ভালোবাসি তাই পর্ব-২৬

0
2145

#ভালোবাসি তাই
part:26
Writer:Afifa Jannat Maysha

🍁

ধীরে ধীরে চোখ মেলে তাকালাম আমি। চোখের সামনে সবটাই ঝাপসা। বাপাশের চোখটা খুলতে পারছিনা। বুঝতে পারছি মুখের বা পাশটায় ব্যান্ডেজ করে রাখা হয়েছে। কতক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর চোখের সামনে স্পষ্ট হতে লাগলো সব। ডান চোখ দিয়েই দেখতে পারছি শুধু। মুখের অসহ্য জ্বালা কমেনি এখনো। মৃত্যু যন্ত্রণাও বুঝি এমন কষ্টের হয়।

একচোখ দিয়েই পিটপিট করে দেখতে লাগলাম চারদিকে। খুব বেশি ভুল নাহলে এমুহূর্তে হসপিটালের কোনো কেবিনে আছি আমি। রুমের জিনিসগুলো তো তাই বলছে। আমায় চোখ খোলতে দেখেই অস্থির হয়ে উঠলেন কেবিনে উপস্থিত একজন নার্স। খুব তারাতাড়ি করে বেরিয়ে গেলেন কেবিন থেকে।

কিছুক্ষণ পরেই কেবিনে ঢুকলেন একজন ডাক্তার। সাথে আছে মা -বাবা, ভাইয়া, আপুসহ আরো অনেকে। আপু এখনো বিয়ের সাজ নিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কেঁদে চলেছে। আপুকে দেখে অন্য সবকিছু ভুলে গেলাম যেনো। মনে শুধু একটাই প্রশ্ন আসছে। তাহলে কি ওদের বিয়েটা হয়ে গেছে? এতক্ষণে তো বিয়ে হয়ে যাওয়ারই কথা। এসব ভাবতেই মুখের যন্ত্রণার থেকেও ভয়ানক যন্ত্রণা হচ্ছে মনে।

মায়ের ফুঁপানোর শব্দ কানে আসতেই ভাবনার সুতো ছিড়লো আমার। আমি নিস্তব্ধ হয়ে শুয়ে আছি এখনো। কথা বলতে পারছি না। ডাক্তার সবাইকে দূরে দূরে থাকতে বলে আমার কাছে এসে দাঁড়ালেন। কতক্ষণ আমায় পর্যবেক্ষণ করেই বেরিয়ে গেলেন কেবিন থেকে। যাওয়ার আগে সবাইকে একসাথে আমার কাছে আসতে বারণ করলেন তিনি।

ডাক্তার চলে যেতেই মা ছুটে এসে দাঁড়ালো আমার পাশে। এতোক্ষণ বোধহয় খুব কষ্টে কান্না আটকে দাঁড়িয়ে ছিলো। তাইতো আমার হাত ধরে নিয়েই জোরে জোরে কাঁদতে লাগলেন তিনি। মায়ের কান্নায় আমার কষ্ট যে আরও বেড়ে যাচ্ছে সেটা কি মা বুঝতে পারছে না? কান্নার দমকে কথা বলতে পারছে না মা। তবে কিছু বলতে চাইছে হয়তো । আমি ধীর কন্ঠে বলে উঠলাম

– তোমার কান্না সহ্য হচ্ছে না মা। প্লিজ কান্না বন্ধ করো।

আমার কথার উত্তরটাও দিতে পারছে না মা। এবার ভাইয়া এগিয়ে এলো। মাকে জোর করে পাশের একটা চেয়ারে বসিয়ে দিলো সে। তারপরেই আমার কাছে এসে আস্তে করে বসে পড়লো আমার পাশে। ভাইয়াও যে কেঁদেছে সেটা তার চোখ দেখেই বুঝতে পারছি আমি। কষ্ট হলেও সবার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে আমার। আমি উঠে বসার চেষ্টা কর‍তেই আমায় ধরে আধশোয়া করে বসিয়ে দিলো ভাইয়া। অস্পষ্টভাবেই কথা বলতে লাগলাম ভাইয়ার সাথে

– আমার মুখটা খুব জ্বলছে ভাইয়া। খুব কষ্ট হচ্ছে আমার। আচ্ছা আমি কি মরে যাবো ভাইয়া?

