ভুলের মাশুল পর্ব: ১৩

0
1234

গল্প: ভুলের মাশুল পর্ব: ১৩ লেখক: হানিফ আহমেদ হানিফ: অর্ণব কে তো শুধু হালকা ধাক্কা দিয়েছি গাড়ি দিয়ে। এবার তোর পালা, খুব নেচেছিলি না তুই মিস্টার হানিফ। হানিফ মেসেজটা পড়ে শুনালো। অর্ণব: তার মানে এটা এক্সিডেন্ট ছিলো না? দেখ আমার মাথায় একবারো আসলো না এই কথাটা। মৌ: কে এসব করাচ্ছে? অর্ণব: রাফি/শচিন/ অভির্ণব/ আর হানিফ: আর কে? অর্ণব: আর হলো মিস্টার সাজিদুল হক টুটুল। হানিফ: কে ও? আর তোকে মারতে চায় কেন, আর আমায়ই কেন? অর্ণব: একজন নাম করা স্মাগলার, যার নামে পুলিশ কেইচ আছে অনেক টা। আর তোকে না শুধু। ও আমার যে কোনো ফ্রেন্ডকেই ক্ষতি করতে পারে। হানিফ: দুলাভাই জানে এসব? অর্ণব: হুম, কয়েকদিন আগে দুলাভাইয়ের এর ফায়ারিংএ ওদের দুজন মরেছে। হানিফ: ওরে তোমরা তাড়াতাড়ি ধরছো না কেন? অর্ণব: টুটুল তো সাধারণ, ওরে নাচাচ্ছে যে সেই নাটেরগুরু কে ধরতে হবে। মৌ: আমার এখনি ঘাঁ ছিমছিম করছে। অর্ণব: তোদের একটা কথা বলি, আমার সাথে দেখা করতে হলে সবাই দল বেধে আসবি না। একজন একজন করে আসবি। সজিব: ওদেরকে ভয় পেলে হবে কি আমাদের? অর্ণব: তিন চার দিনের মধ্যে ওদের অল গ্যাং কে ধরে ফেলবো আমরা। তোমরা এই কয়দিন সতর্ক থাকো। রাতুল: হুম। হানিফ: একটা কথা বুঝলাম না! অর্ণব: কি? হানিফ: ওইটা আমার তোর বা সবারি কোনো পরিচিত, দেখ বলছে আমি খুব নেচেছি। এর মানে হলো, আমি রাফিকে জেলে দিয়েছি, রাহুল আর অদ্বিতীয়াকে মুসলিম করেছি তুই আর আমি। হয়তো ওরা তিনজনের মধ্যে কেউ হবে? অর্ণব: চিন্তা করবি না। আমি বেচে থাকতে তোদের বা আমার ফ্যামিলির কোনো ক্ষতি হতে দেবো না। মৌ: সবাই বাড়িতে যাও এইবার। সন্ধ্যা হলো হলো রে কুত্তারা। হানিফ: হুম, অর্ণব: তোরা যা আমি মৌকে বাসায় দিয়ে তারপর যাবো। দিপু: আমি যাই কুত্তীটারে নিয়ে। অর্ণব: ঝগড়া করে রাস্তাতেই মাইর শুরু করবি তোরা। মৌ: হু অর্ণব আর মৌ বাসে বসে আছে। সন্ধ্যা নেমেছে খুব আগেই, আকাশটা লালটে রঙ ধরেছে। মৌ: অর্ণব একটা কথা বলি? অর্ণব: বল মৌ: অর্ণিকে আর কতো কষ্ট দিবি? এভাবে মেয়েটাকে তিলেতিলে মেরে দিচ্ছিস কেন? অর্ণবের কি’বা বলার আছে ,সত্যিই এভাবে কষ্ট দেওয়া কি ঠিক হচ্ছে অর্ণবের। সে অজান্তে কোনো ভুল করছে না তো? মৌ: কিরে কথা বলছিস না যে? অর্ণব: আমি কি করবো বল পারছি না ওরে ভুলতে, আর পারছি না অর্ণিকে আপন করে নিতে। মৌ: মেয়েটার চোখের নিচে কালি পরে গেছে, হয়তো প্রতিটা রাত নির্ঘুমে কাটায়। অর্ণব: আমি কিছু ভাবতে পারছি না রে, মৌ: হসপিটাল আমি প্রতিটা মুহূর্ত অর্ণিকে দেখেছি। তোর পাশে বসে সারাক্ষণ চোখের পানি ফেলছে। আর তোর মাথায় হাত ভুলিয়েছে। অর্ণব ওর ভালোবাসা মিথ্যা না রে? অর্ণব: কিছুই ভেবে পাচ্ছি না? মৌ: শুন তুই, অর্ণিকে ভালোবেসে আপন করে নে। অর্ণব: বাস থেকে নাম ?এসে পরছি। মৌ: হাত দে, আয় সাবদানে নাম! মৌ আর অর্ণব একটা রিকশাতে উঠলো। মৌর বাসাটা ১০ মিনিট হেটে যেতে হয়। তাই রিকশাতেই যাচ্ছে আয। মৌ: উত্তর দিলি না যে? অর্ণব: ভাবছি। মৌ: তুই পাগল আস্তো? অর্ণব: হুম রে, একজনের প্রেমে পাগল হয়েছি কবেই। মৌ: এটা পাগলামি ছাড়া কিছু মনে হচ্ছে না আমার কাছে? শুন অর্ণব তোকে আমার বেষ্ট-ফ্রেন্ড না আপন ভাইয়ের মতোও দেখি। অর্ণব: সেটা আমার অজানা নাকি? মৌ: যেটা বলি সেটা শুন? অর্ণব: বল কি? মৌ: অর্ণিকে ভালোবাসছিস না তো , এতে কয়টা জিনিশ মিস করছিস জানিস তুই? অর্ণব: মানে! মৌ: অর্ণিকে ভালোবেসে আপন করে নিলি তুই যা উপভোগ করতি। ~এই বৃষ্টি ভেজা দিন/রাতে দুজন ভিজতি পারতি। ~কদম ফুল ওরে গিফট করতে পারতি। ~হয়তো প্রতিটা রাতে অর্ণি তোর বুকে ঘুমাতো। ~অর্ণির কণ্ঠে গান শুনতে পারতি। ~আমি ফুঁপি হতেও পারতাম। আরো অনেক কিছু আছে, পারতি তুই অর্ণিকে নিয়ে একটা সুখের সংসার গড়তে। অর্ণব: তোর বাসায় এসে গেছি, নাম এখন। মৌ: আমি কি বললাম কানে ডুকেছে কি তোর? অর্ণব: আসছি আমি’ মৌ: ভেবে দেখ, খেয়াল রাখিস তোর। অর্ণব রিকশায় বসে আছে। রিকশা তার চাকার গতীতে চলছে, অর্ণবের পায়ে বেশি ব্যথা করছে, ওদের বুঝতে দেয় নি ঠিকি, কিন্তু ওর কষ্ট হচ্ছে। মোবাইলটাও নাই ওর কাছে। অর্ণব: মামা ফোন আছে? (রিকশাওয়ালা কে বললো) রিকশাওয়ালা: হ বাবা আছে, কি করাইবা ফন দিয়া? অর্ণব: টাইম দেখবো মামা। রিকশাওয়ালা ফোন দেয়। অর্ণব দেখলো টাইম ৮টা হয়ে যাচ্ছে। বাসায় আসলো। কলিং বাজাতেই অর্ণি দরজা খুলে দিলো, অর্ণবের জন্যেই মনে হয় দরজার পাশে বসে ছিলো। অর্ণব কিছু না বলে এসে ড্রয়িং রুমে বসলো। নিধী: ভাইয়া পায়ে এসব কি লাগিয়েছো? অর্ণব: এসব কিছু না, একটু ব্যথা পেয়েছি। নিধী: হাতে ব্যান্ডেজ, পায়ে ব্যান্ডেজ, (ঘুরে ঘুরে দেখছে আর বলছে) আম্মু আম্মু দেখে যাও ভাইয়ার কি হইছে। নিধীর চিৎকার শুনে, জাহানারা বেগম রান্না ঘর থেকে আসেন, জাহানারা: এসব কিভাবে করলি? এমন ভাবে বললেন যেন কিছুই জানেন না। অর্ণব: ব্যথা পাইছি। নিধী: ভাইয়া কান্না করছো বুঝি, এই দেখো কমে যাবে। আমি হাত ভুলিয়ে দিচ্ছি। জাহানারা: অর্ণি মা ওরে ধরে ধরে রুমে নিয়ে যাও তো? অর্ণব: আমি একাই পারবো। জাহানারা: যা বলছি তাই কর, অর্ণি মা যা তো ওরে নিয়ে। অর্ণি গিয়ে অর্ণবের একটা হাত নিজের কাদে রাখলো। আর খুব যত্ন করে অর্ণবকে এক ছিরি ছিরি করে তুলছে। অর্ণব খুব উপভোগ করছে অর্ণির শরীরের ঘ্রাণ। ~যদি রজনীগন্ধা ফুলের বাগানে এমন রমণী ডুকে সব ফুল গুলো ওর নরম হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেয়। তাহলে হয়তো ফুল গুলোর ঘ্রাণ পালটে যাবে, রমণীর ঘ্রাণ ছড়িয়ে যাবে সব কয়টা ফুলের পাপড়ি পাড়িতে।~ অর্ণি সব শুনিলো তাও না বুঝিবার অভিনয় করে। অর্ণি: কি বললে আস্তে আস্তে? অর্ণব: ক ক ক কইই কিছু না তো। অর্ণি: আমি শুনলাম তো। অর্ণবকে রুমে রেখে অর্ণি নিচে যায় অর্ণবের জন্য খাবার আনতে। জাহানারা: নিজ হাতে খাইয়ে দিবি? অর্ণি: আম্মু বকা দেয় যদি? জাহানারা: আরে পাগলী, অর্ণব তোর প্রেমে পরেছে। অর্ণি: আম্মু তুমিও না। অর্ণি খাবার নিয়ে অর্ণবের পাশে বসে। অর্ণব কি যেনো ভাবছে। অর্ণি: খাবার খেয়ে নাও? অর্ণব: ভালো লাগছে না। (চোখ মুঝে বললো কথাটা) অর্ণি: আমি খাইয়ে দিলে খাইবা কি? অর্ণব কিছু বললো না। অর্ণি বুঝতে পারলো সম্মতি আছে। অর্ণি হাত ধুয়ে এসে। খাবার গুলো ভালোভাবে মাখিয়ে, অর্ণি: হা করো, অর্ণব হা করে খাবারটা মুখে নেয়। অর্ণব এক লুকমা খাবার খেয়ে। অর্ণব: একটা কথা বলি? অর্ণি: এখন সব খাবার খাবে, তারপর ঘুমানোর সময় সব কথা শুনবো। অর্ণব: হুম অর্ণি যেনো কোনো পিচ্ছিকে খাওয়াচ্ছে। এর আগে কখনো অর্ণি কাওকেই এভাবে খাওয়ায় নি। ওর খুশি লাগছে এই ভেবে যে নিজের ভালোবাসার মানুষকে নিজ হাতে খাইয়ে দিচ্ছে। দু ফুটা নুনা জল অর্ণির চোখ থেকে পরলো। অর্ণব: হাতে কামড় লাগছে বুঝি, সরি সরি আমি ইচ্ছে করে কামড় দেই নি। (বাচ্চামো শুরে বললো) অর্ণি: কামড় দাও নি তো। এটা সুখের কান্না, নিজের ভালোবাসার মানুষকে খাইয়ে দাওয়ার এক পরম সুখ। অর্ণব যেন পাথর হয়ে যায়, যে মেয়ে একটু ভালো ব্যবহার করতেই, এতো খুশি হয়েছে যে, চোখ বেয়ে পানি পরছে। এতোদিন কতোই না কষ্ট দিয়েছি। যে একটু ভালোবাসায় এতো খুশি হয়। জানিনা যখন বেশি ভালোবাসা পাবে তখন কেমন হবে