মায়ায় ভরা সেই দিনে পর্ব ৩

মায়ায় ভরা সেই দিনে
পর্ব ৩

দেওয়ান বাড়িতে রান্নাবান্নার জমজমাট বাহার। বহুদিন পর প্রাণের বন্ধুর জন‍্য লোক পাঠিয়ে দিঘীরপার থেকে নদীর বড় ইলিশ, রুই, আইড়, পাবদা, বোয়াল মাছ আনিয়েছেন রোমেল দেওয়ান। আফিয়া বেগমের দম ফালানোর জো নেই। রাবেয়া হকও হাত লাগিয়েছেন রান্না বান্নায়। কাজের লোকেরা মাছ কুঁটে ধুঁয়ে দিয়ে গেছেন। এখন আফিয়া বেগম রান্না করছেন তাজা মাছের স্বাদ অন‍্যরকম মজাদার। সব লোক সংখ‍্যা মিলিয়ে পঁচিশজন মানুষের মতো খাবার আয়োজন। তবে এতে করে রান্নার আইটেমই হবে পনেরো পদের। ঝামেলা তো কম না। নদীর মাছ সহ দেশি মুরগির ঝোল, শাক, সবজি, ভেগুন ভাজা, বড় চিংড়ির ভর্তা, ডাল, রোস্ট, গরুর গোস্তের কালাভুনা, গরুর কলিজা ভুনা খাসির রেজালা, এ যেন খাবারের বিশাল রণভুমি।
ড্রয়িং রুমে বসে গল্পে মজেছেন দুই বন্ধু। হৃদয়ের ধার খুলে আজ হাজারো অতীতের গল্পে ডুবেছেন তারা। কতশত কথা বলছেন সাথে ধোঁয়া উঠা কাপের চা। আবার মাঝেসাঝেই হুু হা হাসিতে ফাটছেন তারা। ইশিতার নিচ তলায় ঘুরেফিরে দেখা শেষ। আসার পর চার পদের শরবতই দিয়েছেন খেতে অরজিনাল ফলের ব্লেন্ডার করা জুস শরীরের জন‍্য উপকারিতা বহুত। সাথে নানা রকমের পিঠে পুলি তো ছিলোই। পেট ভরে ঢোল হয়েছে তাই এখন একটু হাঁটাচলা করছে সে ভালো লাগবে তাহলে।
____________________
ইশিতা রান্না ঘরে উঁকি দিলো। রাবেয়া হক আফিয়া বেগম ভিষণ ব‍্যাস্ত। সে আস্তে করে ডাকলো
আম্মু
রাবেয়া হক ফিরলেন বললেন কিছু বলবে
আফিয়া বেগম ও তাকালেন
ইশিতা একটু ধীরে বললো একটু ছাদে গিয়ে ঘুরে আসি।
আফিয়া বেগমই আগে কথা বললেন যাও যাও ঘুরে এসো ভালো লাগবে তাহলে।
রাজবীর ওর বন্ধুরাও উপরেই আছে
রাবেয়া হকও সম্মতি দিলেন যাও ঘুরে এসো।
ইশিতা দুতলা বেয়ে ছাদে উঠার সিড়িতে উঠতেই একটা ছেলে হন্তদন্ত পায়ে ছাদের থেকে নিচে নামছিলো। ইশিতা হঠাৎ শব্দে চমকে উঠে দেয়ালে সিঁটিয়ে গেলো। পায়ের আওয়াজ থেমে গেল। ইশিতা চোখ তুলে চাইলো সে বিবশ হয়ে গেল। এই তো সেই ধারালো চোখের লোকটা সাদা পাঞ্জাবী গায়ে কি একটু বেশিই সুন্দর দেখাচ্ছে?ভেজা চুল কপালে ছড়িয়ে ফর্সা মুখের তীক্ষ্ম ধারালো দৃষ্টির সরু নাকের আর দেখতে পারলো না কিছু ঠোঁট ভেঙ্গে ভ্রু উচিয়ে ইতরের মত বাঁকা হাসিটা হাসলো রাজবীর। বললো এনি প্রবলেম ম‍্যাম?
ইশিতার গলা শুকিয়ে কাঠ তৃষ্ণা পেয়েছে বড্ড। বিদেশির ন‍্যায় দেখতে লম্বাটে লোকটা পুরো সিঁড়ি জুড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কি মসিবত লোকটা সরছে না কেন?
