কাছে নিয়ে যেতে হবে।ব্যথা বেশি হলে ডক্টর এখনই ট্রিটমেন্ট শুরু করতে চেয়েছেন।’

জারিফ ভ্রু কুচকে বলল,
‘কয়দিন হলো?এখনও দশ বারো দিন পর ডোজ শুরু করার কথা।’

নির্ভীক অন্তর এক হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে বলল,

‘আমরা যখন চাইবো তখনই দিবে কিন্তু আমি চাইছি ওর ঘাটতি গুলো একটু পুরণ হোক।এত কড়া ডোজের মেডিসিন কি করে সহ্য করবে বলো তো?ক্লট না থাকলে আমি এসব কিছু করতে দিতাম না।’

কেউ কিছু বলল না।সবাই মন খারাপ করে অন্তর দিকে তাকালো।নির্ভীকের হাতের মধ্যে অন্তর হাত নড়ছে বুঝতে পেরে নির্ভীক খুশি হয়ে অন্তর হাতে ঠোঁট চেপে ধরে অন্তর দিকে তাকিয়ে থাকলো।ইচ্ছেমতি আর আফ্রা একে অপরের দিকে তাকিয়ে মুখ টিপে হাসলো।জারিফ দেখেও না দেখার ভান করে কুহেলীর পাশে দাঁড়ালো আর আরাফ ভ্রু কুচকে নির্ভীকের দিকে তাকিয়ে থাকলো।অন্ত ধীরে ধীরে চোখ খুলছে দেখেই নির্ভীক বাহিরে গিয়ে দরজার পাশে দাঁড়ালো।নির্ভীক চলে গেল কেন আরাফ কিছু বুঝতে পারছেনা।নির্ভীকে এত সুন্দর করে সবকিছু সামলাতে দেখে আরাফের বুকটা হুহু করছে।ভেতরের মানুষ বলছে নির্ভীক অন্তকে তোর থেকে বেশি ভালোবাসে।অন্ত তোর কাছে নিরাপদ নয়,তুই থেকেও অন্তকে সুস্থ করতে পারলিনা।একবারের জন্যও বুঝতে পারলিনা অন্তর এত জ্বর।এসব ভেবে আরাফ নীরবে তার মন আর মস্তিষ্কের সাথে লড়ায় করছে।একারনে তাকে অন্যমনস্ক দেখাচ্ছে।অন্ত চোখ খুলে দুএকটা কথা বলতে বলতে আবার ঘুমিয়ে গেল।বাকি রাত সবাই অন্তর পাশে বসে থেকে ভোরের দিকে ঘুমোতে চলে গেল।নির্ভীকও নিজের বাসায় চলে গেল।ইচ্ছেমতি অন্তর পাশে শুয়ে ঘুমিয়ে পরলো।

ফোনের ভো ভো শব্দে অন্তর ঘুম ভেঙ্গে গেল কিন্তু চোখ মেলে রাখা দায়।মাথাটা বেশ ভার ভার,দেহ ক্লান্ত।বাম পাশ ফিরে শুয়ে ধীরে ধীরে চোখ খুলে জানালা দেখতে পেল।শুয়ে শুয়ে কাঁচের জানালা দেখছিল তখনই ইচ্ছেমতির কথা শুনতে পেল।ইচ্ছেমতি অন্তর পাশে শুয়ে ছিল।তার ফোনে কল আসায় তার ঘুমও ভেঙ্গে গেল।কল রিসিভ করে ঘুম ঘুম কন্ঠে বলল,

‘আজকে ভার্সিটি যাবো না।অন্ত ভাল নেই।সুস্থ না হলে ভার্সিটিতে যাবে না।’

অন্যপাশ থেকে আইরিন বলল,
‘তুই বললে আমরা একবার গিয়ে অন্তকে দেখে আসি।’

ইচ্ছেমতি উঠে বসে বলল,
‘না না তার কোনো দরকার নেই।আমি যাচ্ছি। ওয়েট কর তোরা সবাই।’

ইচ্ছেমতি ফোন রেখে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হতে গেল।ঘড়িতে এখন এগারোটা বাজে,এগারোটা পঁয়তাল্লিশে তার ক্লাস আছে।চেন্জ করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করতেই খেয়াল করলো অন্ত তার দিকে তাকিয়ে আছে।ইচ্ছেমতি মুচকি হেসে বলল,

‘উঠেছিস?মাথাব্যথা করছে?’

