ভুলের মাশুল পর্ব: ১৫

0
1338

গল্প: ভুলের মাশুল
পর্ব: ১৫
লেখক: হানিফ আহমেদ

অর্ণব: আম্মু আব্বু হসপিটালে, (কান্নার জন্য কথা বলতে পারছে না)
অর্ণি: মানে কি হয়েছে?
অর্ণব: জানি না কি হয়েছে, পাশের বাসার আন্টি ফোন দিয়ে বলেছেন, কারা যেন রাতে আব্বু আর আম্মুকে আক্রমণ করেছে, আর কিছুই জানি না আমি।
যাচ্ছি আমি হসপিটালে।
অর্ণি: দাঁড়াও আমিও যাবো।
সাহিল: অর্ণব কান্না করবে না! আমরা সবাই যাবো। নিজেকে শক্ত করো।

৩০ মিনিটের ভিতর ওরা হসপিটালে পৌঁছে যায়।
অর্ণব সামনে এক ডক্টরকে পেলো,
জিজ্ঞেস করলো, ওর আম্মু আব্বুর কথা, ডক্টর বললো ১২ নাম্বার কেবিনে, আর আরেকজন আইসিইউতে আছেন।
অর্ণব কান্না করছে।
কি থেকে কি হয়ে গেলো,

সাহিল: কান্না করবে না অর্ণব, নিজেকে শক্ত করো, এভাবে ভেঙে পরলে হবে না তোমার।
অর্ণব: কিভাবে ঠিক থাকবো।
আমার প্রাণ তো আমার মা বাবাই।

ওরা ১২ নাম্বার কেবিনের সামনে গিয়ে দেখলো নিধী আর ওই আন্টি আর উনার জামাই বসে আছেন।
নিধী কান্না করছে।
ওরা বুঝাচ্ছেন,
কান্না না কর‍তে।

অর্ণব শুকড়িয়া আদায় করলো।
ওর কলিজার কিছু হয় নি।

অর্ণবকে আসতে দেখে নিধী দৌড়ে গিয়ে ঝাপটে ধরলো।
ভাই বোন কান্না করছে।

নিধী: ভাইয়া, আম্মু আর আব্বুর অনেক রক্ত পরেছে।
আমার আব্বু আম্মু চোখ খুলছে না কেন, ওরা আমায় আম্মু আব্বুর কাছে নিয়ে যাচ্ছে না কেন?
ভাইয়া আমি আম্মুর কাছে যাবো? (কান্না করছে নিধী)

অর্ণব: আম্মু আব্বুর কিছুই হয় নি, এইতো দেখবি একটু পর তোকে ওরা কুলে নিবে, কান্না করিস না রে, আমার কষ্ট হয় বুড়ি।( অর্ণব কান্না করছে।)
নিধী: ভাইয়া তুমিও তো কান্না করছো?
অর্ণব: এই যা আর কান্না করবোনা।

“আন্টিকে বললো”
অর্ণব: আন্টি কিভাবে এসব হলো?
আন্টি: বাবা কান্না করবা না, শক্ত হও তুমি,

অর্ণি নিধীকে কোলে নিয়ে বসেছে, আর কান্না থামানোর চেষ্টা করছে। সাহিল আর অর্ণির মা বাবা অর্ণবকে বুঝাচ্ছে কান্না না করতে।

অর্ণব: আন্টি কিভাবে এসব হলো?
আন্টি: আমরা কিছুই জানি না বাবা।
নিধীর চিৎকার শুনে আমরা এসেছি, এসে দেখি তোমার আব্বু আম্মু মাটিতে পরে আছেন,
অর্ণব: কখন হয়েছে এসব?
আন্টি: আমরা রাত ৩টার সময় তোমার আব্বু আম্মুকে নিয়ে হসপিটাল আসি।
তোমার আব্বুকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে, উনার অবস্থা বেশি খারাপ।
অর্ণব: জানি না আমার এতো শত্রু কোথায় থেকে আসলো?
সাহিল: কান্না করবে না, তুমি অসুস্থ হয়ে পড়বে।
তুমি শক্ত হও।