কাঁপা গলায় উত্তর করলো ইশিতা নো প্রবলেম।
রাজবীর বিজ্ঞের ন‍্যায় মাথা ঝাঁকালো বললো ওকে ওকে। সো হু আর ইউ?
ইশিতা বোকার ন‍্যায় চেয়ে রইলো তার কি বলা উচিত সে বুঝতে পারছে না কেন যেন। মাত্র তিন বছর তিন বছরে লোকটা ওকে ভুলে গিয়েছে যে চিনতে পারছে না।
রাজবীর ভ্রু চুলকালো বললো আপনি আপনার পরিচয় ভুলে গিয়েছেন?
ইশিতার চন্দন রঙা মুখে অপমানের ছায়া পড়ে। থমথমে মুখে বলে আমি ইশিতা হক।
রাজবীর আশ্চর্য ভাবে বললো কোন ইশিতা?
ইশিতার রাগ হচ্ছে কেন যেন? বললো আমার আব্বুর নাম আসাদ হক
রাজবীর বিস্ফোরিত চোখে তাকালো যেন এরকম আজব কথা সে এই দুনিয়ায় কখনও শুনেনি। থেমে থেমে বললো তু মি ইশি তা? ওহ মাই গড। এই মেয়ে তুমি না দেখতে একটু কেমন যেন ছিলে?
ইশিতা হতবাক হয়ে তাকালো বললো কেমন ছিলাম??
রাজবীর হাত ঘড়ি দেখলো বললো এখন সময় নেই নিচে যেতে হবে। অতপর ধুপধাপ পা ফেলে সে চলে গেলো।পিছনে রেখে গেলো হতবাক হওয়া চোখের বিষন্ন মনের মেয়েটাকে।
______________________
আকাশে মেঘের গর্জন শুনা যাচ্ছে। বৃষ্টি আসতে পারে বোধহয়। ঠান্ডা হাওয়ায় ফুলের ঘ্রাণ নাকে লাগছে। রাজবীর নিচে এসে আসাদ হক আর রাবেয়া হকের সঙ্গে দেখা করে প্রাথমিক আলাপ সাড়লো। তার বিনয়ী চমকপ্রদ কথাবার্তার ফাঁদে পড়লো আসাদ হক রাবেয়া হক। মুখ থেকে হাসি সড়ছেইনা তাদের।রাজবীরের এই ভালো মানুষির আড়ালের ফাজিল ইতর চেহারার রাজবীরকে আবিষ্কার করতে পারলেন না তারা।রাজবীর নবাবী ভঙ্গিতে বসে আছে সোফায়। তার সুদর্শন মুখ শরীরের গড়ন দেখলে প্রতিটা মানুষের মন মুগ্ধ হতে বাধ‍্য। রাজবীর তার বাবার দিকে তাকালো। তার বাবা ভীষণ ভালো একজন মানুষ। এতটাই ভালো যে নিজের বন্ধুর জন‍্য নিজের জন্ম দেয়া ছেলেকে তিনি কষ্ট দিয়েছেন। ছেলের সাথে অন‍্যায় করেছেন তিনি। বাবার প্রতি খুব সুক্ষ্ম একটা ক্ষোভ জমা আছে মনের কোনে সময় বোঝে সুযোগ মতো তা ঝাড়বে সে। তার বাবা তার স্পর্শকাতর যায়গায় আঘাত করেছে। তার আবেগ কে অপমানিত করা হয়েছে। এই একটা বিষয় ছাড়া আর কোন মতবিরোধ নেই বাবার প্রতি তার। ব‍্যাক্তিগতভাবে সে তার বাবাকে বাবার আদর্শকে সম্মান করে।
_________________________
ইশিতার ছাদে যাওয়া আর হয়নি। রাজবীরের অদ্ভুত কথার পর সে তাকে থাকতে দেয়া রুমে এসে রেস্ট নিয়েছে। ফোনে কিছুক্ষণ টেপাটেপি করেছে। এখন সে দু তলার বেলকনি থেকে নিচের পরিবেশ দেখছে। মনটা ভালো হয়ে যাচ্ছে তার। আকাশ মেঘলা। বাতাসে ফুল ফলের গাছ হেলেদুলে নিত‍্য করছে। ফুলের মিষ্টি গন্ধে চারপাশ ভরে আছে। নদীর শান্ত স্নিগ্ধ পানি বাতাসের দাপটে মৃদু ঢেউ খেলছে আহ্ কি মনভোলানো দৃশ্য। বেলকনি