ভালোবাসি_বলেই_তো❤পর্ব ২২

0
1109
  • #ভালোবাসি_বলেই_তো ♥️
    লেখিকা – #আদ্রিয়া_রাওনাফ
    পর্ব – ২২

    লালবাগের মোড়ে গাড়ি থামিয়ে নাদিরাকে পিক করে নিল আবরন । নাদিরা পেছনে জিব্রানের সাথে উঠে বসতেই পূর্ণতা পিছনে ঘুরে নাদিরার দিকে তাকালো তারপর আবার সামনের দিকে তাকালো ।

    নাদিরা জিব্রানকে বলল ,

    – হঠাৎ রাত করে পুরান ঢাকা যাওয়ার প্ল‍্যান করলে যে !!

    জিব্রান হেসে বলল ,

    – মন চাইলো আমি একটু হিমু সেজে রূপাকে নিয়ে বের হ‌ই !!

    নাদিরা জিব্রানের দিকে এক পলক তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল ,

    – আমিও দেখবো তুমি কতো হাঁটতে পারো !!

    পূর্ণতা ওদের কথা শুনে বলল ,

    – ওয়ে হয়ে !! হিমু রূপার প্রেমে আমি মুগ্ধ এবং শিহরিত !!

    নাদিরা হঠাৎ কারো কন্ঠ শুনে সামনে তাকাতেই দেখলো একটা মেয়ে বসা ।

    নাদিরা ভ্রু কুচকে জিব্রানের দিকে তাকাতেই জিব্রান বলল ,

    – সারপ্রাইইইইইইইজ !!

    নাদিরা অবাকের শেষ পর্যায়ে গিয়ে বলল ,

    – ওহ মাই গড !!! অবশেষে আমি পূর্ণর দেখা পেলাম তাহলে ???

    পূর্ণতা হেসে বলল ,

    – তোমার সাথে আমার দেখা হবে এত জলদি , আমিও সেটা ভাবতে পারি নি ।

    আবরন বলল ,

    – আমাকে তো মনে হচ্ছে তোমরা সবাই ড্রাইভার মনে করছো ?? এমন একটা ভাব যেন আমি তোমাদের উবারের ড্রাইভার !!

    নাদিরা হেসে বলল ,

    – আরে আমার আবরন ভাইয়া ও আছে দেখছি !!

    আবরন ড্রাইভিং করতে করতে বলল ,

    – জিব্রান ভাইয়া আমার কথা তাহলে বলেছে তোমাকে !!

    নাদিরা একবার পূর্ণতা আরেকবার আবরনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল ,

    – তোমার আর পূর্ণতার কথা বলবে না আবার !! তোমরা হচ্ছো আপনজন আমাদের ।

    আবরন নাদিরার কথা শুনে এক পলক পূর্ণতার দিকে তাকিয়ে ড্রায়ভিং এ মনোযোগ দিল ‌ ‌।

    পুরান ঢাকার একটা গলিতে গাড়ি থামিয়ে আবরন , পূর্ণতা , জিব্রান ও নাদিরা নেমে দাঁড়ালো ।

    অন্ধকার আকাশ , চারিপাশে লাল লাল পুরাতন বিল্ডিং আর রোড লাইটের আলো , নিচে এবড়োথেবড়ো রাস্তা । সব মিলিয়ে চমৎকার একটা পরিবেশ ।

    জিব্রান আবরনকে ইশারা করে নাদিরার হাত ধরে হেঁটে সামনে এগিয়ে গেল ।

    পূর্ণতা জিব্রান আর নাদিরার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবছে ,

    – মাশাআল্লাহ । ভাইয়ার সাথে নাদিরা আপুকে অনেক ভালো মানিয়েছে । কারো নজর যেন না লাগে এদের উপর আল্লাহ ।

    এসব ভেবে ভালো করে তাকিয়ে দেখল এবড়োথেবড়ো রাস্তায় দূর দূর পর্যন্ত ওরা হারিয়ে গিয়েছে ।

    পূর্ণতার হঠাৎ মনে পড়ল ওর সাথে তো আবরন‌ও ছিল । ভেবে পাশে তাকাতেই দেখল আবরন নেই । পেছনে ঘুরে গাড়ির দিকে লক্ষ্য করতেই দেখল আবরন গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ফোনে স্ক্রলিং করছে ।

    পূর্ণতা আবরনের সামনে গিয়ে বলল ,

    – আপনি কি এখানেই দাঁড়িয়ে থাকবেন নাকি যাবেন‌ও ??