অর্ণি:নিধীকে কিছু খাওয়াও।
সকাল থেকে কিছু খায় নি।
অর্ণব: বুড়ি আসো ভাইয়া তোমায় নিজ হাতে খাইয়ে দেবো।
নিধী: আমি খাবো না, আমি আম্মুর কাছে যাবো।
ভাইয়া আম্মু আব্বুর অনেক রক্ত পরেছে।
অর্ণব: কান্না করিস না রে। নইলে আমিও কান্না করবো?
নিধী: ভাইয়া এই যাও কান্না করবো না। আমায় আম্মুর কাছে নিয়ে যাও।

অর্ণব অনেক বুঝিয়ে নিধীকে কিছু খাওয়াতে সক্ষম হয়।

অর্ণব হানিফকে ফোন দিয়ে ওর আম্মু আব্বুর কথা বলে।
হানিফ এসব শুনে আর এক মুহূর্ত থাকে নি, সাথে সাথে হসপিটাল আসার জন্য রওনা দেয়।

ডক্টর এসে বলে গেলো।
জাহানারা বেগমের জ্ঞান ফিরেছে।
অর্ণব এক মুহূর্ত না দাঁড়িয়ে তার মায়ের কাছে যায়।
অক্সিজেন মাস্ক লাগানো।
অর্ণব গিয়ে তার মায়ের পাশে বসলো মাথায় হাত বুলাচ্ছে তার মায়ের।

অর্ণি দাঁড়িয়ে আছে জাহানারা বেগম এর একপাশে,
নিধী ঘুমাচ্ছে সাহিলের কুলে।

জাহানারা বেগম এর মাস্ক খুললো, জাহানারা বেগমের বেশি কিছু হয় নি।
জাহানারা বেগমের মাথায় বাড়ি কিছু দিয়ে আঘাত করেছিলো। আর হাতে চাকুর একটা ক্ষত আছে।

অর্ণব: আম্মু এখন কেমন লাগছে?
জাহানারা: ভালো লাগছে, (কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে)
অর্ণব: কিভাবে হলো এসব?
জাহানারা: তোর আব্বু কোথায়, নিধী কোথায়?
অর্ণব: নিধী ঘুমাচ্ছে, আব্বুও ভালো আছেন,
বলো কিভাবে এসব হলো?
জাহানারা: কান্না করছিস কেন?
রাত দু’টুর সময় তোর আব্বু কলিং বাজার শব্দ শুনে গিয়ে দড়জা খুলে দেন,
তখনি ছয়টা লোক মুখোশ পড়া ঘরে ডুকে পরলো।
অর্ণব: তারপর?
জাহানারা: তোর আব্বুকে জিজ্ঞেস করে, অর্ণব কোথায়,
উনি বলেন, ও বাসায় নেই।
তখন ওরা তোর রুমে গিয়ে দেখলো, নিধী আমাদের সাথেই ঘুমিয়েছিলো,

ওরা তোর আব্বুর কাছে আলমারি এর চাবি চায়।
কিন্তু দিতে না চাইলে, তোর আব্বুকে ওদের হাতে থাকা হকি স্টেক দিয়ে পা’য়ে বারি দেয়।
তারপর ওদের মধ্যে একজন বলে,
অর্ণব কে পাইনি তো কি হইছে, ওদের মেরে দে,
তারপর আর কিছু মনে নাই।

অর্ণব সব শুনে যেন রাগে ফুঁসছে।
কে করছে এসব?
কে আমার শত্রু।
যে আমার ক্ষতি করতে চায়।

অর্ণবের বাবার জ্ঞান রাতে আসে, উনার বুকের পাশে আঘাত ছিলো, কপাল ভালো তাই বেচে গেছেন।

আজ চারদিন হলো অর্ণব এর মা বাবা এখন হালকা সুস্থ।
অর্ণির সেবাতে ওরা যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

অর্ণব আজ ইশিতার ফ্যামিলির খুনিদের ধরতে যাচ্ছে।
রেজা বারবার জিজ্ঞেস করছে কে খুনি?