গ্রীল পুরো আটকানো না অর্ধেক করে ছাদের মতো রেলিং দেয়া। এতে করে বাতাসের দাপট ভালোই গায়ে লাগছে। ইশিতার চন্দন রঙা গায়ে পার্পেল কালার থ্রি পিস্। চুল উড়ছে অবাধ‍্যর মতো দুই হাত কনুই রেলিংয়ে ঠেস দিয়ে তাতে থুতনি রেখে উদাস দৃষ্টিতে গ্রামের পরিবেশ দেখছে সে। রাজবীর বাবা আংকেলকে বলে বাড়ি থেকে বের হয়েছে। অলক কে পাঠিয়েছে বাইক বের করতে গ‍্যারেজ রুম থেকে বিল্ডিংয়ের পিছনে বড় স্টোর রুমের মতো ঐখানেই গাড়ি, বাইক, জীপ রাখা হয়। সে একটু বাজারে যাচ্ছে বাবার ঔষুধ নিতে। মাথা উপরে তুলে দুতলার বারান্দায় ইশিতাকে দেখলো। ফর্সা মুখের তীক্ষ্ম সরু নাকে ঠোঁট ভাঙ্গিয়ে বাাঁকা হাসিটা ঝুলে পড়লো রাজবীরের মুখে। ইশিতা এখনও দেখেনি তাকে। বাইকের আওয়াজে ইশিতার দৃষ্টি নিচে নামলো। রাজবীর ভ্রু উচাঁলো তার অর্থ হচ্ছে তাকিয়ে কি দেখ?
ইশিতা মাথা নাড়লো ইশারায় কিছু না বুঝালো।রাজবীর বিচিত্র ভঙ্গিতে ঠোঁট কামড়ালো। ভালো করে আশপাশ দেখে নিয়ে চোখ মাড়লো ইশিতাকে। উল্কা গতিতে বাইক নিয়ে হাওয়া হয়ে গেল সে। ইশিতা বেকুবের মতো দাঁড়িয়েই থাকলো কি অসভ‍্য লোক রে বাবা।
রাজবীর বাইকে বসে চোখ ঝাপটাচ্ছে। মেয়েটা এই তিন বছরে অতুলনীয় রূপের অধিকারি হয়েছে। মিষ্টি চেহারাটা আগেও দেখতে এমনটাই ছিলো তবে গায়ের রঙ তখন একটু চাপা ছিলো আর এখনতো সূর্যের কিরণের ন‍্যায় চন্দন রঙটাও কিরণ ছড়াচ্ছে। চোখ বুঝে শ্বাস নিলো রাজবীর একটা সময় এই মেয়েটাকে দেখার জন‍্য একটু কথা বলার জন‍্য কি ছটফটই না করেছে সে। ভালোবাসা টা এখনও আছে তবে অনুভূতি টা মরে গেছে। তখন রাজবীর আবেগকে গুরুত্ব দিয়েছিল বিবেক তখন হাওয়ায় ভেসে গেছিলো। এখন সে আবেগ বিবেক উভয়কেই নিজ আয়ত্বে নিয়ে এসেছে। দুটোকে এক সাথে রেখে ভাবতে শিখেছে। সময় পরিস্থিতি মানুষকে কত কিছুই তো শেখায় এ আর নতুন কি? কিন্তু ভালোবাসা টা সত্যিই যদি এসে যায় তবে তা হৃদয়ের রাজ‍্যতে কোন না কোন ভাবে ঠিক রয়ে যায়। এতো সহজে তা ছুটবার নয়। তবে রাজবীর এবার একা দগ্ধ হবে না ভালোবাসার অনলে। এবার সাথে ইশিতাও জ্বলবে। ভালোবেসে জ্বলবে। রাজবীর তখন প্রশান্তির শ্বাস ফেলবে।
_________________________
খাবার টেবিলে বসে সবাই। রোমেল দেওয়ান আর আসাদ হক এখন ও কথাবার্তার পর্ব চালিয়েই চলেছেন। এতো কথা যে বলতে পারে এই মানুষ গুলো। রাজবীর, রোহান, মুন্না, জিসান, জিহাদ, রাতুল সবাই ডাইনিং টেবিলে পাশাপাশি বসে। রাজবীর এখন ভদ্র শ্রোতা। বন্ধুদের দলটা ড‍্যাবড‍্যাবিয়ে চেয়ে দেখছে সামনে বসা দু মুরব্বী কে। রাতুল রাজবীরের কানে ফিসফিসালো বললো আংকেল বোধহয় একটু বাঁচাল আছে দোস্ত। রাজবীর গরম চোখে তাকালো চোখের ইশারায় বুঝালো চুপ থাকতে। রাতুল মুখ বাঁকালো হুুহ।