    আবরন ফোনের দিকে তাকিয়েই বলল ,

    – কোথায় যাবো ??

    – ভাইয়া আর ভাবী তো চলে গেল । আমি আর আপনি দাঁড়িয়ে থেকে কি করবো ? চলুন আমরাও হাঁটি ।

    আবরন ফোনের দিক থেকে চোখ না সড়িয়ে বলল ,

    – আমরা কেন হাঁটবো ?? ভাইয়া ভাবী কাপল তাই একসাথে হাত ধরে হাঁটছে । আপনি আর আমি তো কিছু না , তাহলে কেন একসাথে হাঁটবো ??

    পূর্ণতা রাগে উত্তেজিত হয়ে আবরনের হাত থেকে ফোনটা ছো মেরে নিয়ে দৌড় দিল আর বলল ,

    – লাগবে না আপনার আমার সাথে হাঁটা । আমি একাই একশ ।

    আবরন ওর কান্ড দেখে ওর পেছনে দৌড়ে যেতে যেতে বলল ,

    – কাজ টা কিন্তু ঠিক করছেন না । আমার ফোনটা ফেরত দিন ।

    পূর্ণতা হেসে দৌড়াতে দৌড়াতে বলল ,

    – দেব না । পারলে নিয়ে দেখান ।

    আবরন দৌড়ের গতি কিছুটা বাড়িয়ে দিয়ে পূর্ণতা কে ধরে ফেলল ।

    পূর্ণতা ভয়ে চিল্লিয়ে দৌড় থামিয়ে দিয়ে হাপাতে হাপাতে বলল ,

    – আপনার ফোন তো আমার কাছে নেই ।

    আবরন চোখ বড় বড় করে বলল ,

    – মানে !! দেখি কোথায় লুকিয়েছো ??

    পূর্ণতা হেসে বলল ,

    – যাক বাবা , ফোনের হারিয়ে যাওয়ার শোকে অন্তত আপনি আমাকে তুমি করে বললেন ??

    আবরন বলল ,

    – ফোন কোথায় ?? জলদি দাও । কথা ঘুরিও না ।

    – ফোন কাউয়্যা নিয়ে গিয়েছে ।

    এই বলে পূর্ণতা আবার হাঁটতে লাগল ।

    আবরন দেখলো ওর গলায় ঝোলানো সাইড ব্যাগের চেইনটা খোলা । ওর বুঝতে বাকি নেই যে ফোনটা ব্যাগের ভেতরেই রেখেছে পূর্ণতা । আবরন কিছু একটা ভেবে ঠোঁটে বাঁকা হাসি দিয়ে হঠাৎ গিয়ে পূর্ণতা কে টান দিয়ে একটা বিল্ডিংয়ের দেয়ালের সাথে চেপে ধরল ।

    পূর্ণতা আবরনের বিহেইভে কিছুটা ঘাবড়ে গেল । আবরন ওকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে ওর দিকে একটু একটু করে এগোতে লাগল । পূর্ণতা মনে মনে ভাবছে ,

    – হায় আল্লাহ , কোন বিপদে পড়লাম ?? রাস্তাটা‌ও খালি , একটা মানুষজন নেই যে তাদের কাছে হেল্প চাইবো । এখন কি হবে আমার ??