টলমলে চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে ভাইয়া। তবুও মুখে হালকা হাঁসি এনে বললো

– ধুর পাগলী , কিচ্ছু হবে না তোর। মুখটা সামান্য একটু জ্বলে গেছে শুধু। কয়েকদিন পরেই ঠিক হয়ে যাবে।

– মিথ্যে বলছিস কেনো ভাইয়া? আমি জানি আমি কখনো ঠিক হবো না। আমার আগের মুখটা আর কখনো ফিরে পাবো না আমি। আচ্ছা ভাইয়া একটা কথা বলতো?

– কি?

– আমি মরে গেলে আমায় মিস করবি না? রোজরোজ কার সাথে ঝগড়া করবি বলতো? আমি মরার পর যেই জিনিসগুলো নিয়ে আমরা রোজ মারামারি করতাম সেগুলো তুই নিয়ে নিস। সে গুলো নিয়ে আর কেউ কাড়াকাড়ি করবে না। আর শোন, আমার গাছগুলোর যত্ন নিবি কিন্তু। ডেইজি গাছটার যেনো কিছু না হয়। ওগুলো দেখলেও আমায় মনে পড়বে তোদের।

আমার আর কোনো কথা না শুনেই কেবিন থেকে চলে গেলো ভাইয়া। এভাবে বলা ঠিক হয়নি বোধহয়। হাতের ইশারায় আপুকে কাছে ডাকলাম আমি। সেও কেঁদে কেঁদে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে একদম। সবাই যে হারে কান্না করছে তা দেখে মনে হচ্ছে সত্যি সত্যিই মরে গেছি আমি।

– বিয়ে হয়ে গেছে আপু?

– কার?

– তোমার আর সায়ন ভাইয়ার।

– পাগল হয়ে গেছিস তুই? তোর এই অবস্থায় আমি বিয়ে করবো?

– আমি এখানে এলাম কি করে আপু?

– আমরা সবাই একসাথে ঘরে বসেছিলাম। তখনই হঠাৎ বাগান থেকে তোর চিৎকার শুনতে পাই। সবাই মিলে গিয়ে দেখি তোর এই অবস্থা। তখন বাড়ির সবাইকে ফোন করে জানানো হয়। আর তারা হসপিটালে নিয়ে আসে তোকে। এখানে আসার পর ডাক্তার জানায় তোর মুখে এসিড পড়ায় এমন হয়েছে। মুখের ফোরটি পার্সেন্ট অংশই জ্বলে গেছে তোর।

আর কিছু বলতে পারলো না আপু । কান্না করতে লাগলো আবারও। সবার মাঝে সায়ন ভাইয়াকে খুঁজতে লাগলাম আমি। কিন্তু উনাকে চোখে পড়লো না কোথাও। তাহলে কি উনি আসেননি? এতোটা অপছন্দ করেন উনি আমায়? আমার এঅবস্থাতেও একবার আমার কাছে এলেন না উনি? আমার ভাবনার মাঝেই খুব জোরে কেবিনের দরজা খুললো কেউ। এতো জোরে শব্দ হওয়ায় সবাই তাকালো দরজার দিকে। আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন সায়ন ভাইয়া। কেমন উসকোখুসকো হয়ে আছে উনার চেহারা। উনি ধীরে ধীরে হেঁটে চলে এলেন আমার কাছে। এখন পাশে অন্য কেউ নেই। তাই আমি মুচকি হেঁসে আস্তে আস্তে বললাম

– দেখলেন তো ভাইয়া? আমার ভালোবাসাটা যেনো আপনি ছাড়া অন্য কেউ না পায় সেটা বোধহয় প্রকৃতিও চায় না। তাই তো এমন কিছু ঘটলো আমার সাথে। আমি মরে গেলেই ভালো হবে। আপনিও আপুকে বিয়ে করতে পারবেন। কিন্তু আমার আপনাকে ছাড়া অন্য কাউকে জীবনসাথী হিসেবে মেনে নিতে হবে না। আজকে বলছি, বাঁচতে চাই না আমি। মরে যেতে চাই। সত্যিই মরে যেতে চাই।