অর্ণব বলছে তাড়াতাড়ি জানবেই স্যার।

রাহিন গাড়ি ড্রাইভ করছে পাশেই রেজা বসে আছে, (রাহিন হানিফের আপুর বর)
অর্ণবের দেওয়া ঠিকানায় ওরা পৌঁছায়।

কলিং ব্যাল বাজালো।
এক মহিলা দরজা খুলে, অর্ণবকে দেখে,

মহিলা: আরে অর্ণব বাবা যে, সাথে এরা কে?
অর্ণব: আমার ফ্রেন্ড।
বাসায় ডুকে দেখলো
বাসায় দুটু পিচ্চি খেলা করছে।
মহিলা: বসো বাবা তোমরা, আমি তোমাদের জন্য চা কপি নিয়ে আসছি।
অর্ণব: আমরা বসতে আসিনি,
মহিলা: পরে কথা হবে, আগে কিছু খেয়ে নাও,
বলেই মহিলাটি রান্না ঘরে চলে যায়।

রাহিন: অর্ণব তুই চিনিস নাকি মহিলাকে?
অর্ণব: হুম,
রেজা: আর কাওকে তো দেখছিনা।
অর্ণব: দেখতে পারবে স্যার, আপনারা বসেন।

মহিলাটি এক কাজের মেয়েকে নিয়ে চা পাঠালো।
মহিলাটিও পিঁছে পিঁছে আসলো।

মহিলা: অর্ণব ইশিতা বা ওর ফ্যামিলির কোনো খবর পেয়েছো?
জানি না আমার বোনটি কেমন আছে। (কান্নার রেখা রেখে বললো)
অর্ণব এই কথার উত্তর না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়লো।
অর্ণব: বাসায় কি আর কেউ নাই?
মহিলা: আছেন তো সবাই আছেন।
দাঁড়াও আমি ডেকে আনছি।

মহিলাটি গিয়ে উনার স্বামী আর ছেলে, ছেলের বউকে নিয়ে আসলো সাথে করে।
মহিলার স্বামী নাসিম তালুকদার অর্ণবকে দেখে,

নাসিম: আরে অর্ণব বাবা যে, কেমন আছো?
অর্ণব: আলহামদুলিল্লাহ ভালোই আছি। এখন আরো বেশি ভালো থাকবো। (রহস্যময় হাসি দিয়ে)

অর্ণবের কথা শুনে নাসিম তালুকদার আর উনার ছেলে আরাফাত তালুকদার কিছুটা অস্তিত্ব ভোধ করলো।

নাসিম: তা তোমরা এতোজন যে, এরা কি তোমার ফ্রেন্ড?
অর্ণব: না আমি সহ এরা সবাই CID

অর্ণবের তাচ্ছিল্য হাসিতে বলা কথাটি ওদের ভালো লাগেনি

অর্ণব: আন্টি জানতে ছেয়েছিলা ইশিতা বা ওর ফ্যামিলির কোনো খুঁজ পেয়েছি কিনা?

মহিলাটি হলো মহিমা বেগম।
অর্ণবের প্রতিউত্তরে বললেন।

মহিমা: প্রতিটা রাত এখনো কান্না করে কাটে, আমার বোন আমার ইশিতা বা ওদের কারো খুঁজই নেই আজ একটা বছর ধরে।
অর্ণব: আন্টি ইশিতার ফ্যামিলির খুঁজ পেয়েছি।
মহিমা: কোতায় ওরা? কেমন আছে ইশিতা আর আমার বোন আমার পিচ্চি রবি?
অর্ণব: ইশিতার বাসায় ওদের পেয়েছি।
মহিমা: মানে?
অর্ণব: ইশিতার মা বাবা আর রবির কংকাল পেয়েছি ওদের বাসায়,কিন্তু ইশিতাকে পাই নি।
ওদের কেউ খুন করেছে।

খুন শব্দটা শুনে হালকা নড়েচড়ে উঠলেন নাসিম।

মহিমা: নায়ায়ায়া এ হতে পারে না। মিথ্যে বলছো এসব, বিশ্বাস করি না আমি এসব (চিৎকার করে বলছে মহিমা বেগম, কান্নার গতি ঝর্ণাধারাকেও হার মানাবে)
অর্ণব: যা সত্যি তাই বললাম।

নাসিম: কে করেছে এমন?