অর্নির রুপটা। এসব ভেবে ভেবেই সব খাবার শেষ করলো অর্ণব। অর্ণি নিচে গিয়ে সব কিছু গুছিয়ে রেখে, জাহানারা বেগমের রুমে যায়, গিয়ে জাহানারা বেগমকে জড়িয়ে ধরে উনার গালে ওর নরম ঠোঁট জোড়া বসিয়ে দেয়। জাহানারা বুঝতেই পারছে খুশির কারণটা। তারপরেও জিজ্ঞেস করলো। জাহানারা: কি রে মা এতো খুশি যে? অর্ণি: আম্মু এই প্রথম অর্ণব আমার সাথে ভালো ব্যবহার করছে। আমি ওরে নিজ হাতে খাইয়ে দিছি আম্মু। (বলেই কেঁদে দিলো) জাহানারা: পাগলী মেয়ে আমার। কান্না করিস না তো, আমি জানি অর্ণব তোর প্রেমে না পরে পারবেই না। অর্ণি: হুম, দোয়া করো আম্মু। আমি নিধীর কাছে গেলাম। জাহানারা: হুম। রফিকুল ওয়াশরুমে ছিলেন। সব শুনেছেন, হাসলেন উনার ছেলে পরিবর্তন হচ্ছে। রাত ১০টা বেজে ৪০ মিনিট, অর্ণব ফোনে কথা বলছে। অর্ণব: স্যার আমি বুঝিই নি কেউ আমার সাথে এমন করবে। (অর্ণব তার সি আই ডি অফিসারের সাথে কথা বলছে, উনার নাম রেজাউল করিম রেজা, আর,কে,আর নামেই চিনে, যার নাম শুনলে চুর ডাকাত ভয়ে কাপড় নষ্ট করে দেয়) রেজা: এখন জানাচ্ছো আমায়, সেই দিনে এক্সিডেন্ট করছো। অর্ণব: সরি স্যার। আর আমার ফোনটা ভেঙে গেছে তখনি। আর এটা আমাত ওয়াইফের ফোন। রেজা: ওয়াইফ মানে, (অর্ণব এইরে বলে দিলাম) অর্ণব: স্যার ১মাস আগে বিয়ে করেছি। রেজা: দাওয়াত দিলে না,, অর্ণব: বিয়েটা অনেক ঘটনা অতিক্রম করে হয়েছে। সময় করে বলবো নে একদিন। স্যার সবাই জেনে গেছে আমার এই কাজের কথা। রেজা: ভালোই তো, নিজের যত্ন নাও, আর চার দিনের ছুটি তোমার। অর্ণব: ধন্যবাদ স্যার। অর্ণি রুমে এসে দেখে অর্ণব অর্ণির ফোন টিপছে, অর্ণির ফোনে কোনো লক নাই, অর্ণব: তোমার ফোন দিয়ে একজায়গায় ফোন দিছিলা। অর্ণি: আচ্ছা। অর্ণব: কাল একটা ফোন কিনতে হবে আমার। অর্ণি: এটাই চালাও, আমার ফোনের প্রয়োজন হয় না তেমন। অর্ণব: না, অর্ণি আর কিছুই বলে নি। দুজন দু পাশে শুয়ে আছে। অর্ণির খুব ইচ্ছে করছে অর্ণবের সাথে কথা বলতে, অর্ণবের বুকে নিজের মাথাটা রেখে ঘুমাতে, কিন্তু সাহস হচ্ছে না অর্ণির। অর্ণব অনেক চিন্তা করলো। না আজ সব ঠিক করা দরকার। অর্ণব: অর্ণি জেগে আছো কি? অর্ণবের ডাক শুনে অর্ণি খুশিতে উল্লাসে অর্ণি: হুম, কিছু প্রয়োজন কি তোমার। অর্ণব: না, কিছু কথা বলবো তোমায়, অর্ণি শুয়া থেকে উঠে বসে। অর্ণি: বলো কি বলবা। অর্ণব: আমি তোমায় খুব কষ্ট দিচ্ছি তাই না। অর্ণি