আমি কথাগুলো আস্তে বলছিলাম যেনো কেউ শুনতে না পায়। কিন্তু সায়ন ভাইয়া কারো পরোয়া না করে সবার সামনে আধশোয়া অবস্থাতেই জরিয়ে ধরলেন আমায়। আমিসহ কেবিনে উপস্থিত সবাই অবাক হয়ে গেলো উনার কাজে। ভাবতে পারছি না সায়ন ভাইয়া নিজে আমায় জরিয়ে ধরেছেন। সায়ন ভাইয়া বলতে লাগলেন

– আরেকবার মরে যাওয়ার কথা বললে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। কেনো মরবি তুই? কিছু হবে না তোর। তোকে তো বাঁচতে হবে। আমায় ভালোবাসার জন্য বাঁচতে হবে। আমায় জ্বালানোর জন্য বাঁচতে হবে। আমার হাজার অপমানগুলো সহ্য করার জন্য বাঁচতে হবে। তুই না থাকলে আমি বেহায়া, ছেচড়া বলে ডাকবো কাকে? আমার যে তোকে প্রয়োজন । আমার আমিটাকে সামলানোর জন্য হলেও যে তোকে প্রয়োজন। তুই বুঝতে পারছিস না? তোকে এভাবে দেখে কষ্ট হচ্ছে আমার।

আমি আমার কানকেও বিশ্বাস করতে পারছি না। সায়ন ভাইয়া এগুলো বলছেন? আমি অবিশ্বাসী কন্ঠে বললাম

– আমায় দেখে আপনার কষ্ট হচ্ছে? কিন্তু কেনো?

– ভালোবাসি তাই। তোকে ভালোবাসি তাই কষ্ট হচ্ছে। বুঝতে পারিস না তুই?

বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি আমি। কিছু বলার ভাষা খুজে পাচ্ছি না। হঠাৎই মাথায় আসলো এখানে তো আমরা একা নই। বাকিরাও আছে। পাশে তাকিয়ে দেখলাম সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। ঝটপট আপুর দিকে তাকালাম আমি। সেও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে সায়ন ভাইয়ার দিকে। মা হয়তো কিছু বলতে চাইছিলো কিন্তু তার আগেই আপু বললো

– তোমরা সবাই বাইরে যাও মা। আমার ওদের সাথে কথা আছে। প্লিজ যাও।

সবাই চুপচাপ বেরিয়ে গেলো। ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। আপু কেমন রিয়েক্ট করতে পারে বুঝতে পারছি না সায়ন। সায়ন ভাইয়াও অপরাধীর মতো মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

– আপু প্লিজ আমায় ভুল বুঝো না। আমি সায়ন ভাইয়াকে……..

– তুই এতোটা নাটক করতে পারিস?

– আপু

– কি, আপু হ্যাঁ? তুই সায়ন ভাইয়াকে ভালোবাসিস সেটা আমায় বলতে পারতিনা? একবার বলেই দেখতি। তাহলে আমি জীবনেও এই বিয়েতে রাজি হতাম না। যাকে ভালোবাসিস তাকে নিজেরই বোনের সাথে সহ্য করতে পারতি? আমি জানি প্রিয় মানুষটাকে অন্য কারো সাথে দেখার কষ্ট কতটা? এই একই কষ্টের আগুনে আমার নিজের বোনকে পুড়তে দিতাম না আমি। আর কিছু বলবো না। তবে একটা কথা বলছি তুই হয়তো আমার সাথে ফ্রী হতে পারিস নি কখনো। নয়তো এতো বড় একটা কথা আমার থেকে লোকাতি না।

আপুর কথার কোনো উত্তর দিতে পারলাম না আমি। তবে সায়ন ভাইয়া বললেন

– মাইশার কোনো দোষ নেই মালিশা। ও তখনই তোকে এই কথাটা বলতো যখন আমিও ওকে ভালোবাসতাম। কিন্তু আমি তো ওকে বারাবার ফিরিয়ে দিতাম। আসলে আমি নিজেই জানতাম না যে আমিও ওকে ভালোবেসে ফেলেছি। এ কয়দিনে বুঝতে পেরে গেছি যে ওকে ছাড়া আমার চলবে না। কিন্তু ততক্ষণে তো অনেক দেরি হয়ে গেছে।