অর্ণব: বিড়াল মাছ চুরি করে,
মুনিব কে বলছে, মাছ গেলো কোথায়,
হাহাহাহা অনেক হাস্যকর কথা মিস্টার নাসিম।
নাসিম: কি বলে চাইছো তুমি?
অর্ণব: খুব সহজ কথাও বুঝলে না,
তুমি খুনি, তুমি খুন করেছো ইশিতার মাবাবা ভাইকে, আর ইশিতাকে গায়েব তুমিই করেছো?
নাসিম: কি বলছো এসব? আমি কেন এসব করনো।
আরাফাত: অর্ণব তুমি এসব কি বলছো?
অর্ণব: আরাফাত ধৈর্য ধরো, সব জানবে।
মিস্টার নাসিম আপনার ছোট ছেলে নিখিল কোথায়?

নাসিম: ও বাহিরে গেছে, একটু পরেই আসবে।
আর তুমি ভাবছো কি বলছো এসব?
অর্ণব: হা ভেবেই বলছি।
নিজ থেকে সত্যটা বলবে নাকি আমাদের কিছু করতে হবে?
নাসিম: আমি কিছুই করিনি, আর মিথ্যাও বলছিনা।

এতক্ষণ মহিমা বেগম ওদের কথা শুনছিলেন।
উনি বললেন।

মহিমা: আরাফাতের বাপ কি বলছে এসব অর্ণব।
সত্যিই কি তুমি আমার বোনকে আর বোনের স্বামী ছেলেকে খুন করেছো?
নাসিম: বিশ্বাস করো ওরা মিথ্যা বলছে। আমি কেন ওদের খুন করবো?

অর্ণব: প্রতিশোধ, রাগ, এসবের জন্যেই খুন করেছো নিরপরাধ মানুষ গুলোকে,
নাসিম: মিথ্যে, আমি কাওরে খুন করিনি,
অর্ণব: CID officer RkR এর নাম শুনেছো?
নাসিম: হুম,
অর্ণব: উনিই সত্য কথা বার করবেন তোমার ওই পাপী মুখ থেকে।

রেজা: সত্যটা বলে দাও,
নাসিম ভয় পেয়ে তুতলাচ্ছে
নাসিম: সত্যিটা হলো,
আমি কোনো খুন করিনি।

রেজা ঠাসিয়ে থাপ্পড় দেন নাসিমের গালে,
হাত দুটু পিছনে নিয়ে, কানের লতিতে চিমটি ধরে,

রেজা: সত্যটা বলবি নাকি, অন্য পথ অবলম্বন করবো?
নাসিম: আমি খুন করিনি।
রেজা: রাহিন এদিকে আসো, যতক্ষণ না সত্য বলছে ততক্ষণ থাপ্পড় দিতে থাকো,
রেজার কথা মতো রাহিন ৪ টা থাপ্পড় দেয়
তারপর নাসিমের মুখ খুলে,

ভালো মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা কোনো নরপশু এর চরিত্র বের হয়ে আসে।

নাসিম: হ্যাঁ আমি খুন করেছি ওই তিনজনকে, ওদের ভুলের শাস্তি দিয়েছি আমি, ( চিৎকার করে বললো)

এর মধ্যে নিখিল চলে আসে, অর্ণব আর আরো লুকদেরর দেখে প্রশ্ন করতে যাবে তার আগেই অর্ণব নিখিলের কলার ধরে
অর্ণব: বল আমার ইশিতা কোথায়।

অর্ণবের মুখে ইশিতার নাম শুনে নিখিল ভয় পেয়ে যায়।

মহিমা বেগম এতক্ষণ
ওদের কথা শুনছিলেন
মহিমা টাটিয়ে থাপ্পড় দেন নাসিমের গালে

নাসিম: তুমি,?
মহিমা: হ্যা আমি, কি করেছিলো আমার বোন?
কেন খুন করছো ওদের?
নাসিম: আমি চেয়েছিলাম ইশিতাকে আমার ছেলে নিখিলের বউ করবো।
ইশিতার বাবাকে ২০ লক্ষ টাকা দেওয়ার সময় এটাই বলেছিলাম।
উনিও আশ্বাস দিয়েছিলেন, কিন্তু দু বছর পর যখন বিয়ের কথা বলি তখন উনি না করে দেন, আর বলেন কোনো নেশাখোর ছেলের সাথে উনার মেয়েকে বিয়ে দিবেন না।
আমার ২০ লাখ টাকা আগেই দিয়েছিলেন।
আমি উনার মেয়ে আর সম্পত্তি এর লোভে পরি, আর উনার ভুলের শাস্তি দিতে চেয়েছিলাম।