আফিয়া বেগম রাবেয়া হক খাবার পরিবেশনে ব‍্যাস্ত। সোমা মেয়েটা রান্নাঘর থেকে খাবারের ডিশ এনে এনে দিচ্ছে। ইশিতা ভীড়ু পায়ে দুতলা থেকে নামলো। রোমেল দেওয়ানের চোখে পড়লো তাকে আনন্দের সহিত বললো আসো আম্মু আসো। ইশিতা চেয়ার টেনে বসলো সবার দিকে একবার চোখ ফেললো। রাজবীর চেয়ার টানার শব্দে সামনে নজর ঘুরালো। ইশিতাকে দেখে তার বুকের ভিতর দু পাশের খাঁচার হাড় গুলো চাপ দিয়ে উঠলো। উফ আল্লাহ্ এই মেয়েটাকে এতো সুন্দর লাগছে কেন? খুব তো সাধারণ একটা বেশে আছে তাও রাজবীরের শরীর কাঁপছে কেন? রাজবীর নজর সড়ালো চোখ ঝাপটালো। বন্ধ চোখের তারায় সাদা গোলাপির থ্রি পিস পড়া একগুচ্ছ মাঝারি লম্বাটে চুল মধ‍্যখানে সিঁথি করা চন্দন রঙা মুখটায় ঠোঁটের কোনে খাঁজ যুক্ত মিষ্টি হাসিটা এই অল্প একটু দৃশ্যপট বেশি কিছু তো নয়। তবে? রাজবীরের কেন এরকম প্রেশারের রোগীর মতো লাগছে। খুদা লেগেছে বোধহয়। নাহ্ আজ একটু বেশি খেতে হবে। শরীরটা দুর্বল হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। হায় বোকা প্রেমিক প্রেমটা কি এতই সোজা? তুমি কেন ভালোবাসার সাথে অভিমান করে আছো? প্রেমিক পুরুষের তো রাগ অভিমান মানায় না।

দুপুরের ভোজন টা জম্পেশ হলো সবার। রাজবীর কথার ফাঁকে তার বাবার থেকে অনুমতি নিলো তারা বন্ধুরা মিলে কাল টঙ্গীবাড়ী লৌহজং থানার একটি গ্রামে ঘুরতে যাবে। রোমেল দেওয়ান অনুমতি দিলেন সাথে ইশিতাকে সাথে নিতে বললেন। ইশিতার একটু কেমন সংকোচ হচ্ছিলো প্রথমে এতগুলো ছেলের মাঝে সে একা একটা মেয়ে ব‍্যাপারটা একটু কেমন না? তবে আম্মু আব্বুর পশ্রয়ের ইশারা পেয়ে সম্মতি দিলো সে। আর এমনিতে ঘুরতে যাওয়ার ব‍্যাপারে তার অত অমত নেই। গ্রামে আসাই তো ঘুরেফিরে দেখার জন‍্য গ্রামের মুগ্ধ করা রূপে মুগ্ধ হবার জন‍্য। ওহে পরোয়ারদিগার কি অপূর্ব সৃষ্টি হে তোমার।
◆◆ ◆◆ ◆◆
বিকেলে একটু বাজারে আড্ডা দিলো বন্ধুরা। রাতে দ্রুতই বাড়ি ফিরলো সবে। ডিনার শেষে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিতে লাগলো সবাই। তবে মুন্না সবাইকে চেপে ধরলো মুভি দেখার জন‍্য। কি আর করা বন্ধুর কথা কি আর ফেলা যায়। রাজবীর বললো আমি কফি মেকারে কফি করে নিয়ে আসি তাহলে।
বন্ধুরা সবাই গদগদে হাসলো বললো যাও মামা যাও।
রাজবীর লাথি দেখালো বললো হারামিরা সর।
জিসান কটু হাসলো বললো লাভ ইউ দোস্ত। রাজবীর বাঁকা হাসলো বললো তোরা মুভি সিলেক্ট কর।