    পূর্ণতা ঢোক গিলে চোখ খুলে তাকাতেই দেখল আবরন নেই ।

    পূর্ণতা রাস্তার দিকে তাকাতেই দেখল আবরন হাতে ফোন নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে হু হা করে হাসছে ।

    পূর্ণতা বুঝলো আবরন ওকে বোকা বানিয়ে ওর ব্যাগ থেকে ফোনটা নিয়ে নিয়েছে ।

    আবরন মোবাইল পকেটে ঢুকিয়ে রাস্তায় ধীর পায়ে হেঁটে যাচ্ছে । পূর্ণতা রাগে ফুসতে ফুসতে মনে মনে ভাবছে ,

    – উনি হঠাৎ এতো বদলে কি করে গেল ?? উনার এই বদল কেন যেন আমাকে ভেতর থেকে নিঃস্ব করে দিচ্ছে । না উনাকে আবার ঠিক করতে হবে যেভাবেই হোক । নিজেকে কি মনে করে উনি !!

    পূর্ণতা ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে একটু মুচকি হেসে কিছুটা দৌড়ে আবরনের দিকে গিয়ে হঠাৎ পেছন থেকে ওর কাধে হাত রাখলো । আবরন পূর্ণতার আচরনে ভ‍্যাবাচ‍্যাকা খেয়ে হাঁটা থামিয়ে দিল ।

    পূর্ণতা হেসে ওর কাধে ভর করে লাফ দিয়ে আবরনের গলা পেছন থেকে জড়িয়ে ধরল আর পা সামনের দিকে ঝুলিয়ে দিল । লাফ দিতে গিয়ে ঘাড়ে একটু চোট পেলেও মুখে শব্দ করল না ।

    আবরন পূর্ণতার এমন আচরনে সেখানেই থ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ।

    পূর্ণতা আবরনের গালের সাথে ঘেষে মাথা রেখে বলল ,

    – আমাকে একটু ধরেন নাহলে পড়ে যাবো তো !! আর আপনি যে খাম্বার মতো লম্বা এত উঁচু থেকে পড়লে নির্ঘাত চোট পাবো ।

    আবরন ওর কথা শুনে হেসে দুই হাত পেছনে দিয়ে ওকে ধরে বলল ,

    – হঠাৎ বাচ্চাদের মতো বিহেইভ করছো কেন ??

    – কারন আপনি বড়দের মতো শাষন করেন সবসময় !!

    – তাই ??

    -হু , এখন কথা বলতে বলতে হাঁটুন একটু । এখানেই দাঁড়িয়ে থাকবেন নাকি ??

    আবরন বলল ,

    – মানে কি ?? তোমাকে কাধে নিয়ে আমি সারা রাস্তা হাঁটবো ??

    – হ্যাঁ হাঁটবেন । কেন সমস্যা ?? আপনি তো আমার জানা মতে ব্ল‍্যাক বেল্ট পাওয়া ছাত্র তার উপর প্রতিদিন জিম করেন । আমার মতো একটা ফড়িং এর ওজন আপনার কাছে তো একটা তুচ্ছ বিষয় তাই না ??

    আবরন হাঁটতে হাঁটতে বলল ,

    – ভালোই তো কথা শিখেছো দেখছি । যাক ম্যাচুয়ারিটি ভালো ।

    – তারমানে আমি এত দিন ম্যাচুওর ছিলাম না ??

    – না ।

    পূর্ণতা রেগে আবরনের গালে দাঁত বসিয়ে দিল ।

    আবরন ব্যথা পেয়ে বলল ,

    – আউউউচ !! বেয়াদব মেয়ে !! তুমি কি শাকচুন্নি হয়ে গেলে নাকি ?? কামড়া কামড়ি কবে থেকে শুরু করলে ??

    – আজকের থেকে । দুই হাত দিয়ে তো আপনার গলা পেচিয়ে রেখেছি তাই অবশিষ্ট দাঁত দিয়ে আপনাকে শাস্তি দিলাম !!

    আবরন বলল ,

    – আমার এত সুন্দর ফেস এ এই কামড়ের দাগ দেখলে কোনো মেয়ে আর প্রোপোজ করতে আসা তো দূরের কথা আমার দিকে ফিরেও তাকাবে না !!

    পূর্ণতা বলল ,

    – ভালো হয়েছে । আপনার দিকে কে তাকায় ?? উল্লুকের মতো চেহারা !!