মহিমা: বাহ বাহ বাহ
তোমাকে নিজের স্বামী বলতেও আজ লজ্জা লাগছে,
একজন খুনি আমার স্বামী হতে পারে না।
অর্ণব নিয়ে যাও ওকে,
ফাসি হয় যেন ওর আর নিখিলের,
ভাবতেই লজ্জা লাগছে আমি কোনো পশুকে পেটে ধরেছিলাম।

অর্ণব: বল আমার ইশিতা কোথায়,
নিখিল: আমি জানি না
অর্ণব: তুই মেরেছিস আমার ইশিতার ফ্যামিলিকে, বল কোথায় লুকিয়ে রেখেছিস ইশিতাকে।
নিখিল: সত্যিই আমি জানি না, মানছি আমরা রাগের বসে খুন করে ফেলছি,
সেদিন বৃষ্টি ছিলো।
ইশিতা পালিয়ে গেছিলো, তারপর আর খুঁজে পাই নি।

রেজা: রাহিন অর্ণব আর সাগর যাও এদের গাড়িতে নিয়ে যাও,
সাগর: ইয়েস স্যার।
মহিমা: অফিসার দুজনেরি ফাঁসি চাই।
এমন নরপশু পৃথিবী তে বেচে থাকতে নেই।
রেজা: তিনটা খুন, ফাঁসি না হয় যাবজ্জীবন হবে।
মহিমা কান্না করছেন
আরাফাত আর ওর স্ত্রী বুঝাচ্ছে কান্না না করতে,
নিজের বোন হারানোর ব্যথা, তাও নিজের স্বামী ছেলে খুনি, নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারবেন না।
এই একবছরে একটুও বুঝতে পারেনি মহিমা বেগম ওদের পাপ কাজের কথা।

অর্ণব দাঁড়িয়ে আছে ইশিতার মা বাবা আর রবির কবরের পাশে, সাথে ওর সব ফ্রেন্ড শুধু মৌ আসেনি,
কবরস্থানে মেয়েদের যেতে নেই।

হানিফ: অর্ণব কিভাবে জানলি এসব তুই,
অর্ণব সব বলে ওদের, ডাইরির কথা থেকে নাসিম আর নিখিলকে ধরার কথা পর্যন্ত।

হানিফ: আমার ইশু পাখির খবর এখনো পাইনি।
অর্ণব ওই নরপশু দের আমার হাতে ছেড়ে দে, আমি ওদের টুকরা টুকরা করে রাস্তার কুকুরদের খাওয়াবো।
অর্ণব: শান্ত হ, ইনশাআল্লাহ আমরা ইশিতার খুঁজ পাবো।

অর্ণব রুমে বসে আছে,
কিছুটা হ্যাপি লাগছে ওরে,
নিজের ভালোবাসার ফ্যামিলির খুনিদের শাস্তি দিতে সক্ষম।

অর্ণি এসে অর্ণবের পাশে বসলো।
অর্ণি: ~ পাহাড়টা আজ সবুজ লাগছে।~
~ঝরে যাওয়া বেলিফুলে ফুল ফুটেছে।~
~আকাশটা পরিষ্কার থাকলেও, বৃষ্টি হচ্ছে।~
ঠিক বলেছি কি আমি?
(অর্ণবকে প্রশ্ন করলো)
অর্ণব: হুম পাহাড় টা ঢেকে রেখেছিলো এক ঝাক মেঘ, তাই পাহাড় দেখা যাচ্ছিলো না, পাহাড়ে থাকা সবুজ প্রকৃতিটা। মেঘ সরে গিয়ে আকাশ আর পাহাড় দু’টুই পরিষ্কার করেছে।
জানো ত মাঝেমধ্যে আকাশ খুশিতেও কান্না করে জমিন বিজায়।
অর্ণি: হুম,
অর্ণব: আমার ঘুম পাচ্ছে, রাত ৮টাতে জাগিয়ে দিও আমায়।
অর্ণি: হুম।