নিচে আসলো সে কফি মেকারে প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র ঢেলে দিয়ে সুইচ টিপলো। ডাইনিং টেবিলে হেলান দিয়ে দাঁড়ালো। তার পড়নে কালো থ্রি কোয়ার্টার প‍্যান্ট গায়ে ব্লু রঙ্গা টি শার্ট ফর্সা গায়ে দারুণ মানিয়েছে।
ইশিতা ওর রুম থেকে বেরোলো হাতে মাম পট। ফিল্টার থেকে পানি নিবে সে। দুতলার সিঁড়িতে এসে থমকে দাঁড়ালো সে লোকটা রাত করে এখানে হিরোদের মত দাঁড়িয়ে কেন? আস্তে করে নামলো সে রাজবীর পায়ের আওয়াজে সামনে চাইলো এই প্রথম মেয়েটার দিকে তাকিয়ে সে ভদ্র বিনীত হাসিটা হাসলো। বললো কোন সমস্যা? ইশিতাও সরল হাসলো বললো পানি নিবো।
মাম পটে পানি ভরতে ভরতে রাজবীরের দিকে তাকালো সে লোকটা বেশির থেকেও বেশি সুদর্শন। ধীর আওয়াজে বললো কি করছেন রাত বেলা এখানে?
রাজবীর চাইলো সুন্দর করে বললো কফি করছি বন্ধুদের জন‍্য ।
ইশিতা হাসলো বললো আপনার বন্ধুদের সাথে আপনার বন্ডিং টা খুবই ভালো।
রাজবীর কফি মগে ঢালছে বাঁকা হাসলো বললো তা তুমি কিভাবে বুঝলে? আমাদের লুকিয়ে লুকিয়ে দেখো নাকি?
ইশিতা তার সরল গলায় বললো আরে আমি কি চোর নাকি? লুকিয়ে দেখবো কেন? খাবারের সময় তো টেবিলে সরাসরি তাকিয়েই দেখলাম
রাজবীর একটু থামলো পিছন ফিরে মেয়েটাকে দেখলো। ইস গোল গলার লং টিশার্ট আর টাউজারে সাথে চুলের বিনুনিতে কি আদুরে লাগছে দেখতে তার ছোটবেলার বউটাকে। রাজবীরের হঠাৎ মনে হলো মেয়েটাকে চুপটি করে বলতে এই মেয়ে জানো কি? তুমি আমার আদুরে ছোট্ট বউ। খুব ভালো সরল মনের বউ। জানো কি? সেই যে কত বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়েছিল এক মায়ায় ভরা দিনে। আমি কিন্তু ভুলিনি তুমি ভুললে কেন? এর জন‍্য তো শাস্তি পাওনা তুমি। এরপর কি হয়েছে জানো? ছোট আপার বিয়েতে আবার এক মায়ায় ভরা দিনে তোমাকে দেখলাম। পাগল হলাম। আবেগি প্রেমিক হলাম। কিন্তু প্রকাশ করা হলো না। রাজবীর শ্বাস ফেললো বাদ দিলো অতীত কে।
কফি রেডি করে ট্রে তে তুলে নিলো। এক মগ ইশিতার দিকে এগিয়ে দিলো। ইশিতা একটু অবাক হলো তবে সাথে সাথেই মগটা হাতে নিলো সরল মিষ্টি হেসে ধন্যবাদ জানালো। চুমুক দিয়ে সুন্দর চোখ বড় করে তাকালো বললো বাহ্ চমৎকার হয়েছে দারুণ স্মেল আসছে সুগার ও ঠিকঠাক।
রাজবীর ইশিতার দিকে চেয়ে ছিলো মেয়েটার আদুরে কথায় হো হো করে হাসলো।
ইশিতা ভ্রু কুঁচকালো বললো হাসলেন যে?
রাজবীর হাসি থামালো বললো এমনি।
ওহ আচ্ছা তখন সিঁড়িতে আমাকে কি যেন বলতে চেয়েছিলেন?
রাজবীর কথা ঘুরালো বললো ওরা রুমে অপেক্ষা করছে আমার।আসছি। শুভ রাত্রি।
ইশিতা ও শুভ রাত্রি জানালো। অতপর যে যার রুমেতে যাবার জন‍্য পা বাড়ালো।

চলবে
জান্নাত রেশমি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here