    আবরন বলল ,

    – তাই নাকি ?? তোমাকেই তো দেখি আমার দিকে কেমন ঢ্যাপ ঢ্যাপ করে তাকিয়ে থাকো !!

    পূর্ণতা ভ্রু কুচকে বলল ,

    – আমি আপনার দিকে কখন ঢ্যাপ ঢ্যাপ করে তাকালাম ??

    আবরন বলল ,

    – এত জলদি ভুলে গেলে ??

    পূর্ণতা মনে করতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বলল ,

    – হ্যা ভুলে গিয়েছি ।

    আবরন বলল ,

    – পড়তে বসে টিউটরের দিকে এভাবে কেউ তাকায় ?? মান সম্মান থাকবে কিছু ?? তোমার ভাগ্য ভালো যে আমার মতো একজন টিউটর পেয়েছো নাহলে আমার জায়গায় অন‍্য কারো দিকে এভাবে তাকালে তোমার চোখ ফুটো করে দিত !!

    পূর্ণতা আবরনকে ইচ্ছা করে আবারো গালে কামড় দিয়ে বলল ,

    – আপনি একটা অসভ্য বাজে লোক !!

    আবরন বলল ,

    ওকে পিঠ থেকে নামিয়ে দিয়ে বলল ,

    – এই এই , কথায় কথায় আমার গালে কামড় দাও কেন ?? সত্যি সত্যি শাকচুন্নি তে ধরে নি তো ??

    পূর্ণতা বলল ,

    – ধুর !! আপনার সাথে কথা বলাই ভুল হয়েছে । কখন থেকে বকা দিচ্ছেন !! পারেন তো খালি বকাই দিতে । ছোটদের আদর স্নেহ করতে জানেন না কিছু না ।

    আবরন হেসে বলল ,

    – হা হা হা , তুমি নিজেকে ছোট বলছো ?? হায়রে !! হা হা হা ।

    পূর্ণতা রাগে ফুসতে ফুসতে সামনের দিকে সু্র সুর করে হেঁটে যেতে লাগল ।

    আবরন এবার ওকে পেছন থেকে গিয়ে পাজকোলা করে তুলে নিল ।

    হঠাৎ এভাবে মাটি থেকে উপরে উঠে যাওয়ায় পূর্ণতা কিছুটা ভয় পেয়ে আবরনের গলা ধরে ওর পাঞ্জাবি খামচে ধরে চোখ বন্ধ করে বলল ,

    – পড়ে যাবো তো !! নামিয়ে দিন বলছি !!

    আবরন আস্তে করে ওর কানে কানে বলল ,

    – এটা পৃথিবীতে তোমার জন্য সবচেয়ে সেফ জায়গা !! ভয় পেয়ো না , আমি থাকতে কিচ্ছু হবে না তোমার !!

    পূর্ণতা চোখ খুলে আবরনের দিকে তাকাতেই দেখল আবরন ওর দিকেই তাকিয়ে আছে ।

    হঠাৎ আকাশে আলোর ঝলকানির সাথে শব্দ শোনা গেল ।

    ওরা দুজন‌ই দুজনের থেকে চোখ সরিয়ে আকাশের দিকে তাকাতেই দেখল বৃষ্টির ঝিরিঝিরি ফোঁটা নেমে আসছে ওপর থেকে ।

    মূহুর্ত্তের মধ্যে বৃষ্টির বেগ বেড়ে যেতেই আবরন পূর্ণতা কে কোলে নিয়েই দৌড়ে একটা শুকনো জায়গার খোঁজ করতে অস্থির হতে লাগল ।

    কিন্তু বরাবর‌ই পূর্ণতার বৃষ্টি পছন্দ না হলেও আজ কেন যেন খুব ভালো লাগছে এই মূহুর্তটা ।