~কারো স্মৃতিতে কাঁদবে তুমি,
সামনে থাকা মুক্তা ধরবে না তুমি।
খুঁজছো তুমি গভীর জঙ্গলে,
হারিয়ে যাওয়া ময়না টিয়ে।
সামনে থাকা স্বর্ণ তুমি নেবেনা জানি,
স্মৃতির পাতায় খুশি তুমি ঝরিয়ে চোখের পানি।~
অর্ণি আনমনে এসব ভাবছে আর অর্ণবের মায়াবী রুপে চেয়ে আছে।

হানিফ: কেউ কি এনে দিতে পারবে না আমার ইশু পাখিকে,
অনেক দিন হলো দেখিনা কলিজাটাকে।
নিজের চোখের সামনে ভালোবাসার মানুষটাও আছে, অথচ কিছুই ভালো লাগছে না।
~ ভালোবাসার মুগ্ধতা ঘিরেছে আমায়,
না বলা কথা না বলাই থাকে সব অপূর্ণতায়।
ওই আঁকাবাঁকা রেল লাইনে,
ভালোবাসা খুঁজে বেড়ায়,
ওই পশ্চিমা পেঁচার ডাকে।
আসবে পূর্ণতা, ভাসবে ভালো,
পেঁচার বিশ্বাস তার সঙ্গী পূর্বের ডালে খুঁজছে সুখের আলো।~
কবে বলবো ভালবাসি প্রিয়,
কবে নেবো আপন করে,
পারছিনা না বলা কথা গুলো নিজের মধ্যে রাখতে।
খুব তাড়াতাড়ি আমার ভালোবাসাকে আপন করে নেবো।
জানিয়ে দেবো নিজের মনের কথা, দুইটা দিন না হয় অপেক্ষা করি।
হানিফ কথা গুলো ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে যায়।

সকালে
রাহিন ফোন দিয়েছে অর্ণবকে।
রাহিন: হ্যালো!
অর্ণব: বলো দুলাভাই।
রাহিন: আজ একটা কেইচ এর জন্য অনেক দূরে যেতে হবে।
অর্ণব: কে কে যাবো, আর কোথায়?
রাহিন: আমি,তুমি,সাগর আর হানিফ,
অর্ণব: হানিফ যাবে কেন?
রাহিন: ও ওই দিকেই কোথায় যাবে, তাই আমাদের সঙেই যাবে ( মিথ্যা বললো, মূলত হানিফ দেখতে চায় সি আই ডি কিভাবে কাজ করে)
অর্ণব: আমি আসছি,

অর্ণব: অর্ণি আমি যাচ্ছি একটা কেইচ এর ব্যপারে অনেক দূর যাবো,
অর্ণি: কখন ফিরবে,
অর্ণব: রাত হবে,
তুমি আম্মু আব্বুর খেয়াল রেখো।
আর কেউ কলিং বাজালেও দরজা খুলবে না।
আমি চাইনা তোমাদের হারাতে,
অর্ণি: আচ্ছা।
অর্ণব অর্ণির ওই লাল ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ছুঁয়ে বেড়িয়ে যায় তার অজানা গন্তব্যে।

অর্ণি থ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে,
আমি চাইনা তোমাদের হারাতে,
কথাটায় ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে,
অর্ণব আজ নিজ থেজে অর্ণির ঠোঁটে ভালোবাসার পরশ দিয়েছে।
~না চাইতেই আজ ময়না সুর তুলেছে।
গেয়েছে তার ভালোলাগার গান,~
অর্ণি এমন খুশিতে দু’রাখাত নফল নামাজ পড়ে।

অনেকেই আছে অল্প ভালোবাসাতে খুশি, অল্পতে সুখ খুঁজে পায়।

অর্ণব আর হানিফ বসে আছে পিছনে।
সামনে সাগর ড্রাইভ করছে রাহিন রেজার সাথে ফোনে কথা বলছে, টুটুল এর আড্ডাখানায় যাচ্ছে ওরা,
আজ টুটুলকে ধরবেই।

এক অজানা পথে ওরা ডুকলো,
রাস্তার দু’দিকে ঘন জঙ্গল।
প্রায় দুই কিলোমিটার যেতেই দেখলো, সামনে গাছ দিয়ে রাস্তা ব্লক।
৬&৭ জন মুখোশ পড়ে দাঁড়িয়ে আছে।
হাতে বন্ধুক।