– আপনি এতোটা কষ্ট দিয়েছেন ওকে? ভাবতে পারছি না সায়ন ভাইয়া।

আবারও মাথা নিচু করে ফেললেন সায়ন ভাইয়া। তিনজনই চুপ করে আছি। হঠাৎই কেবিনে ঢুকলেন কয়েকজন পুলিশ। উনারা আমার দিকে এগিয়ে এলেন। সায়ন ভাইয়াকে একজন প্রশ্ন করলেন

– ইনিই মিস আফিফা?

– জ্বি।

– উনি কি এখন আমাদের সাথে কথা বলতে পারবেন?

– জ্বি পারবেন।

সবার মধ্যে থেকে কালো করে একটা লোক আমায় জিজ্ঞেস করলেন

– এখন কেমন আছেন ম্যাম?

– অনেকটাই ভালো।

– আমাদের সাম্প্রতিক কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে আপনাকে।

– জ্বি বলুন।

– আপনার সাথে কে এমন করলো তাকে কি আপনি চেনেন?

অফিসারের এ প্রশ্নেই মনে পড়ে গেলো কালকের সেই ভয়ানক ঘটনার কথা। এতক্ষণ যেটা মনেই আসেনি আমার। ভাবতে পারছি না রাহুল ভাইয়া এসব করেছেন। কাল উনার হিংস্র এক চেহারা দেখতে পেলাম আমি। রাহুল ভাইয়াকে ভালো না বাসলেও উনার এই রূপ মেনে নিতে পারছি না। আমি স্বাভাবিকভাবে উত্তর দিলাম

– জ্বি, উনাকে আমি চিনি। উনি আমার উডবি হাজবেন্ড মিস্টার রাহুল।

আমার উত্তরে যেনো কারেন্টের শক খেলো সবাই। সায়ন ভাইয়া বলে উঠলো

– কি বলছিস এসব? পাগল হয়ে গেছিস? কার নামে কি বলছিস জানিস তুই?

– হুম জানি। এমন একজন লোকের সম্পর্কে বলছি যে কিনা আমার জীবনটাই নষ্ট করে দিয়েছে।

– আমি জানি তোর ভুল হচ্ছে। রাহুল এমন করতেই পারে না। আরে ওতো তোকে ভালোবাসতো। তাহলে কেনো করবে এসব?

– উনি কেনো আমার সাথে এসব করলেন সেটা তো আমি নিজেও জানি না। তাছাড়া সেটা যদি রাহুল ভাইয়া না হন তাহলে উনি এখন কোথায়?

– জানি না। রাহুলকে কোথাও খুজে পাচ্ছি না।

– খুজে পাবেন কি করে? উনি তো পালিয়ে গেছেন।

এবার অফিসার জিজ্ঞেস করলেন

– আপনি উনাকে স্পষ্ট দেখেছিলেন ম্যাম?

– না স্যার। উনি মাস্ক পড়ে এসেছিলেন। কিন্তু আমি উনার কন্ঠ চিনি। প্লিজ এখন আবার বলবেন না যে কেউ উনার কন্ঠ নকল করে কথা বলেছিলো। দয়া করে আমার ফোনটা আমায় এনে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন তাহলেই সব বুঝতে পারবেন।

– ওকে ম্যাম।

কিছুক্ষণ পরেই আমার ফোন নিয়ে কেবিনে এলো সারা। ফোনটা আমায় দিয়ে বসে পড়লো আমার পাশে। অশ্রুসিক্ত চোখে অফিসারকে উদ্দেশ্য করে বললো

– আমি নিজেও একজন সাক্ষী স্যার। আমার কথা শুনেই বাগানে গেছিলো মাইশা। এখন নিজের প্রতিই রাগ হচ্ছে আমার। আমি যদি ওকে যেতে না দিতাম তাহলে হয়তো এমন কিছুই হতো না। আমায় ক্ষমা করে দে মাইশা। আমি ইচ্ছে করে করিনি।