    পূর্ণতা নিজের মাথায় ওরনাটা দিয়ে বাকি অর্ধেক ওরনা আবরনের মাথায় দিয়ে বলল ,

    – ও মিষ্টার , জলদি চলুন । ভিজে তো পুরো একাকার হয়ে যাচ্ছি ।

    আবরন বলল ,

    – আমি স্বজোরে দৌড়াচ্ছি । ঐ তো সামনে একটা ছাউনি দেখতে পাচ্ছি ।

    পূর্ণতা দেখল একটা ভাঙ্গা বিল্ডিং এর বারান্দার নিচের অংশ দেখা যাচ্ছে ।

    আবরন সেখানে গিয়ে বৃষ্টির থেকে সংযোগ বিচ্ছেদ করল ।

    আবরন পূর্ণতা কে কোলে নিয়েই হাপাচ্ছে ।

    পূর্ণতা আবরনকে দেখে হেসে বলল ,

    – ভালোই তো পারেন দৌড়াতে !! দৌড় প্রতিযোগিতায়‌ ও নিশ্চয়‌ই চ্যাম্পিয়ন ছিলেন !!

    আবরন ওর কথা শুনে হেসে বলল ,

    – এতো প্রশংসা করো না মেয়ে !! আমি কিন্তু একেবারে গলেই যাবো ।

    পূর্ণতা হেসে বলল ,

    – এখন আমাকে নিচে নামান ।

    আবরন বলল ,

    – কেন ?? সুখে থাকতে ভুতে কিলাচ্ছে ??

    পূর্ণতা বলল ,

    – ভিজে গিয়েছি অনেক খানি । ঠান্ডা লেগে যাবে তো !!

    আবরন পূর্ণতা নামিয়ে দিতেই পূর্ণতা নিজের ওরনা চিপে শরীর ভালো করে মুছে নিল । তারপর আবরনকে বলল ,

    – নিচু হন একটু ।

    আবরন নিচু হতেই পূর্ণতা নিজের ওরনাটা দিয়ে আবরনের চুল ভালো করে মুছে দিতে লাগল ।

    আবরন বলল ,

    – হঠাৎ এত কেয়ার আমার প্রতি ??

    পূর্ণতা চুল মুছে দিতে দিতে বলল ,

    – যারা আমাকে কেয়ার করে , লাইফে ইম্পর্টেন্স দেয় আমিও তাদেরকে ইম্পর্টেন্স দিই ।

    আবরন হালকা হেসে পূর্ণতা কে হঠাৎ জড়িয়ে ধরল ।

    পূর্ণতা চুপ করে র‌ইল । ওর‌ও কেন যেন ইচ্ছা করছে আবরনকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে । আবরন বলল ,

    – কখনো বদলে যেও না প্লিজ । এমন‌ই থেকো ।

    পূর্ণতা নিজের অজান্তেই জবাব দিল ,

    – আমি তো বদলাই নি , বদলে তো আপনি গিয়েছেন ।

    আবরন পূর্ণতা কে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল ,

    – কোথায় বদলেছি !! আমি তো জাষ্ট তোমার পরীক্ষা নিচ্ছিলাম যে তোমাকে কি শুধু আমি‌ই লাইফে এত গুরুত্ব দিচ্ছি নাকি তোমার লাইফেও গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গায় আমিও আছি ??

    পূর্ণতা বলল ,

    – পরীক্ষা করে কি বুঝলেন ??

    আবরন পূর্ণতা ছেড়ে ওর দুই গালে হাত রেখে বলল ,

    – বুঝলাম যে শুধু আমি ই না , তুমি‌ও আমাকে ……

    এইটুকু বলে থামল আবরন ।

    পূর্ণতা বলল ,

    – কি বলুন ?? চুপ করে গেলেন কেন ??

    – জানো !! আমাকে নিজের করে পেতে কত মানুষ রাতের ঘুম হারাম করে , কিন্তু আমি সবসময় এমন একজনকেই চেয়েছি যার জন্য আমার রাতের ঘুম হারাম হবে ।

    পূর্ণতা চুপ করে শুনছে আবরনের কথা গুলো । ওর মন চাইছে মনের জমানো হাজারো না জানা কথা গুলো আবরনকে ওর‌ই মতো করে বলে দিতে ।

    …………………………………………………..