অর্ণব: টুটুল কি জেনে গেছে আমাদের আসার কথা?
রাহিন: না জানবে কি করে, আমরা তো সাধারণ ভাবেই আসছি।
সাগর: হয়তো ডাকাত হবে।
অর্ণব: যাই হোক, আমি নেমে দেখছি কে ওরা।
রাহিন: পাগল নাকি তুই, দেখছিস ওরা কজন, ৬&৭ টা বন্ধুক, আর আমাদের ৩টা বন্ধুক,
অর্ণব: হানিফ তুই গাড়িতে শুয়ে পর,
হানিফ: কেন?
অর্ণব: যা বলছি তাই কর।
হানিফ: আমিও নামি,
অর্ণব: মাথা ফাটাবো, শালা কেন আসছিস আমাদের সাথে, এখন মর আমাদের সাথে,
হানিফ: মরতে হলে মরবো।
অর্ণব: পাগলামী করিস না, তোর কাছে আত্মরক্ষা করার কিছুই নাই।
তুই লুকিয়ে পর গাড়িতে,
(অর্ণবের রাগ দেখে হানিফ আর কথা বললো না)

রাহিন,অর্ণব, সাগির, তিনজন হাতে বন্ধুক নিয়ে বের হয়,

ওদের তিনজনকে দেখে,
৬&৭জন দলের লিডার যে, সে বললো,

১ম: আমরা অর্ণবকে চাই, দিয়ে দাও অর্ণবকে।
রাহিন: মানে কি? কারা তোমরা?
১ম: ওই CID অফিসার বেশি চিল্লাবি না, নইলে এখানেই মেরে রেখে দেবো কুকুরদের খাওয়ানোর জন্য,

অর্ণবের কেন জানি কণ্ঠটা চেনা কারো লাগছে।

অর্ণব: কে তুই, আর আমার সাথে তোর কিসের শত্রুতা?
১ম: হা হা, তোকে উপরে পাঠাবার আগে আমার পরিচয় দেবো তোকে,

অর্ণব: হা হা উপরে পাঠাবি,
এই অর্ণব কখনো হারতে শিখে নি।
১ম: বাহ বাহ, কি ডায়লগ,

অর্ণব নিশানা লাগিয়ে ৭ জনের টিম কে ৬ জনের করে দেয়,
মানে একজন কে উপরে পাটিয়ে দেয়,

ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় সব, শুধু গুলাগুলির আওয়ায শুনা যাচ্ছে।

রাহিন মেরে দেয় আরো একজনকে,
অর্ণব আরো একজনের হাতে গুলি করে গুলিটা এমন ভাবে লেগেছে শরীর থেকে হাতটা আলাদা হয়েগেছে।

হঠাৎ সাগর আহ বলে চিৎকার করে উঠলো।
রাহিন বলল অর্ণবকে,

রাহিন: তুই সাগরকে দেখ আমি এদিক দেখছি।

অর্ণব দেখলো সাগরের গুলি লেগেছে বা হাতের কবজির একপাশ দিয়ে বেরিয়ে গেছে, তাই চিন্তা মুক্ত।
অর্ণব সাগরকে বললো গাড়ির ভিতরে ডুকতে,
আর হানিফকে বললো গাড়িতে ব্যান্ডেজ এর বক্স আছে, ওর হাতটা ব্যান্ডেজ করে দে,

এই দিকে রাহিন আরো দুজনকে আহত করে,
আর মাত্র দুইজন রয়েছে,

ওরা দুইজন হাত উপরে তুলে নেয়,

রাহিন আর অর্ণব ওদের দিকে বন্ধুক রেখে
১ম জনকে বললো মুখের মুখোশ খুলতে,

অর্ণবের কথা মতো ১ম জন মুখোশ খুলে,
অর্ণব ওই মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা মুখটা দেখে নিজেকেই বিশ্বাস করাতে পারছে না, এ কাকে দেখছে সে? শুধু চিৎকার করে বললো,

অর্ণব: তুই??
১ম: হ্যা আমি।
অর্ণব: বিশ্বাসঘাতক,

চলবে,,,,,,

(গল্পের ভুল গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন?
গল্পের সাথেই থাকবেন।
আর উৎসাহ দেবেন আশা করি।)

ভালো থাকবেন।
ঘরেই থাকবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here