অন্ত কিছু না বলে অন্যদিকে তাকালো।চোখ বন্ধ করে কয়েক সেকেন্ড পর আবার তাকালো।ইচ্ছেমতি অন্তর পাশে দাঁড়িয়ে বলল,
‘আবার ঘুমাবি?’

অন্ত ধীরে ধীরে উঠে বসে বলল,
‘তুমি কোথায় যাচ্ছ? আমিও যাব।’

ইচ্ছেমতি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
‘তুমি নয় তুই বলবি।তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেশ হ তোকে ডক্টরের কাছে যেতে হবে।’

অন্ত ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে ইচ্ছেমতি ঘরে নেই।নিচে এসে দেখে আরাফ টেবিলে বসে নাস্তা করছে আর ইচ্ছেমতি দরজা দিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে।ইচ্ছেমতিকে দেখে অন্ত ওর দিকে যেতে যেতে বলল,

‘এই দাঁড়াও আমিও যাবো।’

আরাফ অন্তকে দেখেই ডাকলো কিন্তু অন্ত তার কথা কানেই নিল না।ইচ্ছেমতি ফিরে আসলো কারন অন্তকে নিয়ে বাহিরে যাওয়া ঠিক হবেনা।আরাফ অন্তর পাশে এসে দাঁড়িয়ে জ্বর চেক করার জন্য অন্তর কপালে হাত দিতেই অন্ত বিরক্ত হয়ে আরাফের হাত সরিয়ে দিল।আরাফ অন্তর একহাত ধরে বলল,
‘ব্রেকফাস্ট করবে চলো।’

অন্ত ইচ্ছেমতির দিকে তাকিয়ে বলল,
‘ওর সাথে করব।’

ইচ্ছেমতি অন্তর কাছে এগিয়ে এসে বলল,
‘আমি তো এখনই করলাম তাও চল বসে আছি আমি।’

অন্ত খুশি হয়ে আরেকহাতে ইচ্ছেমতির হাত ধরলো।ইচ্ছেমতিকে তার খুবই পছন্দ হয়েছে।নির্ভীকদের বাসায় থাকতে খালার হাতে খেত এখন ইচ্ছেমতির হাতে খাচ্ছে।ইচ্ছেমতি যা করছে সেও তাই করছে।সারাদিন দুমিনিটের জন্যও ওকে চোখের আড়াল হতে দেইনি।

সন্ধ্যায় আরাফ আর জারিফ সোফায় বসে নতুন অফিসের কিছু কাগজপত্র দেখছিল।ইচ্ছেমতি ফোনহাতে নিয়ে আরাফের কাছে এসে দাঁড়ালো।পেছন পেছন অন্তও ফোন হাতে নিয়ে আরাফের কাছে দাঁড়ালো।ইচ্ছেমতি অন্তর ফোনের সিম আর মেমোরি কার্ড খুলে ওকে ফোন দিয়েছে কারন অন্ত ফোন নেওয়ার জন্য জেদ করছিল।ইচ্ছেমতি ভেবেছে অন্তর ফোনে আর কোন ছবি নেই কিন্তু অন্ত ভাল থাকতে নির্ভীক আর ওর ছবিটা কয়েকজায়গায় কপি করে রেখেছিল।এখনও ফাইলে সেই কপি গুলো জমা হয়ে আছে।সকালে অন্ত ফোন নেওয়ার জন্য নয় ওই ছবি দেখার জন্য জেদ করছিল।ফোন পেয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করে ছবিটা দেখে তারপরই সে শান্ত হয়েছে।কেউ এসবের কিছুই জানেনা।