    জিব্রান নাদিরাকে নিয়ে একটা গাছের নিচে দাঁড়িয়ে আছে । নাদিরা বলল ,

    – আজকেই বৃষ্টি টা নামতে হলো !!

    জিব্রান বলল ,

    – আমার কিন্তু ভালোই লাগছে বৃষ্টিতে ভিজতে !!

    – তাই ! জ্বর আসলে বুঝবে ঠ্যালা !!

    জিব্রান হেসে বলল ,

    – আসবে না । বাই দ্য ওয়ে , তুমি বাসায় ম্যানেজ করলে কি করে এত রাতে ??

    নাদিরা হেসে বলল ,

    – আম্মা জানে তোমার কথা ।

    জিব্রান অবাক হয়ে বলল ,

    – কি বলছো কি ?? সত্যি ??

    – হ্যা , সত্যি । আম্মা জানে তোমার আমার ব্যাপারটা । আম্মা বলেছে সময় হলে তোমাকে বলবে যেতে আমাদের বাসায় । বাবাকে আম্মাই ম্যানেজ করবে তুমি চিন্তা করো না ।

    – হুম ভরসা আছে তোমার উপর , এই জন্যই তো এত ভালোবাসি তোমাকে ।
    বাবা আসছে সামনের সপ্তাহে । আমাকে সাথে করে নিয়ে যাবে ফ্রান্স ।

    – তারপর ফিরবে কবে ??

    – কমপক্ষে ছয়মাস তো গিয়ে থাকতে হবে । তারপর ফিরে এসে তোমাদের বাসায় যাবো প্রস্তাব নিয়ে ।
    পারবে না অপেক্ষা করতে ??

    নাদিরা জিব্রানকে জড়িয়ে ধরে বলল ,
    – কেন পারবো না ?? এতদিন অপেক্ষা করতে পেরেছি , বাকি কটা দিন‌ও অপেক্ষা করতে পারবো । তুমি চিন্তা করো না ।

    – হুম , আমি যাওয়ার আগে বোধয় পূর্ণতার বিয়ে দিতে হবে । বাবা ও সহমত ।

    – সত্যি বলছো ?? তাহলে একটা বিয়ে খেতে চলেছি সামনে ।

    – হুম ।

    – তোমার বোনটা না আসলেই পুচকি । ওর সাথে তো ভালো করে কথাই হলো না । গাড়িতে এবার আমি আর পূর্ণতা পেছনে বসবো । তুমি বরং সামনে গিয়ে বসো ।

    জিব্রান হেসে বলল ,

    – পারবে না । কারন আবরন পূর্ণতা কে নিয়েই সামনে বসবে ।

    নাদিরা বলল ,

    – আবরন অনেক ভালোবাসে ওকে , ও কি বোঝে না ??

    – বোঝে কিন্তু মুখে বলে না ।

    – আহারে , আবরনের মনের ভিতরটায় বোধয় তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে !!

    – আবরন এই জন্য প্ল‍্যান করেছে চট্টগ্ৰাম যাবে । তুমিও কিন্তু আমাদের সাথে যাচ্ছো ।

    – সত্যি ?? তাহলে তো মজা হবে । টোটাল কতজন যাবো ??

    – সব কাপল । টোটাল ১০ জন ।

    – অনেক মজা হবে ।

    – দিন – ক্ষন ঠিক করে জানাবো । অপেক্ষায় থেকো ।

    – ঠিক আছে । বৃষ্টি কমেছে চলো ফিরে যাই ।

    – চলো ।

    ওরা দুজন আবার ফিরতে লাগল গাড়ির দিকে ।

    #চলবে ♥️

    বিঃদ্রঃ এখন থেকে আগের রুটিনে গল্প দিব অর্থাৎ একদিন পর পর । আমার সমস্যা গুলো একটু বোঝার চেষ্টা করে সাথেই থাকুন ।
    আর সময় ঘনিয়ে আসছে , আবরন হয়তো ওর মনের কথাটা এবার পূর্ণতা কে জানিয়েই দেবে । জানতে হলে সাথেই থাকুন ।

    গল্পের ভুল ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন । ধন্যবাদ । ♥️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here