চুপ করে আছে। অর্ণব: আমার জীবনের কোনো নিশ্চয়তা নেই, হয়তো আজ দিনেই শেষ দিন হতো, ভাগ্যিস আল্লাহ্‌ বাঁচিয়েছেন। অর্ণি: এমন কথা বলবে না প্লিজ, আমার কষ্ট হয়। অর্ণব: আমি তোমায় দিনের পর দিন কষ্ট দিচ্ছি তারপরেও, তুমি আমার কাছেই রয়েছো। তুমি যে ভুলটা করেছিলে সেটা আমার জীবনের সব চেয়ে কষ্ট দায়ক দিন ছিলো, আমার একটা প্রশ্নই শুধু মাথায় আসতো, তুমি আমায় ভালবাসতা তাইলে এমন কাজ কিভাবে করতে পারলে? অর্ণি: সত্যি আমার কাজের জন্য আমি অনেক অনুতপ্ত। তুমি যা শাস্তি দিয়েছো বা কষ্ট দিচ্ছো এতে তোমার উপর আমার কোনো অভিযোগ নাই। শুধু কষ্ট হতো তোমার করা ইগোটা। জানো অর্ণব, ~কেও যদি বিশ্বের সব চেয়ে সুখীও হয়, কিন্তু তার প্রাণ প্রিয় মানুষটি তার সাথে কথা বলে না , তাহলে তার মতো হতবাগা আর কেও নাই, সারা দিন যদি সে হেসেও কাটায়, রাতের ঘুমটা কিন্তু নির্ঘুম কাটে, শুধু প্রিয় মানুষের অবহেলার কারণে।~ অর্ণব মন দিয়ে কথা গুলো শুনছিলো। অর্ণব: আমার বুঝতে সময় লেগেছে অর্ণি, খুব আগেই তোমার কাছে ক্ষমা চাইতাম, কিন্তু এতো কষ্ট দিয়েছি যে, লজ্জাতে কথা বলতে পারতাম না। অর্ণি: তুমি যতো কষ্টই দাও না কেন। আমার কোনো অভিযোগ নাই। শুধু আমায় একটু ভালোবাসো। অর্ণব: জানো আমি তোমায় কষ্টের সাথে ভালোবাসার পরীক্ষাও নিয়েছি। অর্ণি: অর্ণব একটা কথা জানো? ~ উড়াল জানা পাখিকে যদি তার উড়ালের পরীক্ষা করো, তাহলে কিন্তু পাখিটা ওই নীল আকাশে উড়ে যাবে,~ তেমনি কারো ভালোবাসার ওযন মাপতে চাও তাহলে সম্পর্কে ফাটল ধরে, কারণ একটা সম্পর্ক ভাঙার আসল কারণ হলো বিশ্বাসের পরীক্ষা নেওয়া আর ভালোবাসার পরীক্ষা নেওয়া। অর্ণব: বুঝেছি আমি। সরি আর এমন করবো না। আমায় ক্ষমা করে দাও। অর্ণি: ক্ষমা চেয়ো না। ~তুমি আমার বেচে থাকার পৃথিবী। শুধু এই পৃথিবীতে একটু জায়গা দাও, শুধু ছোট্ট একটা ঘর বানাবো।~ অর্ণব: হুম দেবো। কিন্তু আমায় কিছু দিন সময় দাও। অর্ণি: যা সময় লাগে নাও, শুধু আমার সাথে কথা বলবা সব শেয়ার করবা, আমি শারীরিক সম্পর্ক চাই না, শুধু একটা সুন্দর মনের মানুষ চাই অর্ণব, যার পৃথিবীতে শুধু অর্ণি নাম থাকবে। অর্ণব: ইনশাআল্লাহ হবে সব, শুধু আরো কয়েকটা দিন অপেক্ষা করো। অর্ণি: তুমি আমার শাহজাহান। আমি আজীবন অপেক্ষা করতে পারবো। অর্ণব: তার মানে তুমি আমায় একটুও ভালোবাসো না। অর্ণি: মানে? (অবাক হয়ে) অর্ণব: শাহজাহান হলো সব চেয়ে বাজে মানুষ। তার সাথে তুমি আমায় তুলনা করছো। অর্ণি: শাহজাহান একজন প্রেমিক পুরুষ। আর তুমি কি বলছো এসব, যে তাজমহল বানিয়েছে মমতাজের প্রেমে। অর্ণব: হা হা হা। অর্ণি: হাসছো যে? অর্ণব: হাসবো না। শাহজাহান শুধু মহল বানিয়েছে কিন্তু সে আধো কি মমতাজকে ভালোবেসেছিলো মমতাজ বেচে থাকতে। অর্ণি: মানে? অর্ণব: শাহজাহান হলো একজন যৌনাচার মূলক মানুষ। জানো মমতাজ তার কততম স্ত্রী। অনেকেই বলে মমতাজ তার ৩ নাম্বার স্ত্রী। আবার অনেকে এর সঠিক তথ্য বলতে পারে না। আর কি বললা মমতাজের জন্য মহল বানিয়েছে। আরে শাহজাহানের ভুলের কারণেই মমতাজের মৃত্যু হয়েছে, কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে প্রেগন্যান্ট অবস্থায় যুদ্ধের ময়দানে নিয়ে যাবে না। অধিক রক্ত পাত হওয়ার কারণে মমতাজের মৃত্যু হয়, তাও নাকি ৭ম বাচ্চা জন্ম দেওয়ার সময়। আর শাহজাহান কোনো প্রেমিক না। কারণ কোনো প্রেমিক পুরুষ নিজের মেয়ের ভালোবাসার মানুষকে খুন করতে পারে না। অবাক হচ্ছো তাই না। জাহানারা বেগম ভালোবাসতো এক ছেলে সম্ভবত সেনাপতির ছেলে। শাহজাহান এই খবর শুনে ওই ছেলেকে দেয়ালে কাঠের সাথে পেরেক বসিয়ে বসিয়ে মেরেছে, যতক্ষণ না সে মরেছে ততক্ষণ পেরেক গেঁতেছিলো ওরা। এখন বলো যে একজন প্রেমিক হয়ে অন্য কোনো প্রেমিককে খুন করতে পারে কি? মূলত ছিলো একজন যৌনের স্বাদ মেটানো। অর্ণি: বাব্বাহ, আমার সি আই ডি বর দেখা যায় ইতিহাসও জানে। তো ইতিহাস রেখে ইংলিশ নিয়ে পড়ছো কেন। অর্ণব: ইতিহাস আমার প্রিয় সাবজেক্ট। কিন্তু আমার স্বপ্ন ইংলিশ নিয়ে পড়ার। অর্ণি: তা ইংলিশ প্রিয় লেখক কে তোমার? অর্ণব: জেন অস্টিন, চিনো তুমি? অর্ণি: না, অর্ণব: উনার লেখা উপন্যাস #প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস- এটা পড়েই আমি উনাকে ভালোবেশে ফেলছি। অর্ণি: কি আছে এই উপন্যাসে? অর্ণব: অস্টিন তার উপন্যাসে খুব সুন্দর করে যুক্তরাজ্য এর মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির মেয়েদের কথা তুলে ধরেছেন। উপন্যাসে ৪&৫ জন মেয়ে আছে এর মধ্যে অন্যতম হলো লিজা চরিত্র যার প্রেমে প্রতিটা পাঠক পাঠিকা প্রেমে পরেছে। তুমি চাইলেও পড়তে পারো আমার কাছে আছে বইটা। আর ২০০৪ সালে এটার উপর একটা মুভি বের হইছে। অর্ণি: অবশ্যই পড়বো। শুনেই মুগ্ধ হয়ে গেছি। অর্ণব: হুম রাত ২টা হয়ে গেছে। অর্ণি: তোমার জীবনে কি আর কোনো মেয়ে ছিলো। অর্ণব: আলমারিতে বা পাশে কাপড়ের নিচে একটা লাল ডাইরি আছে, ওইটা প্রথম থেকে পড়বা। আর হ্যা আমার সামনে ডাইরিটা খুলবা না। শুধু লুকিয়ে পড়বা। অর্ণি: কেন? কি আছে ডাইরিতে। অর্ণব: তোমার সব অজানা কথা। আমি রুমে থাকলে কখনো ডাইরি পড়বা না। অর্ণি: হুম। তোমার বুকে মাথা রাখি। আদুরী শুরে। অর্ণব: হুম। হয়তো দুটু জীবনের প্রেমের কিছুটা পূর্ণতা পেলো। সকালে, অর্ণব: হ্যালো হানিফ হানিফ: হুম বলরে। অর্ণব: তোদের এক জায়গায় যেতে হবে। হানিফ: কোথায়? অর্ণব: ইশিতার বাসায়। হানিফ: কিহহ? হঠাৎ এমন কথা। অর্ণব: আমার মন বলছে কিছু প্রমাণ পাবো ইশিতার বাসায় গেলে। (কাঁদছে) হানিফ: অর্ণব কান্না করিস না, যাবো আমরা, ইশু কে আমরা খুঁজে বের করবো। (হুম অর্ণবের প্রাণ পাখি হলো ইশিতা জাহান ইশু, যে হঠাৎ হারিয়ে যায়) অর্ণব: জানি না কেন জানি মনে হচ্ছে ওদের বাসায় কিছু না কিছু পাবো। হানিফ: ওদের কে আমি বলছি, আমরা ইশু পাখির বাসার বাগানে বসে থাকবো।তুই আয়। অর্ণব: হুম। অর্ণব: দোয়া কইরো অর্ণি, আজ একজনকে খুঁজতে যাচ্ছি। যার নাম লাল ডাইরিতে আছে। অর্ণি: দোয়া করি সফল হও। অর্ণব অর্ণির কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে চলে যায়। অর্ণি এমন ভালোবাসাই চায়। অর্ণব ইশুর বাসায় গিয়ে দেখে সবাই এসেছে। হানিফ,মৌ,সজিব,রাতুল,রনি,দিপু, সবাই আছে, অর্ণব: চল তালা ভেঙে ফেলি। মৌ: সমস্যা হবে তো? অর্ণব: এটা আছে তো (ওর সি আই ডি কার্ড দেখিয়ে বললো) মৌ: হু সেটা তো আছেই। অর্ণব: ভাঙবো কি। হানিফ: ভাঙ। অর্ণব কাপা হাতে তালা ভাঙে ফেলে। সবাই বাসার ভিতরে যায় অর্ণব বা কেওই এমন কিছুর আশা করে নি, যা তাদের চোখের সামনে যা দেখতেছে, মৌ চিৎকার দিয়ে উঠলো। রাতুল কেঁদেই দিছে এসব দেখে। অর্ণব যেন স্থির থাকতে পারছে না। হানিফ শুধু চেয়ে আছে, কথা বলার শব্দই নাই। এক বছর পর এমন দৃশ্য দেখবে তারা কেওই ভাবে নি। চলবে,,,,,, (ভুল গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন? গল্পে এখন শুধু রোমান্টিক থাকবে। আর বড় বড় একেকটা ধাক্কা থাকবে, গল্পে থাকা চরিত্র গুলোর ভুলের মাশুল দেখতে হলে সাথেই থাকেন। ছোট্ট প্রশ্ন অর্ণব আর ওর ফ্রেন্ডসরা এমন কি দেখলো? দেখি কার মনে কি চলছে।) ভালো থাকবেন। ঘরেই থাকবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here