অন্তকে নিজের কাছে দাঁড়াতে দেখে আরাফ মাথা তুলে অন্তর দিকে তাকালো।অন্ত ইচ্ছেমতির দিকে তাকিয়ে আছে।ইচ্ছেমতি আরাফের দিকে তাকিয়ে বলল,

‘ভাইয়া আমাকে কিছু মানি সেন্ড করো তো।’

ইচ্ছেমতির দেখাদেখি অন্তও আরাফকে বলল,

‘ভাইয়া আমাকে কিছু মানি সেন্ড করো তো।’

আরাফ জানে অন্তর ফোনে কোনো সিম কার্ড নেই তাই ওর ফোনে টাকা যাবেনা।আরাফ নিজের ফোন বের করে ইচ্ছেমতির ফোনে টাকা পাঠালো।ইচ্ছেমতি যেতে যেতে বলল,
‘এসেছে থ্যাংক ইউ।’

অন্তও যেতে যেতে একই কথা বলল।ওরা যেতেই জারিফ চিন্তিত হয়ে বলল,
‘ছোটপাখি এমন বোকার মতো বিহেভ করছে কেন?’

আরাফ মলিন মুখ করে পেপারের দিকে তাকিয়ে বলল,
‘শিখছে।ডক্টর কি বলল শুনলিনা?’

আরাফের ফোনে কল আসায় আরাফ উঠে দাঁড়ালো।ইউএস থেকে ইন্ডিয়ান এক ফ্রেন্ড কল করেছে।আরাফ একটু দূরে যেয়ে কল রিসিভ করল।কথা বলা শেষে বিষন্ন মুখ করে ফিরে এসে বলল,
‘পাঁচদিনের মধ্যেই আমাকে ওখানে জয়েন দিতে হবে নাহলে চাকরিটা থাকবেনা।’

জারিফ ভ্রু কুচকে বলল,
‘দেরি করছিস কেন যা।’

আরাফ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।জারিফ আরাফের দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুচকে বলল,

‘যাবিনা বলছিস?না যেয়ে কি করবি?ছোটপাখি তুই থাকলেও অসুস্থ না থাকলেও অসুস্থ,দেখতেই তো পাচ্ছিস কি অবস্থা করেছিস ওর।সব শেষ করে দিয়েছিস।’

আরাফ মাথা নিচু করে চোখমুখ শক্ত করে বলল,
‘আমি কোথাও যাব না।’

জারিফ শান্ত কন্ঠে বলল,
‘আমি টিকিট করে দিব কবে যাবি বল?’

আরাফ রাগ করে নিজের রুমে চলে গেল।নিজের উপরই রাগ হচ্ছে তার।কেন সে জারিফকে বলতে গেল যেখানে সে জানতো জারিফ জানতে পারলে যেভাবেই হোক তাকে পাঠিয়েই ছাড়বে।দরকার হলে মেরে কার্টুনে প্যাক করে মালবাহী বিমানে করে পাঠিয়ে দিবে।এদিকে তার মা হার্ট নিয়ে অসুখে ভুগছে।নিপাকে বিয়ে করার জন্য প্রেশার দিচ্ছে।যতক্ষণ নিপাকে বিয়ে না করবে ততক্ষণ তার মা কোন ঔষধ খাবেনা।যত সময় যাচ্ছে আরাফের মায়ের শরীর ততই খারাপ হচ্ছে।আরাফ কি করবে কিছু বুঝতে পারছেনা।অন্তর শরীরও ভাল নয় নাহলে সে এখনই জোর করে অন্তকে বিয়ে করতো।

চলবে………………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here