– চুপ করবি তুই? আমার ইচ্ছা না থাকলে কি শুধু তোর কথা শুনে চলে যেতাম বাগানে? আমি নিজেই গেছিলাম। তাই নিজেকে ব্লেইম করা বন্ধ কর।

ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে রাহুল ভাইয়ার করা মেসেজটা দেখালাম সবাইকে। এটা দেখার পরই ধপ করে চেয়ারে বসে মাথা চেপে ধরলেন সায়ন ভাইয়া।

চলবে……

[আপনাকে আমি স্বচক্ষে দেখিনি কখনো। একটা ছবিতে দেখেছিলাম শুধু। তাও আবার এক নজর। বিশ্বাস করুন আপনার প্রতি আমার ভালোবাসাটা কোনো মোহ নয়। নিঃস্বার্থ ভাবে ভালোবাসি আমি আপনাকে।

আপনি জানেনও না আপনার জন্য কত কাঁদি আমি। যে কান্নার কোনো কোনো শব্দ হয় না। যে কান্না বোঝা যায় না। যে কান্নার সাক্ষী হয়ে থাকে আমার ডায়েরির প্রতিটি পাতা।

জানেন? যেদিন সত্যিটা জানতে পারলাম সেদিন খুব কষ্ট হয়েছিলো আমার। তবে ওই ছেলেটা আমার সাথে প্রতারণা করেছে এটা ভেবে নয়। আপনি নাকি এ দুনিয়াতেই নেই এটা ভেবে। ভাবতে পারেন? আমি যাকে পাগলের মতো মন-প্রাণ দিয়ে ভালোবেসে এসেছি সে নাকি জীবিতই নয়। সে মৃত। এই কথাটা কতটা কষ্টের সেটা শুধু আমি জানি। আপনি না খুব খারাপ। আমার সাথে পরিচিত হওয়ার আগেই পৃথীবি ছেড়ে চলে গেছেন। কি দরকার ছিলো এতো স্পিডে বাইক চালানোর? কেউ একজন আপনাকে নিজের জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসে। আর আপনি সেটা জানেনও না।

আপনার আসল নামটাও তো জানি না আমি। জানতেও চাই না আর। আমি তো আপনাকে তিহান নামে চিনি। তাই তিহান নামেই ডেকে যাবো আজীবন । আপনিই তিহান। শুধু আমার তিহান।

আপনার পিপাসায় পিপাসার্ত আমি। এ পিপাসা নিবারণ করার সাধ্য যে আমার নেই। এখন শুধু আপনার কাছে যাওয়ার অপেক্ষা। পারলে নিজেই চলে যেতাম আপনার কাছে। কিন্তু স্বেচ্ছায় মৃত্যু যে মহাপাপ। আমি তো পাপী হতে চাই না। তাহলে তো পরপাড়েও আপনাকে পাওয়া হবে না আমার।

এটুকু পড়তেই চোখদুটো ভিজে আসছে রিশানের। বুকটা কেমন ভাড়ী ভাড়ী লাগছে তার। ডায়েরির লেখাগুলো মাঝে মাঝে কেমন ঝাপসা হয়ে আছে।এগুলো যে চোখের জলের দাগ সেটা স্পষ্ট বুঝতে পারছে রিশান। এভাবেও ভালোবাসা হয় জানতো না সে । সেও তো তারিনের সাথে রিলেশনশিপ নামক অদ্ভুত এক মায়ায় জড়িয়ে আছে। কিন্তু সেখানে কি ভালোবাসা বলতে কিছু আছে। তারা কি আদৌ ভালোবাসার আসল মানেটা কি সেটা জানে? ভিজে চোখটা মুছে নিয়ে আবারও ডায়েরির পাতায় চোখ রাখলো রিশান। ডায়েরির সব লিখাগুলো যে পড়তে হবে তার। জানতে হবে মেয়েটার মনের গহীনের কথাগুলো। সেও বুঝতে চায় নিরব অশ্রুতে মিশে থাকা থাকা আবেগপ্রবণ অনুভূতিগুলো।
.
.
.
.
.
.
আসছে

# নিরব অশ্রু ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here